নবম শ্রেণী – বাংলা – কলিঙ্গদেশের ঝড়-বৃষ্টি – রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

Mrinmoy Rajmalla

কলিঙ্গদেশ একটি উপকূলীয় অঞ্চল। এই অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টি একটি সাধারণ ঘটনা। ঝড়-বৃষ্টির সময় ঘন কালো মেঘ আকাশকে ঢেকে ফেলে। বিদ্যুৎ চমকায় এবং বাজ পড়ে। প্রবল বাতাস বইতে থাকে। বৃষ্টির ধারা ঝরঝর করে বইতে থাকে। ঝড়-বৃষ্টির ফলে কৃষিকাজ ব্যাহত হয়। ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মানুষ ও পশুপাখির মৃত্যু হয়।

Table of Contents

নবম শ্রেণী - বাংলা - কলিঙ্গদেশের ঝড়-বৃষ্টি - রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশটির নামকরণের তাৎপর্য আলোচনা করো।

ভূমিকা  – কবিকঙ্কণ মুকুন্দ চক্রবর্তীর চণ্ডীমঙ্গল তথা অভয়ামঙ্গল কাব্যের আখেটিক খণ্ড থেকে নেওয়া হয়েছে পাঠ্য কাব্যাংশটি।  কবিকৃত নামকরণে উক্ত অংশটি কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি আরম্ভ থাকলেও সংকলন ক্ষেত্রে সেই নামে ঈষৎ পরিবর্তন করা হয়েছে। এই বিশেষ নামকরণ কতটা যথোপযুক্ত, তা আলোচনা করে দেখা যেতে পারে।

প্রাকৃতিক বর্ণনা – উক্ত কাব্যাংশটির উপজীব্য বিষয় দৈবাদেশে কলিঙ্গরাজ্যে ঘনিয়ে ওঠা তীব্র ঝড়বৃষ্টি এবং সেকারণে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের প্রেক্ষিতে প্রজাসাধারণের জীবনে হঠাৎ নেমে আসা প্রতিকূলতা। প্রলয়কারী ঝড়বাদল, তীব্র মেঘগর্জন, বজ্রপতন ও বন্যার তাণ্ডবে আতঙ্কিত কলিঙ্গবাসী বাড়িঘর ছেড়ে দিগ্‌ভ্রান্তের মতো ছুটে বেড়ায়। তারা দিনকে মনে করে রাত, পথ হারিয়ে  যায় জলমগ্নতায়।  প্রকৃতির পরিচিত রূপ হয়ে ওঠে ভয়াবহ। ধূলার আস্তরণে হারিয়ে যায় সবুজ, খেতের শস্য লুটিয়ে পড়ে খেতে। গর্তবাসীসর্পকুল ত্রস্ত হয়ে ভেসে বেড়ায় জলের উপর। মা চণ্ডীকার আদেশশিরোধার্য করে বীর হনুমান যেন মঠ-অট্টালিকা ভেঙে খানখান করে দেন। চারিদিকে পর্বতসমান বিশাল ঢেউ বয়ে যায়, যার কারণে মানুষের  ঘরবাড়ি সব টলমল করতে থাকে।

নামকরণের সার্থকতা  –  সমগ্র কাব্যাংশটিতে কলিঙ্গ দেশ এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের  ঘটনাটি বর্ণিত হয়েছে। বিধ্বংসী ঝড়বৃষ্টিতে পরিবেশ ও প্রজাদের বিপর্যস্ত অবস্থাটি আলোচ্য কবিতায় লক্ষ করা যায়। অতএব কোনো অন্তর্নিহিত ভাববস্তু নয়, ঘটনাক্রমকেই এই নামকরণের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে। আর বিষয়গতভাবে নামকরণ করা হয়েছে বলেই মূল গ্রন্থের অংশনাম কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি আরম্ভ থেকে আরম্ভ শব্দটি বাদ দিয়ে কেবল কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কথাটিকে এত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কেন-না নির্বাচিত অংশটিতে ঘটনার আরম্ভের আর গুরুত্ব ছিল না।  এক্ষেত্রে প্রদেয় নামটি কবিতানামের মতো গুরুত্ব পেয়েছে এবং তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সুতরাং বিষয়গত দিক থেকে উক্ত নামটি যথার্থ ও সার্থকনামা এ বিষয়ে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই।

কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশ অবলম্বনে প্রজাদেরদুরবস্থার বর্ণনা দাও।

