এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন।। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

নবম শ্রেণি – বাংলা – ধীবর-বৃত্তান্ত – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর

ধীবর বৃত্তান্ত হল নবম শ্রেণীর বাংলা পাঠ্যপুস্তকের একটি নাট্যাংশ। এই নাট্যাংশের রচয়িতা হলেন মহাকবি কালিদাস। কালিদাসের বিখ্যাত নাটক অভিজ্ঞানশকুন্তলম্ – এর ষষ্ঠ অঙ্ক থেকে এই নাট্যাংশটি গৃহীত হয়েছে।

Table of Contents

ধীবর বৃত্তান্ত – এর প্রধান চরিত্র হল একজন ধীবর বা জেলে। এই ধীবর নদীতে মাছ ধরার সময় একদিন একটি রাজনামাঙ্কিত আংটি পায়। এই আংটিটি রাজা দুষ্মন্তের। রাজশ্যালক ও দুই রক্ষী এই ধীবরকে আংটি চুরির অভিযোগে গ্রেপ্তার করে। ধীবর অস্বীকার করে এবং তার সত্যবাদিতা প্রমাণ করার চেষ্টা করে। শেষ পর্যন্ত রাজশ্যালক ধীবরের সত্যবাদিতায় সন্তুষ্ট হয়ে তাকে মুক্তি দেয়।

নবম শ্রেণি – বাংলা – ধীবর-বৃত্তান্ত – বাখাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর (2)

তখন তপোবনে এলেন ঋষি দুর্বাসা। — কখন দুর্বাসার আগমন ঘটে? এর ফলে কী ঘটেছিল?

দুর্বাসার আগমনকাল – যখন শকুন্তলা রাজা দুষ্মন্তের চিন্তায় অন্যমনস্ক ছিলেন দুর্বাসা তখন মহর্ষি কণ্বের তপোবনে আসেন।

উদ্দিষ্ট ঘটনার পরিণতি – অন্যমনস্ক শকুন্তলা দুর্বাসার উপস্থিতি বুঝতে পারেননি। ফলে ঋষি অপমানিত বোধ করেন এবং অভিশাপ দেন যে, যাঁর চিন্তায় শকুন্তলা মগ্ন হয়ে আছেন, সেই ব্যক্তিই একদিন শকুন্তলাকে ভুলে যাবেন। শেষপর্যন্ত অবশ্য শকুন্তলার সখী প্রিয়ংবদার অনুরোধে ঋষি দুর্বাসা বলেন যে, রাজার দেওয়া কোনো স্মৃতিচিহ্ন রাজাকে দেখাতে পারলে তবেই এই অভিশাপের প্রভাব দূর হবে।

যার চিন্তায় সে মগ্ন, সেই ব্যক্তি শকুন্তলাকে ভুলে যাবেন — বক্তা কে? তাঁর এমন উক্তির কারণ কী?

বক্তার পরিচয় – উল্লিখিত মন্তব্যটির বক্তা ঋষি দুর্বাসা।

উদ্ধৃত উক্তির কারণ – মহর্ষি কণ্বের তপোবনে রাজা দুষ্মন্ত শকুন্তলাকে বিয়ে করে রাজধানীতে ফিরে যান? এরপরে দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও রাজার কোনো দূত আসে না শকুন্তলার খোঁজ নিতে। স্বামীর চিন্তায় শকুন্তলা অন্যমনস্কা হয়ে থাকেন। এইসময়েই সেখানে আসেন ঋষি দুর্বাসা। কিন্তু শকুন্তলা আনায় থাকায় দুর্বাসার উপস্থিতি টের পান না। তখন অপমানিত ঋষি অভিশাপ দিয়ে মন্তব্যটি করেন।

শকুন্তলা অপমানিতা হলেন রাজসভায়। — শকুন্তলা কে? শকুন্তলার এই অপমানের কারণ কী ছিল? 

