বিষ্টু ধর চূর্ণ বিচূর্ণ। কথা বলার আর ক্ষমতা নেই। দুটি চোখ ছলছলিয়ে উঠেছে। – কী কারণে বিষ্টু ধরের এমন অবস্থা হয়েছিল বর্ণনা করো।

“বিষ্টু ধর চূর্ণ বিচূর্ণ। কথা বলার আর ক্ষমতা নেই। দুটি চোখ ছলছলিয়ে উঠেছে।” এই উক্তিটি দশম বাংলা সহায়ক পাঠ কোনি উপন্যাস থেকে নেওয়া হয়েছে। “বিষ্টু ধর চূর্ণ বিচূর্ণ। কথা বলার আর ক্ষমতা নেই। দুটি চোখ ছলছলিয়ে উঠেছে।” – কী কারণে বিষ্টু ধরের এমন অবস্থা হয়েছিল বর্ণনা করো। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য অত্যান্ত গুরুত্তপূর্ণ। কোনি উপন্যাসের এই রচনাধর্মী প্রশ্নটি তৈরী করে গেলে মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষায় একটি ৫ নম্বরের পাওয়া যেতে পারে।

বিষ্টু ধর, একজন অভিমানী অভিনেতা, যিনি সামাজিক প্রতিপত্তি লাভের জন্য নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান। তার ভোটে জেতার আশায়, বিখ্যাত লেখক ক্ষিতীশ সিংহকে তার জন্য বক্তৃতা লিখতে রাজি করান। ক্ষিতীশ, বিষ্টু ধরকে অ্যাপোলো ক্লাবের প্রেসিডেন্টের লোভ দেখিয়ে ক্লাবের জন্য কিছু টাকা আদায় করার সুযোগ হিসেবে দেখেন। বিষ্টু ধর, ক্ষিতীশের প্রস্তাবে রাজি হন।

এদিকে, ক্ষিতীশের স্ত্রী লীলাবতী, বিষ্টু ধরের কাছ থেকে হাতিবাগানে একটি ঘর ভাড়া নেওয়ার জন্য ৫০০০ টাকা সেলামি দেন। বিষ্টু ধর, লীলাবতীর পরিচয় না জেনে টাকা গ্রহণ করেন। পরে, ক্ষিতীশের কাছ থেকে লীলাবতীর পরিচয় জানতে পেরে, বিষ্টু ধর হতবাক হন এবং ক্ষিতীশকে সেলামির টাকা ফেরত দিতে চান।

ক্ষিতীশ, বিষ্টু ধরকে বিনোদ ভড়ের সাথে যোগাযোগ করার ভয় দেখিয়ে টাকা ফেরত নিতে অস্বীকার করেন। এমনকি, তিনি আর বিষ্টু ধরের জন্য বক্তৃতা লিখতেও অস্বীকৃতি জানান। এই ঘটনায় বিষ্টু ধর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন এবং কথা বলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন।

এই অংশে, আমরা দেখতে পাই কীভাবে বিষ্টু ধরের সামাজিক প্রতিপত্তি লাভের আকাঙ্ক্ষা তাকে লোভী এবং অসৎ ব্যক্তি হিসেবে প্রকাশ করে। ক্ষিতীশ সিংহও তার স্ত্রীর অজান্তে বিষ্টু ধরের কাছ থেকে টাকা আদায় করে তার স্বার্থপরতা প্রকাশ করে। এই দুই চরিত্রের লোভ এবং স্বার্থপরতা তাদের মানসিক পতনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

বিষ্টু ধর চূর্ণ বিচূর্ণ। কথা বলার আর ক্ষমতা নেই। দুটি চোখ ছলছলিয়ে উঠেছে। - কী কারণে বিষ্টু ধরের এমন অবস্থা হয়েছিল বর্ণনা করো।

“বিষ্টু ধর চূর্ণ বিচূর্ণ। কথা বলার আর ক্ষমতা নেই। দুটি চোখ ছলছলিয়ে উঠেছে।” – কী কারণে বিষ্টু ধরের এমন অবস্থা হয়েছিল বর্ণনা করো।

  • শুরুর কথা – সামাজিক প্রতিপত্তি লাভের জন্য বিষ্টু ধর বিনোদ ভড়ের মতো ভোটে দাঁড়িয়ে জিততে চান। তার জন্য বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাঁর বক্তৃতা লিখে দেন ক্ষিতীশ সিংহ।
  • প্রেসিডেন্ট পদের প্রতি লোভ – ক্ষিতীশ বিষ্টু ধরকে অ্যাপোলোর প্রেসিডেন্ট পদের লোভ দেখিয়ে ক্লাবের জন্য কিছু টাকা আদায় করতে চায়। বিষ্টু ধর সেই প্রস্তাবে রাজিও হয়ে যান।
  • সেলামির টাকা ফেরত – বিষ্টু ধর ও ক্ষিতীশের মধ্যে কথাবার্তা চলাকালীন ক্ষিতীশের স্ত্রী লীলাবতী এসে উপস্থিত হন। হাতিবাগানে বিষ্টু ধরের একটা ঘর ভাড়া নেওয়ার জন্য লীলাবতী বিষ্টু ধরকে পাঁচ হাজার টাকা সেলামি দেন। বিষ্টু ধর জানতেন না যে, লীলাবতী ক্ষিতীশের স্ত্রী। লীলাবতী চলে গেলে ক্ষিতীশের মুখে সে-কথা শুনে তিনি ভ্যাবাচাকা খেয়ে যান। ক্ষিতীশ সেলামির টাকা ফেরত চান।
  • মানসিক দিক থেকে ভাঙন – ক্ষিতীশ বিনোদ ভড়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার ও তার দাদাকে অ্যাপোলো ক্লাবের প্রেসিডেন্ট করে দেওয়ার ভয় দেখালে বিষ্ট ধর ক্ষিতীশকে না যেতে অনুরোধ করেন। ক্ষিতীশ তখন সেলামির পাঁচ হাজার টাকা ফেরত চান এবং জানান তিনি আর বক্তৃতাও লিখে দিতে পারবেন না। এই কথা শুনে বিষ্টু ধর মানসিকভাবে সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েন। তাঁর আর কথা বলার ক্ষমতা থাকে না এবং দুটি চোখ ছলছল করে ওঠে।

আরও পড়ুন, হাঁড়িতে ভাত ফোটার শব্দটা শুধু সেই মুহূর্তে একমাত্র জীবন্ত ব্যাপার। — লেখককে অনুসরণ করে সেই মুহূর্তটি বর্ণনা করো।

এই অংশে আমরা দেখতে পাই যে বিষ্টু ধর কীভাবে তার সামাজিক প্রতিপত্তি লাভের আকাঙ্ক্ষার জন্য নীতি নৈতিকতা ভুলে লোভের পথে পা বাড়ান। ক্ষিতীশ সিংহের প্রলোভনে সে অ্যাপোলো ক্লাবের প্রেসিডেন্ট পদের লোভে ক্লাবের জন্য টাকা দিতে রাজি হন।

এছাড়াও, লীলাবতীর পরিচয় না জেনে তার কাছ থেকে সেলামি নেওয়া বিষ্টু ধরের অবিবেচনা প্রমাণ করে। ক্ষিতীশের স্ত্রী লীলাবতীর পরিচয় জানতে পেরে বিষ্টু ধর যখন টাকা ফেরত দিতে চান, তখন ক্ষিতীশ তাকে বিনোদ ভড়ের সাথে যোগাযোগ করার ভয় দেখিয়ে টাকা ফেরত নিতে অস্বীকার করেন।

এই ঘটনায় বিষ্টু ধর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন এবং কথা বলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। এই অংশটি আমাদের শিক্ষা দেয় যে লোভ আমাদের জীবনে কতটা ক্ষতিকর হতে পারে। নীতি নৈতিকতা ভুলে লোভের পথে পা বাড়ালে আমাদের অবশ্যই পতনের সম্মুখীন হতে হয়।

Share via:

মন্তব্য করুন