নমস্কার বন্ধুরা! আজকের আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ” থেকে ভারতের জলবায়ু বিষয়ক কিছু গুরুত্বপূর্ণ দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নাবলী নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নাবলী শুধুমাত্র মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্যও বেশ উপযোগী।
ভারতের জলবায়ুর ঋতুকালীন বৈশিষ্ট্য সংক্ষেপে আলোচনা করো।
ভারতের জলবায়ুর ঋতুকালীন বৈশিষ্ট্য –
মৌসুমি বায়ুর আগমন এবং প্রত্যাগমন, সারাবছরের বৃষ্টিপাত, উষ্ণতা, বায়ুর চাপ প্রভৃতি অনুসারে ভারতের জলবায়ুকে চারটি ঋতুতে ভাগ করা যায়-
- শীতকাল (ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি) – এই সময় সূর্য দক্ষিণ গোলার্ধে থাকায় সূর্যরশ্মি দক্ষিণ গোলার্ধে লম্বভাবে এবং উত্তর গোলার্ধে তির্যকভাবে পড়ে। শীতকালে মধ্যএশিয়ার শীতল স্থলভাগ বা উচ্চচাপ এলাকা থেকে শীতল ও শুষ্ক উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু ভারতের ওপর দিয়ে দক্ষিণে ভারত মহাসাগরের নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয়। উত্তর ভারতে এসময় তাপমাত্রা হয় গড়ে 10 °সে থেকে 15°সে। দক্ষিণে এই উত্তাপ ক্রমশ বেড়ে তামিলনাডুতে গড়ে 25 °সে হয়। উত্তর-পশ্চিম ভারত (পশ্চিমি ঝঞ্ঝার প্রভাবে) ও তামিলনাডুর উপকূল ছাড়া শীতকালে ভারতের অন্যান্য এলাকায় বৃষ্টিপাত বিশেষ হয় না।
- গ্রীষ্মকাল (মার্চ থেকে মে) – মার্চের শেষভাগ থেকেই দক্ষিণ গোলার্ধে সূর্য তির্যকভাবে কিরণ দিতে থাকায় উষ্ণতা হ্রাস পেতে থাকে এবং উত্তর গোলার্ধে সূর্য রশ্মির লম্বপতনের প্রভাবে এখানে বিশেষত ভারতে তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করে। মে মাসে সূর্য উত্তরে ক্রমশ কর্কটক্রান্তিরেখার কাছে সরে আসে, ফলে উত্তর গোলার্ধে উষ্ণতা আরও বেড়ে যায়। মে মাসে মধ্যপ্রদেশ ও গুজরাতের গড় তাপমাত্রা 38°থেকে 40°সে হয়। রাজস্থানের মরু অঞ্চলে তাপমাত্রা বেড়ে হয় প্রায় 48°সে। উত্তর-পশ্চিম ভারতে প্রচন্ড উষ্ণতা জন্য দিনেরবেলা গরম বাতাস লু প্রবাহিত হয়। গ্রীষ্মকালে দেশের বিভিন্ন অংশে কতকগুলি স্থানীয় নিম্নচাপ কেন্দ্রের সৃষ্টি হয়। তার ফলে ঝোড়ো বাতাস ও বজ্রবিদ্যুৎসহ কিছু বৃষ্টিপাত হয়। এই ঝড়কে পশ্চিমবঙ্গে কালবৈশাখী, বিহার ও উত্তরপ্রদেশে আঁধি, অসমে বরদৈছিলা এবং কেরলে আম্রবৃষ্টি বলে। এই ধরনের ঝড়বৃষ্টির ফলে তাপমাত্রা 7°সে থেকে 8°সে পর্যন্ত হ্রাস পায়।
- বর্ষাকাল বা মৌসুমি বায়ুর আগমনকাল (জুন থেকে সেপ্টেম্বর) – গ্রীষ্মকালে ভারতীয় উপদ্বীপ অঞ্চলে যে গভীর নিম্নচাপ বলয়ের সৃষ্টি হয়, তার আকর্ষণে সুদূর ভারত মহাসাগর থেকে আর্দ্র দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু দুটি শাখায় বিভক্ত হয়ে ভারতে প্রবেশ করে, যথা – আরব সাগরীয় শাখা এবং বঙ্গোপসাগরীয় শাখা।
- আরব সাগরীয় শাখা – দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর এই শাখাটি আরব সাগর থেকে প্রচুর পরিমাণ জলীয়বাষ্প সংগ্রহ করে দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হয়ে পশ্চিমঘাট পর্বতমালার পশ্চিমচালে বাধা পায় ও পশ্চিম উপকূলে বজ্রবিদ্যুৎসহ প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়। পশ্চিমঘাট পর্বতের পূর্বঢালে অবস্থিত দাক্ষিণাত্যের অভ্যন্তরভাগে জলীয়বাষ্পের অভাবে বৃষ্টিপাত কম হয় বলে এই অঞ্চলটিকে বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল বলে।
- বঙ্গোপসাগরীয় শাখা – বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর পরিমাণ জলীয়বাষ্প সংগ্রহ করে এই বায়ুপ্রবাহ পূর্ব হিমালয় ও পূর্ব ভারতের পার্বত্য অঞ্চলে প্রথম বাধা পায় বলে ওই অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়। মেঘালয়ের খাসি পাহাড়ের দক্ষিণ ঢালে মৌসিনরামে পৃথিবীর সর্বাধিক বৃষ্টিপাত হয় – বার্ষিক প্রায় 1187 সেমি। পূর্ব হিমালয়ে বাধা পেয়ে বৃষ্টিপাত ঘটানোর পর এই বায়ু ক্রমশ পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিমে প্রবাহিত হয়ে মণিপুর, মেঘালয়, অসম, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্যান্য রাজ্যে প্রবল বৃষ্টিপাত ঘটায়।
- শরৎকাল বা মৌসুমি বায়ুর প্রত্যাগমনকাল (অক্টোবর থেকে নভেম্বর) – বার্ষিক আপাত গতি অনুসারে এসময় সূর্য বিষুবরেখা পেরিয়ে মকরক্রান্তির দিকে সরতে থাকে। ফলে এসময় উত্তর গোলার্ধে স্থলভাগের ওপর উচ্চচাপ এবং ভারত মহাসাগরের জলভাগের ওপর নিম্নচাপ বিরাজ করে। এই কারণে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুও ভারত থেকে প্রত্যাগমন করে। এই প্রত্যাবর্তনকারী বায়ুর প্রভাবে ভারতের উপকূল অঞ্চলে মাঝে মাঝে ঘূর্ণিঝড়সহ বৃষ্টিপাত হয়। একে বলে সাইক্লোন (পশ্চিমবঙ্গে ‘আশ্বিনের ঝড়’)।
ভারতের জলবায়ুতে মৌসুমি বায়ুর প্রভাব আলোচনা করো।
অথবা, ভারতে মৌসুমি বায়ুর দ্বারা প্রভাবিত ঋতুগুলিরবৈশিষ্ট্য আলোচনা করো।
ভারতের জলবায়ুতে মৌসুমি বায়ুর প্রভাব –
মৌসুমি শব্দটির অর্থ ঋতু। তাই ঋতু অনুসারে প্রবাহিত বায়ুকে বলে মৌসুমি বায়ু। ভারতের জলবায়ু প্রায় সম্পূর্ণরূপেই মৌসুমি বায়ুর প্রভাবাধীন। ভারতে আর্দ্র দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হয় বর্ষাকালে এবং শুষ্ক ও শীতল উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হয় শীতকালে।
- দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাব – গ্রীষ্মকালে ভারত মহাসাগরের উচ্চচাপ এলাকা থেকে এই বায়ুপ্রবাহ উত্তর-পশ্চিম ভারতের উত্তপ্ত শ-ভা বা নিম্নচাপ এলাকার দিকে প্রচুর পরিমাণে জলীয়বাষ্পসহ ছুটে যায়। তাই এই বায়ুর প্রভাবে ভারতে বর্ষাকালের আবির্ভাব হয়। ভারতে বার্ষিক বৃষ্টিপাতের শতকরা প্রায় 67-72 ভাগ মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে হয়ে থাকে। বর্ষাকালে এই বায়ুর প্রভাবে ভারতের অসম, মিজোরাম, পূর্ব হিমালয়, তরাই অঞ্চল এবং আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়। ওই বায়ু বঙ্গোপসাগরের ওপর দিয়ে প্রত্যাবর্তনের সময় কিছু পরিমাণে জলীয়বাষ্প গ্রহণ করে, ফলে ওই বায়ু যখন তামিলনাডু উপকূলে পৌঁছোয় তখন সেখানে সামান্য বৃষ্টিপাত হয়।
- উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর প্রভাব – শীতকালে মধ্যএশিয়ার শীতল স্থলভাগ বা উচ্চচ্চাপ অঞ্চল থেকে এই বায়ুপ্রবাহ দক্ষিণের উয় ভারত মহাসাগরের নিম্নচাপ এলাকার দিকে প্রবাহিত হয়। বরফাবৃত স্থলভাগের ওপর থেকে ছুটে আসে বলে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু শীতল ও শুষ্ক হয়। এই বায়ুর প্রভাবে সমগ্র দেশেরই তাপমাত্রা যথেষ্ট কমে যায়। জম্মু ও কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ প্রভৃতি রাজ্যের পার্বত্য এলাকায় তাপমাত্রা 10 °সে থেকে 40 °সে পর্যন্ত নেমে যায়। খুব শীতল বলে এই বায়ুর জলীয়বাষ্প ধারণ ক্ষমতা প্রায় থাকে না বললেই চলে। এর ফলে তাপমাত্রা যথেষ্ট হ্রাস পেলেও বৃষ্টিপাত হয় না।
- দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর আগমন-প্রত্যাগমনে অনিয়ম – যদি নির্দিষ্ট সময়ের আগে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর আগমন ঘটে এবং তার প্রত্যাগমনেও বিলম্ব হয়, তাহলে বর্ষাকাল দীর্ঘায়িত হয়ে বন্যার সৃষ্টি হয়। কিন্তু কোনো বছর দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর আগমনে বিলম্ব ঘটে, আবার কোনো বছর তা দ্রুত ফিরে যায়। উভয় ক্ষেত্রেই বৃষ্টিপাত কম হওয়ার কারণে মাটি শুষ্ক ও রুক্ষহয়ে যে-কোনো ধরনের ফসল উৎপাদনে অক্ষম হয়ে পড়ে, যা খরার সৃষ্টি করে।
- মৌসুমি বায়ু অনুসারে ঋতু বিভাগ – এই দুটি মৌসুমি বায়ুর আগমন-প্রত্যাগমন অনুসারেই ভারতের জলবায়ুকে চারটি ঋতুতে ভাগ করা হয়- দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর আগমন-পূর্ব সময়কাল বা গ্রীষ্মকাল, দক্ষিশ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর আগমনকাল বা বর্ষাকাল, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রত্যাগমনকাল বা শরৎকাল এবং উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর আগমনকাল বা শীতকাল।
ভারতে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাব আলোচনা করো।
ভারতে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাব –
দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর অনুকূল প্রভাব –
- জলবায়ুর ওপর প্রভাব – ভারতের অধিকাংশ স্থান ক্রান্তীয়-উপক্রান্তীয় অঞ্চলে অবস্থিত হলেও আর্দ্র দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হয় বলে উষ্ণতা খুব বেশি বাড়ে না এবং তাই জলবায়ু উয় ও আর্দ্র।
- কৃষিকাজে প্রভাব – ভারতের অর্থনীতি কৃষির ওপর নির্ভরশীল। দেশের মোট জনসংখ্যার 70 শতাংশেরও বেশি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষিকাজের ওপর নির্ভরশীল। আর এই কৃষির সাফল্য বহুলাংশে নির্ভর করে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু নিয়ন্ত্রিত বৃষ্টিপাতের ওপর।
- কৃষিভিত্তিক শিল্পে প্রভাব – দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু শুধুমাত্র পরিমিত বৃষ্টিপাতের মাধ্যমে ভারতের কৃষিকাজেই প্রভাব বিস্তার করে না, দেশে কার্পাস-বয়ন, পাট, চিনি, চা প্রভৃতি বিভিন্নপ্রকার কৃষিভিত্তিক শিল্পের গঠন ও উন্নতির পথও সহজ করেছে।
