ওরা হঠাৎ কাঠের মতো হয়ে গেল। – ওরা কারা? ওদের এমন অবস্থার কারণ কী?

“ওরা হঠাৎ কাঠের মতো হয়ে গেল।” এই উক্তিটি দশম বাংলা সহায়ক পাঠ কোনি উপন্যাস থেকে নেওয়া হয়েছে। “ওরা হঠাৎ কাঠের মতো হয়ে গেল।’ – ‘ওরা’ কারা? ওদের এমন অবস্থার কারণ কী?” এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য অত্যান্ত গুরুত্তপূর্ণ। কোনি উপন্যাসের এই রচনাধর্মী প্রশ্নটি তৈরী করে গেলে মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষায় একটি ৫ নম্বরের পাওয়া যেতে পারে।

জুপিটার ক্লাবের ট্রেনার ক্ষিতীশ সিংহের বিরুদ্ধে ক্লাবের কর্মকর্তাদের মদতে শ্যামল, গোবিন্দ প্রমুখ সাঁতারুরা দুর্ব্যবহারের অভিযোগ আনে। এই অভিযোগগুলি মূলত ক্ষিতীশকে তার পদ থেকে সরানোর উদ্দেশ্যেই করা হয়েছিল। ক্ষিতীশকে ক্লাবের সাধারণ সভায় ডেকে তাকে অভিযোগের বিষয়ে জানানো হয়।

সভায় ক্ষিতীশের দক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। ক্লাবের কর্মকর্তারা যুক্তি দেন যে একজন ভালো ট্রেনার হতে গেলে নিজেকে একজন নামকরা সাঁতারু হিসেবে প্রমাণ করতে হয়। কিন্তু ক্ষিতীশ কখনো জলে নামেননি, কোনো প্রতিযোগিতাতেও অংশগ্রহণ করেননি। কর্মকর্তারা আরও জানান যে, ক্ষিতীশ যে সাঁতারুদের বিরুদ্ধে অযোগ্যতার অভিযোগ এনেছেন, তাদের দিয়েই ক্লাবের জন্য সাফল্য আনা সম্ভব।

ক্ষিতীশের অভিযোগগুলিকে অর্থহীন বলে উড়িয়ে দেওয়া হয় এবং তাকে নানাভাবে অপমান করে জুপিটার ক্লাব ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করা হয়।

ক্লাবঘর থেকে বেরিয়ে আসতেই ক্ষিতীশ দেখেন যে, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার জন্য যারা সভায় উপস্থিত ছিল, তারা সকলেই তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। ক্ষিতীশকে দেখে তারা লজ্জায় মাথা নত করে ফেলে। তারা বুঝতে পারে যে, ক্ষিতীশের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগগুলি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ষড়যন্ত্রমূলক ছিল। এই মিথ্যা ষড়যন্ত্রে তাদের নাম জড়িয়ে যাওয়ায় এবং ক্ষিতীশের কড়া মেজাজের কথা মনে পড়ায় তারা ভয়ে কাঁটা হয়ে যায়।

ওরা হঠাৎ কাঠের মতো হয়ে গেল। - ওরা কারা? ওদের এমন অবস্থার কারণ কী?

“ওরা হঠাৎ কাঠের মতো হয়ে গেল।” – ‘ওরা’ কারা? ওদের এমন অবস্থার কারণ কী?

ওদের পরিচয় – ‘ওরা’ হল জুপিটার ক্লাবের সাঁতারু শ্যামল, গোবিন্দ এবং আরও চার-পাঁচটি ছেলে।

এমন অবস্থার কারণ –

  • শুরুর কথা – ক্ষিতীশ সিংহের বিরুদ্ধে ক্লাবের কর্মকর্তাদের মদতে শ্যামল, গোবিন্দ প্রমুখ সাঁতারুরা দুর্ব্যবহারের অভিযোগ আনে। ক্ষিতীশকে মূলত তাঁর পদ থেকে সরানোর উদ্দেশ্যেই তারা লিখিত অভিযোগ জমা দেয়।
  • মিথ্যা ষড়যন্ত্রের শিকার – ক্লাবের কর্মাকর্তাদের ষড়যন্ত্রের শিকার হয় ক্ষিতীশ। ক্লাবের সাধারণ সভায় বিষয়টি আলোচনার জন্য আনা হয়। সেখানে তাঁর দক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। কর্মাকর্তাদের বক্তব্য অনুযায়ী ট্রেনার হতে গেলে নামকরা সাঁতারু হওয়া প্রয়োজন। ক্ষিতীশ কখনও জলে নামেননি; কোনো প্রতিযোগিতাতেও অংশ চাননি ফলে, সাঁতারের ট্রেনার হওয়ার যোগ্যতা যে তাঁর নেই তা তাঁকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। ক্ষিতীশ যে সাঁতারুদের বিরুদ্ধে অযোগ্যতার অভিযোগ আনেন, হরিচরণ জানিয়েছেন যে তাদের দিয়েই সাফল্য আনা সম্ভব। ক্ষিতীশের অভিযোগ অর্থহীন বলা হয়। নানাভাবে অপমান করে ক্ষিতীশকে জুপিটার ক্লাব ছাড়তে একপ্রকার বাধ্য করা হয়।
  • অভিযোগকারী সাঁতারুদের প্রতিক্রিয়া – ক্লাবঘরের বাইরে আসতেই ক্ষিতীশ দেখেন তাঁর বিরুদ্ধে যারা অভিযোগ এনেছে বলে সভায় জানানো হয়েছে, তারাই তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে। ক্ষিতীশকে দেখে তাই তারা লজ্জায় মুখ নামিয়ে নেয়। ক্ষিতীশের বিরুদ্ধে তারা যে অভিযোগগুলি এনেছে, তা একপ্রকার ষড়যন্ত্র তো বটেই। এই মিথ্যা ষড়যন্ত্রে তাদের নাম জড়ানোয় ও ক্ষিতীশের কড়া মেজাজের কথা মনে পড়ায় ভয়ে তারা কাঠ হয়ে যায়।

আরও পড়ুন, শরীরের নাম মহাশয় যা সহাবে তাই সয়। — ক্ষিতীশ সিংহের এই উক্তিতে তার কীরূপ মানসিকতা ফুটে উঠেছে?

উপসংহারে বলা যায় যে, ক্ষিতীশ সিংহ জুপিটার ক্লাবের ট্রেনার হিসেবে যোগদানের পর থেকেই কিছু সাঁতারুর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন। এই অভিযোগগুলি ক্লাবের কর্মকর্তাদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায় এবং তারা ক্ষিতীশকে তার পদ থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ক্ষিতীশের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলি মিথ্যা এবং ষড়যন্ত্রমূলক ছিল বলে প্রমাণিত হয়। ক্ষিতীশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার পর তাকে ক্লাব থেকে বের করে দেওয়া হয়।

এই ঘটনাটি ক্ষিতীশের জন্য খুবই বেদনাদায়ক ছিল। তিনি একজন দক্ষ ট্রেনার ছিলেন এবং তার শিক্ষার্থীদের সাফল্যের জন্য অনেক পরিশ্রম করতেন। কিন্তু কিছু সাঁতারুর ষড়যন্ত্রের কারণে তাকে তার পদ থেকে সরানো হয়। এই ঘটনাটি আমাদের সমাজের একটি দুঃখজনক দিক তুলে ধরে।

Share via:

মন্তব্য করুন