এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

বিশ্ব উষ্ণায়নে গ্রিনহাউস গ্যাসের ভূমিকা

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “বিশ্ব উষ্ণায়নে গ্রিনহাউস গ্যাসের ভূমিকা উল্লেখ করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। “বিশ্ব উষ্ণায়নে গ্রিনহাউস গ্যাসের ভূমিকা উল্লেখ করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের দ্বিতীয় অধ্যায় “বায়ুমণ্ডল – বায়ুমণ্ডলের তাপ, উষ্ণতা ও বিশ্ব উষ্ণায়ন” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

বিশ্ব উষ্ণায়নে গ্রিনহাউস গ্যাসের ভূমিকা উল্লেখ করো।
বিশ্ব উষ্ণায়নে গ্রিনহাউস গ্যাসের ভূমিকা উল্লেখ করো।
Contents Show

বিশ্ব উষ্ণায়নে গ্রিনহাউস গ্যাসের ভূমিকা উল্লেখ করো।

বিশ্ব উষ্ণায়নে গ্রিনহাউস গ্যাসের ভূমিকা –

বায়ুমণ্ডলের যেসব গ্যাসগুলির তাপশোষণ ও সংরক্ষণ ক্ষমতা আছে সেগুলিই হল গ্রিনহাউস গ্যাস। কার্বন ডাইঅক্সাইড প্রধান গ্রিনহাউস গ্যাস। এ ছাড়া মিথেন, ওজোন, ক্লোরোফ্লুরোকার্বন, নাইট্রাস অক্সাইড, জলীয় বাষ্প প্রভৃতিকে গ্রিনহাউস গ্যাস বলা হয়। এই গ্যাসগুলি নানা কারণে বৃদ্ধি পেয়ে পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে। যেমন –

কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO2) –

বায়ুমণ্ডলে এই গ্রিনহাউস গ্যাসটির পরিমাণ (0.03%)। কার্বন চক্রের ফলে এই গ্যাসটির সাম্যাবস্থা বজায় থাকে। কিন্তু বর্তমানে মূলত জীবাশ্ম জ্বালানির (কয়লা, খনিজ তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস) অধিক দহন ও নির্বিচারে অরণ্য নিধনের কারণে এর (CO2) মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ভারসাম্য বিঘ্নিত হচ্ছে। ফলস্বরূপ পার্থিব বিকিরণে এই গ্যাস বাধা সৃষ্টি করছে ও তাপ শোষণের মাধ্যমে বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করছে। গবেষণায় জানা গেছে, বিশ্ব উষ্ণায়নে এর ভূমিকা প্রায় 49%।

ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC) –

বায়ুমণ্ডলে এর পরিমাণ অতি নগণ্য হলেও এর উষ্ণকরণ ক্ষমতা CO2 অপেক্ষা বহু গুণ বেশি। বিশ্ব উষ্ণায়নে এর ভূমিকা প্রায় 14% এবং বাৎসরিক বৃদ্ধির হার 5%। মূলত হিমায়ন যন্ত্র, রেফ্রিজারেটর ও প্লাস্টিক ফোম ফাঁপিয়ে তুলতে CFC -এর ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে।

জলীয়বাষ্প –

জলীয়বাষ্প অন্যতম তাপ শোষক গ্যাস। বায়ুমণ্ডলে এর উপস্থিতির পরিমাণ 0.5-4% হলেও উষ্ণকরণ ক্ষমতা CO2 -এর চেয়ে প্রায় 5 গুণ বেশি এবং বিশ্ব উষ্ণায়নে এর ভূমিকা প্রায় 13%। জলভাগ ও স্থলভাগ থেকে বাষ্পীভবন ও উদ্ভিদের প্রস্বেদন প্রক্রিয়ায় বায়ুমণ্ডলে জলীয়বাষ্পের উৎপত্তি ঘটে। এই জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়ে মেঘে পরিণত হলে, সেই মেঘ ভূপৃষ্ঠ থেকে বিকিরিত তাপকে মহাশূন্যে যেতে বাঁধা সৃষ্টি করে।

মিথেন (CH4) –

বায়ুমণ্ডলে এর পরিমাণ খুবই কম হলেও তাপধারণ ক্ষমতা CO2 -এর চেয়ে 20-25 গুণ বেশি ও বিশ্ব উষ্ণায়নে এর ভূমিকা প্রায় 12%। প্রধানত জলাভূমি, কৃষিজমি (বিশেষ করে ধান জমি), জৈব বর্জ্য (গোবর, মানুষ ও প্রাণীর মলমূত্র) পদার্থ বিয়োজনের ফলে এবং প্রাকৃতিক গ্যাস রূপে, কয়লাখনি, খনিজ তৈল খনি থেকে প্রতিনিয়ত যথেষ্ট পরিমাণে মিথেন গ্যাস নির্গত হয়ে বায়ুমণ্ডলে মিশছে।

নাইট্রাস অক্সাইড (N2O) –

নাইট্রাস অক্সাইড একটি উল্লেখযোগ্য গ্রিনহাউস গ্যাস। বায়ুমণ্ডলে এর উপস্থিতির পরিমাণ অতি নগণ্য হলেও উষ্ণকরণ ক্ষমতা CO2 -এর চেয়ে প্রায় 270 গুণ বেশি ও বিশ্ব উষ্ণায়নে এর ভূমিকা 6%। ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে কৃষিজমিতে ব্যাপক নাইট্রোজেন ঘটিত সার প্রয়োগ, কলকারখানা, মৃত্তিকায় জীবাণুর বিক্রিয়া, দাবানল প্রভৃতি কারণে N2O গ্যাস উৎপাদিত হচ্ছে ও বায়ুমণ্ডলে মিশেছে।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

গ্রিনহাউস গ্যাস কী?

গ্রিনহাউস গ্যাস হল বায়ুমণ্ডলের এমন কিছু গ্যাস যেগুলো সূর্যের তাপ শোষণ করে এবং পৃথিবীর উষ্ণতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। যেমন — কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO₂), মিথেন (CH₄), নাইট্রাস অক্সাইড (N₂O), ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC), জলীয় বাষ্প ইত্যাদি।

বিশ্ব উষ্ণায়নে গ্রিনহাউস গ্যাসের ভূমিকা কী?

গ্রিনহাউস গ্যাসগুলি সৌরশক্তি শোষণ করে এবং তাপ আটকে রেখে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে। এই প্রক্রিয়াকে “গ্রিনহাউস প্রভাব” বলে। অতিরিক্ত গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের কারণে এই প্রভাব বৃদ্ধি পেয়ে বিশ্ব উষ্ণায়ন ঘটছে।

কোন গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রভাব সবচেয়ে বেশি?

কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO₂) বিশ্ব উষ্ণায়নে সবচেয়ে বেশি (প্রায় ৪৯%) অবদান রাখে। তবে মিথেন (CH₄) এবং ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC) -এর তাপধারণ ক্ষমতা CO₂ -এর চেয়ে অনেকগুণ বেশি।

কার্বন ডাইঅক্সাইডের উৎস কী?

প্রধান উৎসগুলি হলো —
1. জীবাশ্ম জ্বালানি (কয়লা, পেট্রোল, ডিজেল) পোড়ানো।
2. বন উজাড় করা।
3. শিল্পকারখানা ও যানবাহনের ধোঁয়া।

মিথেন গ্যাস কীভাবে উৎপন্ন হয়?

মিথেন গ্যাসের প্রধান উৎস —
1. ধানক্ষেত ও জলাভূমি থেকে নির্গত গ্যাস।
2. গবাদি পশুর হজম প্রক্রিয়া (গোবর গ্যাস)।
3. প্রাকৃতিক গ্যাসের খনি ও ল্যান্ডফিল সাইট।

ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC) কেন ক্ষতিকর?

CFC ওজোন স্তর ক্ষয় করে এবং বিশ্ব উষ্ণায়নে প্রায় 14% ভূমিকা রাখে। এটি রেফ্রিজারেটর, এয়ার কন্ডিশনার ও প্লাস্টিক ফোমে ব্যবহৃত হয়।

জলীয় বাষ্প কীভাবে বিশ্ব উষ্ণায়নে ভূমিকা রাখে?

জলীয় বাষ্প একটি প্রাকৃতিক গ্রিনহাউস গ্যাস, যা বায়ুমণ্ডলের তাপ আটকে রাখে। সমুদ্র ও বনভূমি থেকে বাষ্পীভবনের মাধ্যমে এর পরিমাণ বাড়ছে, যা উষ্ণায়নকে ত্বরান্বিত করে।

নাইট্রাস অক্সাইড (N₂O) কেন উদ্বেগের কারণ?

N₂O -এর তাপ ধারণক্ষমতা CO₂ -এর চেয়ে 270 গুণ বেশি। এটি মূলত কৃষিকাজে নাইট্রোজেন সার ব্যবহার, শিল্পদূষণ ও জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর ফলে উৎপন্ন হয়।

গ্রিনহাউস গ্যাস নিয়ন্ত্রণের উপায় কী?

কিছু সমাধান হলো —
1. নবায়নযোগ্য শক্তি (সৌর, বায়ুশক্তি) ব্যবহার।
2. গাছ লাগানো ও বন সংরক্ষণ।
3. শিল্প ও যানবাহনে দূষণ নিয়ন্ত্রণ।
4. সিএফসি মুক্ত প্রযুক্তি ব্যবহার।

বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব কী?

এর প্রভাবে —
1. হিমবাহ গলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে।
2. খরা, বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়ছে।
3. কৃষি ও জীববৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “বিশ্ব উষ্ণায়নে গ্রিনহাউস গ্যাসের ভূমিকা উল্লেখ করো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “বিশ্ব উষ্ণায়নে গ্রিনহাউস গ্যাসের ভূমিকা উল্লেখ করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের দ্বিতীয় অধ্যায় “বায়ুমণ্ডল – বায়ুমণ্ডলের তাপ, উষ্ণতা ও বিশ্ব উষ্ণায়ন” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Share via:

মন্তব্য করুন