নবম শ্রেণির বাংলা পাঠ্যপুস্তকের হিমালয় দর্শন প্রবন্ধটি রচনা করেছেন বেগম রোকেয়া। এটি একটি ভ্রমণকাহিনী। পাঠ্যাংশটিতে লেখিকা তার হিমালয় ভ্রমণের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন।
হিমালয় দর্শন প্রবন্ধটির রচয়িতা কে?
হিমালয় দর্শন প্রবন্ধটির রচয়িতা হলেন বেগম রোকেয়া।
হিমালয় দর্শন রচনাংশটি কোন্ নামে কোথায় প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল?
হিমালয় দর্শন রচনাংশটি কূপমণ্ডূকের হিমালয় দর্শন নামে ১৩১১ বঙ্গাব্দে মহিলা পত্রিকার কার্তিক সংখ্যায় প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল।
হিমালয় দর্শন রচনাংশে লেখিকার আলোচ্য বিষয়টি কী?
হিমালয় দর্শন রচনাংশে লেখিকা বেগম রোকেয়ার আলোচ্য বিষয় তাঁর কার্সিয়াং ভ্রমণের অভিজ্ঞতা।
যথা সময় যাত্রা করিয়া শিলিগুড়ি স্টেশনে আসিয়া পঁহুছিলাম। — লেখিকা কোন্ উদ্দেশ্যে শিলিগুড়ি স্টেশনে এসে পৌঁছেছেন?
লেখিকা বেগম রোকেয়া হিমালয়ান রেলগাড়িতে চড়ে কার্সিয়াং যাওয়ার জন্য শিলিগুড়ি স্টেশনে এসে পৌঁছেছেন।
হিমালয় রেল রোড কোথা থেকে আরম্ভ হয়েছে?
হিমালয় রেল রোড শিলিগুড়ি থেকে আরম্ভ হয়েছে।
ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলগাড়ি ও ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলগাড়ি — এই দুটির মধ্যে কোনটি ছোটো ও কোনটি বড়ো?
ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলগাড়ি বড়ো এবং ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলগাড়ি ছোটো।
হিমালয়ান রেলগাড়ি আবার তাহার অপেক্ষাও ছোটো — কার অপেক্ষা ছোটো?
হিমালয়ান রেলগাড়ি ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলগাড়ি অপেক্ষা আকারে ছোটো।
বেশ সুন্দর দেখায়। — হিমালয় দর্শন রচনাংশে লেখিকা কোন্ জিনিসটিকে বেশ সুন্দর দেখায় বলে মন্তব্য করেছেন?
লেখিকা বেগম রোকেয়া ছোটো ছোটো হিমালয়ান রেলগাড়িগুলিকে খেলনা গাড়ির মতো সুন্দর দেখায় বলে মন্তব্য করেছেন।
ক্ষুদ্র গাড়িগুলিকে কীসের মতো দেখতে লাগে?
হিমালয়ান রেলের ক্ষুদ্র গাড়িগুলিকে খেলনাগাড়ির মতো সুন্দর দেখতে লাগে।
হিমালয়ান রেলগাড়ির দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
হিমালয় দর্শন প্রবন্ধে উল্লিখিত হিমালয়ান রেলগাড়ির দুটি বৈশিষ্ট্য হল — 1. গাড়িগুলি খুব ছোটো এবং 2. গাড়িগুলি অত্যন্ত নীচু।
যাত্রীগণ ইচ্ছা করিলে অনায়াসে উঠিতে নামিতে পারেন। – যাত্রীরা কোথা থেকে ওঠানামা করতে পারেন?
আয়তনে বেশ ছোটো এবং খেলনাগাড়ির মতো দেখতে হিমালয়ান রেলগাড়ি থেকে ইচ্ছামতো যাত্রীরা ওঠানামা করতে পারেন।
পথের দুইধারে মনোরম দৃশ্য — মনোরম দৃশ্যটি কী?
শিলিগুড়ি থেকে কার্সিয়াং যাওয়ার পথের দু-দিকে কোথাও অতি উচ্চ পর্বতশৃঙ্গ আবার কোথাও নিবিড় অরণ্য দেখা যায়।
এখনও শীত বোধ হয় না। — সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে কত ওপরে উঠেও লেখিকা শীতবোধ করেননি?
কার্সিয়াং যাওয়ার পথে বেগম রোকেয়া সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় তিন হাজার ফিট ওপরে উঠেও শীতবোধ করেননি।
মেঘের ভিতর দিয়া চলিয়াছি। — কখন লেখিকা মেঘের ভিতর দিয়ে চলেছেন?
রেলগাড়িতে কার্সিয়াং যাওয়ার সময়ে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩০০০ ফিট উচ্চতায় লেখিকার মনে হয়েছে তিনি মেঘের ভিতর দিয়ে চলেছেন।
সহসা নদী বলিয়া ভ্ৰম জন্মে। — কী দেখে নদী বলে ভুল হয়?
