অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – চিঠি – বিষয়সংক্ষেপ

Gopi

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা অষ্টম শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের অষ্টম অধ্যায়চিঠি’ নিয়ে আলোচনা করবো। এই বিষয়সংক্ষেপটি অষ্টম শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি প্রায়শই পরীক্ষায় আসে।

চিঠি – বিষয়সংক্ষেপ
চিঠি – বিষয়সংক্ষেপ

চিঠি অধ্যায়ের লেখক পরিচিতি

উনিশ শতকের বাংলা সাহিত্যের বিশিষ্ট কবি ও নাট্যকার মধুসূদন দত্ত ১৮২৪ খ্রিস্টাব্দের ২৫ জানুয়ারি যশোহরের সাগরদাঁড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা রাজনারায়ণ দত্ত প্রখ্যাত উকিল ছিলেন। মা জাহ্নবী দেবীর তত্ত্বাবধানে তাঁর শৈশবশিক্ষা শুরু হয়। পরে পিতার সঙ্গে সাত বছর বয়সে কলকাতায় আসেন এবং প্রথমে দু-বছর খিদিরপুর স্কুলে পড়ার পর হিন্দু কলেজের জুনিয়ার ডিপার্টমেন্টের সর্বনিম্ন শ্রেণিতে ভরতি হন। এখানে ভূদেব মুখোপাধ্যায়, রাজেন্দ্রলাল মিত্র, রাজনারায়ণ বসু, গৌরদাস বসাক প্রমুখ সহপাঠীদের সঙ্গে পাঠগ্রহণ করেন।

১৮৪৩ খ্রিস্টাব্দের ৯ ফেব্রুয়ারি খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত হলে পিতা তাঁকে ত্যাগ করেন। ইংরেজি সাহিত্যে খ্যাতির অভিপ্রায়ে তিনি বিলেত যান এবং গ্রিক, ল্যাটিন, সংস্কৃত, ইংরেজি ভাষায় পান্ডিত্য অর্জন করেন। ‘শর্মিষ্ঠা’, ‘পদ্মাবতী’, ‘একেই কী বলে সভ্যতা’, ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’ ইত্যাদি নাটক-প্রহসন এবং ‘তিলোত্তমা সম্ভব কাব্য’, ‘মেঘনাদবধ কাব্য’, ‘ব্রজাঙ্গনা কাব্য’, ‘বীরাঙ্গনা কাব্য’ ও ‘চতুর্দশপদী কবিতাবলী’ রচনা করেন। বাংলায় রচিত তাঁর গ্রন্থের সংখ্যা ১২টি এবং ইংরেজি গ্রন্থের সংখ্যা ৫টি। মহান এই কবি ‘পদ্মাবতী’ নাটকে অমিত্রাক্ষর ছন্দ ব্যবহার করেন। মহাকবি মধুসূদন ভাগ্যবিড়ম্বিত জীবন অতিবাহিত করে ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দের ২৯ জুন লোকান্তরিত হন।

চিঠি অধ্যায়ের উৎস

মধুসূদনের পত্রাবলী গ্রন্থ থেকে গৃহীত তিনটি পত্র পাঠ্যাংশের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

চিঠি অধ্যায়ের পাঠপ্রসঙ্গ

প্রথম পত্রটি মধুসূদন দত্ত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে লেখেন ফ্রান্সের ভার্সাই থেকে ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দের ৩ নভেম্বর। দ্বিতীয় পত্রটি লেখেন সহপাঠী গৌরদাস বসাককে এবং তৃতীয় পত্রটি লেখেন অপর এক সহপাঠী রাজনারায়ণ বসুকে। পাঠ্য তিনটি পত্রের তরজমা অর্থাৎ অনুবাদ করেন সুশীল রায়।

চিঠি অধ্যায়ের বিষয়সংক্ষেপ

প্রথম পত্র – মধুসুদন দত্ত বিদ্যাসাগরকে পত্র লিখেছেন ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দের ৩ নভেম্বর, ১২ রু-দ্য শ্যাতিয়ারস, ভার্সাই, ফ্রান্স থেকে। ঈশ্বরচন্দ্রের উপর আস্থাশীল মধুসূদনের তাঁর প্রতি অনুরাগ থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় – মধুসূদনের প্রতিভার বিকাশ ও বিস্তৃতি ঈশ্বরচন্দ্র উপলব্ধি করেছিলেন। ঈশ্বরচন্দ্র নিজে বিচিত্র প্রতিভার অধিকারী ও নানা গুণের সমন্বয় তাঁর চরিত্রকে মহৎ করেছে বলে মধুসূদনের মতো বিস্তৃত প্রতিভাকে শ্রদ্ধা জানাতে দ্বিধা করেননি।

