মাধ্যমিক ভূগোল – বারিমন্ডল – সমুদ্রস্রোত – সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন

Gopi

আজকের আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের তৃতীয় অধ্যায়, বারিমণ্ডলের সমুদ্রস্রোত বিভাগের কিছু সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলি মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য বা আপনি যদি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নেন তাহলে আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রশ্নগুলি মাধ্যমিক পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হবে।

Table of Contents

মাধ্যমিক ভূগোল – বারিমন্ডল – সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন

মাধ্যমিক ভূগোল - বারিমন্ডল - সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন

পৃথিবীতে কয়টি ও কী কী মহাসাগর আছে?

পৃথিবীতে পাঁচটি মহাসাগর আছে—1. প্রশান্ত মহাসাগর, 2. আটলান্টিক মহাসাগর, 3. ভারত মহাসাগর, 4. সুমেরু মহাসাগর, এবং 5. কুমেরু মহাসাগর।

শৈবাল সাগর কাকে বলে?

পশ্চিমে উপসাগরীয় স্রোত, উত্তরে উত্তর আটলান্টিক স্রোত, পূর্বে ক্যানারি স্রোত এবং দক্ষিণে উত্তর নিরক্ষীয় স্রোতের মধ্যবর্তী অংশে উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের একটি বিশাল আয়তাকার এলাকা জুড়ে একটি জলাবর্ত বা ঘূর্ণস্রোতের সৃষ্টি হয়েছে। কয়েক হাজার বর্গকিলোমিটার বিস্তৃত এই জলাবর্তের মধ্যাংশ স্রোতবিহীন অর্থাৎ মাঝখানে জলের কোনো দিকেই প্রবাহ থাকে না, ফলে ওই স্রোতবিহীন অঞ্চলে নানারকম আগাছা, শৈবাল ও জলজ উদ্ভিদ জন্মায়। এজন্য ওই অংশের নাম সারগাসো সমুদ্র (Sargasso Sea) বা শৈবাল সাগর।শৈবাল সাগর

উপসাগরীয় স্রোত বলতে কী বোঝ?

আটলান্টিক মহাসাগরে দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোতের উত্তর শাখা (উষ্ণ) এবং উত্তর নিরক্ষীয় স্রোতের (উষ্ণ) মিলিত ধারা যখন আয়ন বায়ুর প্রভাবে পশ্চিমদিকে অগ্রসর হয়ে মেক্সিকো উপসাগরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়, তখন ওই স্রোতটিকেই উপসাগরীয় স্রোত বলা হয়। বৈশিষ্ট্য –
1. এটি উষ্ণ স্রোত।
2. এই স্রোতের রং নীল।
3. এই স্রোতের উষ্ণতা 27° সেলসিয়াস, বিস্তার 65 কিমি, গভীরতা 915 মি এবং গতিবেগ ঘণ্টায় গড়ে 4 কিমি।

সমুদ্রস্রোত কাকে বলে?

সমুদ্রের জলরাশি নিয়মিতভাবে নির্দিষ্ট দিকে একস্থান থেকে অন্যস্থানে প্রবাহিত হয়। সমুদ্রজলের এই প্রবাহকেই বলে সমুদ্রস্রোত। সমুদ্রস্রোত দুপ্রকার—উষ্ণ স্রোত এবং শীতল স্রোত।

হিমপ্রাচীর কী?

উত্তর আমেরিকার পূর্ব উপকূল দিয়ে পাশাপাশি প্রবাহিত উত্তরমুখী উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোতের ঘন নীল জল এবং দক্ষিণমুখী শীতল ল্যাব্রাডর স্রোতের সবুজ জলের মাঝে এক বিভাজন রেখা বহুদূর পর্যন্ত দেখা যায়। এই বিভাজন রেখাকে হিমপ্রাচীর বলা হয়। এর সাথে জলস্তম্ভের উচ্চতার কোনো সম্পর্ক নেই।

মগ্নচড়া কীভাবে সৃষ্টি হয়?

উষ্ণ ও শীতল স্রোতের মিলনস্থলে শীতল স্রোতের সঙ্গে ভেসে আসা হিমশৈল, উষ্ণ স্রোতের সংস্পর্শে গলে যায়। ফলে হিমশৈলের মধ্যে থাকা পাথর, নুড়ি, বালি প্রভৃতি সমুদ্রবক্ষে দীর্ঘকাল ধরে জমতে জমতে উঁচু হয়ে যে নিমগ্ন ভূভাগের সৃষ্টি করে তাকে মগ্নচড়া বলা হয়। যেমন—নিউফাউন্ডল্যান্ড উপকূলের অদূরে গ্র্যান্ড ব্যাংক, ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের অদূরে সমুদ্রবক্ষে ডগার্স ব্যাংক প্রভৃতি বিখ্যাত মগ্নচড়ার উদাহরণ। এই মগ্নচড়াগুলি মৎস্যক্ষেত্র হিসেবে বিখ্যাত।

ল্যাব্রাডর স্রোত কোনটি?

আটলান্টিক মহাসাগরের উত্তরাংশের একটি শীতল স্রোতের নাম ল্যাব্রাডর স্রোত। সুমেরু মহাসাগর থেকে মেরু বায়ুর প্রভাবে যে শীতল স্রোতটি গ্রিনল্যান্ডের পশ্চিম উপকূল ধরে (অর্থাৎ কানাডা ও গ্রিনল্যান্ডের মধ্যভাগ দিয়ে) দক্ষিণদিকে এগিয়ে আসে এবং গ্রিনল্যান্ডের দক্ষিণে এসে ল্যাব্রাডর উপদ্বীপের পূর্ব উপকূল দিয়ে আরও দক্ষিণে প্রবাহিত হয়, তাকেই বলা হয় ল্যাব্রাডর স্রোত।

ব্রাজিল স্রোত কাকে বলে?

আটলান্টিক মহাসাগরের প্রায় মধ্যভাগে দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ুর প্রভাবে পশ্চিমমুখী দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোতের উৎপত্তি হয়। পশ্চিমদিকে যেতে যেতে এই উষ্ণ দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোত ব্রাজিলের সাও রোক (সেন্ট রক) অন্তরীপের কাছে ধাক্কা খেয়ে উত্তর ও দক্ষিণ এই দুটি শাখায় বিভক্ত হয়। এগুলির মধ্যে দক্ষিণের শাখাটির নাম ব্রাজিল স্রোত।

পেরু স্রোত বা হামবোল্ট স্রোত কী?

অবস্থান: প্রশান্ত মহাসাগরের দক্ষিণাংশের একটি উল্লেখযোগ্য শীতল স্রোতের নাম পেরু স্রোত বা হামবোল্ট স্রোত।
সৃষ্টির কারণ: পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে দক্ষিণ মহাসাগর থেকে একটি শীতল স্রোত উৎপন্ন হয়ে পূর্বদিকে প্রবাহিত হয় এবং শেষে দক্ষিণ আমেরিকার পশ্চিম উপকূলে বাধা পেয়ে উত্তরদিকে বেঁকে যায়। স্রোতটি উত্তরদিকে যেতে যেতে চিলি পেরিয়ে পেরুর উপকূল পর্যন্ত পৌঁছে যায়। এরই নাম পেরু স্রোত বা হামবোল্ট স্রোত।

জাপান স্রোত বা কুরোশিয়ো স্রোত কাকে বলে?

অবস্থান: এটি প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তরাংশে জাপানের পূর্ব দিকে উত্তরমুখী একটি গুরুত্বপূর্ণ উষ্ণ স্রোত।
সৃষ্টির কারণ: দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ুর প্রভাবে প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যভাগে পশ্চিমগামী উত্তর নিরক্ষীয় স্রোত সৃষ্টি হয়। স্রোতটি উত্তরাভিমুখী হয়ে পূর্ব জাপানের উপকূল বরাবর প্রবাহিত হয়। এই স্রোতটিরই নাম জাপান স্রোত বা কুরোশিয়ো স্রোত।।

বেঙ্গুয়েলা স্রোত কী?

