মাধ্যমিক ভূগোল – বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ – পার্থক্য উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন

আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলে দেখবো যে মাধ্যমিক ভূগোল – বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ – পার্থক্য ভিত্তিক প্রশ্ন। এই প্রশ্নগুলি দশম শ্রেণীর পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। মাধ্যমিক ভূগোল – বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ – পার্থক্য ভিত্তিক প্রশ্নগুলি আপনি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করে গেলে, আপনি সেগুলো লিখে আসতে পারবেন।

মাধ্যমিক ভূগোল - বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ - পার্থক্য উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন

মাধ্যমিক ভূগোল – বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ – পার্থক্য উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন

গিরিখাত ও ক্যানিয়নের মধ্যে পার্থক্য

গিরিখাত ও ক্যানিয়ন উভয়ই অত্যন্ত সুগভীর ও সংকীর্ণ হয় এবং উভয়ের সৃষ্টি হয় নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে। তবে উভয়ের মধ্যে কিছু পার্থক্যও আছে। যেমন —

বিষয়গিরিখাতক্যানিয়ন
আকৃতিগিরিখাত খুব গভীর ও সংকীর্ণ (ইংরেজি অক্ষর ‘V’ আকৃতির) হয়।ক্যানিয়ন অত্যন্ত সুগভীর এবং সংকীর্ণ (ইংরেজি ‘U’ আকৃতির) হয়।
সৃষ্টিস্থলএর সৃষ্টি হয় নদীর উচ্চগতিতে বৃষ্টিবহুল পার্বত্য অঞ্চলে।এর সৃষ্টি হয় বৃষ্টিহীন শুষ্ক বা মরুপ্রায় উচ্চভূমি অঞ্চলে।
আকৃতিগত তারতম্যের কারণগিরিখাতে নদীর পার্শ্বক্ষয় অপেক্ষা নিম্নক্ষয় বেশি হলেও বৃষ্টিবহুল অঞ্চলে সৃষ্ট হয় বলে নদীর দুই পাড়ের ক্ষয়ও কিছু কিছু চলতে থাকে এবং কিছু উপনদী এসেও নদীখাতে মিলিত হয়। এজন্য নদীখাত ‘V’ আকৃতির হয়। উদাহরণ — ইয়াংসি কিয়াং নদীর ইচাং গিরিখাত।ক্যানিয়ন সৃষ্টি হয় সেইসব নদীতে যেগুলির উৎপত্তি প্রধানত তুষারগলা জলে এবং প্রবাহিত হয় শুষ্ক বা মরুপ্রায় অঞ্চলের ওপর দিয়ে। সুতরাং, এখানে নদীতে উপনদী এসে মিলিত হয় না বলেই নদীখাত ‘U’ আকৃতির হয়। উদাহরণ — কলোরাডো নদীর গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন।

পললশঙ্কু ও বদ্বীপের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়পললশঙ্কুবদ্বীপ
নদীপ্রবাহনদীর মধ্য বা সমভূমি প্রবাহে পললশঙ্কু গঠিত হয়।নদীর নিম্ন বা বদ্বীপ প্রবাহে বদ্বীপ গঠিত হয়।
অবস্থানপললশঙ্কু পর্বতের পাদদেশে দেখা যায়।বদ্বীপ নদীর ঠিক মোহানার কাছে দেখা যায়।
আয়তনপললশঙ্কু আয়তনে ক্ষুদ্রাকার হয়।বদ্বীপ আয়তনে সুবিশাল হতে পারে।
উপাদানপললশঙ্কু গঠিত হয় নুড়ি, প্রস্তরখণ্ড, বালি, পলি ইত্যাদি উপাদান দিয়ে।বদ্বীপ গঠিত হয় প্রধানত পলি ও কাদা দিয়ে।
আকৃতিপললশঙ্কুর আকৃতি ত্রিকোণাকার বা পাখার মতো হয়।বদ্বীপের আকৃতি ত্রিকোণাকার, পাখির পায়ের মতো, করাতের দাঁতের মতো ও খাড়ির মতো হয়।