- বনভূমির ওপর প্রভাব – ভারতের অন্যতম প্রাকৃতিক সম্পদ বনভূমি। এই বনভূমির গঠন ও বৈচিত্র্য সৃষ্টিতে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু নিয়ন্ত্রিত বৃষ্টিপাত গুরুত্বপূর্ণ।
- সামগ্রিক অর্থনীতির ওপর প্রভাব – ভারতের কৃষিকাজ ও শিল্পোৎপাদন নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রকৃতপক্ষে সমগ্র দেশের অর্থনীতি তথা জনজীবনকেই নিয়ন্ত্রণ করে।
দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রতিকূল প্রভাব –
- বন্যা ও খরা সৃষ্টি – এই বায়ুর খামখেয়ালি আচরণ ভারতের অর্থনীতিকে মাঝে মাঝে বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দেয়। প্রকৃতপক্ষে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু সৃষ্ট বৃষ্টিপাত ঋতু নির্ভর হলেও অনিশ্চয়তাও এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। কখনও সঠিক সময়ে আবার কখনও অসময়ে এই বায়ুর আগমন ও প্রত্যাগমন হয়, কখনও একটানা প্রবল বর্ষণে দেখা দেয় বন্যা, আবার কখনও বেশ কিছুদিন অনাবৃষ্টির ফলে সৃষ্টি হয় খরা।
- ব্যয়বহুল সেচব্যবস্থা প্রবর্তন – দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু সৃষ্ট বৃষ্টিপাতের অনিশ্চয়তার জন্য ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশকে কৃষিকাজের জন্য অত্যন্ত ব্যয়বহুল সেচব্যবস্থার প্রবর্তন করতে হয়েছে।
- শস্য ও জীবনহানি – বৃষ্টিপাতের অভাবে খরা এবং অতিবর্ষণে বন্যা নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হওয়ায় ভারতে প্রায়শই শস্যহানি ও জীবনহানি হয়। এজন্য মাঝে মধ্যেই সরকারকে বিদেশ থেকে খাদ্যশস্য, ডাল, তৈলবীজ প্রভৃতি আমদানি করতে হয়। এর ফলে সরকারি কোশাগার তথা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতেই এর খারাপ প্রভাব পড়ে।
ভারতের জলবায়ুর যে-কোনো তিনটি নিয়ন্ত্রক সম্পর্কে আলোচনা করো।
অথবা, ভারতের জলবায়ুর নিয়ন্ত্রকগুলির ভূমিকা আলোচনা করো।
ভারতের জলবায়ুর নিয়ন্ত্রকসমূহ –
যেসব উপাদান ভারতের জলবায়ুকে নিয়ন্ত্রণ করে সেগুলি নীচে আলোচনা করা হল-
- মৌসুমি বায়ু- ভারতের জলবায়ুকে সবচেয়ে বেশি নিয়ন্ত্রণ করে মৌসুমি বায়ু। দুটি বিপরীতধর্মী মৌসুমি বায়ু ভারতের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয় – গ্রীষ্মকালে আর্দ্র দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু এবং শীতকালে শুষ্ক ও শীতল উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু।
- দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু- গ্রীষ্মকালে মধ্য ও উত্তর-পশ্চিম ভারতের ওপর গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি হলে, তার আকর্ষণে ভারত মহাসাগর থেকে আর্দ্র দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু ভারতের দিকে ছুটে আসে। এর ফলে ভারতে বর্ষাকালের আবির্ভাব ঘটে। এ সময় দেশের অল্প কিছু অঞ্চল ছাড়া প্রায় সর্বত্রই বৃষ্টিপাত হয়। কিন্তু ওই বায়ু বঙ্গোপসাগরের ওপর দিয়ে ফিরে আসার সময় কিছু পরিমাণ জলীয়বাষ্প গ্রহণ করে। ফলে ওই বায়ু যখন তামিলনাড়ু উপকূলে পৌঁছোয় তখন সেখানে কিছু বৃষ্টিপাত হয়। ভারতে বার্ষিক মোট বৃষ্টিপাতের শতকরা প্রায় 67 থেকে 72 ভাগ এই দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবেই হয়ে থাকে।
- উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু- শীতকালে মধ্যএশিয়ার ওপর উচ্চচ্চাপ সৃষ্টি হলে ওই উচ্চচ্চাপ অঞ্চল থেকে শীতল ও শুষ্ক বাতাস উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুরূপে ভারতের ওপর দিয়ে দক্ষিণে ভারত মহাসাগরের দিকে প্রবাহিত হয়। এর ফলে এসময় সমগ্র দেশের তাপমাত্রাই যথেষ্ট হ্রাস পায়। উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু শুষ্ক বলে এসময় ভারতে বৃষ্টিপাতও বিশেষ হয় না।
- উল্লিখিত দুই মৌসুমি বায়ুর আগমন – প্রত্যাগমন অনুসারেই ভারতের জলবায়ুকে চারটি ঋতুতে ভাগ করা হয়- দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর আগমন-পূর্ব সময়কাল বা গ্রীষ্মকাল, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর আগমনকাল বা আর্দ্র গ্রীষ্মকাল বা বর্ষাকাল, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রত্যাবর্তনকাল বা শরৎকাল, উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর আগমনকাল বা শীতকাল।
