নবম শ্রেণী – বাংলা – ব্যোমযাত্রীর ডায়রি – সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

Souvick

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা নবম শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের, ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ -এর কিছু ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নোত্তরগুলো নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ নবম শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষায় এই ধরনের প্রশ্ন নিয়মিত আসে।

ব্যোমযাত্রীর ডায়রি-ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর-নবম শ্রেণী-বাংলা
Contents Show

‘ডায়রিটা আমি পাই তারক চাটুজ্যের কাছ থেকে।’ – বক্তা কার ডায়ারি কীভাবে পেয়েছিলেন?

যেভাবে ডায়ারি পেয়েছিলেন – ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ গল্পের লেখক তথা কথক সত্যজিৎ রায় প্রফেসার ত্রিলোকেশ্বর শঙ্কুর ডায়ারি পেয়েছিলেন তারক চাটুজ্যের কাছ থেকে। একদিন দুপুরে অফিসে বসে যখন পুজো সংখ্যার জন্য একটা লেখার প্রুফ দেখছিলেন তিনি, তখন তারকবাবু এসে শঙ্কুর ডায়ারিটা কথকের সামনে উপস্থিত করেন। দরিদ্র লেখক তারক চাটুজ্যে অভাবের তাড়নায় শঙ্কুর এমন অত্যাশ্চর্য ডায়ারিটি কুড়ি টাকার বিনিময়ে তুলে দিয়েছিলেন কথকের হাতে।

‘পড়ে দেখো। গোল্ড মাইন’ – বক্তা কাকে উদ্দেশ্য করে একথা বলেছেন এবং কী প্রসঙ্গে?

বক্তা যাকে উদ্দেশ্য করেছে – সত্যজিৎ রায় রচিত ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ গল্পের অন্যতম চরিত্র তারক চাটুজ্যে উদ্ধৃত কথাগুলি গল্পের লেখক অর্থাৎ কথককে উদ্দেশ্য করে বলেছেন।

প্রসঙ্গ – ‘গোল্ড মাইন’ শব্দের অর্থ সোনার খনি। তারক চাটুজ্যে মাঝে মধ্যেই লেখকদের কাছে বিভিন্ন গল্প নিয়ে এসে পাঁচ-দশ টাকা আদায় করে নিয়ে যেতেন। এবার কিন্তু তিনি সঙ্গে যা এনেছেন তা একেবারে চমকে দেওয়ার মতো। একটি লাল মলাটের খাতা, যেটি দীর্ঘ পনেরো বছর নিরুদ্দেশ থাকা বিজ্ঞানী প্রফেসার ত্রিলোকেশ্বর শঙ্কুর ডায়ারি। তারকবাবু সেটি আগাগোড়া পড়ে মনে করেছেন লেখাটি চমকপ্রদ। তাই তিনি লেখাটিকে গোল্ড মাইন বলেছেন।

প্রফেসার শঙ্কু সম্পর্কে কথকের মনে কী ধারণা ছিল?

কথকের ধারণা – সত্যজিৎ রায়ের ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ গল্পে প্রফেসার শঙ্কু সম্পর্কে কথকের একটি ধারণা ছিল। তিনি জানতেন শঙ্কু একজন বৈজ্ঞানিক, তবে বছর পনেরো ধরে নিরুদ্দেশ। কথক শুনেছিলেন প্রফেসার শঙ্কু নাকি কী একটা ভীষণ এক্সপেরিমেন্ট করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। তিনি এমন কথাও শুনেছেন যে শঙ্কু জীবিত এবং ভারতবর্ষের কোনো অখ্যাত-অজ্ঞাত অঞ্চলে গা ঢাকা দিয়ে চুপচাপ নিজের কাজ করে যাচ্ছেন, সময় হলে আত্মপ্রকাশ করবেন।

তারকবাবু কোথা থেকে কীভাবে শঙ্কুর ডায়ারিটি পেয়েছিলেন?

ডায়ারির সন্ধানপ্রাপ্তি – সত্যজিৎ রায়ের ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ গল্প থেকে জানা যায় সুন্দরবনের মাথারিয়া অঞ্চলে একটা উল্কাখণ্ড এসে পড়ায় বছরখানেক আগে অনেক জন্তু-জানোয়ার মারা যায়। তারক চাটুজ্যে সেই সুযোগে দু-চারটে বাঘছাল সংগ্রহ করার লোভে পৌঁছে যান সেখানে। কিন্তু পৌঁছোতে দেরি হয়ে যাওয়ায় তিনি সে-সব পাননি। তবে উল্কাখণ্ড পড়ে যে জায়গাটায় গভীর গর্ত হয়ে গিয়েছিল, সেখান থেকে লাল ডায়ারিটা উঁকি মারতে দেখে এবং তাতে শঙ্কুর নাম থাকায় সেটি তারক চাটুজ্যে পকেটস্থ করেন।

‘এ আমি হাতছাড় করতাম না, বুঝলে!’ – কে, কী হাতছাড়া করতেন না? কেন হাতছাড়া করতে হল?

