অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – গাঁয়ের বধূ – সলিল চৌধুরী

অষ্টম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের গাঁয়ের বধূ অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলি পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এইভাবে গাঁয়ের বধূ অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলি যদি তোমরা প্রস্তুত করে না যাও তাহলে পরীক্ষায় গাঁয়ের বধূ অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলোর উত্তর দিতে পারবে না। তাই গাঁয়ের বধূ অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলি ভালো করে মুখস্ত করে গেলে তোমরা পরীক্ষায় খুব ভালো ফলাফল পাবে।

এই কবিতায়, গীতিকার সলিল চৌধুরী বাংলার এক কৃষক দম্পতির সুখী জীবনযাত্রা ও তার করুণ পরিণতির চিত্র অঙ্কন করেছেন। কবিতার শুরুতে আমরা দেখতে পাই, এক সুন্দর গ্রামে বাস করে এক কৃষক দম্পতি। স্বামী সারাদিন ক্ষেতে কাজ করে ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরলে, স্ত্রী তার অপেক্ষায় থাকে। স্ত্রী স্বামীর জন্য সুস্বাদু খাবার রান্না করে, ঘর পরিষ্কার করে এবং স্বামীকে স্নেহ ও যত্ন দিয়ে আদর করে। এইভাবে তাদের দিন কেটে যায়। তাদের জীবন ছিল সুখ ও সমৃদ্ধিতে পরিপূর্ণ। প্রকৃতির সৌন্দর্য, নীল শালুকের দোলন, নবান্নের আনন্দ, বারো মাসে তেরো পার্বণ – সব মিলিয়ে তাদের জীবন ছিল রূপকথার মতো।

কিন্তু বিধির নির্মম পরিহাস, দুর্ভিক্ষের কাল, অনাহারের অন্ধকার – সব মিলিয়ে তাদের সুখের সংসার ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়।

কবিতার শেষে, কবি পাঠকদের আহ্বান জানান, ভাঙা কুটিরের সারি দেখলে ভেবে দেখতে বলেন, এগুলো হয়তো সেই কৃষক বধূর আশা-স্বপনের সমাধি। এই করুণ পরিণতি আমাদের মনে এক প্রশ্ন জাগিয়ে তোলে – সুখ কি স্থায়ী? বিধির নির্মম পরিহাস কতটা ক্ষমতাবান? এই কবিতাটি কেবল একটি কৃষক দম্পতির গল্প নয়, বরং জীবনের অনিশ্চয়তা, সুখের অস্থায়িত্ব এবং বিধির নির্মম পরিহাসের প্রতিফলন।

এই গানটি গ্রাম বাংলার কৃষকদের জীবনের প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। গানটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে কৃষকরা আমাদের দেশের মেরুদণ্ড, এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করার জন্য আমাদের সকলের দায়িত্ব রয়েছে।

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – গাঁয়ের বধূ

গাঁয়ের বধূ অধ্যায়ের লেখক পরিচিতি

খ্যাতনামা সুরকার ও গীতিকার সলিল চৌধুরী জন্মগ্রহণ করেন ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ১৯ ডিসেম্বর। ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি গণনাট্য সংঘের সঙ্গে যুক্ত হন। বিভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলন ও ঘটনার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি বহু গান রচনা করেন। আজাদ হিন্দ ফৌজের বিচার উপলক্ষ্যে রচিত ‘বিচারপতি তোমার বিচার’, নৌ-বিদ্রোহের সমর্থনে ‘ঢেউ উঠছে, কারা ছুটছে’ তাঁর বিখ্যাত গান। সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের ‘পালকির গান’ ও সুকান্ত ভট্টাচার্যের একাধিক গানে তিনি সুরারোপ করেন। তাঁর মৃত্যু হয় ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দের ৫ সেপ্টেম্বর। সংগীতে কৃতিত্বের জন্য তিনি ‘ফিলম্ ফেয়ার’ পুরস্কার ও ‘সংগীত নাটক আকাদেমি’ পুরস্কার লাভ করেছিলেন।

গাঁয়ের বধূ অধ্যায়ের পাঠপ্রসঙ্গ

গীতিকার সলিল চৌধুরী বাংলার সেই সময়কার গীতিকার তথা সুরকার, যখন বাংলা আধুনিকতা ও চিরাচরিতের প্রচ্ছন্ন দ্বন্দ্বের সম্মুখীন। ঠিক সেই সন্ধিক্ষণে সলিল চৌধুরী এমন এক কাহিনিকে গল্পচ্ছলে তুলে ধরেছেন যা চিরাচরিত বাংলার অলিখিত দলিল। ‘বাংলার বধূ’ সেই শ্রেণিশোষণের এক জাগ্রত প্রতিনিধিমূলক কবিতা।