- অক্ষাংশের পরিপ্রেক্ষিতে অবস্থান- কর্কটক্রান্তিরেখা ভারতের প্রায় মাঝখান দিয়ে বিস্তৃত হয়েছে। তাই অক্ষাংশ অনুসারে ভারতের দক্ষিণাংশ ক্রান্তীয় অঞ্চল এবং উত্তরাংশ উপক্রান্তীয় ও হিমালয়-সংলগ্ন এলাকা নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের অন্তর্গত। অর্থাৎ, দক্ষিণাংশের তুলনায় উত্তরাংশে উষ্ণতা কম।
- হিমালয় ও পশ্চিমঘাট পর্বতশ্রেণির অবস্থান- উত্তরে হিমালয় পর্বতমালা প্রাচীরের মতো দাঁড়িয়ে আর্দ্র দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুকে বাধা দেয় বলে ভারতের অধিকাংশ স্থানে বৃষ্টিপাত হয়। শীতকালে মধ্যএশিয়ার শৈত্য প্রবাহকে এই হিমালয় পর্বতমালা প্রতিহত করে। উপদ্বীপ অঞ্চলের পশ্চিমদিকে অবস্থিত পশ্চিমঘাট পর্বতমালা আর্দ্র মৌসুমি বায়ুকে বাধা দিয়ে পশ্চিম উপকূল অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়। এ কারণেই হিমালয় এবং পশ্চিমঘাট পর্বতের অনুবাত ঢালে বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল দেখা যায়।
- ভূমির উচ্চতা- ভূমির উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণতা কমে যায় (প্রত্যেক 1000 মিটারে 6.5 °সে. হারে)। সুউচ্চ হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল এজন্য চিরকাল তুষারাবৃত থাকে। অধিক উচ্চতার জন্যই দিল্লির তুলনায় সিমলার উষ্ণতা কম।
- সমুদ্র থেকে দূরত্বের প্রেক্ষিতে অবস্থান- ভারতের উপদ্বীপ অঞ্চলের পূর্ব, পশ্চিম ও দক্ষিণ-এই তিন দিক সমুদ্রবেষ্টিত হওয়ায় উত্তর ভারতের তুলনায় দক্ষিণ ভারতের জলবায়ু অনেক সমভাবাপন্ন। সমুদ্র থেকে অনেক দূরে বলে উত্তর ভারতের অভ্যন্তরভাগে শীত এবং গ্রীষ্মের মধ্যে উষ্ণতার পার্থক্য খুব বেশি।
লু ও আঁধি বায়ুর মধ্যে একটি তুলনামূলক আলোচনা করো।
লু ও আঁধির মধ্যে তুলনামূলক আলোচনা
তুলনার বিষয় | লু | আঁধি |
প্রভাবিত অঞ্চল | লু নামক বায়ু উত্তর-পশ্চিম ভারতের রাজস্থান রাজ্যের মরু অঞ্চল ও তৎসংলগ্ন স্থানে দেখা যায়। | আঁধি নামক বায়ু শতদ্রু-গঙ্গা সমভূমির উত্তর-পশ্চিম অংশে দেখা যায়। |
প্রকৃতি | লু একটি শক্তিশালী, উষ্ণ ও শুষ্ক বায়ু। | আঁধি একটি তীব্র, ঝোড়ো ও ধূলিপূর্ণ বায়ু। |
আগমনকাল | লু বায়ুর আগমনকাল হল গ্রীষ্মঋতু। | আঁধি বায়ুর আগমন হয় বসন্তের শেষ দিকে। |
উষ্ণতা | লু বায়ুর উষ্ণতা 45 °সে থেকে 50 °সে পর্যন্ত হয়। | আঁধি বায়ুর উষ্ণতা 32 °সে থেকে 35 °সে পর্যন্ত হয়। |
প্রবাহকাল | উষ্ণ মরু অঞ্চলে ও মরুপ্রায় অঞ্চলে দিনের বেলায় বিশেষত দুপুরবেলায় লু বায়ু প্রবাহিত হয়। | আঁধি বায়ু মাত্র কয়েক মিনিটের জন্য বিকেলবেলায় প্রবাহিত হয়। |
আকাশের অবস্থা | লু বায়ুর আগমনে আকাশ কালো হয় না। | আঁধি বায়ুর আগমনে আকাশ কালো হয়ে অন্ধকার ঘনিয়ে আসে। |
প্রভাব | শুষ্ক ও উত্তপ্ত লু বায়ু অনেকসময় গাছপালাকে পুড়িয়ে বাদামি রঙের করে তোলে। | আঁধি বায়ুর ফলে গাছের পাতায় ধুলো জমে সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটে। |
ভারতের জনজীবনে মৌসুমি বায়ুর প্রভাব আলোচনা করো।
ভারতের জনজীবনে মৌসুমি বায়ুর প্রভাব-
ভারতের জনজীবনে মৌসুমি বায়ুর গুরুত্ব অপরিসীম। যেমন-
- ফসল উৎপাদনে – ভারতের অধিকাংশ অধিবাসী কৃষিজীবী। দেশের অধিকাংশ কৃষিকাজ মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ওপর নির্ভরশীল। যেমন- ধান, আখ, তুলো, চা, পাট প্রভৃতির উৎপাদন।
- কৃষিভিত্তিক শিল্পে – মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ফলে পরোক্ষভাবে বিভিন্ন প্রকার কৃষিভিত্তিক শিল্পেরও উন্নতি হয়েছে, যেমন-কার্পাস-বয়ন শিল্প, পাট শিল্প, চিনি শিল্প প্রভৃতি।
- অরণ্য সৃষ্টিতে – মৌসুমি বৃষ্টিপাতের জন্যই পশ্চিমঘাট পার্বত্য অঞ্চল ও পূর্ব হিমালয় অঞ্চলে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে মূল্যবান চিরসবুজ অরণ্য এবং ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের পাতাঝরা অরণ্যের সৃষ্টি হয়েছে।
- অর্থনৈতিক বিকাশে – ভারতের অর্থনীতি বহুলাংশে মৌসুমি বায়ুর ওপর নির্ভরশীল। দেশে পরিমিত বৃষ্টিপাত হলে যেমন অতিরিক্ত কৃষিকাজ ও শিল্পোৎপাদনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক বিকাশ দ্রুত হয়, তেমনি অতি বৃষ্টিপাতে বন্যা এবং অল্প বৃষ্টিপাতে খরা ও পরিণামে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। এর ফলে অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়।
- বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনে – চা, পাট, বস্ত্র, চিনি ইত্যাদি রপ্তানির মাধ্যমে ভারত প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করে, যা পরোক্ষভাবে মৌসুমি বায়ুর দ্বারাই প্রভাবিত হয়।
ভারতের জলবায়ুর বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী?
