আজকের আর্টিকেলে আমরা নবম শ্রেণীর ভৌতবিজ্ঞান বইয়ের চতুর্থ অধ্যায় “পদার্থ : পরমাণুর গঠন ও পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” এর “মিশ্রণের উপাদানের পৃথকীকরণ” থেকে সহজ ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন-উত্তর শেয়ার করবো। এই প্রশ্নগুলো নবম শ্রেণির ইউনিট টেস্ট থেকে বার্ষিক পরীক্ষা এর জন্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি চাকরি বা বিভিন্ন প্রতিযোগিতার পরীক্ষাতেও কাজে লাগবে। এই অধ্যায় থেকে স্কুল পরীক্ষা থেকে শুরু করে চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই প্রশ্ন আসে, তাই এই প্রশ্নোত্তরগুলো সবাইকে সাহায্য করবে। প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর সহজ ভাষায় লেখা হয়েছে, যাতে সবাই বুঝতে পারেন। পড়ার শেষে এই অধ্যায়ের মুখ্য বিষয়গুলো আপনার আয়ত্তে চলে আসবে এবং যেকোনো পরীক্ষায় আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে লিখতে পারবেন।

জ্ঞানমূলক প্রশ্নোত্তর
মিশ্রণ কাকে বলে?
অথবা, মিশ্র পদার্থ কাকে বলে?
মিশ্রণ (Mixture) – নিজেদের মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে না এমন একাধিক মৌলিক বা যৌগিক পদার্থকে যে-কোনো অনুপাতে মিশিয়ে দিলে যে পদার্থ পাওয়া যায়, তাকে ওই পদার্থগুলির মিশ্রণ বলে। মিশ্রণে উপস্থিত প্রতিটি উপাদান তাদের নিজস্ব ধর্ম বজায় রাখে।
মিশ্রণ কত প্রকার? এদের সংজ্ঞা দাও।
মিশ্রণের প্রকারভেদ – মিশ্রণ দু-প্রকার –
- সমসত্ত্ব মিশ্রণ এবং
- অসমসত্ত্ব মিশ্রণ।
সমসত্ত্ব ও অসমসত্ত্ব মিশ্রণের সংজ্ঞা –
সমসত্ত্ব মিশ্রণ (Homogeneous Mixture) – যে মিশ্রণের বিভিন্ন অংশের গঠন ও ধর্ম একই, তাকে সমসত্ত্ব মিশ্রণ বলে। যেমন – চিনির জলীয় দ্রবণ।
অসমসত্ত্ব মিশ্রণ (Heterogeneous Mixture) – যে মিশ্রণের বিভিন্ন অংশের গঠন ও ধর্ম ভিন্ন, তাকে অসমসত্ত্ব মিশ্রণ বলে। যেমন – বালি ও গন্ধক চূর্ণের মিশ্রণ।

নিম্নলিখিত মিশ্রণগুলির প্রকৃতি ও উপাদানগুলির ভৌত অবস্থা কী হবে তা লেখো। (ধোঁয়া; অ্যালকোহল ও জলের মিশ্রণ; কুয়াশা; ব্রোঞ্জ; বালি ও জলের মিশ্রণ; চিনির জলীয় দ্রবণ; তেল ও জলের মিশ্রণ; সোডা ওয়াটার; চকের গুঁড়ো ও জলের মিশ্রণ)।
মিশ্রণের নাম | প্রকৃতি | ভৌত অবস্থা |
ধোঁয়া | অসমসত্ত্ব | কঠিনে – গ্যাসে |
অ্যালকোহল ও জলের মিশ্রণ | সমসত্ত্ব | তরলে – তরলে |
কুয়াশা | অসমসত্ত্ব | তরলে – গ্যাসে |
ব্রোঞ্জ | সমসত্ত্ব | কঠিনে – তরলে |
বালি ও জলের মিশ্রণ | অসমসত্ত্ব | কঠিনে – তরলে |
চিনির জলীয় দ্রবণ | সমসত্ত্ব | কঠিনে – তরলে |
তেল ও জলের মিশ্রণ | অসমসত্ত্ব | তরলে – তরলে |
সোডা ওয়াটার | সমসত্ত্ব | তরলে – গ্যাসে |
চকের গুঁড়ো ও জলের মিশ্রণ | অসমসত্ত্ব | তরলে – কঠিনে |
মিশ্রণের উপাদানের পৃথকীকরণ বলতে কী বোঝায়? মিশ্রণের উপাদানগুলির পৃথকীকরণের পদ্ধতিগুলি উল্লেখ করো।
মিশ্রণের উপাদানের পৃথকীকরণ (Separation of mixture) – যে পদ্ধতিতে একাধিক কঠিন ও তরল পদার্থ, তরল এবং তরল পদার্থের মিশ্রণ থেকে উপাদান কণাগুলিকে সহজে ভৌত উপায়ে পৃথক করা হয়, সেই পদ্ধতিকে বলা হয় মিশ্রণের উপাদানের পৃথকীকরণ।
নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলি দ্বারা মিশ্রণের উপাদানকে পৃথক করা হয় –
- আস্রাবণ (Decantation),
- পরিস্রাবণ (Filtration),
- পাতন (Distillation),
- আংশিক পাতন (Fractional Distillation),
- ঊর্ধ্বপাতন (Sublimation),
- বিয়োজী ফানেল দ্বারা পৃথকীকরণ (Separation by Separatory Funnel),
- চুম্বক দ্বারা পৃথকীকরণ (Separation by magnet)।
মিশ্রণের উপাদানগুলির পৃথকীকরণের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করো।
মিশ্রণের উপাদানগুলি পৃথক করার প্রায়াজনীয়তা –
- পদার্থের বিশুদ্ধিকরণ – মিশ্রণে উপস্থিত কোনো উপাদানের বিশুদ্ধিকরণের জন্য মিশ্রণের উপাদানগুলির পৃথকীকরণ প্রয়োজন। নদীর জল থেকে পানীয় জল প্রস্তুতি, ঔষধ শিল্পে মিশ্রণ থেকে ঔষধ পৃথকীকরণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে উপাদান পৃথক করার প্রয়োজন হয়।
- গুরুত্বপূর্ণ উপাদানের সংগ্রহীকরণ – মিশ্রণের পৃথকীকরণের মাধ্যমে এক বা একাধিক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান পাওয়া যায়, যাদের ব্যাবহারিক প্রয়োগ অপরিসীম। যেমন – অপরিশোধিত পেট্রোলিয়ামের উপাদানগুলিকে পৃথক করে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পদার্থ, যেমন – পেট্রোল, ডিজেল, কেরোসিন, LPG প্রভৃতি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান প্রস্তুত করা হয়।
- অবাঞ্ছিত বস্তু দূরীকরণ – মিশ্রণের মধ্যে উপস্থিত অপ্রয়োজনীয় বা ক্ষতিকারক পদার্থগুলিকে পৃথক করার জন্য মিশ্রণের উপাদানগুলির পৃথকীকরণ প্রয়োজন। যেমন – রান্নার আগে চাল ও গমের মধ্যে উপস্থিত কাঁকর পৃথক করা, সমুদ্রের জল থেকে জলকে পৃথক করে নুন তৈরি ইত্যাদি।
- ধাতু নিষ্কাশন – ধাতুর আকরিক থেকে ধাতু নিষ্কাশনের বিভিন্ন ধাপে অবিশুদ্ধিগুলিকে আলাদা করতে পৃথকীকরণ পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়।
- মূল্যবান দ্রাবকের পুনরুদ্ধার – জৈব রসায়নের গবেষণায় ব্যবহৃত গুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান দ্রাবক পুনরুদ্ধারের জন্য মিশ্রণের উপাদানগুলি পৃথক করার প্রয়োজন হয়।
- চিকিৎসাক্ষেত্রে রোগ নির্ণয়ের জন্য – বিভিন্ন প্রকার রোগ নির্ণয়ের জন্য রক্ত ও মূত্রের নমুনায় উপস্থিত উপাদানগুলিকে পৃথক করে শনাক্ত করা প্রয়োজন। সেন্ট্রিফিউগেশন (Centrifugation) পদ্ধতিতে এই উপাদানগুলি পৃথক করা হয়।
ভৌতধর্মের পার্থক্যের ওপর নির্ভর করে মিশ্রণ থেকে উপাদানগুলিকে কী কী উপায়ে পৃথক করা যায়, তা একটি তালিকার সাহায্যে দেখাও।
পৃথকীকরণের বিভিন্ন উপায় –
মিশ্রণের প্রকার | উপাদানের ভৌত অবস্থা | পৃথকীকরণ পদ্ধতি |
সমসত্ত্ব | 1. কঠিন ও তরলের মিশ্রণ 2. বিভিন্ন স্ফুটনাঙ্কের তরলের মিশ্রণ 3. একাধিক কঠিন ও তরলের মিশ্রণ | 1. পাতন 2. আংশিক পাতন 3. আংশিক কেলাসন |
অসমসত্ত্ব | 1. কঠিন-কঠিনের মিশ্রণ 2. তরল ও কঠিনের প্রলম্বিত অবস্থা 3. ভিন্ন ঘনত্বের পরস্পর অদ্রবণীয় তরল-তরলের মিশ্রণ | 1. ঊর্ধ্বপাতন,চুম্বক দ্বারা পৃথকীকরণ 2. পরিস্রাবণ 3. বিয়োজী ফানেল |
পাতন কাকে বলে?
পাতল (Distillation) – কোনো তরল এবং ওই তরলে দ্রবীভূত কোনো অনু্ব য়ী কঠিন পদার্থের মিশ্রণ অথবা 30°C -এর বেশি স্ফুটনাঙ্কের পার্থক্য বিশিষ্ট দুটি তরলের মিশ্রণকে তাপ প্রয়োগ করে প্রথমে তরলটিকে বাষ্পে পরিণত করে, পরে সেই বাষ্পকে আবার শীতল ও ঘনীভূত করে তরলে পরিণত করার মাধ্যমে মিশ্রণের উপাদানগুলিকে পৃথক করার পদ্ধতিকে পাতন বলা হয়।
পাতন পদ্ধতির নীতিটি লেখো।
পাতন পদ্ধতির নীতি – তরল দ্রাবকে অনুদবায়ী কঠিন পদার্থ দ্রবীভূত থাকলে ওই মিশ্রণ থেকে কঠিন ও তরলকে পৃথক করা হয় পাতন পদ্ধতিতে। মিশ্রণটিকে ফ্লাস্কে নিয়ে প্রথমে উত্তপ্ত করলে দ্রাবকের বাষ্পায়ন শুরু হয়। নির্দিষ্ট স্ফুটনাঙ্কে তরলটি ফুটতে শুরু করে এবং সম্পূর্ণ তরলটি ফুটে বাষ্পে পরিণত না হওয়া পর্যন্ত উষ্ণতার কোনো পরিবর্তন হয় না। দ্রবীভূত অনুদবায়ী কঠিনের স্ফুটনাঙ্ক তরলটির স্ফুটনাঙ্কের তুলনায় অনেক বেশি হওয়ায় তরল বাষ্পের সঙ্গে কঠিন পদার্থটি মিশে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। মিশ্রণ থেকে নির্গত বাষ্প শীতকের মাধ্যমে ঘনীভূত হয়ে গ্রাহক পাত্রে জমা হয় এবং ফ্লাস্কে পড়ে থাকে অনুদবায়ী দ্রাব।
দুটি মিশ্রণীয় তরলের স্ফুটনাঙ্কের পার্থক্য > 30°C হলে ওই মিশ্রণের তরল উপাদান দুটিকেও পাতন পদ্ধতিতে পৃথক করা যায়। এই ক্ষেত্রে বেশি উদ্বায়ী (কম স্ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট) তরলটি আগে পাতিত হয় এবং পরে কম উদ্বায়ী (বেশি স্ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট) তরলটির পাতন ঘটে।
পাতন পদ্ধতিতে কোন্ ধরনের মিশ্র পদার্থের উপাদান পৃথক করা যায়? উদাহরণ দাও।
কোনো তরলে দ্রবীভূত কোনো অনুদবায়ী কঠিন পদার্থকে পাতন প্রক্রিয়ার সাহায্যে ওই তরল থেকে পৃথক করা যায়। যেমন –
কঠিন ও তরলের মিশ্রণ | তরল | অনুদবায়ী কঠিন |
সমুদ্রের জল | জল | লবণ |
তুঁতের জলীয় দ্রবণ | জল | তুঁতে |
চিনির জলীয় দ্রবণ | জল | চিনি |
আয়োডিন + ক্লোরোফর্ম | ক্লোরোফর্ম | আয়োডিন |
এছাড়াও পরস্পর মিশ্রণীয় দুটি তরলের স্ফুটনাঙ্কের পার্থক্য 30°C -এর বেশি হলে ওই তরল মিশ্রণকে পাতন পদ্ধতিতে পৃথক করা যায়। যেমন – নাইট্রোবেঞ্জিন (স্ফুটনাঙ্ক 210°C) এবং বেঞ্জিনের (80°C) মিশ্রণ, অ্যাসিটোন (56.5°C) ও জলের (100°C) মিশ্রণ।
পাতনের সঙ্গে বাষ্পীভবন ও ঘনীভবনের সম্পর্ক কী?
পাতনের সঙ্গে বাষ্পীভবন ও ঘনীভবনের সম্পর্ক – তাপ প্রয়োগে কোনো তরলকে বাষ্পে পরিণত করার পদ্ধতিকে বাষ্পীভবন বলে এবং ওই বাষ্পকে ঠান্ডা করে তরলে পরিণত করার পদ্ধতিকে ঘনীভবন বলে। সুতরাং, বাষ্পীভবন এবং ঘনীভবনের মিলিত রূপ হল পাতন। অর্থাৎ, পাতন = বাষ্পীভবন + ঘনীভবন।
পাতিত দ্রব্য বা তরল এবং অবশেষ কাকে বলে?
পাতিত দ্রব্য বা পাতিত তরল (Distillate) – পাতন পদ্ধতিতে গ্রাহক পাত্রে সংগৃহীত বিশুদ্ধ তরলকে পাতিত দ্রব্য বা পাতিত তরল বলে।
অবশেষ (Residue) – পাতন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর পাতন ফ্লাস্কের তলায় বা বকযন্ত্রের তলায় যে কঠিন পদার্থের আস্তরণ জমা হয়, তাকে অবশেষ বলে।
পাতন পদ্ধতিতে তুঁতের জলীয় দ্রবণ থেকে তুঁতে ও জলকে কীভাবে পৃথক করা যায়?
পাতন প্রক্রিয়ার সাহায্যে তুঁতের জলীয় দ্রবণের উপাদানগুলির পৃথকীকরণ –
প্রয়োজনীয় উপকরণ – তুঁতের জলীয় দ্রবণ, গোলতল ফ্লাস্ক, লিবিগ শীতক, গ্রাহক পাত্র, তারজালি, ত্রিপদ স্ট্যান্ড, বুনসেন বার্নার, স্ট্যান্ড, ক্ল্যাম্প, কর্কের ছিপি, থার্মোমিটার, রবারের নল।
পদ্ধতি –

- একটি গোলতল ফ্লাস্কের মধ্যে তুঁতের, নীল বর্ণের জলীয় দ্রবণ নিয়ে ফ্লাস্কের মুখটি কর্ক দিয়ে বন্ধ করা হল। ফ্লাস্কটিকে স্ট্যান্ড ও ক্ল্যাম্পের সাহায্যে আটকে তারজালির ওপর বসানো হল।
- গোলতল ফ্লাস্কের উপরের প্রান্তে ছিদ্রযুক্ত কর্কের ছিপির মধ্যে দিয়ে একটি থার্মোমিটার প্রবেশ করানো হল।
- গোলতল ফ্লাস্কের পাশের নলের সঙ্গে লিবিগ শীতক যোগ করে এর মধ্যে ঠান্ডা জল পাঠানো হল। লিবিগ শীতকের শেষ প্রান্তটি একটি গ্রাহক ফ্লাস্কের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হল।
- বুনসেন বার্নারের সাহায্যে ফ্লাস্কটিকে গরম করা হলে একসময় দেখা যাবে, ফ্লাস্কের জল ফুটছে। উৎপন্ন বাষ্প লিবিগ শীতকের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় শীতল ও ঘনীভূত হয়ে আবার জলে পরিণত হয়ে গ্রাহক ফ্লাস্কে জমা হতে থাকবে। গ্রাহক পাত্রে জমা বিশুদ্ধ স্বচ্ছ জলকে পাতিত জল বলে।
- ফ্লাস্কের জল ফুটতে ফুটতে যখন প্রায় শুকিয়ে আসবে তখন বার্নার সরিয়ে দিতে হবে। দেখা যাবে যে, তুঁতের নীল আস্তরণ ফ্লাস্কের তলায় জমা হয়েছে। একেই বলে অবশেষ।
লিবিগ শীতক কী এবং এটি কীভাবে কাজ করে?
লিবিগ শীতক – পাতন প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত শীতকটিকে লিবিগ শীতক বলে। এটি হল কাচের জ্যাকেট পরানো একটি কাচনল। ভিতরের কাচনল ও জ্যাকেটের মাঝে ফাঁক রাখা হয়। এই জ্যাকেটের দুই প্রান্তে দুটি পার্শ্বনল থাকে। একটি পার্শ্বনল দিয়ে ঠান্ডা জল প্রবেশ করানো হয় এবং অন্য পার্শ্বনলটি দিয়ে ওই জল বেরিয়ে যায়। এর ফলে ভিতরের কাচনলটি ঠান্ডা হয়।

একটি প্রাকৃতিক পাতন প্রক্রিয়ার উদাহরণ দাও।
প্রাকৃতিক পাতন প্রক্রিয়া – সমুদ্রের লবণাক্ত জল সূর্যের তাপে বাষ্পীভূত হয়ে উপরে উঠে যায়। লবণ সমুদ্রে থেকে যায়। জল বাষ্পীভূত হয়ে মেঘ সৃষ্টি করে এবং পরে মেঘ থেকে ওই জল বৃষ্টি রূপে ফিরে আসে। বৃষ্টির জলে কোনো লবণ থাকে না। এটি একটি প্রাকৃতিক পাতন প্রক্রিয়ার উদাহরণ।
গান্ধিজি ডান্ডি অভিযানের সময় কোন পদ্ধতি ব্যবহার করে সমুদ্রের জল থেকে লবণ তৈরি করেছিলেন?
গান্ধিজি ডান্ডি অভিযানের সময় পাতন পদ্ধতি ব্যবহার করে সমুদ্রের জল থেকে লবণ তৈরি করেছিলেন।
পাতন প্রক্রিয়ার দুটি সীমাবদ্ধতা লেখো।
পাতন প্রক্রিয়ার সীমাবদ্ধতা –
- কোনো উদ্বায়ী অপদ্রব্য তরলে মিশে থাকলে বা মিশ্রণের তরল উপাদানটি স্ফুটনাঙ্কের উষ্ণতায় বিয়োজিত হলে পাতন প্রক্রিয়া ব্যবহার করা যাবে না।
- পরস্পর মিশ্রণীয় একাধিক তরলের স্ফুটনাঙ্কের পার্থক্য < 25°C হলে মিশ্রণ থেকে উপাদানগুলিকে সাধারণ পাতন পদ্ধতিতে সম্পূর্ণরূপে পৃথক করা যায় না।
টলুইন (bp = 110.6°C) এবং হেক্সেন (bp = 68°C) -এর মিশ্রণ থেকে কীভাবে উপাদান দুটিকে পৃথক করবে?
টলুইন ও হেক্সেনের মিশ্রণের উপাদান দুটির স্ফুটনাঙ্কের পার্থক্য 42.6°C। এদের স্ফুটনাঙ্কের পার্থক্য যথেষ্ট বেশি (> 30°C) হওয়ায় সাধারণ পাতন পদ্ধতিতে পরস্পর দ্রবণীয় এই দুটি তরলের মিশ্রণ থেকে উপাদান তরল দুটিকে পৃথক করা সম্ভব।
মিশ্রণটিকে একটি পাতন ফ্লাস্কে নিয়ে উত্তপ্ত করলে যখন মিশ্রণের উষ্ণতা হেক্সেনের (নিম্নতর স্ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট তরল) স্ফুটনাঙ্কের সমান হয় তখন নির্গত বাষ্পের যে অংশ শীতকে প্রবেশ করে তাতে বেশিরভাগই হেক্সেনের বাষ্প থাকে। শীতকের মধ্যে দিয়ে এই বাষ্প যাওয়ার সময় শীতল ও ঘনীভূত হয়ে তরলরূপে গ্রাহক পাত্রে জমা হয়। হেক্সেনের পাতন সম্পূর্ণ হওয়ার পর ফ্লাস্কের উষ্ণতা বাড়তে শুরু করলে তাপ প্রয়োগ বন্ধ করতে হবে এবং পাতন পাত্রে অবশেষ রূপে টলুইন পাওয়া যাবে।
উর্ধ্বপাতন কাকে বলে?
ঊর্ধ্বপাতন (Sublimation) – যে পদ্ধতিতে কোনো কঠিন পদার্থকে তাপ প্রয়োগ করে সরাসরি বাষ্পে পরিণত করা হয় এবং উৎপন্ন বাষ্পকে শীতল করে পুনরায় কঠিনে পরিণত করা হয়, তাকে ঊর্ধ্বপাতন বলে।
বালি ও আয়োডিনের মিশ্রণকে কোন্ পদ্ধতিতে পৃথক করা হয়?
বালি ও আয়োডিনের মিশ্রণকে ঊর্ধ্বপাতন পদ্ধতিতে পৃথক করা হয়।
আংশিক পাতন কাকে বলে?
আংশিক পাতন (Fractional Distillation) – যে পদ্ধতিতে দুই বা ততোধিক তরলের সমসত্ত্ব মিশ্রণকে তাপ প্রয়োগ করে অপেক্ষাকৃত কম স্ফুটনাঙ্কের তরলগুলিকে পাতিত করে মিশ্রণের তরলগুলিকে পৃথক করা হয়, তাকে আংশিক পাতন বলে।
আংশিক পাতনের মাধ্যমে দুটি উদ্বায়ী তরলের মিশ্রণ থেকে তাদের পৃথক করার নীতিটি ব্যাখ্যা করো।
অথবা, আংশিক পাতনে কোন্ ধরনের তরলদ্বয়ের মধ্যে পৃথকীকরণ সম্ভব?
আংশিক পাতন পদ্ধতির মূল নীতি – কোনো নির্দিষ্ট চাপে যখন কাছাকাছি স্ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট (সাধারণত < 25°C) দুই বা তার বেশি সংখ্যক তরলের সমসত্ত্ব মিশ্রণের স্ফুটন হয়, তখন উৎপন্ন বাষ্পের মধ্যে অপেক্ষাকৃত বেশি উদ্বায়ী উপাদানের আপেক্ষিক পরিমাণ, তরল মিশ্রণে উপস্থিত ওই উপাদানের আপেক্ষিক পরিমাণের তুলনায় বেশি হয়।
আংশিক পাতনস্তম্ভের সাহায্যে এই পদ্ধতি বারবার প্রয়োগ করে মিশ্রণের উপাদানগুলিকে বিশুদ্ধতর অবস্থায় সংগ্রহ করা যায়। আংশিক পাতনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে কম স্ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট (বেশি উদ্বায়ী) তরল সবচেয়ে আগে এবং সবচেয়ে বেশি স্ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট (কম উদ্বায়ী) তরল সবার শেষে পাতিত হবে।
আংশিক পাতনের সাহায্যে পৃথক করা যায় এমন কয়েকটি মিশ্রণের উদাহরণ দাও।
আংশিক পাতনের সাহায্যে পৃথক করা যায় এমন কয়েকটি মিশ্রণের উদাহরণ –
মিশ্রণীয় তরল মিশ্রণ | কম তাপমাত্রায় পাতিত তরল |
ইথাইল অ্যালকোহল (স্ফুটনাঙ্ক 78°C) + জল (স্ফুটনাঙ্ক 100°C) | ইথাইল অ্যালকোহল |
মিথাইল অ্যালকোহল (স্ফুটনাঙ্ক 64.5°C) + ইথাইল অ্যালকোহল (স্ফুটনাঙ্ক 78°C) | মিথাইল অ্যালকোহল |
ইথাইল অ্যালকোহল (স্ফুটনাঙ্ক 78°C) + ক্লোরোফর্ম (স্ফুটনাঙ্ক 61°C) | ক্লোরোফর্ম |
অ্যাসিটোন (স্ফুটনাঙ্ক 56.5°C) + ইথাইল অ্যালকোহল (স্ফুটনাঙ্ক 78°C) | অ্যাসিটোন |
আংশিক পাতন প্রক্রিয়ার সাহায্যে দুটি পরস্পর মিশ্রণীয় তরল পদার্থের পৃথকীকরণ পদ্ধতিটি বর্ণনা করো।
অথবা, আংশিক পাতন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কীভাবে মিশ্র পদার্থ পৃথক করা যায় লেখো।
আংশিক পাতন প্রক্রিয়ার সাহায্যে দুটি মিশ্রণীয় তরল পদার্থের মিশ্রণের উপাদানের পৃথকীকরণ –
প্রয়োজনীয় উপকরণ –
- একটি গোলতল ফ্লাস্ক (পাতন ফ্লাস্ক),
- অংশীকরণ স্তম্ভ,
- লিবিগ শীতক,
- ক্ল্যাম্প ও স্ট্যান্ড,
- তারজালি,
- বুনসেন বার্নার,
- গ্রাহক ফ্লাস্ক,
- তরলের মিশ্রণ, যেমন – মিথাইল অ্যালকোহল ও জলের মিশ্রণ,
- থার্মোমিটার।

পদ্ধতি –
- একটি গোলতল পাতন ফ্লাস্কে মিথাইল অ্যালকোহল ও জলের মিশ্রণ নিয়ে ফ্লাস্কটির মুখ একটি ছিদ্রযুক্ত কর্ক দিয়ে বন্ধ করা হল।
- ছিদ্রযুক্ত কর্কের মধ্যে দিয়ে একটি অংশীকরণ স্তম্ভ এমনভাবে যুক্ত করা হল যেন তার শেষ প্রান্তটি তরল মিশ্রণের কিছুটা উপরে থাকে। ওই স্তম্ভের উপরের মুখে কর্কের সাহায্যে একটি থার্মোমিটার লাগানো হল, যার সাহায্যে উৎপন্ন বাষ্পের উষ্ণতা জানা যায়।
- গোলতল পাতন ফ্লাস্কটিকে স্ট্যান্ড ও ক্ল্যাম্পের সাহায্যে আটকে ত্রিপদ স্ট্যান্ডের ওপরে রাখা তারজালির ওপর সোজাভাবে বসানো হল।
- অংশীকরণ স্তম্ভের পার্শ্বনলের সঙ্গে লিবিগ শীতক যুক্ত করা হল এবং লিবিগ শীতকের শেষ প্রান্ত গ্রাহক ফ্লাস্কের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হল। লিবিগ শীতকের পার্শ্বনলের সাহায্যে ওর মধ্যে শীতল জলের প্রবাহ চালনা করা হল।
- এবার বুনসেন বার্নারের সাহায্যে গোলতল পাতন ফ্লাস্কটিকে উত্তপ্ত করলে ফ্লাস্কের উষ্ণতা যখন 64.5°C -এ পৌঁছোয়, কম স্ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট মিথাইল অ্যালকোহল (64.5°C) বাষ্পীভূত হয় এবং ওই বাষ্প অংশীকরণ স্তম্ভের মধ্যে দিয়ে লিবিগ শীতকে পৌঁছোয় এবং ঘনীভূত হয়ে তরলে পরিণত হয়ে গ্রাহক ফ্লাস্কে জমা হয়।
- মিশ্রণের বেশি স্ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট উপাদান জল (100°C) ওই উষ্ণতায় অল্প বাষ্পীভূত হয়ে অংশীকরণ স্তম্ভের গোলকগুলির মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় ঘনীভূত হয়ে তরলরূপে পুনরায় পাতন ফ্লাস্কে ফিরে যায়। কম স্ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট তরল অর্থাৎ, মিথাইল অ্যালকোহল সম্পূর্ণ পৃথক না হওয়া পর্যন্ত থার্মোমিটারের উষ্ণতা স্থির থাকে।
- এরপর ফ্লাস্কের উষ্ণতা বৃদ্ধি পেয়ে 100°C -এ পৌঁছোলে জল পাতিত হয়ে বেরিয়ে আসে।
অংশীকরণ স্তম্ভ কী? কোন্ কাজে এটি ব্যবহার করা হয়?
অথবা, আংশিক পাতন প্রক্রিয়ায় পাতন স্তম্ভ বা অংশীকরণ স্তম্ভ কীভাবে কাজ করে?
অংশীকরণ স্তম্ভ (Fractionating Column) – এটি একটি লম্বা কাচের নল যা আংশিক পাতন পদ্ধতিতে দুটি মিশ্রণীয় কাছাকাছি স্ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট (স্ফুটনাঙ্কের পার্থক্য 10°C) তরলকে পরস্পর থেকে পৃথক করতে সাহায্য করে। এটি বিভিন্ন আকারের হতে পারে –

- ছোটো মোটা কাচের বল দ্বারা পূর্ণ লম্বা কাচনল হতে পারে।
- কাচনলটি পুরোটাই ছোটো ছোটো গোলক আকারের কাচের বাল্বগুলিকে পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে গঠিত হতে পারে ইত্যাদি।
আংশিক পাতনের ক্ষেত্রে পাতন ফ্লাস্ক ও শীতকের মাঝে আংশিক পাতন স্তম্ভ বা অংশীকরণ স্তম্ভটি যুক্ত থাকে। অংশীকরণ স্তম্ভের উপস্থিতি এই প্রক্রিয়াকে সাধারণ পাতনের তুলনায় অধিক কার্যকর করে তোলে। অংশীকরণ স্তম্ভ যত দীর্ঘ হবে পৃথকীকরণ তত ভালো হবে।
আংশিক পাতনের ক্ষেত্রে পাতন ফ্লাস্ক ও শীতকের মাঝে আংশিক পাতন স্তম্ভ বা অংশীকরণ স্তম্ভটি যুক্ত থাকে। এই স্তম্ভের মধ্য দিয়ে তরল দুটির বাষ্প অতিক্রম করার সময় ওই বাষ্পের মিশ্রণ বেশি ক্ষেত্রফলযুক্ত তলের সংস্পর্শে আসার সুযোগ পায় বলে দ্রুত শীতল হতে পারে। স্ফুটনাঙ্কের পার্থক্য বিশিষ্ট দুটি তরল মিশ্রণের বাষ্প ওই স্তম্ভ বরাবর উপরে উঠতে থাকলে অপেক্ষাকৃত বেশি স্ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট তরলটির বাষ্প বার বার ওই গোলাকার তলের ক্ষেত্রের সংস্পর্শে আসার ফলে কম স্ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট তরলের বাষ্প অপেক্ষা তাড়াতাড়ি শীতল ও ঘনীভূত হয়ে তরলরূপে আবার পাতন ফ্লাস্কে ফিরে আসে।
সুতরাং, বাষ্প যত বেশি উপরে ওঠে, সেই বাষ্পের মধ্যে অধিক উদ্বায়ী তরলের আপেক্ষিক পরিমাণ তত বেশি অনুপাতে থাকে। অংশীকরণ স্তম্ভের সকল অংশ জুড়েই এই প্রকার বাষ্পায়ন ও ঘনীভবন প্রক্রিয়া চলতে থাকে। এই দুটি প্রক্রিয়া ক্রমাগত চলার ফলে পাতন স্তম্ভটি অতিক্রম করে যে বাষ্প শীতকে পৌঁছোয়, তাতে প্রায় সবটাই অধিক উদ্বায়ী (নিম্ন স্ফুটনাঙ্ক) তরলের উপাদান থাকে, যেখানে সেটি ঘনীভূত হয়ে তরলরূপে গ্রাহক পাত্রে জমা হয়।
জল, ইথার ও গ্লিসারিনের মিশ্রণ থেকে তার উপাদানগুলিকে পৃথক করবে কীভাবে?
একটি পাতন ফ্লাস্কে মিশ্রণটিকে নিয়ে 35°C উষ্ণতায় (ইথারের স্ফুটনাঙ্ক 35°C) আংশিক পাতন করা হল। ফলে, প্রথম গ্রাহক পাত্রে ইথার পাওয়া যাবে। তারপর মিশ্রণটিকে 100°C উষ্ণতায় আংশিক পাতন করা হল। ফলে, দ্বিতীয় গ্রাহক পাত্রে জল পাওয়া যাবে। পাতন ফ্লাস্কে অবশেষরূপে গ্লিসারিন পড়ে থাকবে।
কোন্ কোন্ ক্ষেত্রে আংশিক পাতনের সাহায্যে পৃথকীকরণ সম্ভব নয়?
অথবা, আংশিক পাতন পদ্ধতির সীমাবদ্ধতা লেখো।
আংশিক পাতন পদ্ধতির সীমাবদ্ধতা –
- একাধিক তরল পদার্থের মিশ্রণের উপাদানগুলি তাপের প্রভাবে বিয়োজিত হয়ে গেলে আংশিক পাতন সম্ভব নয়।
- মিশ্রণের উপাদানগুলির স্ফুটনাঙ্ক খুব কাছাকাছি হলে আংশিক পাতন সম্ভব নয়।
- স্থির স্ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট বা অ্যাজিওট্রপিক মিশ্রণের উপাদানগুলিকে আংশিক পাতন পদ্ধতিতে পৃথক করা যায় না। যেমন – 95.6% ইথাইল অ্যালকোহল এবং 4.4% জলের মিশ্রণকে আংশিক পাতনের সাহায্যে পৃথক করা যায় না, কারণ – এই মিশ্রণটি 78.15°C উষ্ণতায় একসঙ্গে পাতিত হয়।
অ্যাজিওট্রপিক মিশ্রণ কাকে বলে এবং এটি কীভাবে গঠিত হয়?
অ্যাজিওট্রপিক মিশ্রণ – কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় যে ভিন্ন স্ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট দুটি তরলের মিশ্রণ একসঙ্গে কোনো নির্দিষ্ট উষ্ণতায় ফুটতে শুরু করে। এই ধরনের মিশ্রণকে বলা হয় স্থির স্ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট মিশ্রণ বা অ্যাজিওট্রপিক মিশ্রণ।
আংশিক পাতনের ব্যাবহারিক প্রয়োগ উল্লেখ করো।
আংশিক পাতনের ব্যাবহারিক প্রয়োগ –
- পেট্রোলিয়ামের আংশিক পাতন করলে বিভিন্ন উষ্ণতায় প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পদার্থ, যেমন – কেরোসিন, ডিজেল, গ্যাসোলিন, লুব্রিকেটিং তেল প্রভৃতি পাতিত অংশরূপে পাওয়া যায়।
- আংশিক পাতনের সাহায্যে আলকাতরা থেকে বেঞ্জিনকে পৃথক করা হয়।
- তরল বায়ু থেকে বিভিন্ন গ্যাসীয় উপাদান (যেমন – নাইট্রোজেন, অক্সিজেন) আংশিক পাতন প্রক্রিয়ার সাহায্যে পৃথক করা হয়।
- কাঠের অন্তধূম পাতনে প্রাপ্ত ‘পাইরোলিগনিয়াস অ্যাসিড’ মিশ্রণটি থেকে অ্যাসিটোন ও মিথাইল অ্যালকোহল আংশিক পাতন প্রক্রিয়ায় পৃথক করা হয়।
আংশিক পাতন প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে চাপের ভূমিকা লেখো।
আংশিক পাতনে চাপের ভূমিকা – কোনো তরলের স্ফুটনাঙ্ক চাপের ওপর নির্ভরশীল। তরলের উপরিস্থ চাপ প্রমাণ বায়ুমণ্ডলীয় চাপ (76 cm পারদস্তম্ভের চাপ) অপেক্ষা বেশি হলে তরল তার স্বাভাবিক স্ফুটনাঙ্কের চেয়ে বেশি উষ্ণতায় ফোটে। আবার তরলের উপরিস্থ চাপ প্রমাণ বায়ুমণ্ডলীয় চাপের চেয়ে কম হলে, তরল তার স্বাভাবিক স্ফুটনাঙ্কের চেয়ে কম উষ্ণতায় ফোটে। তাই প্রক্রিয়া চলাকালীন চাপ স্থির রাখতে হয়।
সাধারণত যেসব পদার্থকে তাদের স্ফুটনাঙ্ক পর্যন্ত উত্তপ্ত করলে বিয়োজিত হয়ে যায়, তাদের আংশিক পাতন প্রক্রিয়া দ্বারা পৃথকীকরণকালে তরলের উপরিস্থিত বায়ুর চাপ কমিয়ে পাতন করা হয়। যেমন – গ্লিসারিন, হাইড্রোজেন পারক্সাইড ইত্যাদি। এক্ষেত্রে একটি বায়ু নিষ্কাশন পাম্পকে গ্রাহক পাত্রের পার্শ্বনলের সঙ্গে যুক্ত করে পাতন ফ্লাস্কের ভিতরের চাপ কমানো হয়। চাপ কমে যাওয়ায় তরলটি তার স্ফুটনাঙ্কের চেয়ে কম উষ্ণতায় ফুটে বাষ্পীভূত হয় এবং পাতিত হয়।
এছাড়া চাপ পরিবর্তনে বিভিন্ন তরলের স্ফুটনাঙ্ক বিভিন্ন হারে পরিবর্তিত হয়। তাই চাপ পরিবর্তন দ্বারাও মিশ্রণের তরল উপাদানগুলির স্ফুটনাঙ্কের পার্থক্য বাড়িয়ে আংশিক পাতন করা হয়।
সাধারণ পাতন প্রক্রিয়ার পরিবর্তে আংশিক পাতন পদ্ধতি কখন ব্যবহার করা হয়?
দুটি মিশ্রণীয় তরলের স্ফুটনাঙ্কের পার্থক্য 25°C -এর কম হলে ওই মিশ্রণের উপাদান দুটিকে সাধারণ পাতন পদ্ধতিতে পৃথক করা যায় না, কারণ – মিশ্রণটিকে উত্তপ্ত করলে বেশি উদ্বায়ী (কম স্ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট) তরলের বাষ্পের সঙ্গে অপেক্ষাকৃত কম উদ্বায়ী (বেশি স্ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট) তরল বাষ্প যথেষ্ট মাত্রায় মিশে যায় এবং উভয় তরলই একই সঙ্গে পাতিত হয়। ফলে, মিশ্রণের উপাদান দুটিকে সাধারণ পাতন পদ্ধতিতে সম্পূর্ণরূপে পৃথক করা যায় না। এই ধরনের তরল মিশ্রণের উপাদানগুলিকে আংশিক পাতনের সাহায্যে পৃথক করা হয়। যেখানে আংশিক পাতন স্তম্ভ ব্যবহার করে বারবার বাষ্পীভবন ও ঘনীভবনের মাধ্যমে মিশ্রণ থেকে তরল উপাদানগুলিকে সম্পূর্ণরূপে পৃথক করা যায়।
অনুপ্রেষ পাতন প্রক্রিয়ার নীতিটি লেখো।
অথবা, অনুপ্রেষ পাতন কাকে বলে? এর একটি ব্যবহার লেখো।
অনুপ্রেষ পাতন প্রক্রিয়ার নীতি – বায়ুর চাপ কমিয়ে স্বাভাবিক স্ফুটনাঙ্কের তুলনায় কম তাপমাত্রায় কোনো তরলকে পাতিত করার পদ্ধতি হল অনুপ্রেষ পাতন। কোনো কোনো তরল জৈব যৌগ সাধারণ বায়ুমণ্ডলীয় চাপে তাদের স্ফুটনাঙ্কে বা তার চেয়ে কম উষ্ণতায় বিয়োজিত হয়। ফলে, ওই সমস্ত তরল উপাদানকে কোনো মিশ্রণ থেকে পৃথক করার জন্য নিম্নচাপে পাতন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। এক্ষেত্রে একটি বায় নিষ্কাশন পাম্পকে গ্রাহক পাত্রের পার্শ্বনলের সঙ্গে যুক্ত করে পাতন ফ্লাক্সের ভিতরের চাপ কমানো হয়। চাপ কমে যাওয়ায় তরলটি তার স্ফুটনাঙ্কের চেয়ে কম উষ্ণতায় ফুটে বাষ্পে পরিণত হয়। ওই উষ্ণতায় যৌগটির কোনো বিয়োজন না ঘটায় পাতন প্রক্রিয়াটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়।
অনুপ্রেষ পাতন প্রক্রিয়ার ব্যবহার –
চিনির জলীয় দ্রবণ থেকে চিনির কেলাস প্রস্তুতির সময় চাপ কমিয়ে জলের স্ফুটনাঙ্ক কম করে পাতন করা হয়।
পেট্রোলিয়াম কী? পেট্রোলিয়াম পরিশোধন কাকে বলে?
পেট্রোলিয়াম (Petroleum) – ভূপৃষ্ঠের অনেক নীচে C1 থেকে C40 পর্যন্ত কার্বন পরমাণুযুক্ত হাইড্রোকার্বনের যে গাঢ় বাদামি বর্ণের উগ্র গন্ধ বিশিষ্ট চটচটে তরল মিশ্রণ পাওয়া যায়, তাকে পেট্রোলিয়াম বা খনিজ তেল বলে। হাইড্রোকার্বন ছাড়াও এতে সামান্য অক্সিজেন, নাইট্রোজেন ও সালফারের কার্বনঘটিত যৌগ থাকে। পেট্রোলিয়াম (Petrolium) শব্দটি দুটি গ্রিক শব্দ ‘petra’ (যার অর্থ rock বা পাথর) এবং ‘olium’ (যার অর্থ oil বা তেল) থেকে এসেছে। তাই পেট্রোলিয়ামকে পাথুরে তেল বলে।
পেট্রোলিয়াম পরিশোধন (Petroleum refining) – অশোধিত পেট্রোলিয়ামকে আংশিক পাতনের সাহায্যে শোধন করা হয়। আংশিক পাতন পদ্ধতির সাহায্যে এই শোধন করাকে পেট্রোলিয়াম পরিশোধন বলা হয়। এই পদ্ধতিতে অশোধিত পেট্রোলিয়ামকে আংশিক পাতিত করে কয়েকটি অংশে ভাগ করা হয়।
পেট্রোলিয়ামের উৎপত্তি কীভাবে হয়?
পেট্রোলিয়াম একটি জীবাশ্ম জ্বালানি। সাধারণ মতানুসারে, সুদূর অতীতে শ্যাওলা, প্ল্যাংটন, শামুক প্রভৃতি নিম্নশ্রেণির জলজ উদ্ভিদ ও সামুদ্রিক জীব প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে সমুদ্রের তলায় চাপা পড়ে। ধীরে ধীরে তার ওপর জমতে থাকে বালি, পলিমাটি ইত্যাদি। লক্ষ লক্ষ বছর ধরে এই সমস্ত জিনিসগুলি শিলাস্তরের চাপে ও ভূগর্ভের তাপে ক্রমশ পেট্রোলিয়াম যৌগে পরিণত হয়। এভাবেই পেট্রোলিয়ামের উৎপত্তি হয়।
পেট্রোলিয়াম পরিশোধনের প্রয়োজনীয়তা কী?
পট্রোলিয়াম পরিশোধনের প্রয়োজনীয়তা – পেট্রোলিয়াম হল তরল জ্বালানির উৎস। এটি প্রাকৃতিকভাবে প্রাপ্ত একমাত্র তরল জ্বালানি। পেট্রোলিয়াম খনি বা কূপ থেকে যে পেট্রোলিয়াম সংগৃহীত হয়, তা অশোধিত অবস্থায় থাকে। এর সঙ্গে মিশ্রিত থাকে নানাবিধ অশুদ্ধি, যেমন – বালি, সমুদ্রের জল, সালফার যৌগ ইত্যাদি। এই অশোধিত পেট্রোলিয়ামকে বলা হয় ক্রুড অয়েল (Crude Oil)। এটি প্রধানত বিভিন্ন হাইড্রোকার্বনের (150 রকমেরও বেশি) মিশ্রণ হলেও সামান্য পরিমাণ অক্সিজেন, নাইট্রোজেন ও সালফারের যৌগও এতে বর্তমান থাকে। তাই ক্রুড অয়েলকে পরিশোধন করা একান্ত প্রয়োজন। পরিশোধনের ফলে প্রাপ্ত বিভিন্ন অংশ আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে ও শিল্পক্ষেত্রে অপরিহার্য।
পেট্রোলিয়াম গ্যাস কী?
পেট্রোলিয়ামের 20°C – 30°C উষ্ণতায় আংশিক পাতনে C1 – C4 কার্বন পরমাণুযুক্ত হাইড্রোকার্বনের যে গ্যাসীয় মিশ্রণ পাওয়া যায়, তাকে পেট্রোলিয়াম গ্যাস বলে।
পেট্রোলিয়াম থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন পদার্থের নাম ও তাদের ব্যবহার উল্লেখ করো।
অথবা, পেট্রোলিয়াম পরিশোধনে কী কী পাওয়া যায়?
পাতিত পদার্থ | পাতনের তাপমাত্রা | আনুমানিক C-পরমাণু সংখ্যা | ব্যবহার |
পেট্রোলিয়াম গ্যাস | 20°C – 30°C | C1 – C4 | CNG বা LPG রূপে গৃহস্থালি ও শিল্পের জ্বালানি, কার্বন ব্ল্যাক প্রস্তুতিতে। |
পেট্রোলিয়াম ইথার | 30°C – 70°C | C5 – C6 | তেল ও চর্বির দ্রাবক হিসেবে। |
পেট্রোল বা গ্যাসোলিন | 70°C – 120°C | C7 – C8 | মোটর গাড়ি ও বিমানের জ্বালানি হিসেবে। জামাকাপড় ড্রাই ক্লিনিং -এর জন্য দ্রাবক হিসেবে। |
ন্যাপথা | 120°C – 150°C | C8 – C12 | জামাকাপড় ড্রাই ক্লিনিং -এর কাজে। |
কেরোসিন | 150°C – 300°C | C10 – C16 | গৃহস্থালির জ্বালানি ও আলোকদায়ী পদার্থ হিসেবে। |
ভারী তেল বা ডিজেল | 300°C – 350°C | C15 – C18 | ডিজেল ইঞ্জিনে জ্বালানি রূপে। |
লুব্রিকেটিং অয়েল | 350°C – 400°C | C16 – C20 | যন্ত্রাদির পিচ্ছিলকারী তেল হিসেবে। |
ভেসলিন | > 400°C | C18 – C22 | ঔষধ ও ক্রিম প্রস্তুতিতে। |
প্যারাফিন মোম | > 400°C | C20 – C30 | মোমবাতি, মোম-প্রলিপ্ত কাগজ তৈরিতে। |
অবশেষ (অ্যাসফল্ট, পিচ) | – | C30 – C40 | রাস্তা তৈরিতে, কালো রং প্রস্তুতিতে। |
পেট্রোলিয়ানের আংশিক পাতনের Flow Chart –

বিয়োজী ফানেল কী? কোন্ ধরনের মিশ্রণের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি প্রযোজ্য?
