নবম শ্রেণি – বাংলা – স্বর্ণপর্ণী – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর

Rahul

পাঠের শুরুতে দেখা যায় যে, বাঁশবাগানে খেলতে গিয়ে রামচন্দ্র একটি স্বর্ণপণী খুঁজে পায়। সে পণীটি দেখে খুব খুশি হয় এবং তা তার বাবার কাছে নিয়ে যায়। তার বাবা পণীটি বিক্রি করে কিছু টাকা আয় করে। সেই টাকায় সে রামচন্দ্রকে একটি নতুন স্কুলে ভর্তি করে।

নবম শ্রেণি – বাংলা – স্বর্ণপর্ণী
Contents Show

আমার খ্যাতি প্রধানত ইনভেন্টর বা আবিষ্কারক হিসাবে। – বক্তা নিজের আবিষ্কারগুলির যে উল্লেখ করেছেন সেগুলি বিবৃত করো।

বক্তার বিভিন্ন আবিষ্কার – প্রোফেসর শঙ্কু একজন বৈজ্ঞানিক ও আবিষ্কারক। পাঁচটি মহাদেশ তাঁকে টমাস অ্যালভা এডিসনের পরেই বৈজ্ঞানিক হিসেবে স্থান দিয়েছিল। গুরুত্বের নিরিখে তাঁর প্রথম উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার মিরাকিউরল বা সর্বরোগনাশক বড়ি। তার পরেই উল্লেখ করেছেন অ্যানাইহিলিন পিস্তল, যা শত্রুকে নিহত না করে নিশ্চিহ্ন করে। এরপরে এয়ারকন্ডিশনিং পিল, স্মৃতি ফিরিয়ে আনার জন্য রিমেমব্রেন, ঘুমের অব্যর্থ বড়ি সমনোলিন, অতি সস্তায় আলো দেওয়ার যন্ত্র লুমিনিম্যাক্স, অচেনা ভাষা ইংরেজিতে অনুবাদ করার জন্য লিঙ্গুয়াগ্রাফ, পাখিকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য অরনিথন ইত্যাদি।

তাদের কথা ভুলিস না। — কোন্ প্রসঙ্গে এ কথা বলা হয়েছে লেখো।

প্রসঙ্গ – শঙ্কু পড়াশোনার পাট শেষ করলে তাঁর বাবা তাঁকে তখনই চাকরি না করে বিজ্ঞান ছাড়া অন্য বিষয়গুলি পড়তে বলেন। শঙ্কু তাতে রাজি হলেও পড়াশোনা শেষ করে চাকরি করে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর কথা বলেন। তখন শঙ্কুর বাবা ছেলের কথা মেনে নিয়ে বলেন যে, যারা দরিদ্র কিংবা নিরক্ষর, সমাজে যারা মাথা উঁচু করে চলতে পারে না, জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরে শঙ্কু যেন তাদের কথা মনে রাখে। এই প্রসঙ্গে শঙ্কুর বাবা ত্রিপুরেশ্বর শঙ্কু আলোচ্য মন্তব্যটি করেছেন।

এক মাসের মধ্যেই আমার পরিকল্পনা বাস্তবে পরিণত হলো। — কোন্ পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছে লেখো।

উদ্দিষ্ট পরিকল্পনা – স্বর্ণপর্ণীর পাতা খেয়ে গিরিডিবাসী উকিল জয়গোপাল মিত্র সেরে যাওয়ার পরে গিরিডিতে এই ওষুধের কথা ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু শুকনো পাতা গুঁড়ো করে, দুধে মিশিয়ে খাওয়ার প্রাচীন পদ্ধতিটা শঙ্কুর ভালো লাগছিল না। তাই তিনি স্বর্ণপর্ণীর বড়ি তৈরির পরিকল্পনা নেন। পঁচিশ বছরের জন্মদিনে গরমের ছুটিতে বাড়িতে বসে তিনি একটা কল বানান, যার হাতল ঘোরালে কলের নীচ দিয়ে বেরিয়ে আসে একটার পরে একটা বড়ি। সেই মুহূর্তে এই বড়ির নাম তিনি দেন মিরাকিউরল।

পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমার কী করণীয় আমি স্থির করে ফেলেছি। — মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।

মন্তব্যটির বিশ্লেষণ – প্রোফেসর শঙ্কুর ইংল্যান্ডে থাকা পত্রবন্ধু সন্ডার্সের স্ত্রী ডরথি চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন যে সন্ডার্সের যকৃতে ক্যানসার ধরা পড়েছে এবং ডাক্তারের মতে তার বেঁচে থাকার মেয়াদ আর মাত্র দু-মাস। এই চিঠি পড়েই শঙ্কু দশটা মিরাকিউরলের বড়ি এয়ারমেলে ডরথির কাছে পাঠিয়ে দেন। সঙ্গে নির্দেশ দেন যে পার্সেল পাওয়া মাত্র ডরথি যেন সন্ডার্সকে দুটো বড়ি খাইয়ে দেন। দুদিনে কাজ না হলে আরও দুটো। এভাবে দশটা বড়িই কাজে লাগানো যেতে পারে।

বৈভবের প্রতি কোনো আকর্ষণ নেই। — কখন বক্তা এই কথা বলেছেন আলোচনা করো।

প্রসঙ্গ – প্রাফেসর শঙ্কুর মিরাকিউরল বড়িতে যকৃতের ক্যানসার সেরে গেলে তাঁর পত্রবন্ধু সন্ডার্স আসেন গিরিডিতে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে। আর তখনই কথাপ্রসঙ্গে জানতে চান যে, শঙ্কু সেই ওষুধের পেটেন্ট নিয়েছেন কি না। শঙ্কু নেতিবাচক উত্তর দেওয়ায় সন্ডার্স জানতে চান তিনি পাগল কি না এবং মন্তব্য করেন যে, এই ওষুধ তাঁকে কোটিপতি করে দেবে। তখনই শঙ্কু জানান যে, এই টাকাপয়সার চাহিদা তাঁর নেই। মোটামুটি স্বচ্ছন্দে সাধারণ জীবনযাপন করতে পারলেই তিনি খুশি থাকবেন।

অগত্যা সন্ডার্সের প্রস্তাবে সায় দিতে হলো। — সন্ডার্সের প্রস্তাবটি কী ছিল আলোচনা করো।

সন্ডার্সের প্রস্তাব – প্রোফেসর শঙ্কু তাঁর মহাশক্তিশালী ওষুধ মিরাকিউরলের কেমিক্যাল অ্যানালিসিস করেননি শুনে সন্ডার্স তাঁকে লন্ডনে যাওয়ার প্রস্তাব দেন। তিনি শঙ্কুকে বোঝাতে চেষ্টা করেন যে, উপাদানগুলি জানতে পারলে গবেষণাগারে কৃত্রিম উপায়ে এই ওষুধ তৈরি করে বাজারে ছাড়া যেতে পারে। বহু মানুষের জন্য তা মঙ্গলজনক হবে। তা ছাড়া পশ্চিমি দুনিয়া হল আধুনিক বিজ্ঞানের উৎকর্ষকেন্দ্র। তাই বৈজ্ঞানিক হিসেবে শঙ্কুর একবার সেখানে যাওয়া প্রয়োজন। এই প্রস্তাব শঙ্কু অস্বীকার করতে পারেননি।

নিজের যেটুকু প্রাপ্য সেটা আদায় করে নেওয়াটাই বিচক্ষণ ব্যক্তির কাজ। — কোন্ প্রসঙ্গে বক্তা এ কথা বলেছেন আলোচনা করো।

