রাজা রামমোহন রায় স্মরণীয় কেন? রাজা রামমোহন রায় কেন পাশ্চাত্য শিক্ষাকে সমর্থন জানিয়েছিলেন?

Rahul

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “রাজা রামমোহন রায় স্মরণীয় কেন? রাজা রামমোহন রায় কেন পাশ্চাত্য শিক্ষাকে সমর্থন জানিয়েছিলেন? নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “রাজা রামমোহন রায় স্মরণীয় কেন? রাজা রামমোহন রায় কেন পাশ্চাত্য শিক্ষাকে সমর্থন জানিয়েছিলেন?“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের দ্বিতীয় অধ্যায় “সংস্কার – বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

রাজা রামমোহন রায় স্মরণীয় কেন? রাজা রামমোহন রায় কেন পাশ্চাত্য শিক্ষাকে সমর্থন জানিয়েছিলেন?

রাজা রামমোহন রায় স্মরণীয় কেন?

হুগলি জেলার রাধানগর গ্রামে 22 মে, 1772 খ্রিস্টাব্দে রাজা রামমোহন রায় জন্মগ্রহণ করেন। রামমোহনের বাবার নাম রামকান্ত রায় এবং মায়ের নাম তারিণী দেবী। প্রথমে গ্রামের পাঠশালায় তিনি বাংলা ভাষায় পড়াশোনা শেষ করেন। অসাধারণ মেধাবী রামমোহন অতিঅল্প বয়সেই বাংলা, আরবি, ফারসি, সংস্কৃত, ইংরেজি, উর্দু, লাতিন প্রভৃতি ভাষায় ব্যুৎপত্তি লাভ করেন। নানা ঘটনায় ভরা ছিল তাঁর জীবন। তিনি ভারতীয় নবজাগরণের সূচনা করেন। হিন্দুসমাজে প্রচলিত প্রতিমা পূজার তিনি বিরোধিতা করেন। নানা ধর্মগ্রন্থ, বিশেষত বাইবেল, উপনিষদ প্রভৃতি তিনি পাঠ ও অনুবাদ করেন এবং ‘একেশ্বরবাদ’ প্রচার করেন। তিনি ছিলেন ব্রাহ্মধর্মের প্রবর্তক এবং ব্রাহ্মসমাজের প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর চেষ্টায় এদেশে ‘সতীদাহপ্রথা’ নিবারণ সম্ভব হয়েছে। 30টির মতো বাংলা গ্রন্থ রচনা, 39টি ইংরেজি গ্রন্থ রচনা করে তিনি বিশেষ কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন। ‘ব্রহ্মসংগীত’, ‘গৌড়ীয় ব্যাকরণ’ তার মধ্যে অন্যতম। আধুনিক ভারতের প্রাণপুরুষ রামমোহন দ্বিতীয় আকবর শাহ কর্তৃক ‘রাজা’ উপাধিতে ভূষিত হন। ইংল্যান্ডের ব্রিস্টল নগরে এক বন্ধুর বাড়িতে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে 27 সেপ্টেম্বর 1833 খ্রিস্টাব্দে পরলোক গমন করেন।

রাজা রামমোহন রায় কেন পাশ্চাত্য শিক্ষাকে সমর্থন জানিয়েছিলেন?

আরবি, ফার্সি ও সংস্কৃত সাহিত্যে প্রভূত পাণ্ডিত্য থাকা সত্ত্বেও রাজা রামমোহন পাশ্চাত্য শিক্ষার একজন উৎসাহী সমর্থক ছিলেন। তিনি মনে করতেন যে, আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষার উপর ভিত্তি করেই নব ভারত গড়ে উঠবে। তাঁর মতে, একমাত্র পাশ্চাত্য তথা ইংরেজি শিক্ষা বিস্তৃত হলেই ভারতীয়দের পচনশীল সমাজব্যবস্থা এবং ধর্ম ও চরিত্রের অধঃপতিত নৈতিকতার উন্নতি ঘটবে। তাই তিনি পাশ্চাত্য শিক্ষাকে সমর্থন জানিয়েছিলেন।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

রাজা রামমোহন রায়ের জন্ম কবে এবং কোথায় হয়েছিল?

রাজা রামমোহন রায়ের জন্ম 1772 সালের 22 মে হুগলি জেলার রাধানগর গ্রামে।

রাজা রামমোহন রায়ের প্রধান অবদানগুলি কী কী?

রাজা রামমোহন রায়ের প্রধান অবদানগুলি হল – সতীদাহ প্রথা বিলোপ, ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা, একেশ্বরবাদের প্রচার, ধর্মীয় ও সামাজিক সংস্কার, বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় গ্রন্থ রচনা।

রাজা রামমোহন রায় কীভাবে সতীদাহ প্রথা বিলোপে ভূমিকা রাখেন?