তারক চাটুজ্যে প্রফেসার শঙ্কুর অত্যাশ্চর্য ডায়ারিটি হাতছাড়া করতেন না।

হাতছাড়া করার কারণ – আলোচ্য গল্পের কথকের কাছে তারকবাবু মাঝে মধ্যে গল্পটল্প দিয়ে যেতেন এবং বিনিময়ে পাঁচ-দশ টাকা করে পেতেন। কিন্তু এই দরিদ্র লেখক অভাবের তাড়নাতে বাধ্য হয়ে মাত্র কুড়ি টাকায় প্রফেসার শঙ্কুর ডায়ারিটি দিয়ে দেন কথককে।

“খাতাটা হাতে নিয়ে খুলে কেমন যেন খটকা লাগল।” – খটকা লাগার কারণ কী?

খটকা লাগার কারণ – সত্যজিৎ রায়ের লেখা ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ গল্পে পুজো সংখ্যার জন্য একটা লেখার প্রুফ দেখবার সময় তারক চাটুজ্যের কাছ থেকে প্রফেসার শঙ্কুর ডায়ারিটি পান কথক। পুজোর গোলমালে খাতাটার কথা তিনি ভুলেই যান। অনেকদিন পর আলমারি খুলে চলন্তিকা টানতে গিয়ে শঙ্কুর ডায়ারিটা বেরিয়ে পড়ে। তিনি খুলে দেখেন কালির রং লাল। অথচ তার মনে পড়ে যখন প্রথমবার খাতাটি দেখেছিলেন, তখন কালির রং ছিল সবুজ। শঙ্কুর ডায়ারির লেখার কালির রং পরিবর্তন দেখে তার মনে সংশয় তৈরি হয় অর্থাৎ খটকা লাগে।

প্রফেসার শঙ্কুর ডায়ারিটির বিশেষত্ব কী?

ডায়ারির বিশেষত্ব – সত্যজিৎ রায়ের লেখা ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ গল্প থেকে জানা যায় – প্রফেসার শঙ্কুর ডায়ারিটি ছিল অদ্ভুত, অভিনব, অত্যাশ্চর্য। ডায়ারির পাতায় লেখার কালির রং কিছু সময় অন্তর বদলে যেত; কখনো সবুজ, কখনো লাল, কখনো নীল বা হলদে। ডায়ারির পাতাগুলি ছিল রাবারের মতো; টানলে বাড়ত, ছাড়লে যে-কে-সেই। তাই মানুষ ছিঁড়তে পারত না, কুকুরে দাঁত বসাতে পারত না এ ডায়ারির পাতায়। এমনকি শঙ্কুর ডায়ারির পাতা আগুনে পোড়ানোও যেত না।

“আজ দিনের শুরুতেই একটা বিশ্রী কাণ্ড ঘটে গেল।” – বিশ্রী কাণ্ডটি কী?

বিশ্রী কাণ্ডের বর্ণনা – আলোচ্য উদ্ধৃতিটি সত্যজিৎ রায়ের রচিত ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ গ্রন্থটির অন্তর্গত। রোজকার মতো বছরের শুরুর দিনটাতে অর্থাৎ 1 জানুয়ারি প্রফেসার শঙ্কু মর্নিংওয়াক করে ফিরে শোবার ঘরে ঢুকতেই একটা বিদঘুটে চেহারার লোকের মুখোমুখি হন। চমকে গিয়ে চিৎকার করেই তিনি বুঝতে পারেন বিদঘুটে লোকটি আর কেউ নয়, আয়নায় তাঁর নিজেরই প্রতিচ্ছবি। আয়নার প্রয়োজন হয় না বলে বিগত কয়েক বছরে তাঁর নিজের চেহারা সম্পর্কে তিনি নিজেই অবগত নন। আর বছর শেষ হয়েছে বলে চাকর প্রহ্লাদ আয়নার উপর টাঙানো ক্যালেন্ডারটা সরিয়ে ফেলায় এমন বিশ্রী কাণ্ড ঘটে যায়।

‘Snuff-gun’ কী? কার উপর কীভাবে সেটি প্রথম প্রয়োগ করা হয়?

সত্যজিৎ রায়ের ‘ব্যোমযাত্রীর যায়রি’ গল্পে ‘Snuff-gun’ বা নস্যাস্ত্র হল প্রফেসার শঙ্কুর এক আশ্চর্য বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার। মানুষকে শাস্তি দেওয়ার অভিনব যন্ত্র এই ‘Snuff-gun’।

প্রয়োগ করা হয় যেভাবে – প্রফেসার শঙ্কু চাকর প্রহ্লাদের উপর প্রথম পরীক্ষা করেন এই অস্ত্রটি। বছরের প্রথম দিন আয়নার উপর থেকে প্রহ্লাদ ক্যালেন্ডার সরিয়ে দেওয়ায় মর্নিং ওয়াক সেরে ফিরে শঙ্কু এক বিশ্রী কাণ্ডের শিকার হন। ফলস্বরূপ তিনি প্রহ্লাদের গোঁফের কাছে তাক করে মারেন এই ‘Snuff-gun’-এর নস্যি দিয়ে তৈরি গুলি। নস্যির যা তেজ তাতে রাত এগারোটা অবধি প্রহ্লাদের হাঁচি থামে না। শঙ্কুর বিশ্বাস তেত্রিশ ঘণ্টার আগে থামবে না এই হাঁচি।

“এখন মনে হচ্ছে প্রথমবারের কেলেঙ্কারিটার জন্য একমাত্র প্রহ্লাদই দায়ী।” – কোন্ কেলেঙ্কারির জন্য প্রহ্লাদ কীভাবে দায়ী? ৩