প্রকৃতির বিপর্যয় – মধ্যযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কাহিনি কাব্যকার কবিকঙ্কণ মুকুন্দচক্রবর্তীর কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশে দৈব দুর্বিপাকে ঘনিয়ে আসা ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে কলিঙ্গদেশের প্রজাকুলের দুরবস্থার  নিদারুণ চিত্র অঙ্কিত হয়েছে। দৈবাদেশে কলিঙ্গের আকাশে হঠাৎই মেঘরাশির সঞ্চারের চারপাশে এমন অন্ধকার তৈরি হয়েছিল যার কারণে প্রজারা নিজেদেরই অপ্রত্যক্ষগোচর হয়ে উঠেছিল।

প্রজাদের দুরবস্থা – ঈশান কোণে ছুটে চলা মেঘ সারা আকাশে ছেয়ে ফেলে উত্তরে হাওয়াকে আহ্বান জানিয়েছিল। ঘন ঘন বিদ্যুতের চমক ও উচ্চস্বরে মেঘগর্জনে প্রলয় আশঙ্কা করে প্রজারা বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। ঝড়ের তাণ্ডবে ঘরবাড়ি ছেড়ে দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দিয়েছিল তারা। ভয়ানক এই প্রাকৃতিক দুর্বিপাকে মাঠের শস্য বিনষ্ট হয়ে যাওয়ায় শোকাচ্ছন্ন হয়েছিল প্রজারা। সমগ্র পৃথিবী যেন জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল, জলস্থল একাকার হয়ে গিয়েছিল। তীব্র মেঘগর্জনে কেউ কারও কথা শুনতে পাচ্ছিল না। মুছে গিয়েছিল দিন-রাত্রির  পার্থক্যটুকুও। এমতাবস্থায় বজ্রপাতের ঘনঘটা দেখে কলিঙ্গবাসী বজ্র-নিবারক ঋষি জৈমিনিকে স্মরণ করেছিল একাগ্রে। সূর্যের আলো প্রায় চোখে পড়ছিল না। গর্তবাসী সর্পকুল উঠে এসে জলে ভেসে বেড়াচ্ছিল। মানুষের দুরবস্থার বর্ণনায় কবি বলেন— নিরবধি সাত দিন বৃষ্টি নিরন্তর/আছুক শস্যের কার্য হেজ্যা গেল ঘর। অর্থাৎ টানা সাতদিনের ঘোরতর বর্ষায় শস্যের যারপরনাই ক্ষতি তো হলই, সেইসঙ্গে ঘরবাড়িও বিনষ্ট হয়ে গেল। সবচেয়ে করুণ যে চিত্র অঙ্কিত হয়েছে, তা হল ঘরের চাল বিদীর্ণ করে মুহুর্মুহু শিলাপাত। ঝড়-বৃষ্টি যেন কলিঙ্গের প্রজাসাধারণের জীবনকে প্রলয় মাতনে
বিপর্যস্ত করে তোলে।

কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি – র ফলে শস্য ও বাড়িঘরের  কেমন অবস্থা হয়েছিল?

ভূমিকা –  কবিকঙ্কণ মুকুন্দ চক্রবর্তীর অভয়ামঙ্গল তথা চণ্ডীমঙ্গল। কাব্যের আখেটিক খণ্ড থেকে সংকলিত কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশটিতে দৈবাদেশে ঘনিয়ে ওঠা এক ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা বর্ণিত হয়েছে। কবিবর্ণিত প্রকৃতির এই হঠাৎ পরিবর্তনে কলিঙ্গের প্রজাসাধারণ প্রবল ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল। বাস্তববাদী কবি একদিকে যেমন প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত বাড়িঘর-পথঘাটের চিত্র তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি আলোচ্য কাব্যাংশে রচিত হয়েছে প্রজাদের শস্যক্ষেতের ক্ষয়ক্ষতির খতিয়ান।

নবম শ্রেণী - বাংলা - কলিঙ্গদেশের ঝড়-বৃষ্টি - রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

কবি জানেন কলিঙ্গপ্রজাদের জীবনে ঘরবাড়ির মতোই একান্ত প্রয়োজনীয় হল শস্য, যা তাদের ক্ষুধা নিবৃত্তির উপায়। কবির বর্ণনায় তাই অনিবার্যভাবে এসেছে শস্যপ্রসঙ্গ — ধূলে আচ্ছাদিত হইল যে ছিল হরিত।/উলটিয়া পড়ে শস্য প্রজা চমকিত।।

শস্য ও বাড়িঘরের পরিস্থিতি – আবার অন্যত্র তিনি একই প্রসঙ্গে বলেন আছুক শস্যের কার্য. অর্থাৎ যে শস্য বর্তমান তা বিনষ্ট হল, ঝড়-জলে যেন মাঠের শস্য মাঠেই রয়ে গেল। কলিঙ্গের প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঘরবাড়ির অবস্থাও তথৈবচ। প্রবল বৃষ্টিতে শস্যের মতো ঘরবাড়িধ্বংস হওয়ার পথে। ঘরের চাল বিদীর্ণ করে শিল পড়েছিল মাটিতে, যেমন ভাদ্র মাসে সুপক্ব তাল পড়ে। মঠ, অট্টালিকা সব দুর্যোগের তাণ্ডবে ভেঙে পড়েছিল। চতুর্দিকে প্রবল জলোচ্ছ্বাসে যে পর্বতপ্রমাণ ঢেউ সৃষ্টি হয়েছিল। তার উপর ঘরগুলি টলমল করছিল।

প্রলয় গণিয়া প্রজা ভাবয়ে বিষাদ। – কোন্ দেশের প্রজার কথা বলা হয়েছে? তাদের এমন দুর্দিন কেন তা লেখো।

যে দেশের প্রজা –  মধ্যযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কাহিনিকাব্যকার কবিকঙ্কণ মুকুন্দচক্রবর্তীর কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশেকলিঙ্গরাজ্যের প্রজাদের কথা বলা হয়েছে।

দুর্দিনের কারণ  – দেবী চণ্ডীর নির্দেশে ঈষাণ কোণ থেকে হঠাৎ মেঘ ঘনিয়ে আসে কলিঙ্গরাজ্যে। ক্রমে তা ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র আকাশে। সাতদিন ধরে অবিরত বৃষ্টিধারা আর ঝড়ের তাণ্ডব চলতেই থাকে। যার ফলে দেখা দেয় মহাপ্লাবন। শস্যখেত ডুবে গিয়ে সমাজজীবন বিপর্যস্ত হয়। জল-স্থলের পার্থক্য মুছে যায়, মানুষের ঘরবাড়ি ক্রমে জলমগ্ন হয়ে স্মরণ পড়ে। মনে হয় যেন উত্তুরে বাতাস তীব্র গতিতে ধেয়ে এসে সবকিছুকে পাওয় লন্ডভন্ড করে দেবে। এর সঙ্গে ভয়াবহ বিদ্যুতের চমক, তীব্র মেঘগর্জন, ঘনঘন বজ্রপাত হতে থাকে। কলিঙ্গের প্রজাসাধারণ দিশাহারা হয়ে পড়ে। প্রবল বর্ষণের সঙ্গে নেমে আসা বড়ো বড়ো শিল ঘরের চাল ভেদ করে মেঝেতে এসে পড়ে ভাদ্রের তালের মতো। যেন মনে হয় পুরাণের অষ্ট গজরাজ আট দিক থেকে তাদের শুঁড়ের সাহায্যে বারিবর্ষণ করে চলেছে।

দৈবাদেশে বীর হনুমান যেন তীব্র ঝঞ্ঝার স্বরূপে কলিঙ্গে চালায়  ধ্বংসলীলা। মঠ-অট্টালিকা ভেঙে খানখান হতে থাকে। দৈবাদেশেই নদনদী তুফানে পরিণত হয়ে আগ্রাসী জলস্রোত নিয়ে ধেয়ে আসে ছায় কলিঙ্গের দিকে, ঘরবাড়ি সব পর্বতপ্রমাণ ঢেউ – এর মাথায় টলমল করে দুলতে থাকে। গর্তবাসী সর্পকুলও ভয়ে মাটি ছেড়ে জলের উপর বিদু ভেসে বেড়াতে থাকে। এই দুর্যোগের সময়ে প্রকৃতির ভয়ংকর রূপ দেখে আতঙ্কগ্রস্ত প্রজারা বজ্রনিবারক ঋষি জৈমিনিকে স্মরণ করতে  থাকে। যে প্রকৃতি মানব জীবন ও সৃষ্টিকে ধারণ করে, রক্ষা করে, আজ তার এমন ভয়ানক ধ্বংসকারী প্রতিমূর্তিতে আতঙ্কগ্রস্ত হয়েছে প্রজারা। প্রকৃতির এই ভয়াবহতা তাদের চরম দুর্দিনের কারণ হয়ে ওঠে।

বিপাকে ভবন ছাড়ি প্রজা দিল রড়। — রড় শব্দের অর্থকী? বিপাকের স্বরূপ বিশ্লেষণ করো।

রড় শব্দের অর্থ ছুট বা দৌড়।

প্রকৃতির বিপর্যয় – মধ্যযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কাহিনি কাব্যকার কবিকঙ্কণ মুকুন্দচক্রবর্তীর কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশে দৈব দুর্বিপাকে ঘনিয়ে আসা ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে কলিঙ্গদেশের প্রজাকুলের দুরবস্থার  নিদারুণ চিত্র অঙ্কিত হয়েছে। দৈবাদেশে কলিঙ্গের আকাশে হঠাৎই মেঘরাশির সঞ্চারের চারপাশে এমন অন্ধকার তৈরি হয়েছিল যার কারণে প্রজারা নিজেদেরই অপ্রত্যক্ষগোচর হয়ে উঠেছিল।

প্রজাদের দুরবস্থা – ঈশান কোণে ছুটে চলা মেঘ সারা আকাশে ছেয়ে ফেলে উত্তরে হাওয়াকে আহ্বান জানিয়েছিল। ঘন ঘন বিদ্যুতের চমক ও উচ্চস্বরে মেঘগর্জনে প্রলয় আশঙ্কা করে প্রজারা বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। ঝড়ের তাণ্ডবে ঘরবাড়ি ছেড়ে দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দিয়েছিল তারা। ভয়ানক এই প্রাকৃতিক দুর্বিপাকে মাঠের শস্য বিনষ্ট হয়ে যাওয়ায় শোকাচ্ছন্ন হয়েছিল প্রজারা। সমগ্র পৃথিবী যেন জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল, জলস্থল একাকার হয়ে গিয়েছিল। তীব্র মেঘগর্জনে কেউ কারও কথা শুনতে পাচ্ছিল না। মুছে গিয়েছিল দিন-রাত্রির  পার্থক্যটুকুও। এমতাবস্থায় বজ্রপাতের ঘনঘটা দেখে কলিঙ্গবাসী বজ্র-নিবারক ঋষি জৈমিনিকে স্মরণ করেছিল একাগ্রে। সূর্যের আলো প্রায় চোখে পড়ছিল না। গর্তবাসী সর্পকুল উঠে এসে জলে ভেসে বেড়াচ্ছিল। মানুষের দুরবস্থার বর্ণনায় কবি বলেন — নিরবধি সাত দিন বৃষ্টি নিরন্তর/আছুক শস্যের কার্য হেজ্যা গেল ঘর। অর্থাৎ টানা সাতদিনের ঘোরতর বর্ষায় শস্যের যারপরনাই ক্ষতি তো হলই, সেইসঙ্গে ঘরবাড়িও বিনষ্ট হয়ে গেল। সবচেয়ে করুণ যে চিত্র অঙ্কিত হয়েছে, তা হল ঘরের চাল বিদীর্ণ করে মুহুর্মুহু শিলাপাত। ঝড়-বৃষ্টি যেন কলিঙ্গের প্রজাসাধারণের জীবনকে প্রলয় মাতনে
বিপর্যস্ত করে তোলে।

কলিঙ্গে সোঙরে সকল লোক যে জৈমিনি। – জৈমিনি কে? সোঙরে শব্দের অর্থ কী? কলিঙ্গের প্রজারা কী কারণে জৈমিনিকে স্মরণ করেছিল?

জৈমিনির পরিচয় – কবিকঙ্কণ মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশ থেকে নেওয়া প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে জৈমিনি একজন প্রাচীন ভারতীয় ঋষি বা মুনি। ইনিবেদব্যাস-শিষ্য এবং পূর্ব-মীমাংসা গ্রন্থেরপ্রণেতা। জৈমিনিভারত রচয়িতা হিসেবে তিনি প্রসিদ্ধি অর্জন করেন।

কলিঙ্গে সোঙরে সকল লোক যে জৈমিনি। – জৈমিনি কে সোঙরে শব্দের অর্থ কী কলিঙ্গের প্রজারা কী কারণে জৈমিনিকে স্মরণ করেছিল

আলোচ্য কাব্যাংশে ব্যবহৃত সোঙরে শব্দের অর্থ হল স্মরণ করে।

জৈমিনিকে স্মরণ করার কারণ – প্রবল প্রাকৃতিক দুর্যোগে সমগ্র কলিঙ্গরাজ্য ধ্বংস হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। কলিঙ্গবাসীদের বিশ্বাস ছিল এই চরম দুরবস্থার হাত থেকে ঋষি জৈমিনিই পারেন তাদের রক্ষা করতে।ঈশান কোণে ঘনায়মান কালো মেঘ কিছুক্ষণের মধ্যেই সারা আকাশ ছেয়ে ফেলেছিল। ঘনঘন বিদ্যুতের চমক, বজ্রপাত, প্রবল মেঘগর্জন ভয়াবহ অবস্থা তৈরি করেছিল। ঝড়ের তাণ্ডবের সঙ্গে প্রবল বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট প্লাবন ভাসিয়েছিল চারপাশের জনজীবনকে। কবির কথায় – পরিচ্ছিন্ন নাহিসন্ধ্যা দিবস রজনী।

কলিঙ্গে সোঙরে সকল লোক যে জৈমিনি।

এমন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে কলিঙ্গবাসী আতঙ্কিত, দিশেহারা হয়েছিল। নিরুপায় মানুষ নিজের চরম দুর্দশায় ত্রাতা বা উদ্ধারকর্তাকে স্মরণ করে। এই কারণে তারা ঋষি জৈমিনিকে ধ্বংস থেকে উদ্ধার পাওয়ার আশায় স্মরণ করেছিল।

গর্ত ছাড়ি জলা ভাসিয়া বুলে জলে। কার লেখা, কোন্ রচনার অংশ। ভুজঙ্গ গর্ত ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিল কেন?

