আমরা আমাদের আর্টিকেলে নবম শ্রেণীর ভূগোলের ষষ্ঠ অধ্যায় ‘দুর্যোগ ও বিপর্যয়’ এর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো নবম শ্রেণীর ভূগোল পরীক্ষার জন্য ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

পশ্চিমবঙ্গের বন্যাপ্রবণ অঞ্চলগুলির কয়েকটি উল্লেখ করো।
- কোচবিহারের – দিনহাটা, তুফানগঞ্জ, মাথাভাঙা
- মালদার – ইংলিশবাজার, কালিয়াচক
- নদিয়ার – করিমপুর, নাকাশিপাড়া, কালিগঞ্জ
- পশ্চিম মেদিনীপুরের – ঘাটাল, চন্দ্রকোনা, কেশপুর
- উত্তর চব্বিশ পরগনার – হাবরা, বাদুড়িয়া, বনগাঁ প্রভৃতি
সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া দুটি ঘূর্ণিঝড়ের নাম লেখো।
- 2009 সালের 25 মে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘আয়লা’ পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপকূলে ব্যাপক ধ্বংসলীলা চালায়।
- 2016 সালের মে মাসে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু -এর ফলে শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়।
বিশ্বের কোথায় ঘূর্ণিঝড় কী নামে পরিচিত তা একটি ছকের মাধ্যমে দেখাও?
বিশ্বের কোথায় ঘূর্ণিঝড় কী নামে পরিচিত –
স্থান | ঘূর্ণিঝড় |
ভারত মহাসাগর | সাইক্লোন |
পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ | হ্যারিকেন |
আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র | টর্নেডো |
চিনসাগর | টাইফুন |
অস্ট্রেলিয়া | উইলি উইলি |
জাপান | নোয়াকি |
ফিলিপাইন্স | বাগুইও |
ঝড় ও ঘূর্ণিঝড় কি একই? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।
ঝড় (Storm) ও ঘূর্ণিঝড় (Cyclone) উভয়ই নিম্নচাপ জনিত কারণে সৃষ্ট হলেও এদের মধ্যে প্রকৃতিগত পার্থক্য রয়েছে। যেমন –
- ঝড়ের তুলনায় ঘূর্ণিঝড়ে অত্যন্ত গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের সৃষ্টি হয়।
- ঝড়ের তুলনায় ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের গতিবেগ অনেক বেশি হয়।
- ঝড়ের ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা অনেক কম। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় হল অত্যন্ত ধ্বংসাত্মক ও প্রাণ বিনাশকারী ঝড়।
- ঝড়ের প্রভাব কম অঞ্চলের মধ্যে সীমাবদ্ধ কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব বিশাল অঞ্চল জুড়ে দেখা যায়। সুতরাং বলা যায় ঝড় ও ঘূর্ণিঝড় একই নয়।
মেঘ ভাঙা বৃষ্টি (Cloud burst) বলতে কী বোঝো?
সংজ্ঞা – দ্রুত ঘনীভবনের কারণে হঠাৎ ভারী বর্ষণ হলে, তাকে মেঘ ভাঙা বৃষ্টি (Cloud burst) বলে।
ফলাফল – এর ফলে পার্বত্য অঞ্চলে যে বিশাল মাত্রায় দ্রুতগতি সম্পন্ন জলপ্রবাহ ঘটে, তাকে হড়পা বান (Flash Flood) বলে, এর ফলে ধস নামে এবং ব্যাপক হারে জীবন ও সম্পত্তিহানি হয়।

উদাহরণ – 2013 সালের জুন মাসে মেঘ ভাঙা বৃষ্টি ও হড়পা বানে উত্তরাখণ্ডের অলকানন্দা অববাহিকা ও হরিদ্বারে ভয়াবহ ধসসহ বন্যা বিকট মাত্রায় বিপর্যয় ডেকে এনেছিল।

ক্রমপুঞ্জিত দুর্যোগ কী? বন্যাকে ক্রমপুঞ্জিত দুর্যোগ বলে কেন?
বন্যাকে ক্রমপুঞ্জিত দুর্যোগ বলে। যে দুর্যোগের কারণগুলি ক্রমশ পুঞ্জীভূত হতে হতে দুর্যোগ বা বিপর্যয়ের পর্যায়ে পৌঁছোয় এবং যে দুর্যোগের প্রভাব সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধি পায়, তাকে ক্রমপুঞ্জিত দুর্যোগ বলে। বন্যা সৃষ্টির কারণগুলি যেমন – নদীখাত মজে যাওয়া বা নদীখাতের জলধারণ ক্ষমতা কমে যাওয়া, নদী তীরবর্তী বা প্লাবনভূমি অঞ্চলের বৃক্ষচ্ছেদন তথা ভূমিক্ষয়, নদীখাতের প্রবাহ আটকে কৃষিকাজ, ইটভাটা নির্মাণ, দীর্ঘদিন যাবৎ পরিবেশ দূষণের ফলে গ্লোবাল ওয়ার্মিং, তার ফলস্বরূপ শক্তিশালী ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত সৃষ্টি এবং দীর্ঘস্থায়ী অতিবৃষ্টি, নদী সংস্কার না করা, জলাধার সংস্কার না করা ইত্যাদি ক্রমশ পুঞ্জীভূত হয়ে বন্যার সৃষ্টি করে বলে এবং বন্যা পরবর্তী সুদূরপ্রসারী প্রভাব জনজীবনে পড়ে বলে বন্যাকে ক্রমপুঞ্জিত দুর্যোগ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
ভূমিকম্প কাকে বলে?
সাধারণত কোনো প্রাকৃতিক বা অপ্রাকৃতিক কারণে ভূপৃষ্ঠের কোনো অংশ ক্ষণিকের জন্য হঠাৎ কেঁপে উঠলে সেই কম্পনকে ভূমিকম্প (Earthquake) বলে। তবে, রিখটার স্কেল অনুযায়ী ভূমিকম্পের মাত্রা 7 -এর বেশি হলেই তা অসংখ্য ক্ষয়ক্ষতি, প্রাণহানি ঘটিয়ে বিপর্যয় সৃষ্টি করে। উদাহরণ – 2001 -এর 26 জানুয়ারি গুজরাটের ভুজে ঘটে যাওয়া ভূমিকম্প বিপর্যয় ডেকে এনেছিল। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল 7.8।
কোনো পার্বত্য বা পাহাড়ি অঞ্চলে কোন্ কোন্ ধরনের দুর্যোগের আশঙ্কা থাকে?
কোনো পাহাড়ি বা পার্বত্য অঞ্চলে –
- ভূমিধস
- হিমানী সম্প্রপাত
- হড়পা বান
- মেঘভাঙা বৃষ্টি প্রভৃতি দুর্যোগের আশঙ্কা থাকে।
ভারতের বিপর্যয়ের স্বরূপ বা ঘটনাবলি বলতে কী বোঝায়?
ভারত একটি বিপর্যয়প্রবণ দেশ। কারণ, প্রতি বছরই ভারতের মোট জনসংখ্যার প্রায় 6% বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের দ্বারা নানা ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উদাহরণস্বরূপ, ভারতের 67টি এলাকা খরাপ্রবণ, 57% অঞ্চল ভূমিকম্পপ্রবণ, 2% এলাকা বন্যাপ্রবণ, ৪% এলাকা ঘূর্ণিঝড় কবলিত। এ ছাড়াও দারিদ্র্যতা, অনাহার, সন্ত্রাসবাদ রয়েছে। সব মিলিয়ে ভারতে বিপর্যয় ক্রমশ বেড়েই চলেছে।
World Disaster Report অনুযায়ী বিপর্যয়ের বৈশিষ্ট্য গুলি কী কী?
2001 সালের World Disaster Report অনুযায়ী কোনো দুর্যোগকে তখনই বিপর্যয় বলা হবে যখন তার নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলি থাকবে –
- ওই দুর্যোগের ফলে 10 বা তার বেশি মানুষের মৃত্যু হবে।
- 100 বা তার বেশি মানুষ আহত হবে।
- সরকারিভাবে আপৎকালীন পরিস্থিতি ঘোষিত হবে।
- পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আন্তর্জাতিক স্তরে সাহায্যের প্রয়োজন হবে।
বিপর্যয়ে জনসমষ্টির ভূমিকা কী?
