এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন।। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

নবম শ্রেণি – বাংলা – কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি – বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

কলিঙ্গদেশে ঝড়বৃষ্টি কবিতাটি কবিকঙ্কণ মুকুন্দ চক্রবর্তীর রচিত একটি অসাধারণ কবিতা। এই কবিতায় কবি কলিঙ্গদেশে এক ভয়াবহ ঝড়বৃষ্টির বর্ণনা দিয়েছেন। কবিতাটিতে ঝড়বৃষ্টির ভয়ঙ্কর রূপ, এর প্রভাবে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যাঘাত এবং প্রকৃতির বিপর্যয়ের চিত্র সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে।

বাংলা নবম শ্রেণির পাঠ্যক্রমে কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত। এই অধ্যায়ে শিক্ষার্থীদের কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি এবং এর পরিণতি সম্পর্কে শিখানো হয়। এই বিষয়ে শিক্ষার্থীদের পরিচিত করানো হয় কলিঙ্গদেশে কোন মৌসুমে ঝড়-বৃষ্টি হয় এবং তা কেন ঘটে। তাছাড়াও, কীভাবে এই পরিণতি হয় এবং এর প্রভাব কী রকম। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের বাংলা ভাষায় এই বিষয়ে রচনাধর্মী ও বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর দেওয়া হয়। এইগুলো শিক্ষার্থীদের সঠিক ধারণা ও জ্ঞান বৃদ্ধি করে তাদের উন্নয়নে সহায়তা করে।

বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর একটি উন্নয়নমূলক পাঠ্যপুস্তক যা নবম শ্রেণির বাংলা শিক্ষার্থীদের ঝড়-বৃষ্টি বিষয়ে রচনাধর্মী ও বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর সম্পর্কে ধারণা নিয়ে আসে। এই পাঠ্যপুস্তকটি ঝড়-বৃষ্টি বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ ধারণা দেয় এবং প্রশ্ন ও উত্তর বিভিন্ন প্রকারের বিশ্লেষণ এবং রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর উন্নয়ন করে শিক্ষার্থীদের পড়া-লেখার দক্ষতা উন্নয়নে সহায়তা করে।

বাংলা – কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি – বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

প্রলয় গণিয়া প্রজা ভাবয়ে বিষাদ। — কী দেখে প্রজাদের প্রলয় মনে হয়েছিল? এই প্রলয়ের ফলে কী হয়েছিল?

উদ্দিষ্ট দৃশ্য – মুকুন্দ চক্রবর্তীর লেখা কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি নামক কাব্যাংশে কলিঙ্গদেশের আকাশ মেঘে ঢেকে যায়। উত্তর-পূর্ব কোণে মেঘের সঙ্গে দেখা দেয় বিদ্যুৎচমক। চারদিকে মুশলধারায় বৃষ্টি শুরু হয়। এইসব দেখেই প্রজাদের মনে প্রলয়ের আশঙ্কা তৈরি হয়।
প্রলয়ের ফল – কলিঙ্গের আকাশে ঈশান কোণে মেঘ জমা হয়। ঘনঘন বিদ্যুতের ঝলকানি দেখা যায়। দূরদিগন্তে মেঘের গম্ভীর আওয়াজের সঙ্গে শুরু হয় মুশলধারায় বৃষ্টি। বিপদের আশঙ্কায় প্রজারা ঘর ছেড়ে দ্রুত পালাতে থাকে। ঝড়ের দাপটে শস্যখেত এবং সবুজ গাছপালা নষ্ট হয়ে যায়। প্রবল বৃষ্টিতে পথঘাট জলে ডুবে যায়। ঘোর অন্ধকারে দিন-রাত্রির পার্থক্য মুছে যায়। জলমগ্ন রাস্তায় সাপ ভেসে বেড়াতে থাকে। ভীত প্রজারা এই ভয়াবহ দুর্যোগ থেকে রক্ষা পেতে ঋষি জৈমিনিকে স্মরণ করতে থাকে। সাত দিন ধরে একটানা বৃষ্টির ফলে কৃষিকাজ যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ঘরবাড়িও নষ্ট হয়ে যায়। ভাদ্র মাসের তালের মতো বড়ো আকারের শিল ঘরের চাল ভেদ করে পড়তে থাকে। দেবীর আদেশে সমস্ত নদনদী কলিঙ্গের দিকে ছুটে আসে। পর্বতের মতো উঁচু ঢেউয়ের আঘাতে বাড়িঘর ভেঙে পড়ে। দেবী চণ্ডীর আদেশে সৃষ্ট এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে অসহায়, ভীত প্রজারা বিপদের আশঙ্কায় শেষপর্যন্ত কলিঙ্গ ত্যাগ করে চলে যায়।

বিপাকে ভবন ছাড়ি প্রজা দিল রড়। — এখানে কোন্ অঞ্চলের প্রজাদের কথা বলা হয়েছে? কী কারণে তারা বিপাকে পড়েছিল? তাদের পরিণতি কী হল?