রোশামোর্ন ও ড্রামলিনের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়রোশামোর্নড্রামলিন
ভূমিরূপের প্রকৃতিহিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে রোশামোর্ন গঠিত হয়।হিমবাহ ও জলধারার মিলিত সঞ্চয়ের ফলে ড্রামলিন তৈরি হয়।
আকৃতিএর একদিকে মসৃণ এবং একদিকে অমসৃণ হয়।ড্রামলিন দেখতে ওলটানো চামচের মতো হয়।
অবস্থানউচ্চ পার্বত্য অংশে দেখা যায়।পর্বতের পাদদেশে দেখা যায়।
প্রকৃতি ও গঠনএটি কঠিন শিলাখণ্ডের ওপর গড়ে ওঠে।হিমবাহ বয়ে আনা কাদা, নুড়ি পাথর সঞ্চিত হয়ে গড়ে ওঠে।

কেম ও বদ্বীপের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়কেমবদ্বীপ
গঠনকারী শক্তিহিমবাহ সঞ্চিত ত্রিকোণাকৃতি ভূমিরূপ।নদী গঠিত ত্রিকোণাকৃতি ভূমিরূপ।
গঠনস্থলপর্বতের পাদদেশে কেম গঠিত হয়।নদীর মোহানায় বদ্বীপ গঠিত হয়।
দানার আকারকেম গঠিত ভূমিরূপের দানার আকার অপেক্ষাকৃত মোটা হয়।বদ্বীপ অঞ্চলে মাটি সাধারণত সূক্ষ্ম হয়।
আকৃতিকেম আকৃতিতে ছোটো হয়।বদ্বীপ সাধারণত বৃহৎ হয়।

মহাদেশীয় হিমবাহ ও উপত্যকা হিমবাহের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়মহাদেশীয় হিমবাহউপত্যকা হিমবাহ
ধারণাউচ্চ অক্ষাংশে তথা মেরু অঞ্চলে সৃষ্ট হিমবাহ হল মহাদেশীয় হিমবাহ।পর্বতের উপত্যকায় হিমবাহ গঠিত হলে সেটি উপত্যকা হিমবাহ।
আয়তনমহাদেশীয় হিমবাহ আয়তনে বিশাল হয়ে থাকে।এটি অপেক্ষাকৃত ছোটো আকারের হয়।
গতিপ্রকৃতিমহাদেশীয় হিমবাহ মহাদেশ জুড়ে সবদিক থেকে প্রবাহিত হয়।এটি পর্বতের ভূমির ঢাল বরাবর প্রবাহিত হয়।
গভীরতামহাদেশীয় হিমবাহ খুব গভীর।অপেক্ষাকৃত কম গভীরতাসম্পন্ন হয়।

বার্গস্রুন্ড ও ক্রেভাসের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বার্গস্রুন্ডক্রেভাস
ধারণাপর্বতের ঢাল এবং হিমবাহের মাঝে সৃষ্ট ঢাল হল বার্গস্রুন্ড।পর্বতের ঢাল বরাবর হিমবাহ নামার সময় হিমবাহের গায়ে সৃষ্ট ফাটল হল ক্রেভাস।
বিস্তৃতিবার্গস্রুন্ড অনেক সময় হিমবাহের সংযোগস্থল থেকে হিমবাহের তলদেশ পর্যন্ত প্রসারিত হয়।এটি হিমবাহের গা বরাবর অবস্থান করে।
গঠনএটি উল্লম্বভাবে নখের আকারে অবস্থান করে।এটি সমান্তরাল ও আড়াআড়িভাবে অবস্থান করে।

ফিয়োর্ড ও ফিয়ার্ডের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়ফিয়োর্ডফিয়ার্ড
ধারণাউপকূলীয় অংশে হিমবাহ সৃষ্ট সুগভীর উপত্যকা সমুদ্রজলে ডুবে থাকলে তাকে ফিয়োর্ড বলে।উপকূলভাগে হিমবাহ সৃষ্ট অগভীর উপত্যকা সমুদ্রজলে নিমজ্জিত হলে তা ফিয়ার্ড বলে।
দৈর্ঘ্যফিয়োর্ড খুব বড়ো, গভীর ও দীর্ঘ হয়।ফিয়ার্ডের দৈর্ঘ্য কম।
ঢালফিয়োর্ডের পার্শ্বদেশ খুব খাড়া হয়।এর পার্শ্বদেশের ঢাল অপেক্ষাকৃত কম হয়।

পেডিমেন্ট ও বাজাদার মধ্যে পার্থক্য

বিষয়পেডিমেন্টবাজাদা
ধারণামরু অঞ্চলে পর্বতের পাদদেশে বায়ু ও জলধারার সম্মিলিত কাজের ফলে মৃদু ঢালযুক্ত সমভূমিকে পেডিমেন্ট বলে।পেডিমেন্টের পাদদেশে পলি সজ্জিত হয়ে যে সমতল ভূমির সৃষ্টি হয়, তাকে বাজাদা বলে।
প্রকৃতিবায়ু ও সাময়িক জলধারার সম্মিলিত ক্ষয়কাজের ফলে পেডিমেন্ট গড়ে ওঠে।পেডিমেন্টের নীচের অংশে সাময়িক জলধারার সঞ্চয় কার্যে বাজাদা গড়ে ওঠে।
পৃষ্ঠদেশপেডিমেন্টের পৃষ্ঠদেশ প্রায় সমতল বা অবতল হয়।বাজাদার পৃষ্ঠদেশ তরঙ্গায়িত এবং অমসৃণ হয়।

বারখান ও সিফ বালিয়াড়ির মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বারখানসিফ বালিয়াড়ি
অর্থবারখান একটি তুর্কি শব্দ। যার অর্থ কিরঘিজ স্তেপ অঞ্চলের বালিয়াড়ি।সিফ আরবি শব্দ, যার অর্থ সোজা তরবারি।
বায়ুর সাথে অবস্থানএটি বায়ুর গতিপথের সাথে আড়াআড়িভাবে গড়ে ওঠে।এটি বায়ুর গতিপথের সাথে সমান্তরালভাবে গড়ে ওঠে।
আকৃতিএটি দেখতে অর্ধবৃত্তাকার।এটি দেখতে তরবারির মতো।
শিরার উপস্থিতিবারখানের দুই প্রান্তে দুটি শিং-এর মতো শিরা অবস্থান করে।সিফের প্রান্তভাগে কোনো শিরা থাকে না।

মোনাডনক ও ইনসেলবার্গের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়মোনাডনকইনসেলবার্গ
ধারণাসমপ্রায় ভূমিতে কঠিন শিলাগঠিত অনুচ্চ টিলা বা পাহাড় হল মোনাডনক।পেডিপ্লেনের মধ্যে কঠিন শিলা গঠিত অনুচ্চ টিলাকে ইনসেলবার্গ বলে।
সৃষ্টিএটি নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে গঠিত হয়।এটি বায়ু ও জলধারার কার্যের জন্য গঠিত হয়।
আকৃতিএটি দেখতে অনেকটা ওলটানো গামলার মতো।এটি তীব্র ঢালযুক্ত ঢিপি।
অবস্থানএটি আর্দ্র জলবায়ুতে দেখা যায়।এটি শুষ্ক মরু ও মরুপ্রায় অঞ্চলে দেখা যায়।

মেসা ও বিউটের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়মেসাবিউট
শব্দার্থস্পেনীয় শব্দ মেসার অর্থ টেবিল। অর্থাৎ এগুলি টেবিলের মতো দেখতে।ফরাসি শব্দ ‘বিউট’-এর অর্থ ঢিপি। মেসা অতিরিক্ত ক্ষয়ে গিয়ে ঢিপির মতো দেখতে হয়।
আকৃতিএগুলির আকার এবং আকৃতি বৃহৎ হয়।এগুলির আকার ছোটো হয়।
উপরিপৃষ্ঠবায়ুর ক্ষয়ের ফলে সৃষ্ট এই ভূমিভাগের ওপরের অংশ মসৃণ হয়।এগুলি ঢিপির মতো হয়।
Share via:

মন্তব্য করুন