আজকের আর্টিকেলে আমরা নবম শ্রেণীর ভৌতবিজ্ঞান বইয়ের সপ্তম অধ্যায় “শব্দ” এর “শব্দের বিস্তার : তরঙ্গ” থেকে সহজ ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন-উত্তর শেয়ার করবো। এই প্রশ্নগুলো নবম শ্রেণির ইউনিট টেস্ট থেকে বার্ষিক পরীক্ষা এর জন্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি চাকরি বা বিভিন্ন প্রতিযোগিতার পরীক্ষাতেও কাজে লাগবে। এই অধ্যায় থেকে স্কুল পরীক্ষা থেকে শুরু করে চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই প্রশ্ন আসে, তাই এই প্রশ্নোত্তরগুলো সবাইকে সাহায্য করবে। প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর সহজ ভাষায় লেখা হয়েছে, যাতে সবাই বুঝতে পারেন। পড়ার শেষে এই অধ্যায়ের মুখ্য বিষয়গুলো আপনার আয়ত্তে চলে আসবে এবং যেকোনো পরীক্ষায় আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে লিখতে পারবেন।

জ্ঞানমূলক প্রশ্নোত্তর
শব্দ বিস্তারের জন্য মাধ্যম অপরিহার্য – একটি সহজ পরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণ করো।
কোনো শব্দ উৎস থেকে নির্গত শব্দ বায়ুমাধ্যমের মধ্যে দিয়ে বিস্তার লাভ করে বলেই আমরা সেই শব্দ শুনতে পাই। মাধ্যম ছাড়া শব্দ বিস্তার লাভ করতে পারে না।
নীচের পরীক্ষা থেকে এটি প্রমাণ করা যায়।
পরীক্ষা পদ্ধতি –
- বায়ুনিরুদ্ধভাবে একটি বড়ো মুখওয়ালা কাচের জারের মধ্যে একটি বৈদ্যুতিক ঘণ্টা রেখে সেটিকে একটি ব্যাটারির দুই প্রান্তের সঙ্গে যুক্ত করা হল।
- এরপর জারটির বায়ুপূর্ণ অবস্থায় ঘণ্টাটি বাজানো হল।
- আবার বায়ুনিষ্কাশন পাম্পের সাহায্যে জারটির মধ্যস্থ বায়ু ক্রমাগত বের করে ঘণ্টাটি বাজানো হল।
- এরপর আবার ধীরে ধীরে জারটির মধ্যে বায়ু প্রবেশ করিয়ে ঘণ্টাটি বাজানো হল।

পর্যবেক্ষণ –
- প্রথমে যখন জারটির বায়ুপূর্ণ অবস্থায় ঘণ্টাটি বাজানো হয়, তখন বেশ জোরে শব্দ শোনা যায়।
- এরপর, বায়ু নিষ্কাশন পাম্পের সাহায্যে জারটির মধ্যস্থ বায়ু ক্রমাগত বের করতে থাকলে, ঘণ্টার শব্দ আস্তে আস্তে ক্ষীণ হতে থাকে এবং একসময় আর শোনা যায় না।
- তারপর, আবার ধীরে ধীরে জারটির মধ্যে বায়ু প্রবেশ করাতে থাকলে ঘণ্টার শব্দ ক্রমশ জোরালো হয়।
সিদ্ধান্ত –
এই পরীক্ষা থেকে প্রমাণিত হয় যে, শূন্য মাধ্যমের মধ্যে দিয়ে শব্দ বিস্তার লাভ করতে পারে না। শব্দের বিস্তারের জন্য জড় মাধ্যমের প্রয়োজন।
একটি পরীক্ষার সাহায্যে দেখাও, শব্দ বিস্তারের সময় মাধ্যমের স্থানচ্যুতি হয় না।
কঠিন, তরল এবং গ্যাসীয় মাধ্যমের মধ্যে দিয়ে শব্দ বিস্তারের সময় মাধ্যমের কণাগুলির স্থায়ী স্থানচ্যুতি ঘটে না। একটি সহজ পরীক্ষার সাহায্যে এটি সহজেই প্রমাণ করা যায়।
পরীক্ষা পদ্ধতি – সাদা ধোঁয়াপূর্ণ একটি লম্বা ফাঁপা নলের একপ্রান্তে একটি সরু ছিদ্রমুখযুক্ত রবারের ফানেল লাগিয়ে ওই ছিদ্রমুখের কাছে একটি শিখাযুক্ত মোমবাতিকে রাখা হল।
এবার, ফাঁপা নলের অপরপ্রান্তে দুটি কাঠের টুকরোকে পরস্পরের সঙ্গে ঠুকে শব্দ সৃষ্টি করা হল।
পর্যবেক্ষণ – দেখা যাবে যে, শব্দের সঙ্গে সঙ্গে মোমবাতির শিখা সরু মুখ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। কিন্তু নলটির সরু মুখ দিয়ে ধোঁয়া বাইরে বেরিয়ে আসছে না।

সিদ্ধান্ত – এই পরীক্ষা থেকে প্রমাণিত হয় যে, মাধ্যমের ভিতর দিয়ে শব্দতরঙ্গ সঞ্চালিত হওয়ার সময় মাধ্যমের কণাগুলির স্থায়ী স্থানচ্যুতি ঘটে না।
শব্দ বিস্তারের জন্য মাধ্যমের প্রয়োজনীয় বৈশিষ্ট্য কী?
শব্দ সঞ্চালনের জন্য স্বনক (শব্দের উৎস) ও শ্রোতার মধ্যবর্তী স্থানে স্থিতিস্থাপক ও নিরবচ্ছিন্নভাবে বিস্তৃত জড় মাধ্যম থাকা আবশ্যক।
কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় মাধ্যমের মধ্য দিয়ে শব্দ বিস্তারের তুলনা একটি সহজ পরীক্ষার দ্বারা বোঝাও।
কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় মাধ্যমের মধ্যে দিয়ে শব্দ কীভাবে বিস্তার লাভ করে তা নীচের পরীক্ষার মাধ্যমে বোঝানো যায়।
পরীক্ষা পদ্ধতি –
একটি কাঠের টেবিলের উপর একটি রিস্টওয়াচ বা হাতঘড়ি রেখে প্রথমে টেবিলের পাশে দাঁড়িয়ে রিস্টওয়াচের টিকটিক্ শব্দ শোনা হল। এবার ছবির মতো করে টেবিলের উপর কান পেতে হাতঘড়ির শব্দ শোনা হলে বোঝা যাবে যে, হাতঘড়ির শব্দ দ্বিতীয়বারে বেশি জোরে শোনা যাচ্ছে। অর্থাৎ, কঠিন (কাঠ) মাধ্যমের মধ্য দিয়ে শব্দ সহজে বিস্তারলাভ করে।

এবার একটি জলপূর্ণ পাত্র টেবিলের উপর রেখে ছবির মতো করে টেবিলের একপ্রান্তে পাত্রটির গায়ে রিস্টওয়াচটি চেপে ধরা হল এবং অপর প্রান্তে পাত্রটির গায়ে কান পাতা হল। দেখা যাবে, এবারেও প্রথমবারের তুলনায় অনেক বেশি জোরে শব্দ শোনা যাচ্ছে। অর্থাৎ, তরল (জল) মাধ্যমের মধ্যে দিয়েও শব্দ সহজে বিস্তারলাভ করে।

