এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

ইয়ংবেঙ্গল আন্দোলন – টীকা লেখো।

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “ইয়ংবেঙ্গল আন্দোলন – টীকা লেখো। নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “ইয়ংবেঙ্গল আন্দোলন – টীকা লেখো।“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের দ্বিতীয় অধ্যায় “সংস্কার – বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

ইয়ংবেঙ্গল আন্দোলন – টীকা লেখো।
Contents Show

ইয়ংবেঙ্গল আন্দোলন – টীকা লেখো।

উনিশ শতকের বাংলায় পাশ্চাত্য শিক্ষা-সংস্কৃতির প্রভাবে যে সমাজ তথা ধর্মসংস্কার আন্দোলনের সূত্রপাত হয়, তারই এক উগ্র বহিঃপ্রকাশ ছিল নব্যবঙ্গ আন্দোলন।

নব্যবঙ্গ আন্দোলন –

পরিচিতি –

হিন্দু কলেজের তরুণ অধ্যাপক ডিরোজিও তার ছাত্রদের মনে জ্বেলে দেন পাশ্চাত্যের যুক্তিবাদ, সাহিত্য ও দর্শনের দীপশিখা। তাঁর চিন্তা-চেতনায় অনুপ্রাণিত হয়ে ওই কলেজের একদল ছাত্র উনিশ শতকের প্রথমার্ধে হিন্দুধর্ম ও সমাজের কুসংস্কারের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেন এবং পাশ্চাত্যের অনুকরণে এক চরমপন্থী মতাদর্শ গড়ে তোলেন। ইতিহাসে এই আন্দোলন ‘নব্যবঙ্গ আন্দোলন’ নামে পরিচিত।

লক্ষ্য ও কর্মসূচি –

নব্যবঙ্গীয়দের মূল লক্ষ্য ছিল হিন্দুধর্ম ও সমাজের কুসংস্কারের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলা। তাঁরা যেমন মূর্তি পূজা, উপবীত ধারণের বিরোধিতা করেছিলেন তেমনই স্ত্রী শিক্ষার প্রসার, সতীদাহ প্রথা রদ, বাক্ স্বাধীনতার স্বপক্ষে সোচ্চার হয়েছিলেন। তাঁরা ‘পার্থেনন’, ‘জ্ঞানান্বেষণ’, ‘ক্যালাইডোস্কোপ’, ‘এনকোয়ারার’ প্রভৃতি পত্র-পত্রিকার প্রকাশনার মাধ্যমে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।

অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন গঠন –

1828 খ্রিস্টাব্দে ডিরোজিও তার ছাত্রমণ্ডলীকে নিয়ে অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন গঠন করেন। উল্লেখ্য, এটিই ছিল বাংলা তথা ভারতের প্রথম ছাত্র সংগঠন তথা বিতর্ক সভা। ডিরোজিয়ানদের মুক্তচিন্তা এখানেই ভাষা পেত।

নেতৃবর্গ –

ডিরোজিও -র অনুগামীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন – রামগোপাল ঘোষ, প্যারীচাঁদ মিত্র, রামতনু লাহিড়ি, কৃষ্ণমোহন ব্যানার্জি, রাধানাথ শিকদার প্রমুখ।

ব্যর্থতা –

বিপুল উদ্দীপনা জাগিয়ে শুরু হলেও ডিরোজিওর অকাল প্রয়াণের পর উপযুক্ত নেতৃত্ব, সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি এবং জনসমর্থনের অভাবে এই আন্দোলন শেষ পর্যন্ত ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।

মন্তব্য –

নব্যবঙ্গ আন্দোলন সমাজের মূলস্রোত থেকে ছিল বিচ্ছিন্ন। শুধুমাত্র পাশ্চাত্য ভাবধারার অন্ধ অনুকরণ করায় সমাজ বা জাতির জীবনে তারা কোনো দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব রেখে যেতে পারেনি। ড. অনীল শীল তাই সমালোচনার সুরে বলেছেন – ‘এক প্রজন্মেই তাদের সব শেষ, তাদের কোনো পিতা এবং সন্তান-সন্ততি নেই।’

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

ইয়ংবেঙ্গল আন্দোলন কী?

ইয়ংবেঙ্গল আন্দোলন ছিল উনিশ শতকের বাংলায় পাশ্চাত্য শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রভাবে উদ্ভূত একটি সমাজ ও ধর্মসংস্কার আন্দোলন। হিন্দু কলেজের অধ্যাপক ডিরোজিওর অনুপ্রেরণায় তাঁর ছাত্ররা হিন্দুধর্ম ও সমাজের কুসংস্কারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলেন। এই আন্দোলনটি ‘নব্যবঙ্গ আন্দোলন’ নামেও পরিচিত।

ইয়ংবেঙ্গল আন্দোলনের প্রধান লক্ষ্য কী ছিল?