প্রশ্নোধৃত অংশটি মধ্যযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি তথা আখ্যানকার কবিকঙ্কণ মুকুন্দ চক্রবর্তীর লেখা কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশের অংশ।

ভুজঙ্গ বেরিয়ে আসার কারণ – দৈবাদেশে কলিঙ্গদেশের উপর অকাল প্রাকৃতিক দুর্যোগের করাল ছায়া নেমে এসেছিল। ঈশান কোণ থেকে ঘন কালো মেঘ উত্থিত হয়ে ক্রমে সমগ্র কলিঙ্গের আকাশকে ছেয়ে ফেলেছিল। মেঘ গর্জন, ভয়ানক বিদ্যুতের চমক আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল। সেইসঙ্গে ঘন ঘন বজ্রপাতে দশদিক কম্পিত হয়ে উঠেছিল। শুরু হয়েছিল প্রবল ঝড়ের তাণ্ডব এবং অকালবর্ষণ। একটানা সাতদিন নিরন্তর বৃষ্টি হওয়ায় দিনরাত্রির প্রভেদ ঘুচে গিয়েছিল, জলস্থলের পার্থক্য মুছে গিয়েছিল। মনে হচ্ছিল অষ্ট-গজরাজ চারি মেঘে তাদের শুঁড় থেকে সমানে বারিবর্ষণ করে চলেছে। জলের স্রোত ক্রমে হয়ে ওঠে পর্বতপ্রমাণ, যার দোলায় দুলতে থাকে মানুষের ঘরবাড়ি। ভুজঙ্গ অর্থাৎ সর্প গর্তবাসী। প্রবল জলোচ্ছ্বাসে তাদের বাসা ডুবে গিয়েছিল, বাসাহারা এই সরীসৃপ তাই গর্ত ত্যাগ করে উঠে আসতে বাধ্য হয়েছিল জলের উপরিভাগে। তারাও ভয়ার্ত এবং দিশাহারা। তাদের জীবনও বিপন্ন। কবি বলছেন, জলে মহী একাকার। তাই মাটি ডুবে থাকার কারণেই ভুজঙ্গ বা সাপ গর্ত ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিল।

নাহি জানি জলস্থল কলিঙ্গ-মণ্ডলে। — বক্তা কে? কোন্ পরিস্থিতিতে তিনি এ কথা বলেছেন?

বক্তা – প্রশ্নোধৃত উদ্ধৃতিটির বক্তা হলেন চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের রচয়িতা স্বয়ং কবিকঙ্কণ মুকুন্দ চক্রবর্তী।

পরিস্থিতি – আলোচ্য কাব্যাংশে কবি প্রাকৃতিক দুর্যোগে জনজীবনের বিপর্যস্ত পরিস্থিতির কথা বলেছেন। কলিঙ্গদেশের আকাশে হঠাৎ ঈশান কোণে মেঘের সঞ্চার হয়। ঘন কালো মেঘ ক্রমে ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র আকাশ জুড়ে। মেঘের ঘনান্ধকারে প্রজাগণ নিজেরাই নিজেদের প্রত্যক্ষের অগোচরে পৌঁছোয়। উত্তরে বাতাস জোরদার হলে, তীব্র বিদ্যুতের চমক ও মেঘগর্জনের সঙ্গে শুরু হয় প্রবল বৃষ্টিপাত। প্রজারা আতঙ্কিত হয় এইভেবে যে, প্রলয়কাল বুঝি ঘনিয়ে এল। কলিঙ্গের শস্যক্ষেত্র নষ্ট হয় ধুলোর আবরণে। সাতদিনের মুষলধারে বৃষ্টিতে প্রবল জলোচ্ছ্বাসে ভেসে যায় শস্যখেত, ঘরবাড়ি। পথঘাট জলেডুবে যায়। মুহুর্মুহু বজ্রপাতের শব্দে অন্যান্য শব্দ শব্দাতীত হয়ে ওঠে। সূর্যালোক হারিয়ে যায় ঘনান্ধকারে। বিষাদগ্রস্ত ও দিশাহারা প্রজারা নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে প্রাণরক্ষার্থে ছুটে বেড়াতে থাকে। নিরুপায় প্রজাদের দেখে কবি এই প্রলয়কালীন পরিস্থিতিতে বলেছেন — পরিচ্ছিন্ন নাহি সন্ধ্যা দিবস রজনী।/কলিঙ্গে সোঙরে সকল লোক যে জৈমিনি। শুধু মানুষই নয় গর্তবাসী সর্পকুল জলের তোড়ে হারিয়েছে নিজের বাসা। তারা গর্ত ছেড়ে ভেসে বেড়াতে থাকে জলে। মহাপ্লাবনে জল ও স্থলের প্রভেদ থাকে না, চারপাশে বিশাল জলের ঢেউ ধ্বংস করতে করতে এগিয়ে চলে। আলোচ্য অংশে কবি বিপর্যস্ত মানুষ ও প্রকৃতির ভয়াল রূপ বর্ণনা করতে গিয়ে প্রশ্নোদ্ধৃত মন্তব্যটি করেছেন।

