নবম শ্রেণি – বাংলা – চন্দ্রনাথ (গল্প) তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

Gopi

চন্দ্রনাথ তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা একটি বিখ্যাত উপন্যাস। উপন্যাসটিতে তারাশঙ্কর বাংলার গ্রামীণ সমাজের একটি জীবন্ত চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন। উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র চন্দ্রনাথ একজন প্রতিভাবান কিশোর। কিন্তু তার মধ্যে রয়েছে অহংকার ও যশ-আকাঙ্ক্ষা। এই অহংকার ও যশ-আকাঙ্ক্ষার কারণে সে স্কুলের পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করে, তার দাদা ও স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সাথে বিরোধে জড়িয়ে পড়ে এবং শেষ পর্যন্ত নিরুদ্দেশে চলে যায়।

নবম শ্রেণি – বাংলা – চন্দ্ৰনাথ 1

লেখক পরিচিতি

ভূমিকা – তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা সাহিত্যের অন্যতম খ্যাতিমান কথাসাহিত্যিক, ঔপন্যাসিক ও গল্পলেখক।
জন্ম ও শৈশব – বীরভূম জেলার লাভপুর গ্রামের জমিদার বংশে ১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দের ২৪ জুলাই (৮ শ্রাবণ, ১৩০৫ বঙ্গাব্দ) তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম হয়। তাঁর বাবার নাম হরিদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, মায়ের নাম প্রভাবতী দেবী। তারামায়ের কৃপায় সন্তান লাভ করেন বলে বাবা-মা পুত্রের নাম রাখেন তারাশঙ্কর।
ছাত্রজীবন – লাভপুরের যাদবলাল হাই স্কুল থেকে তিনি ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। তারপর কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে আইএ-তে ভরতি হন। এইসময় ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায় পাঠ অসমাপ্ত রেখে তিনি গ্রামে ফিরে যান। পরে ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে সাউথ সুবার্বন কলেজে ভরতি হন তিনি। কিন্তু খারাপ স্বাস্থ্যের কারণে সেখানেও তিনি পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি।
ব্যক্তিজীবন – প্রবেশিকা পরীক্ষার আগেই তারাশঙ্করের বিবাহ হয় লাভপুরের ধনী জমিদার যাদবলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাতনি উমাশশীর সঙ্গে। সমকালীন রাজনীতি ও বিপ্লবী দলের সঙ্গে তারাশঙ্করের যোগাযোগ থাকায় তাঁর ওপর পুলিশের নজরও ছিল। ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে তিনি স্ত্রী ও পুত্রকন্যা – সহ কলকাতায় চলে আসেন এবং সাহিত্যকেই জীবিকা হিসেবে বেছে নেন।
সাহিত্যজীবন – তারাশঙ্করের গল্প – উপন্যাসের মূল উপজীব্য হল বীরভূমের মাটি ও মানুষ। সেখানকার আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্য, সামাজিক পটপরিবর্তনের বিভিন্ন চিত্র স্থান পেয়েছে তাঁর রচনায়। গ্রামজীবনের ভাঙনের পাশাপাশি নাগরিক জীবনের বিকাশের কথাও ফুটে উঠেছে তাঁর লেখাগুলিতে। তারাশঙ্করের প্রথম গল্প রসকলি কল্লোল পত্রিকার ১৩৩৪ বঙ্গাব্দের ফাল্গুন সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। কল্লোল, কালিকলম, উত্তরা, উপাসনা, বঙ্গশ্রী, প্রবাসী প্রভৃতি পত্রিকায় তাঁর ছোটোগল্প প্রকাশিত হত। বেশ কিছু কালজয়ী উপন্যাস ও অসংখ্য ছোটোগল্প তিনি আমাদের উপহার দিয়ে গেছেন। তাঁর কয়েকটি বিশিষ্ট ছোটোগল্প হল রসকলি, ডাইনি, তারিণী মাঝি, জলসাঘর, অগ্রদানী, ডাকহরকরা, বেদেনী প্রভৃতি এবং কয়েকটি উল্লেখযোগ্য উপন্যাস হল — চৈতালী ঘূর্ণি, রাইকমল, ধাত্রীদেবতা, কালিন্দী, কবি, গণদেবতা, পঞ্চগ্রাম, মন্বন্তর, হাঁসুলী বাঁকের উপকথা, সন্দীপন পাঠশালা, সপ্তপদী, নাগিণী কন্যার কাহিনী, আরোগ্য নিকেতন, রাধা, নিশিপদ্ম, কীর্তিহাটের কড়চা, গন্না বেগম প্রভৃতি।
সম্মান ও স্বীকৃতি – হাঁসুলী বাঁকের উপকথা উপন্যাসের জন্য তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় শরৎ স্মৃতি পুরস্কার লাভ করেন। আরোগ্য নিকেতন উপন্যাসের জন্য রবীন্দ্র পুরস্কার এবং সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি। এ ছাড়াও তিনি গণদেবতা উপন্যাসের জন্য জ্ঞানপীঠ পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে তিনি পদ্মশ্রী এবং ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে পদ্মভূষণ সম্মানে ভূষিত হন।
জীবনাবসান – ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ১৪ সেপ্টেম্বর এই মহান কথাসাহিত্যিকের জীবনাবসান হয়।