দক্ষিণ মহাসাগর থেকে যেসব শীতল স্রোত আটলান্টিকে প্রবাহিত হয় সেগুলির মধ্যে বেঙ্গুয়েলা স্রোত অন্যতম। দক্ষিণ মহাসাগরের শীতল কুমেরু স্রোত আটলান্টিক মহাসাগরের দক্ষিণ প্রান্ত দিয়ে পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে পূর্বদিকে প্রবাহিত হয় এবং শেষে আফ্রিকার দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে বাধা পেয়ে উত্তরদিকে বেঁকে যায়। আফ্রিকার পশ্চিম উপকূল ধরে প্রবাহিত এই শীতল স্রোতটিরই নাম বেঙ্গুয়েলা স্রোত।

মৌসুমি স্রোত কী?

অবস্থান: ভারত মহাসাগরের উত্তরাংশে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে গ্রীষ্মকালে ও শীতকালে দুই বিপরীতমুখী মৌসুমি স্রোতের উৎপত্তি হয়।
শ্রেণিবিভাগ –
1. গ্রীষ্মকালে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে এই অংশে সমুদ্রস্রোত দক্ষিণাবর্তে প্রবাহিত হয় অর্থাৎ আফ্রিকার পূর্ব উপকূল ধরে আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগরের মধ্য দিয়ে একটি সমুদ্রস্রোত সুমাত্রা দ্বীপ পর্যন্ত প্রবাহিত হয়।
2. শীতকালে এই স্রোতটি উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ঠিক বিপরীত দিকে অর্থাৎ বামাবর্তে প্রবাহিত হয়। যেহেতু ভারত মহাসাগরের উত্তরাংশের সমুদ্রস্রোত এইভাবে মৌসুমি বায়ুর দিক পরিবর্তন অনুসারে নিয়ন্ত্রিত হয় তাই একে মৌসুমি স্রোত বলা হয়।মৌসুমি বায়ুর দিক পরিবর্তন অনুসারে নিয়ন্ত্রিত হয় তাই একে মৌসুমি স্রোত বলা হয়।

জায়র বা চক্রগতি কী?

ধারণা: প্রতিটি মহাসাগরেই সমুদ্রস্রোতগুলির গতিপথ অনুসরণ করলে একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। বৈশিষ্ট্যটি হল জায়র (gyre) বা চক্রগতি অর্থাৎ সমুদ্রের জলরাশির চক্রাকার গতি।
প্রকারভেদ: এই চক্রগতি দুই প্রকার—
1. উপক্রান্তীয় চক্রগতি (subtropical gyre)
2. উপমেরুদেশীয় চক্রগতি (subpolar gyre)।
উভয় গোলার্ধে 25° থেকে 30° সমাক্ষরেখার মধ্যে আয়ন বায়ুপ্রবাহ ও পশ্চিমা বায়ুপ্রবাহের দ্বারা সমুদ্রের জলরাশি উপক্রান্তীয় উচ্চ বায়ুচাপক্ষেত্রের চারদিকে চক্রাকারে ঘোরার ফলে উপক্রান্তীয় চক্রগতি সৃষ্টি হয়।
জায়র

হিমশৈল বলতে কী বোঝ?

ধারণা: সমুদ্রের জলে ভাসমান বিশাল বা ক্ষুদ্রাকৃতির বরফের স্তূপকে বলা হয় হিমশৈল। সমুদ্রে ভাসমান হিমশৈলের মোট আয়তনের মাত্র 1/9 ভাগ অংশ জলের ওপরে থাকে।
প্রভাব: এইরকম একটি প্রকাণ্ড হিমশৈলের সঙ্গে ধাক্কা লেগেই বিখ্যাত জাহাজ টাইটানিক তার প্রথম যাত্রাতেই গভীর সমুদ্রে ডুবে যায়।হিমশৈল

অন্তঃস্রোত কী?

