এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “মুখ্য জোয়ার ও গৌণ জোয়ার কাকে বলে? মুখ্য জোয়ার ও গৌণ জোয়ারের মধ্যে পার্থক্য লেখো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। “মুখ্য জোয়ার ও গৌণ জোয়ার কাকে বলে? মুখ্য জোয়ার ও গৌণ জোয়ারের মধ্যে পার্থক্য লেখো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের তৃতীয় অধ্যায় “বারিমণ্ডল – সমুদ্রস্রোত ও জোয়ারভাটা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

মুখ্য জোয়ার ও গৌণ জোয়ার কাকে বলে?
মুখ্য জোয়ার –
আবর্তনের সময় পৃথিবীর যে অংশ চাঁদের সামনে আসে সেই অংশের সমুদ্রের জলরাশি চাঁদের আকর্ষণে সবচেয়ে বেশি স্ফীত হয়ে যে জোয়ারের সৃষ্টি হয় তাকে মুখ্য জোয়ার বা চান্দ্র জোয়ার বলে। একটি নির্দিষ্ট স্থানে একবার চান্দ্র জোয়ার থেকে পরের চান্দ্র জোয়ারের সময়ের ব্যবধান 24 ঘণ্টা 48 মিনিট 44 সেকেন্ড।
গৌণ জোয়ার –
পৃথিবীর যে অংশে মুখ্য জোয়ারের সৃষ্টি হয়, ঠিক সেই সময় তার বিপরীত দিকে অর্থাৎ প্রতিপাদ স্থানে পৃথিবীর কেন্দ্রাতিগ বলের প্রভাবে যে জোয়ারের সৃষ্টি হয় তাকে গৌণ জোয়ার বলে।
মুখ্য জোয়ার ও গৌণ জোয়ারের মধ্যে পার্থক্য লেখো।
মুখ্য জোয়ার ও গৌণ জোয়ারের পার্থক্য –
বিষয় | মুখ্য জোয়ার | গৌণ জোয়ার |
সংজ্ঞা | পৃথিবী আবর্তনরত অবস্থায় ভূপৃষ্ঠের যে অংশ চাঁদের সম্মুখীন হয় সেই স্থানের জলরাশি চন্দ্রের আকর্ষণে অধিক মাত্রায় ফুলে উঠে যে জোয়ারের সৃষ্টি হয় তাকে মুখ্য বা চান্দ্র জোয়ার বলে। | পৃথিবীর যে অংশে মুখ্য জোয়ার হয় তার বিপরীতে প্রতিপাদ স্থানে প্রধানত পৃথিবীর কেন্দ্রাতিগ বলের প্রভাবে যে জোয়ারের সৃষ্টি হয়, তাকে গৌণ জোয়ার বলে। |
কার্যকরী বল | চাঁদের আকর্ষণ বল এক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করে। | পৃথিবীর কেন্দ্রাতিগ বল এক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করে। |
জোয়ারের প্রাবল্য | মুখ্য জোয়ারের প্রাবল্য গৌণ জোয়ারের তুলনায় অনেক বেশি। | গৌণ জোয়ারের প্রাবল্য মুখ্য জোয়ারের তুলনায় বেশ কম। |
ভরকেন্দ্রের দূরত্ব | পৃথিবীর ভরকেন্দ্র থেকে মুখ্য জোয়ার স্থানের দূরত্ব কম অর্থাৎ চাঁদের অধিকতর নিকটবর্তী। | পৃথিবীর ভরকেন্দ্র থেকে গৌণ জোয়ার স্থানের দূরত্ব পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে দূরত্ব অপেক্ষা প্রায় 4800 কিমি অধিক হওয়ায় ওই স্থানে কেন্দ্রাতিগ বলের প্রভাবেই গৌণ জোয়ার হয়। |
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
মুখ্য জোয়ার কাকে বলে?
পৃথিবীর আবর্তনের সময় চাঁদের সামনে থাকা অংশের সমুদ্রের জলরাশি চাঁদের আকর্ষণে সবচেয়ে বেশি ফুলে উঠে যে জোয়ারের সৃষ্টি হয়, তাকে মুখ্য জোয়ার বা চান্দ্র জোয়ার বলে।
গৌণ জোয়ার কাকে বলে?
মুখ্য জোয়ারের সময় পৃথিবীর বিপরীত দিকে (প্রতিপাদ স্থানে) কেন্দ্রাতিগ বলের প্রভাবে যে জোয়ারের সৃষ্টি হয়, তাকে গৌণ জোয়ার বলে।
মুখ্য জোয়ারের সময়কাল কত?
একটি নির্দিষ্ট স্থানে একবার মুখ্য জোয়ার থেকে পরবর্তী মুখ্য জোয়ারের সময়ের ব্যবধান 24 ঘণ্টা 48 মিনিট 44 সেকেন্ড।
গৌণ জোয়ার কেন মুখ্য জোয়ারের চেয়ে দুর্বল হয়?
গৌণ জোয়ার শুধুমাত্র পৃথিবীর কেন্দ্রাতিগ বলের প্রভাবে সৃষ্টি হয়, যেখানে মুখ্য জোয়ার চাঁদের সরাসরি মহাকর্ষীয় টানের কারণে তৈরি হয়। ফলে গৌণ জোয়ারের প্রাবল্য কম হয়।
প্রতিপাদ স্থান কী?
পৃথিবীর যে অংশে মুখ্য জোয়ার হয়, তার ঠিক বিপরীত দিকের স্থানকে প্রতিপাদ স্থান বলে। এখানেই গৌণ জোয়ার সৃষ্টি হয়।
কেন্দ্রাতিগ বল কীভাবে গৌণ জোয়ার সৃষ্টি করে?
পৃথিবীর আবর্তনের সময় প্রতিপাদ স্থানে কেন্দ্রাতিগ বলের প্রভাবে জলরাশি ফুলে ওঠে, ফলে গৌণ জোয়ারের সৃষ্টি হয়।
জোয়ারের প্রাবল্য কীসের উপর নির্ভর করে?
জোয়ারের প্রাবল্য নির্ভর করে —
1. চাঁদ ও সূর্যের অবস্থান।
2. পৃথিবীর আবর্তন গতি।
3. সমুদ্রের গভীরতা ও ভূ-প্রাকৃতিক গঠন।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “মুখ্য জোয়ার ও গৌণ জোয়ার কাকে বলে? মুখ্য জোয়ার ও গৌণ জোয়ারের মধ্যে পার্থক্য লেখো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “মুখ্য জোয়ার ও গৌণ জোয়ার কাকে বলে? মুখ্য জোয়ার ও গৌণ জোয়ারের মধ্যে পার্থক্য লেখো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের তৃতীয় অধ্যায় “বারিমণ্ডল – সমুদ্রস্রোত ও জোয়ারভাটা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন