ব্রহ্মপুত্র নদীতে অসংখ্য দ্বীপ বা চড়ার সৃষ্টি হয়েছে কেন?

আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলে দেখবো যে ব্রহ্মপুত্র নদীতে অসংখ্য দ্বীপ বা চড়ার সৃষ্টি হয়েছে কেন? এই প্রশ্ন দশম শ্রেণীর পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, ব্রহ্মপুত্র নদীতে অসংখ্য দ্বীপ বা চড়ার সৃষ্টি হয়েছে কেন? প্রশ্নটি আপনি পরীক্ষার জন্য তৈরী করে গেলে আপনি লিখে আস্তে পারবেন।

ব্রহ্মপুত্র নদীতে অসংখ্য দ্বীপ বা চড়ার সৃষ্টি হয়েছে কেন?

ব্রহ্মপুত্র নদীতে অসংখ্য দ্বীপ বা চড়ার সৃষ্টি হয়েছে কেন?

  1. অসমের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র নদী মধ্যগতি বা সমভূমি প্রবাহের অন্তর্গত। এখানে ভূমির ঢাল এত কম হয় যে নদী অত্যন্ত ধীরে প্রবাহিত হয়। তাই নদীবাহিত পদার্থ নদীগর্ভেই জমে যায়।
  2. এ ছাড়া প্রচুর উপনদী ব্রহ্মপুত্রে পড়ায় জল ও বোঝার পরিমাণও বেশি। সেকারণে ব্রহ্মপুত্রের নদীদ্বীপগুলি খুব চওড়া ও বৃহৎ হয়। মাজুলি এমনই একটি নদীদ্বীপ।

আরও পড়ুন – মধ্যগতিতে নদীদ্বীপ বা চর সৃষ্টি হয় কেন?

ব্রহ্মপুত্র নদী কি নামে পরিচিত?

ব্রহ্মপুত্র নদী বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন নামে পরিচিত। তিব্বতে এটি সাংপো, ইয়া-লু-ৎসাং-পো ও মা-ছু নামে পরিচিত। অরুণাচল প্রদেশে দিহাং, অসমের কিছু অংশে সিয়াং ও লৌহিত্য এবং অসমের বেশিরভাগ ও ভারতের অন্যান্য স্থানে ব্রহ্মপুত্র নামেই এটি পরিচিত। বাংলাদেশে প্রবেশের পর এর মূলধारा যমুনা নাম নেয়, একটি শাখা নদী ধনশিরি নামে পরিচিত হয়, পুরাতন গতিপথটি পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নামে পরিচিত এবং আরেকটি শাখা নদী মেঘনা নাম ধারণ করে। এছাড়াও, ব্রহ্মপুত্রকে “পুরুষ নদী”, “ধন্য নদী”, “জলপথের রাজা” ইত্যাদি নামেও অভিহিত করা হয়।

ব্রহ্মপুত্র নদের গতিপথ পরিবর্তন হয় কত সালে?

১৭৮৭ সালের ভূমিকম্পের প্রভাবে ব্রহ্মপুত্র নদের তলদেশ উত্থিত হওয়ায় এর গতিপথে পরিবর্তন আসে। এর পূর্বে, ১৭৮৭ সালের আগে, ব্রহ্মপুত্র নদী ময়মনসিংহের উপর দিয়ে আড়াআড়িভাবে প্রবাহিত হত।
ভূমিকম্পের পর, নদীর নতুন একটি শাখা তৈরি হয় যা যমুনা নামে পরিচিতি লাভ করে। বর্তমানে, যমুনাই ব্রহ্মপুত্রের প্রধান ধারা হিসেবে বিবেচিত। উৎপত্তিস্থল থেকে ব্রহ্মপুত্র নদের মোট দৈর্ঘ্য ২৮৫০ কিলোমিটার।

ব্রহ্মপুত্র নদী কোন জেলায় অবস্থিত?

ব্রহ্মপুত্র নদী একটি আন্তর্জাতিক নদী, যা একাধিক দেশ ও রাজ্যের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এর উৎপত্তিস্থল চীনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল তিব্বতের শিমায়াং-দাং হিমবাহে। ভারতে ঢুকে এটি অরুণাচল প্রদেশে দিহাং নামে, আসামে দিহাং, লৌহিত্য ও ব্রহ্মপুত্র নামে পরিচিত হয়ে প্রবাহিত হয়। পশ্চিমবঙ্গে এটি যমুনা নাম ধারণ করে। বাংলাদেশে প্রবেশের পর কুড়িগ্রাম জেলা থেকে শুরু করে মাদারীপুর ও ভাওয়াল জেলা পর্যন্ত প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়। সুতরাং, ব্রহ্মপুত্র একটি আন্তর্জাতিক নদী যা একাধিক দেশ ও রাজ্যের ভূমিকে স্পর্শ করে চলে।

ব্রহ্মপুত্র নদ এর উৎপত্তি কোথায়?

ব্রহ্মপুত্র নদীর উৎপত্তি চীনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল তিব্বতের শিমায়াং-দাং হিমবাহে, যার স্থানাঙ্ক 31°30′ উত্তর এবং 82°0′ পূর্ব। এই হিমবাহটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় 5,359 মিটার (17,582 ফুট) উঁচু। ব্রহ্মপুত্রের দৈর্ঘ্য প্রায় 2,850 কিলোমিটার (1,771 মাইল) এবং এর অববাহিকা অঞ্চলের আয়তন 938,400 বর্গ কিলোমিটার (362,700 বর্গ মাইল)। যাত্রাপথে ব্রহ্মপুত্র নদী একাধিক উপনদী গ্রহণ করে, যার মধ্যে তিব্বতে গ্যালমো কু, ইয়ারলুং স앙পো ও ন্যাং চু, ভারতে দিবাং, লৌহিত, সুবানসিরি ও ধনশিরি এবং বাংলাদেশে তিস্তা, ধলা, দুধকুমার ও যমুনা (ব্রহ্মপুত্রের প্রধান ধারা বাংলাদেশে প্রবেশের পর) উল্লেখযোগ্য।

ব্রহ্মপুত্র নদের পূর্ব নাম কি?

ব্রহ্মপুত্র নদের পূর্ব নাম লৌহিত্য।

ব্রহ্মপুত্র নদ তিব্বতে কি নামে পরিচিত?

তিব্বতে ব্রহ্মপুত্র নদী ইয়ারলুং সাংপো নামে পরিচিত।

ব্রহ্মপুত্র নদীতে অসংখ্য দ্বীপ বা চড়ার সৃষ্টি হওয়ার পেছনে প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট উভয় কারণই দায়ী। এই দ্বীপ বা চড়াগুলো নদীর জীববৈচিত্র্য বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

Share via:

মন্তব্য করুন