আমরা আমাদের আর্টিকেলে নবম শ্রেণীর ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় ‘আবহবিকার’ এর দক্ষতামূলক প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো নবম শ্রেণীর ভূগোল পরীক্ষার জন্য ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই অধ্যায় থেকে প্রায়শই মূল ধারণাভিত্তিক প্রশ্ন আসে।

রাজস্থানের অধিবাসীরা বিকেলের দিকে বন্দুক ছোড়ার আওয়াজ শোনে, কিন্তু বন্দুকধারীকে দেখতে পায় না কেন?
ভারতের রাজস্থানে থর মরুভূমি অবস্থিত। মরুভূমিতে দিন ও রাতেরউষ্ণতার প্রসর খুব বেশি। ফলে, বিষম প্রকৃতির খনিজ দ্বারা গঠিত শিলায় একই উষ্ণতায় খনিজগুলির সংকোচন ও প্রসারণ হার ভিন্ন হওয়ায় শিলাগাত্রে প্রবল পীড়ন ও টানের সৃষ্টি হয়। ফলে, খনিজগুলি তীব্রবেগে মূল শিলা থেকে বন্দুকের গুলি ছোড়ার আওয়াজের মতো শব্দ করে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সেখানে আসলে কেউ বন্দুক ছোড়ে না। তাই রাজস্থানের অধিবাসীরা বিকেলের দিকে বন্দুক ছোড়ার আওয়াজ শুনলেও বন্দুকধারীকে দেখতে পায় না।
জলের বুদবুদ কীভাবে যান্ত্রিক আবহবিকার করে?
কখনো কখনো বৃষ্টির জল স্রোতের আকারে শিলাস্তরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়ার সময় বুদবুদের সৃষ্টি করে। ওই বুদবুদের মধ্যেকার বাতাসের চাপ থাকে প্রচণ্ড। এই প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য যে, ছোট্ট একটি (1 সেমি ব্যাস) বুদবুদ প্রায় 18 কিলোগ্রাম ওজনের হাতুড়ির মতো আঘাত সৃষ্টি করে। এর ফলে, শিলাস্তর খণ্ড-বিখণ্ড হয়।

রেগোলিথ মাটি নয় কেন?
সময়ের সঙ্গে পরিণত পর্যায়ের শেষে আবহবিকারজাত সূক্ষ্ম শিলাচূর্ণের সঙ্গে খনিজদ্রব্য, জৈবপদার্থ, জল ইত্যাদি মিশে মাটি তৈরি হয়। একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে আবহবিকারের ফলে শিলা বিচূর্ণীভূত হয়ে রেগোলিথ সৃষ্টি হয় যা ভূত্বকের উপর পাতলা, কোমল ও শিথিল আস্তরণরূপে বিরাজ করে। এদের বিশেষ কোনো ভৌত ও রাসায়নিক ধর্ম থাকে না। তাই রেগোলিথকে মাটি বলা যায় না। এজন্য যান্ত্রিক আবহবিকারের ফলে সৃষ্ট পর্বতের পাদদেশীয় ঢালে সঞ্চিত ট্যালাস বা স্ক্রি কে মাটি বলা যায় না।
শিলাপাত (Flake) কীভাবে সৃষ্টি হয়?
বর্ষাকালে সচ্ছিদ্র পাললিক শিলাস্তরের মধ্যে বৃষ্টির জল প্রবেশ করে। পরে শুষ্ক ঋতুতে সূর্যকিরণে ওই জল বাষ্পে রূপান্তরিত হয়। এর ফলে, শিলাস্তর আবার শুকিয়ে যায়। এভাবে ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে শিলাস্তর একবার আর্দ্র এবং আর একবার শুষ্ক হলে ছোটো ছোটো শিলাপাতের (Flake) সৃষ্টি হয়ে যান্ত্রিক আবহবিকার ঘটায়।

মৃত্তিকা সৃষ্টির জন্য আবহবিকার কি বাধ্যতামূলক শর্ত?
হ্যাঁ, মৃত্তিকা সৃষ্টির জন্য আবহবিকার বাধ্যতামূলক শর্ত। কারণ আবহবিকারের ফলেই শিলা চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে ভূপৃষ্ঠের উপর শিথিল, কোমল একটি আবরণ সৃষ্টি করে, যাকে রেগোলিথ বলা হয়। আবার রেগোলিথ হল মৃত্তিকা সৃষ্টির প্রাথমিক পর্যায় ও প্রধান শর্ত।
পৃথিবীর জীববৈচিত্র্যে আবহবিকারের দায়িত্ব কতটা?
বায়োম ও জীববৈচিত্র্য প্রত্যক্ষভাবে অরণ্যের ওপর নির্ভরশীল। আবার অরণ্য প্রত্যক্ষভাবে মৃত্তিকার উপর নির্ভরশীল, আবহবিকার না ঘটলে মৃত্তিকা কোনো ভাবেই সৃষ্টি হবে না। তাই পৃথিবীর বায়োম, জীববৈচিত্র্য পরোক্ষভাবে আবহবিকারের উপর নির্ভরশীল।
কবে সবচেয়ে বড়ো ভূমিধস দেখা গিয়েছিল?
1980 খ্রিস্টাব্দে মে মাসে মাউন্ট সেন্ট হেলেন্স্ -এ অগ্ন্যুৎপাতের কারণে সবচেয়ে বড়ো ভূমিধস দেখা গিয়েছিল।
আমরা আমাদের আর্টিকেলে নবম শ্রেণীর ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় ‘আবহবিকার’ এর দক্ষতামূলক প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো নবম শ্রেণীর ভূগোল পরীক্ষার জন্য বা চাকরির পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রশ্নগুলি নবম শ্রেণীর পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায় দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা হলে, আপনারা আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। তাছাড়া নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।