ভিন্ন ভিন্ন মাধ্যমে রাখা হাতঘড়ির শব্দ শুনে এবং তার তীব্রতা অনুভব করে সহজেই এই সিদ্ধান্তে আসা যায় যে, শব্দ সঞ্চালনের বেগ ও শব্দের বিস্তার লাভের সামর্থ্য – দুইই কঠিন মাধ্যমে সর্বোচ্চ ও গ্যাসীয় মাধ্যমে সর্বনিম্ন। তরল মাধ্যমে শব্দের বেগ ও বিস্তারলাভের ক্ষমতা মাঝামাঝি অর্থাৎ, গ্যাস অপেক্ষা বেশি, কিন্তু কঠিন অপেক্ষা কম।
তাত্ত্বিক বিবেচনা অনুসারে, বিভিন্ন মাধ্যম (কঠিন, তরল, গ্যাসীয়) শব্দের বেগের রাশিমালা এবং মানের পার্থক্য কীভাবে ব্যাখ্যা করা যায়? উদাহরণসহ বিশ্লেষণ করুন।
তাত্ত্বিক বিবেচনা থেকে প্রমাণ করা যায় যে, কোনো সমসত্ত্ব স্থিতিস্থাপক মাধ্যমে শব্দ বা যে-কোনো অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গের বেগের রাশিমালা হয় \(v=\sqrt{\frac E\rho}\), যেখানে E → মাধ্যমের স্থিতিস্থাপক গুণাঙ্ক, ρ → মাধ্যমের ঘনত্ব। মাধ্যমের প্রকৃতি অনুসারে এক্ষেত্রে স্থিতিস্থাপক গুণাঙ্কটিকে বিবেচনা করা হয়। যেমন – তরল বা গ্যাসীয় মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট গুণাঙ্কটি হয় আয়তন বিকৃতি গুণাঙ্ক (k)। তরল বা গ্যাসীয় মাধ্যমে শব্দের বেগের রাশিমালা হয় \(v=\sqrt{\frac k\rho}\)।
কঠিন মাধ্যমে উপযুক্ত স্থিতিস্থাপক গুণাঙ্কটি হয় ইয়ং গুণাঙ্ক (Y)। এক্ষেত্রে, \(v=\sqrt{\frac Y\rho}\)। কঠিন পদার্থে শব্দের বেগ সর্বোচ্চ ও গ্যাসীয় মাধ্যমে সর্বনিম্ন হয়। উদাহরণস্বরূপ 0°C উষ্ণতায় লোহা, জল ও বায়ুতে শব্দের বেগের মান হয় যথাক্রমে 5900 m/s (প্রায়), 1402 m/s এবং 332 m/s।
গ্যাস অপেক্ষা তরল বা কঠিন পদার্থের ঘনত্ব বেশি হলেও কঠিন মাধ্যমে শব্দের বেগ তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি হয়। কারণ – গ্যাস বা তরলের আয়তন বিকৃতি গুণাঙ্কের তুলনায় কঠিন মাধ্যমের ইয়ং গুণাঙ্কের মান অনেকগুণ বেশি হয়ে থাকে।”
তরঙ্গ কাকে বলে?
তরঙ্গ (Wave) – কোনো জড় মাধ্যমের উপস্থিতিতে বা অনুপস্থিতিতে জড় মাধ্যম বা শূন্যস্থানের কোনো অংশে সৃষ্ট আলোড়ন বা বিচলন, যা মাধ্যম ছাড়া বা মাধ্যমের কণাগুলির স্থানচ্যুতি না ঘটিয়ে এক স্থান থেকে অন্যত্র সঞ্চালিত হয় এবং প্রবাহের অভিমুখে ভরবেগ ও শক্তি বহন করে, তাকে তরঙ্গ বলা হয়। নির্দিষ্ট অভিমুখে এই আলোড়ন অগ্রসর হওয়ার ঘটনাকে তরঙ্গ গতি (Wave motion) বলে।
যান্ত্রিক তরঙ্গ বিস্তারলাভের জন্য মাধ্যমে কী কী বৈশিষ্ট্য থাকা প্রয়োজন – তা ব্যাখ্যা করো।
যান্ত্রিক তরঙ্গ বিস্তারলাভের জন্য জড় মাধ্যমের নিম্নলিখিত তিনটি বৈশিষ্ট্য থাকা একান্ত প্রয়োজনীয় –
জাড্য (Inertia) –
জড় মাধ্যমের কোনো অংশে আলোড়ন সৃষ্টির ফলে সেই অংশের কম্পনশীল কণাগুলি সাম্যাবস্থান থেকে বিচ্যুত হয়। সাম্যাবস্থান থেকে সর্বাধিক বিচ্যুত অবস্থানে কণাগুলির স্থিতিশক্তি হয় সর্বাধিক। কিন্তু ওই অবস্থান থেকে কণাগুলি যখন সাম্যাবস্থানের দিকে যায় তখন কণাগুলির স্থিতিশক্তি ক্রমশ কমতে থাকে ও গতিশক্তি বাড়তে থাকে। গতিজাড্যের দরুন কণাগুলি সাম্যাবস্থানে পৌঁছালে স্থির হয় না, বরং, সাম্যাবস্থান অতিক্রম করে বিপরীতদিকে গতিশীল হয় এবং এভাবে পর্যাবৃত্ত গতিতে কম্পিত হতে থাকে।
স্থিতিস্থাপকতা (Elasticity) –
কোনো জড় মাধ্যমের যে-কোনো অংশকে তার সাম্যাবস্থান থেকে বিচ্যুত করলে মাধ্যমের স্থিতিস্থাপকতা ধর্মের দরুণ তার মধ্যে যে স্থিতিস্থাপক পীড়নের সৃষ্টি হয়, তা ওই অংশকে আবার তার সাম্যাবস্থানে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে।
সংসক্তি (Cohesion) –
জড় মাধ্যমের কণাগুলির মধ্যে সংসক্তির জন্য মাধ্যমের কোনো অংশ কম্পিত হলে তার পার্শ্ববর্তী অংশও কম্পিত হতে থাকে। ফলে, মাধ্যমের কোনো অংশে আলোড়ন সৃষ্টি করলে তা ওই মাধ্যমের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে।
মাধ্যম নির্ভরশীলতা ও মাধ্যমের কণাগুলির কম্পনের প্রকৃতি অনুসারে তরঙ্গ কয় প্রকার ও কী কী?
তরঙ্গ সৃষ্টি বা তার বিস্তারলাভের ক্ষেত্রে জড়মাধ্যমের অপরিহার্যতার নিরিখে তরঙ্গ দুই প্রকারের হয়, যথা –
- তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ (যেমন – আলো) ও
- স্থিতিস্থাপক তরঙ্গ (যেমন – শব্দ)।
মাধ্যমের কণাগুলির বা পরিবর্তনশীল রাশির কম্পনের প্রকৃতি অনুসারে তরঙ্গকে দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়, যেমন –
- তির্যক তরঙ্গ (যেমন – আলো) ও
- অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ (যেমন – শব্দ)।
স্থিতিস্থাপক তরঙ্গ কাকে বলে? শব্দকে তরঙ্গ হিসেবে চিহ্নিত করার স্বপক্ষে যুক্তি দাও।
স্থিতিস্থাপক তরঙ্গ (Elastic wave) –
কোনো স্থিতিস্থাপক জড় মাধ্যমের কণাগুলির সমষ্টিগত কম্পনের ফলে সৃষ্ট আলোড়ন মাধ্যমের একস্থানে সৃষ্টি হয়ে অপর কোনো অংশে নির্দিষ্ট অভিমুখে অগ্রসর হয় এবং প্রবাহের অভিমুখে শক্তি ও ভরবেগ সঞ্চালিত করে। যদিও মাধ্যমের কণাগুলির কোনো স্থায়ী বিচ্যুতি ঘটে না, তাকেই স্থিতিস্থাপক তরঙ্গ বলে।
শব্দ একপ্রকার তরঙ্গ –
শব্দ তরঙ্গধর্মী, এই বক্তব্যের সমর্থনে যুক্তিগুলি হল –
- যে-কোনো তরঙ্গের মতো শব্দও স্বনকের কম্পনে সৃষ্টি হয়।
- অন্যান্য সমস্ত তরঙ্গের মতো শব্দেরও নির্দিষ্ট বেগ বর্তমান।
- তরঙ্গ বিস্তারের ক্ষেত্রে মাধ্যমের কণাগুলির স্থানচ্যুতি ঘটে না। শব্দও অনুরুপ আচরণ দেখায়।
- যে-কোনো তরঙ্গের মতোই শব্দের ক্ষেত্রেও তরঙ্গের সাধারণ ধর্মগুলি যেমন – প্রতিফলন, প্রতিসরণ, ব্যতিচার, আবর্তন ইত্যাদি মান্য হয়ে থাকে।
- স্থিতিস্থাপক তরঙ্গ কেবলমাত্র জড় মাধ্যমের মধ্য দিয়েই বিস্তার লাভ করতে পারে। শব্দও জড় মাধ্যম ছাড়া সঞ্চালিত হতে ব্যর্থ হয়। সুতরাং বলা যায় যে, শব্দ একপ্রকার স্থিতিস্থাপক তরঙ্গ।
তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ (Electromagnetic wave) –
শূন্যস্থানে বা জড় মাধ্যমের উপস্থিতিতে পরিবর্তনশীল তড়িৎক্ষেত্র এবং সময়ের সঙ্গে তার পরিবর্তনে উৎপন্ন চৌম্বকক্ষেত্র, পরস্পরকে নিরবচ্ছিন্নভাবে পুনরুৎপাদন করে এবং একটি যৌথ বিচলনরূপে তড়িৎক্ষেত্র ও চৌম্বকক্ষেত্র উভয়ের সঙ্গে অভিলম্বে তৃতীয় অভিমুখে একটি যৌথ বিচলন হিসেবে যে তরঙ্গ গতিশীল হয়, তাকে তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ বলে।
তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গের উদাহরণ – আলোকতরঙ্গ, এক্স রশ্মি, বিকীর্ণ তাপ, অতিবেগুনি রশ্মি, বেতার তরঙ্গ ইত্যাদি।

যেহেতু, শূন্যস্থানেও তড়িৎক্ষেত্র বা চৌম্বকক্ষেত্রের অস্তিত্ব থাকা সম্ভব, তাই শূন্যমাধ্যমেও এ জাতীয় তরঙ্গ চলাচল করতে পারে। বস্তুত শূন্যমাধ্যমে এই তরঙ্গের বেগ সর্বোচ্চ (3 × 108 m/s) হয়, মাধ্যমের উপস্থিতিতে বেগ হ্রাস পায়।
তির্যক তরঙ্গের ধারণা ব্যাখ্যা করো। এর উদাহরণসহ সংজ্ঞা দাও।
তির্যক তরঙ্গের ধারণা –
নিচের চিত্রে তির্যক তরঙ্গ বোঝানো হয়েছে। এক্ষেত্রে তরঙ্গ বিস্তারিত হচ্ছে M থেকে N -এর দিকে অর্থাৎ, তরঙ্গের গতির অভিমুখ M থেকে N -এর দিকে। আবার, মাধ্যমের কণাগুলির কম্পনের অভিমুখ AB বরাবর (A → B, B → A) অর্থাৎ, মাধ্যমের কণাগুলি তরঙ্গ গতির অভিমুখের সঙ্গে লম্বভাবে কম্পিত হচ্ছে। তাই, এটি তির্যক তরঙ্গ।

তির্যক তরঙ্গ (Transverse wave) –
কোনো স্থিতিস্থাপক জড় মাধ্যমের কণাগুলির কম্পনের অভিমুখের অভিলম্ব দিকে যে তরঙ্গ গতিশীল হয়, তাকে তির্যক তরঙ্গ বলে।

তির্যক তরঙ্গের উদাহরণ – পুকুরের জলতলের কোনো বিন্দুতে একটি ছোটো পাথর লম্বভাবে ফেলা হলে বা একটি সরু কাঠিকে জলের উপরিতলে খাড়া উপরে ও নীচে নাড়াতে থাকলে ওই বিন্দুকে কেন্দ্র করে জলাশয়ের সর্বত্র বৃত্তাকার ঢেউয়ের আকারে আলোড়ন বিস্তারলাভ করে। এক্ষেত্রে ঢেউ বা আলোড়নের গতির অভিমুখ কাঠির কম্পন বা জলকণাগুলির বিচলনের অভিমুখের সঙ্গে লম্বভাবে অবস্থান করে। আলোড়নরত জলপৃষ্ঠে একটি প্লাস্টিকের হালকা বল ফেলা হলে দেখা যায়, বলটি একটি নির্দিষ্ট অবস্থানে থেকে উপর-নীচে আন্দোলিত হয় মাত্র, ঢেউয়ের আঘাতে নিজে স্থানচ্যুত হয় না। এক্ষেত্রে, জলতলে সৃষ্ট আলোড়নটি তির্যক তরঙ্গের উদাহরণ।

অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গের ধারণা ব্যাখ্যা করো। এর উদাহরণসহ সংজ্ঞা দাও।
অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গের ধারণা –
নীচের চিত্রে অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ বোঝানো হয়েছে। এক্ষেত্রে, তরঙ্গ বিস্তারিত হচ্ছে M থেকে N -এর দিকে অর্থাৎ, তরঙ্গের গতির অভিমুখ M থেকে N -এর দিকে। আবার, মাধ্যমের কণাগুলির কম্পনের অভিমুখও MN বরাবর (M → N, N → M)। অর্থাৎ, মাধ্যমের কণাগুলি তরঙ্গগতির অভিমুখের সঙ্গে সমান্তরালভাবে কম্পিত হচ্ছে। তাই, এটি অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ সৃষ্টি করছে।

অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ (Longitudinal wave) –
স্থিতিস্থাপক জড় মাধ্যমের কণাগুলির সমষ্টিগত কম্পনের ফলে সৃষ্ট তরঙ্গের গতির অভিমুখ যদি মাধ্যমের কণাগুলির গতির অভিমুখে বা, তার সমান্তরাল হয়, তবে ওই তরঙ্গকে অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ বলে।

অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গের উদাহরণ – কথা বলার সময় আমাদের মুখের সামনে অবস্থিত বায়ুস্তরগুলি শব্দগতির সমান্তরাল অভিমুখে কম্পিত হয়। কম্পনরত অবস্থায় বায়ুর কণাগুলি এবং তার ফলে বায়ুস্তরগুলিও কিছু কিছু স্থানে তাদের স্বাভাবিক দূরত্ব অপেক্ষা কাছাকাছি আসে অথবা, দূরে সরে যায়। বায়ুস্তরগুলি কাছাকাছি এলে ওই অঞ্চলে তাৎক্ষণিকভাবে মাধ্যমের আয়তন হ্রাস পায়। এ ঘটনাকে বলা হয় ঘনীভবন। একইভাবে বায়ুস্তরগুলির পারস্পরিক দূরত্ব বেড়ে গেলে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে মাধ্যমের আয়তন বৃদ্ধি পায় এবং ওই স্থানে বায়ুস্তরের তনুভবন ঘটে। এভাবে পর্যায়ক্রমে ঘনীভবন ও তনুভবন সৃষ্টির মাধ্যমে শব্দ অগ্রসর হয়। সুতরাং, বায়ুস্তরের কম্পন ও শব্দ সঞ্চালনের অভিমুখ সমান্তরাল হওয়ার ঘটনা প্রমাণ করে যে, শব্দ একপ্রকার অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ।
তির্যক তরঙ্গ কঠিন ও তরলের মধ্য দিয়ে আংশিকভাবে যেতে পারলেও গ্যাসীয় মাধ্যমে একেবারেই যেতে পারে না অথচ, অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ তিন ধরনের মাধ্যমেই বিস্তারলাভ করতে পারে কেন?
স্থিতিস্থাপক তির্যক তরঙ্গের ক্ষেত্রে মাধ্যমের পাশাপাশি দুটি স্তর তাদের স্পর্শতল বরাবর কম্পিত হয় এবং পরস্পরের উপর কৃন্তন বল প্রয়োগ করে। কঠিন ও তরল পদার্থ (আংশিক পরিমাণে) কৃন্তন বলের প্রভাব সহ্য করতে পারলেও গ্যাসীয় পদার্থ আদৌ কৃত্তন বলকে প্রতিরোধ করতে পারে না। তাই তির্যক স্থিতিস্থাপক তরঙ্গ শুধু কঠিন ও সামান্য পরিমাণে তরলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ সঞ্চালনের সময় মাধ্যমের স্তরগুলিতে কৃন্তন বল ক্রিয়া করে না। তাই কঠিন, তরল ও গ্যাস তিনপ্রকার মাধ্যমেই অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ চলাচল করতে সক্ষম।
একটি স্প্রিং ব্যবহার করে অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ কীভাবে সৃষ্টি করা যায়? চিত্রসহ ব্যাখ্যা করো।
স্প্রিংয়ের সাহায্যে অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ সৃষ্টি –
একটি লম্বা স্প্রিং -এর একপ্রান্ত একটি দৃঢ় অবলম্বনের সঙ্গে আটকে অপর প্রান্তে একটি ভার ঝোলানো হলে স্প্রিংটি দৈর্ঘ্যে প্রসারিত হয়। ভারটি স্থির থাকলে দেখা যায়, স্প্রিং -এর পাকগুলি বর্ধিত কিন্তু, সুষম দূরত্বে অবস্থান করে।

