এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “মুখ্য জোয়ার ও গৌণ জোয়ার সম্পর্কে টীকা লেখো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। “মুখ্য জোয়ার ও গৌণ জোয়ার সম্পর্কে টীকা লেখো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের তৃতীয় অধ্যায় “বারিমণ্ডল – সমুদ্রস্রোত ও জোয়ারভাটা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

মুখ্য জোয়ার সম্পর্কে টীকা লেখো।
মুখ্য জোয়ার –
পৃথিবীর কেন্দ্রের সঙ্গে চাঁদের কেন্দ্রের গড় দূরত্ব 3,84,800 কিমি। পৃথিবীর যে পৃষ্ঠ চাঁদের সামনের দিকে থাকে তার সঙ্গে চাঁদের পৃষ্ঠের দূরত্ব 3,78,400 কিমি এবং যে পৃষ্ঠ চাঁদের বিপরীত দিকে থাকে তার সঙ্গে চাঁদের পৃষ্ঠের দূরত্ব 3,91,200 কিমি অর্থাৎ পৃথিবীর যে অংশ চাঁদের সামনে থাকে তার বিপরীত অংশ থেকে দূরত্ব কম। ফলে সেখানে চাঁদের আকর্ষণ বল বেশি এবং সেখানে জলোচ্ছাসও বেশি ওঠে। এই ঘটনাকে বলে মুখ্য জোয়ার বা চান্দ্র জোয়ার।
একটি নির্দিষ্ট স্থানে একবার চান্দ্র জোয়ার থেকে পরের চান্দ্র জোয়ারের সময়ের ব্যবধান 24 ঘণ্টা 48 মিনিট 44 সেকেন্ড।
গৌণ জোয়ার সম্পর্কে টীকা লেখো।
গৌণ জোয়ার –
পৃথিবীর আবর্তনের প্রভাবে সৃষ্ট কেন্দ্রাতিগ বলের প্রভাবে সমুদ্রের জলের বাইরের দিকে নিক্ষিপ্ত হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। এই সময় এটি মহাকর্ষ বলের বিপরীত দিকে কাজ করে। চাঁদের আকর্ষণ বলের প্রভাবে পৃথিবীর যে অংশে জোয়ারের সৃষ্টি হয়, তার বিপরীত দিকে চাঁদের মহাকর্ষ বল অপেক্ষা কেন্দ্রাতিগ বল বেশি কার্যকরী হয়। ফলে সেখানেও সমুদ্রের জল ফুলে ওঠে। একে বলে গৌণ জোয়ার। তবে মুখ্য জোয়ারের থেকে গৌণ জোয়ারে সমুদ্রের জল কম ফুলে ওঠে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
মুখ্য জোয়ার কী?
মুখ্য জোয়ার হল চাঁদের মহাকর্ষীয় টানের কারণে পৃথিবীর যে অংশ চাঁদের দিকে থাকে, সেখানে সমুদ্রের জল ফুলে ওঠার ঘটনা। এই জোয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী হয় কারণ চাঁদের নিকটতম অংশে মহাকর্ষ বল বেশি কার্যকরী হয়।
মুখ্য জোয়ার কেন হয়?
1. পৃথিবীর চাঁদের দিকের অংশ চাঁদের বেশি নিকটে থাকে (প্রায় 3,78,400 কিমি), ফলে সেখানে চাঁদের মহাকর্ষ বল বেশি কাজ করে।
2. এই বল সমুদ্রের জলকে আকর্ষণ করে, ফলে জল ফুলে ওঠে এবং জোয়ারের সৃষ্টি হয়।
মুখ্য জোয়ারের সময়কাল কত?
একটি নির্দিষ্ট স্থানে একবার মুখ্য জোয়ার থেকে পরবর্তী মুখ্য জোয়ারের মধ্যে সময়ের ব্যবধান 24 ঘণ্টা 48 মিনিট 44 সেকেন্ড।
কেন মুখ্য জোয়ারের সময় 24 ঘণ্টার বেশি লাগে?
কারণ চাঁদ পৃথিবীর চারদিকে ঘুরতে থাকে, তাই পৃথিবীকে অতিরিক্ত 48 মিনিট 44 সেকেন্ড ঘুরতে হয় একই অবস্থানে ফিরে আসতে।
মুখ্য জোয়ার কি প্রতিদিন একই সময়ে হয়?
না, প্রতিদিন জোয়ারের সময় প্রায় 50 মিনিট করে পিছিয়ে যায় কারণ চাঁদের গতির কারণে।
জোয়ার-ভাটা কত প্রকার ও কী কী?
প্রধানত দুই প্রকার —
1. মুখ্য জোয়ার (Primary Tide) – চাঁদের আকর্ষণে সৃষ্টি হয়।
2. গৌণ জোয়ার (Secondary Tide) – পৃথিবীর আবর্তনের কেন্দ্রাতিগ বলের কারণে সৃষ্টি হয়।
সূর্যের প্রভাব কি মুখ্য জোয়ারে থাকে?
না, মুখ্য জোয়ার শুধুমাত্র চাঁদের মহাকর্ষের কারণে হয়। তবে সূর্যের মহাকর্ষও জোয়ার-ভাটাকে প্রভাবিত করে (যেমন – ভরা কোটাল ও মরা কোটালে)।
মুখ্য জোয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী কখন হয়?
অমাবস্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে যখন সূর্য, চাঁদ ও পৃথিবী এক সরলরেখায় থাকে, তখন মুখ্য জোয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী হয় (ভরা কোটাল)।
মুখ্য জোয়ার কি শুধু সমুদ্রেই হয়?
মূলত সমুদ্রে দেখা গেলেও বড় নদী বা হ্রদেও সামান্য প্রভাব পড়তে পারে, তবে তা খুবই কম।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “মুখ্য জোয়ার ও গৌণ জোয়ার সম্পর্কে টীকা লেখো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “মুখ্য জোয়ার ও গৌণ জোয়ার সম্পর্কে টীকা লেখো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের তৃতীয় অধ্যায় “বারিমণ্ডল – সমুদ্রস্রোত ও জোয়ারভাটা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন