এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “বিপিনচন্দ্র পালের আত্মচরিত ‘সত্তর বছর’ কীভাবে ভারতের আধুনিক ইতিহাসের উপাদান হয়ে উঠেছে তা বিশ্লেষণ করো। বিপিনচন্দ্র পালের আত্মজীবনী ‘সত্তর বছর’ থেকে আধুনিক ভারতে রাজনৈতিক জীবনের কী কী উপাদান পাওয়া যায় তা বিশ্লেষণ করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “বিপিনচন্দ্র পালের আত্মচরিত ‘সত্তর বছর’ কীভাবে ভারতের আধুনিক ইতিহাসের উপাদান হয়ে উঠেছে তা বিশ্লেষণ করো। বিপিনচন্দ্র পালের আত্মজীবনী ‘সত্তর বছর’ থেকে আধুনিক ভারতে রাজনৈতিক জীবনের কী কী উপাদান পাওয়া যায় তা বিশ্লেষণ করো।“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

বিপিনচন্দ্র পালের আত্মচরিত ‘সত্তর বছর’ কীভাবে ভারতের আধুনিক ইতিহাসের উপাদান হয়ে উঠেছে তা বিশ্লেষণ করো।
ভূমিকা –
ভারতের জাতীয়তাবাদী ও চরমপন্থী নেতা বিপিনচন্দ্র পালের আত্মজীবনী সত্তর বছর – এ (1858 – 1880) খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কালের আত্মকথা ও দেশকথা বর্ণিত হয়েছে। ফলে এটি আধুনিক ভারতের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ গৌণ উপাদান।
উপাদানের বিভিন্ন দিক –
সত্তর বছর থেকে ইতিহাসের যে দিকগুলো জানা যায় তা হল –
- গ্রাম ও শহরের কথা – এই গ্রন্থ থেকে বিপিনচন্দ্র পালের বংশ ও পারিবারিক ইতিহাস জানা যায়। আবার বাখরগঞ্জ, ফেঁচুগঞ্জ, শ্রীহট্ট, হবিগঞ্জ-এর মতো গ্রামের পাশাপাশি তৎকালীন কলকাতা শহরের ইতিহাসও জানা যায়।
- সংস্কৃতি – সত্তর বছর থেকে গ্রামীণ সংস্কৃতি অর্থাৎ দোল-দুর্গোৎসব, যাত্রাগান ও পুরাণপাঠ, বিবাহপ্রথার কথাও জানা যায়। আবার কলকাতার তৎকালীন সংস্কৃতি, খাদ্যাভ্যাস ও বিধিনিষেধ, মদ্যপান, সংস্কৃতি ও মদ্যপান নিবারণী সমিতির কথাও জানা যায়।
- ব্রাহ্মসমাজের রাজনৈতিক আদর্শ – তিনি দেখিয়েছেন, ইংরেজি-শিক্ষিত বাঙালিরা নতুন সামাজিক আদর্শের সন্ধান পেয়েছিল। তৎকালীন ব্রাহ্মসমাজও এই শিক্ষিত বাঙালিদের মধ্যে স্বাধীনতার আদর্শের সঞ্চার করেছিল।
- ভারতসভা ও হিন্দুমেলা – সত্তর বছর থেকে আনন্দমোহন বসু ও সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ছাত্রসভা বা স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন ও ভারতসভা গঠনের কথা জানা যায়। এছাড়া নবগোপাল মিত্র ও তাঁর প্রতিষ্ঠিত হিন্দুমেলা নামক জাতীয়তাবাদী প্রতিষ্ঠানের কথাও জানা যায়।
উপসংহার –
বিপিনচন্দ্র পালের সত্তর বছর ইতিপূর্বে রচিত আত্মজীবনীগুলি থেকে পৃথক ও স্বতন্ত্র ছিল। তিনিই প্রথম ব্যক্তিত্ব যিনি তাঁর আত্মজীবনীতে দেশকথা তুলে ধরেছেন। তবে তাঁর এই দেশকথাতে বেশ কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে।
বিপিনচন্দ্র পালের আত্মজীবনী ‘সত্তর বছর’ থেকে আধুনিক ভারতে রাজনৈতিক জীবনের কী কী উপাদান পাওয়া যায় তা বিশ্লেষণ করো।
ভূমিকা –
ভারতের বিশিষ্ট চরমপন্থী কংগ্রেস নেতা বিপিনচন্দ্র পাল (1858 – 1932 খ্রিস্টাব্দ) -এর আত্মজীবনী সত্তর বছর থেকে আধুনিক ভারতের ইতিহাসের উপাদান পাওয়া যায়। তাঁর মতে, সত্তর বছর হল বাংলাদেশের আধুনিক ইতিহাসের সমার্থক।

বিপিনচন্দ্র পালের আত্মচরিত ‘সত্তর বছর’ এর ইতিহাস
ভারতের রাজনৈতিক জীবন – সত্তর বছর থেকে বিপিনচন্দ্রের সমকালীন 1880 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়ের বাংলা তথা ভারতের রাজনৈতিক জীবনের যে প্রতিচ্ছবি পাওয়া যায় তা হল –
- জনরাজ্য ধারণা – উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে কলকাতার ছাত্রাবাসগুলির পরিচালন ব্যবস্থা ছিল গণতান্ত্রিক। এই ছাত্রাবাসগুলি সম্পর্কে বিপিনচন্দ্র পালের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা ছিল এবং এর ভিত্তিতেই তিনি একে জনরাজ্যের সঙ্গে তুলনা করেন।
- রঙ্গালয় ও দেশপ্রেম – উনিশ শতকের শেষার্ধে বেঙ্গল থিয়েটার ও ন্যাশনাল থিয়েটার প্রতিষ্ঠা এবং নীলদর্পণ নাটকের ন্যায় স্বাদেশিক নাটকের অভিনয় বাংলাদেশে নতুন স্বদেশপ্রেমের যুগের সূচনা করে। এই রঙ্গমঞ্চের মাধ্যমে অনেকগুলি জাতীয় সংগীত বা স্বদেশপ্রেমাত্মক গান দেশময় ছড়িয়ে পড়েছিল।
- ব্রাহ্মসমাজের রাজনৈতিক আদর্শ – তিনি দেখিয়েছেন, ইংরেজি-শিক্ষিত বাঙালিরা নতুন সামাজিক আদর্শের সন্ধান পেয়েছিল। তৎকালীন ব্রাহ্মসমাজও এই শিক্ষিত বাঙালিদের মধ্যে স্বাধীনতার আদর্শের সঞ্চার করেছিল।
- ভারতসভা ও হিন্দুমেলা – সত্তর বছর থেকে আনন্দমোহন বসু ও সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ছাত্রসভা বা স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন ও ভারতসভা গঠনের কথা জানা যায়। এছাড়া নবগোপাল মিত্র ও তাঁর প্রতিষ্ঠিত হিন্দুমেলা নামক জাতীয়তাবাদী প্রতিষ্ঠানের কথাও জানা যায়।
উপসংহার –
এভাবে সত্তর বছর থেকে ভারতের জাতীয়তাবাদের উদ্ভবের প্রাথমিক পর্যায়ের কথা জানা যায়। তবে তাঁর সত্তর বছর অসম্পূর্ণ জীবনকথা হওয়ায় জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের কথা জানা যায় না। এটি এই গ্রন্থের একটি বিশেষ সীমাবদ্ধতা।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
সত্তর বছর আত্মজীবনীটি কে রচনা করেছেন?
ভারতের বিখ্যাত চরমপন্থী জাতীয়তাবাদী নেতা বিপিনচন্দ্র পাল এই আত্মজীবনীটি রচনা করেছেন।
সত্তর বছর আত্মজীবনীটি আধুনিক ভারতের ইতিহাসের জন্য কেন গুরুত্বপূর্ণ?
সত্তর বছর আত্মজীবনীটি আধুনিক ভারতের ইতিহাসের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কারণ –
1. এটি বিপিনচন্দ্র পালের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার পাশাপাশি তৎকালীন বাংলা ও ভারতের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ইতিহাস ধারণ করে।
2. ব্রাহ্মসমাজ, ভারতসভা, হিন্দুমেলা, ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয়তাবাদের প্রাথমিক পর্যায় সম্পর্কে তথ্য প্রদান করে।
3. এটি গৌণ ঐতিহাসিক উপাদান হিসেবে গবেষকদের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান।
সত্তর বছর গ্রন্থটির সীমাবদ্ধতাগুলি কী?
সত্তর বছর” গ্রন্থটির সীমাবদ্ধতাগুলি হল –
1. এটি অসম্পূর্ণ আত্মজীবনী – 1880 -পরবর্তী জাতীয় আন্দোলনের কথা এতে নেই।
2. বিপিনচন্দ্র পালের ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি প্রাধান্য পেয়েছে, যা কিছুক্ষেত্রে পক্ষপাতদুষ্ট হতে পারে।
3. কেবল বাংলার প্রেক্ষাপটই বেশি উঠে এসেছে, সমগ্র ভারতের চিত্র নয়।
বিপিনচন্দ্র পাল ব্রাহ্মসমাজকে কীভাবে দেখেছেন?
তিনি ব্রাহ্মসমাজকে ইংরেজি-শিক্ষিত বাঙালিদের মধ্যে স্বাধীনতার আদর্শ ছড়িয়ে দেওয়ার একটি মাধ্যম হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
সত্তর বছর গ্রন্থটি ইতিহাস গবেষণায় কীভাবে সাহায্য করে?
এটি উপনিবেশিক যুগের বাংলার দৈনন্দিন জীবন, রাজনৈতিক চেতনার উন্মেষ ও সমাজ সংস্কারের প্রচেষ্টা বুঝতে ঐতিহাসিকদের সহায়তা করে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “বিপিনচন্দ্র পালের আত্মচরিত ‘সত্তর বছর’ কীভাবে ভারতের আধুনিক ইতিহাসের উপাদান হয়ে উঠেছে তা বিশ্লেষণ করো। বিপিনচন্দ্র পালের আত্মজীবনী ‘সত্তর বছর’ থেকে আধুনিক ভারতে রাজনৈতিক জীবনের কী কী উপাদান পাওয়া যায় তা বিশ্লেষণ করো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “বিপিনচন্দ্র পালের আত্মচরিত ‘সত্তর বছর’ কীভাবে ভারতের আধুনিক ইতিহাসের উপাদান হয়ে উঠেছে তা বিশ্লেষণ করো। বিপিনচন্দ্র পালের আত্মজীবনী ‘সত্তর বছর’ থেকে আধুনিক ভারতে রাজনৈতিক জীবনের কী কী উপাদান পাওয়া যায় তা বিশ্লেষণ করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।