এবার ভারটিকে সামান্য নীচের দিকে টেনে ছেড়ে দিলে সেটি উল্লম্বরেখায় উপর-নীচে গতিশীল হয় এবং এই গতি স্প্রিংয়ে সঞ্চালিত হওয়ার ফলে, স্প্রিং -এর দৈর্ঘ্য বরাবর একটি আলোড়ন প্রবাহিত হতে থাকে। যতক্ষণ এই আলোড়ন স্থায়ী হয় সেই সময় ধরে স্প্রিংটিকে লক্ষ করলে দেখা যায় যে, কিছু অঞ্চলে স্প্রিং -এর পাকগুলি ঘনসন্নিবিষ্ট হয়ে ঘনীভবন সৃষ্টি করে, কিছু স্থানে পাকগুলির পারস্পরিক ব্যবধান বৃদ্ধির ফলে তনুভবন সৃষ্টি হয়।
পরপর অবস্থিত এই ঘনীভবন ও তনুভবন সৃষ্টির মাধ্যমেই সংশ্লিষ্ট আলোড়ন, স্প্রিং -এর পাকগুলির কম্পন কণার গতির অভিমুখের সমান্তরালে অগ্রসর হতে পারে। তাই সিদ্ধান্তে আসা যায় যে, স্প্রিং -এ সৃষ্ট আলোড়ন একপ্রকার অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ।
একটি লম্বা দড়ি ব্যবহার করে তির্যক তরঙ্গ কীভাবে সৃষ্টি করা যায়? চিত্রসহ ব্যাখ্যা করো।
একটি লম্বা দড়ির একপ্রান্ত কোনো দৃঢ় অবলম্বনে আবদ্ধ রেখে দড়ির মুক্ত প্রান্তকে আড়াআড়িভাবে নাড়ালে বা দড়ির দুই প্রান্তই দুটি দৃঢ় অবলম্বনে শক্ত করে আটকে তার মধ্যভাগ সামান্য ওপরে টেনে ছেড়ে দিলে, দু-ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, একটি আলোড়ন দড়ির দৈর্ঘ্য বরাবর প্রবাহিত হচ্ছে। যে-কোনো মুহূর্তে আলোড়নটির গতিপথ বরাবর নির্দিষ্ট কিছু বিন্দুতে দড়ির কণার অবস্থান সব থেকে উঁচুতে বা সব থেকে নীচুতে হয়। এদের যথাক্রমে তরঙ্গশীর্ষ (যেমন – A বিন্দু) ও তরঙ্গপাদ (যেমন – B বিন্দু) বলে। এক্ষেত্রে, দড়ির কণাগুলি তার দৈর্ঘ্যের সমকোণে আন্দোলিত হয় ও সৃষ্ট আলোড়ন বা বিচলন কম্পনের লম্ব অভিমুখে সঞ্চালিত হয়, সুতরাং, এই আলোড়ন তির্যক তরঙ্গের উদাহরণ।

লেখচিত্রের মাধ্যমে অনুদৈর্ঘ্য ও তির্যক তরঙ্গ প্রকাশ করো এবং এর বিভিন্ন অংশগুলি চিহ্নিত করো।
নিম্নলিখিত ঘনত্ব-দূরত্ব লেখচিত্রের মাধ্যমে অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গকে প্রকাশ করা হয় –

নিম্নলিখিত সরণ-দূরত্ব লেখচিত্রের মাধ্যমে তির্যক তরঙ্গকে প্রকাশ করা হয় –

তির্যক তরঙ্গটি X-অক্ষ (OX) বরাবর অগ্রসর হচ্ছে এবং মাধ্যমের কণাগুলি Y-অক্ষ (OY) বরাবর কম্পিত হচ্ছে। লেখচিত্রটি কোনো নির্দিষ্ট সময়ে মাধ্যমের কণাগুলির কম্পনদশা এবং এর ফলে উৎপন্ন তরঙ্গের প্রকৃতি নির্দেশ করে। তরঙ্গের সর্বোচ্চ বিন্দু অর্থাৎ A, C ইত্যাদি বিন্দুকে তরঙ্গশীর্ষ এবং B, D ইত্যাদি সর্বনিম্ন বিন্দুকে তরঙ্গপাদ বলে। O, E, F ইত্যাদি বিন্দুতে অবস্থিত কণাগুলি সাম্যাবস্থানে অবস্থিত।
বায়ু মাধ্যমে শব্দতরঙ্গ সঞ্চালনের কৌশল চিত্রসহ বর্ণনা করো।
বায়ু মাধ্যমে শব্দতরঙ্গ সঞ্চালনের কৌশল –
যে-কোনো কম্পনরত বস্তু (যেমন – কম্পমান সুরশলাকা) থেকে নিঃসৃত শব্দ শ্রোতার কানে পৌঁছানোর কৌশল নীচে ব্যাখ্যা করা হল। সুরশালাকা স্থির অবস্থায় থাকলে সংলগ্ন বায়ুস্তরগুলির মধ্যে ব্যবধান সুষম হয় (চিত্র – 1)। কম্পনরত অবস্থায় সুরশালাকার কোনো বাহু A বাইরের দিকে (ডান দিকে) বিচ্যুত হলে সেটি তার ঠিক সামনে অবস্থিত বায়ুস্তরকে সামনের দিকে ঠেলে দেয়। এইস্তর আবার তার সামনের বায়ুস্তরকে ঠেলে এবং এইভাবে সংলগ্ন সমস্ত বায়ুস্তর পরস্পরের কাছাকাছি এসে ঘনীভবন সৃষ্টি করে (চিত্র – 2)। এই ঘনীভবন ধীরে ধীরে ডানদিকের বায়ুস্তরে সঞ্চালিত হয়, যদিও বায়ুস্তরগুলির অবস্থান অপরিবর্তিত থাকে।

