এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন।। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

নবম শ্রেণি – বাংলা – নব নব সৃষ্টি – সামগ্রিক বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর


নব নব সৃষ্টি প্রবন্ধে সৈয়দ মুজতবা আলী বাংলা ভাষার বিবর্তন ও উন্নয়নের উপর আলোকপাত করেছেন। তিনি দেখিয়েছেন যে, বাংলা ভাষা অত্যন্ত ঐতিহ্যবাহী ও সমৃদ্ধ ভাষা। কিন্তু ভাষার বিবর্তন একটি চলমান প্রক্রিয়া। তাই বাংলা ভাষাকেও প্রয়োজনীয় শব্দঋণ গ্রহণ করে সময়ের সাথে সাথে আপডেট হতে হবে।

প্রাবন্ধিকের মতে, বাংলা ভাষার বিবর্তনে সংস্কৃতের ভূমিকা অপরিসীম। সংস্কৃত ভাষার শব্দভাণ্ডার বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করেছে। তাই বাংলা ভাষায় এখনো সংস্কৃত শব্দঋণের বিশেষ প্রয়োজন আছে। এছাড়াও, ইংরেজি ভাষার প্রভাবেও বাংলা ভাষায় অনেক নতুন শব্দ প্রবেশ করেছে। এই শব্দগুলো বাংলা ভাষাকে আরও আধুনিক ও বিশ্বমানের করে তুলেছে।

নবম শ্রেণি – বাংলা – নব নব সৃষ্টি – সামগ্রিক বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর

নব নব সৃষ্টি প্রবন্ধ অবলম্বনে বাংলা ভাষায় অন্যান্য ভাষার শব্দের প্রবেশের মাধ্যমে নতুন নতুন ভাষা ও সাহিত্য সৃষ্টি প্রসঙ্গে লেখকের বক্তব্য সংক্ষেপে বুঝিয়ে দাও।

লেখকের বক্তব্যবিষয় – কথামুখ – সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁর নব নব সৃষ্টি প্রবন্ধে বাংলা ভাষা যে অন্য ভাষার উপর নির্ভরশীল সে কথা স্পষ্টভাবে বলেছেন। বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত অন্য ভাষা – পাঠান, মোগল এবং ইংরেজ — বিভিন্ন যুগে প্রয়োজনে এবং অপ্রয়োজনে বাংলা ভাষা অন্য ভাষা থেকে শব্দ ধার নিয়েছে। রবীন্দ্রনাথ কিংবা নজরুলের মতো লেখকরা বিদেশি শব্দ ব্যবহার করেছেন। বিদ্যাসাগর তাঁর ছদ্মনামে লেখা চলিত ভাষার রচনাগুলিতে আরবি ও ফারসি শব্দ অনায়াসে ব্যবহার করতেন। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী আবার আরবি – ফারসির বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করাকে বোকামি বলে মনে করতেন।

বাংলা ভাষায় যথাযথ শব্দের অভাব – লেখকের মতে শব্দ অনুসন্ধান ও তার ব্যবহারের জন্য সংস্কৃত ভাষা বাংলা ভাষার কাছে এখনও প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ। ইংরেজির ক্ষেত্রেও কথাটা সত্যি। তার কারণ, জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলা শব্দ এখনও যথেষ্ট নেই। অন্যভাষার চর্চা – তবে লেখক লক্ষ করেছেন আরবি-ফারসি ভাষার চর্চা এদেশে বন্ধ হতে চলেছে আর বাংলাদেশেও এই ভাষাগুলি নিয়ে আগ্রহ কম। ইতিকথা – তাই এই ভাষাগুলি থেকে ব্যাপকভাবে শব্দের নতুন করে বাংলায় প্রবেশের সম্ভাবনা নেই। তবে যেসব শব্দ ইতিমধ্যে বাংলায় রয়ে গেছে তারা থেকে যাবে। সাহিত্যে তাদের ব্যবহারও হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার মধ্য দিয়েও এরা নতুন মেয়াদ পাবে।

নব নব সৃষ্টি রচনাটির নামকরণের সার্থকতা আলোচনা করো।

সাহিত্যসৃষ্টির ক্ষেত্রে নামকরণের একটি বিশেষ ভূমিকা আছে। লেখক তাঁর নব নব সৃষ্টি রচনায় যে – কোনো সৃষ্টিকর্মের নির্মাণে যে পরীক্ষানিরীক্ষা, গ্রহণ-বর্জন থাকে তাকে দেখার চেষ্টা করেছেন। কিছু ভাষা আছে যেমন সংস্কৃত, হিব্রু, গ্রিক, আবেস্তা, এমনকি আরবি ইত্যাদি প্রাচীন ভাষাগুলি অনেকটাই আত্মনির্ভরশীল। আবার বাংলা, ইংরেজির মতো ভাষাগুলি অন্য ভাষা থেকেও শব্দ নেয়। এই শব্দরা স্থায়ীভাবে ভাষায় থেকে যায়। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, বেনামে বিদ্যাসাগর সকলেই অন্য ভাষা থেকে শব্দ নিয়ে নিজেদের সাহিত্যে ব্যবহার করেছেন। বিষয়বস্তুর ওপর নির্ভর করেই শব্দগ্রহণ চলে। এই গ্রহণের পথে বাংলার সঙ্গে সংস্কৃত ও ইংরেজিকে এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

তবে আরবি-ফারসির প্রভাব কিছুটা ক্ষীণ হলেও সাহিত্যে ইতিমধ্যে তারা স্থান পেয়ে যাওয়ায় এবং এখন পরীক্ষানিরীক্ষার কারণে এইসব শব্দও বাংলা ভাষায় টিকে থাকবে। এখন আবার আরবির থেকে ফারসির গ্রহণযোগ্যতা বেশি। উর্দু ও হিন্দি সাহিত্যে ফারসিরই প্রভাব থেকে লক্ষ করা যায়। ইকবালের মতো কেউ কেউ অবশ্য উর্দুকে ফারসির প্রভাব মুক্ত করতে চেষ্টা করেছেন। অন্যভাষার ওপরে নির্ভর না করেও যে সাহিত্যসৃষ্টি সফল হতে পারে তার যথার্থ উদাহরণ হল পদাবলি কীর্তন। বাঙালি হিন্দুই হোক, অথবা মুসলমান — তারা সবসময় স্বাধীনভাবে চলতে চায় — এই বিদ্রোহীসত্তা তাদের মধ্যে সবসময় কাজ করে থাকে। সব মিলিয়েই শব্দ ও ভাষাঋণ নেওয়া বা বর্জন করা এই দুই বিপরীতমুখী স্রোতেই সাহিত্য গড়ে ওঠে। সৃষ্টির সেই বিচিত্র স্বরূপকে ধরার চেষ্টা হয়েছে বলেই প্রবন্ধের নাম নব নব সৃষ্টি সার্থক হয়ে উঠেছে।

নব নব সৃষ্টি প্রবন্ধটি বাংলা ভাষার বিবর্তন ও উন্নয়নের উপর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ। এই প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক বাংলা ভাষার বিবর্তনে সংস্কৃত ও ইংরেজি ভাষার ভূমিকা তুলে ধরেছেন। তিনি বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ ও উন্নত করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন। এই পরামর্শগুলি বাস্তবায়ন করলে বাংলা ভাষা আরও সমৃদ্ধ ও উন্নত হবে।

Share via:

মন্তব্য করুন