ভারতের জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য
ভারতের জলবায়ুর বৈশিষ্ট্যগুলি হল-
- ঋতুপরিবর্তন – ভারতের জলবায়ুতে ঋতুপরিবর্তন হয় দুটি বিপরীতধর্মী মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে-একটি শীতকালীন উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু এবং অন্যটি গ্রীষ্মকালীন দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু। উভয় প্রকার বায়ুর প্রভাবে চারটি ঋতু (ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস শীতকাল, মার্চ থেকে মে মাস গ্রীষ্মকাল, জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস বর্ষাকাল এবং অক্টোবর ও নভেম্বর মাস শরৎকাল) ভারতে চক্রাকারে আবর্তন করে।
- বিপরীতধর্মী বায়ুপ্রবাহ – ভারতে শীতকালে যেদিক থেকে বায়ু প্রবাহিত হয়, গ্রীষ্মকালে ঠিক তার বিপরীত দিক থেকে বায়ু প্রবাহিত হয়।
- আর্দ্র গ্রীষ্মকাল ও শুষ্ক শীতকাল – মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ভারতে গ্রীষ্মকাল আর্দ্র ও শীতকাল শুষ্ক হয়। শুধুমাত্র তামিলনাডুর উপকূলবর্তী অঞ্চলে এবং পশ্চিমি ঝঞ্ঝার ফলে উত্তর-পশ্চিম ভারতে শীতকালে বৃষ্টিপাত হয়।
- শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত – দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে পশ্চিমঘাট পর্বতশ্রেণির পশ্চিমঢালে, পূর্ব হিমালয়ের পাদদেশে এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের পার্বত্য অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত হয়।
- অনিয়মিত মৌসুমি বৃষ্টিপাত – মৌসুমি বায়ুর আগমন ও প্রত্যাবর্তনের অনিশ্চয়তার কারণে ভারতে অনিয়মিতভাবে বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। কোনো বছর মৌসুমি বায়ু দেরিতে আসার ফলে ভারতে অনাবৃষ্টি বা খরা দেখা দেয়, আবার কোনো বছর মৌসুমি বায়ুর দেরিতে প্রত্যাবর্তনের ফলে অতিবৃষ্টি বা বন্যা দেখা দেয়।
- বৈচিত্র্যপূর্ণ জলবায়ু – দক্ষিণ ভারতের তুলনায় উত্তর ভারতের জলবায়ু অনেক বেশি চরমভাবাপন্ন। কারণ দক্ষিণ ভারতের প্রায় তিনদিক সমুদ্রবেষ্টিত থাকায় আর্দ্র সমুদ্রবায়ুর প্রভাবে ওই অঞ্চলের জলবায়ু সাধারণভাবে সমভাবাপন্ন হয়।
- ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব – শীতকালে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উত্তর-পশ্চিম ভারতের সমতলভূমিতে বেশ বৃষ্টিপাত হয়। এর ফলে তাপমাত্রা হ্রাস পেয়ে পার্বত্য অঞ্চলে তুষারপাত হয়।
এ ছাড়া, উপকূলীয় অঞ্চলেও কখনও কখনও ‘সাইক্লোন’ বা ঘূর্ণিঝড় দেখা যায়।
ভারতের জলবায়ু অঞ্চলগুলি আলোচনা করো।
ভারতের জলবায়ু অঞ্চলসমূহ-
জলবায়ু অঞ্চল বলতে এমন একটি এলাকাকে বোঝায় যার সর্বত্র জলবায়ুর বিভিন্ন উপাদান, বিশেষত উষ্ণতা ও বৃষ্টিপাতের প্রকৃতি মোটামুটি একই রকম। কোপেন (Koppen)-এর মত অনুসরণ করে ট্রেওয়ার্থা (Trewartha) ভারতকে আটটি জলবায়ু অঞ্চলে ভাগ করেছেন। এগুলি হল –
জলবায়ু অঞ্চল | প্রভাবিত এলাকা | বৈশিষ্ট্য |
ক্রান্তীয় অতি আর্দ্র মৌসুমি অঞ্চল | মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, গোয়া ও কেরল উপকূল, পশ্চিমঘাট পর্বতমালার পশ্চিমঢাল, মেঘালয়, মিজোরাম, মণিপুর এবং অসমের কাছাড় জেলা, লাক্ষাদ্বীপ এবং আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ | রাজ্যের বার্ষিক তাপমাত্রা 18 °সে থেকে 29 °সে থাকে। বার্ষিক মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ 300 সেমি। |
ক্রান্তীয় সাভানা অঞ্চল | গুজরাত, মহারাষ্ট্র, ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ড, অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওডিশা রাজ্য | বার্ষিক তাপমাত্রা 15°সে থেকে 30 °সে থাকে। বার্ষিক মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ 50 থেকে 100 সেমি। গ্রীষ্মকালে অতি উষ্ণ ও শীতকালে শুষ্ক প্রকৃতির। |