A বাহুটি প্রাথমিক অবস্থান সাপেক্ষে বামদিকে এলে ডানদিকে থাকা বায়ুস্তরে চাপ হ্রাস পায় এবং স্তরগুলি তাদের স্বাভাবিক ব্যবধান অপেক্ষা বেশি দূরত্বে সরে গিয়ে তনুভবন সৃষ্টি করে। এই তনুভবনও একইভাবে ডানদিকে তার সামনে থাকা বায়ুস্তরে স্থানান্তরিত হয় (চিত্র – 3)। সুরশালাকার নিরবচ্ছিন্ন কম্পন এবং তার প্রভাবে পর্যায়ক্রমে সংঘটিত ঘনীভবন ও তনুভবনের মাধ্যমে বায়ুস্তরে সৃষ্ট আলোড়ন -এর ফলে অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গের চেহারায় অগ্রসর হয় (চিত্র – 4)। ঘনীভূত ও তনুভূত বায়ুস্তরে ঘনত্বের নিরবচ্ছিন্ন ও পর্যায়ক্রমিক পরিবর্তনে একটি চাপ তরঙ্গের আকারে বিস্তারলাভ করে শ্রোতার কানে পৌঁছে কানের পর্দায় (eardrum) কম্পন সৃষ্টি করে। পর্দা এই কম্পনের অভিঘাতে কাঁপতে শুরু করে এবং মূল শব্দের পুনরুৎপাদন ঘটায়। এর ফলে সুরশলাকা নিঃসৃত শব্দ আমরা শুনতে পাই।
একটি তরঙ্গকে প্রকাশ করার জন্য কয়টি প্রাকৃতিক রাশি জানার প্রয়োজন? সেগুলি কী কী? প্রতিটি সংজ্ঞাসহ ব্যাখ্যা করো।
একটি তরঙ্গকে (বা শব্দ তরঙ্গকে) প্রকাশ করার জন্য পাঁচটি প্রাকৃতিক রাশি জানার প্রয়োজন। যথা –
- তরঙ্গের বিস্তার (Amplitude of wave),
- তরঙ্গদৈর্ঘ্য (Wavelength),
- পর্যায় (Period),
- তরঙ্গ কম্পাঙ্ক (Wave frequency),
- তরঙ্গ বেগ (Wave velocity)।
তরঙ্গের বিস্তার (Amplitude of wave) –
যখন কোনো তরঙ্গ কোনো মাধ্যমের মধ্যে দিয়ে অগ্রসর হয় তখন কম্পনশীল অবস্থায় মাধ্যমের কণাগুলি তাদের সাম্য অবস্থান থেকে সর্বাধিক যতটা পরিমাণ স্থানচ্যুত হয় অর্থাৎ, কণাগুলির সাম্যাবস্থান থেকে সর্বাধিক সরণকেই তরঙ্গের বিস্তার বলে।

উপরের চিত্রে AB বা CD হল তরঙ্গের বিস্তার। অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গের ক্ষেত্রে তরঙ্গের বিস্তার = ঘনীভবন বা তনুভবন সৃষ্টি হওয়া অংশের দূরত্ব (নীচের চিত্র – 2 দ্যাখো)।

একইভাবে, তির্যক তরঙ্গের ক্ষেত্রে তরঙ্গের বিস্তার = সাম্যাবস্থান থেকে তরঙ্গশীর্ষের উচ্চতা বা সাম্যাবস্থান থেকে তরঙ্গপাদের গভীরতা।
তরঙ্গের বিস্তার সাধারণত ‘A’ বা ‘a’ অক্ষর দ্বারা প্রকাশ করা হয়। SI -তে বিস্তারের একক মিটার এবং CGS পদ্ধতিতে সেন্টিমিটার। কোনো তরঙ্গের বিস্তার যত বেশি হয়, সেই তরঙ্গের শক্তিও তত বেশি হয়।
তরঙ্গদৈর্ঘ্য (Wavelength) –
তরঙ্গের গতিপথে অবস্থিত মাধ্যমের কোনো কণা যে সময়ে একটি পূর্ণ কম্পন সম্পন্ন করে, সেই সময়ে তরঙ্গটি যে দূরত্ব অতিক্রম করে, তাকে তরঙ্গদৈর্ঘ্য বলে।
ধরি, কোনো মাধ্যমের A বিন্দুতে একটি কণা একটি পূর্ণ কম্পন সম্পন্ন করলে তরঙ্গটি A বিন্দু থেকে E বিন্দুতে পৌঁছোয়। অর্থাৎ, A বিন্দু ও E বিন্দুর মাঝের দূরত্বকে তরঙ্গটির তরঙ্গদৈর্ঘ্য বলে। যেহেতু A ও E বিন্দুতে অবস্থিত কণা দুটি একই দশায় আছে, তাই তরঙ্গদৈর্ঘ্যের একটি বিকল্প সংজ্ঞা হিসেবে বলা যেতে পারে – পরপর দুটি সমদশা সম্পন্ন কণার মাঝের দূরত্বকে তরঙ্গদৈর্ঘ্য বলে। অর্থাৎ, AE, BF, CG, EI এই সমস্ত দৈর্ঘ্যই তরঙ্গদৈর্ঘ্য নির্দেশ করে।

অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গের ক্ষেত্রে তরঙ্গদৈর্ঘ্য = পরপর অবস্থিত একটি ঘনীভবন ও একটি তনুভবনের মোট দৈর্ঘ্য। [2 নং চিত্র দ্যাখো]
তির্যক তরঙ্গের ক্ষেত্রে তরঙ্গদৈর্ঘ্য = পরপর অবস্থিত দুটি তরঙ্গশীর্ষের (B, F) মধ্যে দূরত্ব বা পরপর অবস্থিত দুটি তরঙ্গপাদের (D, H) মধ্যে দূরত্ব [3 নং চিত্র দ্যাখো]।
তরঙ্গদৈর্ঘ্যকে সাধারণত λ (ল্যামডা) অক্ষর দ্বারা প্রকাশ করা হয়। SI -তে তরঙ্গদৈর্ঘ্যের একক মিটার এবং CGS পদ্ধতিতে সেন্টিমিটার।
কোনো তরঙ্গের তরঙ্গদৈর্ঘ্য যত বেশি হয়, সেই তরঙ্গের কম্পাঙ্ক তত কম হয়। অর্থাৎ, শক্তিও কম হয়।
পর্যায়কাল (Period) –
তরঙ্গের গতিপথে অবস্থিত মাধ্যমের কোনো কণা যে সময়ে একটি পূর্ণ কম্পন সম্পন্ন করে, সেই সময়কে ওই তরঙ্গের পর্যায় বা পর্যায়কাল (Time period) বলে। একে ‘T’ অক্ষর দ্বারা প্রকাশ করা হয়। SI এবং CGS উভয় পদ্ধতিতেই পর্যায়কালের একক সেকেন্ড।
তরঙ্গ কম্পাঙ্ক (Wave frequency) –
তরঙ্গের গতিপথে অবস্থিত মাধ্যমের কোনো কণা এক সেকেন্ডে যতগুলি পূর্ণ কম্পন সৃষ্টি করে, সেই সংখ্যাকে তরঙ্গ কম্পাঙ্ক বলে। কম্পাঙ্ককে n বা \(\nu\) (নিউ) অক্ষর দ্বারা প্রকাশ করা হয়। SI -তে কম্পাঙ্কের একক হার্ৎজ (Hz)।
তরঙ্গ বেগ (Wave velocity) –
এক সেকেন্ডে কোনো তরঙ্গ যতটা দূরত্ব অতিক্রম করে, তাকেই তরঙ্গের বেগ বলে। একে v অক্ষর দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
∴ v =
SI -তে তরঙ্গের বেগের একক মিটার/সেকেন্ড এবং CGS পদ্ধতিতে সেন্টিমিটার/সেকেন্ড।
তরঙ্গবেগ, তরঙ্গের কম্পাঙ্ক এবং তরঙ্গদৈর্ঘ্যের মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয় করো।
অথবা, v = nλ সম্পর্কটি প্রমাণ করো। (চিহ্নগুলি প্রচলিত অর্থবহ)।
ধরা যাক, কোনো তরঙ্গের তরঙ্গদৈর্ঘ্য = λ, ওই তরঙ্গের কম্পাঙ্ক = n এবং তরঙ্গ বেগ = v।
∴ কম্পাঙ্কের সংজ্ঞানুযায়ী, 1 সেকেন্ডে মাধ্যমের কণাগুলি n সংখ্যক পূর্ণ কম্পন সৃষ্টি করে, আবার যেহেতু তরঙ্গের তরঙ্গদৈর্ঘ্য = λ সুতরাং, কণাগুলির 1 বার পূর্ণ কম্পনে তরঙ্গটি যায় λ দূরত্ব
∴ n বার পূর্ণ কম্পনে তরঙ্গটি যায় nλ দূরত্ব
∵ n বার পূর্ণ কম্পনের জন্য প্রয়োজনীয় সময় = 1 সেকেন্ড
∴ 1 সেকেন্ডে তরঙ্গ nλ দূরত্ব যায়।
আবার, তরঙ্গ 1 সেকেন্ডে যে দূরত্ব যায়, তা ওই তরঙ্গের বেগ v।
∴ v = nλ
অর্থাৎ, তরঙ্গ বেগ = তরঙ্গের কম্পাঙ্ক × তরঙ্গদৈর্ঘ্য।
শব্দের বেগ কাকে বলে?
শব্দের বেগ (Velocity of sound) – কোনো মাধ্যমে শব্দ এক সেকেন্ডে যে দূরত্ব অতিক্রম করে, তাকে শব্দের বেগ বলে।
কোনো মাধ্যমে শব্দের বেগ কোন্ কোন্ বিষয়ের ওপর কীভাবে নির্ভর করে?
কোনো মাধ্যমে শব্দের বেগ নিম্নলিখিত বিষয়গুলির ওপর নির্ভর করে –
মাধ্যমের প্রকৃতি –
মাধ্যমের ভৌত অবস্থার ওপর শব্দের বেগ সরাসরি নির্ভর করে। কঠিন মাধ্যমে শব্দের বেগ সর্বোচ্চ এবং গ্যাসীয় মাধ্যমে সর্বনিম্ন হয়। আবার, ভৌত অবস্থা অভিন্ন হলে কোনো নির্দিষ্ট মাধ্যমে শব্দের বেগ, ওই মাধ্যমের ঘনত্বের বর্গমূলের ব্যাস্তানুপাতিক হয়ে থাকে।
উষ্ণতা –
জড় মাধ্যমে শব্দের বেগ পরম স্কেলে মাধ্যমের উষ্ণতার বর্গমূলের সমানুপাতিক হয়। অর্থাৎ, মাধ্যমের উষ্ণতা বাড়লে শব্দের বেগ বাড়ে ও উষ্ণতা কমলে মাধ্যমে শব্দের বেগ কমে যায়। দেখা যায় যে, প্রতি °C উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য গ্যাসীয় মাধ্যমে শব্দের বেগ 0.61 m/s হারে বৃদ্ধি পায়।
বায়ুর আর্দ্রতা –
বায়ু মাধ্যমে শব্দের বেগ বায়ুর আর্দ্রতার ওপর নির্ভর করে। আর্দ্রতা বাড়লে বায়ুতে শব্দের বেগ বাড়ে এবং আর্দ্রতা কমলে বায়ুতে শব্দের বেগ কমে। একারণে, উষ্ণতা একই থাকলে বর্ষার দিনে বায়ুতে শব্দের বেগ, শীতের দিনে বেগ অপেক্ষা বেশি হয়।
বিভিন্ন মাধ্যমে বিভিন্ন উষ্ণতায় শব্দের বেগের একটি ছকের সাহায্যে লেখো।
বিভিন্ন মাধ্যমে বিভিন্ন উষ্ণতায় শব্দের বেগের একটি ছক নীচে দেওয়া হল –
মাধ্যম (উষ্ণতা) | শব্দের বেগ |
শুষ্ক বায়ু (0°C) | 332 m/s |
শুষ্ক বায়ু (20°C) | 344 m/s |
হাইড্রোজেন (0°C) | 1284 m/s |
পাতিত জল (20°C) | 1498 m/s |
সমুদ্রের জল (0°C) | 1531 m/s |
রক্ত (37°C) | 1570 m/s |
তামা (20°C) | 3750 m/s |
অ্যালুমিনিয়াম (20°C) | 5100 m/s |
লোহা (20°C) | 5130 m/s |
কাচ (20°C) | 5170 m/s |
বোধমূলক প্রশ্নোত্তর
চাঁদে তুমি ও তোমার বন্ধু দাঁড়িয়ে কথা বললে পরস্পরের কথা শোনা যাবে কি?
অথবা, চন্দ্রপৃষ্ঠে মহাকাশচারীরা কথা বলার জন্য বেতারের সাহায্য নেন কেন?
শব্দ বিস্তারের জন্য জড় মাধ্যমের অস্তিত্ব প্রয়োজন। চাঁদে বায়ু বা অন্য কোনো জড় মাধ্যম না থাকায় পাশাপাশি দাঁড়িয়ে দুই বন্ধু কথা বললেও সেই শব্দ বিস্তারলাভ করতে পারবে না। তাই পরস্পরের কথা শোনা যাবে না। বাস্তবে বেতারতরঙ্গ (যা মাধ্যম নিরপেক্ষভাবে বিস্তারলাভে সক্ষম) ব্যবহার করে চাঁদে মহাকাশচারীরা যোগাযোগ রক্ষা করে থাকেন।
সূর্য বা চাঁদে বিস্ফোরণ হলে তার শব্দ পৃথিবীতে শোনা যায় না কেন?
অথবা, সূর্য বা চাঁদ থেকে পৃথিবীতে আলো এসে পৌঁছোয় কিন্তু শব্দ এসে পৌঁছোয় না কেন?
শব্দ একপ্রকার স্থিতিস্থাপক তরঙ্গ। তার বিস্তারের জন্য জড় মাধ্যম আবশ্যক। সূর্য বা চাঁদ এবং পৃথিবীর মধ্যবর্তী দূরত্বের বেশিরভাগ অংশই মাধ্যমবিহীন অর্থাৎ, শূন্যস্থান। যেহেতু, শূন্যস্থানে শব্দবিস্তার সম্ভব নয় তাই ওই স্থানে ঘটিত বিস্ফোরণের শব্দ পৃথিবীতে এসে পৌঁছোয় না।
অন্যদিকে, আলো প্রকৃতিতে তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ এবং মাধ্যমের অনুপস্থিতিতেও এটি বিস্তারলাভে সক্ষম। তাই সূর্য বা চাঁদ থেকে আলো সহজেই পৃথিবীতে আসতে পারে।
তোমার বন্ধু জলের মধ্যে ডুবে থাকা অবস্থায় হাততালি দিলে তুমি পুকুরপাড়ে দাঁড়িয়ে তা শুনতে পারবে কি?
অথবা, জলের মধ্যে কোনো শব্দ সৃষ্টি হলে তা বায়ুমাধ্যম থেকে শোনা যায় না কেন?
দুটি স্থানের মাধ্যমের ঘনত্বের পার্থক্য যদি অনেক বেশি হয় তবে, ওই দুই অংশের মধ্য দিয়ে শব্দতরঙ্গ সহজে বিস্তারলাভ করতে পারে না। জল ও বায়ু মাধ্যমের ঘনত্বের তারতম্য যথেষ্ট বেশি, ফলে জলমাধ্যম থেকে বায়ুতে শব্দ সহজে সঞ্চালিত হয় না। তাই, জলের মধ্যে কোনো শব্দ হলে বা হাততালি দিলে সেই শব্দ বায়ুমাধ্যমে অবস্থানরত শ্রোতা শুনতে পান না। একইভাবে, জলের বাইরে কোনো শব্দ হলে জলের মধ্যে ডুবে থাকা ব্যক্তি ওই শব্দ শুনতে পাবেন না।
ঘরের কাচের জানালায় একটির পরিবর্তে দুটি কাচ ব্যবহার করলে কী সুবিধা হবে?
অথবা, জনবহুল এলাকায় বাড়িতে যুগ্ম কাচের জানালা ব্যবহার করা হয় কেন?
ঘরের কাচের জানালায় একটির পরিবর্তে দুটি কাচ ব্যবহার করলে দুটি কাচের মধ্যে বায়ু আবদ্ধ থাকে। ফলে, বাইরের শব্দ ভিতরে আসতে গেলে শব্দকে প্রথমে কাচ, তারপর বায়ু ও তারপর আবার কাচ মাধ্যমের মধ্যে দিয়ে আসতে হয়। কিন্তু বায়ু ও কাচ মাধ্যমের ঘনত্বের পার্থক্য অনেক বেশি। তাই, বায়ু থেকে কাচ মাধ্যমে সহজে শব্দের বিস্তার হয় না। সুতরাং, ঘরের কাচের জানালায় একটির পরিবর্তে দুটি কাচ ব্যবহার করলে ঘর থেকে বাইরের শব্দ শোনা যাবে না বা বাইরে থেকে ঘরের শব্দ শোনা যাবে না। তাই জনবহুল এলাকায় বাড়িতে যুগ্ম কাচের জানালা ব্যবহার করলে বাড়ির ভিতর বাইরের কোলাহলের শব্দ থেকে মুক্ত থাকবে।
বজ্রনাদ শুনলে বজ্রাহত হওয়ার ভয় থাকে না – ব্যাখ্যা করো।
অথবা, বিদ্যুতের ঝলকানি দেখার কিছু সময় পর শব্দ শোনা যায় কেন?
বায়ুতে আলোর বেগ (3 × 108 m/s) -এর তুলনায় শব্দের বেগ (332 m/s) উপেক্ষণীয় রকম কম হয়। তাই, মেঘের স্তরে বজ্রবিদ্যুৎ সৃষ্টির ফলে উৎপন্ন আলো মুহূর্তের মধ্যে পৃথিবীতে এসে পৌঁছালেও শব্দ আসে অপেক্ষাকৃত দেরিতে। এই কারণে বজ্রপাতের সময় আলোর ঝলক দেখার অনেক পরে শব্দ শোনা যায়। সেজন্যই বলা হয় যে, বজ্রনাদ শুনলে বজ্রাহত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। বজ্রপাতে মৃত্যু প্রকৃতপক্ষে বজ্রসৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে ঘটে যায়।

