ভারতের পূর্ববাহিনী নদী ও পশ্চিমবাহিনী নদীগুলি সম্পর্কে লেখো।

Rohit

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “ভারতের পূর্ববাহিনী নদী ও পশ্চিমবাহিনী নদীগুলি সম্পর্কে লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের নদনদী ও হ্রদসমূহ” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

ভারতের পূর্ববাহিনী নদী ও পশ্চিমবাহিনী নদীগুলি সম্পর্কে লেখো-মাধ্যমিক ভূগোল
ভারতের পূর্ববাহিনী নদী ও পশ্চিমবাহিনী নদীগুলি সম্পর্কে লেখো-মাধ্যমিক ভূগোল
Contents Show

ভারতের পূর্ববাহিনী নদী ও পশ্চিমবাহিনী নদীগুলি সম্পর্কে লেখো।

ভারতের পূর্ববাহিনী নদী –

ভারতের উল্লেখযোগ্য পূর্ববাহিনী নদীগুলি হল – মহানদী গোদাবরী, কৃষ্ণা ও কাবেরী। এ ছাড়া অন্যান্য অপ্রধান পূর্ববাহিনী নদীগুলি হল – পালাই পেনার, তাম্রপানী, ভাইগাই প্রভৃতি।

মহানদী (858 কিমি) – মধ্যপ্রদেশের সিয়াওয়া পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে ওড়িশার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে। এর উপনদীগুলি হল – ব্রাহ্মণী, শিবনাথ, বৈতরণী প্রভৃতি। এর মোহনায় বদ্বীপ রয়েছে।

গোদাবরী নদী(1465 কিমি) – গোদাবরী পশ্চিমঘাট পর্বতের ত্রিম্বক শৃঙ্গ থেকে উৎপন্ন হয়ে অন্ধ্রপ্রদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে। এর উপনদীগুলি হল – প্রাণহিতা, সবরি, ওয়ার্ধা প্রভৃতি। এর মোহনায় বদ্বীপ আছে।

কৃষ্ণা নদী(1400 কিমি) – পশ্চিমঘাট পর্বতের মহাবালেশ্বর শৃঙ্গ থেকে উৎপন্ন হয়ে পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে। এর উপনদীগুলি হল – কয়না, ভীমা, পঞ্চগঙ্গা প্রভৃতি। এর মোহনায় বদ্বীপ রয়েছে।

কৃষ্ণা নদী
কৃষ্ণা নদী

কাবেরী নদী(805 কিমি) – পশ্চিমঘাট পর্বতের ব্রহ্মগিরি শৃঙ্গ থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। কাবেরী নদী পূর্ববাহিনী হয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে। এর উপনদীগুলি হল – হিমাবতী, সীমা প্রভৃতি। এর মোহনায় বদ্বীপ রয়েছে।

ভারতের পশ্চিমবাহিনী নদী –

নর্মদা ও তাপ্তী এই দুটি নদী ভারতের প্রধান পশ্চিমবাহিনী নদী।

তাপ্তী নদী (730 কিমি) – মধ্যপ্রদেশের মহাদেব পর্বতের মূলতাই উচ্চভূমি থেকে উৎপত্তি লাভ করে পশ্চিমবাহিনী হয়ে কাম্বে বা খাম্বাত উপসাগরে পড়েছে। তাপ্তীর উপনদীগুলি হল – লাভদা, পূর্ণা, কেরি প্রভৃতি। এর মোহনায় বদ্বীপ সৃষ্টি হয়নি।

নর্মদা নদী (1310 কিমি) – মহাকাল পর্বতের অমরকন্টক শৃঙ্গ থেকে উৎপত্তি লাভ করে বিন্ধ্য ও সাতপুরা পর্বতের মধ্যবর্তী গ্রস্ত উপত্যকার মাঝ বরাবর প্রবাহিত হয়ে পশ্চিমবাহিনী হয়ে কাম্বে বা খাম্বাত উপসাগরে পড়েছে। নর্মদার উল্লেখযোগ্য উপনদীগুলি হল – কোলার, দুধি, শের, বার্নার ইত্যাদি। এর মোহনায় বদ্বীপ সৃষ্টি হয়নি।

নর্মদা নদী
নর্মদা নদী

ভারতের অন্যান্য পশ্চিমবাহিনী নদীগুলি হল – সবরমতী, মাহী, সরাবতী, পেরিয়ার প্রভৃতি।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

ভারতের প্রধান পূর্ববাহিনী নদীগুলি কি কি?