উদ্দিষ্ট অঞ্চলের প্রজা – কবিকঙ্কণ মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি’ কাব্যাংশ থেকে নেওয়া আলোচ্য উদ্ধৃতাংশটিতে কলিঙ্গদেশের প্রজাদের কথা বলা হয়েছে।
বিপাকে পড়ার কারণ – কলিঙ্গদেশে ভয়াবহ ঝড়বৃষ্টিতে বিপর্যয় সৃষ্টি হয়। কলিঙ্গের আকাশ ছেয়ে যায় ঘন কালো মেঘরাশিতে। মেঘের গম্ভীর গর্জনের সঙ্গে বিদ্যুতের চমকে কেঁপে ওঠে আকাশ। উত্তরের প্রবল বাতাসে দূর থেকে মেঘের গম্ভীর শব্দ শোনা যায়। প্রবল বৃষ্টির  সঙ্গে ঝড়ের প্রবল তাণ্ডব শুরু হয়। এর ফলে ওখানকার প্রজারা বিপাকে পড়ে ৷
পরিণতি – সাত দিন ধরে ঝড়বৃষ্টির প্রবল তাণ্ডবে কলিঙ্গবাসীর অবস্থা হয় শোচনীয়। প্রাণ বাঁচাতে প্রজারা তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে দ্রুত পালাতে থাকে। ঝড়ের দাপটে সবুজ মাঠ এবং গাছপালা ধুলায় ঢেকে যায়। ঝড়ে খেতের শস্য উপড়ে যাওয়ায় প্রজারা ভয় পায়। রাস্তাঘাট জলমগ্ন হয়। মেঘের ভয়ংকর আওয়াজে প্রজারা কেউ কারও কথা শুনতে পায় না। আতঙ্কিত প্রজারা বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার আশায় ঋষি জৈমিনিকে স্মরণ করতে থাকে। প্রবল বর্ষণে দিন-রাতের পার্থক্য দূর হয়, প্রজারা সূর্যের আলোও দেখতে পায় না। ভাদ্র মাসের তালের মতো অসংখ্য শিল চাল ভেদ করে ঘরের মধ্যে পড়তে থাকে। ঝড়বৃষ্টির এই প্রবল তাণ্ডব কলিঙ্গদেশের জনজীবন বিপন্ন করে তোলে।

ধূলে আচ্ছাদিত হইল যে ছিল হরিত। — যে পরিস্থিতিতে কবি এ কথা লিখেছেন তা উল্লেখ করো। এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তির জন্য কলিঙ্গবাসীরা কী করত?

উদ্ভূত পরিস্থিতি – মুকুন্দ চক্রবর্তীর কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি’ কবিতায় দেবী চণ্ডীর আদেশে কলিঙ্গদেশে সৃষ্ট ভয়ংকর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের বর্ণনা রয়েছে। হঠাৎ কলিঙ্গদেশের আকাশ ঘন কালো মেঘে ঢেকে যায়। দেখা যায় ঘনঘন বিদ্যুতের ঝলকানি। মেঘের গর্জনের সঙ্গে শুরু হয় মুশলধারায় বৃষ্টি। এই সময় প্রবল বাতাসে সবুজ শস্যখেত ধুলোয় ঢেকে যায়। খেতের শস্য ঝড়ের দাপটে উপড়ে যায়, প্রজারা এই বিপর্যয়ে দিশাহারা হয়ে পড়ে। এত প্রবল বর্ষণ শুরু হয় যে মনে হয় চারি মেঘে জল দেয় অষ্ট গজরাজ। বিদুৎ চমকের সঙ্গে সঙ্গে প্রবল বজ্রপাতও হতে থাকে। সাত দিন ধরে একটানা বৃষ্টিপাতে সব কিছু জলমগ্ন হওয়ায় পথ হারিয়ে যায়। মেঘের ঘনঘন গর্জনে কেউ কারোর কথা শুনতে পায় না। দিন এবং রাত্রির পার্থক্যকেও ঘন অন্ধকারে আলাদা করা যায় না। এইভাবে এক বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয় কলিঙ্গদেশ জুড়ে।
কলিঙ্গবাসীর কৃতকাজ – প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টির ফলে সমগ্ৰ কলিঙ্গদেশে নেমে আসে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি। জল-স্থলের পার্থক্য মুছে গিয়ে সব-কিছু একাকার হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে মানুষ বিপন্ন হয়ে পড়ে। অনেকে নিজেদের বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। শঙ্কিত কলিঙ্গবাসী ঋষি জৈমিনিকে স্মরণ করে। কারণ তাদের বিশ্বাস ছিল যে তাঁকে স্মরণ করলে বজ্রপাত বন্ধ হবে এবং কলিঙ্গে শান্তি ফিরে আসবে।