রাজা রামমোহন রায় সতীদাহ প্রথার বিরুদ্ধে জনমত গঠন করেন এবং ব্রিটিশ সরকারকে এই প্রথা বিলোপের জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। তাঁর প্রচেষ্টায় 1829 সালে লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক সতীদাহ প্রথা নিষিদ্ধ করেন।

রাজা রামমোহন রায়ের কিছু উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের নাম কী?

বাংলা গ্রন্থ – ‘ব্রহ্মসংগীত’, ‘গৌড়ীয় ব্যাকরণ’।
ইংরেজি গ্রন্থ – ‘The Precepts of Jesus’, ‘A Defence of Hindu Theism’।

রাজা রামমোহন রায়ের মৃত্যু কবে এবং কোথায় হয়েছিল?

রাজা রামমোহন রায়ের মৃত্যু হয় 1833 সালের 27 সেপ্টেম্বর ইংল্যান্ডের ব্রিস্টল নগরে।

রাজা রামমোহন রায়কে ‘রাজা’ উপাধি কে দিয়েছিলেন?

মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় আকবর শাহ রাজা রামমোহন রায়কে ‘রাজা’ উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন।

রাজা রামমোহন রায়ের ধর্মীয় দর্শন কী ছিল?

রাজা রামমোহন রায় একেশ্বরবাদে বিশ্বাসী ছিলেন এবং তিনি হিন্দু ধর্মের মধ্যে থেকে কুপ্রথা ও কুসংস্কার দূর করতে চেয়েছিলেন। তিনি উপনিষদ ও বাইবেলের মত ধর্মগ্রন্থ পাঠ ও অনুবাদ করে তাঁর দর্শন প্রচার করেন।

রাজা রামমোহন রায়ের শিক্ষা ও ভাষাগত দক্ষতা কেমন ছিল?

রাজা রামমোহন রায় বাংলা, আরবি, ফারসি, সংস্কৃত, ইংরেজি, উর্দু, লাতিন প্রভৃতি ভাষায় দক্ষ ছিলেন। তিনি বিভিন্ন ভাষায় গ্রন্থ রচনা ও অনুবাদ করেছেন।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “রাজা রামমোহন রায় স্মরণীয় কেন? রাজা রামমোহন রায় কেন পাশ্চাত্য শিক্ষাকে সমর্থন জানিয়েছিলেন?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “রাজা রামমোহন রায় স্মরণীয় কেন? রাজা রামমোহন রায় কেন পাশ্চাত্য শিক্ষাকে সমর্থন জানিয়েছিলেন?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের দ্বিতীয় অধ্যায় “সংস্কার – বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

অ্যামোনিয়া গ্যাস কীভাবে শনাক্ত করবে?

অ্যামোনিয়া গ্যাস কীভাবে শনাক্ত করবে?

ইউরিয়ার শিল্প উৎপাদন উল্লেখ করো।

ইউরিয়ার শিল্প উৎপাদন উল্লেখ করো।

450°C উষ্ণতায় 200 বায়ুমণ্ডলীয় চাপে দুটি বর্ণহীন গ্যাসের বিক্রিয়ায় একটি ঝাঁজালো গন্ধবিশিষ্ট গ্যাস উৎপন্ন হয়। উৎপন্ন গ্যাসটি লঘু HCl -এ সিক্ত কাচদণ্ডের সংস্পর্শে সাদা ধোঁয়ার সৃষ্টি করে। গ্যাস তিনটিকে শনাক্ত করো।

450°C ও 200 বায়ুমণ্ডলীয় চাপে দুই বর্ণহীন গ্যাসের বিক্রিয়ায় উৎপন্ন ঝাঁজালো গন্ধবিশিষ্ট গ্যাসটি কোনটি? (HCl-এ সিক্ত কাচদণ্ডে সাদা ধোঁয়া তৈরি হয়)

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

অ্যামোনিয়া গ্যাস কীভাবে শনাক্ত করবে?

ইউরিয়ার শিল্প উৎপাদন উল্লেখ করো।

450°C ও 200 বায়ুমণ্ডলীয় চাপে দুই বর্ণহীন গ্যাসের বিক্রিয়ায় উৎপন্ন ঝাঁজালো গন্ধবিশিষ্ট গ্যাসটি কোনটি? (HCl-এ সিক্ত কাচদণ্ডে সাদা ধোঁয়া তৈরি হয়)

অ্যামোনিয়া জলে অত্যন্ত দ্রাব্য এবং এর জলীয় দ্রবণ ক্ষারধর্মী—একটি পরীক্ষার সাহায্যে প্রমাণ করো।

অ্যামোনিয়ার প্রধান ভৌত ধর্মগুলি লেখো। অ্যামোনিয়ার ব্যবহার উল্লেখ করো।