কার্সিয়াং যাত্রাকালে ৩০০০ ফিট উচ্চতা থেকে নীচের উপত্যকার সাদা কুয়াশা দেখে লেখিকার নদী বলে ভুল হয়েছে।
সকলই মনোহর। — কীসের কথা বলা হয়েছে?
কার্সিয়াং যাওয়ার পথে গাছ, লতা, ঘাস, পাতা সমস্ত কিছুকেই লেখিকার মনোহর বলে মনে হয়েছে।
প্রাকৃতিক শোভা আরও শতগুণ বৃদ্ধি করিয়াছে। — কীসের জন্য প্রাকৃতিক শোভা আরও শতগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে?
লেখিকার মতে সবুজ চায়ের খেতগুলির জন্য পার্বত্য অঞ্চলের প্রাকৃতিক শোভা যেন আরও শতগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
দূর হইতে সারি সারি চারাগুলি বড়ো সুন্দর বোধ হয়। — কীসের চারাকে বড়ো সুন্দর দেখায়?
দূর থেকে সবুজ রঙের চা গাছের সারিবদ্ধ চারাগুলিকে বড়ো সুন্দর দেখায়।
ধরণীর সীমান্তের ন্যায় দেখায়! – কাকে ধরণির সীমন্তের মতো দেখায়?
দূর থেকে সারিবদ্ধ চা গাছের মধ্য দিয়ে মানুষের চলার সংকীর্ণ পথগুলিকে ধরণীর সীমন্ত বলে মনে হয়।
ইহার সৌন্দর্য বর্ণনাতীত। — কার সৌন্দর্যের কথা বলা হয়েছে?
হিমালয়ান রেলপথ ধরে কার্সিয়াং যাওয়ার সময় লেখিকা অনেকগুলি জলপ্রপাত দেখেছিলেন। তার সৌন্দর্যের কথা বলা হয়েছে।
ইহার সৌন্দর্য বর্ণনাতীত। — কোথা থেকে লেখিকা সেই সুন্দরকে দেখেছেন?
শিলিগুড়ি থেকে কার্সিয়াং যাওয়ার পথে ট্রেন থেকে লেখিকা বেগম রোকেয়া জলপ্রপাতের বর্ণনাতীত সৌন্দর্য দেখেছেন।
ইহারা কোথায় চলিয়াছে! — কখন লেখিকার মনে এরূপ চিন্তার উদয় হয়েছে?
কার্সিয়াং যাওয়ার পথে ট্রেন থেকে অনেকগুলি জলপ্রপাত দেখে লেখিকার মনে এরূপ চিন্তার উদয় হয়েছিল।
একথা সহসা বিশ্বাস হয় কি? – এখানে কোন্ কথা বিশ্বাস করার কথা বলা হয়েছে?
লেখিকার হিমালয়ান রেলপথে দেখা জলপ্রপাতগুলির কোনো একটি বিশাল গঙ্গানদীর উৎস –এ কথা সহসা বিশ্বাস হয় না।
একটি বড়ো ঝরনার নিকট ট্রেন থামিল। — ট্রেন থামার কারণ কী?
লেখিকা বেগম রোকেয়া হিমালয়ান রেলের যে ট্রেনটিতে চড়ে কার্সিয়াং যাচ্ছিলেন, একটি বড়ো ঝরনার কাছে জল পরিবর্তনের জন্য সেটি দাঁড়িয়েছিল।
ট্রেন থামিল। — প্রাথমিকভাবে লেখিকার ট্রেন থামার কারণ হিসেবে কী মনে হয়েছিল?
হিমালয় দর্শন রচনাংশে লেখিকার প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছিল যাত্রীসাধারণ যাতে প্রাণভরে ঝরনাটি দেখতে পায় সে কারণেই ট্রেনটি দাঁড়িয়েছে।
সেই জন্য বোধহয় গাড়ি থামিয়াছে। — কীজন্য গাড়ি থেমেছে বলে লেখিকা ভেবেছিলেন?
যাত্রীসাধারণ যাতে প্রাণভরে জলপ্রপাতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে সেজন্য রেলগাড়ি থেমেছিল বলে মনে করেছিলেন লেখিকা।
লেখিকা কোথায় ঢেঁকিশাকের কথা পড়েছিলেন?
মহিলা নামক পত্রিকায় লেখিকা ঢেঁকিশাকের কথা পড়েছিলেন।
ঢেঁকিশাক কেমন প্রকৃতির বলে লেখিকা জানতেন?
ঢেঁকিশাক ক্ষুদ্র গুল্ম প্রকৃতির বলেই লেখিকা জানতেন।
ভারী আনন্দ হইল। — কী দেখে লেখিকার আনন্দ হল?
কার্সিয়াং – এ লেখিকা তাঁর ভূতত্ত্বগ্রন্থে পড়া ঢেঁকিতরু দেখে খুব আনন্দ পেয়েছিলেন।
কেবল ভূ – তত্ত্ব (Geology) গ্রন্থে পাঠ করিয়াছিলাম — লেখিকা কী পাঠ করেছিলেন?