বিয়োজী ফানেল (Separatory funnel) – বিয়োজী ফানেল প্রকৃতপক্ষে লম্বা বা গোলাকার আকৃতির একটি কাচের পাত্র যার নীচের দিকে স্টপককযুক্ত একটি সরু নল থাকে।
পরস্পর মেশে না এমন ভিন্ন ঘনত্বের দুটি অমিশ্রণীয় তরলের ক্ষেত্রে বিয়োজী ফানেল দ্বারা পৃথকীকরণ পদ্ধতি প্রযোজ্য।
সেপারেটরি ফানেলের সাহায্যে তরলের মিশ্রণ পৃথক করার জন্য প্রয়োজনীয় শর্তগুলি লেখো।
সেপারেটরি ফানেলের সাহায্যে তরলের মিশ্রণ পৃথক করার জন্য প্রয়োজনীয় শর্ত –
- মিশ্রণের উপাদান তরলগুলির ঘনত্বের পার্থক্য অবশ্যই থাকতে হবে।
- মিশ্রণের উপাদানগুলি উদ্বায়ী হলে এই পদ্ধতিতে আলাদা করা যাবে না।
- উভয় তরল উপাদান যেন পরস্পরের সঙ্গে আংশিকভাবেও মিশ্রণীয় না হয়।
- তরল মিশ্রণের উপাদানগুলি পরস্পরের সঙ্গে যেন কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়া না করে।
একটি পরীক্ষার মাধ্যমে বিয়োজী ফানেল দ্বারা পৃথকীকরণ পদ্ধতি আলোচনা করো।
অথবা, সেপারেটরি ফানেলের সাহায্যে কীভাবে উপাদানগুলি পৃথক করা হয় তা চিত্রসহ বর্ণনা করো।
পরস্পর মিশে যায় না এমন দুটি ভিন্ন ঘনত্বের তরল মিশ্রণের বিয়োজী ফানেল দ্বারা পৃথকীকরণ –
উপকরণ –
- বিয়োজী ফানেল বা সেপারেটরি ফানেল,
- গ্রাহক পাত্র,
- জল ও তেলের মিশ্রণ,
- ক্ল্যাম্প,
- স্ট্যান্ড।

পরীক্ষা পদ্ধতি – জল ও তেলের মিশ্রণ বিয়োজী ফানেলের মধ্যে নেওয়া হল। বিয়োজী ফানেলটিকে একটি ক্ল্যাম্পের সাহায্যে স্ট্যান্ডের সঙ্গে আটকে রাখা হল। এভাবে মিশ্রণটি কিছুক্ষণ সোজাভাবে রাখলে দেখা যাবে, জল ও তেলের মিশ্রণ পৃথক দুটি স্তর গঠন করে। অপেক্ষাকৃত হালকা ঘনত্বের তেল উপরের স্তরে এবং অপেক্ষাকৃত বেশি ঘনত্বের জল নীচের স্তরে অবস্থান করে। এখন বিয়োজী ফানেলের স্টপককটি সাবধানে খুলে নীচের স্তরটিকে (জল) ফানেলের নীচে রাখা একটি গ্রাহক পাত্রে সংগ্রহ করা হল। কম ঘনত্বের তেল বিয়োজী ফানেলের মধ্যে থেকে যাবে। স্টপককটি আবার খুলে পৃথকভাবে তেলকে অন্য পাত্রে সংগ্রহ করা হল। এভাবে মিশ্রণের তরল উপাদান দুটিকে বিয়োজী ফানেলের সাহায্যে পৃথক করা হয়।
তরলের স্ফুটনাঙ্কের ওপর চাপের প্রভাব আলোচনা করো।
তরলের স্ফুটনাঙ্কের ওপর চাপের প্রভাব – তরলের স্ফুটনাঙ্ক তরলের ওপর প্রযুক্ত চাপের ওপর নির্ভরশীল হয়। চাপ বাড়ালে তরলের স্ফুটনাঙ্ক বাড়ে এবং তরলের ওপরের চাপ ও কমালে তরলের স্ফুটনাঙ্ক কমে।
শিল্পক্ষেত্রে এর প্রয়োগ উল্লেখ করো।
শিল্পক্ষেতে প্রয়োগ –
চাপ বাড়ালে তরলের স্ফুটনাঙ্ক বাড়ে –
- কাগজ শিল্পে,
- কৃত্রিম সিল্ক প্রস্তুতিতে,
- হাসপাতালে অপারেশনে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি, ব্যান্ডেজ, তোয়ালে ইত্যাদি জীবাণু মুক্ত করতে,
- টিনের কৌটোর খাদ্যদ্রব্য জীবাণু মুক্ত করতে বেশি চাপ প্রয়োগ করে তরলের স্ফুটনাঙ্ক বাড়ানো হয়।
চাপ কমালে তরলের স্ফুটনাঙ্ক কমে –
- ঘনীভূত দুধ প্রস্তুতিতে,
- হাইড্রোজেন পারক্সাইডের গাঢ় জলীয় দ্রবণ প্রস্তুতিতে,
- চিনির জলীয় দ্রবণ থেকে চিনির কেলাস প্রস্তুতিতে,
- গ্লিসারিনের জলীয় দ্রবণ থেকে গ্লিসারিন নিষ্কাশনে এই ধর্মের সাহায্য নেওয়া হয়।
জল ও কার্বন টেট্রাক্লোরাইডের মিশ্রণ থেকে উপাদানগুলির পৃথকীকরণ পদ্ধতি বর্ণনা করো।
জল ও কার্বন টেট্রাক্লোরাইডের মিশ্রণকে বিয়োজী ফানেলের মধ্যে ঢেলে কিছুক্ষণ স্থিরভাবে রাখা হল। দেখা গেল, মিশ্রণটি দুটি স্তরে বিভক্ত হয়ে গেল যার নীচের স্তরে থাকে ভারী তরল কার্বন টেট্রাক্লোরাইড এবং উপরের স্তরে থাকে অপেক্ষাকৃত হালকা জল। এবার স্টপককটি খুলে প্রথমে কার্বন টেট্রাক্লোরাইড ও পরে জল পৃথক পৃথক গ্রাহক পাত্রে সংগ্রহ করা হল।
বিয়োজী ফানেল দ্বারা পৃথকীকরণ পদ্ধতির একটি ব্যাবহারিক প্রয়োগ উল্লেখ করো।
বিয়োজী ফানেল দ্বারা পৃথকীকরণ পদ্ধতির ব্যাবহারিক প্রয়োগ –
- জৈব রসায়নে দ্রাবক পৃথকীকরণের জন্য দ্রাবক নিষ্কাশন (Solvent Extraction) পদ্ধতিতে জৈব যৌগের জলীয় দ্রবণ থেকে যৌগটিকে পৃথক করতে বিয়োজী ফানেল ব্যবহার করা হয়।
- আয়রন নিষ্কাশনের সময় মারুৎচুল্লিতে গলিত ধাতুমল ভারী তরল আয়রনের উপরে থাকে। এই পদ্ধতিতে আয়রন ও ধাতুমলের মিশ্রণ থেকে আয়রনকে পৃথক করতে বিয়োজী ফানেল ব্যবহার করা হয়।
- দ্রাবক নিষ্কাশন (Solvent extraction) পদ্ধতিতে জৈব যৌগের জলীয় দ্রবণ থেকে যৌগটিকে পৃথক করতে বিয়োজী ফানেল ব্যবহার করা হয়।
পারদ, জল ও বেঞ্জিনের মিশ্রণ থেকে উপাদানগুলিকে কীভাবে পৃথক করবে?
পারদ, জল ও বেঞ্জিনের মিশ্রণকে একটি বিয়োজী ফানেলে নিয়ে ভালোভাবে ঝাঁকিয়ে কিছুক্ষণ স্থিরভাবে রাখলে দেখা যাবে, তিনটি পৃথক স্তর গঠিত হয়েছে। পারদ সবচেয়ে বেশি ঘনত্বের হওয়ায় এটি সবচেয়ে নীচের স্তর গঠন করেছে, জল মাঝামাঝি ঘনত্বের তাই মাঝের স্তর গঠন করেছে এবং বেঞ্জিন সবচেয়ে কম ঘনত্ববিশিষ্ট হওয়ায় সবচেয়ে উপরের স্তর গঠন করেছে। এবার বিয়োজী ফানেলের স্টপকক খুললে প্রথমে গ্রাহক পাত্রে পারদ জমা হয়। সমস্ত পারদ গ্রাহক পাত্রে জমা হওয়ার পর স্টপককটি বন্ধ করে দিয়ে অন্য একটি গ্রাহক পাত্র বিয়োজী ফানেলের নীচে রেখে পুনরায় স্টপকক খোলা হল। দ্বিতীয় গ্রাহক পাত্রে জল জমা হবে এবং বিয়োজী ফানেলের মধ্যে পড়ে থাকবে বেঞ্জিন।
বিয়োজী ফানেল দ্বারা পৃথক করা যায় এমন কয়েকটি মিশ্রণের উদাহরণ দাও।
নীচের মিশ্রণগুলি বিয়োজী ফানেল দ্বারা পৃথক করা যায় – জল ও কেরোসিন তেলের মিশ্রণ, জল ও পারদের মিশ্রণ, জল ও পেট্রোলের মিশ্রণ, জল ও বেঞ্জিনের মিশ্রণ, জল ও ক্লোরোফর্মের মিশ্রণ ইত্যাদি।
অমিশ্রণীয় তরলের মিশ্রণ গুলিকে বেশি ঘনত্বের তরল এবং কম ঘনত্বের তরলে পার্থক্য করো।
অমিশ্রণীয় তরলের মিশ্রণ | বেশি ঘনত্বের তরল | কম ঘনত্বের তরল |
বেঞ্জিন + জল | জল | বেঞ্জিন |
কেরোসিন তেল + জল | জল | কেরোসিন তেল |
টারপেনটাইন তেল + জল | জল | টারপেনটাইন তেল |
কার্বন ডাইসালফাইড + জল | জল | কার্বন ডাইসালফাইড |
ক্লোরোফর্ম + জল | ক্লোরোফর্ম | জল |
পারদ + অ্যালকোহল | পারদ | অ্যালকোহল |
পেট্রোল + জল | জল | পেট্রোল |
পারদ + জল | পারদ | জল |
বিয়োজী ফানেল ব্যবহার করে পৃথক করা হয় – এরকম কয়েকটি পদার্থের ঘনত্বের ক্রম হল – ইথার < পেট্রোল < ইথাইল অ্যালকোহল < কেরোসিন < জল < ক্লোরোফর্ম।
বোধমূলক প্রশ্নোত্তর
একটি মূল্যবান জৈব দ্রাবকে অশুদ্ধিরূপে অনুদবায়ী জৈব কঠিন দ্রাব দ্রবীভূত থাকলে কীভাবে দ্রাবকটিকে পুনরুদ্ধার করবে?
একটি মূল্যবান জৈব দ্রাবকে অশুদ্ধি রূপে অনুদবায়ী জৈব কঠিন দ্রাব দ্রবীভূত থাকলে ওই জৈব দ্রাবককে পুনরুদ্ধার করা যাবে সাধারণ পাতন প্রক্রিয়ার সাহায্যে।
পরীক্ষণীয় মিশ্রণটিকে পাতন ফ্লাস্কে নিয়ে তাপ প্রয়োগ করলে জৈব দ্রাবকটির বাষ্পায়ন শুরু হবে। ফ্লাস্কের উষ্ণতা জৈব দ্রাবকের স্ফুটনাঙ্কে পৌঁছোলে তা ফুটে বাষ্পে পরিণত হয়। মিশ্রণের জৈব দ্রাবকটি সম্পূর্ণ বাষ্পে পরিণত না হওয়া পর্যন্ত উষ্ণতা অপরিবর্তিত থাকে। মিশ্রণ থেকে উৎপন্ন বাষ্পকে লিবিগ শীতকের সাহায্যে শীতল করলে তা ঘনীভূত হয়ে পুনরায় তরল অবস্থায় ফিরে আসে এবং পাতন ফ্লাস্কে পড়ে থাকে অনুদবায়ী জৈব কঠিন দ্রাব।
পাতন প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত শীতকটির নীচ দিয়ে ঠান্ডা জল ঢুকিয়ে উপর দিয়ে বের করা হয় কেন?
পাতন প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত শীতকটির নীচ দিয়ে ঠান্ডা জল ঢুকিয়ে উপর দিয়ে বের করা হয় কারণ – ঠান্ডা জলের তুলনায় গরম জল হালকা। পাতন প্রক্রিয়ায় যে শীতক বা কনডেনসার থাকে তার নীচ দিয়ে ঠান্ডা জল প্রবেশ করে এবং উত্তপ্ত বাষ্পের সংস্পর্শে এসে গরম ও হালকা হয়ে উপর দিয়ে বের হয়ে যায়। এক্ষেত্রে শীতকে ঠান্ডা জল অপেক্ষাকৃত বেশি সময় ধরে তাপ গ্রহণ করতে পারে। অপরদিকে, ঠান্ডা জলের প্রবাহ উপর থেকে নীচের দিকে হলে জলের অপচয়ও বেশি হত।
জল ও প্রোপিওনিক অ্যাসিড কীভাবে পৃথকীকরণ করা সম্ভব?
জল ও প্রোপিওনিক অ্যাসিড পরস্পর আংশিকভাবে মেশে। সাধারণভাবে দুটি তরলের স্ফুটনাঙ্কের পার্থক্য 30°C -এর বেশি হলে তাদেরকে সাধারণ পাতন পদ্ধতিতে আলাদা করা হয়। জলের স্ফুটনাঙ্ক 100°C ও প্রোপিওনিক অ্যাসিডের স্ফুটনাঙ্ক 140°C। তাই এদের সাধারণ পাতন পদ্ধতিতে পৃথক করা হয়।
ক্লোরোফর্ম ও ইথাইল অ্যালকোহলের মিশ্রণকে কোন পদ্ধতিতে পৃথক করা হয়? এক্ষেত্রে কোন্ তরলটি আগে পাতিত হবে?
ক্লোরোফর্ম ও ইথাইল অ্যালকোহলের মিশ্রণকে আংশিক পাতন পদ্ধতিতে পৃথক করা হয়।
আংশিক পাতন পদ্ধতিতে তরল মিশ্রণ পৃথকীকরণের ক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত কম স্ফুটনাঙ্কের তরলটি আগে পাতিত হয়ে গ্রাহক পাত্রে জমা হয়। ক্লোরোফর্ম এবং ইথাইল অ্যালকোহলের স্ফুটনাঙ্ক যথাক্রমে 61°C এবং 78.3°C। তাই আংশিক পাতন পদ্ধতিতে এই তরল মিশ্রণ পৃথকীকরণের ক্ষেত্রে ক্লোরোফর্ম আগে পাতিত হয়ে গ্রাহক পাত্রে জমা হয় এবং ইথাইল অ্যালকোহল পরে পাতিত হয়।
জল ও মিথাইল অ্যালকোহলের মিশ্রণকে আংশিক পাতনের সাহায্যে পৃথক করা হলে কোনটি আগে পাতিত হবে?
মিথাইল অ্যালকোহলের স্ফুটনাঙ্ক 64.5°C এবং জলের স্ফুটনাঙ্ক 100°C। তাই বলা যায় যে, মিথাইল অ্যালকোহল বেশি উদ্বায়ী। অতএব, আংশিক পাতনের ফলে মিথাইল অ্যালকোহল আগে পাতিত হয়ে পৃথক হয়।
মিথাইল অ্যালকোহল ও অ্যাসিটোনের মিশ্রণ সাধারণ পাতন পদ্ধতিতে পৃথক করা হয় না কেন?
মিথাইল অ্যালকোহল ও অ্যাসিটোনের স্ফুটনাঙ্ক যথাক্রমে 64.5°C ও 56°C। পরস্পর দ্রবণীয় এই দুটি তরলের স্ফুটনাঙ্কের পার্থক্য পাতন প্রক্রিয়ার জন্য যথেষ্ট নয়। কারণ – মিশ্রণটি উত্তপ্ত করলে বেশি উদ্বায়ী অ্যাসিটোন বাষ্পের সঙ্গে কম উদ্বায়ী মিথাইল অ্যালকোহলও যথেষ্ট পরিমাণে পাতিত হবে। তাই মিশ্রণ থেকে তরল দুটিকে সাধারণ পাতন পদ্ধতিতে পৃথক করা হয় না। এক্ষেত্রে আংশিক পাতন করতে হবে।
ইথার ও বেক্সিনের মিশ্রণের আংশিক পাতন করলে কোনটি আগে পাতিত হবে?
ইথারের স্ফুটনাঙ্ক 35°C এবং বেঞ্জিনের স্ফুটনাঙ্ক 80°C। সুতরাং, ইথার বেঞ্জিনের চেয়ে বেশি উদ্বায়ী হওয়ায় এটিই প্রথমে পাতিত হয়ে পৃথক হবে।
আংশিক পাতনের ক্ষেত্রে পাতনস্তম্ভ ব্যবহার করা হয় কেন?
আংশিক পাতনের ক্ষেত্রে পাতনস্তম্ভ ব্যবহার করা হয় যাতে ঊর্ধ্বমুখী বাষ্প ও নিম্নমুখী তরলের পথে বাধা সৃষ্টি হয় এবং বাষ্পের ঘনীভবনের পরিসর বৃদ্ধি পায়। এই পাতনস্তম্ভ যত লম্বা হয় পৃথকীকরণ পদ্ধতি তত ভালো হয়।
আংশিক পাতন প্রক্রিয়াটি রাসায়নিক না ভৌত প্রক্রিয়া? কেন?
আংশিক পাতন প্রক্রিয়াটি ভৌত প্রক্রিয়া, কারণ – এই প্রক্রিয়ায় পদার্থের কোনো রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে না। শুধু পদার্থটির বাহ্যিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটে। যে কারণে এই পরিবর্তন হয় সেই কারণটি সরিয়ে নিলেই পরিবর্তিত পদার্থটি আবার মূল পদার্থে ফিরে আসে।
প্রেশার কুকারে অল্প সময়ে রান্না হয় কেন?