নিরবধি সাতদিন বৃষ্টি নিরন্তর/ আছুক শস্যের কার্য হেজ্যা গেল ঘর।। – পক্তিটির অর্থ কী? প্রসঙ্গ আলোচনা করো।

পঙ্ক্তির অর্থ – উপরিউক্ত উদ্ধৃতিটি বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগীয় মঙ্গলকাব্য ধারার অন্যতম শ্রেষ্ঠ চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের আখেটিক খণ্ড -র অন্তর্গত কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কবিতাংশ থেকে গৃহীত। উদ্ধৃত পঙ্ক্তিটির অর্থ হল সাতদিন অবিরত বৃষ্টিতে মাঠ থেকে আনা শস্য এবং ঘরবাড়ি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল।

প্রসঙ্গ – সাতদিনের অবিশ্রান্ত বৃষ্টিতে কলিঙ্গদেশে যে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ সৃষ্টি হয়েছিল তার ফলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। কবিতাংশটিতে কবি এই পরিস্থিতির কথাই বলেছেন। ঈশান কোণে ঘনিয়ে আসা কালো মেঘ সমগ্র আকাশে ছড়িয়ে পড়েছিল। উত্তরে হাওয়ার দাপটের পাশাপাশি চলতে থাকে বিদ্যুতের চমক, তীব্র মেঘ গর্জন ও বজ্রপাত। ধুলোর ঝড়ে কলিঙ্গরাজ্যের সমস্ত সবুজ আবৃত হয়েছিল। এরপর শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি। ক্রমে প্লাবনের আশঙ্কা ঘনিয়ে এলে প্রজারা বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে। তারা দিশাহারা হয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে ছুটোছুটি করে। জলের তোড়ে ধ্বংস হয়ে যায় বাড়ি-ঘর। খেত থেকে আনা শস্য নষ্ট হয়ে যায়। জল-স্থল একাকার হয়ে যাওয়ায় গর্তবাসী সর্পকুল বাসা হারিয়ে জলে ভেসে বেড়ায়। সাতদিনের দুর্যোগে আতঙ্কিত প্রজারা উদ্ধারের আশায় জৈমিনি ঋষিকে স্মরণ করেছিল। এই পরিস্থিতিতে জলে নষ্ট হয়ে যাওয়া শস্য ও বাড়িঘর প্রসঙ্গে কবিকঙ্কণ মুকুন্দ চক্রবর্তী আলোচ্য উদ্ধৃতিটি ব্যবহার করেছেন।

চণ্ডীর আদেশ পান। – কে চণ্ডীর আদেশ পান এবং আদেশ পেয়ে তিনি কী করেছিলেন? এখানে হনুমান প্রসঙ্গটি কেন এসেছে বলে তুমি মনে করো? তাঁর অপর এক নাম কী?

উদ্ধৃতাংশটি কবিকঙ্কন মুকুন্দ চক্রবর্তীর কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশ থেকে নেওয়া হয়েছে, এখানে মহাবীর হনুমানের দেবী চণ্ডীর আদেশ পাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

যে আদেশ পান এবং তারপর যা করেন –  আলোচ্য উদ্ধৃতিতে কবি বলেছেন, দেবী চণ্ডীর আদেশ পেয়ে বীর হনুমান লঙ্কাদহনের মতোই ধ্বংসসাধনে ব্রতী হয়েছেন। তিনি প্রবল পরাক্রমে কলিঙ্গরাজ্যের মঠ-অট্টালিকা ভেঙে তছনছ করতে থাকেন।