স্পোটর্সের রানিং ইভেন্টে স্টার্টার পিস্তল চালানোর সঙ্গে সঙ্গেই আলোক স্ফুলিঙ্গ দেখা গেলেও শব্দ সামান্য দেরিতে শ্রোতার কানে পৌঁছায়। এই ঘটনার কারণ কী?
স্পোটর্সের রানিং ইভেন্টের সময় স্টার্টার পিস্তল চালানোর সঙ্গে সঙ্গেই আলোক স্ফুলিঙ্গ দেখা গেলেও পিস্তলের শব্দ সামান্য হলেও পরে শ্রোতার কানে পৌঁছোয়। এ ঘটনাও একই কারণে ঘটে।
বহুদূরে অবস্থিত কোনো কারখানার সাইরেনের শব্দ শুনে ঘড়ি মেলালে ঘড়ি স্লো যায় কেন?
বহুদূরে অবস্থিত কোনো কারখানার সাইরেনের শব্দ শ্রোতার কানে পৌঁছোতে বেশ কিছুটা সময় লাগে। তাই, সাইরেনের শব্দ শুনে ঘড়ি মেলালে ঘড়ি সঠিক সময় দেবে না, স্লো যাবে। যেমন – সকাল দশটায় সাইরেন বাজলে, সেই শব্দ দূরের শ্রোতার কানে দশটার পরে পৌঁছোবে। অথচ শ্রোতা ঘড়িতে সময় ঠিক করবে দশটা। অর্থাৎ, ঘড়িটি স্লো হয়ে যাবে।
একটি 100 মিটার দৌড় প্রতিযোগিতা বন্দুকে আওয়াজ করে শুরু হল। এক ব্যক্তি দৌড় যেখানে শেষ হবে সেই স্থানে স্টপওয়াচ চালু করে সময় দেখলেন। গ্রীষ্মকালে এবং শীতকালে – কখন পাঠ সঠিক হবে?
আমরা জানি, শব্দের বেগ পরম উষ্ণতার বর্গমূলের সমানুপাতিক। আবার শীতকাল অপেক্ষা গ্রীষ্মকালে উষ্ণতা বেশি। তাই গ্রীষ্মকালে শব্দের বেগও বেশি হবে। ফলে, 100 মিটার পথ অতিক্রম করতে গ্রীষ্মকালে অনেক কম সময় লাগবে এবং অধিকতর সঠিক পাঠ পাওয়া যাবে।
সমবৰ্তন কাকে বলে?
স্থিতিস্থাপক বা তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গের গতিপথে অবস্থিত মাধ্যমের কণাগুলির কম্পন কোনো নির্দিষ্ট তলে সীমাবদ্ধ হওয়ার ঘটনাকে বলা হয় সমবৰ্তন (Polarisation)। এটি তির্যক তরঙ্গের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য, যা দিয়ে তরঙ্গকে অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ থেকে আলাদা করা যায়।
পার্থক্যধর্মী প্রশ্নোত্তর
তির্যক তরঙ্গ ও অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গের মধ্যে পার্থক্য লেখো।
তির্যক তরঙ্গ ও অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গের মধ্যে পার্থক্যগুলি হল –
বিষয় | তির্যক তরঙ্গ (Transverse wave) | অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ (Longitudinal wave) |
মাধ্যমের কণার কম্পন অভিমুখ | মাধ্যমের কণাগুলির কম্পন তরঙ্গগতির সঙ্গে লম্বভাবে হলে ওই তরঙ্গকে তির্যক তরঙ্গ বলে। | মাধ্যমের কণাগুলির কম্পন তরঙ্গগতির দিকে সমান্তরাল হলে তাকে অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ বলে। |
তরঙ্গ সৃষ্টির ফল | পর্যায়ক্রমে তরঙ্গশীর্ষ ও তরঙ্গপাদ সৃষ্টির মাধ্যমে তির্যক তরঙ্গ অগ্রসর হয়। | পর্যায়ক্রমিক ঘনীভবন ও তনুভবন সৃষ্টির দ্বারা অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ বিস্তার লাভ করে। |
মাধ্যমের প্রকৃতি | শুধুমাত্র কঠিন মাধ্যমেই স্থিতিস্থাপক তির্যক তরঙ্গ সৃষ্টি করা সম্ভব, তরল বা গ্যাসীয় মাধ্যমে তা সম্ভব হয় না। | কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় যে-কোনো মাধ্যমে অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ সৃষ্টি হতে পারে। |
সমবর্তন | তির্যক তরঙ্গকে সমবর্তিত করা যায়। | অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গের সমবর্তন হয় না। |
চাপ ও ঘনত্বের পরিবর্তন | মাধ্যমে সর্বত্র চাপ ও ঘনত্বের একই রকম পরিবর্তন হয়। | ঘনীভবনের সময় চাপ ও ঘনত্ব সর্বোচ্চ হয় এবং তনুভবনের সময় চাপ ও ঘনত্ব সর্বনিম্ন হয়। |
উদাহরণ | জলে ঢিল ফেলায় যে তরঙ্গ সৃষ্টি হয়, সেটি হল তির্যক তরঙ্গ। | শব্দতরঙ্গ হল অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ। |
ঘনীভবন (Compression) ও তনুভবন (Rarefaction) -এর মধ্যে পার্থক্য লেখো।
ঘনীভবন (Compression) ও তনুভবন (Rarefaction) -এর মধ্যে পার্থক্যগুলি হল –
বিষয় | ঘনীভবন (Compression) | তনুভবন (Rarefaction) |
মাধ্যমের কণাগুলির মধ্যে দূরত্ব | অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গের এই অংশে মাধ্যমের কণাগুলি সাধারণ অবস্থার তুলনায় কাছাকাছি থাকে। | অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গের এই অংশে মাধ্যমের কণাগুলি সাধারণ অবস্থার তুলনায় বেশি দূরে দূরে থাকে। |
মাধ্যমের আয়তন | ঘনীভবনের সময় হঠাৎ করে মাধ্যমের আয়তন সামান্য পরিমাণ কমে যায়। | তনুভবনের সময় হঠাৎ করে মাধ্যমের আয়তন সামান্য পরিমাণ বেড়ে যায়। |
মাধ্যমের ঘনত্ব | ঘনীভবনের সময় মাধ্যমের ঘনত্ব সাধারণ অবস্থার তুলনায় বেশি হয়। | তনুভবনের সময় মাধ্যমের ঘনত্ব সাধারণ অবস্থার তুলনায় কম হয়। |
শব্দতরঙ্গ (Sound wave) এবং আলোকতরঙ্গ (Light wave) -এর মধ্যে সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্যগুলি লেখো।
শব্দতরঙ্গ (Sound wave) এবং আলোকতরঙ্গ (Light wave) -এর মধ্যে সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্যগুলি হল –
সাদৃশ্য –