সত্যজিৎ রায়ের ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ গল্পে প্রফেসার শঙ্কুর প্রথমবার রকেট উৎক্ষেপণ সফল হয়নি। রকেট খানিকটা উঠেই গোঁৎ খেয়ে পড়ে যায় অবিনাশবাবুর মুলোর খেতে। এই ঘটনাকেই শঙ্কু কেলেঙ্কারি বলেছেন।

প্রহ্লাদ যেভাবে দায়ী – প্রথমবারের কেলেঙ্কারিটা ঘটেছিল প্রহ্লাদ রকেটের ঘড়িটায় দম দিতে গিয়ে ভুল করে কাঁটাটাই ঘুরিয়ে ফেলায়। এক সেকেন্ড এদিক-ওদিক হলে যেখানে সব কাজ পণ্ড হয়ে যেতে পারে, সেখানে প্রহ্লাদ কাঁটাটাই পুরো ঘুরিয়ে ফেলায় সাড়ে তিন ঘণ্টা লেট হয়ে যায় এবং রকেট মাটিতে পড়ে যায়।

“এইসব লোককে জব্দ করার জন্য একটা নতুন কোনো অস্ত্রের কথা ভাবা দরকার।” – কাকে জব্দ করতে কোন্ অস্ত্রের কথা ভাবেন শঙ্কু?

যাকে জব্দ করতে – সত্যজিৎ রায়ের ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ গল্প থেকে নেওয়া প্রশ্নোদ্ভূত অংশে অবিনাশবাবুর মতো বিজ্ঞান বিষয়ে যাদের অনীহা বা বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার সম্পর্কে যাদের অবজ্ঞা-তাদের শাস্তি দেওয়ার জন্য শঙ্কু একটি ওষুধ আবিষ্কারের কথা ভাবেন।

যে অস্ত্র – ওষুধটি স্যাকারিনের মতো দেখতে। মহাভারতের জৃম্ভণাস্ত্র থেকে আইডিয়া নিয়ে শঙ্কু তৈরি করেন এই বড়ি। চায়ের সঙ্গে স্যাকারিনের বদলে এই বড়িটি মিশিয়ে দিলে চা খাওয়ার পর গভীর ঘুম আসবে; এবং ঘুমের মধ্যে অসম্ভব ভয়ংকর রকমের স্বপ্ন দেখা যাবে।

“প্রহ্লাদ যে সাহসী সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।” – প্রহ্লাদের সাহসের পরিচয় দাও।

প্রহ্লাদের সাহসের পরিচয় – সত্যজিৎ রায়ের ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ গল্পে প্রফেসার শব্দ লক্ষ্য করেছেন কম বুদ্ধির প্রহ্লাদ অনেক সময় না বুঝে সাহসের পরিচয় দিয়ে ফেলেছে। একবার ল্যাবরেটরিতে একটা টিকটিকি শঙ্কুর বাইকর্নিক অ্যাসিডের শিশিটার ওপর পড়ে সেটাকে উলটে দেয়। অ্যাসিডটা গড়িয়ে প্যারাডক্সাইট পাউডারের স্তূপটার দিকে এগিয়ে চলে। দুটোর পারস্পরিক সংযোগে যে ভীষণ বিস্ফোরণ হবে তা ভেবে যখন শঙ্কুর হাত-পা অবশ হয়ে আসে, তখন প্রহ্লাদ ঘরে ঢুকে হাসি মুখে কিচ্ছু না বুঝে হাতের গামছা দিয়ে অ্যাসিডটা মুছে ফেলে। পাঁচ সেকেন্ডের জন্যে বড়ো বিস্ফোরণের হাত থেকে বেঁচে যান প্রফেসার শঙ্কু।

প্রফেসার শঙ্কুর রকেটে কত ওজন নেওয়া চলে? মোট কত ওজন হয়েছিল?

সত্যজিৎ রায়ের ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ গল্পে প্রফেসার শঙ্কুর রকেট মোট কুড়ি মন ওজনের জিনিস অনায়াসে নিয়ে চলতে পারে।

মোট ওজন – রকেটে ওঠার আগে শঙ্কু হিসেব করে দেখেন প্রহ্লাদ দু-মন সতেরো সের, তিনি নিজে এক মন এগারো সের, বিধুশেখর সাড়ে পাঁচ মন এবং অন্যান্য জিনিসপত্র সাজ-সরঞ্জাম মিলে আরও মন পাঁচেক। অর্থাৎ যা কুড়ি মনের চেয়ে বেশ কম। মোট পনেরো মন বত্রিশ সের তিন ছটাক ওজনের সামগ্রী নেওয়া হয়েছিল রকেটে।

অবিনাশবাবুর রসিকতার নমুনা পাঠ্যাংশ অবলম্বনে তুলে ধরো।

রসিকতার নমুনা – বিজ্ঞান বা বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার সম্পর্কে অবিনাশবাবুর অনীহা ও অবজ্ঞার কথা সত্যজিৎ রায়ের ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ গল্পে উঠে এসেছে। প্রথমবার শঙ্কুর রকেট উৎক্ষেপণ ব্যাহত হলে তিনি সহানুভূতি দেখাননি, বরং ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাঁচশো টাকা দাবি করেছেন। দ্বিতীয়বার শঙ্কু রকেট অভিযানের জন্য যখন প্রস্তুত হচ্ছেন, তখন অবিনাশবাবু রসিকতা করে বলেন – “কী মশাই, আপনি তো চাঁদপুর না মঙ্গলপুর কোথায় চললেন। আমার টাকাটার কী হলো?” বিজ্ঞানের কথা উঠলেই তার ঠাট্টা আর ভাঁড়ামো শুরু হত। রকেট উৎক্ষেপণ প্রসঙ্গে যেমন তিনি শঙ্কুকে বলেছেন – “আপনার ওই হাউইটা এই কালীপুজোর দিন ছাড়ুন না। ছেলেরা বেশ আমোদ পাবে।”