যে-কোনো বিপর্যয়েই জনসমষ্টির একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা থাকে। কারণ, জনগণ তাঁদের বিভিন্ন অভিমত এবং নানা পদক্ষেপ নিয়ে বিপর্যয় মোকাবিলায় সর্বাগ্রে নেমে পড়েন। তাছাড়া, যে-কোনো বিপর্যয়েই জনগণ প্রাথমিকভাবে উদ্ধারকাজ, তথ্য সরবরাহ এবং ত্রাণ সামগ্রী পরিচালনায় বিশেষভাবে সাহায্য করেন।
বন্যা কি প্রকৃত অর্থে বিপর্যয়?
অনেকেই বন্যাকে প্রকৃত অর্থে বিপর্যয় রূপে মনে করেন না। কারণ বন্যায় ঘরবাড়ি, গাছপালা, জীবজন্তুর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটলেও এই বন্যার মাধ্যমেই প্রতিটি এলাকা নতুন পলিতে সমৃদ্ধ হয়ে উঠে কৃষিকাজের সহায়ক হয়।
কিন্তু, তা সত্ত্বেও বন্যায় মানুষসহ প্রচুর জীবজন্তুর প্রাণহানি, সম্পদহানি ঘটে চরম এক বিপর্যয় দেখা দেয়। তাই ভয়াবহ বন্যা বিপর্যয়রূপে গণ্য হয়।
বিপর্যয় প্রশমনে সেনাবাহিনীর ভূমিকা লেখো।
ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, ভূমিকম্প, ভূমিক্ষয় ইত্যাদি যে-কোনো ধরনের বিপর্যয়ে দুর্গম স্থানে পৌঁছানোর জন্য সেনাবাহিনীকে প্রয়োজন, কারণ তাঁরা সরঞ্জামসহ প্রশিক্ষণ (অর্থাৎ, বিপর্যয় মোকাবিলায় ব্যবহৃত সবধরনের সরঞ্জাম) নেন বলে পেশাদারিত্বের সঙ্গে স্বল্প সময়ে কাজ করতে পারেন। ত্রাণসামগ্রী সরবরাহ অব্যাহত রাখা, ত্রাণসামগ্রী পৌঁছানো, উদ্ধার কাজ, চিকিৎসা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকেন সেনাবাহিনী। অর্থাৎ, বিপর্যয় মোকাবিলায় সেনাবাহিনীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বিপর্যয় প্রশমনে সংবাদ মাধ্যমের ভূমিকা লেখো।
বিপর্যয় মোকাবিলা, ত্রাণ, পুনর্বাসন সব কাজেই মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য চাই সঠিক প্রচার যেটা সংবাদ মাধ্যম, বেতার, টেলিভিশনের মাধ্যমে করা হয়ে থাকে। বিপর্যয়ের পূর্বেই বিপর্যয় মোকাবিলার প্রস্তুতি নিতে হয় যার জন্য দরকার প্রচার। সংবাদ মাধ্যম এই বিষয়ে মানুষকে সঠিক তথ্য প্রেরণ করে। এছাড়া, বিনোদনের সঙ্গে বিপর্যয় মোকাবিলার নানা কৌশল মানুষকে জানানো যায় বলে তা মানুষের কাছে দ্রুত পৌঁছায়; এতে বিপর্যয়ের মাত্রা কিছুটা কমে।
‘জল ধরো, জল ভরো’ প্রকল্প কী?