ঈশ্বরচন্দ্র যে নানাভাবে উপকারের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন এবং সাহায্য করতে কখনও দ্বিধা করেননি-তা জানাতে ভোলেননি। শীতকালে ফ্রান্সে যে ভয়ংকর শীত এবং তা যে ভারতের ঠান্ডার থেকে ছয় গুণ বেশি তা জানিয়েছেন। কোনো শিক্ষকের সাহায্য ছাড়াই তিনি সহজে ফ্রেঞ্চ, ইটালিয়ান অনুশীলন করে জার্মান ভাষাচর্চায় ব্যস্ত। জার্মান ভাষা এক অদ্ভুত ভাষা এবং বিদেশি ভাষার প্রতি তাঁর যে গভীর অনুরাগ ছিল – তা এই পত্রের মাধ্যমে বোঝা যায়।

দ্বিতীয় পত্র – মধুসূদন প্রিয় সহপাঠী গৌরদাস বসাককে এই পত্র লেখেন। ‘সীলোন’ নামের এক জাহাজে যাওয়ার সময় সুযোগ পেয়ে তিনি চিঠি লিখতে বসেছেন। জাহাজটি রূপকথার দেশের ভেসে যাওয়া একটা প্রাসাদের মতো। এমন আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজন জাহাজে থাকতে পারে – তা ভাবনার অতীত। এহেন বিলাসপূর্ণ ব্যবস্থার প্রতি তিনি গভীর আস্থাজ্ঞাপন করেছেন।

ইংল্যান্ডে গিয়ে তিনি ঠিকানা জানালে তবে যেন গৌরদাস চিঠি লেখেন তা জানিয়েছেন। কিন্তু ইংল্যান্ডে পৌঁছে তিনি যে নানা কর্মে ভীষণভাবে ব্যস্ত হয়ে যাবেন-তা জানাতেও দ্বিধা করেন নি। জীবিকার প্রয়োজনে যে পেশা গ্রহণে এসেছেন এবং দৃঢ়তার সঙ্গে মনোযোগ দিয়ে গ্রহণ করার মানসিক প্রস্তুতি থেকে বোঝা যায় – পত্রলেখক নিজের সম্পর্কে সতর্ক এবং আত্মপ্রত্যয়ী ছিলেন।

চিঠির অংশবিশেষ যে পরে লেখা তার উল্লেখ আছে। পত্রের মধ্যে রয়েছে – ‘স্পেনের উপকূল ছাড়িয়ে, রবিবার।’ এ থেকে বোঝা যায়, পত্রের শেষাংশ পরে লেখা। চিঠিটি দুই দিন পর তিনি আবার লেখেন। আগামীকাল জিব্রালটা প্রণালীতে জাহাজ পৌঁছোবে বলে মনে করেছেন। সেখানের সমুদ্র ভীষণ শান্ত, অনেকটা হুগলি নদীর মতো। এখানে আবহাওয়া ভারতের নভেম্বর মাসের মতো নাতিশীতোষ্ণ। ঠান্ডা হওয়ার ভয় ছিল, কিন্তু প্রকৃতির ভিন্নরূপ। লন্ডনে পৌঁছে সংবাদ দেবেন বলে অঙ্গীকার করেছেন। শৈশব থেকে যে দেশের প্রতি তীব্র মোহ ছিল সেই দেশটা ক্রমশ কাছাকাছি এসে যাচ্ছে ভেবে পত্রলেখক যে রোমাঞ্চিত – তা পত্রের শেষাংশে পূর্ণতা পেয়েছে।

তৃতীয় পত্র – প্রিয় অন্তরঙ্গ সুহৃদ রাজনারায়ণ বসুকে লেখা পত্র এটি এবং উভয়ের মধ্যে যে অগাধ শ্রদ্ধা ছিল – তার পরিচয় এখানে নিহিত। ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ কেমন লেগেছে – তা জানার জন্য মধুসূদন ব্যস্ত ছিলেন। রাজনারায়ণের সঙ্গে দেখা হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই যে তিনি ভীষণ জ্বরে আক্রান্ত হন-তা জানাতে দ্বিধা করেননি এবং তিনি যে ছয়-সাতদিন শয্যাগত ছিলেন – তাও জানিয়েছেন।

মেঘনাদ চরিত্রটি নির্মাণে তিনি যে কতটা সন্দিগ্ধ ছিলেন – তার প্রকাশ আছে পত্রে। এজন্য প্রিয় বন্ধুকে জানাতে পেরে চিত্তের সমস্ত গ্লানি দূর করেছেন। মেঘনাদের মৃত্যুদৃশ্য বর্ণনা যে তাঁর কাছে ভীষণ পীড়াদায়ক ও বেদনার – তা জানাতে তিনি দ্বিধা করেননি। কাব্যের ষষ্ঠ সর্গটির চরণসংখ্যা ৭৫০ – এর কাছাকাছি। এ ব্যাপারে মধুসূদন প্রিয় বন্ধুর উপযুক্ত মতামত প্রার্থনা করেছেন।

মেঘনাদবধ কাব্য সম্পর্কে তিনিও যে উচ্ছ্বসিত – তা তাঁর পত্রে বোঝা যায় এবং এটি যে মিলটনের কাব্য অপেক্ষা উৎকৃষ্ট, তা আনন্দের সঙ্গে জানিয়েছেন। কারো কারো বিশ্লেষণে কাব্যটি কালিদাসের সমগোত্রের। ভার্জিল, কালিদাস ও ট্যাসোর সমান কাব্যরচনা নিয়ে মধুসূদনের সংশয় ছিল না, কিন্তু মিলটন তাঁর কাছে সর্বোৎকৃষ্ট কবি।

কাব্য সমালোচনায় ভালোমন্দের দায়িত্ব বন্ধুবর রাজনারায়ণের উপর ন্যস্ত রেখেছেন। তাঁর বিশ্বাস ছিল কাব্য সম্পর্কে রাজনারায়ণের মূল্যায়ন অনেক বেশি সার্থক ও যথাযথ। অনেক হিন্দু নারী তাঁর ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ পাঠের পর চোখের জল ফেলেছেন বলে তিনি জানিয়েছেন এবং বন্ধুর কাছে দাবি রেখেছেন যে তাঁর স্ত্রী যাতে তাঁর কাব্যটি পড়েন – সেই ব্যাপারে তাঁর তৎপরতার প্রতি আস্থাজ্ঞাপনে দ্বিধান্বিত ছিলেন না। বিদ্যানুরাগী রাজনারায়ণের প্রতি মধুসূদন যে কতটা শ্রদ্ধাবনত ও আদর্শ ভাবনাচিন্তাকে সমানভাবে গুরুত্ব প্রদানে তৎপর – তা নির্ভীকভাবে জানাতে দ্বিধান্বিত ছিলেন না।

চিঠি অধ্যায়ের নামকরণ

নামকরণ যে – কোনো সাহিত্যেরই একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। নাম ছাড়া সাহিত্য পরিপূর্ণতা লাভ করতে পারে না। নাম হল সাহিত্যের ইঙ্গিতবাহক। সাহিত্য পাঠের পূর্বে নামকরণ সাহিত্য-বিষয়ে পাঠককে পূর্বাভাস দেয়। সাহিত্যে নামকরণ নানা উপায়ে হতে পারে। যথা – চরিত্রকেন্দ্রিক, ঘটনাকেন্দ্রিক, ব্যঞ্জনাভিত্তিক ইত্যাদি।

মাইকেল মধুসুদন দত্তের লেখা ‘চিঠি’ গদ্যাংশটি তিনটি পত্রের সংকলন। প্রথম পত্রটি মধুসুদন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে লেখেন ফ্রান্সের ভার্সাই থেকে ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দের ৩ নভেম্বর। দ্বিতীয় পত্রটি লেখেন সহপাঠী গৌরদাস বসাককে এবং তৃতীয় পত্রটি লেখেন অপর এক সহপাঠী রাজনারায়ণ বসুকে। পাঠ্য তিনটি পত্রের তরজমা অর্থাৎ অনুবাদ করেন সুশীল রায়।

যেহেতু গদ্যাংশটি তিনটি পত্রের সংকলন তাই এর নামকরণ ‘চিঠি’ যথার্থ এবং সার্থক হয়েছে।

চিঠি অধ্যায়ের শব্দার্থ ও টীকা

প্রথম পত্রটি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে লেখা

তত্ত্বাবধান – মনোযোগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ; পরিচালন; পরিদর্শন। ঝঞ্ঝাক্ষুব্ধ – প্রচণ্ড ঝড়ে উত্তাল বা ধ্বংসপ্রাপ্ত। জলরাশি – ভীষণ জলধারা। উদ্ধার – মুক্তি; মোচন। বিপদ – বিঘ্ন। মারাত্মক – ভীষণ। জোব্বা – বড়ো জামা যা পা পর্যন্ত লম্বা। ভারতচন্দ্র – বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগের শেষ কবি। তাঁর জন্ম ১৭১২ খ্রিস্টাব্দে এবং লোকান্তর ঘটে ১৭৬০ খ্রিস্টাব্দে। তাঁর কবিকৃতিত্বে মুগ্ধ রাজা কৃষ্ণচন্দ্র ‘গুণাকর’ উপাধি দেন। তিনি জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মেধাবী মানুষটি কয়েকটি গ্রন্থ রচনা করেন এবং তাঁর শ্রেষ্ঠ কাব্য ‘অন্নদামঙ্গল’ (১৭৫৩) রচনায় কবির কৃতিত্বের যথার্থ পরিচয় মেলে। বিক্রম – পৌরুষ। হিমানী – ঠান্ডা। রপ্ত – গ্রহণ; আয়ত্ত। মনোনিবেশ – মনোযোগ দেওয়া; মনঃসংযোগ। সহায়তা – সাহায্য। অকপটে – কপটতা না করে। রোমান – রোমদেশীয়। ঈশ্বরচন্দ্র – মহান এই সমাজসংস্কারক ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে মেদিনীপুরের বীরসিংহ গ্রামের দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায়; মাতা ভগবতী দেবী। ইনি ছিলেন মানবদরদি মহীয়সী নারী। তাঁর চরিত্রের বিশেষ প্রভাব পড়েছিল সন্তানের উপর। ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে পিতার সঙ্গে ঈশ্বরচন্দ্র কলকাতায় আসেন এবং ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দের ১ জুন সংস্কৃত কলেজে’ ভরতি হন। ১৮৩৯ খ্রিস্টাব্দে ল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর ‘বিদ্যাসাগর’ উপাধি পান। পরে তিনি সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ হন। মানবদরদি মানুষটি ‘শকুন্তলা’, ‘সীতার বনবাস’, ‘বেতাল পঞ্চবিংশতি’, ‘কথামালা’, ‘বোধোদয়’ প্রভৃতি গ্রন্থ রচনা করেন। ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দের ২৯ জুলাই তাঁর লোকান্তর ঘটে।

দ্বিতীয় পত্রটি গৌরদাস বসাককে লেখা

পুরাতন – প্রাচীন। সীলোন – একটি জাহাজের নাম। রূপকথা – রূপক কথা; গল্পকথা। ভাসমান – ভাসছে এমন। বৎস – সন্তান। জাঁকজমক – আড়ম্বর। ক্যাবিন – জাহাজের ছোটো ছোটো ঘর। বিস্তারিত – সম্পূর্ণ; বিস্তৃত। অবসর – অবকাশ। পর্বতাকীর্ণ – পর্বত দ্বারা আকীর্ণ। উপকূল – কূলের কাছাকাছি। বিষণ্ণ – বেদনাবহ। আধা-ডজন – ছয়টি। হরি – নারায়ণ। অনবরত – বারবার। পত্রাঘাত – চিঠির আঘাত। জীবিকানির্বাহ – বাঁচার সংস্থান। মনোনিবেশ – মনোযোগ দেওয়া। অর্জন – প্রাপ্ত; পাওয়া। দৃঢ়সংকল্প – আত্মপ্রত্যয়ী বা সংকল্পে দৃঢ়। আবহাওয়া – জলবায়ু; জলবায়ুর জন্য স্থানবিশেষের অবস্থা। নিকটবর্তী – কাছাকাছি। বাস্তব – প্রকৃত; সত্য। কল্পিত – আরোপিত; মনগড়া; রচিত। কাহিনি – গল্প; আখ্যান। বিচিত্র – নানা বর্ণ; বিস্ময়জনক। অকৃত্রিম – যা কৃত্রিম নয়। গৌরদাস বসাক – ১৮২৬ খ্রিস্টাব্দে বড়োবাজারের বিশিষ্ট বসাক পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। কর্মজীবনে তিনি ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। মৌলিক রচনায় কৃতিত্ব না দেখালেও সাংস্কৃতিক জীবনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত ছিলেন। সেকালের নাট্যমঞ্চ ও নাট্য আন্দোলনের সঙ্গে তাঁর যোগ ছিল। সহপাঠী মধুসূদনের সুদিন ও দুর্দিনের সঙ্গী ছিলেন এবং সমাজসংস্কারে ঈশ্বরচন্দ্রের সহযোগী ছিলেন। ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে তাঁর লোকান্তর ঘটে।

তৃতীয় পত্রটি রাজনারায়ণ বসুকে লেখা

ডেরায় – বাসস্থানে। অনুনয়ে – স্তব; স্তুতি; বিনয়; শিষ্টতা। রুদ্ধনিশ্বাসে – শ্বাসরোধ করে। সাক্ষাৎ – দেখা। আক্রান্ত – যাকে আক্রমণ করা হয়েছে এমন। শয্যাগত – বিছানায় পড়ে থাকা। বোঝাপড়া – বুঝতে পারা; দুজনে বোঝার সম্পর্ক তৈরি করা। উপক্রম – উদ্যোগ; উদ্যম; আরম্ভ। অশ্রুপাত – চোখের জল ফেলা। অভিমত – মতামত। মিলটন – ইংল্যান্ডের বিখ্যাত কবি। ১৬০৮ খ্রিস্টাব্দে ইনি জন্মগ্রহণ করেন। শেষবয়সে তিনি দৃষ্টিশক্তি হারান। ‘প্যারাডাইস লস্ট’ তাঁর বিখ্যাত কাব্য। ১৬৭৪ খ্রিস্টাব্দে তাঁর লোকান্তর ঘটে। স্বর্গীয় – স্বর্গসম্বন্ধীয়। উৎকৃষ্টতর – ভীষণ ভালো। কালিদাস – ভারতের স্বনামধন্য সংস্কৃত কবি ও নাট্যকার। বিক্রমাদিত্যের সভার নবরত্নের প্রধান। ‘অভিজ্ঞানম্ শকুন্তলম্’, ‘রঘুবংশম্’, ‘কুমারসম্ভবম্’, ‘মেঘদূতম্’ ইত্যাদি গ্রন্থের জন্য তিনি বিশ্বে স্বীকৃত। ভার্জিল – খ্রিস্টপূর্ব ৭০-এ জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দে লোকান্তরিত হন। ইনি বিখ্যাত রোমান কবি। ইনি ‘ইনিড’ কাব্য রচনা করেন। এই কাব্যখানি মধুসুদনের আদর্শ ছিল। তাসো – তাসো বা ট্যাসোর দ্বারা মধুসুদন আগাগোড়া অনুপ্রাণিত ছিলেন তাঁর ‘জেরুজালেম লিবারেটেড’ কাব্য থেকে মধুসূদন প্রভূত উপকরণ সংগ্রহ করে তাঁর মধুচক্রের মধুরতা বৃদ্ধি করেছেন। সমতুল্য – সমান-সমান; সমকক্ষ। কীর্তিমান – কীর্তি বা খ্যাতি সমন্বিত; খ্যাতি আছে এমন। নম্বর – সংহারক; বিধ্বংসী; নাশশীল। অভিমত – মতামত। নির্ভরযোগ্য – যার উপর নির্ভর করা যায়। ক্রন্দন – কান্না। অকপট – কপটতা না করে। আন্তরিকভাবে – আন্তরিকতার সঙ্গে। সর্বশ্রেষ্ঠ – সব থেকে সেরা। অনুরাগী – অনুরক্ত; আসক্ত; অনুরাগবিশিষ্ট।


আজকের এই আর্টিকেলে অষ্টম শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের অষ্টম অধ্যায়চিঠি’ এর বিষয়সংক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এই বিষয়সংক্ষেপ অষ্টম শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি প্রায়ই পরীক্ষায় আসে। আশা করি, এই নিবন্ধটি আপনার জন্য সহায়ক হয়েছে। যদি আপনার কোনো প্রশ্ন থাকে বা অতিরিক্ত সহায়তার প্রয়োজন হয়, আপনি টেলিগ্রামে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এছাড়াও, আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না, যাতে তারা এই তথ্য থেকে উপকৃত হতে পারে। ধন্যবাদ!

Please Share This Article

Related Job Posts

নবাব সিরাজউদ্দোলা কে ছিলেন? পলাশীর যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল লেখো।

পলাশীর যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল

Class 8 English – The Happy Prince – About Author and Story

Class 8 English – The Happy Prince – About Author and Story

Class 8 English – The Happy Prince – Question and Answer

Class 8 English – The Happy Prince – Question and Answer

About The Author

Gopi

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

বাংলায় শিশুশিক্ষার প্রসারে মুদ্রণ শিল্পের ভূমিকা সম্পর্কে কী জানো?

বাংলায় বিজ্ঞান চর্চার বিকাশে ডঃ মহেন্দ্রলাল সরকারের কীরূপ অবদান ছিল?

ছাপাবই -এর সঙ্গে শিক্ষাবিস্তারের সম্পর্ক বিশ্লেষণ করো।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কীভাবে ঔপনিবেশিক শিক্ষা ব্যবস্থার সমালোচনা করেছেন?

বাংলায় মুদ্রণ শিল্পের বিকাশে উইলিয়াম কেরির কীরূপ অবদান ছিল?