হনুমানের প্রসঙ্গ আমরা পাই রামায়ণ মহাকাব্যে।

ভারতীয় সংস্কৃতির চিরাচরিত ধারণানুসারে পবনপুত্র হনুমান প্রবল পরাক্রমী। তিনি রামচন্দ্রের পরমভক্ত। রামায়ণে রামচন্দ্রের প্রতি গভীর ভক্তিবশত হনুমান একাই বিশালাকার লঙ্কাপুরী ধ্বংস করেছিলেন। পবনপুত্র হনুমানের পবন তথা অলৌকিক শক্তি বলে ঝড়ের ভয়াবহতা সৃষ্টি করার ক্ষমতা ছিল। আলোচ্য কবিতাংশে কবি সেই ক্ষমতার কথা বলেছেন। মঙ্গলকাব্যের অন্তর্গত চণ্ডীমঙ্গল কাব্যে দেবী চণ্ডীর মাহাত্ম্য প্রচার করা হয়েছিল। সেই কারণে এই সংকলিত কবিতায় দৈবশক্তির অলৌকিক ক্ষমতার কথা রয়েছে। দেবী চণ্ডীর আদেশে বীর হনুমান কলিঙ্গরাজ্যে ভয়াবহ ঝড় সৃষ্টি করেছিলেন। তিনি তাঁর পরাক্রমী শক্তির সাহায্যে মঠ-অট্টালিকা ভেঙে ফেলেছিলেন। কলিঙ্গদেশে হঠাৎ ঘনিয়ে  ওঠা প্রাকৃতিক দুর্যোগ যে দেবী চণ্ডীর ইচ্ছানুসারে হয়েছিল তা বীর কাল হনুমান প্রসঙ্গে সুস্পষ্ট হয়। আলোচ্য কবিতাটি মূল কাব্যের নির্বাচিত পাত ও সংকলিত অংশ হওয়ায় এর আগে চন্ডীর উল্লেখ পাওয়া যায়নি। হনুমান আমরা জানতে পারি কলিঙ্গের বিপর্যস্ত অবস্থা স্বাভাবিক প্রাকৃতিক ঘটনা নয় তা দৈব সৃষ্ট।

বীর হনুমানের অপর নাম মারুতি।

ভাদ্রপদ মাসে যেন পড়ে থাকা তাল। – ব্যাখ্যা করো।

উৎস – মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের মঙ্গলকাব্যধারার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি মুকুন্দ চক্রবর্তী। তাঁর রচিত চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের অন্তর্ভুক্ত কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি শীর্ষক  নির্বাচিত অংশ থেকে উদ্ধৃত চরণটি গ্রহণ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গ – কবি এই অংশটিতে কলিঙ্গরাজ্যে ঘটে যাওয়া প্রাকৃতিক দুর্যোগের বর্ণনা ও তার ভয়ংকর পরিণতির ছবি ফুটিয়েতুলেছেন।

ব্যাখ্যা  – দেবী চণ্ডীর আদেশে কলিঙ্গরাজ্যে শুরু হয়েছিল ভয়ংকর প্রাকৃতির দুর্যোগ। এ দুর্যোগ যেন বিধ্বংসী প্রলয়েরই নামান্তর। আকাশ জুড়ে ঘন মেঘের আচ্ছাদনে, রাজ্যে নেমে এসেছিল ঘোর অন্ধকার। সাতদিনব্যাপী প্রবল বর্ষায় সমগ্র রাজ প্লাবিত, জনজীবন বিপর্যস্ত, বিপুল শস্যহানি ঘটেছিল। সেই সঙ্গে ভয়ানক ঝড় ও বজ্রপাতে বিপন্নতার প্রকাশ আরও ভয়ংকর হয়েছিল। কবি এই অংশে ভয়াবহ শিলাবৃষ্টির বিষয়টিকে উপমা প্রয়োগের মাধ্যমে উল্লেখ করেছেন। প্রচণ্ড শিলাবৃষ্টির ফলে কলিঙ্গরাজ্যের বহু মানুষে বাড়ির বা ঘরের চাল ভেঙে গেছে, এই প্রসঙ্গটি বলার সময় কবি শিলার আকারের বর্ণনা দিয়েছেন ভাদ্রমাসে মাঠে পড়ে থাকা তাল – এর সঙ্গে তুলনা করে। ভাদ্রমাসে তাল পড়ে। তাল আকারে বেশ বড়ো এবং ওজনে যথেষ্ট ভারী হয়। কলিঙ্গরাজ্যে প্রজাদের ঘরের চাল বিদীর্ণ করে যে শিলা মেঝেতে এসে পড়েছিল, কবি বলছেন তার আকার এবং ওজন সেই তালেরই আকৃতির অনুরূপ। এ থেকেই বোঝা যায় সেই রাজ্যে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়াবহতা কতখানি নিদারুণ। শুধু তাই নয়, এইরকম শিলাপাতের ফলে যে ব্যাপক জীবনহানিও ঘটেছে, তা কবি ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন।

কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কবিতায় যে প্রাকৃতিক দুর্যোগের চিত্র অঙ্কিত হয়েছে তার পরিচয় দাও।