মেরু প্রদেশের শীতল এবং ভারী সমুদ্রজল সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে উষ্ণমণ্ডলের দিকে প্রবাহিত হয়। একে অন্তঃস্রোত বলে।

বহিঃস্রোত কী?

উষ্ণমণ্ডল থেকে প্রবাহিত স্রোত উষ্ণ এবং হালকা বলে জলের উপরিপৃষ্ঠ দিয়ে শীতল মেরু অঞ্চলের দিকে এগিয়ে যায়। এই স্রোতের নাম বহিঃস্রোত।

জাপান উপকূলে প্রচুর মাছ পাওয়া যায় কেন?

জাপানের পূর্ব উপকূলে শীতল সুমেরু স্রোত ও উষ্ণ কুরোশিও স্রোতের মিলন হয়। শীতল স্রোতের বয়ে আনা হিমশৈল এখানে গলে গিয়ে মগ্নচড়া সৃষ্টি করে। ওই মগ্নচড়া সন্নিহিত অংশে প্রচুর পরিমাণে প্ল্যাঙ্কটন জন্মায়, যা মাছের প্রধান খাদ্য। একারণে জাপান উপকূলে প্রচুর মাছ পাওয়া যায়।

জোয়ারভাটা কাকে বলে?

সাগর-মহাসাগরের জল নিয়মিতভাবে নির্দিষ্ট সময় অন্তর এক জায়গায় স্ফীত হয় বা ফুলে ওঠে এবং অন্য জায়গায় অবনমিত হয় বা নেমে যায়। জলের এই ফুলে ওঠা বা স্ফীতিকে বলা হয় জোয়ার এবং নেমে যাওয়া বা অবনমনকে বলা হয় ভাটা। প্রধানত চন্দ্রের আকর্ষণ এবং কিছুটা সূর্যের আকর্ষণ ও পৃথিবীর আবর্তনজনিত কেন্দ্রাতিগ বলের প্রভাবে সাগর-মহাসাগরের জলরাশিতে এই জোয়ারভাটার সৃষ্টি হয়।

ষাঁড়াষাঁড়ির বান কাকে বলে?

কারণ: বর্ষাকালে ভরা কোটালের দিন ভাগীরথী-হুগলি নদীর গতিপথের বিপরীত দিক থেকে ভীষণ গর্জন করে যে প্রবল বান ভাসে তাকে ষাঁড়াষাঁড়ির বান বলে।
নামকরণ: এই বান খুব উঁচু হয়, কখনো-কখনো 6-8 মিটার পর্যন্ত এবং দুটি প্রাপ্ত বয়স্ক ষাঁড়ের মধ্যে লড়াইয়ের সময় যে ভীষণ গর্জন শোনা যায়, এই বান আসার সময় অনেকটা সেই রকম আওয়াজ পাওয়া যায় বলেই একে ষাঁড়াষাঁড়ির বান বলা হয়।

জোয়ারভাটার প্রধান দুটি কারণ নির্দেশ করো।

জোয়ারভাটার প্রধান তথা প্রথম কারণটি হল:
1. চাঁদ ও সূর্যের আকর্ষণ
2. পৃথিবীর আবর্তনজনিত কেন্দ্রাতিগ বল।

প্রতিযোগ ও সংযোগ অবস্থান বলতে কী বোঝ?

প্রতিযোগ অবস্থান: পূর্ণিমার দিন সূর্য, পৃথিবী ও চাঁদের কেন্দ্রবিন্দু যখন একই সরলরেখায় অবস্থান করে তখন তাকে প্রতিযোগ অবস্থান বলা হয়।
সংযোগ অবস্থান: অমাবস্যার দিন সূর্য, চাঁদ ও পৃথিবীর কেন্দ্রবিন্দু যখন একই সরলরেখায় অবস্থান করে তখন তাকে সংযোগ অবস্থান বলা হয়।