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের গৃহীত একটি প্রকল্প হল ‘জল ধরো, জল ভরো’। এর অর্থ বৃষ্টির জলকে ধরে রেখে তা বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা। এই উদ্দেশ্যে রাজ্য জুড়ে নদী, খাল, বিল, পুকুর, জলাশয় প্রভৃতি খনন করে তার গভীরতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। অসংখ্য নতুন পুকুর, খাল কাটা হচ্ছে। এর ফলে যেমন একদিকে পশ্চিমবঙ্গে বন্যার প্রকোপ কমানো সম্ভব হচ্ছে তেমনি অপরদিকে খরাপ্রবণ অঞ্চলে খরার তীব্রতা হ্রাস পাচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গের চারটি আবহাওয়াজনিত দুর্যোগের নাম লেখো।
পশ্চিমবঙ্গের চারটি আবহাওয়াজনিত দুর্যোগের নাম হল –
- বন্যা (Flood)
- খরা (Drought)
- ঘূর্ণিঝড় (Cyclone)
- শিলাবৃষ্টি (Hailstorm)।
ফ্লাড শেল্টার (Flood Shelter) কী?
সুন্দরবন অঞ্চলে বন্যার সময় মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় দেওয়ার জন্য একাধিক উঁচু উঁচু পাকাবাড়ি তৈরি করা হয়েছে। এগুলিকে বলা হয় বন্যা আশ্রয় বা ফ্লাড শেল্টার (Flood Shelter)।
পরিবেশ ভাবনা কাকে বলে?
বিপর্যস্ত পরিবেশের সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন মানুষের চিন্তাভাবনাকেই পরিবেশ ভাবনা বলে। বর্তমানে আমাদের এই পরিবেশ বিভিন্নভাবে বিপর্যস্ত, তাই পরিবেশ ভাবনা একটি প্রাসঙ্গিক ব্যাপার।
রাসায়নিক গ্যাস সংক্রান্ত বিপর্যয় এবং তেজস্ক্রিয় বা পারমাণবিক বিপর্যয়ের মধ্যে পার্থক্য কী?
রাসায়নিক গ্যাস সংক্রান্ত বিপর্যয় – রাসায়নিক গ্যাস তৈরির কারখানা থেকে কোনো কারণে বিষাক্ত গ্যাস বাতাসে মিশলে বা বিস্ফোরণ ঘটে বায়ুমণ্ডল দূষিত হলে রাসায়নিক গ্যাস সংক্রান্ত বিপর্যয় ঘটে। উদাহরণ – 1984 সালের 3 ডিসেম্বর ভারতের ভোপালে অবস্থিত ইউনিয়ন কার্বাইড কোম্পানির কীটনাশক তৈরির কারখানায় মিক গ্যাস (মিথাইল আইসোসায়ানেট) ভরতি ট্যাংকে বিস্ফোরণ ঘটে প্রায় 40 বর্গ কিমি স্থানে বিষাক্ত মিক গ্যাস ছড়িয়ে প্রচুর মানুষের মৃত্যু হয় এবং পরবর্তীকালে বহু মানুষ প্রতিবন্ধী হয়ে পড়ে।

তেজস্ক্রিয় বা পারমাণবিক বিপর্যয় – কিছু তেজস্ক্রিয় মৌল নিজেই ভেঙে শক্তি বা তড়িৎ চুম্বকীয় কণা তৈরি করে। এই কণা স্বাভাবিকের থেকে বেশি তৈরি হলে পরিবেশে তেজস্ক্রিয়তার পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় বহুগুণ বৃদ্ধি পায়, একে তেজস্ক্রিয় বিপর্যয় বলে। পারমাণবিক শক্তি এই তেজস্ক্রিয় কণা (ইউরেনিয়াম, থোরিয়াম) থেকে সৃষ্টি হয়। তাই একে সতর্কতার সঙ্গে সংরক্ষণ করতে হয়, না হলে বিপর্যয় ঘটে। উদাহরণ – 2011 সালে 11 মার্চ জাপানের ফুকুশিমা ডাইচিতে পারমাণবিক শক্তি উৎপাদন কেন্দ্রে বিস্ফোরণ ঘটে প্রচুর মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এর প্রভাব ভবিষ্যতেও পড়বে।
উদাহরণসহ পশ্চিমবঙ্গে খরার প্রভাব লেখো।
খরার প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গে কৃষিকাজ ব্যাহত হয়। জলের অভাবে চারাগাছ শুকিয়ে যায়, শস্য উৎপাদন মারাত্মকভাবে কমে যায়। জলের অভাবে, খাদ্যের অভাবে, তাপপ্রবাহে বহু মানুষ ও প্রাণীর জীবন সংকট দেখা দেয়। যেমন – 2010 সালে পশ্চিমবঙ্গে সামান্য বৃষ্টিপাত হয়েছিল, যার প্রভাবে খারিফ শস্য হিসেবে ধানের বার্ষিক উৎপাদন অনেকখানি হ্রাস পেয়েছিল।