প্রসঙ্গ – মন্তব্যটি করেছেন প্রোফেসর শঙ্কুর বন্ধু জেরেমি সন্ডার্সের বাবা প্রোফেসর জনাথ্যান সন্ডার্স। শঙ্কু নিজেকে মিরাকিউরলের আবিষ্কারক বলতে রাজি না হওয়ায় তাঁর বন্ধু সন্ডার্স তীব্র আপত্তি জানান। কারণ শুধু একজন সাধু যিনি গাছের কথা জানতেন শঙ্কু তাঁকেই কৃতিত্ব দিয়ে তাঁর ওষুধ ব্যাপকভাবে মানুষের কাজে লাগিয়েছেন। ছেলের সঙ্গে একমত হয়েই প্রোফেসর সন্ডার্সও বলেন যে নিজের প্রাপ্যটুকু আদায় করে নেওয়াই বিচক্ষণের কাজ। এ বিষয়ে বিনয় মোটেই সমর্থন করা যায় না।

সেটা দেশে বসে ধারণা করতে পারিনি। — কীসের কথা বলা হয়েছে লেখো।

উদ্দিষ্ট বিষয় – ইংল্যান্ডে গিয়ে বন্ধু সন্ডার্সের স্ত্রী ডরথির কাছে প্রোফেসর শঙ্কু শুনেছিলেন হিটলারের অহংকার ও তার শাসনতন্ত্রের যথেচ্ছাচারিতার কথা। গত কয়েক বছর ধরে জার্মানিতে হিটলারের অভ্যুত্থান ও নাৎসি পার্টি সংগঠনের কথা জানলেও সেটা যে এমন ভয়ংকর চেহারা নিয়েছে তা দেশের খবরের কাগজ পড়ে ধারণা পেতে পারেননি। ডরথির কথায় হিটলার হল ক্ষমতা-পাগল। সমস্ত ইউরোপকে গ্রাস করে সে একটা বিশাল জার্মান রাজ্য প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখছে। এই আগ্রাসনের ধারণা দেশে বসে শঙ্কু করতে পারেননি।

কথাটা শুনে আমার মনে একটা মিশ্র ভাব দেখা দিল। – মন্তব্যটি ব্যাখ্যা করো।

মন্তব্যটির ব্যাখ্যা – সন্ডার্স প্রোফেসর শঙ্কুর মিরাকিউরল বড়ির কেমিক্যাল অ্যানালিসিস করিয়ে আনার পরে দেখা যায় সেখানে সমস্তরকম ভিটামিন তো আছেই, তার সঙ্গে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, আয়োডিন ইত্যাদি উপাদানও আছে। আর আছে এমন একটি উপাদান, যার কোনো পরিচয় রসায়নে নেই। যে কারণে কোনো ল্যাবরেটরিতে কৃত্রিম উপায়ে এই ওষুধ তৈরি করা যাবে না। শঙ্কুই সেই ওষুধের একমাত্র স্বত্বাধিকারী। কথাটি শঙ্কুর মধ্যে মিশ্র ভাব জাগায়, তার কারণ ওষুধ শুধু তাঁরই জিনিস ভাবতে ভালো লাগলেও ওষুধটাকে বাজারে ছাড়া না গেলে কোটি কোটি মুমূর্ষু মানুষ এর সাহায্য থেকে বঞ্চিত হবে।

তোমার আসার কারণটা জানতে পারি কি? — প্রশ্নটি কে করেছিলেন? এর কোন্ উত্তর গল্পে পাওয়া যায় লেখো।

প্রশ্নকর্তা – উইলোবি রোডে সন্ডার্সের বাড়িতে নরবার্ট স্টাইনার উপস্থিত হলে প্রাথমিক কথাবার্তার পরে সন্ডার্স তাঁর আসার কারণ জিজ্ঞাসা করেন।
প্রাপ্ত উত্তর – নরবার্ট জানান যে তাঁর বাবা হাইনরিখ স্টাইনার বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতের অধ্যাপক ছিলেন। কিন্তু নাৎসিরা জার্মানির সব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইহুদিদের তাড়িয়ে দিয়েছে। নাৎসি গুপ্ত পুলিশ গেস্টাপোদের অত্যাচারের শিকার হয়েছেন অধ্যাপক স্টাইনার। তিনি হাইল হিটলার বলতে রাজি না হওয়ায় তাঁকে মেরে আধমরা করে দিয়েছে। এখন মিরাকিউরলের বড়ির কথা শুনেই বাবাকে সুস্থ করতে নরবার্ট শঙ্কুর কাছে এসেছিলেন।

এটা ভাবতে আমার আপাদমস্তক জ্বলে যায়। — কোন্ প্রসঙ্গে বক্তা এ কথা বলেছেন আলোচনা করো।

প্রসঙ্গ – নরবার্ট স্টাইনার শঙ্কুকে অনুরোধ করেছিলেন নাৎসিদের দ্বারা আক্রান্ত তাঁর বাবা ভারতপ্রেমিক হাইনরিখ স্টাইনারকে মিরাকিউরল প্রয়োগে সুস্থ করার জন্য জার্মানিতে যেতে। মানবিক কারণেই শঙ্কু তাতে রাজিও হয়ে যান। কিন্তু সন্ডার্স এতে দুশ্চিন্তায় পড়েন। বার্লিনে গিয়ে শঙ্কু যদি নাৎসিদের খপ্পরে পড়েন এবং অসুস্থ নাৎসিরা তাঁর ওষুধে সুস্থ হয়ে ওঠে তাহলে তা সন্ডার্সের কাছে অসহনীয় হবে।

অথচ বাইরে থেকে রাজধানীর চেহারা দেখে কিছুই বোঝার উপায় নেই। — কী দেখে বক্তার এই উপলব্ধি হয়েছিল?

বক্তার উপলব্ধি – হাইনরিখ স্টাইনারকে দেখতে বার্লিনে গিয়ে সেখানকার রাস্তায় সন্ধ্যায় হাঁটতে বেরিয়েছিলেন প্রোফেসর শঙ্কু। তখনই তাঁর উপলব্ধি হয়েছিল যে, নাৎসিদের দ্বারা অত্যাচারে জর্জরিত জার্মানির প্রকৃত অবস্থাকে বাইরে থেকে দেখলে বোঝা যাবে না। পুলিশশাসিত একটি দেশ, যার কর্ণধার হলেন দুর্নীতির চূড়ান্ত — বাইরে জনজীবনে তার কোনো প্রভাবই নেই। রাস্তায় পুলিশ থাকলেও উদ্‌বেগহীন জনস্রোত, ঝলমলে দোকানপাট, সিনেমা থিয়েটারের বাইরে সুসজ্জিত নারীপুরুষের ভিড় পুলিশশাসিত জার্মানির এ এক অন্য চেহারা।

স্বর্ণপর্ণী – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর

এই রাজ্যে এই অন্ধকার যুগের নীতির কথা ভাবলে চলবে না। — কোন্ পরিপ্রেক্ষিতে বক্তা এ কথা বলেছেন লেখো।

পরিপ্রেক্ষিত – প্রোফেসর শঙ্কুর মিরাকিউরল নামক ওষুধে সুস্থ হয়ে উঠলেও জার্মান অধ্যাপক স্টাইনার নাৎসিদের অত্যাচার এবং অরাজকতার কারণে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। মানসিকভাবে মৃত্যুকে বেছে নেওয়া স্টাইনার শঙ্কুকে বলেন — বেঁচে থেকে তো আমার কোনো লাভ নেই। তখনই শঙ্কু তাকে বলেন যে সুস্থ হয়ে ওঠার পরে তাঁর ছেলে তাঁকে জার্মানি থেকে সরিয়ে নিয়ে যাবেন। তাতে যদি ছলের আশ্রয় নিতে হয় তাতেও ক্ষতি নেই। বাইরে গিয়ে তাঁকে আবার কাজ শুরু করতে হবে। এই পরিপ্রেক্ষিতেই বক্তা আলোচ্য মন্তব্যটি করেন।

সর্বনাশে সমুৎপন্নে অর্ধং ত্যজতি পণ্ডিতঃ। — প্রসঙ্গ আলোচনা করো।

প্রসঙ্গকথা – স্টাইনারদের ঘরে জার্মান পুলিশ ব্ল্যাকশার্ট প্রবেশ করে। এবং ডান হাত প্রসারিত করে উপরদিকে তুলে বলে, হাইল হিটলার। শঙ্কুকে নির্বাক দেখে পুলিশের গলা আরও চড়ে যায়। শঙ্কুও সময় নষ্ট না করে হাইল হিটলার বলে ওঠেন। এই প্রসঙ্গেই শঙ্কুর মনে হয়েছে যে সর্বনাশ উপস্থিত হলে পণ্ডিতেরা অর্ধেক আত্মসম্মান ত্যাগ করেন। শঙ্কু ঝামেলা থেকে মুক্তির জন্য অর্ধেক কেন সম্পূর্ণ আত্মসম্মান ত্যাগ করতেই রাজি হয়ে যান।

একজন ইহুদি বৈজ্ঞানিক আমার আরাধ্য দেবতা। — ইহুদি বৈজ্ঞানিকটি কে ছিলেন? বক্তা কখন এ কথা বলেছেন?

বৈজ্ঞানিকটির নাম – ইহুদি বৈজ্ঞানিক বলতে প্রোফেসর শঙ্কু এখানে অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের কথা বলেছেন ৷
বক্তব্যের প্রেক্ষিত – গোয়রিং যখন প্রশ্ন করেছিল যে ইহুদি অধ্যাপক হাইনরিখ স্টাইনারের বাড়িতে তিনি কী করছিলেন তখন সাহসের সঙ্গে শঙ্কু বলেছিলেন যে পুলিশি অত্যাচারে স্টাইনারের প্রাণ সংশয় হওয়ায় শঙ্কুকে লন্ডন থেকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়। উত্তেজিত গোয়ারিং এ সময় ইহুদিদের সম্পর্কে নানা খারাপ মন্তব্য করে। তার পরিপ্রেক্ষিতেই শঙ্কু বলেন যে তিনি বিজ্ঞানীদের জাত মানেন না। একজন ইহুদি বৈজ্ঞানিক তাঁর আরাধ্য দেবতা যাঁর নাম অ্যালবার্ট আইনস্টাইন।

কিন্তু আসল উদ্দেশ্য সেটা নয়। – কোন্ উদ্দেশ্যের কথা এখানে বলা হয়েছে?

উদ্দেশ্য পরিচয় – গোয়রিং শঙ্কুকে নিয়ে এসেছিল তাঁর কারিনহল প্রাসাদে। এর পিছনে তাঁর প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল একজন ভারতীয়কে তাঁর কান্ট্রি হাউস দেখানো। কিন্তু আসল উদ্দেশ্য ছিল মিরাকিউরলের প্রয়োগে তাঁর গ্ল্যান্ডের সমস্যা থেকে মুক্ত হওয়া। এই সমস্যার জন্য তাঁর ওজন ছিল একশো সত্তর কিলো, প্রচণ্ড ঘাম হওয়ায় দিনে তাঁকে আটবার শার্ট বদলাতে হয়। শারীরিক পরিশ্রম করেও কোনো ফল হচ্ছে না। অতিরিক্ত চর্বি তাঁর কাজের অসুবিধা ঘটায়। ক্যানসার, যক্ষ্মা, উদরি ইত্যাদি যখন সেরেছে তখন মিরাকিউরল তাঁর সমস্যাও দূর করবে এই আশাতেই তাঁর শঙ্কুকে নিয়ে আসা।

ব্ল্যাকশার্টের এই দশা দেখে আমার হাসিও পেল, মায়াও হলো। — প্রসঙ্গটি আলোচনা করো।

প্রসঙ্গ – কারিনহল প্রাসাদে গোয়রিং প্রোফেসর শঙ্কুর কাছ থেকে মিরাকিউরল বড়ি খাওয়ার পরে যখন শার্ট বদল করতে ঘরের বাইরে যান। তখনই পাহারায় থাকা এরিখকে দেখে মনে হয় সে যেন কিছু বলতে চায়। অনুনয়ের সুরে এরিখ বলে যে এক মাস হল তার একটা অসুখ দেখা দিয়েছে। যার ফলে হয়তো তার চাকরি আর থাকবে না। এরিখ জানায় যে, তার অসুখটি হল মৃগীরোগ বা এপিলেপসি এবং তিনবার সে এতে আক্রান্ত হয়েছে। তার কপাল ভালো থাকায় কাজের সময় তা হয়নি। ডাক্তার দেখিয়ে চিকিৎসা চললেও নিরাময় সময়সাপেক্ষ। দুশ্চিন্তাগ্রস্ত এরিখ শঙ্কুকে বলে — তুমি ছাড়া আমার গতি নেই। তার এই অসহায় অবস্থা দেখে শঙ্কুর হাসি পেল, একইসাথে মায়াও হল।

যেটা শুনে তুমি মোটেও খুশি হবে না। — কে, কাকে এ কথা বলেছে? কোন্ ঘটনার জন্য এ কথা বলা হয়েছে?

বক্তা ও উদ্দিষ্ট ব্যক্তি – স্বর্ণপর্ণী গল্পে প্রোফেসর শঙ্কু এ কথা সন্ডার্সকে বলেছেন।
এ কথা বলার প্রেক্ষিত – সংস্কৃতের অধ্যাপক হাইনরিখ স্টাইনারকে সুস্থ করে তোলার জন্য তাঁর ছেলে নরবার্টের আমন্ত্রণে শঙ্কু গিয়েছিলেন বার্লিনে। কিন্তু স্টাইনারকে সুস্থ করতে গিয়ে শঙ্কু ব্ল্যাকশার্টদের হাতে ধরা পড়েন। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় কারিনহল প্রাসাদে। সেখানে গেস্টাপোদের প্রধান গোয়রিং-এর স্থূলত্বের চিকিৎসার জন্য শঙ্কুকে মিরাকিউরল দিতে হয়। একইভাবে গোয়রিং-এর নিরাপত্তারক্ষী এরিখও নিজের মৃগীরোগের চিকিৎসার জন্য মিরাকিউরল নেয়। তাই লন্ডনে ফিরে এসে শঙ্কু আক্ষেপ করেছেন যে, স্টাইনারকে সুস্থ করতে পারলেও দুজন নাৎসিও তার মাধ্যমেই পরিত্রাণ পেল।

স্বর্ণপণী একটি অনুপ্রেরণামূলক পাঠ। এটি আমাদের শিখায় যে কঠোর পরিশ্রম ও মেধা দিয়ে আমরা যেকোনো বাধা অতিক্রম করতে পারি। এটি আমাদের বিশ্বাস দেয় যে আমরা যদি নিজের লক্ষ্যে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ থাকি, তাহলে আমরা অবশ্যই সফল হব।

Please Share This Article

Related Posts

ভাস্বর বাতি, CFL বাতি ও LED বাতির মধ্যে পার্থক্য লেখো।

ভাস্বর বাতি, CFL বাতি ও LED বাতির মধ্যে পার্থক্য লেখো।

নবম শ্রেণী ইতিহাস - প্রাককথন: ইউরোপ ও আধুনিক যুগ

নবম শ্রেণী ইতিহাস – প্রাককথন: ইউরোপ ও আধুনিক যুগ

নবম শ্রেণী ইতিহাস - বিপ্লবী আদর্শ,নেপোলিয়নীয় সাম্রাজ্য ও জাতীয়তাবাদ - বিষয়সংক্ষেপ

নবম শ্রেণী ইতিহাস – বিপ্লবী আদর্শ, নেপোলিয়নীয় সাম্রাজ্য ও জাতীয়তাবাদ – বিষয়সংক্ষেপ

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

Madhyamik Bengali Suggestion 2026 – স্তম্ভ মেলাও

Madhyamik Bengali Suggestion 2026 – সত্য মিথ্যা

Madhyamik Life Science Suggestion 2026 – শূন্যস্থান পূরণ

Madhyamik Life Science MCQ Suggestion 2026

Madhyamik English Suggestion 2026