গাঁয়ের বধূ অধ্যায়ের বিষয়সংক্ষেপ

গীতিকার সলিল চৌধুরী গল্পচ্ছলে পাঠকের দরবারে রূপকথার মোড়কে একটি জীবনের কুসুমকোমল অধ্যায়ের করুণ পরিণতির চলচ্ছবি এঁকেছেন। বাংলার সাধারণ পল্লি কৃষক জীবনের সুখী দাম্পত্যের চিরায়ত ছবি আমরা দেখতে পাই। সারাদিনের ব্যস্ততার পর যখন কৃষক বাড়ি ফিরে আসেন একরাশ ক্লান্তির ছাপ অঙ্গে মেখে তখন বাংলার কৃষক বধূটি আম-কাঁঠালের ভুরিভোজ ও পত্নীসুলভ সোহাগী আদর সহযোগে তার সমস্ত ক্লান্তি দূর করতেন নিমেষে। প্রকৃতি যেন নীল শালুকের দোলনায় দুলতে দুলতে চকিতে ঘুমিয়ে পড়ে। ভ্রমণের গুঞ্জন এবং পাকা ধানের আলতো ছোঁয়া যেন কখন তাকে আবার জাগিয়ে তোলে। বারো মাসে তেরো পার্বণ, নবান্নের আনন্দোৎসব যেন বঙ্গলক্ষ্মী, গৃহলক্ষ্মীরূপে পূজিতা। কিন্তু হায়! বিধি বাম! সেই লক্ষ্মীর সংসারে অনাহারের বেশে ডাকিনী-যোগিনী কখন যেন এসে থাবা বসায়। দুর্ভিক্ষে, অনাহারে, নিরন্নের অন্নহীন চিৎকারে জীবন যেন ছন্দহীন হয়ে পড়ে। তাই কবি বলেছেন যে, আজও যদি কোনো গাঁয়ে এরকম ভাঙা কুটিরের সারি দেখতে পাওয়া যায়, তবে সেটি যেন সেই কৃষক বধূর আশা-স্বপনের সমাধি এ কথা ভাবতে কেউ কখনও ভুল না করে।

গাঁয়ের বধূ অধ্যায়ের নামকরণ

নামকরণ ভিন্নমাত্রিক হতে পারে। চরিত্রকেন্দ্রিক, কাহিনি ভিত্তিক, ব্যঞ্জনাধর্মী হল নামকরণের এক একটি দ্যোতক। আলোচ্য ‘গাঁয়ের বধূ’ কবিতাটি বাংলার ক্ষয়িষ্ণু সভ্যতার এক জাগ্রত দলিলের সূত্রে একটি ইতিহাসনির্ভর ব্যঞ্জনাধর্মী নামকরণ হিসেবে সার্থক সন্দেহ নেই। এই নামকরণ প্রয়োগের মধ্য দিয়ে বিষয়বস্তুর সম্পর্কে পাঠক খানিক ধারণা লাভ করতে পারে।

গাঁয়ের বধূ অধ্যায়ের শব্দার্থ ও টীকা

কুসুম – ফুল। শ্যামল-ঘেরা – সবুজ ঘেরা। কিষাণ – কৃষক। শ্রান্ত – ক্লান্ত। ভোমরা – মৌমাছি। পাষাণ – পাথর।

এই গানটি গ্রাম বাংলার কৃষকদের জীবনের বাস্তব চিত্র তুলে ধরে। গানটিতে দেখানো হয়েছে কীভাবে দুর্ভিক্ষ, শোষণ, এবং দারিদ্র্যের কারণে তাদের সুখের জীবন ধ্বংস হয়ে যায়। গানটির শেষে যে ভাঙা কুটিরের সারির কথা বলা হয়েছে তা কৃষকদের জীবনের অসহায়ত্ব এবং তাদের স্বপ্নের অমীমাংসিততার প্রতীক।

এই কবিতাটিতে, গীতিকার সলিল চৌধুরী বাংলার এক কৃষক দম্পতির সুখী জীবনযাত্রা ও তার করুণ পরিণতির চিত্র অঙ্কন করেছেন। প্রকৃতির সৌন্দর্য, নীল শালুকের দোলন, নবান্নের আনন্দ, বারো মাসে তেরো পার্বণ – সব মিলিয়ে তাদের জীবন ছিল রূপকথার মতো। কিন্তু বিধির নির্মম পরিহাস, দুর্ভিক্ষের কাল, অনাহারের অন্ধকার – সব মিলিয়ে তাদের সুখের সংসার ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়।

কবিতার শেষে, কবি পাঠকদের আহ্বান জানান, ভাঙা কুটিরের সারি দেখলে ভেবে দেখতে বলেন, এগুলো হয়তো সেই কৃষক বধূর আশা-স্বপনের সমাধি। এই করুণ পরিণতি আমাদের মনে এক প্রশ্ন জাগিয়ে তোলে – সুখ কি স্থায়ী? বিধির নির্মম পরিহাস কতটা ক্ষমতাবান?

এই কবিতাটি কেবল একটি কৃষক দম্পতির গল্প নয়, বরং জীবনের অনিশ্চয়তা, সুখের অস্থায়িত্ব এবং বিধির নির্মম পরিহাসের প্রতিফলন।

Share via:

মন্তব্য করুন