‘বর্জ্য থেকে সম্পদ’ কথাটি যুক্তিসহ আলোচনা করো। কয়েকটি সাধারণ ক্ষতিকারক বর্জ্য পদার্থের পরিচয় দাও।

Rahul

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “বর্জ্য থেকে সম্পদ কথাটি যুক্তিসহ আলোচনা করো। কয়েকটি সাধারণ ক্ষতিকারক বর্জ্য পদার্থের পরিচয় দাও।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। “বর্জ্য থেকে সম্পদ কথাটি যুক্তিসহ আলোচনা করো। কয়েকটি সাধারণ ক্ষতিকারক বর্জ্য পদার্থের পরিচয় দাও।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের চতুর্থ অধ্যায় “বর্জ্য ব্যবস্থাপনা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

'বর্জ্য থেকে সম্পদ' কথাটি যুক্তিসহ আলোচনা করো।
‘বর্জ্য থেকে সম্পদ’ কথাটি যুক্তিসহ আলোচনা করো।

‘বর্জ্য থেকে সম্পদ’ কথাটি যুক্তিসহ আলোচনা করো।

যেসব বস্তুকে আমরা বর্জন করতে চাই তাকে বর্জ্য পদার্থ বলে। অথবা যেসব সামগ্রী ব্যবহারের পর অব্যবহারযোগ্য হয়ে পড়ে তাকে বর্জ্য বলে। যেমন – গৃহস্থালির জঞ্জাল, শাকসবজি, ফল-ফুলের অপ্রয়োজনীয় অংশ, শিল্প কারখানার আর্বজনা ইত্যাদি। বর্জ্যকে উপযুক্ত পদ্ধতিতে পুনরায় কাজে লাগিয়ে তাকে সম্পদে পরিণত করা যায়। এর ফলে সম্পদ সংরক্ষিত ও দীর্ঘস্থায়ী হয়। যেমন –

  • কয়লা নির্ভর তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বর্জ্য হিসেবে যে ফ্লাইঅ্যাশ পাওয়া যায় তা দিয়ে ইট ও সিমেন্ট তৈরি করা যায়।
  • বর্জ্য কাচকে অ্যাসফল্টের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যায়, আবার কাচকে গলিয়ে নতুন কাচ তৈরি করা যায়।
  • বর্জ্য ধাতব অংশকে (লৌহ, অ্যালুমিনিয়াম, তামা) পুনরাবর্তন প্রক্রিয়ায় নতুন ধাতু বা ধাতব সামগ্রীরূপে উৎপাদন করা সম্ভব।
  • বর্জ্য কাগজ, কাপড়, তুলো থেকে কাগজের মণ্ড ও কাগজ উৎপাদন করা হয়। বর্জ্য কাগজ থেকে পুনরাবর্তন পদ্ধতিতে 1 টন কাগজ উৎপাদনের মাধ্যমে 17টি গাছকে বাঁচানো সম্ভব।
  • চিনিকলে যে আখের ছিবড়া বর্জ্য হিসেবে উৎপন্ন হয় তা দিয়ে কাগজ, জৈব গ্যাস ও বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব।
  • মানুষ ও গবাদি পশুর মল, কৃষি অবশেষ, অন্যান্য জৈব বর্জ্য থেকে জৈব-রাসায়নিক প্রযুক্তির সাহায্যে যে দাহ্য গ্যাস উৎপন্ন হয় তাকে জ্বালানি হিসেবে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনে কাজে লাগানো যায়।

এ ছাড়া জৈব পচনশীল বর্জ্য থেকে জৈব সার তৈরি করা যায় যা জমিতে সার হিসেবে প্রয়োগ করা হয়। এই ভাবে বর্জ্য পদার্থকে পুনর্ব্যবহারের মাধ্যমে বর্জ্যকে সম্পদে পরিণত করা সম্ভব।

কয়েকটি সাধারণ ক্ষতিকারক বর্জ্য পদার্থের পরিচয় দাও।

কয়েকটি সাধারণ ক্ষতিকারক বর্জ্য পদার্থ –

রাসায়নিকের নামব্যবহারক্ষতিকর দিক
ডি.ডি.টি.কীটনাশকতীব্র বিষ
ফিউরিন 442প্লাস্টিক কারখানাক্যানসারের কারণ
বেঞ্জিনরং কারখানাক্যানসার কোশ উদ্দীপক
C-56কীটনাশকতীব্র বিষ, ক্যানসার সৃষ্টিকারী
ভিনাইল ক্লোরাইডপ্লাস্টিক কারখানাক্যানসারের কারণ
পারদপ্লাস্টিক রং, ক্লোরোঅ্যালক্যালিদৃষ্টিহীনতা, প্যারালাইসিস
সিসা (লেড)মোটরগাড়ির স্টোরেজ ব্যাটারি, কীটনাশকঅ্যানিমিয়া, বুদ্ধ্যাঙ্ক হ্রাস, রক্তচাপ বৃদ্ধি
ক্যাডমিয়ামরঙিন প্লাস্টিক, ফসফেট সার কারখানাঅস্থিভঙ্গুরতা, অস্থিসন্ধিতে তীব্র যন্ত্রণা, বিপাকীয় অস্বাভাবিকতা
আর্সেনিককীটনাশক, কয়লা দহনফুসফুস, যকৃৎ, চামড়ার ক্যানসার

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

বর্জ্য পদার্থ কী?

বর্জ্য পদার্থ হলো সেই সব বস্তু যা ব্যবহারের পর অব্যবহারযোগ্য হয়ে পড়ে বা যেগুলো আমরা ফেলে দিই। যেমন — গৃহস্থালির জঞ্জাল, শিল্পবর্জ্য, প্লাস্টিক, কাগজ, ধাতব পদার্থ ইত্যাদি।

বর্জ্যকে কীভাবে সম্পদে পরিণত করা যায়?

বর্জ্যকে পুনর্ব্যবহার (Recycling), পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ (Reprocessing) এবং জৈব প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্পদে রূপান্তর করা যায়। যেমন —
1. ফ্লাই অ্যাশ দিয়ে ইট ও সিমেন্ট তৈরি।
2. বর্জ্য কাগজ পুনর্ব্যবহার করে নতুন কাগজ তৈরি।
3. জৈব বর্জ্য থেকে বায়োগ্যাস ও জৈবসার উৎপাদন।

বর্জ্য পুনর্ব্যবহারের সুবিধা কী?

1. প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ (যেমন – কাগজ পুনর্ব্যবহারে গাছ বাঁচে)।
2. পরিবেশ দূষণ কমে (প্লাস্টিক ও ধাতব বর্জ্য পুনর্ব্যবহারে মাটি ও জল দূষণ হ্রাস)।
3. অর্থনৈতিক লাভ (বর্জ্য থেকে নতুন পণ্য তৈরি করে আয়)।

জৈব বর্জ্য থেকে কী কী তৈরি করা যায়?

1. বায়োগ্যাস (রান্না ও বিদ্যুৎ উৎপাদনে)।
2. জৈবসার (কৃষিকাজে ব্যবহার)।
3. কম্পোস্ট (মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি)।

প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে কীভাবে সম্পদ তৈরি করা যায়?

1. পুনর্ব্যবহার করে নতুন প্লাস্টিক পণ্য তৈরি।
2. পাইরোলাইসিস প্রযুক্তিতে প্লাস্টিক থেকে জ্বালানি তেল উৎপাদন।
3. রাস্তা নির্মাণে প্লাস্টিক-অ্যাসফাল্ট মিশ্রণ ব্যবহার।

ই-বর্জ্য (ইলেকট্রনিক বর্জ্য) থেকে কী সম্পদ পাওয়া যায়?

1. সোনা, রূপা, তামা পুনরুদ্ধার করে মূল্যবান ধাতু হিসাবে ব্যবহার।
2. প্লাস্টিক ও কাচ পুনর্ব্যবহার করে নতুন ইলেকট্রনিক্স তৈরি।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব কী?

1. পরিবেশ রক্ষা (বর্জ্য জমে মাটি, জল ও বায়ু দূষণ রোধ)।
2. স্বাস্থ্য সুরক্ষা (ক্ষতিকর বর্জ্য থেকে রোগ প্রতিরোধ)।
3. টেকসই উন্নয়ন (প্রাকৃতিক সম্পদের সঠিক ব্যবহার)।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “বর্জ্য থেকে সম্পদ কথাটি যুক্তিসহ আলোচনা করো। কয়েকটি সাধারণ ক্ষতিকারক বর্জ্য পদার্থের পরিচয় দাও।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “বর্জ্য থেকে সম্পদ কথাটি যুক্তিসহ আলোচনা করো। কয়েকটি সাধারণ ক্ষতিকারক বর্জ্য পদার্থের পরিচয় দাও।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের চতুর্থ অধ্যায় “বর্জ্য ব্যবস্থাপনা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

বায়ুর সঞ্চয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপগুলির বর্ণনা দাও।

বায়ুর সঞ্চয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপগুলির বর্ণনা দাও।

সক্রিয় সেনসর ও নিষ্ক্রিয় সেনসর বলতে কী বোঝো? সক্রিয় সেনসর ও নিষ্ক্রিয় সেনসরের মধ্যে পার্থক্য করো।

সক্রিয় ও নিষ্ক্রিয় সেনসর বলতে কী বোঝো? সক্রিয় ও নিষ্ক্রিয় সেনসরের মধ্যে পার্থক্য

জিওস্টেশনারি ও সান-সিনক্রোনাস উপগ্রহ কী? জিওস্টেশনারি ও সান-সিনক্রোনাস উপগ্রহের মধ্যে পার্থক্য

জিওস্টেশনারি ও সান-সিনক্রোনাস উপগ্রহ কী? জিওস্টেশনারি ও সান-সিনক্রোনাস উপগ্রহের মধ্যে পার্থক্য

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

Madhyamik Mathematics Suggestion 2026

Madhyamik Mathematics Suggestion 2026 – Mark 5

Madhyamik Mathematics Suggestion 2026 – সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন

Madhyamik Mathematics Suggestion 2026 – সত্য মিথ্যা

Madhyamik Mathematics Suggestion 2026 – শূন্যস্থান পূরণ