তরলের উপরিস্থিত চাপ বাড়িয়ে স্ফুটনাঙ্ক বাড়ানোর নীতিকে কাজে লাগিয়ে প্রেশার কুকার যন্ত্র তৈরি করা হয়। প্রেশার কুকারে আবদ্ধ পাত্রে জলীয় বাষ্পের চাপ বাড়িয়ে 100°C -এর বেশি উষ্ণতায় জলকে ফোটানো হয়। এই উচ্চ উষ্ণতায় পাত্রের ভিতরের জলের স্ফুটনাঙ্ক বেড়ে যায়। ফলে, পাত্রের ভিতরের খাদ্যবস্তু খুব দ্রুত সেদ্ধ হয়।

কলকাতায় বিশুদ্ধ জলের স্ফুটনাঙ্ক 100°C হলে দার্জিলিং-এ স্ফুটনাঙ্কের কেমন পরিবর্তন ঘটবে?
দার্জিলিং এবং কলকাতায় বিশুদ্ধ জলের স্ফুটনাঙ্ক সমান হবে না। কলকাতায় বিশুদ্ধ জলের স্ফুটনাঙ্ক 100°C। দার্জিলিং কলকাতা অপেক্ষা অধিক উচ্চতায় অবস্থিত। উচ্চতা বাড়লে বায়ুর ঘনত্ব কমে যায়। ফলে, তরলের উপরিস্থিত বায়ুর চাপও কমে যায়। তাই তরলের স্ফুটনাঙ্ক হ্রাস পায়। এই কারণে দার্জিলিং-এ জলের স্ফুটনাঙ্ক কলকাতা অপেক্ষা কম হয়। দার্জিলিং-এ বিশুদ্ধ জলের স্ফুটনাঙ্ক 93.6°C।
খনির ভিতরে জলের স্ফুটনাঙ্ক স্বাভাবিকের তুলনায় কম না বেশি হয়?
খনির ভিতরের বায়ুর চাপ সাধারণ বায়ুমণ্ডলীয় চাপ অপেক্ষা বেশি হয়। তরলের উপর চাপ বাড়ালে তার স্ফুটনাঙ্ক বৃদ্ধি পায়। এই কারণে, খনির ভিতরে জলের স্ফুটনাঙ্ক স্বাভাবিকের তুলনায় (100°C) বেশি হয়।
কোনো মহাকাশচারী 20°C উষ্ণতায় জল ফ্লাস্কে করে চাঁদের পৃষ্ঠে নিয়ে গিয়ে ওই জল একটি বিকারে ঢাললে তিনি কী দেখবেন?
চাঁদে বায়ুমণ্ডল না থাকায় সেখানে বায়ুচাপ শূন্য। বায়ুশূন্য স্থানে জলের স্ফুটনাঙ্ক তার স্বাভাবিক স্ফুটনাঙ্ক অপেক্ষা অনেক কম। তাই চাঁদের পৃষ্ঠে থাকাকালীন বিকারে জল ঢালার সময় জলের ওপরের চাপ শুধুমাত্র 20°C উষ্ণতার জলীয় বাষ্পচাপের সমান হয়, যা অতি নগণ্য। এই উপেক্ষণীয় চাপে জল দ্রুত ফুটে বাষ্পে পরিণত হতে শুরু করে এবং বাষ্পীভবনের জন্য প্রয়োজনীয় লীনতাপ বিকারের জল থেকেই সংগ্রহ করে। ফলে, বিকারের অবশিষ্ট জলের উষ্ণতা দ্রুত হ্রাস পায় এবং একসময় তা বরফে পরিণত হয়।
তাপ না প্রয়োগ করে ঘরের উষ্ণতায় জল ফোটানো সম্ভব কি?
বদ্ধপাত্রে ঘরের উষ্ণতায় জল রেখে বায়ু নিষ্কাশন পাম্পের সাহায্যে জলতলের উপরের অংশ থেকে বায়ু ক্রমাগত নিষ্কাশন করতে থাকলে একসময় দেখা যাবে পাত্রের জল ফুটছে। এক্ষেত্রে বায়ু নিষ্কাশনের ফলে জলের উপরে থাকা বায়ুর চাপ কমে যায় এবং ওই হ্রাসপ্রাপ্ত চাপে জলের স্ফুটনাঙ্ক ঘরের উষ্ণতার সমান হয় বলে ওই উষ্ণতাতেই জল ফুটতে শুরু করে।
পেট্রোলিয়ামের উপাদানগুলিকে পৃথক করা হয় কেন?
পেট্রোলিয়াম হল বহু সংখ্যক জৈব যৌগের মিশ্রণ যার অধিকাংশই হাইড্রোকার্বন। পেট্রোলিয়ামের আংশিক পাতনে প্রাপ্ত বিভিন্ন উপাদান, যেমন – পেট্রোলিয়াম গ্যাস, পেট্রোল, ন্যাপথা, কেরোসিন, ডিজেল, লুব্রিকেটিং অয়েল, ভেসলিন, প্যারাফিন, মোম, পিচ প্রভৃতি আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে ও শিল্পক্ষেত্রে অপরিহার্য।
বর্তমান সভ্যতার অগ্রগতিতে পেট্রোলিয়ামের আংশিক পাতনের ফলে প্রাপ্ত পদার্থের বহুমুখী ব্যবহারের জন্য এর বিভিন্ন উপাদানগুলিকে পৃথক করা হয়।
চিনির জল ও কেরোসিনের মিশ্রণ থেকে উপাদানগুলিকে পৃথক করবে কীভাবে?
চিনির জল ও কেরোসিন পরস্পর অমিশ্রণীয় দুটি তরল পদার্থ। তাই এদের মিশ্রণকে বিয়োজী ফানেলের সাহায্যে পৃথক করা হয়। এক্ষেত্রে চিনির জলের ঘনত্ব বেশি ও কেরোসিনের ঘনত্ব কম হওয়ায় বিয়োজী ফানেলের উপরের অংশে কেরোসিন ও নীচের অংশে চিনির জল থাকে। ফানেলটিকে ভালো করে ঝাঁকিয়ে বেশ কিছুক্ষণ রেখে দিলে দুটি স্তর পৃথক হয়ে যায়। এরপর ফানেলের স্টপকক খুলে দিয়ে জল ও চিনির মিশ্রণ বের করে নিলে, ফানেলের মধ্যে শুধু কেরোসিন পড়ে থাকে। প্রাপ্ত চিনির দ্রবণের উপাদানগুলিকে সাধারণ পাতন পদ্ধতি প্রয়োগ করে পৃথক করা যায়।
তোমাকে কিছুটা লোহার গুঁড়ো, বালি ও নুনের মিশ্রণ দেওয়া হল। তুমি কীভাবে এদের পৃথক করবে?
লোহা চুম্বক দ্বারা আকৃষ্ট হয় এবং নুন জলে দ্রবীভূত হয় – এই দুটি ধর্মের ওপর ভিত্তি করে লোহার গুঁড়ো, বালি ও নুনের মিশ্রণ থেকে উপাদানগুলিকে নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে পৃথক করা যায় –
প্রথমে মিশ্রণের উপর শক্তিশালী চুম্বক দণ্ড নিয়ে ভালো করে ঘোরানো হলে লোহার গুঁড়ো মিশ্রণ থেকে পৃথক হয়ে চুম্বকের গায়ে আটকে যাবে। মিশ্রণে পড়ে থাকবে বালি ও নুন।
অবশিষ্ট মিশ্রণটিকে বিকারে নিয়ে জল যোগ করে নাড়ানো হলে নুন জলের মধ্যে সম্পূর্ণরূপে দ্রবীভূত হয়ে যায় এবং বালির ভারী কণাগুলি পাত্রের তলায় থিতিয়ে পড়ে।
বিকারের মিশ্রণটিকে সাধারণ ফিলটার পেপারের সাহায্যে পরিস্রাবণ করে নিলে ফিলটার পেপারে বালি থাকবে। পরিস্রুত হিসেবে পাওয়া যাবে নুনের জলীয় দ্রবণ।
প্রাপ্ত পরিস্রুতের পাতন করলে পাতন পাত্রে নুন অবশেষ রূপে পাওয়া যাবে।
A, B এবং C হল তিনটি ভিন্ন ঘনত্ববিশিষ্ট এবং ভিন্ন স্ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট তরল পদার্থ। A এবং C জৈব তরল পদার্থ, কিন্তু B হল অজৈব তরল পদার্থ। A এবং B -কে একটি পাত্রে একসঙ্গে রাখলে তারা একটি মাত্র স্তর গঠন করে। অন্যদিকে B এবং C -কে একসঙ্গে একটি পাত্রে রাখলে দুটি পৃথক স্তর গঠন করে – (1) A এবং B-এর মিশ্রণ থেকে A ও B-কে পৃথক করতে কোন্ পদ্ধতির সাহায্য নেবে? (2) B এবং C -এর মিশ্রণ থেকে B ও C -কে পৃথক করতে কোন্ পদ্ধতির সাহায্য নেবে? (3) এমন তিনটি তরল পদার্থের উদাহরণ দাও যারা যথাক্রমে A, B এবং C -এর মতো আচরণ করবে।
- A একটি জৈব তরল ও B একটি অজৈব তরল এবং এরা ভিন্ন স্ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট তরল পদার্থ। A ও B -কে একত্রে একটি পাত্রে রাখলে তারা একটি মাত্র স্তর গঠন করে অর্থাৎ, A ও B পরস্পর মিশ্রণীয়। সুতরাং, A ও B -এর মিশ্রণের উপাদানগুলিকে পৃথক করতে আংশিক পাতনের সাহায্য নিতে হবে।
- B একটি অজৈব তরল এবং C একটি জৈব তরল। এদের একত্রে একটি পাত্রে রাখলে দুটি পৃথক স্তর গঠন করে। অর্থাৎ, B এবং C পরস্পর অমিশ্রণীয়। সুতরাং, B ও C -এর মিশ্রণ থেকে উপাদানগুলিকে পৃথক করতে বিয়োজী ফানেলের সাহায্য নিতে হবে।
- A -এর মতো আচরণ করে এমন একটি তরল হল – অ্যালকোহল, B -এর মতো আচরণ করে এমন একটি তরল হল – জল, ও C -এর মতো আচরণ করে এমন একটি তরল হল – তেল।
সমুদ্রের জল থেকে বিশুদ্ধ জল কীভাবে পৃথক করবে?
সমুদ্রের জল থেকে পাতন প্রক্রিয়ায় বিশুদ্ধ জল পাওয়া যাবে।
কেরোসিন ও পেট্রোলের মিশ্রণ থেকে কেরোসিন তেল কীভাবে পৃথক করবে?
আংশিক পাতনের সাহায্যে কেরোসিন ও পেট্রোলের মিশ্রণকে পৃথক করা হয়।
লেড সালফেট এবং লেড ক্লোরাইড -এর মিশ্রণ থেকে লেড সালফেট কীভাবে পৃথক করবে?
লেড ক্লোরাইড গরম জলে দ্রাব্য, লেড সালফেট দ্রাব্য নয়। তাই লেড সালফেট ও লেড ক্লোরাইডকে গরম জলে চালনা করে লেড সালফেটকে পৃথক করা হয়।
আংশিক পাতন পদ্ধতিতে পাতন স্তম্ভে কাচের ছোটো ছোটো বিডের ভূমিকা কী?
আংশিক পাতনে পাতন স্তম্ভের মধ্যে কাচের ছোটো বিডগুলি থাকে যেগুলি স্তম্ভের মধ্যে উৎপন্ন উত্তপ্ত বাষ্পকে ঘনীভূত ও শীতল করার জন্য বৃহত্তর পৃষ্ঠতলের যোগান দেয়।
পার্থক্যধর্মী প্রশ্নোত্তর
পাতনের (Distillation) সঙ্গে ঊর্ধ্বপাতনের (Sublimation) পার্থক্য লেখো।
পাতনের (Distillation) সঙ্গে ঊর্ধ্বপাতনের (Sublimation) পার্থক্যগুলি হল –
বিষয় | পাতন (Distillation) | ঊর্ধ্বপাতন (Sublimation) |
পদ্ধতি | তাপের প্রভাবে তরল পদার্থ প্রথমে বাষ্পে পরিণত হয় এবং পরে ওই বাষ্প আবার শীতল হয়ে তরলে পরিণত হয়। | তাপের প্রভাবে কঠিন পদার্থ তরলে পরিণত না হয়ে সরাসরি বাষ্পে পরিণত হয় এবং ওই বাষ্প ঠান্ডা হয়ে আবার কঠিন পদার্থে পরিণত হয়। |
মিশ্রণের প্রকৃতি | তরল ও কঠিনের মিশ্রণ থেকে উপাদানগুলিকে পৃথক করা যায়। | উদ্বায়ী ও অনুদবায়ী কঠিন পদার্থের মিশ্রণ থেকে উপাদানগুলিকে পৃথক করা হয়। |
সাধারণ পাতনের থেকে আংশিক পাতনের মূলগত পার্থক্য কোথায়?
