আমি কি নেমকহারাম হলাম। – বক্তা কে? তাঁর এ কথা মনে হওয়ার কারণ কী?

“আমি কি নেমকহারাম হলাম।” এই উক্তিটি দশম বাংলা সহায়ক পাঠ কোনি উপন্যাস থেকে নেওয়া হয়েছে। “আমি কি নেমকহারাম হলাম।” – বক্তা কে? তাঁর এ কথা মনে হওয়ার কারণ কী? এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য অত্যান্ত গুরুত্তপূর্ণ। কোনি উপন্যাসের এই রচনাধর্মী প্রশ্নটি তৈরী করে গেলে মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষায় একটি ৫ নম্বরের পাওয়া যেতে পারে।

ক্ষিতীশ সিংহ ছিলেন জুপিটার ক্লাবের একজন সুদক্ষ সাঁতার প্রশিক্ষক। কিন্তু ক্লাবের কিছু প্রভাবশালী সদস্য, যেমন ধীরেন ঘোষ ও হরিচরণ মিত্র, ষড়যন্ত্র করে তাকে পদ থেকে অপসারণ করে। এরপর ক্ষিতীশ গঙ্গার ঘাটে কোনিকে নামে এক প্রতিভাবান মেয়েকে আবিষ্কার করেন এবং তাকে একজন নামকরা সাঁতারু হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিজ্ঞা করেন।

ক্ষিতীশ কোনিকে জুপিটার ক্লাবে ভর্তির জন্য পরীক্ষায় বসান। কোনিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও, ক্ষিতীশকে অপদস্থ করার জন্য তাকে ক্লাবে ভর্তি নেওয়া হয় না। ক্ষিতীশ রাগান্বিত হয়ে অ্যাপোলো ক্লাবে যান, যা জুপিটারের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাব।

অ্যাপোলোতে পা রেখেই ক্ষিতীশের মনে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। একদিকে, তিনি জুপিটারের প্রতি বিরক্ত এবং অ্যাপোলোতে নতুন করে শুরু করতে চান। অন্যদিকে, জুপিটারের প্রতি তার দীর্ঘদিনের মায়া তাকে ত্যাগ করতে পারছে না। নিজেকে “নেমকহারাম” মনে করে তিনি মানসিক যন্ত্রণায় ভুগতে থাকেন।

এই বর্ণনাটি ক্ষিতীশের চরিত্রের জটিলতা এবং তার মানসিক দ্বন্দ্বকে তুলে ধরে। এটি পাঠককে উপন্যাসের পরবর্তী অংশ সম্পর্কে কৌতূহলী করে তোলে।

আমি কি নেমকহারাম হলাম। - বক্তা কে? তাঁর এ কথা মনে হওয়ার কারণ কী?

“আমি কি নেমকহারাম হলাম।” – বক্তা কে? তাঁর এ কথা মনে হওয়ার কারণ কী?

বক্তা – মতি নন্দীর কোনি উপন্যাসের অন্যতম প্রধান চরিত্র ক্ষিতীশ সিংহ হলেন প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশটির বক্তা।

এ কথা মনে হওয়ার কারণ –

  • ষড়যন্ত্রের শিকার – ক্ষিতীশ সিংহ ছিলেন জুপিটার ক্লাবের মুখ্য সাঁতার প্রশিক্ষক। কিন্তু ধীরেন ঘোষ, হরিচরণ মিত্রেরা ষড়যন্ত্র করে সেই পদ থেকে তাঁকে অপসারিত করে।
  • নামকরা সাঁতারু তৈরির প্রতিজ্ঞা – এরপর কোনিকে গঙ্গার ঘাট থেকে আবিষ্কার করেন ক্ষিতীশ। প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন এই মেয়েটিকেই তিনি নামকরা সাঁতারু তৈরি করবেন।
  • অপদস্থ হওয়া – নিজের তত্ত্বাবধানে সাঁতার শেখাবেন বলে কোনিকে জুপিটার ক্লাবে নিয়ে আসেন ক্ষিতীশ। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও ক্ষিতীশকে অপদস্থ করার জন্যই কোনিকে জুপিটারে ভরতি নেওয়া হয় না। ক্ষিতীশ এতে রেগে যান ভেবেছিস আর বুঝি ক্লাব নেই। পৃথিবীতে শুধু জুপিটারই একমাত্র ক্লাব। —বলে কোনিকে নিয়ে আসেন পাশের অ্যাপোলো ক্লাবে।
  • মানসিক দ্বন্দ্ব – অ্যাপোলোর গেটে এসেই ক্ষিতীশের মনে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। কারণ অ্যাপোলো ছিল জুপিটারের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাব। আসলে জুপিটার থেকে বিতাড়িত হয়েও ক্ষিতীশ ক্লাবের প্রতি তাঁর মায়া ত্যাগ করতে পারেননি। তাই অ্যাপোলোতে পা রেখেই নিজেকে তাঁর ‘নেমকহারাম’ মনে হয়েছে।

আরও পড়ুন, যেদিন তুমি ওইরকম স্ট্রোক দিতে শিখবে। — কাকে দেখিয়ে এরূপ বলা হয়েছে? যার উদ্দেশে বলা হয়েছে সে কী বলেছিল? ‘ওইরকম স্ট্রোক’ বলতে বক্তা কী বুঝিয়েছেন?

উপসংহারে বলা যায়, ষড়যন্ত্রের শিকার হলেও ক্ষিতীশ সিংহ হাল ছাড়েননি। কোনিকে একজন নামকরা সাঁতারু হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিজ্ঞা নিয়ে তিনি অ্যাপোলো ক্লাবে যোগদান করেন। কিন্তু জুপিটারের প্রতি তার মায়া ত্যাগ করতে না পারায় তিনি মানসিক দ্বন্দ্বে ভুগতে থাকেন। এই দ্বন্দ্বের মীমাংসা কীভাবে হবে, তা উপন্যাসের পরবর্তী অংশেই জানা যাবে।

Share via:

মন্তব্য করুন