ক্রান্তীয় শুফ গ্রীষ্ম ও শীতকালীন বৃষ্টিপাত অঞ্চল | দক্ষিণ ভারতের করমণ্ডল উপকূল | বার্ষিক তাপমাত্রা 20 °সে থেকে 30 °সে থাকে। বার্ষিক মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ 100 থেকে 150 সেমি। গ্রীষ্মকাল প্রায় শুষ্ক (যেমন-তামিলনাড়ুর পূর্বাংশ) এবং সাধারণত শীতকালেই বেশি বৃষ্টিপাত হয়। |
ক্রান্তীয় মরুপ্রায় এবং উপক্রান্তীয় স্তেপ অঞ্চল | পশ্চিমঘাট পর্বতের বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল, পূর্ব রাজস্থান এবং দক্ষিণ-পশ্চিম পাঞ্জাব | বার্ষিক তাপমাত্রা 10 °সে থেকে 40 °সে থাকে। বার্ষিক মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ 50 থেকে 75 সেমি। |
উষ্ণ মরু অঞ্চল | পশ্চিম রাজস্থান | বার্ষিক তাপমাত্রা 5 °সে থেকে 48 °সে পর্যন্ত পৌঁছে যায়। বার্ষিক মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ 12.5 সেমি থেকে 30 সেমি। জলবায়ু চরমভাবাপন্ন প্রকৃতির, দৈনিক ও বার্ষিক তাপমাত্রার প্রসর খুব বেশি। |
নাতিশীতোষ্ণ মৃদু গ্রীষ্ম ও আর্দ্র শীতল অঞ্চল | সিকিম, অরুণাচল প্রদেশ এবং উত্তর-পূর্ব অসম | বার্ষিক তাপমাত্রা 20°সে থেকে 35 °সে থাকে। বার্ষিক মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ প্রায় 300 সেমি। |
আর্দ্র উপক্রান্তীয় মৌসুমি (শুষ্ক শীত) অঞ্চল | উত্তর ভারতের সমভূমি অঞ্চল | বার্ষিক তাপমাত্রা 5 °সে থেকে 30 °সে পর্যন্ত পাওয়া যায়। বার্ষিক মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ পূর্বদিকে 200 সেমি থেকে পশ্চিমদিকে 50 সেমি পর্যন্ত হয়। বৃষ্টিপাত প্রধানত গ্রীষ্মকালে হয়। |
শীতল পার্বত্য অঞ্চল | পশ্চিম হিমালয়ের উচ্চ অংশ | বার্ষিক তাপমাত্রা শীতকালে প্রায় হিমাঙ্কের কাছে এবং গ্রীষ্মকালে 15 °সে-এর মতো থাকে। বার্ষিক মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ 50 সেমি থেকে 75 সেমি। প্রায় সারাবছর তীব্র ঠান্ডা থাকে এবং শীতকালে তুষারপাত হয়। |
ভারতের জলবায়ুর ওপর হিমালয়ের প্রভাব আলোচনা করো।
ভারতের জলবায়ুর ওপর হিমালয়ের প্রভাব –
ভারতের উত্তরদিকে বিশালাকার প্রাচীরের মতো দণ্ডায়মান হিমালয় পর্বত এই দেশের জলবায়ুকে নানাভাবে প্রভাবিত করে। যেমন-
- তীব্র শীতের হাত থেকে রক্ষা করে – হিমালয় পর্বত সাইবেরিয়া থেকে আগত অতি শীতল ও শুষ্ক মহাদেশীয় মেরু বায়ুপুঞ্জকে ভারতে প্রবেশ করতে বাধাপ্রদান করে। এই কারণে দক্ষিণ এশিয়া একই অক্ষাংশে অবস্থিত অন্যান্য মহাদেশের তুলনায় শীতকালে অধিক উয় থাকে।
- বৃষ্টিপাতে সাহায্য করে – হিমালয় পর্বত দক্ষিণের সমুদ্র থেকে আগত আর্দ্র দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুকে প্রাচীরের মতো বাধাপ্রদান করে। এর ফলে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু পর্বতের ঢাল বরাবর ওপরে ওঠে। এরপর ওই বায়ু শীতল ও ঘনীভূত হয়ে উত্তর ভারতে ব্যাপক বৃষ্টিপাত ঘটায়।
- মরু জলবায়ু সৃষ্টিতে অবদান – আবহবিজ্ঞানীদের মতে, মধ্যএশিয়ার গোবি ও তাকলামাকান মরুভূমি সৃষ্টির ক্ষেত্রে হিমালয় পর্বতের যথেষ্ট অবদান রয়েছে।
- পশ্চিমি ঝঞ্ঝার ব্যাপকতা হ্রাস – হিমালয় পর্বতের জন্য শীতকালীন পশ্চিমি ঝঞ্ঝার প্রভাব কেবলমাত্র উত্তর-পশ্চিম ভারতেই সীমাবদ্ধ থাকে। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে, উত্তর-পূর্ব ভারতে হিমালয় ও পূর্বাঞ্চলের পর্বতগুলির মধ্যে যে সামান্য ফাঁক রয়েছে সেই ফাঁক দিয়ে অতি শীতল উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় প্রবেশ করে সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতের উষ্ণতার হ্রাস ঘটায়।
- মনোরম জলবায়ু সৃষ্টি – উচ্চতার জন্য হিমালয়ের পার্বত্য অঞ্চলের জলবায়ু শীতল ও আর্দ্র প্রকৃতির। হিমালয়ের উঁচু স্থানগুলিতে শীতকালে তুষারপাত হয়, আবার গ্রীষ্মকালে হিমালয়ের নীচু স্থানগুলিরও উষ্ণতাযুক্ত আরামপ্রদ থাকে ও জলবায়ু হয় বেশ মনোরম।
ভারতে জলবায়ুর বৈচিত্র্যের কারণ কী?