এই আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল হিন্দুধর্ম ও সমাজের কুসংস্কারের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলা। নব্যবঙ্গীয়রা মূর্তি পূজা, উপবীত ধারণের বিরোধিতা করেছিলেন এবং স্ত্রী শিক্ষার প্রসার, সতীদাহ প্রথা রদ ও বাক্ স্বাধীনতার পক্ষে সোচ্চার হয়েছিলেন।

ডিরোজিও কে ছিলেন?

ডিরোজিও ছিলেন হিন্দু কলেজের একজন তরুণ অধ্যাপক। তিনি তাঁর ছাত্রদের মধ্যে পাশ্চাত্যের যুক্তিবাদ, সাহিত্য ও দর্শনের চিন্তা-চেতনা ছড়িয়ে দেন। তাঁর অনুপ্রেরণায় ইয়ংবেঙ্গল আন্দোলনের সূচনা হয়।

অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন কী?

1828 সালে ডিরোজিও তাঁর ছাত্রদের নিয়ে অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন গঠন করেন। এটি বাংলা তথা ভারতের প্রথম ছাত্র সংগঠন ও বিতর্ক সভা ছিল। এখানে ডিরোজিয়ানরা মুক্তচিন্তা ও যুক্তিবাদের আলোচনা করতেন।

ইয়ংবেঙ্গল আন্দোলনের নেতৃবর্গ কারা ছিলেন?

এই আন্দোলনের উল্লেখযোগ্য নেতাদের মধ্যে ছিলেন রামগোপাল ঘোষ, প্যারীচাঁদ মিত্র, রামতনু লাহিড়ি, কৃষ্ণমোহন ব্যানার্জি, রাধানাথ শিকদার প্রমুখ।

ইয়ংবেঙ্গল আন্দোলন কেন ব্যর্থ হয়?

ডিরোজিওর অকাল মৃত্যুর পর উপযুক্ত নেতৃত্ব, সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি এবং জনসমর্থনের অভাবে এই আন্দোলন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। এছাড়া, আন্দোলনটি সমাজের মূলস্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল এবং পাশ্চাত্য ভাবধারার অন্ধ অনুকরণ করায় দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব রাখতে পারেনি।

ইয়ংবেঙ্গল আন্দোলনের সমালোচনা কী?

সমালোচকদের মতে, এই আন্দোলন সমাজের মূলস্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল এবং পাশ্চাত্য ভাবধারার অন্ধ অনুকরণ করায় জাতির জীবনে কোনো দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব রাখতে পারেনি। ড. অনীল শীলের মতে, “এক প্রজন্মেই তাদের সব শেষ, তাদের কোনো পিতা এবং সন্তান-সন্ততি নেই।”

ইয়ংবেঙ্গল আন্দোলনের অবদান কী?

যদিও আন্দোলনটি ব্যর্থ হয়, তবুও এটি হিন্দু সমাজের কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করেছিল। স্ত্রী শিক্ষার প্রসার, সতীদাহ প্রথা রদ এবং বাক্ স্বাধীনতার মতো প্রগতিশীল ধারণাগুলোকে জনসমক্ষে তুলে ধরেছিল।

ইয়ংবেঙ্গল আন্দোলনের পত্র-পত্রিকাগুলো কী ছিল?

নব্যবঙ্গীয়রা তাদের বক্তব্য তুলে ধরার জন্য ‘পার্থেনন’, ‘জ্ঞানান্বেষণ’, ‘ক্যালাইডোস্কোপ’, ‘এনকোয়ারার’ প্রভৃতি পত্র-পত্রিকা প্রকাশ করেছিলেন।

ইয়ংবেঙ্গল আন্দোলনের ঐতিহাসিক গুরুত্ব কী?

ইয়ংবেঙ্গল আন্দোলন উনিশ শতকের বাংলায় সমাজ ও ধর্মসংস্কারের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এটি যুক্তিবাদ, মুক্তচিন্তা এবং প্রগতিশীল মতাদর্শের বিকাশে ভূমিকা রেখেছিল, যদিও তা দীর্ঘস্থায়ী রূপ নিতে পারেনি।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “ইয়ংবেঙ্গল আন্দোলন – টীকা লেখো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “ইয়ংবেঙ্গল আন্দোলন – টীকা লেখো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের দ্বিতীয় অধ্যায় “সংস্কার – বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Share via:

মন্তব্য করুন