‘বেশ কিছুদিন থেকেই মাঝে মাঝে এর ব্যতিক্রম লক্ষ করছি।’ – কার কী ব্যতিক্রম লক্ষ করা যাচ্ছে? একটি উদাহরণ দাও।

সত্যজিৎ রায়ের ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ গল্পের আলোচ্য অংশে প্রফেসার শঙ্কু তার আবিষ্কৃত রোবট বিধুশেখরের কথা বলেছেন। যন্ত্রমানব রোবট বিধুশেখরের মধ্যে যান্ত্রিক কাজকর্ম ছাড়াও কখনো কখনো মানবিক বুদ্ধি বা চিন্তাশক্তির পরিচয় পেয়ে প্রফেসার শঙ্কু তা ব্যতিক্রম বলে মনে করেছেন।

উদাহরণ – রকেট তৈরি করার সময় মূল কমপাউন্ডের সঙ্গে যখন শঙ্কু ট্যানট্রাম মেশাতে গেছেন, তখন বিধুশেখর ঘাড় পাশাপাশি নেড়ে আওয়াজ করে নিষেধ করেছে। বিপরীতে যখন ভেলোসিলিকা মেশাতে গেছেন তখন ঘাড় উপর-নীচ করে মানুষের মতোই সমর্থন জানিয়েছে। পরে শঙ্কু পরীক্ষা করে দেখেছেন ট্যানট্রাম মেশালে পরিণতি কতটা বিপদজনক হতে পারত।

প্রফেসার শঙ্কু রকেট তৈরি করেছিলেন কোন উপাদান দিয়ে?

উপাদান – সত্যজিৎ রায়ের ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ গল্পে প্রফেসার শঙ্কু রকেটটি তৈরি করার ব্যাপারে অনেক এক্সপেরিমেন্ট করেছিলেন। তিনি ব্যাঙের ছাতা, সাপের খোলস আর কচ্ছপের ডিমের খোলা মিশিয়ে একটা কমপাউন্ড তৈরি করেছিলেন। এই কমপাউন্ডের সঙ্গে ট্যানট্রাম বোরোপ্যাক্সিনেট না একুইয়স্ ভেলোসিলিকা মেশালে রকেট তৈরির সঠিক ধাতুটা পাওয়া যাবে তা নিয়ে শঙ্কুর মনে সংশয় ছিল। বিধুশেখরের নিদের্শ মতো একুইয়স্ ভেলোসিলিকা ওই কমপাউন্ডের সঙ্গে মিশিয়ে শঙ্কু রকেট তৈরির উপযোগী ধাতুটি প্রস্তুত করেছিলেন।

“সে এক আশ্চর্য দৃশ্য।” – দৃশ্যটি কী?

দৃশ্যের বর্ণনা – সত্যজিৎ রায়ের ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ গল্পে দৃশ্যটি প্রফেসার শঙ্কুর দেখা একটি আশ্চর্য স্বপ্ন। আশ্বিন-কার্তিক মাসে রাত্রে খাবার পর তিনি আমবাগানে আরাম কেদারায় শুয়ে থাকতেন উল্কাপাত দেখার লোভে। একদিন তিনি স্বপ্নে দেখেন অন্যরকম একটা উল্কা ক্রমশ বড়ো হতে হতে তাঁর দিকে এগিয়ে আসছে। তিনি একদৃষ্টে চেয়ে থাকেন। দেখেন উল্কাটা ক্রমে কাছে এসে আমবাগানের পশ্চিম দিকের গুলঞ্চ গাছটার পাশে থেমে গিয়ে প্রকাণ্ড জোনাকির মতো জ্বলতে শুরু করেছে। এই দৃশ্যটিকেই শঙ্কুর আশ্চর্য লেগেছিল।

‘দুটো কারণে খটকা রয়ে গেল।’ – কারণ দুটি কী কী?

খটকা লাগার কারণ – সত্যজিৎ রায়ের ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ গল্পে উল্কাপাতের আশ্চর্য স্বপ্ন দেখেও দুটি কারণে ঘটনাটিকে স্বপ্ন বলে বিশ্বাস করতে অসুবিধা হয়েছিল শঙ্কুর। একটা খটকা রয়ে গেছিল তাঁর মনে। কারণ দুটি হল –

  1. স্বপ্ন দেখার পরদিন থেকেই তিনি রকেটের বিষয়ে ভাবতে শুরু করেন।
  2. উল্কাটা যে গুলঞ্চগাছের পাশে গিয়ে থেমে জোনাকির মতো জ্বলছিল, সেইগাছে তারপর থেকে সম্পূর্ণ নতুন রকমের ফুল ধরেছিল। ফুলগুলিতে আঙুলের মতো পাঁচটা করে ঝুলন্ত পাপড়ি ছিল। দিনের বেলা কুচকুচে কালো কিন্তু রাত্রে ফসফরাসের মতো জ্বলত সেগুলি।

‘Fish Pill’ কী?