ভারতে জলবায়ুর বৈচিত্র্যের কারণ –
নিম্নলিখিত প্রভাবকগুলির জন্য ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থানের জলবায়ুর মধ্যে তারতম্য লক্ষ করা যায়।
- বিস্তৃত অক্ষাংশ জুড়ে অবস্থান – ভারতের মূল ভূখণ্ড দক্ষিণে প্রায় ৪° উত্তর থেকে উত্তরে প্রায় 37° উত্তর পর্যন্ত বিস্তৃত অর্থাৎ প্রায় 29° অক্ষাংশ জুড়ে বিস্তৃত বলে দেশের দক্ষিণাংশে যখন উয়-আর্দ্র নিরক্ষীয় জলবায়ু বিরাজ করে তখন মধ্যাংশে ক্রান্তীয় এবং উত্তরাংশে উপক্রান্তীয় ও নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু পরিলক্ষিত হয়।
- পর্বতের অবস্থান – উত্তরে হিমালয় পর্বতমালা সুউচ্চ প্রাচীরের মতো দাঁড়িয়ে থাকায় আর্দ্র দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বাধাপ্রাপ্ত হয়ে সমগ্র উত্তর ভারতে প্রবল বৃষ্টিপাত ঘটায়। অন্যদিকে, শীতকালে দক্ষিপ ভারতের তুলনায় উত্তর ভারতে শীতের তীব্রতা সামান্য বেশি থাকে। যদি হিমালয় পর্বতমালা ভারতের উত্তরে অবস্থান না করত তবে মধ্যএশিয়ার শীতল বায়ুপুঞ্জের প্রভাবে সমগ্র উত্তর ভারতে প্রবল শৈত্যপ্রবাহ ঘটত। দাক্ষিণাত্য মালভূমির পূর্ব ও পশ্চিম সীমায় যথাক্রমে পূর্বঘাট ও পশ্চিমঘাট পর্বতশ্রেণি প্রায় উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত থাকায় আর্দ্র বায়ু এইসব পর্বতমালায় বাধাপ্রাপ্ত হয়ে পূর্ব ও পশ্চিম উপকূলে যতটা পরিমাণ বৃষ্টিপাত ঘটায়, দাক্ষিণাত্যের অভ্যন্তরভাগে ততটা হয় না, সেই অঞ্চলে কিছুটা শুষ্ক অবস্থা বিরাজ করে। আরাবল্লি পর্বতের অবস্থান দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুকে প্রতিহত করতে না পারায় থর মরু অঞ্চলে বৃষ্টি যথেষ্ট কম হয়।
- ভূমির উচ্চতা – প্রায় একই অক্ষাংশে অবস্থিত হলেও আগ্রার থেকে দার্জিলিং-এর জলবায়ু অনেক আলাদা। এর কারণ দার্জিলিং-এর উচ্চতা অনেক বেশি (প্রতি কিমি উচ্চতা বৃদ্ধিতে 6.5 °সে. হারে উষ্ণতা কমে)। একই কারণে পশ্চিমঘাট পর্বত বা হিমালয়ের উচ্চ অংশের জলবায়ুও দেশের অন্য অংশের তুলনায় আলাদা হয়।
- দক্ষিণ ভারতের উপদ্বীপীয় গঠন – ভূগাঠনিক দিক দিয়ে দক্ষিণ ভারত ত্রিভুজাকৃতি হওয়ায় পূর্বে বঙ্গোপসাগর এবং পশ্চিমে আরব সাগরের সামুদ্রিক বায়ুর প্রভাবে দক্ষিণ ভারতের জলবায়ু উত্তর ভারতের তুলনায় অনেকটাই সমভাবাপন্ন।
- সমুদ্র থেকে দূরত্ব – সামুদ্রিক প্রভাবে জলবায়ু সমভাবাপন্ন হয়। কিন্তু সমুদ্র থেকে বেশি দূরত্বের জন্য দিল্লি বা আগ্রা বা কানপুরে শীতকাল ও গ্রীষ্মকাল অনেক বেশি তীব্র অর্থাৎ জলবায়ু চরমভাবাপন্ন প্রকৃতির হয়ে থাকে।
- দুটি ভিন্নধর্মী মৌসুমী বায়ু প্রবাহ – ভারতের ওপর দিয়ে শীতকালে আর্দ্র দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু এবং শীতকালে শীতল ও শুষ্ক উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হয়। এই দুই বিপরীতধর্মী বায়ুপ্রবাহের মাধ্যমে ভারতের জলবায়ুতে দুটি প্রধান ঋতু সৃষ্টি হয়-একটি আর্দ্র গ্রীষ্মকাল এবং অপরটি শুষ্ক শীতকাল।
- বায়ুচাপ বলয়ের সাময়িক স্থান পরিবর্তন – সূর্যের উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়নের সঙ্গে সঙ্গে ভূপৃষ্ঠের স্থায়ী বায়ুচাপ বলয়গুলি 5° থেকে 10° স্থান পরিবর্তন করে বলে দক্ষিণ ভারতের দক্ষিণতম অংশে সামান্য জলবায়ুগত পরিবর্তন লক্ষ করা যায়।
ভারতের জলবায়ুর নিয়ন্ত্রক হিসেবে ভূপ্রকৃতি, জেট বায়ু, ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত, পশ্চিমি ঝঞ্ঝা, এল নিনো ও লা নিনার প্রভাব লেখো।
ভারতের জলবায়ুর নিয়ন্ত্রক উপাদান –
ভারতের জলবায়ু বহু উপাদান দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এর মধ্যে নিম্নলিখিত বিষয়গুলির ভূমিকা প্রধান –
- ভূপ্রকৃতি – ভূপ্রকৃতি ভারতের জলবায়ুর অন্যতম নিয়ন্ত্রক। হিমালয় পর্বত যেমন ভারতের জলবায়ুকে সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করে, তেমনি ভূপ্রকৃতির অন্যান্য বিষয়গুলিও জলবায়ুর নিয়ন্ত্রক। যেমন – পশ্চিমঘাট পর্বত উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত বলে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু পশ্চিমঘাট পর্বতের পশ্চিমঢালে প্রচুর বৃষ্টি প্রদান করে। আবার পশ্চিমঘাটের বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল দাক্ষিণাত্য মালভূমি থাকে প্রায় বৃষ্টিহীন। আরাবল্লি পর্বত উত্তর-দক্ষিণে প্রসারিত বলে রাজস্থানের মরুভূমি সৃষ্টি হয়েছে। দক্ষিণ ভারতের বহু স্থান অক্ষাংশগত দিক দিয়ে উন্ন-আর্দ্র জলবায়ুতে অবস্থিত হলেও উচ্চতার কারণে সেখানে মৃদু শীতল জলবায়ু দেখা যায়। যেমন উটি প্রায় 2500 মিটার ওপরে অবস্থিত বলে সেখানে সারাবছরই ঠান্ডা থাকে। একইরকমভাবে মেঘালয় মালভূমির দক্ষিণদিকে অধিক বৃষ্টিপাতের জন্য চেরাপুঞ্জি পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা আর্দ্র স্থানে পরিণত হয়েছে।
- জেট বায়ু – উর্ধ্ব বায়ুমণ্ডলে যে তীব্র বেগসম্পন্ন বায়ুপ্রবাহ বিরাজ করে তাকে বলে জেট বায়ু। বিশেষজ্ঞদের মতে, জেট বায়ু ভারতের জলবায়ুর অন্যতম নিয়ন্ত্রক। এটি ভারতের জলবায়ুকে দু-ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে-
- পশ্চিমি জেট – শীতকালে উপক্রান্তীয় পশ্চিমি জেট বায়ুর কারণে ভারতের ওপর উচ্চচ্চাপ অবস্থান করে। এই জন্যই ভারত থেকে মৌসুমিবায়ু দক্ষিণে প্রবাহিত হয় এবং ভারতে শীতকাল ও শুষ্ক ঋতু বিরাজ করে। পশ্চিমি জেট বায়ুর জন্যই পশ্চিমি ঝঞ্ঝা, শীতকালীন বৃষ্টিপাত বা পাহাড়ি অঞ্চলে তুষারপাত হয়।
- পুবালি জেট – ক্রান্তীয় পূবালি জেট বায়ু ভারতে নিম্নচাপ সৃষ্টি করে। তাই এর প্রভাবে দক্ষিণ ভাগ থেকে মৌসুমি বায়ু ভারতে প্রবেশ করে। এই জেট বায়ু বর্ষাকালে ভারতের আবহাওয়াকে সর্বাধিক নিয়ন্ত্রণ করে।
- ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত – ভারতের দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, আরব সাগর বা ভারত মহাসাগরে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে সেখানে নিম্নচাপ ও পরে ঘূর্ণবাতের সৃষ্টি হয়। এই ধরনের ঘূর্ণবাতকে ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত বলে। ভারত ক্রান্তীয় অঞ্চলে এবং সমুদ্র সন্নিহিত অঞ্চলে অবস্থিত বলে ভারতের জলবায়ুতে ঘূর্ণবাতের প্রভাব খুব বেশি। এইসব ঘূর্ণবাতগুলি বর্ষাকালে অত্যন্ত সক্রিয় থাকে ও ভারতে প্রবল ঝড়বৃষ্টি ঘটায়। আবার দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রত্যাবর্তনের সময় পূর্ব উপকূলেও ঝড়বৃষ্টি হয়।
- পশ্চিমি ঝঞ্ঝা – পশ্চিমি ঝঞ্ঝার মূল উৎস ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল হলেও পশ্চিমি জেট বায়ুর প্রভাবে তা পূর্বদিকে অগ্রসর হয়। এই ঝঞ্ঝা পশ্চিম হিমালয় ও উত্তর ভারতের সমভূমিতে শীতকালে যথাক্রমে তুষারপাত ও বৃষ্টি দান করে যা কৃষিতে সাহায্য করে।
- এল নিনো ও লা নিনার প্রভাব – ক্রান্তীয় প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বে পেরু, ইকুয়েডরে পশ্চিম উপকূল দিয়ে কোনো কোনো বছর ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে যে দক্ষিপমুখী উন্নস্রোত বয়ে যায় তার নাম এল নিনো। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, ক্রান্তীয় অঞ্চলে ব্যাপক বন্যা ও খরার কারণ এল নিনো। এল নিনোর কারণে প্রবল বর্ষা হলেও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলিতে বৃষ্টিপাত কমে গিয়ে খরা পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। এল নিনোর পর আবহাওয়া শান্ত হয়ে যায় ও পূর্বাবস্থায় ফিরে আসে। এই অবস্থাকে লা নিনা বলে। এই লা নিনার কারণে ভারতে যথেষ্ট বৃষ্টিপাত হয়।
মৃত্তিকা, স্বাভাবিক উদ্ভিদ, কৃষিকাজের ওপর মৌসুমি বায়ুর প্রভাব লেখো।
মৃত্তিকা, স্বাভাবিক উদ্ভিদ, কৃষিকাজের ওপর মৌসুমি বায়ুর প্রভাব –
বৃষ্টিপাতের তারতম্যে মাটির উর্বরতার তারতম্য নির্ভর করে। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশি হলে মাটির ওপরের অংশ বেশি ধুয়ে যায়। তাই মাটির মধ্যের নানা খনিজের কণা, লোহা এবং অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড বাইরে বেরিয়ে আসে। সেজন্য এসব অঞ্চলে লোহিত মাটি, ল্যাটেরাইট মাটি ইত্যাদি তৈরি হয়। মেঘালয় মালভূমিতে অধিক বৃষ্টির জন্য লোহিত মাটি ও ল্যাটেরাইট তৈরি হয়েছে। বেশি আর্দ্র অঞ্চলে কাদামাটির প্রাধান্য থাকে। অন্যদিকে বেশি উষ্ণতাযুক্ত অঞ্চলে বালিমাটি তৈরি হয়। মাঝারি বৃষ্টিযুক্ত অঞ্চলে গাছপালা বেশি হয় তাই সেখানকার মাটি নাইট্রোজেন ও জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ।
- স্বাভাবিক উদ্ভিদ – মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ওপর নির্ভর করেই ভারতের স্বাভাবিক উদ্ভিদের বৈচিত্র্য তৈরি হয়েছে। যেখানে বৃষ্টিপাত বেশি সেখানে আর্দ্র পর্ণমোচী এবং যেখানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম সেখানে শুষ্ক পর্ণমোচী অরণ্য জন্মায়। অন্যদিকে বৃষ্টিহীন মরু অঞ্চলে কাঁটা ঝোপ জাতীয় উদ্ভিদ জন্মায়।
- কৃষিকাজ – ভারতের বেশিরভাগ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণের ওপর নির্ভর করে কোথাও আর্দ্র কৃষি, কোথাও শুষ্ক কৃষি এবং কোথাও সেচ কৃষি ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে। জলবায়ুর ওপর নির্ভর করেই কোথাও ধান, গম, কোথাও চা, কফি আবার কোথাও বাজরা, ভুট্টা, ও অন্যান্য ফসলের চাষ করা হচ্ছে।
আজকের আর্টিকেলে, মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ” থেকে ভারতের জলবায়ু বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এই প্রশ্নগুলি মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ এগুলি প্রায়শই পরীক্ষায় দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। কোন প্রশ্ন বা অসুবিধা হলে, আমাকে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন। আমি উত্তর দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। অনুরোধ, যাদের এই তথ্য প্রয়োজন, তাদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করুন। ধন্যবাদ!