অথবা, সাধারণ পাতন ও আংশিক পাতনের মধ্যে পার্থক্য লেখো।
সাধারণ পাতন ও আংশিক পাতনের মধ্যে পার্থক্যগুলি হল –
বিষয় | সাধারণ পাতন (Distillation) | আংশিক পাতন (Fractional Distillation) |
মিশ্রণের প্রকৃতি | এই পদ্ধতিতে তরলে দ্রবীভূত কঠিন পদার্থের মিশ্রণ থেকে উপাদানগুলিকে পৃথক করা হয়। | এই পদ্ধতিতে পরস্পর মিশে যায় এমন দুটি তরলের মিশ্রণকে পৃথক করা হয়। |
উদাহরণ | লবণ জল থেকে লবণ, চিনির জল থেকে চিনি এই পদ্ধতিতে আলাদা করা যায়। | ইথাইল অ্যালকোহল ও জলের মিশ্রণ, ক্লোরোফর্ম ও জলের মিশ্রণ থেকে উপাদানগুলিকে এই পদ্ধতিতে পৃথক করা হয়। |
পাতন স্তম্ভ | পাতন স্তম্ভের প্রয়োজন হয় না। | পাতন স্তম্ভ অবশ্যই প্রয়োজন। |
তরল উপাদানগুলির স্ফুটনাঙ্ক | তরল মিশ্রণে উপস্থিত তরলগুলির স্ফুটনাঙ্কের পার্থক্য > 30°C হতে হবে। | তরল মিশ্রণে উপস্থিত তরলগুলির স্ফুটনাঙ্কের পার্থক্য < 25°C হতে হবে। |
আংশিক পাতন পদ্ধতি এবং বিয়োজী ফানেল দ্বারা পৃথকীকরণ পদ্ধতির মধ্যে পার্থক্য লেখো।
আংশিক পাতন পদ্ধতি এবং বিয়োজী ফানেল দ্বারা পৃথকীকরণ পদ্ধতির মধ্যে পার্থক্যগুলি হল –
বিষয় | আংশিক পাতন পদ্ধতি | বিয়োজী ফানেল দ্বারা পৃথকীকরণ পদ্ধতি |
সংজ্ঞা | বিভিন্ন স্ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট দুই বা ততোধিক তরলের সমসত্ত্ব মিশ্রণ থেকে উপাদানগুলিকে তাদের স্ফুটনাঙ্কের পার্থক্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন উষ্ণতায় পাতিত করে পৃথক করার পদ্ধতিকে বলে আংশিক পাতন পদ্ধতি। | ভিন্ন ঘনত্বের দুটি অমিশ্রণীয় তরলের মিশ্রণ থেকে তরল দুটিকে পৃথকীকরণ করার পদ্ধতিকে বলা হয় বিয়োজী ফানেল দ্বারা পৃথকীকরণ পদ্ধতি। |
প্রযোজ্যতা | পরস্পর মিশে যায় এমন দুটি তরলের পৃথকীকরণের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি প্রযোজ্য। | পরস্পর মেশে না এমন দুটি তরলের পৃথকীকরণের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি প্রযোজ্য। |
উদাহরণ | জল + মিথাইল অ্যালকোহল, জল + ইথাইল অ্যালকোহল ইত্যাদি মিশ্রণগুলিকে এই পদ্ধতিতে পৃথক করা হয়। | জল + ক্লোরোফর্ম, জল + পেট্রোল, জল + কেরোসিন ইত্যাদি মিশ্রণগুলিকে এই পদ্ধতিতে আলাদা করা হয়। |
পেট্রোল এবং পেট্রোলিয়ামের পার্থক্য ব্যাখ্যা করো।
পেট্রোল এবং পেট্রোলিয়ামের পার্থক্যগুলি হল –
বিষয় | পেট্রোল | পেট্রোলিয়াম |
প্রকৃতি | পেট্রোল হল পেট্রোলিয়ামের উপজাত পদার্থ। | পেট্রোলিয়াম এক প্রকার জীবাশ্ম জ্বালানি। |
প্রস্তুতি | পেট্রোলিয়ামকে উষ্ণতায় আংশিক পাতনের সাহায্যে পেট্রোল প্রস্তুত করা হয়। | ভূপৃষ্ঠের অনেক নীচে C1 থেকে C40 কার্বন পরমাণুযুক্ত হাইড্রোকার্বনের যে গাঢ় বাদামি বর্ণের উগ্র গন্ধবিশিষ্ট চটচটে তরল মিশ্রণ পাওয়া যায়, তাই হল পেট্রোলিয়াম বা খনিজ তেল। |
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নোত্তর
সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো
কোনটি মিশ্রণ? –
- চিনি
- জল
- গ্লুকোজ
- রক্ত
উত্তর – 4. রক্ত
সমসত্ত্ব মিশ্রণ নয় –
- ধোঁয়া
- পিতল
- বিশুদ্ধ বাতাস
- সাধারণ লবণ ও জলের দ্রবণ
উত্তর – 1. ধোঁয়া
কোনটি দ্রবণ? –
- সোডা ওয়াটার
- কাঠকয়লা
- কাঠ
- সিমেন্ট
উত্তর – 1. সোডা ওয়াটার
কোনটি অসমসত্ত্ব মিশ্রণ নয়? –
- পাথর
- ধোঁয়া
- সিমেন্ট
- বিশুদ্ধ বায়ু
উত্তর – 4. বিশুদ্ধ বায়ু
বিশুদ্ধ পদার্থ নয় –
- হাইড্রোজেন
- কার্বন
- বরফ
- আইসক্রিম
উত্তর – 4. আইসক্রিম
বালি ও নিশাদল পৃথক করা যায় যে প্রক্রিয়ায় –
- আস্রাবণ
- ঊর্ধ্বপাতন
- সেন্ট্রিফিউগেশন
- ক্রোমাটোগ্রাফি
উত্তর – 2. ঊর্ধ্বপাতন
চিনি ও জলের দ্রবণ থেকে চিনি ও জল পৃথক করা যায় –
- আংশিক পাতন পদ্ধতিতে
- পাতন পদ্ধতিতে
- বিয়োজী ফানেলের সাহায্যে
- ঊর্ধ্বপাতন পদ্ধতিতে
উত্তর – 2. পাতন পদ্ধতিতে
কোন্ পদ্ধতিতে বেঞ্জিন ও নাইট্রোবেঞ্জিনের মিশ্রণ থেকে উপাদান দুটিকে পৃথক করবে? –
- আংশিক পাতন
- পরিস্রাবণ
- সাধারণ পাতন
- ঊর্ধ্বপাতন
উত্তর – 3. সাধারণ পাতন
সমুদ্র থেকে নুন তোলার পদ্ধতি একটি –
- পাতন প্রক্রিয়ার উদাহরণ
- বিপরীত অভিস্রবণ প্রক্রিয়ার উদাহরণ
- অভিস্রবণ প্রক্রিয়ার উদাহরণ
- ঊর্ধ্বপাতন প্রক্রিয়ার উদাহরণ
উত্তর – 1. পাতন প্রক্রিয়ার উদাহরণ
অ্যাসিটোন ও জলের মিশ্রণ থেকে তরল দুটিকে পৃথক করা যাবে –
- ঊর্ধ্বপাতন পদ্ধতিতে
- আংশিক পাতন পদ্ধতিতে
- সেপারেটরি ফানেলের সাহায্যে
- পাতন পদ্ধতিতে
উত্তর – 4. পাতন পদ্ধতিতে
অ্যাসিটোনের স্ফুটনাঙ্ক –
- 65°C
- 57°C
- 56°C
- 62°C
উত্তর – 1. 65°C
দ্রাবক পৃথকীকরণ করা হয় –
- বিয়োজী ফানেল দ্বারা
- আংশিক পাতন দ্বারা
- পাতন দ্বারা
- ঊর্ধ্বপাতন দ্বারা
উত্তর – 3. পাতন দ্বারা
স্ফুটনাঙ্কের পার্থক্য 10°C অপেক্ষা কম এরূপ দুটি তরলের সমসত্ত্ব মিশ্রণ থেকে উপাদানগুলিকে পৃথক করা যাবে –
- সাধারণ পাতন দ্বারা
- পরিস্রাবণ দ্বারা
- আংশিক পাতন দ্বারা
- বিয়োজী ফানেল দ্বারা
উত্তর – 3. আংশিক পাতন দ্বারা
আংশিক পাতনে তরল দুটির স্ফুটনাঙ্কের পার্থক্য হয় –
- 10°C
- 50°C
- 25°C
- 100°C
উত্তর – 3. 25°C
ক্লোরোফর্ম (স্ফুটনাঙ্ক 61°C), ইথাইল অ্যালকোহলের (স্ফুটনাঙ্ক 78.3°C) মধ্যে আগে পাতিত হবে –
- ক্লোরোফর্ম
- ইথাইল অ্যালকোহল
- কোনোটিই নয়
- উভয়েই একসঙ্গে
উত্তর – 1. ক্লোরোফর্ম
আংশিক পাতন দ্বারা পৃথক করা হয় –
- জল + বেঞ্জিন
- জল + মিথাইল অ্যালকোহল
- জল + বালি
- জল + চিনি
উত্তর – 2. জল + মিথাইল অ্যালকোহল
বায়ুতে উপস্থিত N2 এবং O2 -এর মিশ্রণকে কোন্ পদ্ধতির সাহায্যে পৃথক করবে? –
- আস্রাবণ
- পরিস্রাবণ
- আংশিক পাতন
- ক্রোমাটোগ্রাফি
উত্তর – 3. আংশিক পাতন
ক্লোরোফর্ম ও বেঞ্চিনের মিশ্রণ পৃথক করা যায় –
- পাতন পদ্ধতি দ্বারা
- আংশিক পাতন দ্বারা
- বিয়োজী ফানেলের সাহায্যে
- পরিস্রাবণ পদ্ধতিতে
উত্তর – 2. আংশিক পাতন পদ্ধতিতে
বেঞ্জিন (b.p = 80°C) এবং টলুইন (b.p = 110°C) মিশ্রণকে যে প্রক্রিয়ায় পৃথক করা যায় তা হল –
- পরিস্রাবণ
- সেপারেটরি ফানেল
- পাতন
- আংশিক পাতনের সাহায্যে
উত্তর – 4. আংশিক পাতনের সাহায্যে
দুটি তরলকে পৃথক করা যায় যে পদ্ধতিতে তা হল –
- ঊর্ধ্বপাতন
- পাতন
- আংশিক পাতন
- পরিস্রাবণ
উত্তর – 3. আংশিক পাতন
পেট্রোলিয়াম শোধনের সময় প্রধানত যে প্রক্রিয়ার সাহায্য নেওয়া হয় তা হল –
- কেলাসন
- সাধারণ পাতন
- আংশিক পাতন
- পরিস্রাবণ
উত্তর – 3. আংশিক পাতন
ডাইমিথাইল ইথার এবং অ্যাসিটোনের মিশ্রণ থেকে উপাদানগুলি পৃথক করা যায় –
- ঊর্ধ্বপাতনের সাহায্যে
- বিয়োজী ফানেলের সাহায্যে
- আংশিক পাতনের সাহায্যে
- ক্রোমাটোগ্রাফির সাহায্যে
উত্তর – 3. আংশিক পাতনের সাহায্যে
ক্লোরোফর্ম ও ইথানলের মিশ্রণ থেকে ক্লোরোফর্ম ও ইথানলকে পৃথক করা হয় –
- পাতনের সাহায্যে
- আংশিক পাতনের সাহায্যে
- ঊর্ধ্বপাতনের সাহায্যে
- পৃথকীকরণ ফানেলের সাহায্যে
উত্তর – 2. আংশিক পাতনের সাহায্যে
মিথাইল অ্যালকোহল এবং ইথাইল অ্যালকোহলের স্ফুটনাঙ্ক যথাক্রমে 64.5°C এবং 78°C হলে, এদের মিশ্রণকে পৃথক করা হয় –
- ঊর্ধ্বপাতন পদ্ধতিতে
- পাতন পদ্ধতিতে
- সেপারেটরি ফানেলের সাহায্যে
- আংশিক পাতন পদ্ধতিতে
উত্তর – 4. আংশিক পাতন পদ্ধতিতে
কোন্ মিশ্রণটিকে আংশিক পাতনের সাহায্যে পৃথক করা যায়? –
- জল + ইথাইল অ্যালকোহল
- জল + কেরোসিন
- জল + ক্লোরোফর্ম
- জল + বেঞ্জিন
উত্তর – 1. জল + ইথাইল অ্যালকোহল
আংশিক পাতন প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে যেটি সত্য –
- তরল দুটির স্ফুটনাঙ্ক একই হবে
- তরল দুটির স্ফুটনাঙ্ক খুবই কাছাকাছি থাকবে
- তরল দুটির স্ফুটনাঙ্কের যথেষ্ট পার্থক্য থাকবে
- তরল দুটি অমিশ্রণীয় হবে
উত্তর – 2. তরল দুটির স্ফুটনাঙ্ক খুবই কাছাকাছি থাকবে
অংশীকরণ পাতনস্তম্ভে ব্যবহৃত হয় –
- কাচের বল
- কাঠের টুকরো
- বালি
- চুনাপাথর
উত্তর – 1. কাচের বল
কোন্ মিশ্রণকে আংশিক পাতন প্রক্রিয়ায় পৃথক করা যায় না? –
- সমসত্ত্ব মিশ্রণ
- অসমসত্ত্ব মিশ্রণ
- অ্যাজিওট্রপিক মিশ্রণ
- কোনোটিই নয়
উত্তর – 3. অ্যাজিওট্রপিক মিশ্রণ
অ্যাসিটোন ও মিথাইল অ্যালকোহলের মিশ্রণ থেকে উপাদানগুলির পৃথকীকরণ পদ্ধতি হল –
- পাতন
- আংশিক পাতন
- ঊর্ধ্বপাতন
- বিয়োজী ফানেল
উত্তর – 2. আংশিক পাতন
প্রতি 27 mm চাপ বৃদ্ধিতে জলের স্ফুটনাঙ্ক বৃদ্ধি পায় –
- 1°C
- 2°C
- 5°C
- 10°C
উত্তর – 1. 1°C
প্রেশার কুকারে রান্না তাড়াতাড়ি হয় কারণ –
- চাপ বাড়ালে জলের স্ফুটনাঙ্ক কমে
- চাপ বাড়ালে জলের স্ফুটনাঙ্ক বাড়ে
- চাপ কমালে জলের স্ফুটনাঙ্ক বাড়ে
- চাপ কমালে জলের স্ফুটনাঙ্ক একই থাকে
উত্তর – 2. চাপ বাড়ালে জলের স্ফুটনাঙ্ক বাড়ে
দার্জিলিং -এ জলের স্ফুটনাঙ্ক 100°C এর –
- কম
- সমান
- বেশি
- সমান অথবা বেশি
উত্তর – 1. কম
তরলের উপরিস্থিত চাপ কমালে স্ফুটনাঙ্কের ক্ষেত্রে কোনটি ঠিক? –
- স্ফুটনাঙ্ক কমে
- স্ফুটনাঙ্ক বাড়ে
- স্ফুটনাঙ্ক একই থাকে
- কোনোটিই নয়
উত্তর – 1. স্ফুটনাঙ্ক কমে
তরল সোনা বলা হয় –
- ডিজেল
- কেরোসিন তেল
- লুব্রিকেটিং অয়েল
- পেট্রোলিয়ামকে
উত্তর – 4. পেট্রোলিয়ামকে
পেট্রোলিয়ামের আংশিক পাতনে যে উষ্ণতায় LPG গ্যাস উৎপন্ন হয় –
- 30°C -এর উপরে
- 30°C -এর নীচে
- 100°C -এর উপরে
- 500°C -এর উপরে
উত্তর – 2. 30°C -এর নীচে
পেট্রোলিয়ামের যে অংশটি সর্বনিম্ন উষ্ণতায় পাতিত হয় –
- বিটুমিন
- রিফাইনারি গ্যাস
- ন্যাপথা
- কেরোসিন
উত্তর – 2. রিফাইনারি গ্যাস
পেট্রোলিয়াম শোধনে ব্যবহৃত হয় –
- NaOH
- HCl
- Ca(OH)2
- HNO3
উত্তর – 1. NaOH
পেট্রোলিয়ামের আংশিক পাতনে পাতিত রূপে ডিজেল সংগ্রহ করা হয় –
- 70°C অংশে
- 170°C অংশে
- 270°C অংশে
- 370°C অংশে
উত্তর – 3. 270°C অংশে
পেট্রোলিয়ামের আংশিক পাতনে 120°C থেকে 150°C উষ্ণতায় পাতিত হয় –
- ডিজেল
- ন্যাপথা
- পেট্রোল
- অ্যাসফল্ট
উত্তর – 2. ন্যাপথা
মেশিনের যন্ত্রাংশের ঘর্ষণ কমাতে ব্যবহৃত হয় –
- ডিজেল
- ন্যাপথা
- লুব্রিকেটিং অয়েল
- জল
উত্তর – 3. লুব্রিকেটিং অয়েল
জ্বালানি হিসেবে ব্যবহূত হয় না এমন পদার্থটি হল –
- পেট্রোল
- ডিজেল
- অ্যাসফল্ট
- কেরোসিন
উত্তর – 3. অ্যাসফল্ট
পেট্রোলিয়ামের পরিশোধনে পাওয়া যায় না –
- কেরোসিন
- ন্যাপথা
- আলকাতরা
- বিটুমিন
উত্তর – 3. আলকাতরা
পেট্রোলিয়াম মূলত –
- C1 থেকে C40 -এর মিশ্রণ
- C1 থেকে C16 -এর মিশ্রণ
- শুধুমাত্র C40
- কোনোটিই নয়
উত্তর – 1. C1 থেকে C40 -এর মিশ্রণ
কেরোসিনে উপস্থিত হাইড্রোকার্বনে কার্বন পরমাণুর সংখ্যা –
- C5 – C4
- C10 – C13
- C15 – C18
- C1 – C4
উত্তর – 2. C10 – C13
