এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “ভারতের গম উৎপাদক অঞ্চলগুলির পরিচয় দাও।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের কৃষি” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

ভারতের গম উৎপাদক অঞ্চলগুলির পরিচয় দাও।
গম ভারতের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ খাদ্যশস্য এবং বর্তমানে ভারত গম উৎপাদনে পৃথিবীতে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে থাকে। ভারতে শীতকালীন ও বাসন্তিক এই দু-ধরনের গমের চাষ করা হয়ে থাকে। ভারতের উল্লেখযোগ্য গম উৎপাদক রাজ্য ও অঞ্চলগুলি হল –
উত্তরপ্রদেশ –
গম উৎপাদনে উত্তরপ্রদেশের স্থান ভারতে প্রথম। 2017-2018 খ্রিস্টাব্দে এই রাজ্যের মোট গম উৎপাদনের পরিমাণ ছিল 3.19 কোটি টন। উত্তরপ্রদেশের গঙ্গা-যমুনা দোয়াব ও রোহিলখণ্ড সমভূমি অঞ্চল প্রধান গম উৎপাদক অঞ্চল। এই রাজ্যের উল্লেখযোগ্য গম উৎপাদক জেলাগুলি হল – মোরাদাবাদ, মিরাট, বাদাউন, মুজঃফরনগর প্রভৃতি। ভারতের মোট গম উৎপাদনের 28.74 শতাংশ এই রাজ্যে উৎপন্ন হয়।
পাঞ্জাব –
বর্তমানে পাঞ্জাব ভারতের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ গম উৎপাদক দেশ। 2017-2018 খ্রিস্টাব্দে এই রাজ্যের মোট গম উৎপাদনের পরিমাণ ছিল 1.79 কোটি টন। হেক্টর প্রতি গমের উৎপাদনে এই রাজ্য প্রথম। পাঞ্জাবে আধুনিক পদ্ধতিতে উন্নত যন্ত্রপাতির সাহায্যে গম চাষ করা হয়। এই রাজ্যের গম উৎপাদক জেলাগুলি হল – ফিরোজপুর, জলন্ধর, ফরিদকোট, লুধিয়ানা, ভাটিণ্ডা, পাটিয়ালা প্রভৃতি। ভারতের মোট গম উৎপাদনের 17.20 শতাংশ এই রাজ্যে উৎপন্ন হয়।
মধ্যপ্রদেশ –
2017-18 খ্রিস্টাব্দে মধ্যপ্রদেশ 1.59 কোটি টন গম উৎপন্ন করে তৃতীয় স্থান অধিকার করে। এই রাজ্যের উল্লেখযোগ্য গম উৎপাদক অঞ্চলগুলি হল – সগর, রাইসেন, বিদিশা, গোয়ালিয়র প্রভৃতি।
অন্যান্য গম উৎপাদক রাজ্য –
- হরিয়ানা – কর্নাল, কুরুক্ষেত্র, সোনেপত, হিসার, ঝিন্দ।
- রাজস্থান – ভরতপুর, গঙ্গানগর, আলওয়ার, কোটা।
- বিহার ও ঝাড়খণ্ড – ভোজপুর, মুঙ্গের, পূর্ণিয়া।
এ ছাড়া অন্যান্য গম উৎপাদক রাজ্যগুলি হল – মহারাষ্ট্র, গুজরাট পশ্চিমবঙ্গ প্রভৃতি।
ভারতের উল্লেখযোগ্য গম উৎপাদক রাজ্যসমূহ (2017-2018) –
রাজ্য | উৎপাদন (কোটি টন) |
উত্তরপ্রদেশ | 3.19 |
পাঞ্জাব | 1.79 |
মধ্যপ্রদেশ | 1.59 |

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
গম চাষের জন্য কোন জলবায়ু ও মৃত্তিকা উপযোগী?
গম চাষের জন্য শীতল ও শুষ্ক আবহাওয়া (15°-21°C) উপযোগী। দোআঁশ বা বেলে দোআঁশ মাটি, বিশেষত গঙ্গা সমভূমি ও কৃষ্ণমৃত্তিকা অঞ্চল, গম চাষের জন্য উপযুক্ত।
উত্তরপ্রদেশের প্রধান গম উৎপাদক অঞ্চলগুলি কী কী?
গঙ্গা-যমুনা দোয়াব, রোহিলখণ্ড সমভূমি (মোরাদাবাদ, মিরাট, মুজাফফরনগর, বাদাউন)।
পাঞ্জাবের গম উৎপাদনের বৈশিষ্ট্য কী?
পাঞ্জাবের গম উৎপাদনের বৈশিষ্ট্যগুলি হলো –
1. আধুনিক কৃষিপদ্ধতি (সেচ, HYV বীজ, যান্ত্রিকীকরণ)।
2. প্রধান জেলা – ফিরোজপুর, লুধিয়ানা, ভাটিণ্ডা।
মধ্যপ্রদেশের গম উৎপাদক জেলাগুলি কী কী?
সগর, বিদিশা, গোয়ালিয়র, রাইসেন।
রাজস্থানের গম উৎপাদক অঞ্চলগুলি কী কী?
গঙ্গানগর, ভরতপুর, আলওয়ার (ইন্দিরা গান্ধি নহর দ্বারা সেচ সুবিধা)।
গম চাষের জন্য কোন ঋতু উপযোগী?
রবি মৌসুম (অক্টোবর-ডিসেম্বর বপন, মার্চ-এপ্রিল সংগ্রহ)।
গম রপ্তানিতে ভারতের অবস্থান কী?
বিশ্বের শীর্ষ গম রপ্তানিকারক দেশগুলির মধ্যে একটি (রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর চাহিদা বৃদ্ধি)।
গম উৎপাদনে সমস্যা কী কী?
গম উৎপাদনে সমস্যা গুলি হলো –
1. জলসঙ্কট (অত্যধিক সেচ)।
2. মাটির উর্বরতা হ্রাস।
3. জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব (তাপমাত্রা বৃদ্ধি)।
গম উৎপাদনে ভারতের বিশ্বে স্থান কত?
দ্বিতীয় (চীন প্রথম, রাশিয়া/ইউক্রেন পরবর্তী)।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “ভারতের গম উৎপাদক অঞ্চলগুলির পরিচয় দাও।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের কৃষি” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন