এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান – পদার্থের ভৌত রাসায়নিক ধর্মসমূহ – জৈব রসায়ন – সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

আমরা আমাদের আর্টিকেলে দশম শ্রেণীর ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায়ের ‘পদার্থের ভৌত রাসায়নিক ধর্মসমূহ‘ থেকে ‘জৈব রসায়ন’ এর কিছু সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো দশম শ্রেণীর ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য ও চাকরির পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান-পদার্থের ভৌত রাসায়নিক ধর্মসমূহ-জৈব রসায়ন-সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
Contents Show

জৈব যৌগের আধুনিক সংজ্ঞা দাও।

কার্বনের বিভিন্ন অক্সাইড, কার্বনেট ও বাইকার্বনেট, হাইড্রোজেন সায়ানাইড, ধাতব সায়ানাইড, সায়ানেট, থায়োসায়ানেট, কার্বন ডাইসালফাইড ইত্যাদি যৌগগুলি ছাড়া কার্বনের যে বিশাল সংখ্যক যৌগের মধ্যে কার্বনের ক্যাটিনেশন ধর্ম, সমাবয়বতা প্রভৃতি বৈশিষ্ট্যগুলি দেখা যায়, তাদের জৈব যৌগ বলে।

বার্জেলিয়াসের প্রাণশক্তি তত্ত্ব কীভাবে অসার বলে প্রমাণিত হয়?

বিজ্ঞানী ভোলার (1828 খ্রি.) পরীক্ষাগারে অ্যামোনিয়াম সায়ানেট নামক অজৈব পদার্থ থেকে ইউরিয়া নামক জৈব যৌগ তৈরি করে দেখান যে প্রাণশক্তির সাহায্য ছাড়াই জৈব যৌগ প্রস্তুত করা যায়। পরবর্তীকালে বিজ্ঞানী কোলবে (1845 খ্রি.) ও বিজ্ঞানী বার্থেলট (1856 খ্রি.) উপাদান মৌল থেকে যথাক্রমে অ্যাসিটিক অ্যাসিড ও মিথেন প্রস্তুত করে বার্জেলিয়াস প্রদত্ত প্রাণশক্তি তত্ত্বের অসারতা প্রমাণ করেন।

জৈব যৌগের শ্রেণিবিভাগ করো।

জৈব যৌগের শ্রেণিবিভাগ গুলি হল –

জৈব যৌগের শ্রেণিবিভাগ করো।

জৈব যৌগগুলি সাধারণত জলে (ধ্রুবীয় দ্রাবক) দ্রবীভূত হয় না কেন?

জৈব যৌগগুলি সমযোজী বন্ধন দ্বারা গঠিত হওয়ায় আয়নিত হয় না। তাই ধ্রুবীয় দ্রাবক, যেমন জলের অণুগুলির সাথে এদের কোনোরূপ তড়িৎ-আকর্ষণ সৃষ্টি হয় না। ফলে এরা সাধারণত জলে দ্রবীভূত হয় না। তবে জলের অণুর সাথে হাইড্রোজেন বন্ধন গঠনে সক্ষম জৈব যৌগ (যেমন – অ্যালকোহল, গ্লুকোজ ইত্যাদি) এবং জলে আয়নিত হয় এমন জৈব যৌগ (যেমন – কার্বক্সিলিক অ্যাসিড) জলে দ্রবীভূত হয়।

জৈব যৌগের দ্রবণ সাধারণত তড়িৎ পরিবহণ করে না কেন?

জৈব যৌগগুলি সমযোজী বন্ধন দ্বারা গঠিত হয় বলে এরা দ্রবণে আয়নিত হয় না অর্থাৎ ক্যাটায়ন ও অ্যানায়নে বিয়োজিত হয় না। তাই এদের দ্রবণ তড়িৎ পরিবহণ করতে পারে না। তবে কার্বক্সিলিক অ্যাসিড যৌগ, যেমন – ফর্মিক অ্যাসিড, অ্যাসিটিক অ্যাসিড ইত্যাদির জলীয় দ্রবণ কিছুটা তড়িৎ পরিবাহী হয়।

কার্বন পরমাণুর ক্যাটিনেশন ধর্ম বলতে কী বোঝ?

বহুসংখ্যক কার্বন পরমাণু পরস্পরের সঙ্গে সমযোজী এক-বন্ধন, দ্বি-বন্ধন বা ত্রি-বন্ধন গঠনের মাধমে আবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন দৈর্ঘ্যের ও আকৃতির শৃঙ্খল (chain) বা বলয় (ring) গঠন করতে পারে। কার্বন পরমাণুসমূহের নিজেদের মধ্যে যুক্ত হয়ে শৃঙ্খল গঠনের এই বিশেষ ধর্মকে ক্যাটিনেশন (catenation) ধর্ম বলে।

কার্বন পরমাণুর ক্যাটিনেশন ধর্ম বলতে কী বোঝ?

কার্বন পরমাণু ক্যাটিনেশন ধর্ম প্রদর্শনে সক্ষম কেন?

কার্বন পরমাণুর –

  • ছোটো আকার ও
  • মধ্যমমানের তড়িৎ-ঋণাত্মকতার জন্য C-C সমযোজী বন্ধন খুবই শক্তিশালী তথা স্থিতিশীল হয়। এর ফলে C -পরমাণুগুলি পরস্পর সমযোজী এক-বন্ধন, দ্বি-বন্ধন বা ত্রি-বন্ধন গঠনের মাধ্যমে দীর্ঘ ও স্থিতিশীল শৃঙ্খল গঠন করতে পারে। তাই কার্বন ক্যাটিনেশন ধর্ম প্রদর্শনে সক্ষম।

সালফার (S) ও সিলিকনের (Si) ক্যাটিনেশন ধর্ম থাকলেও তা কার্বনের থেকে বেশি না কম?

সালফার (S) ও সিলিকনের (Si) ক্যাটিনেশন ধর্ম থাকলেও তা কার্বনের তুলনায় অনেক কম।

বিজ্ঞানী ভ্যান্ট হফ্ এবং লা বেলের কার্বনের যোজ্যতার সমচতুস্তলকীয় মডেলটি সংক্ষেপে বর্ণনা করো।

1874 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী ভ্যান্ট হফ্ এবং লা বেল কার্বনের যোজ্যতার সমচতুস্তলকীয় মডেলটির প্রস্তাবনা মতবাদ প্রচার করেন। তাঁদের মতে –

বিজ্ঞানী ভ্যান্ট হফ্ এবং লা বেলের কার্বনের যোজ্যতার সমচতুস্তলকীয় মডেলটি সংক্ষেপে বর্ণনা করো।
  • কার্বনের 4টি যোজ্যতা কখনোই এক সমতলে থাকে না।
  • একটি কাল্পনিক সমচুতস্তলকের কেন্দ্রে কার্বন পরমাণু অবস্থান করলে, ওর 4টি যোজ্যতা ওই সমচুতস্তলকের চারটি শীর্ষবিন্দুর দিকে প্রসারিত থাকে।
  • কার্বন পরমাণুর যে-কোনো দুটি যোজ্যতার মধ্যবর্তী কোণের মান 109°28′।

C2H6 অণুর গঠন চিত্রসহ বর্ণনা করো।

C2H6 বা ইথেন অণুতে 2টি C -পরমাণু নিজেদের মধ্যে একটি ইলেকট্রন-জোড় সমভাবে ব্যবহার করে C-C এক-বন্ধন গঠন করে। প্রতিটি কার্বন 3টি H -পরমাণুর সঙ্গে 3টি এক-বন্ধন সৃষ্টির মাধ্যমে অবশিষ্ট 3টি যোজ্যতা পূরণ করে।

C2H6 অণুর গঠন চিত্রসহ বর্ণনা করো।

কার্বনের যোজ্যতার সমচুতস্তলকীয় মডেলের সাহায্যে মিথেন অণুর স্থায়িত্ব ব্যাখ্যা করো।

ভ্যান্ট হফ্ এবং লা বেলের মতবাদ অনুযায়ী, কার্বন পরমাণুর 4টি যোজ্যতা ত্রিমাত্রিক ক্ষেত্রে এমনভাবে বিন্যস্ত থাকে যাতে তাদের যে-কোনো দুটি যোজ্যতার মধ্যবর্তী কোণের মান 109°28′ হয়। এইরকম বিন্যাসের ফলে মিথেন (CH4) অণুতে সমযোজী বন্ধন সৃষ্টিকারী ইলেকট্রন-জোড়গুলি পরস্পর থেকে সর্বোচ্চ দূরত্বে অবস্থান করে। এই অবস্থায় ইলেকট্রন-জোড়গুলির মধ্যে পরস্পরের প্রতি বিকর্ষণ বল সবচেয়ে কম হয়, তাই মিথেন অণু বেশ স্থায়ী হয়।

কার্বনের যোজ্যতার সমচুতস্তলকীয় মডেলের সাহায্যে মিথেন অণুর স্থায়িত্ব ব্যাখ্যা করো।

C2H4 অণুর গঠন চিত্রসহ বর্ণনা করো।

C2H4 বা ইথিলিন অণুতে দুটি C -পরমাণু নিজেদের মধ্যে একটি দ্বি-বন্ধন গঠন করে এবং এভাবে প্রতিটি C -পরমাণুর 2টি করে যোজ্যতা পরিপৃক্ত হয়। প্রতিটি কার্বন বাকি 2টি যোজ্যতা পূর্তির জন্য 2টি H -পরমাণুর সঙ্গে দুটি এক-বন্ধন গঠন করে। এভাবে উৎপন্ন অণুটির সমস্ত পরমাণুগুলিই একই সমতলে অবস্থান করে।

C2H4 অণুর গঠন চিত্রসহ বর্ণনা করো।

C2H2 অণুর গঠন চিত্রসহ বর্ণনা করো।

C2H2 বা অ্যাসিটিলিন অণুতে দুটি C -পরমাণু নিজেদের মধ্যে সমযোজী ত্রি-বন্ধন গঠন করে এবং এভাবে প্রতিটি কার্বনের 3টি করে যোজ্যতা পরিপৃক্ত হয়। বাকি 1টি যোজ্যতা পূর্তির জন্য প্রতিটি কার্বন 1টি H -পরমাণুর সঙ্গে এক-বন্ধন গঠন করে। এভাবে উৎপন্ন অণুটির সমস্ত পরমাণুগুলি একই সরলরেখায় অবস্থান করে।

C2H2 অণুর গঠন চিত্রসহ বর্ণনা করো।

কার্যকরী মূলক বা ক্রিয়াশীল মূলক (Functional group) কাকে বলে? একটি উদাহরণ দাও।

যেসব সক্রিয় পরমাণু বা পরমাণুপুঞ্জ (মূলক) জৈব যৌগের অণুতে উপস্থিত থেকে প্রধানত যৌগগুলির প্রকৃতি ও রাসায়নিক ধর্মকে নিয়ন্ত্রণ করে, তাদের কার্যকরী মূলক বা ক্রিয়াশীল মূলক বলে। যেমন – অ্যালকোহল শ্রেণির যৌগে -OH (হাইড্রক্সিল) কার্যকরী মূলক থাকে।

অ্যালকোহল শ্রেণির যৌগে উপস্থিত কার্যকরী মূলকটির নাম ও গঠন দেখাও। এই কার্যকরী মূলকযুক্ত একটি যৌগের উদাহরণ দাও।

অ্যালকোহল শ্রেণির যৌগে উপস্থিত কার্যকরী মূলকটি হাইড্রক্সিল এবং এর গঠন \(-\overset{..}{\underset{..}O}-H\)।

-OH কার্যকরী মূলকযুক্ত একটি যৌগের উদাহরণ হল ইথাইল অ্যালকোহল (C2H5OH)।

অ্যালডিহাইড শ্রেণির যৌগে উপস্থিত কার্যকরী মূলকটির নাম ও গঠন লেখো। এই কার্যকরী মূলকযুক্ত একটি যৌগের উদাহরণ দাও।

অ্যালডিহাইড শ্রেণির যৌগে উপস্থিত কার্যকরী মূলকটি হল অ্যালডিহাইড এবং এর গঠন –

অ্যালডিহাইড শ্রেণির যৌগে উপস্থিত কার্যকরী মূলকটির নাম ও গঠন লেখো। এই কার্যকরী মূলকযুক্ত একটি যৌগের উদাহরণ দাও।

অ্যালডিহাইড কার্যকরী মূলকযুক্ত একটি যৌগ হল অ্যাসিট্যালডিহাইড –

অ্যালডিহাইড শ্রেণির যৌগে উপস্থিত কার্যকরী মূলকটির নাম ও গঠন লেখো। এই কার্যকরী মূলকযুক্ত একটি যৌগের উদাহরণ দাও।

কিটোন শ্রেণির যৌগে উপস্থিত কার্যকরী মূলকটির নাম ও গঠন লেখো। এই কার্যকরী মূলকযুক্ত একটি যৌগের উদাহরণ দাও।

কিটোন শ্রেণির যৌগে উপস্থিত কার্যকরী মূলকটি হল কিটো এবং এর গঠন C=O:..

এই কার্যকরী মূলকযুক্ত যৌগের উদাহরণ অ্যাসিটোন \(CH_3-\overset{\overset O║}C-CH_3\) বা \(CH_3COCH_3\)।

কার্বক্সিলিক অ্যাসিড শ্রেণির যৌগে উপস্থিত কার্যকরী মূলকটির নাম ও গঠন লেখো। এই কার্যকরী মূলকযুক্ত একটি যৌগের উদাহরণ দাও।

কার্বক্সিলিক অ্যাসিড শ্রেণির যৌগে উপস্থিত কার্যকরী মূলকটি হল কার্বক্সিল এবং এর গঠন 

কার্বক্সিলিক অ্যাসিড শ্রেণির যৌগে উপস্থিত কার্যকরী মূলকটির নাম ও গঠন লেখো। এই কার্যকরী মূলকযুক্ত একটি যৌগের উদাহরণ দাও।

এই কার্যকরী মূলকযুক্ত যৌগের উদাহরণ অ্যাসিটিক অ্যাসিড

কার্বক্সিলিক অ্যাসিড শ্রেণির যৌগে উপস্থিত কার্যকরী মূলকটির নাম ও গঠন লেখো। এই কার্যকরী মূলকযুক্ত একটি যৌগের উদাহরণ দাও।

অ্যামিন শ্রেণির যৌগে উপস্থিত কার্যকরী মূলকটির নাম ও গঠন লেখো। এই কার্যকরী মূলকযুক্ত একটি যৌগের উদাহরণ দাও।

অ্যামিন শ্রেণির যৌগে উপস্থিত কার্যকরী মূলকটির নাম অ্যামিনো এবং এর গঠন

অ্যামিন শ্রেণির যৌগে উপস্থিত কার্যকরী মূলকটির নাম ও গঠন লেখো। এই কার্যকরী মূলকযুক্ত একটি যৌগের উদাহরণ দাও।

এই কার্যকরী মূলকযুক্ত যৌগের উদাহরণ মিথাইল অ্যামিন CH3-NH2 বা CH3NH2

ইথার শ্রেণির যৌগে উপস্থিত কার্যকরী মূলকটির নাম ও গঠন লেখো। এই কার্যকরী মূলকযুক্ত একটি যৌগের উদাহরণ দাও।

ইথার শ্রেণির যৌগে উপস্থিত কার্যকরী মূলকটি হল ইথার এবং এর গঠন \(-\overset{..}{\underset{..}O}-\)।

এই কার্যকরী মূলকযুক্ত একটি যৌগের উদাহরণ হল ডাইমিথাইল ইথার (CH3-O-CH3 বা CH3-O-CH3)।

কার্যকরী মূলকঘটিত সমাবয়বতা কাকে বলে উদাহরণসহ লেখো।

একই আণবিক সংকেতবিশিষ্ট যৌগে ভিন্ন ভিন্ন কার্যকরী মূলক উপস্থিত থাকার ফলে যে সমাবয়বতার উদ্ভব হয়, তাকে কার্যকরী মূলকগত সমাবয়বতা বলে।

উদাহরণ – CH3-O-CH3 (ডাইমিথাইল ইথার) ও CH3CH2OH (ইথাইল অ্যালকোহল) অণুদুটির কার্যকরী গ্রুপ যথাক্রমে -O- ও -OH; কিন্তু উভয় যৌগেরই আণবিক সংকেত C2H6O।

অবস্থানঘটিত সমাবয়বতা কাকে বলে উদাহরণসহ লেখো।

একই কার্বন শৃঙ্খলবিশিষ্ট সমাবয়বী যৌগসমূহে একই কার্যকরী মূলকের অবস্থানের বিভিন্নতার জন্য যে ধরনের সমাবয়বতার সৃষ্টি হয়, তাকে অবস্থানঘটিত সমাবয়বতা বলে।

উদাহরণ – CH3CH2CH2OH (প্রোপান-1-অল বা n-প্রোপাইল অ্যালকোহল) ও \(CH_3-\underset{\underset{OH}┃}{CH}-CH_3\) (প্রোপান-2-অল বা আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল)

উভয়ের আণবিক সংকেত C3H8O হলেও দুটি যৌগের কার্বন শৃঙ্খলে -OH মূলকটির অবস্থানের ভিন্নতার জন্য এরা অবস্থানঘটিত সমাবয়ব।

শৃঙ্খলঘটিত সমাবয়বতা (Chain isomerism) কাকে বলে উদাহরণসহ লেখো।

শৃঙ্খলঘটিত সমাবয়বতা (Chain isomerism) – একই সমগণীয় শ্রেণিভুক্ত যৌগসমূহের অনুমধ্যস্থ কার্বন শৃঙ্খলের গঠনের বিভিন্নতার জন্য যে সমাবয়বতার সৃষ্টি হয়, তাকে শৃঙ্খলঘটিত সমাবয়বতা বলে। যেমন –

শৃঙ্খলঘটিত সমাবয়বতা (Chain isomerism) কাকে বলে উদাহরণসহ লেখো।

উপরের যৌগগুলি শৃঙ্খলঘটিত সমাবয়ব।

ইথাইল অ্যালকোহল ও ডাইমিথাইল ইথারের মধ্যে পার্থক্যসূচক বিক্রিয়াটি উল্লেখ করো।

ইথাইল অ্যালকোহল সাধারণ উষ্ণয়তায় ধাতব সোডিয়ামের সঙ্গে বিক্রিয়া করে H2 গ্যাস নির্গত করে।

2CH3CH2OH + 2Na → 2CH3CH2ONa + H2

ডাইমিথাইল ইথার ধাতব সোডিয়ামের সঙ্গে কোনো বিক্রিয়া করে না।

সমগণীয় শ্রেণি কাকে বলে?

একই উপাদান মৌলসমূহ দ্বারা গঠিত এবং একই সাধারণ সংকেত দ্বারা প্রকাশযোগ্য, অভিন্ন কার্যকরী মূলকবিশিষ্ট সমধর্মী যৌগসমূহকে আণবিক ভর বৃদ্ধির সঙ্গে ক্রমানুযায়ী সাজালে যদি এমন একটি শ্রেণির উদ্ভব হয় যার পরপর দুটি সদস্যের আণবিক সংকেতের মধ্যে পার্থক্য হয় CH2, তবে ওই শ্রেণিকে সমগণীয় শ্রেণি বলে। সমগণীয় শ্রেণির প্রত্যেক সদস্যকে সমগণ বলে।

অ্যালকেন, অ্যালকিন ও অ্যালকাইন শ্রেণির যৌগগুলির সাধারণ সংকেত ও দুটি করে সমগণ উল্লেখ করো।

শ্রেণিঅ্যালকেনঅ্যালকিনঅ্যালকাইন
সাধারণ সংকেতCnH2n+2CnH2nCnH2n-2
সমগণCH4, C2H6C2H4, C3H6C2H2, C3H4

অ্যালকোহল ও কার্বক্সিলিক অ্যাসিড শ্রেণির যৌগগুলির সাধারণ সংকেত ও দুটি করে সমগণ উল্লেখ করো।

শ্রেণিঅ্যালকোহলকার্বক্সিলিক অ্যাসিড
সাধারণ সংকেতCnH2n+1OHCnH2n+1COOH
সমগণCH3OH, CH3CH2OHHCOOH, CH3COOH

সমগণীয় শ্রেণির গুরুত্ব আলোচনা করো।

জৈব যৌগগুলিকে বিভিন্ন সমগণীয় শ্রেণিতে বিভক্ত করায় জৈব রসায়নের পাঠ অনেক সহজ হয়েছে। কোনো সমগণীয় শ্রেণির যে-কোনো একটি যৌগের প্রস্তুত প্রণালী ও সাধারণ ধর্মসমূহ জানা থাকলে ওই শ্রেণির অন্যান্য সদস্যের প্রস্তুত প্রণালী এবং ধর্ম সহজেই অনুমান করা যায়। তাই অসংখ্য জৈব যৌগকে কয়েকটি সমগণীয় শ্রেণিতে ভাগ করে প্রত্যেক সমগণীয় শ্রেণির একটি প্রতিনিধি স্থানীয় যৌগের প্রস্তুত প্রণালী, ধর্ম ও বিক্রিয়ার আলোচনা দ্বারা সমগ্র পরিবারটি সম্পর্কে একটি সামগ্রিক ধারণা লাভ করা যায়।

একই সমগণীয় শ্রেণির সদস্যরা রাসায়নিক ধর্মে অভিন্ন হলেও এদের ভৌত ধর্মে পার্থক্য দেখা যায় কেন?

একই সমগণীয় শ্রেণির সদস্যদের ক্ষেত্রে একই কার্যকরী মূলকের উপস্থিতির জন্য এদের রাসায়নিক ধর্মে সাদৃশ্য দেখা যায়। কিন্তু সমগণীয় শ্রেণির সদস্যদের আণবিক ভর পৃথক হওয়ায় আণবিক ভরের উপর নির্ভরশীল এমন সব ভৌত ধর্মগুলি (যেমন – গলনাঙ্ক, স্ফুটনাঙ্ক, ঘনত্ব ইত্যাদি) এদের ক্ষেত্রে পৃথক হয়।

অ্যালকিল মূলক কাকে বলে? এদের কীভাবে নামকরণ করা হয়?

অ্যালকিল মূলক – অ্যালকেন যৌগের অণু থেকে 1টি H -পরমাণু অপসারিত হলে যে একযোজী গ্রুপ বা মূলকের সৃষ্টি হয়, তাকে অ্যালকিল গ্রুপ বা মূলক বলা হয়। যেমন – CH4 অণু থেকে 1টি H -পরমাণু অপসারিত হয়ে মিথাইল (-CH3) মূলকের সৃষ্টি হয়।

নামকরণ পদ্ধতি – অ্যালকিল গ্রুপের নামকরণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অ্যালকেন যৌগের নাম থেকে ‘ane’ প্রত্যয়টি বাদ দিয়ে ‘yl’ প্রত্যয় যোগ করা হয়। যেমন – মিথেন (methane) অণু থেকে 1টি H -পরমাণু অপসারিত হয়ে মিথাইল মূলক (methane – ane + yl = methyl) উৎপন্ন হয়।

ইথেন থেকে কেবলমাত্র একপ্রকার অ্যালকিল গ্রুপ সৃষ্টি হলেও প্রোপেন থেকে দু-প্রকার অ্যালকিল গ্রুপ সৃষ্টি হয় কেন?

ইথেন অণুর 6টি H -পরমাণুই সমতুল্য, তাই ইথেনের যে-কোনো একটি H -পরমাণুর অপসারণে একই অ্যালকিল গ্রুপ অর্থাৎ ইথাইল মূলক \(\left(-CH_2CH_3\right)\) উৎপন্ন হবে। অপরদিকে, প্রোপেন অণুর মাঝের C -পরমাণুর সঙ্গে যুক্ত H -পরমাণুদুটি, প্রান্তীয় 6টি H -পরমাণুর সঙ্গে সমতুল্য নয়। তাই প্রান্তীয় H -পরমাণুর অপসারণে প্রোপাইল গ্রুপ \(\left(CH_3CH_2CH_3-\right)\) এবং মাঝের H -পরমাণুর অপসারণে আইসোপ্রোপাইল গ্রুপ \(\left(CH_3\underset│CHCH_3━\right)\) -এর সৃষ্টি হয়।

3টি কার্বন পরমাণু পর্যন্ত অ্যালকেনগুলির গঠন-সংকেত ও IUPAC নাম লেখো।

3টি কার্বন পরমাণু পর্যন্ত অ্যালকেনগুলির গঠন-সংকেত ও IUPAC নাম হল –

  • CH4 : মিথেন (methane)
  • CH3CH3 : ইথেন (ethane)
  • CH3CH2CH3 : প্রোপেন (propane)

3টি কার্বন পরমাণু পর্যন্ত অ্যালকিনগুলির গঠন-সংকেত ও IUPAC নাম লেখো।

3টি কার্বন পরমাণু পর্যন্ত অ্যালকিনগুলির গঠন-সংকেত ও IUPAC নাম হল –

  • CH=CH2 : ইথিন (ethene)
  • CH3-CH=CH2 : প্রোপিন (propene)

3টি কার্বন পরমাণু পর্যন্ত অ্যালকাইনগুলির গঠন-সংকেত ও IUPAC নাম লেখো।

3টি কার্বন পরমাণু পর্যন্ত অ্যালকাইনগুলির গঠন-সংকেত ও IUPAC নাম হল –

  • HC≡CH : ইথাইন (ethyne)
  • CH3-C≡CH : প্রোপাইন (propyne)

3টি কার্বন পরমাণু পর্যন্ত অ্যালকোহলগুলির গঠন-সংকেত ও IUPAC নাম লেখো।

3টি কার্বন পরমাণু পর্যন্ত অ্যালকোহলগুলির গঠন-সংকেত ও IUPAC নাম হল –

CH3OH : মিথানল (methanol)

CH3CH2OH : ইথানল (ethanol)

\(\overset3CH_3\overset2CH_2\overset1CH_2OH\) : প্রোপান-1-অল (propan-1-ol)

\(\overset3CH_3\overset2{\underset{\overset┃{OH}}C}H_2\overset1CH_2OH\) : প্রোপান-2-অল (propan-2-ol)

3টি কার্বন পরমাণু পর্যন্ত কার্বনিল যৌগগুলির গঠন-সংকেত ও IUPAC নাম লেখো।

3টি কার্বন পরমাণু পর্যন্ত কার্বনিল যৌগগুলির গঠন-সংকেত ও IUPAC নাম হল –

অ্যালডিহাইড –

  • HCHO : মিথান্যাল (methanal)
  • CH3CHO : ইথান্যাল (ethanal)
  • CH3CH2CHO : প্রোপান্যাল (propanal)

কিটোন – CH3COCH3 : প্রোপানোন (propanone)

3টি কার্বন পরমাণু পর্যন্ত কার্বক্সিলিক অ্যাসিড যৌগগুলির গঠন-সংকেত ও IUPAC নাম লেখো।

3টি কার্বন পরমাণু পর্যন্ত কার্বক্সিলিক অ্যাসিড যৌগগুলির গঠন-সংকেত ও IUPAC নাম হল –

  • HCOOH : মিথানোয়িক অ্যাসিড (methanoic acid)
  • CH3COOH : ইথানোয়িক অ্যাসিড (ethanoic acid)
  • CH3CH2COOH : প্রোপানোয়িক অ্যাসিড (propanoic acid)

মিথেন (CH4) -এর শিল্প উৎসগুলি উল্লেখ করো।

মিথেন (CH4) -এর শিল্প উৎসগুলির হল –

  • পেট্রোলিয়াম খনি থেকে নির্গত প্রাকৃতিক গ্যাসে প্রচুর পরিমাণে (40-90%) মিথেন থাকে,
  • কোলগ্যাসে আয়তন হিসেবে 40% মিথেন থাকে,
  • কয়লাখনিতে প্রাপ্ত গ্যাসে সামান্য মিথেন পাওয়া যায়।

আলেয়া (Will ‘O’ the wisp) কী?

বদ্ধ জলাভূমিতে বা কবরস্থানে উদ্ভিজ্জ ও প্রাণীজ পদার্থের অন্তর্গত জৈব যৌগের জীবাণুঘটিত পচনের ফলে মিথেন উৎপন্ন হয়। আবার অনেক সময় প্রাণীদেহের পচনের ফলে জলাভূমিতে (PH3) ও ডাইফসফরাস টেট্রাহাইড্রাইড (P2H4) -ও উৎপন্ন হয়। তাই জলাভূমিতে উৎপন্ন মিথেনের সঙ্গে PH3 ও P2H4 মিশে থাকে। P2H4 বায়ুতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে জ্বলে ওঠে এবং দহনের ফলে যে তাপ উৎপন্ন হয় তাতে মিথেনও নীলাভ শিখায় জ্বলতে থাকে। ফলে যে বিচরণশীল আলোকশিখার সৃষ্টি হয়, তাকে আলেয়া বলে। একারণে বদ্ধ জলাভূমিতে বিশেষত শ্মশানে আলেয়া দেখা যায়। এটি একটি প্রাকৃতিক ঘটনা, কোনো ভৌতিক বা অলৌকিক ঘটনা নয়।

ইথিলিনের (C2H4) প্রধান প্রধান শিল্প উৎসগুলি উল্লেখ করো।

ইথিলিনের (C2H4) প্রধান প্রধান শিল্প উৎসগুলির হল –

  • পেট্রোলিয়াম খনি থেকে নির্গত প্রাকৃতিক গ্যাসে 20% পর্যন্ত ইথিলিন থাকে,
  • কোক ওভেন গ্যাসের মধ্যে প্রচুর ইথিলিন পাওয়া যায়,
  • কোলগ্যাসে সামান্য পরিমাণ (প্রায় 4%) ইথিলিন থাকে,
  • পেট্রোলিয়ামের ব্র্যাকিং প্রক্রিয়ায় (তাপ প্রয়োগে দীর্ঘ শৃঙ্খলযুক্ত জৈব যৌগকে ভেঙে ছোটো শৃঙ্খলবিশিষ্ট জৈব যৌগে পরিণত করা) উপজাত হিসেবে ইথিলিন পাওয়া যায়।

অ্যাসিটিলিন (C2H2) -এর শিল্প উৎসগুলি উল্লেখ করো।

অ্যাসিটিলিন (C2H2) -এর শিল্প উৎসগুলির হল –

  • কোলগ্যাসে সামান্য পরিমাণ (0.06%) অ্যাসিটিলিন থাকে,
  • উচ্চ উষ্ণতায় প্রাকৃতিক গ্যাস (মূলত মিথেন) -কে বিয়োজিত করে অ্যাসিটিলিন তৈরি করা হয়।

LPG কী?

তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসকে সংক্ষেপে LPG (Liquefied Petroleum Gas) বলে। LPG হল নিম্ন আণবিক ভরসম্পন্ন (3-4টি C -পরমাণুযুক্ত) হাইড্রোকার্বনের মিশ্রণ। এর মূল উপাদানগুলি হল n-বিউটেন, প্রোপেন, আইসোবিউটেন, বিউটিন ইত্যাদি। এছাড়া অল্প পরিমাণে প্রোপিলিন ও ইথেন থাকে।

LPG -এর শিল্প উৎসগুলি উল্লেখ করো।

আংশিক পাতন প্রক্রিয়ায় পেট্রোলিয়ামের পরিশোধনের সময় যে গ্যাসীয় অংশ পাওয়া যায় তাকে উচ্চচাপে তরলে পরিণত করে LPG বা তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস পাওয়া যায়। LPG -কে স্টিলের সিলিন্ডারে আবদ্ধ করে সংরক্ষণ করা হয়।

CNG -এর উপাদান ও শিল্প উৎসগুলি উল্লেখ করো।

উপাদান – সংনমিত প্রাকৃতিক গ্যাস (Compressed Natural Gas) বা CNG -এর মূল উপাদান মিথেন (90%)। এছাড়া এতে কিছু পরিমাণ ইথেন, ইথিন, প্রোপেন, বিউটেন ও সামান্য পরিমাণ কম স্ফুটনাঙ্কের পেন্টেন থাকে।

শিল্প উৎস – পেট্রোলিয়াম খনিতে তেলের ওপরে বা কয়লাখনিতে আবদ্ধ অবস্থায় প্রাপ্ত গ্যাসীয় পদার্থই হল প্রাকৃতিক গ্যাস, যাকে চাপ প্রয়োগে তরলে পরিণত করা হয়।

বিক্ষিপ্ত সূর্যালোকে মিথেনের সাথে ক্লোরিন গ্যাসের বিক্রিয়ায় কী ঘটে সমীকরণসহ লেখো।

বিক্ষিপ্ত সূর্যালোকের উপস্থিতিতে মিথেন ও ক্লোরিন গ্যাসের মধ্যে প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া ঘটে। এই বিক্রিয়ায় মিথেনের H -পরমাণুগুলি ক্লোরিন পরমাণু দ্বারা ধাপে ধাপে প্রতিস্থাপিত হয় এবং মিথাইল ক্লোরাইড, মিথিলিন ক্লোরাইড, ক্লোরোফর্ম ও কার্বন টেট্রাক্লোরাইড -এর একটি মিশ্রণ উৎপন্ন হয়।

  • CH4 + Cl2 → CH3Cl (মিথাইল ক্লোরাইড) + HCl
  • CH3Cl + Cl2 → CH2Cl2 (মিথিলিন ক্লোরাইড) + HCl
  • CH2Cl2 + Cl2 → CHCl3 (ক্লোরোফর্ম) + HCl
  • CHCl3 + Cl2 → CCl4 (কার্বন টেট্রাক্লোরাইড) + HCl

শর্তসহ ইথিলিনের হাইড্রোজেনেশন বিক্রিয়া কীভাবে সংঘটিত হয় লেখো ও বিক্রিয়ার সমীকরণ দাও।

সাধারণ চাপ ও উষ্ণতায় প্ল্যাটিনাম, প্যালাডিয়াম বা র‍্যানি নিকেল অনুঘটকের উপস্থিতিতে বা 200-300°C উষ্ণতায় নিকেল অনুঘটকের উপস্থিতিতে হাইড্রোজেন, ইথিলিনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন ইথেন উৎপন্ন হয়।

CH3=CH2+H2বা Ni(250°C)Pt বা Pd বা র‍্যানি নিকেল (সাধারণ উষ্ণতা)CH3CH3

র‍্যানি নিকেল (Raney nickel) কাকে বলে?

সমপরিমাণ Ni ও Al -এর সংকর ধাতুকে NaOH -সহ উত্তপ্ত করে ভালো করে আলোড়িত করলে অ্যালুমিনিয়াম দ্রবীভূত হয়ে যায় এবং অতি সূক্ষ্ম নিকেল-কণা অবশেষরূপে পড়ে থাকে। এটিই হল র‍্যানি নিকেল। একে জল দিয়ে ধুয়ে জল বা অ্যালকোহলের নীচে সংরক্ষণ করা হয়।

2Ni-Al + 2NaOH + 2H2O → 2Ni↓ + 2NaAlO2 + 3H2

উৎপন্ন হাইড্রোজেন গ্যাস সূক্ষ্ম নিকেল-চূর্ণে শোষিত তথা অন্তর্ধৃত (adsorbed) থাকে বলে র‍্যানি নিকেলের কার্যকারিতা বেশি হয়।

ব্রোমিনকে কার্বন টেট্রাক্লোরাইড বা ক্লোরোফর্মে দ্রবীভূত করে ওই দ্রবণের মধ্য দিয়ে ইথিলিন গ্যাস চালনা করলে কী ঘটবে সমীকরণসহ লেখো।

অথবা, কীভাবে প্রমাণ করবে যে, ইথিলিন একটি অসম্পৃক্ত যৌগ।

ব্রোমিনকে কার্বন টেট্রাক্লোরাইড (CCI4) বা ক্লোরোফর্মে (CHCl3) দ্রবীভূত করে ওই লাল বর্ণের দ্রবণের মধ্য দিয়ে ইথিলিন গ্যাস চালনা করলে ইথিলিন ডাইব্রোমাইড বা 1, 2-ডাইব্রোমোইথেন নামক বর্ণহীন যৌগ উৎপন্ন হয়। ফলে ব্রোমিন দ্রবণটি বর্ণহীন হয়। এই বিক্রিয়া প্রমাণ করে যে, ইথিলিন একটি অসম্পৃক্ত যৌগ।

CH2=CH2+Br2লাল দ্রবণCCl4 বা CHCl3 দ্রবণBrCH2CH2Br1, 2-ডাইব্রোমোইথেন (বর্ণহীন )

বায়ারের পরীক্ষা (Baeyer’s test) কী?

পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেটের (KMnO4) শীতল ও লঘু (1-2%) ক্ষারীয় দ্রবণের মধ্যে ইথিলিন গ্যাস চালনা করলে পারম্যাঙ্গানেটের লালচে-বেগুনি বর্ণের দ্রবণ বর্ণহীন হয়। এটি বায়ারের পরীক্ষা নামে পরিচিত। এই বিক্রিয়ার সাহায্যে কোনো যৌগে অসম্পৃক্ততা আছে কিনা বোঝা যায়। এই বিক্রিয়া প্রমাণ করে যে, ইথিলিন একটি অসম্পৃক্ত যৌগ।

টীকা লেখো – ইথিলিনের পলিমেরাইজেশন বিক্রিয়া।

ইথিলিনকে উচ্চচাপে (1500-2000 atm) অক্সিজেন বা পারক্সাইড অনুঘটকের উপস্থিতিতে 150-200°C উষ্ণতায় উত্তপ্ত করলে বহুসংখ্যক ইথিলিন অণু পরস্পর যুক্ত হয়ে উচ্চ আণবিক ভরসম্পন্ন (প্রায় 20000) কঠিন পদার্থ পলিইথিলিন বা পলিথিন উৎপন্ন করে। এই বিক্রিয়াটিই ইথিলিনের পলিমেরাইজেশন বিক্রিয়া।

n[CH2=CH2]1500 atm, 150200°Cঅক্সিজেন বা পারক্সাইড অনুঘটক(CH2CH2)nপলিথিন

অ্যাসিটিলিনের হাইড্রোজেনেশন বিক্রিয়াটি কীভাবে ঘটে সমীকরণসহ লেখো।

200°C উষ্ণতায় নিকেল-চূর্ণ অনুঘটকের উপস্থিতিতে অথবা সাধারণ চাপ ও উষ্ণতায় র‍্যানি নিকেল, বিচূর্ণ প্ল্যাটিনাম বা প্যালাডিয়াম অনুঘটকের উপস্থিতিতে অ্যাসিটিলিন ও হাইড্রোজেনের বিক্রিয়ায় প্রথম ধাপে, 1 অণু হাইড্রোজেন যুক্ত হয়ে ইথিলিন এবং দ্বিতীয় ধাপে, আরও 1 অণু H2 যুক্ত হয়ে ইথেন উৎপন্ন হয়।

HCCH+H2বা Ni চূর্ণ/ 200°CPt বা Pd বা র‍্যানি নিকেল (সাধারণ উষ্ণতা) H2CCH2ইথিলিনঅনুঘটক H2CH3CH3ইথেন

প্রদত্ত কোন্ হাইড্রোকার্বনগুলি যুত বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করবে – C3H6, C4H10, C3H4

কেবলমাত্র অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনগুলি যুত বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে। প্রদত্ত হাইড্রোকার্বনগুলির মধ্যে C3H6 (অ্যালকিন যৌগ) ও C3H4 (অ্যালকাইন যৌগ) অসম্পৃক্ত প্রকৃতির হওয়ায় যুত বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে। অপরদিকে, C4H10 (অ্যালকেন যৌগ) যৌগটি সমপৃক্ত হাইড্রোকার্বন হওয়ায় যুত বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে না।

অ্যাসিটিলিনের অসম্পৃক্ততা কীভাবে প্রমাণ করবে?

অথবা, ব্রোমিনের সাথে অ্যাসিটিলিনের যুত বিক্রিয়া সমীকরণসহ লেখো।

লাল বর্ণের ব্রোমিন জলের মধ্য দিয়ে অ্যাসিটিলিন গ্যাস চালনা করলে প্রথমে বর্ণহীন অ্যাসিটিলিন ডাইব্রোমাইড বা 1, 2-ডাইব্রোমোইথিন উৎপন্ন হয়, ফলে ব্রোমিন জলের লাল বর্ণ অন্তর্হিত হয়। এই বিক্রিয়া অ্যাসিটিলিনের অসম্পৃক্ততা প্রমাণ করে।

HCCH+Br2(লাল দ্রবণ)CHBr=CHBr1,2-ডাইব্রোমোইথিন (বর্ণহীন দ্রবণ)

তিনটি পৃথক সিলিন্ডারে মিথেন, ইথিলিন ও অ্যাসিটিলিন আছে। কীভাবে এদেরকে শনাক্ত করবে?

গ্যাস তিনটিকে পৃথকভাবে অ্যামোনিয়াযুক্ত কিউপ্রাস ক্লোরাইড দ্রবণের মধ্যে দিয়ে চালনা করলে যেক্ষেত্রে লাল অধঃক্ষেপ পড়বে সেই গ্যাসটি অ্যাসিটিলিন। বাকি দুটি সিলিন্ডারের গ্যাসকে পৃথক পৃথকভাবে ব্রোমিন-যুক্ত CCl4 দ্রবণে চালনা করলে যে সিলিন্ডারের গ্যাসের ক্ষেত্রে ব্রোমিনের লালচে-বাদামি বর্ণের দ্রবণ বর্ণহীন হবে, সেই গ্যাসটি ইথিলিন। অতএব, অন্য গ্যাসটি নিশ্চিতভাবে মিথেন।

পলিমার ও মনোমার বলতে কী বোঝ? উদাহরণ দাও।

পলিমার ও মনোমার – পলিমেরাইজেশন বিক্রিয়ায় বহুসংখ্যক সরল অণু পরস্পর সংযোজিত হয়ে যে উচ্চ আণবিক ভরবিশিষ্ট যৌগ উৎপন্ন করে, তাকে পলিমার বলে। অপরদিকে, যেসব সরল অণুর সংযোগে পলিমার গঠিত হয়, সেই সরল অণুগুলিকে মনোমার বলে।

উদাহরণ – অসংখ্য ইথিলিন অণু পরস্পর যুক্ত হয়ে পলিথিন উৎপন্ন করে। অতএব, পলিথিন হল ইথিলিনের পলিমার এবং ইথিলিন হল পলিথিনের মনোমার।

পলিথিনের মনোমারের নাম ও সংকেত লেখো। পলিথিনের ব্যবহার উল্লেখ করো।

পলিথিনের মনোমার হল ইথিন বা ইথিলিন এবং এর সংকেত CH2=CH2

পলিথিনের ব্যবহার – প্যাকিং দ্রব্যরূপে ও ক্যারিব্যাগ তৈরিতে, জলের পাইপ, জলের ট্যাংক, বোতল, বালতি, জানলার নেট, তড়িৎ-পরিবাহী তারের আচ্ছাদন ইত্যাদি প্রস্তুতিতে পলিথিন ব্যবহৃত হয়।

