আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলে মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞানের পঞ্চম অধ্যায় “পরিবেশ, তার সম্পদ এবং তাদের সংরক্ষণ” অধ্যায়ের ‘পরিবেশ এবং মানব জনসমষ্টি‘ বিভাগের রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য বা আপনি যদি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নেন, তাহলে আপনার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রশ্নগুলি মাধ্যমিক পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি যে এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হবে।

ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার সমস্যাগুলি উল্লেখ করো।
অথবা, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার ফলে একটি অঞ্চলে কী কী পরিবেশগত সমস্যা ঘটতে পারে?
ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার সমস্যা –
উন্নয়নশীল দেশগুলিতে জনসংখ্যার ক্রমবৃদ্ধির ফলে অর্থনৈতিক পরিকাঠামো ভেঙে পড়ে এবং বিভিন্নপ্রকার সমস্যার সৃষ্টি হয়। এই অংশে কয়েকটি সমস্যা সংক্ষেপে আলোচনা করা হল।
প্রাকৃতিক সম্পদের অতিব্যবহার এবং তার হ্রাস –
পৃথিবীতে প্রাকৃতিক সম্পদের পরিমাণ অফুরন্ত নয়। মানব জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য বর্তমানে প্রাকৃতিক সম্পদের সংকট দেখা দিয়েছে। অতিব্যবহারের ফলে পৃথিবীতে ব্যক্তিপিছু প্রাকৃতিক সম্পদের মাত্রা হ্রাস পাচ্ছে।
অরণ্য ধ্বংস এবং বাস্তুতন্ত্রের ক্ষয় –
জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শিল্পস্থাপন, বাসস্থান প্রতিষ্ঠা, বনজ দ্রব্য (যেমন – কাঠ, মধু) আহরণ, কৃষিজমির বিস্তার, গবাদিপশুর চারণভূমি বৃদ্ধি প্রভৃতি নানা কারণে বর্তমানে অরণ্য ধ্বংসের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্রমবর্ধমান মানবসংখ্যা ও তাদের নির্বিচার ক্রিয়াকলাপের ফলে মরুভূমির বিস্তার ও বাস্তুতন্ত্রে অন্যান্য উপাদানের ক্ষয়, যেমন – ভূমিক্ষয়, জীববৈচিত্র্যের বিলুপ্তি প্রভৃতি দেখা দিচ্ছে। এর ফলে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন – বন্যা, অনাবৃষ্টি, ঝড় প্রভৃতি ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

কৃষিজমির হ্রাস –
জনসংখ্যার বৃদ্ধির ফলে বাসস্থানের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় মূলত শহরাঞ্চলগুলির প্রান্তভাগে অবস্থিত কৃষিজমি বাসভূমিতে পরিবর্তিত হচ্ছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নশীল স্থানে কৃষিজমি হ্রাসের হার সর্বাধিক। ফলে খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
মিষ্টি জলের অভাব –
পৃথিবীর সমগ্র জলের 1% হল পানযোগ্য ও ব্যবহারযোগ্য। জনসংখ্যার ক্রমবৃদ্ধির ফলে কৃষি, শিল্প এবং দৈনন্দিন বিভিন্ন প্রয়োজনে এই জলের ব্যবহার অত্যধিক বৃদ্ধি পাওয়ায় ভৌমজলস্তর ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে।