‘Fish Pill’ -এর স্বরূপ – সত্যজিৎ রায়ের ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ গল্পে ‘Fish Pill’ হল প্রফেসার শঙ্কুর তৈরি একটি বিশেষ ধরনের বড়ি। রকেটে বেশি খাবার নেওয়া সম্ভব নয় বলে পোষা বেড়াল নিউটনের জন্য তিনি তৈরি করেন এই অভিনব বড়ি। এই বড়িতেই মাছের স্বাদ পাওয়া যায় বলে মাছের মুড়ো ফেলে রেখে নিউটন বেছে নেয় এই ‘Fish Pill’। শুধু মাছের স্বাদই নয়, এই বড়ি একটি খেলে সাতদিন আর কিছু খেতে হয় না নিউটনকে।

‘বটিকা ইন্ডিকা’ কী?

বটিকা ইন্ডিকার স্বরূপ – সত্যজিৎ রায়ের ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ গল্পে অন্যান্য আবিষ্কারের মতো ‘বটিকা-ইন্ডিকা’ হল প্রফেসার শঙ্কুর গবেষণার একটি অত্যাশ্চর্য ফসল। বটফলের রস দিয়ে তৈরি এই বড়ি একটি খেলে পুরো চব্বিশ ঘণ্টার জন্য খিদে তেষ্টা সব মিটে যায়। রকেটে বেশি খাবার নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় বলে শঙ্কু নিজের এবং প্রহ্লাদের জন্য বানিয়ে নিয়েছিলেন এমন অভিনব ওষুধ ‘বটিকা ইন্ডিকা’। শঙ্কু তাঁর ডায়ারিতে আবার এই বড়িটিকে হোমিওপ্যাথিক বড়ি বলে উল্লেখ করেন।

রকেটে ওঠার পর নিউটনের প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল?

নিউটনের প্রতিক্রিয়া – সত্যজিৎ রায়ের ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি গল্পে রকেটের মধ্যে নিউটনের খুব অসুবিধা হয়েছিল ছোটো জায়গায় বেশিক্ষণ বন্ধ থাকার অভ্যাস না থাকায়। প্রথম কিছুদিন রকেটের স্বল্প পরিসরে সে খুব ছটফট করছিল। তারপর অবশ্য প্রফেসার শঙ্কুর টেবিলের ওপর বসে নিউটন বাইরের দৃশ্য দেখেছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে। কুচকুচে কালো আকাশ আর তার মাঝে অগণিত জ্বলন্ত গ্রহনক্ষত্র দেখে নিউটন লেজ নেড়েছে। শঙ্কুর-মনে হয়েছে নিউটন যেন জ্বলন্ত গ্রহনক্ষত্রগুলিকে মনে করেছে অসংখ্য বেড়ালের চোখ।

রকেটে ওঠার পর বিধুশেখর ও প্রহ্লাদের প্রতিক্রিয়া কেমন হয়েছিল?

প্রতিক্রিয়া – সত্যজিৎ রায়ের ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ গল্পে বিধুশেখর রোবট। তাই তার মন বা অনুভূতি নেই। ফলে রকেটে উঠে সে চুপচাপ বসে থেকেছে। তার কোনো কাজকর্ম নেই। শঙ্কু অবশ্য বলেছেন তার মন যদি থেকেও থাকে, তা তার গোল গোল বলের মতো নিষ্পলক চোখ দেখে বোঝবার উপায় নেই।

প্রহ্লাদের রকেটের বাইরের দৃশ্য দেখার কোনো আগ্রহ ছিল না। সে বসে বসে রামায়ণ পড়ছিল।

বিধুশেখরের বাংলা শিক্ষার নমুনা উপস্থাপন করো।

বাংলা শিক্ষার নমুনা – সত্যজিৎ রায়ের ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ গল্পে বিধুশেখরকে বাংলা শেখাতে শঙ্কুর বেশ কিছুটা সময় লেগেছিল। বিধুশেখরের উচ্চারণ প্রশংসনীয় নয়, তবে স্মরণশক্তি বেশ ভালো। শঙ্কুর ‘কেমন লাগছে?’ প্রশ্নের উত্তরে আনন্দের সঙ্গে হাততালির ভঙ্গিতে সে জানিয়েছে ‘গাগোঃ’ অর্থাৎ ‘ভালো’। আবার কখনো আপন খেয়ালে বিধুশেখর গেয়েছে-‘ঘঙো ঘাংঙ কুঁক্ক ঘঙা আগাঁকেকেই ককুং ঘঙা’। অর্থাৎ দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের সেই বিখ্যাত গান- ‘ধন ধান্য পুষ্প ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা।’

“তখন ডায়রি লিখতে লিখতে এক কাণ্ড হয়ে গেল।” – কাণ্ডটি কী?