ভূতত্ত্ব গ্রন্থে লেখিকা পাঠ করেছিলেন যে কার্বোনিফেরাস যুগে ঢেঁকি গুল্ম নয়, বড়ো ঢেঁকি গাছের অস্তিত্ব ছিল।
ঢেঁকিতরুর উচ্চতা কত?
লেখিকা তাঁর হিমালয় দর্শন প্রবন্ধে কার্সিয়াং – এ দেখা ২০-২৫ ফিট উঁচু ঢেঁকি গাছের কথা বলেছেন।
তাই নির্ভয়ে বেড়াইতে পারি – লেখিকা কেন নির্ভয়ে বেড়াতে পারার কথা বলেছেন?
পার্বত্য অঞ্চলের নিবিড় জঙ্গলে বাঘ না থাকায় লেখিকা নির্ভয়ে বেড়াতে পারতেন।
নির্জন বনমধ্যে লেখিকা কী দেখতে পেয়েছিলেন?
নির্জন বনমধ্যে লেখিকা ছিনে জোঁক দেখতে পেয়েছিলেন।
এদেশের স্ত্রীলোকেরা জোঁক দেখিলে ভয় পায় না। – এদেশ বলতে কোন্ দেশকে বোঝানো হয়েছে?
এদেশ বলতে হিমালয়ান পার্বত্য এলাকায় অবস্থিত কার্সিয়াং অঞ্চলকে বুঝিয়েছেন লেখিকা।
লেখিকাদের ভুটিয়া চাকরানির নাম কী?
লেখিকাদের ভুটিয়া চাকরানির নাম ছিল ভালু।
ভুটিয়ানিদের ঘাঘরার বিশেষত্ব কী ছিল?
ভুটিয়ানিরা সাত গজ লম্বা কাপড় ঘাঘরার মতো করে পরে এবং তাদের কোমরে একখানি বস্ত্রখণ্ড জড়ানো থাকে।
সেই পথে অবলীলাক্রমে উঠে। — কোন্ পথের কথা বলা হয়েছে?
পার্বত্য অঞ্চলের প্রস্তরময় বন্ধুর চড়াই পথ যা দেখে সমতলবাসীরা শঙ্কিত হয়, সেই পথ।
রমণীজাতি দুর্বল বলে তাঁদের আর-এক নাম কী?
মহিলা পত্রিকার সম্পাদকের লেখা অনুযায়ী রমণীজাতি দুর্বল বলে তাঁদের আর-এক নাম অবলা।
মহিলা পত্রিকার সম্পাদক মেয়েদের সম্পর্কে একবার কী লিখেছিলেন?
মহিলা পত্রিকার সম্পাদক মেয়েদের সম্পর্কে একবার লিখেছিলেন যে, রমণীজাতি দুর্বল বলে তাদের নাম অবলা।
ভুটিয়ানিরা নিজেদের কী বলে পরিচয় দেয়?
ভুটিয়ানিরা নিজেদের পাহাড়নি বলে পরিচয় দেয়।
ভুটিয়ানিরাও ঐ অবলা জাতির অন্তর্গত না কি? — কাদের অবলা জাতি বলা হয়?
মহিলাদের অবলা জাতি বলা হয়।
ভুটিয়ানিরা কীভাবে পেটের ভাত জোগাড় করে?
পুরুষদের থেকে অর্থসাহায্যের আশা না করে পার্বত্য পথে পাথর বয়ে উপার্জনের মাধ্যমে পেটের ভাত জোগাড় করে ভুটিয়ানিরা।
পুরুষেরা বেশি বোঝা বহন করে না। — কোন্ পুরুষদের কথা বলা হয়েছে?
আলোচ্য উদ্ধৃতাংশে ভুটিয়া পুরুষদের কথা বলা হয়েছে, যারা মহিলাদের বয়ে আনা পাথর বিছিয়ে রাস্তা বানায়।
যেন ইহাদের মতে নীচেকা আদমিই অসভ্য! — কাদের মতে নীচেকা আদমি অসভ্য?
পাহাড়বাসী ভুটিয়ানিদের মতে নীচেকা আদমি অর্থাৎ সমতলবাসীরা অসভ্য।
ইহারা ক্রমশ সদ্গুণরাজি হারাইতেছে। — কাদের, কোন্ সদ্গুণরাজির কথা এখানে বলা হয়েছে?
আলোচ্য উদ্ধৃতাংশে ভুটিয়ানি রমণীদের পরিশ্রমী, কর্মপ্রিয়, সাহসী, সত্যবাদী প্রভৃতি সদ্গুণের কথা বলা হয়েছে।
হিমালয় দর্শন প্রবন্ধটি নবম শ্রেণির বাংলা পাঠ্যপুস্তকের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ। এটি একটি ভ্রমণকাহিনী হলেও এর মধ্যে হিমালয়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও হিমালয়ের মানুষের জীবনযাত্রা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে। নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের এ প্রবন্ধটি ভালোভাবে পড়া উচিত।