বায়ুমন্ডলের পরিবর্তন এবং বিশ্ব উষ্ণায়ন –
শিল্প, কৃষি ও মানব উন্নয়নের অন্যান্য বিভিন্ন কার্যকলাপে সৃষ্ট গ্রিনহাউস গ্যাসগুলি বায়ুমণ্ডলের ভৌত ও রাসায়নিক অবস্থার পরিবর্তন করে। তাপশক্তি ও পারমাণবিক শক্তি উৎপাদনকেন্দ্র বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা বৃদ্ধি করে। ফলস্বরূপ পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বেড়ে বিশ্ব উষ্ণায়ন ঘটছে।
বায়ু, মাটি এবং জলদূষণ –
ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাহিদা মেটাতে অতিরিক্ত কলকারখানা স্থাপন, কৃষিজ দ্রব্য উৎপাদন, বনজ সম্পদ আহরণ, ভূগর্ভস্থ জল নিষ্কাশন, কৃষিজমিতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের অত্যাধিক ব্যবহারের ফলে ক্রমাগত বায়ু, মাটি, জল ইত্যাদি পরিবেশের উপাদানগুলি দূষিত হচ্ছে।
জলাভূমি ধ্বংস –
অধিক জনসংখ্যার প্রভাবে বাসস্থান নির্মাণ, শিল্পস্থাপন, নগরায়ণ, কৃষিজমির সম্প্রসারণের ঘটনায় সাম্প্রতিক কালে পুকুর, হ্রদ ধ্বংস করা হচ্ছে। ফলস্বরূপ জীববৈচিত্র্য হ্রাস পাচ্ছে, স্থানীয় আবহাওয়া পরিবর্তিত হচ্ছে ও পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।
খাদ্যসংকট –
অত্যধিক হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি হল বর্তমান পৃথিবীর অন্যতম প্রধান সমস্যা। এই বিপুল সংখ্যক মানুষের খাদ্য উৎপাদন ও তার সঠিক বণ্টন করা কঠিন কাজ। এর পরিণতি হিসেবে উন্নয়নশীল দেশগুলিতে বহু মানুষ অপুষ্টির শিকার হচ্ছে এবং খাদ্যাভাবে অসংখ্য মানুষ, বিশেষত শিশুর মৃত্যু ঘটছে।

সমাজের ওপর প্রভাব –
সমাজে দারিদ্র্য, বেকারত্ব, অপরাধ-প্রবণতা প্রভৃতিও জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সমানুপাতিক হারে বাড়তে থাকে।
জনসংখ্যা বৃদ্ধি কীভাবে জনস্বাস্থ্য বিঘ্নিত করে, তা সংক্ষেপে লেখো।
জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও জনস্বাস্থ্য –
জনসংখ্যা বৃদ্ধি যেভাবে জনস্বাস্থ্যকে বিঘ্নিত করে, তা এখানে উল্লেখ করা হল।
খাদ্যাভাব ও অপুষ্টি –
জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে কৃষিজমির অভাবে খাদ্য উৎপাদন হ্রাস পায় এবং খাদ্যের অভাব দেখা যায়। খাদ্যাভাব এবং অপুষ্টি জনস্বাস্থ্যকে ব্যাহত করে।
শিল্পঘটিত দূষণ ও জনস্বাস্থ্য –
বৃহৎ জনসংখ্যার বিভিন্ন চাহিদা মেটাতে প্রচুর সংখ্যায় শিল্পস্থাপন করা হচ্ছে। এইসব শিল্প থেকে নির্গত ধোঁয়া, বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ, ধাতব বর্জ্য পদার্থ ক্রমেই বায়ু, জল ও মাটিকে দূষিত করে তোলে। এর ফলে জনস্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে।
আবর্জনাঘটিত রোগের প্রকোপ –
জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেলে, তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আবর্জনার পরিমাণ বাড়ে। আবর্জনা সময়মতো অপসারণ করা না হলে, সেখানে ইঁদুর, মাছি, মশার উপদ্রব বাড়ে। সেখান থেকে কলেরা, বসন্ত, প্লেগ, ম্যালেরিয়া প্রভৃতি রোগের প্রকোপ বেড়ে জনস্বাস্থ্য বিঘ্নিত হয়।
চিকিৎসার সুযোগ সুবিধা হ্রাস –
জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য শয্যা এবং ওষুধ পাওয়া দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। অনেক সময় শয্যার অভাবে মেঝেতে শুইয়ে রোগীর চিকিৎসা করতে হয়। ফলে চিকিৎসার অভাবে অনেকসময়ে রোগীর মৃত্যুও ঘটে।
ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার একটি সমস্যা হল বায়ুমণ্ডলের পরিবর্তন এবং বিশ্ব উষ্ণায়ন। – পরিবেশে এর কী কী প্রভাব পড়তে পারে তার সারসংক্ষেপ করো। শীতকালে শিশু ও বয়স্কদের নানা শ্বাসজনিত সমস্যা দেখা যায় এরূপ দুটি সমস্যার নাম লেখো এবং তাদের একটি করে উপসর্গ বিবৃত করো।
পরিবেশের ওপর বায়ুমণ্ডলের পরিবর্তন ও বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব –
জনসংখ্যার ক্রমবৃদ্ধির ফলে সৃষ্ট একটি সমস্যা হল বায়ুমণ্ডলের পরিবর্তন ও বিশ্ব উষ্ণায়ন। পরিবেশের ওপর এর প্রভাবগুলি হল –
- পরিবেশে গ্রীনহাউস গ্যাসগুলির মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় বায়ুমণ্ডলের উপাদানগুলির পরিমাণ পরিবর্তিত হচ্ছে। এই গ্যাসগুলি পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে, ফলস্বরূপ মেরু অঞ্চলের বরফ দ্রুত গলে যাচ্ছে। মেরু ভালুক, মেরু খ্যাঁকশিয়াল প্রভৃতি প্রাণীর বাসস্থান হারিয়ে যাওয়ায় তাদের অস্তিত্ব সংকট দেখা দিচ্ছে।
- বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে সমুদ্রের জলতলের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যার ফলে সমুদ্র পার্শ্ববর্তী নীচু স্থলভাগ সমুদ্রের গ্রাসে চলে যাচ্ছে।
- বায়ুমণ্ডলের পরিবর্তন ও বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে পৃথিবীব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তিত হচ্ছে।
- বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে বহু জীব তথা সমগ্র বাস্তুতন্ত্র বিনষ্ট হচ্ছে, জীববৈচিত্র্যও হ্রাস পাচ্ছে। যেমন – অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ্ ক্রমশ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে চলেছে।
- জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে কৃষিকাজ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং খাদ্যসংকট দেখা দিচ্ছে।
- পরিবর্তিত তাপমাত্রায় নানা রোগজীবাণু অধিক সক্রিয় হচ্ছে এবং বিভিন্ন রোগ (যেমন – মশাবাহিত রোগ) -এর প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
শীতকালে শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে পরিলক্ষিত শ্বাসজনিত সমস্যা ও উপসর্গ –
সমস্যা | উপসর্গ |
অ্যালার্জি-জনিত অ্যাজমা | ব্রংকিওলের সংকোচন ও ফলস্বরূপ প্রবল শ্বাসকষ্ট। |
ব্রংকাইটিস | প্রধানত ভোরের দিকে প্রবল কাশি ও কাশির সাথে শ্লেষ্মা নির্গমন। |
অ্যাজমা বা হাঁপানি কাকে বলে? অ্যাজমার পরিবেশগত কারণ সংক্ষেপে আলোচনা করো।
অ্যাজমা বা হাঁপানি –
প্রদাহজনিত কারণে মানুষের শ্বাসনালী স্ফীত হয়ে বায়ু চলাচলের পথ রুদ্ধ হওয়া ও শ্বাসকষ্ট-সহ অন্যান্য সমস্যার সৃষ্টি হওয়াকে অ্যাজমা বা হাঁপানি বলে। অ্যাজমা বা হাঁপানি হল একটি দীর্ঘকালীন পরিবেশঘটিত শ্বাসতন্ত্রীয় রোগ।
অ্যাজমার পরিবেশগত কারণ –
অ্যাজমা অ্যালার্জিক এবং নন্-অ্যালার্জিক দুই প্রকারের হয়। এখানে দু-প্রকার অ্যাজমার পরিবেশগত কারণ আলোচনা করা হল।
অ্যালার্জিক অ্যাজমা –
এইপ্রকার অ্যাজমার জন্য দায়ী মূলত বায়ুদূষণ। পরিবেশের বিভিন্ন পদার্থ, যেমন – ধূলিকণা, পরাগরেণু ইত্যাদি অ্যালার্জেন তথা অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী পদার্থ দেহের ভিতরে প্রবেশ করলে অ্যালার্জি ঘটে। অ্যালার্জি ঘটলে রক্তে ইওসিনোফিল কণিকার সংখ্যা বেড়ে যায়। ইওসিনোফিল ও মাস্ট কোশ থেকে হিস্টামিন, লিউকোট্রাইন নামক রাসায়নিক পদার্থ নিঃসৃত হয়। এগুলি ব্রংকিওলের সংকোচন ঘটিয়ে অ্যালার্জিক অ্যাজমা সৃষ্টি করে। এই জাতীয় অ্যাজমা শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।
নন-অ্যালার্জিক অ্যাজমা –
এই জাতীয় অ্যাজমার জন্য দায়ী হল অত্যধিক ধূমপান ও ভাইরাস সংক্রমণ। অনেক সময় নাকের ভিতর পলিপ সৃষ্টি হলেও এই জাতীয় হাঁপানি বা অ্যাজমা ঘটে। এক্ষেত্রে ক্লোমশাখার প্রাচীরগাত্রে প্রদাহ সৃষ্টি হয়। এর ফলে ক্লোমশাখার অন্তঃস্থ গহ্বরের ব্যাস কমে যায় ও নন-অ্যালার্জিক অ্যাজমা ঘটে।
ব্রংকাইটিস কী? ব্রংকাইটিসের পরিবেশগত কারণ লেখো।
ব্রংকাইটিস –
ক্লোমশাখা বা ব্রংকাসের প্রদাহকে ব্রংকাইটিস বলা হয়। এটি হলে ফুসফুসের ব্রংকাস ও ব্রংকিওলগুলির শ্লেষ্মাপর্দায় প্রদাহ ঘটে। এটি প্রধানত দু-প্রকারের হয়। যথা –
- তীব্র ব্রংকাইটিস।
- দীর্ঘকালীন ব্রংকাইটিস।
ব্রংকাইটিসের পরিবেশগত কারণ –
ব্রংকাইটিসের জন্য দায়ী হল কিছু রাসায়নিক দূষক ও ধোঁয়া। এইগুলি সম্পর্কে আলোচনা করা হল।
রাসায়নিক দূষক –
বিভিন্ন রাসায়নিক দূষকগুলি (যেমন – অ্যাসবেসটস, সিলিকন ইত্যাদি) পরিবেশ থেকে শ্বাসক্রিয়ার সময় নাক দিয়ে শ্বাসনালীতে প্রবেশ করলে ব্রংকাইটিস ঘটে।
ধোঁয়া –
দীর্ঘকালীন বা ক্রনিক ব্রংকাইটিসের প্রধান কারণ হল ধোঁয়া। ঝালাই কাজের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি এবং দমকলকর্মীদের ক্ষেত্রেও এই রোগের প্রকোপ লক্ষ করা যায়। পরিবেশদূষণকেও এই রোগের জন্য দায়ী করা যায়। কলকারখানার ধোঁয়া, গাড়ির পেট্রোল ও ডিজেলের ধোঁয়াও ব্রংকাইটিসের অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়। এই রোগের ফলে শ্বাসনালীর ক্লোমশাখার শ্লেষ্মাস্তর থেকে অধিক পরিমাণ শ্লেষ্মা বা মিউকাস ক্ষরিত হয়ে প্রদাহ সৃষ্টি করে।

ক্যানসার রোগ সৃষ্টিতে পরিবেশের ভূমিকার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।
অথবা, পরিবেশগত কী কী কারণে মানুষের ক্যানসার হতে পারে?
ক্যানসার রোগ সৃষ্টিতে পরিবেশের ভূমিকা –
ক্যানসার রোগটি জিন ও পরিবেশগত কারণের সমন্বয়ে ঘটে থাকে। ক্যানসার রোগ সৃষ্টিতে পরিবেশের ভূমিকা নীচে আলোচনা করা হল।
কীটনাশক ও আগাছানাশক –
কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহৃত বিভিন্নপ্রকার রাসায়নিক, জৈব-অভঙ্গুর কীটনাশক এবং আগাছানাশক খুব সহজেই মানবদেহে অতিরিক্ত মাত্রায় প্রবেশ করে ক্যানসার সৃষ্টি করে।
পরিবেশগত অধিবিষ –
বৈজ্ঞানিক গবেষণায় জানা গেছে পরিবেশগত অধিবিষের সঙ্গে ক্যানসারের যোগসূত্র বর্তমান। কারসিনোজেন বা কারসিনোজেনিক পদার্থগুলি (যেমন – নিকোটিন, টার, কার্বন মনোক্সাইড, বেঞ্জোপাইরিন, হাইড্রোজেন সায়ানাইড প্রভৃতি) স্বাভাবিক কোশের DNA -এর স্থায়ী পরিবর্তন ঘটায়। যার ফলে কোশে উপস্থিত জিন অঙ্কোজিনে রূপান্তরিত হয়ে ক্যানসার সৃষ্টি করে।
তামাক সেবন –
তামাকে নিকোটিন নামক কারসিনোজেন থাকে। দীর্ঘদিন জর্দা, খৈনি ইত্যাদি সেবন করলে তাতে উপস্থিত তামাক তথা নিকোটিন শরীরে প্রবেশ করে দাঁত, মুখ, জিহ্বা ও গলায় ক্যানসার সৃষ্টি করে।
ধূমপান –
যারা নিয়মিত ধূমপান করে তাদের দেহে বেঞ্জোপাইরিন, দগ্ধ টার ইত্যাদি কারসিনোজেনিক পদার্থগুলি খুব সহজে প্রবেশ করে এবং ফুসফুসের ক্যানসার ঘটায়।
তেজস্ক্রিয় পদার্থ –
যে সমস্ত ব্যক্তি তেজস্ক্রিয় পদার্থ নিয়ে নিয়মিত কাজ করে থাকে তাদের শরীরে তেজস্ক্রিয়তাজনিত ক্যানসার বেশি দেখা যায়। খনিতে কর্মরত শ্রমিকরা রেডন নামক একপ্রকার তেজস্ক্রিয় গ্যাসের সংস্পর্শে এলে তাদের ফুসফুসে ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
রাসায়নিক দূষক –
বিভিন্ন রাসায়নিক দূষক, যেমন – অ্যাসবেসটস, ক্রোমিয়াম ইত্যাদির গুঁড়ো থেকেও ফুসফুসের ক্যানসার ঘটে। নির্মাণ কর্মী, ঝালাই -এর কাজে নিয়োজিত কর্মী, স্টিল কারখানার কর্মীদের দেহে খুব সহজেই অ্যাসবেসটস, ক্রোমিয়াম ইত্যাদি দূষক পদার্থ প্রবেশ করে। এর থেকে ফুসফুস ক্যানসারের প্রবণতা বাড়ে।
প্লাস্টিক দ্রব্য –
এ ছাড়া যে সমস্ত কর্মী প্লাস্টিকজাত দ্রব্য উৎপাদনের কারখানায় কাজ করে তাদের মধ্যে যকৃৎ ও মূত্রথলির ক্যানসারের প্রবণতা বেশি হয়।
আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলে মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞানের পঞ্চম অধ্যায় “পরিবেশ, তার সম্পদ এবং তাদের সংরক্ষণ” অধ্যায়ের ‘পরিবেশ এবং মানব জনসমষ্টি‘ বিভাগের রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য বা আপনি যদি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নেন তাহলে আপনার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রশ্নগুলি মাধ্যমিক পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি যে এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা হলে আপনারা আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। তাছাড়া, আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জন যার এটি প্রয়োজন হবে তার সাথে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন