নতুন সামাজিক ইতিহাস কী? নতুন সামাজিক ইতিহাস রচনার উপাদান

Rahul

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “নতুন সামাজিক ইতিহাস বলতে কী বোঝো? নতুন সামাজিক ইতিহাস রচনার প্রধান উপাদানগুলি কী কী? নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “নতুন সামাজিক ইতিহাস বলতে কী বোঝো? নতুন সামাজিক ইতিহাস রচনার প্রধান উপাদানগুলি কী কী?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের প্রথম অধ্যায় “ইতিহাসের ধারণা“-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

নতুন সামাজিক ইতিহাস বলতে কী বোঝো? নতুন সামাজিক ইতিহাস রচনার প্রধান উপাদানগুলি কীকী?
Contents Show

নতুন সামাজিক ইতিহাস বলতে কী বোঝো?

1960 -এর দশক থেকে এডওয়ার্ড থমসন, এরিক হবসবম প্রমুখ ঐতিহাসিকের হাত ধরে জন্ম নেয় নতুন সামাজিক ইতিহাস। দরবারি ইতিহাসের পরিবর্তে সাধারণ মানুষের প্রাত্যহিক জীবন, সামাজিক-অর্থনৈতিক সম্পর্ক, ধর্ম, সংস্কৃতি তথা সামগ্রিক জীবনযাপনের কথা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে সামাজিক ইতিহাসচর্চায়। হ্যারল্ড পার্কিন, রণজিৎ গুহ, পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ এই ধারাকে আরও সমৃদ্ধ করে তোলেন।

নতুন সামাজিক ইতিহাস রচনার প্রধান উপাদানগুলি কীকী?

সাবেক ইতিহাস রাজকীয় শিলা লেখ, রাজস্তুতি, বিদেশী পর্যটকদের বিবরণী প্রভৃতির মধ্যে ইতিহাসের উপাদান সংগ্রহের চেষ্টায় এযাবৎ নিমগ্ন থাকলেও নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চা ইতিহাস রচনায় নিত্য-নতুন উপাদানের সন্ধানী। সরকারি দলিল-দস্তাবেজ, ব্যক্তিগত চিঠিপত্র, কৃতবিদ্য ব্যক্তিদের আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা, ফটোগ্রাফ, চলচ্চিত্র, সাময়িকপত্র এবং সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি নতুন সামাজিক ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তা ছাড়া নতুন সামাজিক ইতিহাস যেতে সমগ্রতার সন্ধানী, তাই সমাজবদ্ধ মানুষের খেলাধুলা, খাদ্যাভ্যাস, পোশাক-পরিচ্ছদ, ধর্মযাপন প্রভৃতির চর্চাও হয়ে উঠেছে নতুন সামাজিক ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

নতুন সামাজিক ইতিহাসের প্রধান উদ্দেশ্য কী?

নতুন সামাজিক ইতিহাসের মূল উদ্দেশ্য হল ইতিহাসচর্চায় সাধারণ মানুষের জীবন ও অভিজ্ঞতাকে কেন্দ্রীয় স্থান দেওয়া। এটি সমাজের নিম্নবর্গ, শ্রমজীবী মানুষ, নারী, আদিবাসী এবং অন্যান্য প্রান্তিক গোষ্ঠীর ইতিহাসকে গুরুত্ব সহকারে বিশ্লেষণ করে।

নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চার প্রধান উপাদানগুলি কী কী?

নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চায় ব্যবহৃত প্রধান উপাদানগুলির মধ্যে রয়েছে – সরকারি দলিল-দস্তাবেজ, ব্যক্তিগত চিঠিপত্র, আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা, ফটোগ্রাফ ও চলচ্চিত্র, সাময়িকপত্র ও সংবাদপত্রের প্রতিবেদন, খেলাধুলা, খাদ্যাভ্যাস, পোশাক-পরিচ্ছদ, ধর্মযাপন ইত্যাদি দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন দিক।

নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চায় কেন সাধারণ মানুষের জীবন গুরুত্বপূর্ণ?

নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চায় সাধারণ মানুষের জীবন গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি ইতিহাসের প্রথাগত ধারাকে চ্যালেঞ্জ করে এবং সমাজের সকল স্তরের মানুষের অভিজ্ঞতা ও সংগ্রামকে ইতিহাসের অংশ হিসেবে তুলে ধরে। এটি ইতিহাসকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বহুমাত্রিক করে তোলে।

নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চায় কোন কোন ঐতিহাসিকদের অবদান উল্লেখযোগ্য?

নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চায় উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন – এডওয়ার্ড থমসন, এরিক হবসবম, হ্যারল্ড পার্কিন, রণজিৎ গুহ, পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ।

নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চা কীভাবে প্রথাগত ইতিহাসচর্চা থেকে আলাদা?

প্রথাগত ইতিহাসচর্চা মূলত রাজনৈতিক ঘটনা, যুদ্ধ, রাজা-মহারাজাদের জীবনী এবং রাষ্ট্রীয় নথির উপর কেন্দ্রীভূত ছিল। অন্যদিকে, নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চা সাধারণ মানুষের জীবন, সংস্কৃতি, সামাজিক কাঠামো এবং দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন দিককে গুরুত্ব দেয়।

নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চা কীভাবে সমাজবদ্ধ মানুষের জীবনকে বিশ্লেষণ করে?

নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চা সমাজবদ্ধ মানুষের জীবনকে বিশ্লেষণ করে তাদের খেলাধুলা, খাদ্যাভ্যাস, পোশাক-পরিচ্ছদ, ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান, সামাজিক সম্পর্ক এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে। এটি সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের জীবনযাত্রাকে গভীরভাবে বুঝতে সাহায্য করে।

নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চা কীভাবে ইতিহাসের উপাদান সংগ্রহ করে?

নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চা ইতিহাসের উপাদান সংগ্রহ করে সরকারি নথি, ব্যক্তিগত চিঠিপত্র, আত্মজীবনী, স্মৃতিকথা, ফটোগ্রাফ, চলচ্চিত্র, সাময়িকপত্র, সংবাদপত্র এবং অন্যান্য অপ্রথাগত উৎস থেকে। এটি ইতিহাসের উপাদান সংগ্রহের ক্ষেত্রে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আসে।

নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চা কীভাবে সমাজের প্রান্তিক গোষ্ঠীর ইতিহাসকে তুলে ধরে?

নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চা সমাজের প্রান্তিক গোষ্ঠী যেমন নিম্নবর্গ, নারী, আদিবাসী, শ্রমজীবী মানুষদের ইতিহাসকে গুরুত্ব সহকারে বিশ্লেষণ করে। এটি তাদের সংগ্রাম, অভিজ্ঞতা এবং অবদানকে ইতিহাসের মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত করে।

নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চা কীভাবে ইতিহাসকে আরও সমৃদ্ধ করে?

নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চা ইতিহাসকে আরও সমৃদ্ধ করে বিভিন্ন নতুন উপাদান এবং দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে। এটি ইতিহাসকে বহুমাত্রিক করে তোলে এবং সমাজের সকল স্তরের মানুষের জীবন ও অভিজ্ঞতাকে ইতিহাসের অংশ হিসেবে উপস্থাপন করে।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “নতুন সামাজিক ইতিহাস বলতে কী বোঝো? নতুন সামাজিক ইতিহাস রচনার প্রধান উপাদানগুলি কী কী?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “নতুন সামাজিক ইতিহাস বলতে কী বোঝো? নতুন সামাজিক ইতিহাস রচনার প্রধান উপাদানগুলি কী কী?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের প্রথম অধ্যায় “ইতিহাসের ধারণা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

ভারতকে মৃত্তিকা অঞ্চলে ভাগ করে প্রত্যেকটির পরিচয় দাও-মাধ্যমিক ভূগোল

ভারতকে মৃত্তিকা অঞ্চলে ভাগ করে প্রত্যেকটির পরিচয় দাও।

দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু ও উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর পার্থক্য লেখো

দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু ও উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর পার্থক্য

স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। বায়ুমণ্ডলের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার স্তরের অবস্থান এবং এর গুরুত্ব উল্লেখ করো।

বায়ুমণ্ডলের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার স্তরের অবস্থান এবং এর গুরুত্ব

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

ভারতকে মৃত্তিকা অঞ্চলে ভাগ করে প্রত্যেকটির পরিচয় দাও।

দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু ও উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর পার্থক্য

বায়ুমণ্ডলের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার স্তরের অবস্থান এবং এর গুরুত্ব

মৌসুমি বায়ুর আরব সাগরীয় শাখা ও বঙ্গোপসাগরীয় শাখা কী? মৌসুমি বায়ুর আরব সাগরীয় শাখা ও বঙ্গোপসাগরীয় শাখার মধ্যে পার্থক্য

মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান – পরিবেশের জন্য ভাবনা – স্থিতিশীল উন্নয়নে শক্তি উৎসের ব্যবহার