কাণ্ডের বর্ণনা – সত্যজিৎ রায়ের ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ গল্পে রকেট মঙ্গলে পৌঁছোতে তখন আর কিছু বাকি, হঠাৎই বিধুশেখর এক লাফে যন্ত্রপাতির বোর্ডের কাছে গিয়ে যে হ্যান্ডেলটা টানলে রকেটটা উলটোদিকে যায় সেটা ধরে প্রচণ্ড টান মারে। ফলে ঝাঁকুনির চোটে প্রফেসার শঙ্কুসহ রকেটের সকলে কেবিনের মেঝেয় গড়াগড়ি খায়। তারপর কোনোমতে শঙ্কু উঠে গিয়ে বিধুশেখরের কাঁধের বোতাম টিপে তাকে বিকল করে দেন এবং রকেটের হ্যান্ডেল ঘুরিয়ে মোড় ফিরিয়ে আবার মঙ্গলের দিকে যাত্রা করেন।

মঙ্গলগ্রহে নেমে শঙ্কুর চোখে গ্রহটির কী বিশেষত্ব ধরা পড়েছে?

মঙ্গলগ্রহের বিশেষত্ব – সত্যজিৎ রায়ের ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ গল্পে প্রফেসার শঙ্কু মঙ্গলগ্রহে পৌঁছে দেখেছেন – সেখানকার গাছপালা-মাটি-পাথর সবই নরম রাবারের মতো। নদীর জল স্বচ্ছ পেয়ারার জেলির মতো লাল। ঘাস আর গাছপালার রং – সবুজের বদলে নীল। আর আকাশের রং নীলের জায়গায় সবুজ। নদীর জলের কুলকুল শব্দ ছাড়া আর কোনো শব্দই নেই মঙ্গলগ্রহে; সেখানে আছে আশ্চর্য নিস্তব্ধতা। ঠাণ্ডা নেই, বরং গরম। তবে মাঝে মাঝে একটা ক্ষণস্থায়ী হাড় কাঁপানো হাওয়া আসে। নদীর জল অমৃত, এক ঢোঁক খেয়েই শরীর আর মনের সমস্ত ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। আবার মঙ্গলগ্রহের একটি বিশেষ গন্ধও শঙ্কু অনুভব করতে পেরেছেন।

“ঘটনাটা ঘটল প্রথম দিনই।” – ঘটনাটি কী তা উল্লেখ করো।

ঘটনার স্বরূপ – সত্যজিৎ রায়ের ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ গল্পে সূর্য ওঠার পর শঙ্কু যখন মঙ্গলগ্রহটি ঘুরে দেখার কথা ভাবছিলেন, ঠিক তখনই একটা আঁশটে গন্ধে আর অদ্ভুত বিকট শব্দে তাঁর চমক ভেঙে যায়। তিনি দেখেন প্রহ্লাদ ডান হাতের মুঠোয় নিউটনকে ধরে ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটে আসছে আর তার পিছনে ধাওয়া করে আসছে এক অদ্ভুত জন্তুর দল। তারা ‘তিন্তিড়ি তিন্তিড়ি’ আওয়াজ করছে মুখে। এরই মাঝে বিধুশেখর রকেট থেকে নেমে রুখে দাঁড়ায়। সেই জন্তুদলের সামনে। তার লোহার হাতের প্রচণ্ড আঘাতে একটি জন্তুকে অজ্ঞান করে দিতেই শঙ্কু বিধুশেখরকে বিকল করে তাকে দু-ভাগে ভাগ করে কোনো রকমে রকেটে তোলেন। শঙ্কু রকেটে উঠেই অজ্ঞান হয়ে যান। প্রথমদিনই এইরকম ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হয়েছিল শঙ্কুর।

মঙ্গলগ্রহের প্রাণীগুলির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

সংক্ষিপ্ত পরিচয় – সত্যজিৎ রায়ের ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ গল্পে প্রফেসার শঙ্কু মঙ্গলগ্রহে যে প্রাণীগুলিকে প্রত্যক্ষ করেন তাদের গায়ে ছিল অদ্ভুত আঁশটে গন্ধ। শঙ্কু লেখেন সেই প্রাণীগুলি ‘মানুষও নয়, জন্তুও নয়, মাছও নয় কিন্তু তিনের সঙ্গেই কিছু কিছু মিল আছে।’ লম্বায় তারা তিন হাতের বেশি নয়, পা আছে, কিন্তু হাতের বদলে মাছের মতো ডানা, বিরাট মাথায় মুখজোড়া দন্তহীন হাঁ, ঠিক মাঝখানে প্রকাণ্ড একটা সবুজ চোখ, আর সর্বাঙ্গে মাছের মতো আঁশ। জন্তুগুলো ভালো করে ছুটতে পারে না, পদে পদে হোঁচট খায়। তারা মুখে অদ্ভুত শব্দ করে – ‘তিন্তিড়ি! তিন্তিড়ি! তিন্তিড়ি…’।

মঙ্গলগ্রহের অদ্ভুত জন্তুগুলো কেন প্রহ্লাদের পিছনে তাড়া করেছিল?