পশ্চিমবঙ্গে বন্যার প্রভাব লেখো।
নদীমাতৃক রাজ্য হওয়ায় পশ্চিমবঙ্গের কোনো না কোনো স্থান প্রায় প্রতি বছরই বন্যা কবলিত হয়। তবে কোনো কোনো বছর এই বন্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এর প্রভাবে –
- মাঠের ফসল জলে ডুবে নষ্ট হয়
- বহু বন্য ও গবাদিপশু প্রাণ হারায়
- ঘর-বাড়ি, সম্পদ বন্যার জলে ভেসে যায়
- বহু মানুষের মৃত্যু হয়। যেমন – 2000 সালের বন্যায় প্রায় 1400 মানুষ মারা যায়
- সুন্দরবন অঞ্চল সমুদ্রের লবণাক্ত জলে প্লাবিত হয়ে যাওয়ার ফলে জমি লবণাক্ত হয়ে চাষের অযোগ্য হয়ে পড়ে।
ভূমিকম্পের উপকেন্দ্রে ক্ষয়ক্ষতি সবচেয়ে বেশি হয় কেন?
ভূমিকম্পের উপকেন্দ্রে ক্ষয়ক্ষতি সবচেয়ে বেশি হয় –
- ভূমিকম্পের কেন্দ্র থেকে উৎপন্ন P ও S তরঙ্গ উপকেন্দ্রে এসে জোরে ধাক্কা দেয়। বিশেষত P তরঙ্গের গতি সবচেয়ে বেশি হওয়ায় তা প্রথমে উপকেন্দ্রে এসে খুব জোরে আঘাত করে।
- কেন্দ্র থেকে উপকেন্দ্রের দূরত্ব সবচেয়ে কম হওয়ায় এখানে P ও S তরঙ্গের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ে।
- উপকেন্দ্রে যে পৃষ্ঠ তরঙ্গের সৃষ্টি হয়, তার গতি উপকেন্দ্রেই সবচেয়ে বেশি থাকে।

এই কারণগুলির জন্যই ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
NIDM কী?
NIDM -এর পুরো কথা National Institute of Disaster Management। এই জাতীয় বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানটি 1995 সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা শিক্ষার প্রসার ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানটি ভারতকে বিপর্যয়মুক্ত দেশে পরিণত করতে সদা সচেষ্ট।
QRT কী?
QRT -এর পুরো কথা হল Quick Response Team । পশ্চিমবঙ্গ সরকার বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য প্রতিটি জেলায় QRT নামে বিশেষ দল তৈরি করেছে। এই দলে রয়েছে রাজ্যস্তরের 4 পলটন ব্যাটেলিয়ান, ও কোম্পানি এবং 25 জন প্রশিক্ষিত কর্মী।
হড়পা বান (Flash Flood) কী?
হঠাৎ ভারী বর্ষণের ফলে পার্বত্য অঞ্চলে যে বিশাল মাত্রায় দ্রুতগতি সম্পন্ন জলপ্রবাহ ঘটে, তাকে হড়পা বান বলে। এর ফলে পার্বত্য ঢালে জলপ্রবাহের সঙ্গে সব কিছু ধসে নীচের দিকে নামতে থাকে এবং ব্যাপক হারে জীবন ও সম্পত্তিহানি হয়। 2010 সালে জম্মু-কাশ্মীরের লে উপত্যকায় হড়পা বানে 250 জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।
আমরা আমাদের আর্টিকেলে নবম শ্রেণীর ভূগোলেরষষ্ঠ অধ্যায় ‘দুর্যোগ ও বিপর্যয়’ এর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো নবম শ্রেণীর ভূগোল পরীক্ষার জন্য বা চাকরির পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রশ্নগুলি নবম শ্রেণীর পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায় দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা হলে, আপনারা আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। তাছাড়া নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।