সিজিগি (Syzygy) সম্বন্ধে যা জান লেখো।

পৃথিবী, চাঁদ ও সূর্যের মধ্যবিন্দু যখন একটি সরলরেখায় অবস্থান করে তখন সেই অবস্থানকে সিজিগি বলা হয়। এই অবস্থান দুই ধরনের হয়—
1. চাঁদ ও সূর্য পৃথিবীর একই দিকে থাকলে তাকে সংযোগ অবস্থান বলা হয়। এই দিন অমাবস্যা হয়।
2. চাঁদ ও সূর্যের মাঝখানে পৃথিবী থাকলে তাকে প্রতিযোগ অবস্থান বলা হয়। এই দিন পূর্ণিমা হয়।
ফলাফল: সিজিগি অবস্থানে জোয়ার প্রবল হয় অর্থাৎ অমাবস্যা ও পূর্ণিমা এই দুই দিনে তেজ কোটাল বা ভরা কোটাল হয়।

চান্দ্র জোয়ার কাকে বলে?

পৃথিবীর আবর্তনের সময় পৃথিবীপৃষ্ঠের যে অংশ চাঁদের সামনে আসে, তখন সেখানে চাঁদের আকর্ষণ সবচেয়ে বেশি কার্যকরী হয়। তাই পৃথিবীর জলরাশি সবচেয়ে বেশি ফুলে উঠে জোয়ারের সৃষ্টি করে। একে চান্দ্র জোয়ার বলে।

সৌর জোয়ার কী?

সূর্যের আকর্ষণে সমুদ্রে যে জলস্ফীতি ঘটে, তাকে সৌর জোয়ার বলে। পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব বেশি হওয়ার জন্য পৃথিবীর ওপর সূর্যের আকর্ষণ চাঁদের তুলনায় কম। তাই সৌর জোয়ারে প্রাবল্যও কম।

ভরা কোটাল কাকে বলে?

পূর্ণিমা ও অমাবস্যা তিথিতে সূর্য, চাঁদ ও পৃথিবী একই সরলরেখায় থাকে। একে সিজিগি অবস্থান বলে। এই অবস্থানে যে জোয়ার হয় তাকে ভরা কোটাল বলে। ভরা কোটালে জল অত্যন্ত ফুলে ওঠে।

মরা কোটাল কাকে বলে?

কৃষ্ণ ও শুক্ল পক্ষের অষ্টমী তিথিতে পৃথিবীর সাপেক্ষে সূর্য ও চাঁদ পরস্পর সমকোণে অবস্থান করে। এরকম অবস্থায় পৃথিবীর যে অংশ চাঁদের সামনে আসে সেখানে এবং যে অংশ সূর্যের সামনে আসে সেখানে অর্থাৎ উভয় স্থানেই জোয়ার হয়। তবে চাঁদ ও সূর্য পরস্পরের সমকোণে অবস্থান করে বলে কোনো জোয়ারই তেমন প্রবল হয় না। তাই একে মরা কোটাল বলে।

ভরা কোটালকে সর্বোচ্চ জোয়ার বলা হয় কেন?

অমাবস্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে সূর্য, চাঁদ ও পৃথিবী একই সরলরেখায় থাকে। তবে অমাবস্যা তিথিতে চাঁদ পৃথিবী এবং সূর্যের মাঝে অবস্থান করে। ফলে উভয় দিনে জোয়ারের মাত্রা অন্য যে-কোনো দিনের তুলনায় বেশি হয়। তাই ভরা কোটালকে সর্বোচ্চ জোয়ার বলে।

জোয়ারভাটার টান কী?

পৃথিবীর আবর্তনের জন্যই জোয়ারভাটার টান তৈরি হয়। যেহেতু পৃথিবী নিজ মেরুদণ্ডের ওপর পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে ঘুরছে, তাই জোয়ারের টান পূর্বদিক থেকে পশ্চিমদিকে হয় এবং ভাটার টান পশ্চিম থেকে পূর্বে হয়। একেই জোয়ারভাটার টান বলে।

নিউফাউন্ডল্যান্ডের কাছে প্রায়শই ঘনকুয়াশা ও ঝড়ঝঞ্ঝার সৃষ্টি হয় কেন?

নিউফাউন্ডল্যান্ডের কাছে ঘনকুয়াশা ও ঝড়ঝঞ্ঝা: নিউফাউন্ডল্যান্ড দ্বীপটি কানাডার পূর্ব উপকূলের কাছেই অবস্থিত। এই দ্বীপটির কাছ দিয়েই উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোত এবং শীতল ল্যাব্রাডর স্রোত পাশাপাশি বিপরীত দিকে প্রবাহিত হয়েছে। এর ফলে উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোতের ওপর সৃষ্ট প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প শীতল ল্যাব্রাডর স্রোতের ওপর দিয়ে প্রবাহিত শীতল ও শুষ্ক বায়ুর সংস্পর্শে এসে সহজেই ঘনীভূত হয় এবং সংলগ্ন অঞ্চলে ঘনকুয়াশার সৃষ্টি করে। এ ছাড়া এই দুই উষ্ণ ও শীতল সমুদ্রস্রোতের ওপর সৃষ্ট দুই বিপরীতধর্মী বায়ু পরস্পর বিপরীতমুখী হওয়ায় এদের মধ্যে সংঘর্ষ হয় এবং তার ফলে এখানে নাতিশীতোয় ঘূর্ণবাতের উৎপত্তি ঘটে, যার পরিণামে নিউফাউন্ডল্যান্ডসহ সংলগ্ন অঞ্চলে প্রায়শই ঝড়ঝঞ্ঝাও হয়।

আটলান্টিক মহাসাগরের দুটি উষ্ণ স্রোতের নাম করো।

আটলান্টিক মহাসাগরের দুটি উষ্ণ স্রোত:
1. উপসাগরীয় স্রোত
2. ব্রাজিল স্রোত।

শৈবাল সাগর প্রশান্ত মহাসাগরের কোথায় দেখা যায়?

প্রশান্ত মহাসাগরের শৈবাল সাগর: উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরের প্রায় মধ্যভাগে (নিরক্ষরেখার উত্তরে) কর্কটক্রান্তি রেখার উভয় পাশে এই শৈবাল সাগরটি গড়ে উঠেছে।

প্রশান্ত মহাসাগরের শৈবাল সাগর কোন কোন স্রোত দ্বারা আবদ্ধ?

প্রশান্ত মহাসাগরের শৈবাল সাগর বেষ্টনকারী সমুদ্রস্রোত: উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরের প্রায় মধ্যভাগে উত্তর নিরক্ষীয় স্রোত, কুরোশিয়ো বা জাপান স্রোত, উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরীয় স্রোত এবং ক্যালিফোর্নিয়া স্রোতের আবর্তের মাঝখানে এই শৈবাল সাগরটি অবস্থিত।

আরও পড়ুন – মাধ্যমিক ভূগোল – বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ – পার্থক্য উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন

আজকের আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের তৃতীয় অধ্যায় বারিমণ্ডলের সমুদ্রস্রোত বিভাগের কিছু সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য বা আপনি যদি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নেন, তাহলে আপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রশ্নগুলি মাধ্যমিক পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি, এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। যদি আপনার কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকে, তাহলে আমাকে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমি উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। তাছাড়া, আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জন, যার এটি প্রয়োজন, তার সাথে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।

JOIN US ON WHATSAPP

JOIN US ON TELEGRAM

Please Share This Article

About The Author

Related Posts

মাধ্যমিক - ভূগোল - বারিমন্ডল - জোয়ার ভাটা - রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

মাধ্যমিক – ভূগোল – বারিমন্ডল – জোয়ার ভাটা – রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

Class 10 English – The Passing Away of Bapu – About Author and Story

Class 10 English – The Passing Away of Bapu – About Author and Story

The Passing Away of Bapu

Class 10 English – The Passing Away of Bapu – Question and Answer

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

Trending Now

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Class 9 – English – His First Flight – Question and Answer

Class 9 – English – A Shipwrecked Sailor – Question and Answer