আমার ভবিষ্যৎ – কাকে নিয়ে বক্তার এরূপ মন্তব্য? এই উক্তিতে বক্তার কী রূপ মনোভাব ফুটে উঠেছে?

“আমার ভবিষ্যৎ” এই উক্তিটি দশম বাংলা সহায়ক পাঠ কোনি উপন্যাস থেকে নেওয়া হয়েছে। “আমার ভবিষ্যৎ” – কাকে নিয়ে বক্তার এরূপ মন্তব্য? এই উক্তিতে বক্তার কী রূপ মনোভাব ফুটে উঠেছে? এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য অত্যান্ত গুরুত্তপূর্ণ। কোনি উপন্যাসের এই রচনাধর্মী প্রশ্নটি তৈরী করে গেলে মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষায় একটি ৫ নম্বরের পাওয়া যেতে পারে।

দীর্ঘদিন ধরে ক্ষিতীশ সিংহ জুপিটার ক্লাবের সাঁতার প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করেছিলেন। পরিশ্রম, নিষ্ঠা ও একাগ্রতার সাথে সাঁতারু তৈরি করাই ছিল তার জীবনের প্রকৃত লক্ষ্য। কঠোর পরিশ্রমী ও নিয়মনিষ্ঠ ক্ষিতীশ ব্যক্তিগত জীবনে ক্ষতিস্বীকার করেও এই লক্ষ্য পূরণের জন্য নিরন্তর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ক্লাবের কিছু স্বার্থপর ও সুবিধাবাদী ব্যক্তির চক্রান্তের কারণে তাকে জুপিটার ক্লাবের সাঁতার প্রশিক্ষকের পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়।

ক্ষিতীশ কোনির মধ্যে ভবিষ্যতের একজন দক্ষ সাঁতারুর সম্ভাবনা লক্ষ্য করে তাকে কেন্দ্র করেই ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। সংগ্রাম ও যন্ত্রণার মধ্য দিয়েও স্বপ্ন পূরণ করার প্রবল বাসনা তার কথায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

ক্লাবের যেসব মানুষ তাকে অপমান করেছিল, যাদের ষড়যন্ত্রে তার স্বপ্ন শেষ হয়ে যেতে বসেছিল, তাদের সমস্ত ব্যঙ্গ, বিদ্রুপ, অপমান এবং চক্রান্তের জবাব ফিরিয়ে দেওয়ার একমাত্র হাতিয়ার ছিল কোনি। সাঁতারই যার কাছে সর্বস্ব, সেই ক্ষিতীশ হেরে না গিয়ে কোনির মাধ্যমে নিজের জীবনের আশা পূরণ করতে চেয়েছেন। তাই বিষ্টু ধরকে উদ্দেশ্য করে তিনি উল্লিখিত মন্তব্য করেছেন।

আমার ভবিষ্যৎ - কাকে নিয়ে বক্তার এরূপ মন্তব্য? এই উক্তিতে বক্তার কী রূপ মনোভাব ফুটে উঠেছে?

“আমার ভবিষ্যৎ” – কাকে নিয়ে বক্তার এরূপ মন্তব্য? এই উক্তিতে বক্তার কী রূপ মনোভাব ফুটে উঠেছে?

উদ্দিষ্ট ব্যক্তি – মতি নন্দী রচিত কোনি উপন্যাসের সপ্তম পরিচ্ছেদে ক্ষিতীশ সিংহ কোনিকে নিয়ে বিষ্টুচরণ ধরের কাছে এরুপ মন্তব্য করেছেন।

বক্তার মনোভাব –

  • প্রকৃত লক্ষ্য – দীর্ঘদিন ক্ষিতীশ সিংহ ছিলেন জুপিটার ক্লাবের সাঁতারের প্রশিক্ষক। পরিশ্রম, নিষ্ঠা ও একাগ্রতার সঙ্গে সাঁতারু তৈরি করাই ছিল তাঁর জীবনের প্রকৃত লক্ষ্য। এই কাজে কঠোর ও নিয়মনিষ্ঠ ছিলেন। এর জন্য ব্যক্তিগত জীবনে ক্ষতিস্বীকারও করেছিলেন। কিন্তু ক্লাবের কিছু স্বার্থপর, সুবিধাবাদী মানুষের চক্রান্তে তিনি জুপিটার ক্লাবের সাঁতার প্রশিক্ষকের পদ ছাড়তে বাধ্য হন।
  • স্বপ্নপূরণ – কোনির মধ্যে ক্ষিতীশ ভবিষ্যতে বড়ো সাঁতারু হওয়ার সম্ভাবনা লক্ষ করে তাকে কেন্দ্র করেই ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। লড়াই করে বাঁচা এবং সংগ্রাম ও যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে স্বপ্ন পূরণ করার প্রবল বাসনা তাঁর কথায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
  • বিরোধিতার জবাব – ক্লাবের যেসমস্ত মানুষ তাঁকে অপমান করেছেন, যাদের ষড়যন্ত্রে তাঁর স্বপ্ন শেষ হয়ে যেতে বসেছিল, তাদের সমস্ত ব্যঙ্গ, বিদ্রুপ, অপমান এবং চক্রান্তের জবাব ফিরিয়ে দেওয়ার একমাত্র হাতিয়ার ছিল কোনি। সাঁতারই যার কাছে সর্বস্ব, সেই ক্ষিতীশ হেরে না গিয়ে কোনির মাধ্যমে নিজের জীবনের আশা পূরণ করতে চেয়েছেন, তাই বিষ্টু ধরকে উদ্দেশ্য করে তিনি উল্লিখিত মন্তব্য করেছেন।

আরও পড়ুন, ভালোবাসলে সবকিছু করিয়ে নেওয়া যায়, মানুষকে দিয়েও। – প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উপসংহারে বলা যায়, ক্ষিতীশ সিংহ একজন নিবেদিতপ্রাণ প্রশিক্ষক ছিলেন যার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য ছিল প্রতিভাবান সাঁতারু তৈরি করা। ক্লাবের স্বার্থপর ব্যক্তিদের ষড়যন্ত্রের শিকার হলেও তিনি হাল ছাড়েননি। কোনির মধ্যে তিনি তার স্বপ্নের প্রতিচ্ছবি দেখতে পান এবং তাকে একজন দক্ষ সাঁতারুতে পরিণত করার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করে দেন। কোনির মাধ্যমে ক্ষিতীশ কেবল তার লক্ষ্য পূরণই করেননি, বরং তার প্রতিপক্ষদের জবাবও দেন।

এই উপাখ্যান আমাদের শেখানো যে, লক্ষ্য অর্জনে নিষ্ঠা ও পরিশ্রমের কোন বিকল্প নেই। প্রতিপক্ষতা ও বিরোধিতা আসবেই, কিন্তু সাহস ও দৃঢ়তার সাথে এগিয়ে গেলে অবশ্যই সাফল্য আসবে।

Share via:

মন্তব্য করুন