এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণতা হ্রাস পায় কেন? বিশ্ব উষ্ণায়ন কী?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। “উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণতা হ্রাস পায় কেন? বিশ্ব উষ্ণায়ন কী?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের দ্বিতীয় অধ্যায় “বায়ুমণ্ডল – বায়ুমণ্ডলের তাপ, উষ্ণতা ও বিশ্ব উষ্ণায়ন” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণতা হ্রাস পায় কেন?
উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণতা হ্রাস পাওয়ার কারণ –
সমুদ্র সমতল থেকে যত ওপরে ওঠা যায়, উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণতা সেই হারে হ্রাস পেতে থাকে। এর কারণ হল –
- ওপরের স্তরের বায়ুতে জলীয় বাষ্প ও কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ কম থাকে তাই ওপরের স্তরের বায়ু কম তাপ শোষণ করে।
- ওপরের বায়ুস্তরে ধূলিকণা খুব কম থাকায় তাপ কম শোষিত হয়।
- ভূপৃষ্ঠ থেকে নিমজ্জিত তাপের কম অংশ ওপরের বায়ুমণ্ডলে পৌঁছোয়।
- ওপরের বায়ুস্তরের ঘনত্ব কম, ফলে দ্রুত তাপ বিকিরণ করে। ফলে ওপরের স্তরের তাপমাত্রা কম থাকে।
বিশ্ব উষ্ণায়ন কী?
বিশ্ব উষ্ণায়ন –
বিগত কয়েক শতাব্দী ধরে জনবিস্ফোরণ, নগরায়ণ, শিল্পায়ন, যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি, নির্বিচারে অরণ্য নিধন, প্রভৃতি কারণে গ্রিনহাউস গ্যাসের (CO2, CFC4, CH4, N2O) পরিমাণ বৃদ্ধি, অন্যান্য গ্যাসের ভারসাম্য বিঘ্নিত প্রভৃতির ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বায়ুমণ্ডল তথা পৃথিবীর এই ক্রমশ তাপমাত্রা বৃদ্ধির ঘটনাকে বিজ্ঞানীরা Global Warming বা বিশ্ব উষ্ণায়ন আখ্যা দিয়েছেন।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
উচ্চতা বাড়লে উষ্ণতা কমে যায় কেন?
উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বায়ুমণ্ডলের ঘনত্ব কমে যায়, জলীয় বাষ্প ও কার্বন ডাইঅক্সাইডের মতো তাপ শোষণকারী গ্যাসের পরিমাণও হ্রাস পায়। এছাড়া, ভূপৃষ্ঠ থেকে বিকিরিত তাপের কম অংশই উপরের বায়ুমণ্ডলে পৌঁছায়, ফলে উচ্চতা বাড়ার সাথে সাথে তাপমাত্রা কমতে থাকে।
উচ্চতায় বায়ুর ঘনত্ব কমে যায় কেন?
বায়ুমণ্ডলের নিচের স্তরে বায়ুর চাপ বেশি থাকে, তাই বায়ুর অণুগুলো বেশি ঘনভাবে থাকে। উচ্চতা বাড়ার সাথে সাথে বায়ুর চাপ কমে যায়, ফলে বায়ুর ঘনত্বও হ্রাস পায়।
উচ্চ স্থানে তাপ শোষণ কম হয় কেন?
উচ্চ বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্প, কার্বন ডাইঅক্সাইড ও ধূলিকণার পরিমাণ কম থাকে, যা সূর্যের তাপ শোষণে সাহায্য করে। এগুলো কম থাকায় উপরের বায়ুস্তর কম তাপ ধরে রাখে।
উচ্চ স্থানে তাপ দ্রুত বেরিয়ে যায় কেন?
উচ্চ বায়ুমণ্ডলে বায়ুর অণুগুলি কম ঘন থাকে, তাই তাপ দ্রুত বিকিরিত হয়ে মহাশূন্যে চলে যায়। ফলে উচ্চ এলাকাগুলো ঠান্ডা থাকে।
পর্বতের চূড়ায় সবসময় ঠান্ডা থাকে কেন?
পর্বতের চূড়ায় বায়ুমণ্ডল পাতলা, তাপ ধরে রাখার ক্ষমতা কম এবং সূর্যের তাপ সরাসরি শোষিত হয় না। এ কারণে সেখানে তাপমাত্রা কম থাকে।
বিশ্ব উষ্ণায়নের সাথে উচ্চতার উষ্ণতা হ্রাসের সম্পর্ক কী?
বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বাড়লেও উচ্চ বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা সাধারণ নিয়ম অনুযায়ীই কম থাকে। তবে, ওজোন স্তর ক্ষয় ও বায়ুমণ্ডলের পরিবর্তনের কারণে কিছু উচ্চ অঞ্চলেও উষ্ণতা বৃদ্ধির প্রভাব দেখা যাচ্ছে।
উচ্চতা অনুযায়ী তাপমাত্রা কতটা কমে?
সাধারণত প্রতি 1000 মিটার (1 কিলোমিটার) উচ্চতা বৃদ্ধিতে প্রায় 6.5°C তাপমাত্রা কমে যায়। একে “ল্যাপস রেট” (Lapse Rate) বলে।
মেঘ উচ্চতায় থাকলে ঠান্ডা হয় কেন?
মেঘ সাধারণত উচ্চ বায়ুমণ্ডলে অবস্থান করে, যেখানে তাপমাত্রা কম। মেঘ সূর্যের তাপ শোষণ করলেও আশেপাশের বায়ুস্তর ঠান্ডা থাকায় তা শীতল অনুভূত হয়।
উঁচু স্থানে বাতাস বেশি ঠান্ডা লাগে কেন?
উচ্চতায় বায়ুর চাপ ও ঘনত্ব কম থাকায় শরীরের তাপ দ্রুত বেরিয়ে যায়, ফলে ঠান্ডা বেশি অনুভূত হয়।
উচ্চতা বাড়লে শ্বাস নিতে কষ্ট হয় কেন?
উচ্চতায় বায়ুর চাপ কমে যায়, ফলে অক্সিজেনের পরিমাণও কমে যায়। এ কারণে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণতা হ্রাস পায় কেন? বিশ্ব উষ্ণায়ন কী?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণতা হ্রাস পায় কেন? বিশ্ব উষ্ণায়ন কী?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের দ্বিতীয় অধ্যায় “বায়ুমণ্ডল – বায়ুমণ্ডলের তাপ, উষ্ণতা ও বিশ্ব উষ্ণায়ন” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।