নিরবধি সাত দিন বৃষ্টি নিরন্তর। — কলিঙ্গবাসীদের জীবনে এর কী প্রভাব পড়েছিল আলোচনা করো।

বৃষ্টির প্রভাব – কলিঙ্গদেশে সাত দিনের অবিরাম বৃষ্টিপাতের সঙ্গে চলে ঝড়ের তাণ্ডব। সারা দেশ বন্যায় ডুবে যাওয়ায় শস্যখেতের বিপুল ক্ষতি হয়। বৃষ্টিতে প্রজাদের ঘরবাড়ি জলমগ্ন হয়ে পড়ে। জল-স্থল একাকার হয়ে গিয়ে জনজীবন স্তব্ধ হয়ে পড়ে। সাপ আশ্রয় হারিয়ে জলে ভেসে বেড়ায়। কলিঙ্গদেশের স্থলভূমি জলে পূর্ণ হয়। প্রজারা শঙ্কিত হয়ে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য ঋষি জৈমিনিকে স্মরণ করতে থাকে। ঘন কালো মেঘের আড়ালে সূর্য মুখ লুকোয়, ফলে প্রজাদের অবস্থা শোচনীয় হয়ে ওঠে। প্রবল বৃষ্টিপাতের সঙ্গেই অসংখ্য শিল পড়তে থাকে। ভাদ্র মাসের তালের মতো বড়ো শিলের আঘাতে ঘরের চাল ভেঙে যায়। দেবী চণ্ডীর আদেশে পবনপুত্র বীর হনুমান ঝড়ের বেশে কলিঙ্গদেশ জুড়ে ধ্বংসলীলা চালান। তাঁর দাপটে মঠ, অট্টালিকা সব ভেঙে খানখান হয়ে যায়। দেবীর আদেশে নদনদী একজোট হয়ে কলিঙ্গদেশের দিকে ধেয়ে আসে। বিরাট বিরাট ঢেউয়ের আঘাতে বাড়িঘর ভেঙে পড়ে। সাত দিনের অবিরাম বৃষ্টিতে ভীত এবং বিপদগ্রস্ত কলিঙ্গদেশের প্রজাদের দুর্দশা চরমে ওঠে।

উপরে বর্ণিত বিষয়গুলি দেখলে বোঝা যাচ্ছে যে কলিঙ্গদেশে ঝড় বা বৃষ্টি একটি স্বাভাবিক ঘটনা। এই ঘটনার ফলে নির্দিষ্ট অঞ্চলের জনগণের জীবন ও কাজ-কর্ম এমনভাবে প্রভাবিত হয়ে থাকে যা বিভিন্ন সমস্যার কারণ হতে পারে। কলিঙ্গদেশে ঝড় ও বৃষ্টি পরিস্থিতিতে মানুষের ব্যবসায়িক কাজ-কর্ম ও কৃষি কাজের ব্যাপারে বিপজ্জনক পরিস্থিতি উত্পন্ন হয়ে যেতে পারে। এছাড়াও ঝড়-বৃষ্টির ফলে মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্য নষ্ট হতে পারে।

এই বিষয়ে নবম শ্রেণির বাংলা বইয়ে রচনাধর্মী এবং বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর দেওয়া হয়েছে। এগুলি পাঠকদের পড়তে এবং মনে রাখতে সাহায্য করবে কলিঙ্গদেশে ঝড় ও বৃষ্টি বিষয়ে সমস্যার সমাধান ও প্রতিকার নিতে।

আরও পড়ুন,

নবম শ্রেণী – বাংলা – কলিঙ্গদেশের ঝড়-বৃষ্টি – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ননোত্তর

নবম শ্রেণি – বাংলা – কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি – সামগ্রিক বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর

কলিঙ্গদেশে ঝড়বৃষ্টি কবিতাটি একটি প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের চিত্র। এই কবিতা থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, প্রাকৃতিক বিপর্যয় মানুষের জীবনে কতটা ক্ষতি করতে পারে। তাই প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতে আমাদের সচেতন হতে হবে।

Share via:

মন্তব্য করুন