শকুন্তলার পরিচয় – শকুন্তলা ছিলেন মহর্ষি কণ্বের পালিতা কন্যা।

শকুন্তলার অপমানের কারণ – দুষ্মন্ত যখন শকুন্তলাকে বিবাহ করে তাঁর কাছ থেকে বিদায় নিয়েছিলেন তখন তাঁকে একটি আংটি পরিয়ে দিয়েছিলেন। শকুন্তলাকে দুষ্মন্তের কাছে পাঠানোর সময়ে শকুন্তলার সখীরা মনে করে যে, দুর্বাসার অভিশাপকে ব্যর্থ করার জন্য এই আংটিটিই হবে স্মারকচিহ্ন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত যাওয়ার পথে স্নানের সময় শকুন্তলার হাত থেকে আংটিটি খুলে জলে পড়ে যায়। রাজসভায় শকুন্তলা কোনো স্মারকচিহ্ন দেখাতে না পারায় অপমানিত হন।

তবে কি তোকে সদ ব্রাক্ষ্মণ বিবেচনা করে রাজা এটা দান করেছেন? — বক্তা কে? মন্তব্যটির কারণ ব্যাখ্যা করো।

বক্তার পরিচয় – উল্লিখিত মন্তব্যটির বক্তা প্রথম রক্ষী।

মন্তব্যের কারণ – ধীবর রাজার আংটি চুরি করার কথা অস্বীকার করলে প্রথম রক্ষী আলোচ্য মন্তব্যটি করে। ধীবরের কাছে রাজার নাম খোদাই করা মণিখচিত আংটিটি পেয়ে রাজশ্যালক এবং রক্ষীরা নিশ্চিত হয়ে যান যে ধীবরই আংটিটি চুরি করেছে। নীচু জাতের মানুষ হওয়ায় অনায়াসেই তাকে চোর সন্দেহ করা হয়। কিন্তু ধীবর সেই চুরির কথা অস্বীকার করলে প্রথম রক্ষী তাকে ব্যঙ্গ করে প্রশ্নোদ্ধৃত মন্তব্যটি করে।

তা তোর জীবিকা বেশ পবিত্র বলতে হয় দেখছি। — কে, কোন্ প্রসঙ্গে মন্তব্যটি করেছে? 

বক্তা – ধীবর-বৃত্তান্ত নাট্যাংশ থেকে নেওয়া আলোচ্য মন্তব্যটি করেছেন রাজশ্যালক।

প্রসঙ্গ – ধীবরের কাছে রাজার নাম খোদাই করা মণিখচিত আংটিটি পেয়ে দুই রক্ষী তাকে চোর সাব্যস্ত করে। আত্মপক্ষ সমর্থনে ধীবর নিজের কথা বলতে চাইলেও রক্ষীরা তাকে ব্যঙ্গবিদ্রুপ করে। ধীবর জানায় যে, সে একজন জেলে। জাল, বড়শি ইত্যাদির সাহায্যে মাছ ধরে সে তার সংসার চালায়। ধীবরের এই জবাব শুনে ব্যঙ্গের সুরে রাজার শ্যালক ধীবরের উদ্দেশে উদ্দিষ্ট মন্তব্যটি করেন।

তা তোর জীবিকা বেশ পবিত্র বলতে হয় দেখেছি – বক্তা কাকে উদ্দেশ্য করে কথাটি বলেছেন? ওই ব্যক্তির প্রতিক্রিয়া কী ছিল?

উদ্দিষ্ট ব্যক্তি – কালিদাসের ধীবর-বৃত্তান্ত থেকে নেওয়া নাট্যদৃশ্যে রাজশ্যালক ধীবরকে উদ্দেশ্য করে প্রশ্নোদ্ধৃত মন্তব্যটি করেছেন।

উদ্দিষ্ট ব্যক্তির প্রতিক্রিয়া – ধীবরের পেশা নিয়ে রাজশ্যালক ব্যঙ্গ করলে ধীবর তার তীব্র প্রতিবাদ করে। সে এরকম কথা বলতে রাজশ্যালককে নিষেধ করে এবং আরও বলে মানুষ যে বৃত্তি নিয়ে জন্মেছে তা নিন্দনীয় হলেও কখনও পরিত্যাগ করা উচিত নয়। বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণের উদাহরণ দিয়ে সে জানায় স্বভাবে দায়পরবশ হলেও যজ্ঞের পশুবধের সময় নির্দয় হন। অর্থাৎ কোনো পেশাই সম্পূর্ণভাবে ত্রুটিহীন নয়।