প্রধান পূর্ববাহিনী নদীগুলি হল — মহানদী, গোদাবরী, কৃষ্ণা ও কাবেরী।

পূর্ববাহিনী নদীগুলি কোন সাগরে পতিত হয়?

এগুলি বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়।

মহানদীর উৎস ও দৈর্ঘ্য কত?

মহানদীর উৎস মধ্যপ্রদেশের সিয়াওয়া পাহাড় এবং দৈর্ঘ্য 858 কিমি।

গোদাবরী নদীর প্রধান উপনদীগুলি কি কি?

গোদাবরীর প্রধান উপনদীগুলি হল — প্রাণহিতা, সবরি, ওয়ার্ধা।

কাবেরী নদীর উৎস কোথায়?

কাবেরী নদীর উৎস পশ্চিমঘাট পর্বতের ব্রহ্মগিরি শৃঙ্গ।

ভারতের প্রধান পশ্চিমবাহিনী নদীগুলি কি কি?

প্রধান পশ্চিমবাহিনী নদীগুলি হল — নর্মদা ও তাপ্তী।

পশ্চিমবাহিনী নদীগুলি কোন সাগরে পতিত হয়?

এগুলি আরব সাগরের কাম্বে (খাম্বাত) উপসাগরে পতিত হয়।

নর্মদা নদীর উৎস কোথায়?

নর্মদার উৎস মধ্যপ্রদেশের অমরকন্টক শৃঙ্গ (মহাকাল পর্বত)।

তাপ্তী নদীর প্রধান উপনদীগুলি কি কি?

তাপ্তীর প্রধান উপনদীগুলি হল — পূর্ণা, লাভদা, কেরি।

নর্মদা ও তাপ্তী নদীর মোহনায় বদ্বীপ কেন গঠিত হয় না?

এই নদীগুলি দ্রুতগতিতে পাহাড়ি অঞ্চল থেকে নেমে এসে সমুদ্রে মিশে যায়, তাই পলি জমে বদ্বীপ গঠনের সময় পায় না।

পূর্ববাহিনী ও পশ্চিমবাহিনী নদীর মধ্যে পার্থক্য কি?

1. পূর্ববাহিনী নদী – বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়, দীর্ঘ ও প্রশস্ত, বদ্বীপ সৃষ্টি করে (যেমন — গোদাবরী, কৃষ্ণা)।
2. পশ্চিমবাহিনী নদী – আরব সাগরে পতিত হয়, খরস্রোতা, বদ্বীপ গঠন করে না (যেমন — নর্মদা, তাপ্তী)।

কোন নদীটি দীর্ঘতম — গোদাবরী না কৃষ্ণা?

গোদাবরী (1465 কিমি) কৃষ্ণা (1400 কিমি) থেকে দীর্ঘতর।

কোন নদীকে ‘দক্ষিণের গঙ্গা’ বলা হয়?

গোদাবরী নদীকে দক্ষিণের গঙ্গা বলা হয়।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “ভারতের পূর্ববাহিনী নদী ও পশ্চিমবাহিনী নদীগুলি সম্পর্কে লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের নদনদী ও হ্রদসমূহ” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

ভারতকে মৃত্তিকা অঞ্চলে ভাগ করে প্রত্যেকটির পরিচয় দাও-মাধ্যমিক ভূগোল

ভারতকে মৃত্তিকা অঞ্চলে ভাগ করে প্রত্যেকটির পরিচয় দাও।

দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু ও উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর পার্থক্য লেখো

দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু ও উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর পার্থক্য

মৌসুমি বায়ুর আরব সাগরীয় শাখা ও বঙ্গোপসাগরীয় শাখার মধ্যে পার্থক্য লেখো

মৌসুমি বায়ুর আরব সাগরীয় শাখা ও বঙ্গোপসাগরীয় শাখা কী? মৌসুমি বায়ুর আরব সাগরীয় শাখা ও বঙ্গোপসাগরীয় শাখার মধ্যে পার্থক্য

About The Author

Rohit

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

ভারতকে মৃত্তিকা অঞ্চলে ভাগ করে প্রত্যেকটির পরিচয় দাও।

দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু ও উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর পার্থক্য

বায়ুমণ্ডলের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার স্তরের অবস্থান এবং এর গুরুত্ব

মৌসুমি বায়ুর আরব সাগরীয় শাখা ও বঙ্গোপসাগরীয় শাখা কী? মৌসুমি বায়ুর আরব সাগরীয় শাখা ও বঙ্গোপসাগরীয় শাখার মধ্যে পার্থক্য

মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান – পরিবেশের জন্য ভাবনা – স্থিতিশীল উন্নয়নে শক্তি উৎসের ব্যবহার