উৎস

পাঠ্যাংশটি তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের আগুন উপন্যাসের প্রথমাংশের সম্পাদিত রূপ। এই অংশে যে সংস্কারবর্জিত, বলিষ্ঠ, আত্মমর্যাদা – সম্পন্ন, তেজস্বী, অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে ওঠা যে চন্দ্রনাথ চরিত্রের দেখা পাওয়া যায়, তাঁর শৈশবের সঙ্গে সমালোচকেরা যোগভ্রষ্ট উপন্যাসের নায়ক সুদর্শন চরিত্রের শৈশবের সঙ্গে চন্দ্রনাথের শৈশবের মিল লক্ষ করেছেন।

রচনাপ্রসঙ্গ

১৩৪৩ বঙ্গাব্দের ৯ শ্রাবণ – ২১ কার্তিক পর্যন্ত দেশ পত্রিকায় তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালপুরুষ উপন্যাসটি ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়। গ্রন্থাকারে প্রকাশের সময় এই কালপুরুষ উপন্যাসেরই নাম হয় আগুনআগুন উপন্যাসের প্রথম সংস্করণ প্রকাশিত হয় সেপ্টেম্বর, ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে, প্রকাশক – রঞ্জন পাবলিশিং হাউস। বেঙ্গল লাইব্রেরি-র মুদ্রিত তালিকা অনুসারে আগুন তারাশঙ্করের প্রকাশিত অষ্টম গ্রন্থ। তাঁর প্রথম যুগের অন্যতম বিখ্যাত এই উপন্যাসটির ক্ষীণ সূত্রের সন্ধান আমার কালের কথা, বিচিত্র, কৈশোর – স্মৃতি প্রভৃতি গ্রন্থে পাওয়া যায়। আমার সাহিত্য জীবন – এর প্রথম খণ্ডে তারাশঙ্কর তাঁর প্রথম জীবনের সাহিত্যরচনার পরিবেশটির উল্লেখ করেছেন —
উনিশশো তেত্রিশ সালে ওই মনোহর পুকুর সেকেন্ড লেনে একখানি পাকা দেওয়াল টিনের ছাউনিঘর ভাড়া করলাম। সাহিত্যিক জীবনের ভূমিকা – পর্ব শেষ করে পুরোদস্তুর সাহিত্যিক জীবন শুরু হল। মেঝের উপর শতরঞ্জি পেতে, স্যুটকেশ টেনে সেইটেই রাইটিং ডেস্ক হিসেবে ব্যবহার করতাম। সকালবেলা গৃহকর্ম সেরে লিখতে বসতাম, বেলা বারোটা নাগাদ স্নান সেরে লেখা বগলে বেরিয়ে যে কোন পাইস হোটেলে খেয়ে নিয়ে কাগজের আপিসে হাজির হতাম। বেলা আড়াইটে – তিনটে নাগাদ প্রথম দিকে বঙ্গশ্রী আপিসে এবং সজনীকান্তের বঙ্গশ্রী’র সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের পর শনিবারের চিঠি-র আপিসে এসে — খান দুই-তিন চেয়ার জুড়ে তারই উপর আধঘণ্টা পঁয়তাল্লিশ মিনিট ঘুমিয়ে নিতাম। বেলা পাঁচটা ছটা পর্যন্ত আড্ডা দিয়ে বাসায় ফিরতাম।
এই ঘরখানিতেই কাটিয়েছিলাম প্রায় দেড় বছর। এরই মধ্যে অনেকগুলি ভালো গল্প এবং একখানি উপন্যাস লিখেছিলাম। শ্মশান-বৈরাগ্য, ছলনাময়ী, মধুমাস্টার, ঘাসের ফুল, ব্যাধি, রঙীন চশমা, জলসাঘর, রায়-বাড়ি, টহলদার, আখড়াইয়ের দীঘি, ট্যারা, তারিণী মাঝি, প্রতীক্ষা — আরও দু-চারটে গল্প এখানেই লিখেছিলাম। এই সময় আরও একটি গল্প লিখেছিলাম। নুটু মোক্তারের সওয়াল — দুই পুরুষে’র বীজ। আরেকটি গল্প লাভপুরে লিখেছিলাম — নারী ও নাগিনী, পূজা সংখ্যা দেশে প্রকাশিত হয়েছিল। আগুন উপন্যাসও এই ঘরে লেখা। তবে আগুনে’র খসড়া তৈরি করেছিলাম বেহার প্রদেশের মগমা নামক স্থানের বেহার ফায়ার ব্রিক্‌স্ কারখানায় — আমার পিসতুতো ভাইয়ের বাসায়।