পলিভিনাইল ক্লোরাইড (PVC) -এর মনোমারের নাম ও সংকেত লেখো। PVC -এর ব্যবহার উল্লেখ করো।

পলিভিনাইল ক্লোরাইড (PVC) -এর মনোমার হল ভিনাইল ক্লোরাইড এবং এর সংকেত CH2=CHCI।

PVC -এর ব্যবহার – বৈদ্যুতিক তার ও কেলের আচ্ছাদন, পাইপ, জলের ট্যাংক, রেইন কোট, রেফ্রিজারেটারের ভেতরের অংশ, কৃত্রিম মেঝে, হাত ব্যাগ, ক্ষয়কারী পদার্থ স্থানান্তরণের জন্য ব্যবহৃত পাইপ ইত্যাদি প্রস্তুতিতে PVC ব্যবহৃত হয়।

পলিটেট্রাফ্লুরোইথিলিন (PTFE) বা টেফলনের মনোমারের নাম ও সংকেত লেখো। টেফলনের ব্যবহার উল্লেখ করো।

টেফলনের মনোমার হল টেট্রাফ্লুরোইথিলিন এবং এর সংকেত F2C=CF2

টেফলনের ব্যবহার – নন্-স্টিক বাসনপত্র তৈরিতে, বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের অন্তরক পদার্থ হিসেবে, রাসায়নিক পদার্থ বহনকারী পাইপ, ট্যাংক ও রসায়নাগারের বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরিতে টেফলন ব্যবহৃত হয়।

পলিটেট্রাফ্লুরোইথিলিন (PTFE) বা টেফলনের মনোমারের নাম ও সংকেত লেখো। টেফলনের ব্যবহার উল্লেখ করো।

জৈববিশ্লেষ্য বা জৈবভঙ্গুর (biodegradable) পলিমার বলতে কী বোঝ? উদাহরণ দাও।

জৈববিশ্লেষ্য বা জৈবভঙ্গুর পলিমার – যেসব পলিমার প্রাকৃতিক পরিবেশে উপস্থিত বিভিন্ন অণুজীব (যেমন – ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ইত্যাদি) নিঃসৃত এনজাইম বিশ্লিষ্ট হয়ে সরল অণুতে (যেমন – CO2, H2O ইত্যাদি) রূপান্তরিত হয়, তাদের জৈববিশ্লেষ্য পলিমার বলে।

উদাহরণ – উদ্ভিজ্জ বা প্রাণীজ উৎস থেকে প্রাপ্ত জৈব পলিমারসমূহ, যেমন – কার্বোহাইড্রেট (সেলুলোজ, স্টার্চ), প্রোটিন, নিউক্লিক অ্যাসিড ইত্যাদি জৈববিশ্লেষ্য পলিমার।

জৈব অবিশ্লেষ্য বা জৈব অভঙ্গুর (nonbiodegradable) পলিমার বলতে কী বোঝ? উদাহরণ দাও।

জৈব অবিশ্লেষ্য বা জৈব অভঙ্গুর পলিমার – যেসব পলিমার প্রাকৃতিক পরিবেশে উপস্থিত বিভিন্ন অণুজীব (যেমন – ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ইত্যাদি) দ্বারা সরল যৌগের অণুতে বিশ্লিষ্ট হয় না, তাদের জৈব অবিশ্লেষ্য পলিমার বলে। উদাহরণ – কৃত্রিম পলিমারসমূহ, যেমন – পলিথিন, PVC, টেফলন, পলিস্টাইরিন ইত্যাদি জৈব অবিশ্লেষ্য।

জৈব অবিশ্লেষ্য কৃত্রিম পলিমারের পরিবর্তে প্রাকৃতিক পলিমারের ব্যবহার কীভাবে পরিবেশ দূষণ কমাতে পারে?

জৈব অবিশ্লেষ্য কৃত্রিম পলিমারের যথেচ্ছ ব্যবহারের ফলে পরিবেশ দূষিত হয়। কম খরচে জৈববিশ্লেষ্য পলিমারের উৎপাদন সম্ভব না হওয়া পর্যন্ত তুলো, কাঠ, কাগজ, পাট জাতীয় প্রাকৃতিক পলিমার ব্যবহারের উপর জোর দিতে হবে। প্যাকেজিং -এর কাজে পাট ও কাগজের ব্যবহার বাড়াতে হবে। পণ্য পরিবহণের জন্য প্লাস্টিকের বস্তার পরিবর্তে পাটের তৈরি বস্তা ব্যবহার করতে হবে। এগুলি জৈববিশ্লেষ্য হওয়ায় পরিবেশের কোনো ক্ষতি হয় না।

জৈব অবিশ্লেষ্য কৃত্রিম পলিমার বর্জ্যের রিসাইক্লিং দ্বারা কীভাবে পরিবেশ দূষণ রোধ করা সম্ভব?

জৈব অবিশ্লেষ্য কৃত্রিম পলিমারঘটিত বর্জ্য পদার্থগুলিকে পরিবেশে ছড়িয়ে পড়তে না দিয়ে তাদের সংগ্রহ করে রিসাইক্লিং পদ্ধতিতে রি-মোল্ড করে পুনরায় বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তৈরির কাজে ব্যবহার করা হলে পরিবেশ দূষিত হবে না।

ইথাইল অ্যালকোহলের প্রদত্ত ভৌত ধর্মগুলি সম্পর্কে আলোচনা করো – (1) বর্ণ, (2) গন্ধ, ()3 স্বাদ, (4) প্রকৃতি, (5) দাহ্যতা, (6) জলে দ্রাব্যতা।

ইথাইল অ্যালকোহলের প্রদত্ত ভৌত ধর্মগুলি নিম্নরূপ –

  1. বর্ণ – বর্ণহীন তরল।
  2. গন্ধ – সুমিষ্ট গন্ধযুক্ত।
  3. স্বাদ – উগ্র স্বাদযুক্ত।
  4. প্রকৃতি – প্রশম প্রকৃতির।
  5. দাহ্যতা – দাহ্য প্রকৃতির তরল।
  6. জলে দ্রাব্যতা – যে-কোনো অনুপাতে জলে দ্রবীভূত হয়।

নির্জল ইথানলকে অতিরিক্ত পরিমাণ গাঢ় H2SO4 -এর সঙ্গে মিশিয়ে 170°C উষ্ণতায় উত্তপ্ত করলে কী ঘটবে সমীকরণসহ লেখো। অতিরিক্ত H2SO4 -এর পরিবর্তে অতিরিক্ত ইথানলসহ বিক্রিয়াটি সম্পন্ন করলে একই পদার্থ উৎপন্ন হবে কি?

নির্জল ইথানলকে অতিরিক্ত পরিমাণ গাঢ় H2SO4 -এর সঙ্গে মিশিয়ে 170°C উষ্ণতায় উত্তপ্ত করলে এটি নিরুদিত হয়ে ইথিন বা ইথিলিন উৎপন্ন হয়।

CH3CH2OH170°Cগাঢ় H2SO4,(অতিরিক্ত)CH2=CH2(ইথিন)+H2O

অতিরিক্ত H2SO4 -এর পরিবর্তে অতিরিক্ত ইথানল ব্যবহার করে 140°C উষ্ণতায় বিক্রিয়াটি সংঘটিত করলে ইথিনের পরিবর্তে ডাইইথাইল ইথার উৎপন্ন হয়।

CH3CH2OH+HOCH2CH3গাঢ় H2SO4140°CCH3CH2OCH2CH3+H2O

অ্যাসিটিক অ্যাসিডের বর্ণ, গন্ধ, লিটমাস কাগজের ওপর এর ক্রিয়া ও জলে দ্রাব্যতা উল্লেখ করো। অ্যাসিটিক অ্যাসিডের ক্ষারগ্রাহিতা কত?

অ্যাসিটিক অ্যাসিড বর্ণহীন, ঝাঁজালো গন্ধযুক্ত তরল যা নীল লিটমাসকে লাল করে। এটি যে-কোনো অনুপাতে জলে দ্রাব্য।

অ্যাসিটিক অ্যাসিড (CH3COOH) অণুতে একটিমাত্র প্রতিস্থাপনযোগ্য H -পরমাণু থাকায় এর ক্ষারগ্রাহিতা 1।

অ্যাসিটিক অ্যাসিডকে সোডিয়াম হাইড্রক্সাইড দ্রবণের সঙ্গে বিক্রিয়া করালে কী উৎপন্ন হবে সমীকরণসহ লেখো।

অ্যাসিটিক অ্যাসিডের সঙ্গে সোডিয়াম হাইড্রক্সাইড দ্রবণের বিক্রিয়ায় সোডিয়াম অ্যাসিটেট বা সোডিয়াম ইথানোয়েট (CH3COONa) লবণ ও জল উৎপন্ন হয়।

CH3COOH + NaOH → CH3COONa + H2O

অ্যাসিটিক অ্যাসিডের সঙ্গে সোডিয়াম বাইকার্বনেটের বিক্রিয়ায় কী উৎপন্ন হয় সমীকরণসহ লেখো।

অ্যাসিটিক অ্যাসিড (CH3COOH) -এর সঙ্গে সোডিয়াম বাইকার্বনেট (NaHCO3) -এর বিক্রিয়ায় সোডিয়াম অ্যাসিটেট, কার্বন ডাইঅক্সাইড ও জল উৎপন্ন হয়। বিক্রিয়া-মিশ্রণ থেকে বুদ্বুদ আকারে CO2 গ্যাস নির্গত হয়।

CH3COOH + NaHCO3 → CH3COONa + CO2↑ + H2O

সোডিয়াম বাইকার্বনেট ব্যবহার করে, কীভাবে ইথনাল ও অ্যাসিটিক অ্যাসিডের মধ্যে পার্থক্য করবে?

ইথানলের সঙ্গে সোডিয়াম বাইকার্বনেটের কোনোরূপ বিক্রিয়া সংঘটিত হয় না। কিন্তু অ্যাসিটিক অ্যাসিডের সঙ্গে সোডিয়াম বাইকার্বনেটের বিক্রিয়ায় বুদ্বুদ আকারে CO2 নির্গত হয়।

C2H5OH + NaHCO3 → কোনো বিক্রিয়া ঘটে না,
CH3COOH + NaHCO3 → CH3COONa + CO2 + H2O

এস্টারিফিকেশন কাকে বলে? অ্যাসিটিক অ্যাসিডের সঙ্গে ইথাইল অ্যালকোহলের এস্টারিফিকেশন বিক্রিয়াটি সমীকরণসহ বর্ণনা করো।

উপযুক্ত অনুঘটক, যেমন – গাঢ় H2SO4 বা শুষ্ক HCl -এর উপস্থিতিতে কার্বক্সিলিক অ্যাসিড জাতীয় যৌগের সঙ্গে অ্যালকোহলের বিক্রিয়ায় এস্টার যৌগ ও জল উৎপন্ন হওয়ার বিক্রিয়াকে এস্টারিফিকেশন বলে।

গাঢ় H2SO4 -এর উপস্থিতিতে অ্যাসিটিক অ্যাসিড (CH3COOH) ও নির্জল ইথাইল অ্যালকোহল (CH3CH2OH) -এর মিশ্রণকে উত্তপ্ত করলে পাকা কলার গন্ধবিশিষ্ট ইথাইল অ্যাসিটেট (CH3COOCH2CH3) নামক এস্টার ও জল উৎপন্ন হয়।

CH3COOH+CH3CH2OHগাঢ় H2SO4,CH3COOH2CH3+H2O

পানীয়রূপে ইথাইল অ্যালকোহল ব্যবহারের ফলে কী ধরনের শারীরবৃত্তীয় প্রভাব দেখা দিতে পারে?

অল্পমাত্রায় ইথাইল অ্যালকোহলের সেবন স্নায়বিক উত্তেজনা সৃষ্টি করলেও বেশিমাত্রায় গ্রহণ করলে বিভিন্ন শারীরিক উপসর্গ দেখা যায়, যেমন – মাথা ধরা, ঝিমুনি, কাজে অনীহা, কথা জড়িয়ে যাওয়া ইত্যাদি। বেশিমাত্রায় নিয়মিত ইথানল সেবনের ফলে মাদকাসক্তি দেখা দেয়, যার ফলে লিভার ও কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।

মিথানলের বিষক্রিয়ার প্রভাব সংক্ষেপে আলোচনা করো।

মিথানল খুবই বিষাক্ত পদার্থ। সামান্য পরিমাণে মিথানল সেবনও খুবই বিপজ্জনক। এটি লিভারকোশে জারিত হয়ে ফর্ম্যালডিহাইডে পরিণত হয় যা কোশ গঠনকারী উপাদানসমূহের সাথে দ্রুত বিক্রিয়া করে প্রোটোপ্লাজমকে তঞ্চিত করে। তাছাড়া মিথানল অপটিক নার্ভকে ক্ষতিগ্রস্ত করে অন্ধত্ব ঘটায়। দেহে বেশিমাত্রায় মিথানল প্রবেশ করলে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।

মেথিলেটেড স্পিরিট বা ডিনেচার্ড স্পিরিট কাকে বলে? এর ব্যবহার লেখো।

ইথাইল অ্যালকোহলের মধ্যে বিষাক্ত মিথাইল অ্যালকোহল (প্রায় 10%) এবং সামান্য উৎকট স্বাদযুক্ত পদার্থ, যেমন – পিরিডিন, কপার সালফেট, ন্যাপথা প্রভৃতি মিশিয়ে পানের অযোগ্য যে মিশ্রণ তৈরি করা হয়, তাকে মেথিলেটেড স্পিরিট বা ডিনেচার্ড স্পিরিট বলে।

ব্যবহার – পেন্ট ও বার্নিশের দ্রাবকরূপে, জ্বালানি হিসেবে এবং স্টোভ ধরানোর জন্য মেথিলেটেড স্পিরিট ব্যবহৃত হয়।


আমরা আমাদের আর্টিকেলে দশম শ্রেণীর ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায়ের ‘পদার্থের ভৌত রাসায়নিক ধর্মসমূহ‘ থেকে ‘জৈব রসায়ন’ এর কিছু সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো দশম শ্রেণীর ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য বা চাকরির পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রশ্নগুলি দশম শ্রেণীর পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায় দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা হলে, আপনারা আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। তাছাড়া নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Share via:

মন্তব্য করুন