জল ও কেরোসিনের মিশ্রণের পৃথকীকরণে বিয়োজী ফানেলের নীচের স্তরে থাকে –
- জল
- কেরোসিন
- কোনোটিই নয়
- উভয়ের মিশ্রণ
উত্তর – 1. জল
ইথার (A), জল (B) ও ক্লোরোফর্মের (C) ঘনত্বের ক্রম হল –
- A > C > B
- C > A > B
- C > B > A
- A = B < C
উত্তর – 3. C > B > A
জল ও কার্বন টেট্রাক্লোরাইডের মিশ্রণকে পৃথক করতে –
- সাধারণ পাতন -এর সাহায্য নেওয়া হয়
- আংশিক পাতন -এর সাহায্য নেওয়া হয়
- বাষ্পীভবন -এর সাহায্য নেওয়া হয়
- সেপারেটরি ফানেল -এর সাহায্য নেওয়া হয়
উত্তর – 4. সেপারেটরি ফানেলের সাহায্য নেওয়া হয়
ক্লোরোফর্ম ও জলের মিশ্রণ থেকে উপাদানগুলিকে পৃথক করা যাবে যে পদ্ধতির মাধ্যমে –
- পাতন ক্রিয়া
- আংশিক পাতন
- বিয়োজী ফানেলের মাধ্যমে
- অনুপ্রেষ পাতন
উত্তর – 3. বিয়োজী ফানেলের মাধ্যমে
যে জোড়াকে পৃথক করতে পৃথকীকরণ ফানেল ব্যবহৃত হয় –
- জল ও H2SO4
- জল ও HNO3
- জল ও CCl4
- জল ও NaOH
উত্তর – 3. জল ও CCl4
কোন্ পদ্ধতিতে মিশ্রণের উপাদান পৃথকীকরণের সময় তাপ প্রয়োগের প্রয়োজন হয় না? –
- পাতন
- আংশিক পাতন
- সেপারেটরি ফানেল
- ঊর্ধ্বপাতন
উত্তর – 3. সেপারেটরি ফানেল
দুটি অমিশ্রণীয় তরলকে পৃথক করা যায় যে প্রক্রিয়ার সাহায্যে তা হল –
- পাতন
- সেপারেটরি ফানেল
- পরিস্রাবণ
- আংশিক পাতন
উত্তর – 2. সেপারেটরি ফানেল
দুধ থেকে দুধের সর পৃথক করা হয় –
- অধঃক্ষেপন
- ঊর্ধ্বপাতন
- সেন্ট্রিফিউজ যন্ত্র
- পাতন -এর দ্বারা
উত্তর – 3. সেন্ট্রিফিউজ যন্ত্র
কালির মিশ্রণের উপাদানগুলিকে পৃথক করা যায় –
- পেপার ক্রোমাটোগ্রাফি
- আস্রাবণ প্রক্রিয়া
- পরিস্রাবণ প্রক্রিয়া
- আংশিক পাতন প্রক্রিয়া
উত্তর – 1. পেপার ক্রোমাটোগ্রাফি
শূন্যস্থান পূরণ করো
___ একটি সমসত্ত্ব মিশ্রণ।
উত্তর – লবণ জল একটি সমসত্ত্ব মিশ্রণ।
___ একটি অসমসত্ত্ব মিশ্রণ।
উত্তর – ধোঁয়া একটি অসমসত্ত্ব মিশ্রণ।
অসমসত্ত্ব মিশ্রণকে ___ ও ___ পদ্ধতিতে পৃথক করা হয়।
উত্তর – অসমসত্ত্ব মিশ্রণকে আস্রাবণ ও পরিস্রাবণ পদ্ধতিতে পৃথক করা হয়।
সমসত্ত্ব মিশ্রণকে ___ ও ___ পদ্ধতিতে পৃথক করা হয়।
উত্তর – সমসত্ত্ব মিশ্রণকে পাতন ও আংশিক পাতন পদ্ধতিতে পৃথক করা হয়।
কোনো উদ্বায়ী ও কঠিন পদার্থের মিশ্রণ থেকে উপাদানগুলিকে ___ পদ্ধতিতে পৃথক করবে।
উত্তর – কোনো উদ্বায়ী ও কঠিন পদার্থের মিশ্রণ থেকে উপাদানগুলিকে ঊর্ধ্বপাতন পদ্ধতিতে পৃথক করবে।
পটাশিয়াম নাইট্রেটের জলীয় দ্রবণ থেকে ___ পদ্ধতির সাহায্যে জল ও পটাশিয়াম নাইট্রেট পৃথক করা হয়।
উত্তর – পটাশিয়াম নাইট্রেটের জলীয় দ্রবণ থেকে পাতন পদ্ধতির সাহায্যে জল ও পটাশিয়াম নাইট্রেট পৃথক করা হয়।
মিথানলের স্ফুটনাঙ্ক ___।
উত্তর – মিথানলের স্ফুটনাঙ্ক 64.7°C।
জলের স্ফুটনাঙ্ক ___।
উত্তর – জলের স্ফুটনাঙ্ক 100°C।
একাধিক তরলের মিশ্রণে স্ফুটনাঙ্কের পার্থক্য থাকলে ___ দ্বারা পৃথক করা হয়।
একাধিক তরলের মিশ্রণে স্ফুটনাঙ্কের পার্থক্য থাকলে আংশিক পাতন দ্বারা পৃথক করা হয়।
তরলের চাপ বাড়ালে স্ফুটনাঙ্ক ___ পায়।
উত্তর – তরলের চাপ বাড়ালে স্ফুটনাঙ্ক বৃদ্ধি পায়।
দার্জিলিং -এ জলের স্ফুটনাঙ্ক কলকাতার চেয়ে ___ হয়।
উত্তর – দার্জিলিং -এ জলের স্ফুটনাঙ্ক কলকাতার চেয়ে কম হয়।
প্রেশার কুকারে বায়ুর চাপ ___ বায়ুমণ্ডলীয় চাপের সমান।
উত্তর – প্রেশার কুকারে বায়ুর চাপ 2 বায়ুমণ্ডলীয় চাপের সমান।
অপরিশোধিত পেট্রোলিয়ামকে ___ বলে।
উত্তর – অপরিশোধিত পেট্রোলিয়ামকে Crude Oil বলে।
পেট্রোলিয়াম পরিশোধন করা হয় ___ পদ্ধতির দ্বারা।
উত্তর – পেট্রোলিয়াম পরিশোধন করা হয় আংশিক পাতন পদ্ধতির দ্বারা।
পেট্রোলিয়ামের আংশিক পাতনে 220°C – 250°C-এর ভিতরে প্রাপ্ত পাতিত অংশ ___।
উত্তর – পেট্রোলিয়ামের আংশিক পাতনে 220°C – 250°C-এর ভিতরে প্রাপ্ত পাতিত অংশ কেরোসিন।
পেট্রোলিয়ামে অশুদ্ধিরূপে ___ থাকে।
উত্তর – পেট্রোলিয়ামে অশুদ্ধিরূপে সালফার (S) থাকে।
পরস্পর মেশে না এরূপ তরল মিশ্রণ পৃথক করা হয় ___ দ্বারা।
উত্তর – পরস্পর মেশে না এরূপ তরল মিশ্রণ পৃথক করা হয় বিয়োজী ফানেল দ্বারা।
বিয়োজী ফানেলে কম ঘনত্বের তরলটি ___ স্তরে থাকে।
উত্তর – বিয়োজী ফানেলে কম ঘনত্বের তরলটি উপরের স্তরে থাকে।
বিয়োজী ফানেলের সাহায্যে দুটি ___ তরলকে পৃথক করা হয়।
উত্তর – বিয়োজী ফানেলের সাহায্যে দুটি অমিশ্রণীয় তরলকে পৃথক করা হয়।
জল ও পেট্রোলের ঘনত্ব ___।
উত্তর – জল ও পেট্রোলের ঘনত্ব ভিন্ন।
1AD সময়কাল নাগাদ, ___ গ্রিক রসায়নবিদদের কাছে প্রথম পাতন প্রক্রিয়ার নিদর্শন পাওয়া যায়।
উত্তর – 1AD সময়কাল নাগাদ, আলেকজান্দ্রিয়ার গ্রিক রসায়নবিদদের কাছে প্রথম পাতন প্রক্রিয়ার নিদর্শন পাওয়া যায়।
সারা পৃথিবীতে দৈনিক ___ ব্যারেল খনিজ তেল আংশিক পাতন পদ্ধতিতে পরিশোধিত হয়।
উত্তর – সারা পৃথিবীতে দৈনিক 84,249,000 ব্যারেল খনিজ তেল আংশিক পাতন পদ্ধতিতে পরিশোধিত হয়।
পৃথিবীর প্রাচীনতম বৃহৎ খনিজতেল পরিশোধন কেন্দ্রটি গড়ে ওঠে ___ নামক স্থানে, 1856 খ্রিস্টাব্দে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন এই পরিশোধন কেন্দ্রটিকে ___ করে দেওয়া হয়।
উত্তর – পৃথিবীর প্রাচীনতম বৃহৎ খনিজতেল পরিশোধন কেন্দ্রটি গড়ে ওঠে রোমানিয়ার প্লোয়েস্টি নামক স্থানে, 1856 খ্রিস্টাব্দে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন এই পরিশোধন কেন্দ্রটিকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়।
ঠিক বা ভুল নির্বাচন করো
পাতন প্রণালীতে লিবিগ শীতক ব্যবহার করা হয়।
উত্তর – ঠিক।
তুঁতের জলীয় দ্রবণ থেকে তুঁতে ও জল পৃথক করা হয় আংশিক পাতন পদ্ধতিতে।
উত্তর – ভুল।
সঠিক উত্তর – পাতন পদ্ধতিতে।
ঊর্ধ্বপাতন পদ্ধতিতে ব্যবহৃত হয় NH4Cl ও বালির মিশ্রণ।
উত্তর – ঠিক।
তরল বায়ুর উপাদানগুলিকে আংশিক পাতনের সাহায্যে পৃথক করা হয়।
উত্তর – ঠিক।
দুটি অদ্রবণীয় তরলকে একত্রে রাখলে তারা একটি মাত্র স্তর গঠন করে।
উত্তর – ভুল।
সঠিক উত্তর – দুটি পৃথক স্তর গঠন করে।
তেল ও জলের মিশ্রণ থেকে উপাদানগুলিকে আংশিক পাতনের সাহায্যে পৃথক করা হয়।
উত্তর – ভুল।
সঠিক উত্তর – বিয়োজী ফানেলের সাহায্যে।
দু-একটি শব্দে উত্তর দাও
একটি সমসত্ত্ব মিশ্রণের উদাহরণ দাও।
একটি সমসত্ত্ব মিশ্রণের উদাহরণ হল চিনির জলীয় দ্রবণ।
কঠিন মিশ্রণের উদাহরণ দাও।
কঠিন মিশ্রণের উদাহরণ হল পিতল।
মিশ্রণ ও যৌগের মধ্যে কোনটির উপাদানগুলি সহজে পৃথক করা যায়?
মিশ্রণ ও যৌগের মধ্যে মিশ্রণের উপাদানগুলি সহজে পৃথক করা যায়।
জলে দ্রবীভূত অপদ্রব থেকে জলকে কী পদ্ধতিতে শোধন করা যায়?
জলে দ্রবীভূত অপদ্রব থেকে জলকে পাতন পদ্ধতিতে শোধন করা যায়।
পাতন প্রক্রিয়ার কটি ধাপ ও কী কী?
পাতন প্রক্রিয়ার দুটি ধাপ – বাষ্পীভবন ও ঘনীভবন।
চিনির দ্রবণ থেকে মিছরি তৈরি করা হয় কোন্ পদ্ধতিতে?
চিনির দ্রবণ থেকে মিছরি তৈরি করা হয় কেলাসন পদ্ধতিতে।
পাতনে গ্রাহক পাত্রে যা জমা হয় তাকে কী বলে?
পাতনে গ্রাহক পাত্রে যা জমা হয় তাকে পাতিত দ্রব্য বলে।
ইথার (স্ফুটানাঙ্ক 35°C) ও বেঞ্জিনের (স্ফুটনাঙ্ক 80°C) মিশ্রণ থেকে উপাদানগুলিকে কী পদ্ধতিতে পৃথক করবে?
ইথার (স্ফুটানাঙ্ক 35°C) ও বেঞ্জিনের (স্ফুটনাঙ্ক 80°C) মিশ্রণ থেকে উপাদানগুলিকে সাধারণ পাতন পদ্ধতিতে পৃথক করবে।
নদীর জল থেকে বিশুদ্ধ জল পেতে কোন পদ্ধতি প্রয়োগ করবে?
নদীর জল থেকে বিশুদ্ধ জল পেতে পাতন পদ্ধতি প্রয়োগ করবে।
পাতন ফ্লাস্কে মিথানল ও অ্যাসিটোনের মিশ্রণে তাপ প্রয়োগ করলে কোনটি আগে পাতিত হয়?
পাতন ফ্লাস্কে মিথানল ও অ্যাসিটোনের মিশ্রণে তাপ প্রয়োগ করলে অ্যাসিটোন (56°C) আগে পাতিত হয়।
ক্লোরোফর্মের মধ্যে আয়োডিন দ্রবীভূত থাকলে উপাদানগুলিকে পৃথক করবে কীভাবে?
ক্লোরোফর্মের মধ্যে আয়োডিন দ্রবীভূত থাকলে উপাদানগুলিকে পৃথক করবে পাতন পদ্ধতিতে।
কয়লার গুঁড়ো ও গন্ধকের মিশ্রণকে (বারুদ) পৃথক করবে কীভাবে?
কয়লার গুঁড়ো ও গন্ধকের মিশ্রণকে (বারুদ) পৃথক করবে গন্ধককে কার্বন ডাইসালফাইডে দ্রবীভূত করে।
কাছাকাছি স্ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট পরস্পর মিশ্রণীয় এমন দুটি তরলকে পৃথক করবে কোন্ পদ্ধতি দ্বারা?
কাছাকাছি স্ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট পরস্পর মিশ্রণীয় এমন দুটি তরলকে পৃথক করবে আংশিক পাতন পদ্ধতি দ্বারা।
দুটি মিশ্রণীয় তরলের পৃথকীকরণের পদ্ধতিটির নাম লেখো।
দুটি মিশ্রণীয় তরলের পৃথকীকরণের পদ্ধতিটির নাম হল আংশিক পাতন।
আংশিক পাতন প্রক্রিয়ার দ্বারা দুটি তরলকে পরস্পর থেকে পৃথক করতে কোন্ যন্ত্রটি ব্যবহার করা হয়?
আংশিক পাতন প্রক্রিয়ার দ্বারা দুটি তরলকে পরস্পর থেকে পৃথক করতে আংশিক পাতন স্তম্ভ যন্ত্রটি ব্যবহার করা হয়।
অ্যাসিটোন ও জলের মিশ্রণ থেকে উপাদানগুলিকে কোন্ প্রক্রিয়ায় পৃথক করবে?
অ্যাসিটোন ও জলের মিশ্রণ থেকে উপাদানগুলিকে আংশিক পাতন প্রক্রিয়ায় প্রক্রিয়ায় পৃথক করবে।
জল ও নাইট্রিক অ্যাসিডের মিশ্রণকে কোন্ পদ্ধতিতে পৃথক করবে?
জল ও নাইট্রিক অ্যাসিডের মিশ্রণকে আংশিক পাতন পদ্ধতিতে পৃথক করবে।
অ্যাজিওট্রপিক মিশ্রণের উদাহরণ দাও।
অ্যাজিওট্রপিক মিশ্রণের উদাহরণ হল 95.6% ইথাইল অ্যালকোহল ও 4.4% জলের মিশ্রণ (আয়তন হিসেবে)।
পেট্রোলিয়াম বিশুদ্ধিকরণের ক্ষেত্রে কোন্ পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়?
পেট্রোলিয়াম বিশুদ্ধিকরণের ক্ষেত্রে আংশিক পাতন পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়।
পেট্রোলিয়ামের আংশিক পাতন থেকে প্রাপ্ত একটি কঠিন পদার্থের নাম লেখো।
পেট্রোলিয়ামের আংশিক পাতন থেকে প্রাপ্ত একটি কঠিন পদার্থের নাম হল পিচ বা অ্যাসফল্ট।
LPG -এর উৎস কী?
LPG -এর উৎস অপরিশোধিত পেট্রোলিয়াম।
পেট্রোলিয়ামের আংশিক পাতনে 20°C তাপমাত্রার কাছাকাছি পাতিত দ্রব্যটি কী কাজে ব্যবহৃত হয়?
পেট্রোলিয়ামের আংশিক পাতনে 20°C তাপমাত্রার কাছাকাছি পাতিত দ্রব্যটিপেট্রোলিয়াম গ্যাস গৃহস্থালি ও শিল্পের জ্বালানি রূপে ব্যবহৃত হয় কাজে ব্যবহৃত হয়।
খনিজ তেল পরিশোধনের সময় 250° – 300°C উষ্ণতায় কী পদার্থ পাওয়া যায়?
খনিজ তেল পরিশোধনের সময় 250° – 300°C উষ্ণতায় কেরোসিন পাওয়া যায়।
পেট্রোলিয়ামের আংশিক পাতনে 170°C উষ্ণতায় প্রাপ্ত পদার্থটির একটি ব্যবহার লেখো।
পেট্রোলিয়ামের আংশিক পাতনে 170°C উষ্ণতায় প্রাপ্ত পদার্থটির একটি ব্যবহার হল – কেরোসিন জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
পেট্রোলিয়াম থেকে প্রাপ্ত কয়েকটি মূল্যবান তরল জ্বালানির নাম লেখো।
পেট্রোলিয়াম থেকে প্রাপ্ত কয়েকটি মূল্যবান তরল জ্বালানির নাম হল ডিজেল, পেট্রোল, কেরোসিন।
ডিজেলের উৎস কী?
ডিজেলের উৎস হল অশোধিত পেট্রোলিয়াম।
পেট্রোলিয়ামকে কোন্ উষ্ণতায় আংশিক পাতন করলে ন্যাপথা পাওয়া যায়?
পেট্রোলিয়ামকে 120°C – 150°C উষ্ণতায় আংশিক পাতন করলে ন্যাপথা পাওয়া যায়।
পেট্রোলিয়াম গ্যাসের প্রধান উপাদান কী?
পেট্রোলিয়াম গ্যাসের প্রধান উপাদান হল বিউটেন।
পেট্রোলিয়াম -এর পরিশোধনে অবশেষরূপে কী পাওয়া যায়?
পেট্রোলিয়াম -এর পরিশোধনে অবশেষরূপে অ্যাসফল্ট বা পিচ পাওয়া যায়।
পেট্রোলিয়ামের পরিশোধনে অবশেষ রূপে প্রাপ্ত পদার্থটির একটি ব্যবহার উল্লেখ করো।
পেট্রোলিয়ামের পরিশোধনে অবশেষ রূপে প্রাপ্ত পদার্থটির একটি ব্যবহার হল – রাস্তা তৈরিতে, কালো রং প্রস্তুতিতে।
পেট্রোলিয়ামের আংশিক পাতনে 20°C -এর কাছাকাছি তাপমাত্রায় পাতিত পদার্থ হিসেবে মূলত কী পাওয়া যায়?
পেট্রোলিয়ামের আংশিক পাতনে 20°C -এর কাছাকাছি তাপমাত্রায় পাতিত পদার্থ হিসেবে মূলত পেট্রোলিয়াম গ্যাস পাওয়া যায়।
ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রোল ও পিচ্ছিলকারক তেলকে তাদের স্ফুটনাঙ্কের নিম্নক্রমে সাজাও।
পিচ্ছিলকারক তেল > ডিজেল > কেরোসিন > পেট্রোল।
গ্যাসোলিন সাধারণত কী নামে পরিচিত?
গ্যাসোলিন সাধারণত পেট্রোল নামে পরিচিত।
ন্যাপথা কোন্ কাজে ব্যবহৃত হয়?
ন্যাপথা রং ও বার্নিশের কাজে দ্রাবকরূপে ব্যবহৃত হয়।
DDT -এর দ্রাবকরূপে ব্যবহৃত হয় এমন একটি পদার্থের নাম করো।
DDT -এর দ্রাবকরূপে ব্যবহৃত হয় এমন একটি পদার্থের নাম হল কেরোসিন।
জামাকাপড় ড্রাইওয়াশ করতেব্যবহৃত হয় এমন একটি পদার্থের নাম লেখো।
জামাকাপড় ড্রাইওয়াশ করতেব্যবহৃত হয় এমন একটি পদার্থের নাম হল পেট্রোল।
স্ফুটনাঙ্কের পাল্লার ভিত্তিতে ঊর্ধ্বক্রমে সাজাও –ভেসলিন, প্যারাফিন, পিচ, পেট্রোল।
পেট্রোল < ভেসলিন < প্যারাফিন < পিচ।
উপস্থিত কার্বন পরমাণুর সংখ্যার বিচারে ঊর্ধ্বক্রমে সাজাও – ডিজেল অয়েল, ফুয়েল অয়েল, পেট্রোলিয়াম গ্যাস, লুব্রিকেটিং অয়েল।
পেট্রোলিয়াম গ্যাস < ডিজেল অয়েল < লুব্রিকেটিং অয়েল < ফুয়েল অয়েল।
পাত্রে ঢাকা দিয়ে জল ফোটালে স্ফুটনাঙ্ক বাড়ে না কমে?
পাত্রে ঢাকা দিয়ে জল ফোটালে স্ফুটনাঙ্ক বাড়ে।
জল ও পেট্রোলের মিশ্রণ আলাদা করবে কীভাবে?
জল ও পেট্রোলের মিশ্রণ আলাদা করবে – পৃথকীকরণ ফানেল বা বিয়োজী ফানেলের সাহায্যে।
তেল ও জলের মিশ্রণ থেকে উপাদানগুলিকে কোন্ উপকরণের সাহায্যে পৃথক করা হয়?
তেল ও জলের মিশ্রণ থেকে উপাদানগুলিকে বিয়োজী ফানেলের সাহায্যে উপকরণের সাহায্যে পৃথক করা হয়।
বিয়োজী ফানেল দ্বারা পৃথক করা যায় না এমন একটি তরল মিশ্রণের উদাহরণ দাও।
বিয়োজী ফানেল দ্বারা পৃথক করা যায় না এমন একটি তরল মিশ্রণের উদাহরণ হল ইমালসন।
এমন দুটি তরলের উদাহরণ দাও যাদের মেশালে দুটি স্তরে অবস্থান করে।
এমন দুটি তরলের উদাহরণ হল – জল ও বেঞ্জিন, যাদের মেশালে দুটি স্তরে অবস্থান করে।
জল ও পারদের মিশ্রণকে কোন্ পদ্ধতিতে পৃথক করা হয়?
জল ও পারদের মিশ্রণকে বিয়োজী ফানেলের সাহায্যে পৃথক করা হয়।
কেরোসিন ও জলের মিশ্রণকে তাপ প্রয়োগ না করে কোন্ যন্ত্র দ্বারা পৃথক করা যায়?
কেরোসিন ও জলের মিশ্রণকে তাপ প্রয়োগ না করে বিয়োজী ফানেল যন্ত্র দ্বারা পৃথক করা যায়।
জল ও বেঞ্জিনের মিশ্রণকে কোন্ পদ্ধতিতে পৃথক করবে?
জল ও বেঞ্জিনের মিশ্রণকে বিয়োজী ফানেলের পদ্ধতিতে পৃথক করবে।
রান্নার গ্যাসের উৎস কী?
রান্নার গ্যাসের উৎস হল পেট্রোলিয়াম গ্যাস।
ক্লোরোফর্ম ও জলের মিশ্রণকে বিয়োজী ফানেলের সাহায্যে পৃথক করলে কোনটি ফানেলের মধ্যে পড়ে থাকবে?
ক্লোরোফর্ম ও জলের মিশ্রণকে বিয়োজী ফানেলের সাহায্যে পৃথক করলে জল ফানেলের মধ্যে পড়ে থাকবে।
ভারতবর্ষের জামনগর রিফাইনারিতে প্রতিদিন কত ব্যারেল খনিজ তেলের আংশিক পাতন করা হয়, এবং এটি পৃথিবীর কোন বৃহত্তম রিফাইনারি?
ভারতবর্ষের জামনগর রিফাইনারিতে প্রতিদিন 1,240,000 ব্যারেল খনিজ তেলের আংশিক পাতন করা হয়। এটি হল পৃথিবীর সর্ববৃহৎ রিফাইনারি।
চিউয়িং গাম, রঙিন ক্রেয়ন ও পেনসিল তৈরির অন্যতম প্রধান উপাদান কী, যা খনিজ তেলের আংশিক পাতনের উপজাতরূপে পাওয়া যায়?
চিউয়িং গাম, রঙিন ক্রেয়ন, পেনসিল তৈরির অন্যতম প্রধান উপাদান হল প্যারাফিন মোম, যা পাওয়া যায় খনিজ তেলের আংশিক পাতনের উপজাতরূপে।
বামদিকের সঙ্গে ডানদিক মিল করো
নীচের বামদিকের সঙ্গে ডানদিক মিলিয়ে লেখো।
বামদিক | ডানদিক | উত্তর |
1. খনির নীচে জলের স্ফুটনাঙ্ক | a. তেলের দ্রাবক | 1. → d. |
2. তরল অক্সিজেনের স্ফুটনাঙ্ক | b. আংশিক পাতন পদ্ধতিতে পৃথক হয় | 2. → e. |
3. স্পিরিট হল একটি | c. পরস্পর অমিশ্রণীয় | 3. → g. |
4. অ্যালকোহল ও জল | d. বেড়ে যায় | 4. → i. |
5. বেঞ্জিন ও জল | e. -183°C | 5. → c. |
6. দুটি পরস্পর মিশ্রণীয় তরল | f. ঔষধ প্রস্তুতিতে ব্যবহৃত হয় | 6. → b. |
7. ভেসলিন | g. উদ্বায়ী তরল | 7. → f. |
8. ন্যাপথা | h. কমে যায় | 8. → a. |
9. দার্জিলিং -এ জলের স্ফুটনাঙ্ক | i. পরস্পর মিশ্রণীয় | 9. → h. |
নীচের বামদিকের সঙ্গে ডানদিক মিলিয়ে লেখো।
বামদিক | ডানদিক | উত্তর |
1. মিথাইল অ্যালকোহল ও জলের মিশ্রণ | a. পৃথকীকরণের ফানেলের সাহায্য পৃথকীকরণ | 1. → c. |
2. NH4Cl ও বালির মিশ্রণ | b. আস্রাবণ | 2. → d. |
3. দুটি পরস্পর অদ্রবণীয় তরলের মিশ্রণ | c. আংশিক পাতন | 3. → a. |
4. জলে চিনির দ্রবণ | d. ঊর্ধ্বপাতন | 4. → e. |
5. বালি ও জলের মিশ্রণ | e. পাতন | 5. → b. |
For High-Types
তরল বায়ুর উপাদানগুলিকে পৃথক করার জন্য কোন্ পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া হয়? ব্যাখ্যা করো।
বায়ুর বিভিন্ন উপাদানগুলির তরল অবস্থায় স্ফুটনাঙ্ক ভিন্ন ভিন্ন হওয়ায় আংশিক পাতন পদ্ধতির সাহায্যে এদের পৃথক করা যায়। বায়ুতে উপস্থিত বিভিন্ন গ্যাস ও তাদের স্ফুটনাঙ্ক নিম্নরূপ –
গ্যাসের নাম | স্ফুটনাঙ্ক (তরলীকৃত গ্যাসের) |
নাইট্রোজেন | -196°C |
আর্গন | -186°C |
অক্সিজেন | -183°C |
অতএব, তরল বায়ুর আংশিক পাতন করলে সর্বপ্রথমে নাইট্রোজেন, তারপর আর্গন (নিষ্ক্রিয় গ্যাস) এবং সবশেষে অক্সিজেন গ্যাস পৃথক হয়।
কম চাপে জলের স্ফুটনাঙ্ক কমে যাওয়ার একটি উদাহরণ দাও।
ইনজেকশনের সিরিঞ্জের মাধ্যমে (ছুঁচটি বাদ দিয়ে) পাত্র থেকে কিছুটা গরম জল টেনে নেওয়া হল। এবার সিরিঞ্জের মুখটি আঙুল দিয়ে বন্ধ করে পিস্টনটি পেছনের দিকে টানলে দেখা যাবে, ভিতরের জলটি ফুটতে শুরু করে, যদিও ওই জলের উষ্ণতা 100°C -এর কম। এর কারণ – পিস্টনটি টানলে সিরিঞ্জের ভিতরের বায়ু প্রসারিত হয় অর্থাৎ, তার আয়তন বেড়ে যায়। ফলে, চাপ কমে যায়। আর চাপ কমলে, স্ফুটনাঙ্ক কমে যায় বলে জল ফুটতে শুরু করে।
সংহার পাতন কী?
সংহার পাতন – সাধারণত পাতন প্রক্রিয়ায় প্রাপ্ত পাতিত দ্রব্য ও অবশেষকে পরস্পর মেশালে পুনরায় দ্রবণ তৈরি হয়। কিন্তু কখনো কখনো পাতন ফ্লাস্কে পড়ে থাকা অবশেষ ও গ্রাহক পাত্রে জমা পাতিত দ্রব্যকে পরস্পর মেশালেও পূর্বের দ্রবণ তৈরি করা যায় না। এইরূপ পাতন প্রক্রিয়াকে সংহার পাতন বলা হয়। যেমন – কয়লার পাতন করলে অবশেষরূপে কোক ও গ্যাসকার্বন পাওয়া যায় এবং পাতিত দ্রব্য হিসেবে কোল গ্যাস ও তরল আলকাতরা পাওয়া যায়। কিন্তু এই পদার্থগুলিকে মেশালে পুনরায় কয়লা পাওয়া যায় না।
পেপার ক্রোমাটোগ্রাফি কাকে বলে?
ফিলটার পেপার এবং উপযুক্ত দ্রাবকের সাহায্যে কোনো তরল মিশ্রণের, ফিলটার পেপারে অধিশোষিত হওয়ার ক্ষমতার পার্থক্যের উপর ভিত্তি করে, উপাদানগুলি পৃথক করার পদ্ধতিকেই বলে পেপার ক্রোমাটোগ্রাফি। লেখার কালির মধ্যে বিভিন্ন রঙিন উপাদানগুলিকে পেপার ক্রোমাটোগ্রাফি পদ্ধতিতে পৃথক করা হয়।
দুধ থেকে কীভাবে সর বা ক্রিম তোলা হয়?
সেন্ট্রিফিউজ (Centrifuge) পদ্ধতিতে কোনো তরলে কঠিনের সমসত্ত্ব মিশ্রণ থেকে উপাদানগুলিকে পৃথক করা হয়। যে যন্ত্রে এটি করা হয় তাকে বলে সেন্ট্রিফিউজ যন্ত্র। এক্ষেত্রে দুধকে সেন্ট্রিফিউজ যন্ত্রে রেখে যন্ত্রটি খুব জোরে ঘোরানো হয়। এর ফলে মিশ্রণে যে ঘূর্ণনের সৃষ্টি হয় তাতে বেশি ঘনত্বের কণাগুলি তলায় জমা হয় এবং কম ঘনত্বের কণাগুলি দুধে ভাসতে থাকে। এইভাবে দুধের সর বা ক্রিমকে আলাদা করা হয়।
Class 9 Physical Science – Notes for All Chapters
Chapter Name | Tropics |
---|---|
পরিমাপ | পরিমাপ ও একক বিভিন্ন মাপের একক মাত্রা পরিমাপ |
বল ও গতি | স্থিতি ও গতি গতির সমীকরণ নিউটনের প্রথম গতিসূত্র নিউটনের দ্বিতীয় গতি সূত্র নিউটনের তৃতীয় গতিসূত্র বিভিন্ন ধরণের বল রৈখিক ভরবেগ রৈখিক ভরবেগ সংরক্ষণ |
পদার্থ : গঠন ও ধর্ম | তরল ও বায়ুর চাপ আর্কিমিডিসের নীতি পৃষ্ঠটান সান্দ্রতা বার্নোলির নীতি স্থিতিস্থাপকতা |
পদার্থ : পরমাণুর গঠন ও পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ | পরমাণুর গঠন মোলের ধারণা দ্রবণ অ্যাসিড, ক্ষার, লবণ মিশ্রণের উপাদানের পৃথকীকরণ জল |
শক্তির ক্রিয়া , কার্য, ক্ষমতা | শক্তির ক্রিয়া , কার্য, ক্ষমতা |
তাপ | ক্যালোরিমিতি কার্য ও তাপের তুল্যতা লীনতাপ সম্পৃক্ত ও অসম্পৃক্ত বাষ্প জলের ব্যতিক্রান্ত প্রসারণ |
শব্দ | শব্দের উৎস : কম্পন শব্দের বিস্তার : তরঙ্গ শব্দের কয়েকটি ধর্ম শব্দের বৈশিষ্ট্য মানুষের কান ও শব্দ শোনার কৌশল শব্দদূষণ |
আজকের আর্টিকেলে আমরা নবম শ্রেণির ভৌতবিজ্ঞান বইয়ের চতুর্থ অধ্যায় “পদার্থ : পরমাণুর গঠন ও পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” এর “মিশ্রণের উপাদানের পৃথকীকরণ” থেকে পরীক্ষায় আসা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নোত্তরগুলো নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা, এমনকি চাকরি বা যেকোনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্যও উপযোগী। কারণ, এই অধ্যায়ের প্রশ্ন প্রায়ই বিভিন্ন পরীক্ষায় কমন আসে।
আশা করি, এই আর্টিকেলটি আপনাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে কিছুটা হলেও সাহায্য করবে। যদি কোনো প্রশ্ন, মতামত বা সাহায্যের প্রয়োজন হয়, নিচে কমেন্ট করে জানাতে পারেন কিংবা টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন—আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে আমি সর্বদা প্রস্তুত।
ধন্যবাদ সবাইকে।
মন্তব্য করুন