অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – পরবাসী – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

Rahul

আজকের এই আর্টিকেলে অষ্টম শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের দশম অধ্যায়পরবাসী’ – এর ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নগুলো অষ্টম শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলো পরীক্ষায় প্রায়ই আসে।

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – পরবাসী – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – পরবাসী – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

সেতারের বিশেষণ হিসেবে কবি সোনালি শব্দের ব্যবহার করেছেন কেন?

নদীর জলের উপর সূর্যের সোনার মতো উজ্জ্বল আলো পড়ে ঝিকমিক করে ‘সোনালি’ রং হয় এবং ‘সেতার’ – এর সুমধুর শব্দতরঙ্গ নদীতরঙ্গের কলতানের মতোই উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। তাই ‘সোনালি’র উজ্জ্বলতা এবং সেতারের উজ্জ্বলতা মিলেমিশে একাকার হয়ে নদীর আবহ তৈরি করেছে এবং ‘স’ – এর অনুপ্রাসে ঋদ্ধ হয়ে সোনালি সেতারের বিশেষণে ভূষিত হয়েছে।

কত্থক ও কথাকলি – র কথা কবিতার মধ্যে কোন্ প্রসঙ্গে এসেছে?

সুডৌল কাঁকুড়ে মাটির টিলায় পলাশ ফুলের বন্যা দেখে হঠাৎ আনন্দ-আতিশয্যের প্রসঙ্গে বনময়ূরের ‘কত্থক’ নৃত্যশৈলীর কথা এবং জঙ্গলের বাঘ-চিতার লোলুপ এবং হিংস্র ছন্দে চলে যাওয়ার প্রসঙ্গে একটা অদ্ভুত ভয়ংকর ‘কথাকলি’ নাচের মতো বেগবতী ছন্দের কথা কবিতায় এসেছে। কথাকলিতে চোখ এবং অঙ্গপ্রত্যঙ্গর প্রয়োগ বেশি থাকে, তাই চিতার ভঙ্গীর সঙ্গে এর মিল। কথকের অনুচ্চারিত দেহভঙ্গি, গ্রীবাসূচনায় ময়ূরের ছন্দ মেলে।

সিন্ধুমুনির হরিণ-আহ্বান কবি কীভাবে শুনেছেন?

অথবা, শুনেছি সিন্ধুমণির হরিণ-আহ্বান — সিন্ধুমণির হরিণ-আহ্বান – এর পৌরাণিক প্রসঙ্গটি লেখো।

নদীতীরে সন্ধ্যার অন্ধকার ঘন হবার আগে পশুরা জলপান করতে আসে। তখন হরিণও আসে নিঃশব্দে। কিন্তু জলপানের শব্দ নির্জনতা ভঙ্গ করে। হরিণের জলপানের দৃশ্যটি কবিমনে রামায়ণ কাহিনির স্মৃতি জাগিয়ে তোলে। মুনিপুত্র সিন্ধুর কলশিতে জল ভরার শব্দ হরিণের জলপানের শব্দভ্রমে তাকে বাণবিদ্ধ করে দশরথের হত্যা করার কাহিনি ‘রামায়ণ’ – এর আদিকাণ্ডে বর্ণিত। হরিণের জলপানধ্বনি কবিমনে সেই স্মৃতি জাগায় বলেই কবিও যেন সিন্ধুমুনির হরিণের আহ্বান শুনতে পান।

ময়ূর মরেছে পণ্যে – এই কথার অন্তর্নিহিত অর্থ কী?

ময়ূর সৌন্দর্যে অতুলনীয়। কিন্তু তা শুধু অবলোকন করেই মানুষ তৃপ্ত নয়। ময়ূরের নখ থেকে পালক পর্যন্ত সব কিছুই মানুষের কাজে লাগে। ময়ূরের পেখম দিয়ে টুপি, তুলি তৈরি হয় এমনকি ময়ূরের মাংসও খুব সুস্বাদু; যা মানুষ খায়। অর্থাৎ ভোগবাদী দুনিয়া ময়ূরের মৃত্যু ঘটিয়ে, তাকে পণ্যে পরিণত করেছে।

দুই দিকে বন, মাঝে ঝিকিমিকি পথ – বনের মাঝে পথ ঝিকিমিকি কেন?

দু-দিকে বনের মাঝে গাছের ফাঁকফোকর দিয়ে সূর্যের আলোর লুকোচুরি খেলা চলে। দিনেরবেলা পাতার ফাঁক দিয়ে সূর্যের আলো এবং রাত্রিবেলা জোনাকির আলোয় দু-দিকের বনের মাঝে পথ ঝিকিমিকি করে।

রাতের আলোয় থেকে-থেকে জ্বলে চোখ, – রাতের আলোয় থেকে থেকে চোখ জ্বলে কেন?