উৎস – মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের মঙ্গলকাব্যধারার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি মুকুন্দ চক্রবর্তী। তাঁর রচিত চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের অন্তর্ভুক্ত কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি শীর্ষক  নির্বাচিত অংশ থেকে উদ্ধৃত চরণটি গ্রহণ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গ – কবি এই অংশটিতে কলিঙ্গরাজ্যে ঘটে যাওয়া প্রাকৃতিক দুর্যোগের বর্ণনা ও তার ভয়ংকর পরিণতির ছবি ফুটিয়েতুলেছেন।

ব্যাখ্যা  – দেবী চণ্ডীর আদেশে কলিঙ্গরাজ্যে শুরু হয়েছিল ভয়ংকর প্রাকৃতির দুর্যোগ। এ দুর্যোগ যেন বিধ্বংসী প্রলয়েরই নামান্তর। আকাশ জুড়ে ঘন মেঘের আচ্ছাদনে, রাজ্যে নেমে এসেছিল ঘোর অন্ধকার। সাতদিনব্যাপী প্রবল বর্ষায় সমগ্র রাজ প্লাবিত, জনজীবন বিপর্যস্ত, বিপুল শস্যহানি ঘটেছিল। সেই সঙ্গে ভয়ানক ঝড় ও বজ্রপাতে বিপন্নতার প্রকাশ আরও ভয়ংকর হয়েছিল। কবি এই অংশে ভয়াবহ শিলাবৃষ্টির বিষয়টিকে উপমা প্রয়োগের মাধ্যমে উল্লেখ করেছেন। প্রচণ্ড শিলাবৃষ্টির ফলে কলিঙ্গরাজ্যের বহু মানুষে বাড়ির বা ঘরের চাল ভেঙে গেছে, এই প্রসঙ্গটি বলার সময় কবি শিলার আকারের বর্ণনা দিয়েছেন ভাদ্রমাসে মাঠে পড়ে থাকা তাল – এর সঙ্গে তুলনা করে। ভাদ্রমাসে তাল পড়ে। তাল আকারে বেশ বড়ো এবং ওজনে যথেষ্ট ভারী হয়। কলিঙ্গরাজ্যে প্রজাদের ঘরের চাল বিদীর্ণ করে যে শিলা মেঝেতে এসে পড়েছিল, কবি বলছেন তার আকার এবং ওজন সেই তালেরই আকৃতির অনুরূপ। এ থেকেই বোঝা যায় সেই রাজ্যে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়াবহতা কতখানি নিদারুণ। শুধু তাই নয়, এইরকম শিলাপাতের ফলে যে ব্যাপক জীবনহানিও ঘটেছে, তা কবি ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন।

নবম শ্রেণী – বাংলা – কলিঙ্গদেশের ঝড়-বৃষ্টি – রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর পাঠ্যপুস্তকটি কলিঙ্গদেশে প্রচলিত ঝড়-বৃষ্টি সম্পর্কে একটি বিস্তারিত বর্ণনা প্রদান করে। পাঠ্যপুস্তকটিতে ঝড়-বৃষ্টির বর্ণনা, এর ক্ষতিকারক প্রভাব এবং এর থেকে বাঁচার উপায়গুলি আলোচনা করা হয়েছে।

পাঠ্যপুস্তকটি থেকে আমরা জানতে পারি যে কলিঙ্গদেশ একটি উপকূলীয় অঞ্চল। এই অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টি একটি সাধারণ ঘটনা। ঝড়-বৃষ্টির সময় ঘন কালো মেঘ আকাশকে ঢেকে ফেলে। বিদ্যুৎ চমকায় এবং বাজ পড়ে। প্রবল বাতাস বইতে থাকে। বৃষ্টির ধারা ঝরঝর করে বইতে থাকে। ঝড়-বৃষ্টির ফলে কৃষিকাজ ব্যাহত হয়। ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মানুষ ও পশুপাখির মৃত্যু হয়।

ঝড়-বৃষ্টি একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এটি থেকে বাঁচার জন্য আমাদের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। ঝড়-বৃষ্টির সময় খোলা জায়গায় না থাকা, নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়া, বজ্রপাত থেকে বাঁচার জন্য টিনের ঘর বা গাছের নিচে না থাকা এবং বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

পাঠ্যপুস্তকটি আমাদের ঝড়-বৃষ্টি সম্পর্কে সচেতন হতে এবং এর থেকে বাঁচার উপায়গুলি সম্পর্কে জানতে সাহায্য করে। এটি আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষামূলক সম্পদ।

JOIN US ON WHATSAPP

JOIN US ON TELEGRAM

Please Share This Article

About The Author

Related Posts

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Tom Loses a Tooth

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

The North Ship

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

Trending Now

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Class 9 – English – His First Flight – Question and Answer

Class 9 – English – A Shipwrecked Sailor – Question and Answer