কীভাবে এই আংটি আমার কাছে এল — তা বললাম। — বক্তা আংটি পাওয়ার প্রসঙ্গে কী বলেছিল লেখো।

অথবা, ঘটনাক্রমে সেই আংটি পেল এক ধীবর – কোন্ ঘটনাক্রমে সে আংটিটি পেয়েছিল?

বক্তার প্রসঙ্গকথা – রাজশ্যালক ও রক্ষীরা ধীবরের কাছে রাজার নাম খোদাই করা রত্নখচিত আংটিটি পেয়ে রক্ষীরা তাকে চোর সাব্যস্ত করেন। তখন ধীবর নিজের পেশাগত পরিচয় দেয় এবং বলে যে, একদিন একটা রুই মাছ ধরার পরে সে যখন মাছটি টুকরো করেছিল তখন তার পেটের মধ্যে মণিমুক্তাখচিত এই আংটিটি সে দেখতে পায়। তারপরে সেই আংটিটি বিক্রি করার জন্য যখন সে লোককে দেখাচ্ছিল তখনই রক্ষীরা তাকে ধরেছে।

সুতরাং রাজবাড়িতেই যাই। – কে, কেন রাজবাড়িতে যেতে চেয়েছেন?

উদ্দিষ্ট ব্যক্তি – রাজশ্যালক রাজবাড়িতে যেতে চেয়েছেন ।

রাজবাড়িতে যেতে চাওয়ার কারণ – ধীবর রাজরক্ষীদের জানিয়েছিল যে, রাজার নাম খোদাই করা, রত্নখচিত আংটিটি সে রুইমাছের পেট থেকে পেয়েছে। তার কথার সত্যতা যাচাই করার জন্যই রাজশ্যালক রাজবাড়িতে যেতে চেয়েছেন। ধীবরকে নিয়ে সদর দরজায় রক্ষীদের সাবধানে অপেক্ষা করতে বলে রাজশ্যালক জানান যে, সব কথা মহারাজকে জানিয়ে তাঁর আদেশ নিয়ে তিনি ফিরে আসবেন।

মহারাজ এ সংবাদ শুনে খুব খুশি হবেন। — কারা মন্তব্যটি করেছে? কোন্ সংবাদ শুনে মহারাজ খুশি হবেন?

উদ্দিষ্ট ব্যক্তিবর্গ – দুজন রক্ষী প্রশ্নোদ্ধৃত মন্তব্যটি করেছে।

উল্লিখিত সংবাদ – রাজশ্যালক ধীবরের কাছে আংটি পাওয়ার পরে মহারাজকে সমস্ত ঘটনা জানানোর জন্য গিয়েছিলেন। তখনই রক্ষীরা এই মন্তব্যটি করে। এই মন্তব্যের দুটি দিক আছে। প্রথমত, রাজা তাঁর আংটি ফেরতের কথা শুনে খুশি হবেন। দ্বিতীয়ত, রাজার এই মূল্যবান আংটি যে চুরি করেছিল তাকে ধরতে পারায় রাজার খুশি অনেকটাই বেড়ে যাবে।

মহারাজের হুকুমনামা হাতে নিয়ে এদিকে আসছেন। — হুকুমনামা কী? সে হুকুমনামার কী নির্দেশ ছিল?

হুকুমনামা -র অর্থ – এককথায় হুকুমনামা বলতে আদেশপত্র বোঝায় ।

হুকুমনামাতে উল্লিখিত নির্দেশ – ধীবর-বৃত্তান্ত নাট্যাংশে রক্ষীরা প্রত্যাশা করেছিল যে, মহারাজের হুকুমনামায় ধীবরকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার নির্দেশ থাকবে। কিন্তু রাজশ্যালক আসার পরে দেখা যায়, হুকুমনামায় জেলেকে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কারণ, আংটি বিষয়ে ধীবর যা যা বলেছিল তার সবই সত্যি বলে প্রমাণিত হয়েছে।

সূচক, এই জেলেকে ছেড়ে দাও। — কে কথাটি বলেছে? জেলেকে ছেড়ে দেওয়া হল কেন?

বক্তা – উল্লিখিত মন্তব্যটি করেছে রাজশ্যালক।

জেলেকে ছেড়ে দেওয়ার কারণ – ধীবর বৃত্তান্ত নাট্যাংশে ধীবরের কাছে রাজার নাম খোদাই করা রত্নখচিত আংটিটি পাওয়ার পরে রাজশ্যালক এবং রক্ষীরা তাকে চোর সাব্যস্ত করে। আংটি পাওয়ার বিষয়ে ধীবরের কোনো কথাই তারা শোনে না। কিন্তু রাজশ্যালক রাজাকে বিষয়টি জানালে রাজা বলেন যে, আংটি বিষয়ে ধীবর যা বলেছে সবই সত্য। অর্থাৎ মাছের পেট থেকেই সে আংটিটি পেয়েছে। সেই কারণে রাজা ধীবরকে ছেড়ে দেওয়ারও নির্দেশ দেন।

এ কি যা – তা অনুগ্রহ — বক্তা কে? এরকম মন্তব্যের কারণ কী?

বক্তা – কালিদাসের ধীবর-বৃত্তান্ত নাট্যদৃশ্যে উল্লিখিত মন্তব্যটির বক্তা প্রথম রক্ষী সূচক।

মন্তব্যের কারণ – সূচক এবং জানুক প্রত্যাশা করেছিল যে রাজার কাছে আংটি বিষয়ে ধীবরের যাবতীয় বক্তব্য মিথ্যা বলে প্রমাণিত হবে এবং তারা ধীবরকে মৃত্যুদণ্ড দেবে। কিন্তু ধীবরের সব কথা সত্য বলে স্বীকৃতি পায়। শুধু তা-ই নয়, রাজা তাকে আংটির সমপরিমাণ অর্থ পুরস্কার দেন। এতে রক্ষীরা হতাশ হয়ে মন্তব্যটি করে।

মুহূর্তের জন্য রাজা বিহ্বলভাবে চেয়ে রইলেন। কোন্ সময়ে রাজার এমন বিহ্বল অবস্থা হয়েছিল?

বিহ্বল অবস্থার সময় – ধীবর-বৃত্তান্ত নাট্যাংশে ধীবরের কাছে রাজার নাম খোদাই করা রত্নখচিত আংটিটি পেয়ে রাজশ্যালক এবং রক্ষীরা ধীবরকেই চোর সাব্যস্ত করে। এরপর রাজশ্যালক পুরো বিষয়টি জানানোর জন্য রাজার কাছে যায়। কিন্তু আংটি সম্পর্কে ধীবরের বলা কথার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য রাজার কাছে গেলে ধীবরের বলা সব কথাই সেখানে সত্য বলে প্রমাণিত হয়। আংটির দিকে তাকিয়ে রাজার কোনো প্রিয়জনের কথা মনে পড়ে যায়। ফলে স্বভাবে গম্ভীর প্রকৃতির হলেও ওই মুহূর্তে তিনি বিহ্বল হয়ে পড়েন।

এই নাটকের মাধ্যমে আমরা শিখতে পারি যে, সততা ও নীতিপরায়ণতা সবসময়ই জয়ী হয়। ধীবরের মতো সৎ ও নীতিবান ব্যক্তিরাই সমাজে শ্রদ্ধার পাত্র। এই নাটকটি আমাদেরকে সততা, নীতিপরায়ণতা, সহনশীলতা ও নম্রতা প্রভৃতি গুণাবলী অর্জনে অনুপ্রাণিত করে।

Share via:

মন্তব্য করুন