এখানে প্রথমত ‘রাতের আলো’ বলা হয়েছে, কারণ যেহেতু আলো অত্যন্ত শক্তিশালী মাধ্যমে যাতায়াত করে, নিশ্ছিদ্র অন্ধকার তাই একেবারেই সম্ভব নয়। তাই রাতেরও এক ধরনের গা ছমছম করা মোহময় আলো থাকে। সেই আলোয় মাঝে মাঝেই দেখা যায় শ্বাপদের লুব্ধ চোখ – যা আলো-আঁধারিতেও জ্বলজ্বল করে।

নিটোল টিলায় পলাশ গাছের ঝোপ এবং ময়ূর কেন দেখা যায়?

পরবাসী কবিতাটিতে টিলার কথা বলা হয়েছে। এই টিলা অঞ্চল কাঁকুরে মাটিতেই হয়। এবং এ মাটিতেই ঝাঁকড়া ঝাঁকড়া পলাশ ফুল ফোটে। ঘন জঙ্গলে ময়ূর থাকে না। কেন-না জায়গার অভাবে সে তার পেখম মেলতে পারে না, তাই নিটোল সুডৌল টিলার পাশেই পলাশের ঝোপ এবং ময়ূর দেখতে পাওয়া যায়।

নদীর সাথে সোনালি সেতারের সম্পর্ক কোথায়?

নদীর জলে সূর্যরশ্মি পড়ে চিকচিক করে ঢেউয়ের মাথাগুলো। সেটা কবির কল্পনায় যেন সোনার মতো ঝকঝকে রোদের প্রভাবে সোনালি রং ধারণ করে। অন্যদিকে নদী আপন বেগে বয়ে চলে এবং নদীর স্রোতের যে তথাকথিত কুলুকুলু শব্দ তা কবিচেতনার কাছে তিন তারবিশিষ্ট সেতারের শব্দতরঙ্গের সঙ্গে তুলনীয়।

চিতা চলে গেল – চিতা কীভাবে চলে যায়?

চিতা যখন হাঁটে তার শব্দ কেউ শুনতে পায় না। আর তার পদচিহ্ন লেজ দিয়ে মুছতে মুছতে যায় দুরন্ত গতিতে। একটা অদ্ভুত রাজকীয় অথচ ভয়ংকর কথাকলি নাচের মতো বেগবতী লুব্ধ হিংস্র ছন্দে চিতা চলে যায়।

সারাদেশময় তাঁবু বয়ে কত ঘুরব? — কবি কেন তাঁবু বয়ে ঘোরার কথা বলেছেন?

তাঁবু অর্থ হল ‘মাথা গোঁজার ক্ষণস্থায়ী ঠাঁই’ বা ‘শিবির’। উচ্ছেদ হওয়া প্রকৃতি সারাজীবন ধরে তার উচ্ছেদের পূর্ববর্তী সুন্দর সরল জীবনকে বয়ে বেড়ায়। মূল বা শিকড় খুঁজে বেড়ায় প্রকৃতি কিংবা মানুষ। কিন্তু সে কোনো দিনই পায় না, আর পায়না বলেই কবিকণ্ঠে ধ্বনিত হয় – সারাদেশময় তাঁবু বয়ে কত ঘুরব?


আজকের এই আর্টিকেলে অষ্টম শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের দশম অধ্যায়পরবাসী’ এর ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এই প্রশ্নগুলো অষ্টম শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলো প্রায়ই পরীক্ষায় আসে। আশা করি, এই নিবন্ধটি আপনার জন্য সহায়ক হয়েছে। যদি আপনার কোনো প্রশ্ন থাকে বা আরও সহায়তার প্রয়োজন হয়, আপনি টেলিগ্রামে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এছাড়াও, দয়া করে আপনার বন্ধুদের সঙ্গে এই পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না, যাতে তারাও উপকৃত হতে পারে। ধন্যবাদ!

Please Share This Article

Related Posts

নবাব সিরাজউদ্দোলা কে ছিলেন? পলাশীর যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল লেখো।

পলাশীর যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল

Class 8 English – The Happy Prince – About Author and Story

Class 8 English – The Happy Prince – About Author and Story

Class 8 English – The Happy Prince – Question and Answer

Class 8 English – The Happy Prince – Question and Answer

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

ভারতীয় উপমহাদেশ বলতে কী বোঝো? আয়তন অনুসারে ভারতের প্রথম তিনটি বৃহদায়তন রাজ্য ও রাজধানীর নাম লেখো।

ভারতের চতুঃসীমা ও অবস্থান নির্দেশ করো।

ভারতের ভৌগোলিক অবস্থানের গুরুত্ব লেখো।

ভারতের বিস্তৃতি, আয়তন, সীমানা, প্রতিবেশী দেশসমূহ, দ্বীপপুঞ্জ ও বর্তমান লোকসংখ্যা সম্পর্কে উল্লেখ করো।

দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তির ব্যাপারে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের অবদান সংক্ষেপে আলোচনা করো।