বিষয়সংক্ষেপ

গল্পকথক নরেশ ওরফে নরু গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র চন্দ্রনাথের স্কুলের সহপাঠী। স্কুলজীবন শেষ হওয়ার বহু বছর পরে একদিন সারকুলার রোডের সমাধিক্ষেত্র থেকে বেরিয়ে কথকের মনে ভেসে ওঠে চন্দ্রনাথের কথা। কালপুরুষ নক্ষত্রের মতো বিশাল আকৃতি নিয়ে দৃপ্তভঙ্গিতে সে যেন জীবনের পথে হেঁটে চলেছে। কথকের স্মৃতির আয়নায় ভেসে ওঠে ছোট্ট একটি গ্রামে কাটানো তাঁদের জীবনের পুরোনো অধ্যায়ের কথা। দীর্ঘাকৃতি সবল সুস্থদেহ নির্ভীক দৃষ্টির কিশোর চন্দ্রনাথের ছবি ফুটে ওঠে তাঁর মনে। উত্তেজনায় তার মধ্যকপালের শিরা ফুলে ত্রিশূল চিহ্নের আকার ধারণ করত। এই চন্দ্রনাথ তার স্কুলকে এক প্রচণ্ড আঘাত দিয়েছে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে দ্বিতীয় পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করার চিঠি দিয়ে। কোনোদিনও সেকেন্ড না হওয়া চন্দ্রনাথ তার দ্বিতীয় হওয়াকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি। তার মনে ধারণা হয় প্রথম স্থানাধিকারী হীরুর কাকা স্কুলের সেক্রেটারি বলেই সে প্রথম হয়েছে। তাই সে ঘরে বসে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় স্কুলের ফল নিজে তৈরি করে এবং তার সাপেক্ষে স্কুলের ফলাফলও তৈরি করে। চন্দ্রনাথের দাদা পুরস্কার প্রত্যাখ্যানের চিঠি প্রত্যাহারের জন্য এবং প্রধান শিক্ষকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার জন্য তাকে নির্দেশ দেয়। কিন্তু চন্দ্রনাথ তাতে রাজি না হওয়ায় তাদের সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটে। কিন্তু তাতেও চন্দ্রনাথের কোনো পরিবর্তন ঘটে না। বরং এটা তার পক্ষে ভালো হয়েছে বলেই সে মনে করে। সে হীরুর কাকার স্পেশাল প্রাইজের প্রস্তাবও ফিরিয়ে দেয় বিষয়টা তার পক্ষে অপমানজনক বলে। এমনকি স্কুলের সঙ্গে
সম্পর্কও সে ঘুচিয়ে দেয়। হেডমাস্টারমশাইকেও সে উত্তর করে আসে যে, গুরুদক্ষিণার যুগ আর নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার ফল বেরোলে দেখা যায় চন্দ্রনাথ পাঁচশো পঁচিশের কম পেয়েছে এবং তার হিসাবমতোই দশটি ছেলে ফেল করেছে আর কথকও তৃতীয় বিভাগে পাস করেছেন। শুধু হীরু অপ্রত্যাশিতভাবে চন্দ্রনাথকে পিছনে ফেলে স্কলারশিপ পেয়েছে। হীরুর বাড়িতে প্রীতিভোজের অনুষ্ঠান হয়। এই উপলক্ষ্যে বাহারি চিনা লণ্ঠন ও রঙিন কাগজের মালায় তাদের আমের বাগান সাজানো হয়। বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিও সেখানে নিমন্ত্রিত হন। কিন্তু নিমন্ত্রণ পেলেও চন্দ্রনাথ সেখানে যায় না। বরং চিঠি লিখে বলে দেয় যে, স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য এমন উৎসব হীরু না করলেই পারত, কারণ স্কলারশিপ পাওয়া এত বড়ো কিছুও নয়। চিঠিটি হীরু স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে নিজের কাছে রেখে দেয়। নিরুদ্দেশে চলে যায় চন্দ্রনাথ। কথক কল্পনা করেন পথ – প্রান্তরকে পিছনে ফেলে লাঠির প্রান্তে পোঁটলা বেঁধে জনহীন পথে একলা চলেছে চন্দ্রনাথ। তার মাথার ওপরে নীল আকাশে ছায়াপথ এবং পাশে কালপুরুষ নক্ষত্র চলেছে।

নামকরণ

চন্দ্রনাথ গল্পটির চরিত্রপ্রধান নামকরণের উদাহরণ। প্রায় সমবয়সি তিনটি চরিত্রের যে কাহিনি এখানে বর্ণনা করা হয়েছে সেখানে চন্দ্রনাথকেই পাওয়া যায় মুখ্য ভূমিকায়। তার শ্রেষ্ঠত্বের অহংকার, যশ-আকাঙ্ক্ষা ইত্যাদিই কাহিনিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে। স্কুলের পরীক্ষায় জীবনে প্রথমবার দ্বিতীয় হওয়ার কারণে সেই পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করে স্কুলে চিঠি দেওয়া, প্রত্যাখ্যানের চিঠি ফিরিয়ে নেওয়া ও ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে দাদার নির্দেশকেও অমান্য করা, এমনকি এর জন্য দাদার সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিন্ন হওয়া — কাহিনির উল্লেখযোগ্য প্রতিটি ঘটনার কেন্দ্রেই চন্দ্রনাথ রয়েছে। এমনকি হীরুর স্কলারশিপ পাওয়া বা তার জন্য উৎসবের যে প্রসঙ্গ গল্পে এসেছে তারও প্রেক্ষাপটে থেকেছে হীরুর কাছে আরও একবার চন্দ্রনাথের পরাজয়। আর এর প্রতিক্রিয়াতেই নিমন্ত্রণ সত্ত্বেও চন্দ্রনাথ হীরুর বাড়িতে যায়নি বরং তার মতে, স্কলারশিপের জন্য উৎসব যে বেমানান তা সে চিঠি লিখে হীরুকে জানিয়েও গিয়েছে। নিজের অহংকার, মর্যাদাবোধ আর প্রতিভা নিয়ে চন্দ্রনাথ যেভাবে কাহিনির কেন্দ্রে নিজেকে স্থাপন করেছে তা বিচার করলে গল্পের নামকরণ চন্দ্রনাথ যথাযথ ও সার্থক হয়েছে।

চন্দ্রনাথ একটি শিক্ষনীয় উপন্যাস। উপন্যাসটি আমাদের শিখিয়ে দেয় যে, অহংকার ও যশ-আকাঙ্ক্ষা আমাদের জীবনকে ধ্বংস করে দিতে পারে।

JOIN US ON WHATSAPP

JOIN US ON TELEGRAM

Please Share This Article

About The Author

Related Posts

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Tom Loses a Tooth

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

The North Ship

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

Trending Now

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Class 9 – English – His First Flight – Question and Answer

Class 9 – English – A Shipwrecked Sailor – Question and Answer