চিত্রসহ হিমালয় পর্বতমালা সৃষ্টির কারণ আলোচনা করো।

আজকের আর্টিকেলে, আমরা দশম শ্রেণীর মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্নের উপর আলোকপাত করবো। এই প্রশ্নটি ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ অধ্যায়ের ভারতের ভূপ্রকৃতি বিভাগ থেকে নেওয়া হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি যে এই আর্টিকেলটি আপনার পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য অত্যন্ত সহায়ক হবে। আমরা বিভিন্ন চিত্রের সাহায্যে প্রশ্নটি স্পষ্ট করে তুলে ধরবো এবং সহজে বোঝার জন্য উত্তরের ধাপে ধাপে ব্যাখ্যা করবো। এইভাবে, আপনি পরীক্ষার সময় আত্মবিশ্বাসের সাথে প্রশ্নটির উত্তর দিতে পারবেন। এছাড়াও, আর্টিকেলটিতে অতিরিক্ত তথ্য এবং টিপস অন্তর্ভুক্ত করা হবে যা আপনাকে আরও ভালোভাবে প্রস্তুত করতে সাহায্য করবে।

চিত্রসহ হিমালয় পর্বতমালা সৃষ্টির কারণ আলোচনা করো।

হিমালয় পর্বতমালা সৃষ্টির কারণ –

হিমালয় বর্তমালার উৎপত্তি বা সৃষ্টির কারণ দুইভাবে ব্যাখ্যা করা যায় –

  • মহীখাত বা জিওসিনক্লাইন তত্ত্ব অনুসারে এবং
  • পাত-গাঠনিক বা প্লেট টেকটনিক তত্ত্ব অনুসারে।

মহীখাত বা জিওসিনক্লাইন তত্ত্ব অনুসারে –

  • এখন যেখানে হিমালয়ের অবস্থান, প্রায় 6.5-7 কোটি বছর আগে সেখানে একটি অগভীর সাগর বা মহীখাত (geosyncline) ছিল, যার নাম টেথিস সাগর বা টেথিস জিওসিনক্লাইন।
  • টেথিস সাগরের উত্তরে আঙ্গারাল্যান্ড এবং দক্ষিণে গন্ডোয়ানাল্যান্ড নামে দুটি প্রাচীন ভূভাগ অবস্থিত ছিল।
  • এই ভূভাগ দুটিতে প্রবাহিত অসংখ্য নদনদী বাহিত পলি দ্বারা টেথিস সাগর ক্রমশ ভরাট হয়ে যায়।
  • টার্শিয়ারি যুগে ভূ-আন্দোলনের ফলে ওই ভূভাগ দুটি পরস্পরের কাছাকাছি আসতে থাকলে টেথিস সাগরে সঞ্চিত প্রস্তরীভূত পাললিক শিলাস্তরে প্রচণ্ড পার্শ্বচাপ পড়ে। এর ফলে ওই শিলাস্তরে ভাঁজের সৃষ্টি হয় ও তা ধীরে ধীরে ওপরে উঠে পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতমালা হিমালয়ের সৃষ্টি হয়েছে।
মহীখাত তত্ব অনুসারে হিমালয় পর্বতের উৎপত্তি

পাত-গাঠনিক বা প্লেট টেকটনিক তত্ত্ব অনুসারে –

  • পর্বত গঠন সম্পর্কিত সর্বাধুনিক এই তত্ত্ব অনুসারে ভূত্বক কতকগুলি চলমান পাত বা প্লেটের সমন্বয়ে (7টি প্রধান ও 20টি অপ্রধান) গঠিত। এগুলির মধ্যে ভারতীয় পাত এবং ইউরেশীয় পাতের সংঘর্ষের ফলেই হিমালয় পর্বতমালার সৃষ্টি হয়েছে।
  • পরস্পরের দিকে অগ্রসরমান এই দুটি পাতের মধ্যে ভারতীয় পাত বেশি গতিশীল হওয়ায় ধীরগামী ইউরেশীয় পাতের সঙ্গে এর প্রবল সংঘর্ষ হয় এবং এই সংঘর্ষে অপেক্ষাকৃত ভারী ভারতীয় পাতটি ভূগর্ভে প্রবেশ করতে থাকে। এর ফলে উভয় পাতের মধ্যবর্তী টেথিস মহীখাতে আগে থেকে সঞ্চিত স্তরীভূত পলিরাশিতে প্রবল চাপের ফলে ভাঁজের সৃষ্টি হয়ে হিমালয় পর্বতের উত্থান ঘটে। অন্যদিকে, ইউরেশীয় পাতের সম্মুখভাগ তিব্বত মালভূমি হিসেবে উঁচু হয়ে অবস্থান করে।
  • যেহেতু ভারতীয় পাতটি এখনও প্রতি বছর প্রায় 5.4 সেমি হারে উত্তরদিকে এগিয়ে চলেছে, তাই হিমালয় অঞ্চলে পাতজনিত সংঘর্ষ প্রক্রিয়াও এখনও কার্যকরী আছে এবং এর ফলে এখনও হিমালয়ের উত্থান ঘটে চলেছে।
পাতসংস্থান তত্ত্ব অনুসারে হিমালয় পর্বতের উৎপত্তি

আজকের আর্টিকলে, আমরা চিত্র সহ একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন বিশ্লেষণ করেছি যা দশম শ্রেণীর ভূগোল পরীক্ষার জন্য প্রাসঙ্গিক। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ”-এর “ভারতের ভূপ্রকৃতি” বিভাগ থেকে নেওয়া হয়েছে। চিত্র ব্যবহারের মাধ্যমে, আমরা আশা করি আপনি এই প্রশ্নের উত্তর আরও সহজে এবং আত্মবিশ্বাসের সাথে লিখতে সক্ষম হবেন।

Share via:

মন্তব্য করুন