তাড়া করার কারণ – সত্যজিৎ রায়ের ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ গল্পে প্রফেসার শঙ্কু মঙ্গলগ্রহ ছেড়ে রকেটে উদ্দেশ্যহীনভাবে যেতে যেতে প্রহ্লাদের মুখে জানতে পারেন কেন মঙ্গলীয় জন্তু তাড়া করেছিল তাঁদের। প্রহ্লাদ নদীর ধারে পাথর কুড়োতে কুড়োতে প্রথমে আঁশটে গন্ধ পায়, মুখ তুলে দেখে কিছুদূরে একটা না-মানুষ না-জন্তু না-মাছ নদীর ধারে দাঁড়িয়ে আছে। নিউটন লেজ খাড়া করে চোখ বড়ো বড়ো করে গুটিগুটি জন্তুটির কাছে এগিয়ে গিয়ে তার হাঁটুতে কামড় বসিয়ে দেয়। জন্তুটি ঝিঁঝির মতো শব্দ করে পালিয়ে যায়। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই আরেকটা জন্তু এসে প্রহ্লাদকে তাড়া করে। তারপর প্রায় দু-তিনশো জন্তু একসঙ্গে তাড়া করে তাদের।

“মনে অসংখ্য প্রশ্ন গিজগিজ করছে।” – কার মনে কী প্রশ্ন গিজগিজ করছে?

প্রশ্নের স্বরূপ – সত্যজিৎ রায়ের ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ গল্পে মঙ্গলগ্রহে জন্তুদের তাড়া খাওয়ার পর শঙ্কু রকেটে উঠেই অচৈতন্য হয়ে পড়েছিলেন। জ্ঞান ফিরতে তিনি দেখেন রকেট মহাশূন্যে উদ্দেশ্যহীনভাবে উড়ে চলেছে। গন্তব্য কোথায়, কেই বা রকেট চালালো, রকেট উড়ল কীভাবে, কোথায় তাঁরা চলেছেন, সৌরজগতের অগণিত গ্রহনক্ষত্রের মধ্যে কোনটিতে গিয়ে তাঁরা থামবেন, আদৌ রকেট থামবে কি না, রসদ ফুরিয়ে যাবে না তো, তিন বছর পর খাবার শেষ হয়ে গেলে খাবেন কী এমন নানা প্রশ্ন প্রফেসার শঙ্কুর মনে গিজগিজ করতে থাকে।

‘গবাক্ষ উদ্‌ঘাটন করহ।’ – কে এই কথা বলেছে? গবাক্ষ উদ্‌ঘাটন করে কী দেখা গিয়েছিল?

সত্যজিৎ রায়ের ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ গল্পে মঙ্গলগ্রহ থেকে উদ্দেশ্যহীনভাবে রকেটে চড়ে যেতে যেতে হঠাৎই আনন্দের সঙ্গে বিধুশেখর শঙ্কুকে বলে – ‘গবাক্ষ উদ্‌ঘাটন করহ’।

যা দেখা গিয়েছিল – বিধুশেখরের কথা না শুনে আগে ঠকেছেন শঙ্কু। তাই সঙ্গে সঙ্গে জানলা খুলে দিয়ে তিনি দেখলেন – এক অদ্ভুত, অবিশ্বাস্য জগতের মধ্যে দিয়ে তিনি উড়ে চলেছেন। যতদূর চোখ যায় আকাশময় কেবল বুদবুদ ফুটছে আর ফাটছে। আলোয় চোখ ঝলসে যাচ্ছে। অগণিত সোনার বল যেন আপনা থেকেই বড়ো হতে হতে হঠাৎ ফেটে সোনার ফোয়ারা ছড়িয়ে মিলিয়ে যাচ্ছে। ক্ষণে ক্ষণে দৃশ্য পরিবর্তন হচ্ছে। কখনো আবার সারা আকাশময় সাপের মতো কিলবিলে আলো ছুটে বেড়াচ্ছে। মোটকথা অসাধারণ সুন্দর দৃশ্যে মুগ্ধ হয়েছেন শঙ্কু।

“আজকের অভিজ্ঞতা এক বিধুশেখর ছাড়া আমাদের সকলের ঘাম ছুটিয়ে দিয়েছিল।” – ঘটনাটি কী?

ঘটনার বিবরণ – সত্যজিৎ রায়ের ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ গল্পে মঙ্গলগ্রহ থেকে রকেট উদ্দেশ্যহীনভাবে উড়ে যাওয়ার পথে হঠাৎ শঙ্কু খেয়াল করেন আকাশভর্তি বিশাল বিশাল গোলাকৃতি এবড়ো-খেবড়ো পাথরের চাঁই। তাদের গায়ের সব গহ্বরের ভিতর থেকে অগ্ন্যুদ্গার হচ্ছে। আর শঙ্কুর রকেট সেই পাথরের ফাঁক দিয়ে দিয়ে কলিশন বাঁচিয়ে বিদ্যুৎবেগে ছুটে চলেছে। সকলেই ভয়ে ত্রস্ত। বিধুশেখরের কেবল কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই। কতবার শঙ্কুর মনে হয়েছে রকেট বুঝি ধ্বংস হয়ে গেল। কিন্তু ধাক্কা লাগার ঠিক আগের মুহূর্তে রকেট ম্যাজিকের মতো মোড় ঘুরে নিজের পথ বেছে নিয়েছে। এই ভয়ংকর অভিজ্ঞতায় শঙ্কুর ঘাম ছুটে গিয়েছিল।

“আজ জানলা দিয়ে অপূর্ব দৃশ্য।” – দৃশ্যটি নিজের ভাষায় লেখো।

দৃশ্যের বর্ণনা – সত্যজিৎ রায়ের ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ গল্পে বিধুশেখরের কথায় প্রফেসার শঙ্কু বুঝতে পারেন, তাঁরা টাফা নামে এক নতুন গ্রহের কাছাকাছি চলে এসেছেন। তিনি জানলা দিয়ে দেখতে পান, টাফার সর্বাঙ্গে যেন অসংখ্য জোনাকি জ্বলছে আর নিবছে। সেই আলোয় রকেটের কেবিনও আলোকিত হয়ে যাচ্ছে। জানলা দিয়ে টাফার দূরত্ব দেখে শঙ্কুর মনে হয়েছে আর একদিনেই পৌঁছোনো যাবে টাফায়।

টাফা সম্পর্কে বিধুশেখর শঙ্কুকে কী বলেছিল?

বিধুশেখর যা বলেছিল – সত্যজিৎ রায়ের ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ গল্পে টাফা গ্রহটি সম্পর্কে বিধুশেখর প্রফেসার শঙ্কুকে বেশ কিছু মিথ্যে কথা বলেছিল। বলেছিল টাফায় নাকি সৌরজগতের প্রথম সভ্য লোকেরা বাস করে। পৃথিবীর সভ্যতার চেয়ে ওদের সভ্যতা নাকি বেশ কয়েক কোটি বছরের পুরানো। ওদের প্রত্যেকটি লোকই নাকি বৈজ্ঞানিক এবং এত বুদ্ধিমান লোক একসঙ্গে থাকার ফলে ওদের অসুবিধা হচ্ছে। তাই কয়েক বছর থেকে ওরা নাকি অন্যান্য সব গ্রহ থেকে একটি কম বুদ্ধির লোক বেছে নিয়ে টাফায় আনিয়ে বসবাস করাচ্ছে।

“রকেট থেকে নেমে দেখি বহুলোক আমায় অভ্যর্থনা করতে এসেছে।” – যারা অভ্যর্থনা করতে এসেছিল তাদের পরিচয় দাও।

টাফা বাসীদের পরিচয় – সত্যজিৎ রায়ের ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ গল্পে প্রফেসার শঙ্কু টাফা গ্রহে রকেট থেকে নামার পর দেখলেন যারা তাকে অভ্যর্থনা করতে এসেছে তাদের সঙ্গে মানুষের মিল কমই। অনেকটা অতিকায় পিঁপড়ের মত তাদের চেহারা। বিরাট মাথা, আর বড়ো বড়ো চোখ, কিন্তু সেই অনুযায়ী হাত পা যথেষ্ট সরু। এদের দেখে প্রফেসার শঙ্কুর মনে হয় এরা মানুষের থেকে অনেক পিছিয়ে। এদের ঘরবাড়ি বলেও কিছু নেই। মাটির মধ্যে গর্ত করেই বসবাস করে।

‘আজ থেকে ডায়রি লেখা বন্ধ করব’ – শঙ্কু কেন ডায়ারি লেখা বন্ধ করবেন বলে ভেবেছেন?

ডায়ারি লেখা বন্ধ করার কারণ – সত্যজিৎ রায়ের ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ গল্পে প্রফেসার শঙ্কুর ডায়ারি লেখা বন্ধ করার পিছনে দুটি কারণ ছিল। প্রথমত, টাফা গ্রহে উল্লেখযোগ্য কোনো ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা দেখেননি তিনি। সেখানকার জীবন একমাত্রিক। দ্বিতীয়ত, টাফার মূর্খ অধিবাসীরা শঙ্কুর ডায়ারির মর্ম বুঝতে পারবে না। অর্থাৎ ডায়ারি লেখার কোনো গুরুত্ব যেখানে নেই, সেখানে শঙ্কু ডায়ারি লেখাটাকেই অপ্রয়োজনহীন মনে করেছেন।


আজকের এই আর্টিকেলে আমরা নবম শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের, ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ -এর কিছু ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নোত্তরগুলো নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ নবম শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষায় এই ধরনের প্রশ্ন নিয়মিত আসে। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের উপকারে এসেছে। যদি আপনার কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকে, তবে টেলিগ্রামে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য আমরা সর্বদা প্রস্তুত। ধন্যবাদ।

Categories -
Please Share This Article

Related Posts

Madhyamik History Suggestion 2026 Wbbse (Marks 4)

Madhyamik History Suggestion 2026 Wbbse (Marks 4)

তড়িৎবিশ্লেষ্য পদার্থ ও তড়িৎ-অবিশ্লেষ্য পদার্থ কাকে বলে? উদাহরণ দাও। তড়িৎবিশ্লেষ্য ও তড়িৎ-অবিশ্লেষ্য পদার্থের মধ্যে পার্থক্য লেখো।

তড়িৎবিশ্লেষ্য পদার্থ ও তড়িৎ-অবিশ্লেষ্য পদার্থ কাকে বলে? তড়িৎবিশ্লেষ্য ও তড়িৎ-অবিশ্লেষ্য পদার্থের পার্থক্য

হাইড্রোজেনকে 'দুষ্ট মৌল' বলা হয় কেন?

হাইড্রোজেনকে ‘দুষ্ট মৌল’ বলা হয় কেন?

About The Author

Souvick

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

নবম শ্রেণী – বাংলা – ব্যোমযাত্রীর ডায়রি – সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

নবম শ্রেণী – বাংলা – ব্যোমযাত্রীর ডায়রি – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

নবম শ্রেণী – বাংলা – ব্যোমযাত্রীর ডায়রি – লেখক পরিচিতি

Madhyamik Mathematics Suggestion 2026

Madhyamik Mathematics Suggestion 2026 – Mark 5