- সাধারণ ধর্ম – শব্দতরঙ্গ ও আলোকতরঙ্গ -এর প্রতিফলন, প্রতিসরণ ও ব্যতিচার হয়;
- শক্তি – শব্দ ও আলো উভয়ই একপ্রকার শক্তি;
- শক্তির রূপান্তর – শব্দশক্তি ও আলোকশক্তি অন্যান্য শক্তিতে এবং অন্যান্য শক্তি শব্দশক্তিতে ও আলোকশক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
বৈসাদৃশ্য –
বিষয় | শব্দতরঙ্গ (Sound wave) | আলোকতরঙ্গ (Light wave) |
তরঙ্গের প্রকৃতি | শব্দতরঙ্গ স্থিতিস্থাপক তরঙ্গ। | আলোকতরঙ্গ তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ। |
তরঙ্গের ধরন | শব্দতরঙ্গ অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ। | আলোকতরঙ্গ তির্যক তরঙ্গ। |
তরঙ্গের গতিবেগ | শব্দতরঙ্গের গতিবেগ আলোকতরঙ্গের বেগের তুলনায় অনেক কম। 0°C উষ্ণতায় বায়ুমাধ্যমে শব্দের বেগ 332 m/s। | আলোকতরঙ্গের গতিবেগ শব্দতরঙ্গের বেগের তুলনায় অনেক বেশি। শূন্যস্থানে আলোর গতিবেগ 3 × 108 m/s। |
তরঙ্গদৈর্ঘ্য | শব্দতরঙ্গের তরঙ্গদৈর্ঘ্য অনেক বড়ো। | আলোকতরঙ্গের তরঙ্গদৈর্ঘ্য খুব ছোটো। |
বিস্তারের জন্য প্রয়োজনীয় মাধ্যম | শব্দতরঙ্গের বিস্তারের জন্য স্থিতিস্থাপক জড় মাধ্যম প্রয়োজন। | আলোকতরঙ্গের বিস্তারের জন্য কোনো মাধ্যম প্রয়োজন নেই। |
তরঙ্গবেগ | শব্দের বেগ মাধ্যমের ঘনত্ব, উষ্ণতা, আর্দ্রতা প্রভৃতি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। | আলোর বেগ উষ্ণতা, আর্দ্রতা প্রভৃতি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে না। |
প্রতিফলক তলের দৈর্ঘ্য ও মসৃণতা | শব্দের প্রতিফলনের জন্য প্রতিফলক তল বড়ো ও অমসৃণ হতে হয়। | আলোর প্রতিফলনের জন্য প্রতিফলক তল ছোটো ও মসৃণ হতে হয়। |
প্রতিরূপ গঠন | শব্দের প্রতিফলনে প্রতিধ্বনি সৃষ্টি হয়। | আলোর প্রতিফলনে প্রতিবিম্ব সৃষ্টি হয়। |
গাণিতিক প্রশ্নাবলি
প্রয়োজনীয় সূত্র
n কম্পাঙ্কবিশিষ্ট λ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের শব্দতরঙ্গের বেগ হলে, v = nλ হয়।
বায়ুতে শব্দের বেগ 330 m/s হলে 660 Hz কম্পাঙ্কের কোনো সুরশলাকার 100টি পূর্ণকম্পনে শব্দ কতদূর যাবে?
এক্ষেত্রে, শব্দের বেগ \(\left(v\right)=330\;m/s\), শব্দের কম্পাঙ্ক \(\left(n\right)=660\;Hz\)
ধরা যাক, সুরশলাকা থেকে উৎপন্ন শব্দের তরঙ্গদৈর্ঘ্য = \(\lambda\)
∴ \(v=n\lambda\)
বা, \(\lambda=\frac vn\)
বা, \(\lambda=\frac{330}{660}\)
বা, \(\lambda=\frac12\)
সুরশলাকার \(1\)টি পূর্ণ কম্পনে শব্দ যায় \(\frac12\;m\)
সুতরাং, সুরশলাকার \(100\)টি পূর্ণ কম্পনে শব্দ যায় \(\left(\frac12\times100\right)\;m=50\;m\)।
বাতাসে শব্দের বেগ 330 m/s। একটি সুরশলাকার কম্পাঙ্ক 300 Hz হলে, বাতাসে উৎপন্ন শব্দের তরঙ্গদৈর্ঘ্য কত?
এখানে, বাতাসে শব্দের বেগ \(\left(v\right)=330\;m/s\)
সুরশলাকার কম্পাঙ্ক \(\left(n\right)=300\;Hz\)
ধরা যাক, বাতাসে উৎপন্ন শব্দের তরঙ্গদৈর্ঘ্য = \(\lambda\)
∵ \(v=n\lambda\)
∴ \(\lambda=\frac vn\)
বা, \(\lambda=\frac{330}{300}\)
বা, \(\lambda=1.1\)
∴ বাতাসে উৎপন্ন শব্দের তরঙ্গদৈর্ঘ্য = \(1.1\;m\)।
শ্রবণযোগ্য শব্দের কম্পাঙ্কের পাল্লা হল 20 Hz থেকে 20,000 Hz। এই কম্পাঙ্ক সীমার অনুরূপ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সীমা নির্ণয় করো। দেওয়া আছে, বাতাসে শব্দের বেগ = 340 m/s।
প্রথম ক্ষেত্রে, শব্দের বেগ \(\left(v\right)=340\;m/s\)
শব্দের কম্পাঙ্ক \(n_1=20\;Hz\)
ধরা যাক, তরঙ্গদৈর্ঘ্য \(\lambda_1\)
∵ \(v=n_1\lambda_1\)
∴ \(\lambda_1=\frac v{n_1}\)
বা, \(\lambda_1=\frac{340}{20}\;m\)
বা, \(\lambda_1=17\;m\)
দ্বিতীয় ক্ষেত্রে, শব্দের বেগ \(\left(v\right)=340\;m/s\)
শব্দের কম্পাঙ্ক \(n_2=20,000\;Hz\)
ধরা যাক, এক্ষেত্রে তরঙ্গদৈর্ঘ্য \(\lambda_2\)
∵ \(v=n_2\lambda_2\)
∴ \(\lambda_2=\frac v{n_2}\)
বা, \(\lambda_2=\frac{340}{20000}\;m\)
বা, \(\lambda_2=0.017\;m\)
∴ শ্রবণযোগ্য শব্দের কম্পাঙ্ক সীমার অনুরূপ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সীমা হল \(17\;m\) থেকে \(0.017\;m\)।
বায়ুতে কোনো সুরশলাকা 1.7 মিটার তরঙ্গদৈর্ঘ্য সৃষ্টি করে। কম্পিত বায়ুতে শব্দের বেগ 340 মিটার/সেকেন্ড হলে সুরশলাকার কম্পাঙ্ক নির্ণয় করো।
আমরা জানি,
তরঙ্গের বেগ \(\left(v\right)\) = কম্পাঙ্ক \(\left(n\right)\) × তরঙ্গদৈর্ঘ্য \(\left(\lambda\right)\)
∴ \(\left(v\right)=n\lambda\)
বা, \(340=n\times1.7\)
বা, \(n=\frac{340}{1.7}\;Hz\)
বা, \(n=200\;Hz\)
∴ সুরশলাকার কম্পাঙ্ক \(200\;Hz\)।
স্থির কম্পাঙ্কের কম্পনশীল একটি বস্তু A মাধ্যমে 0.1 m এবং B মাধ্যমে 0.2 m দীর্ঘ তরঙ্গ উৎপন্ন করে। ওই মাধ্যম দুটিতে তরঙ্গের বেগের অনুপাত নির্ণয় করো।
ধরা যাক, \( A\) ও \(B \) মাধ্যমে তরঙ্গের বেগ যথাক্রমে \(v_A \) ও \(v_B \)।
এখন \(A \) মাধ্যমে তরঙ্গের তরঙ্গদৈর্ঘ্য, \(\lambda_A=0.1\;m\)
এবং \(B \) মাধ্যমে তরঙ্গের তরঙ্গদৈর্ঘ্য, \(\lambda_B=0.2\;m\)
আমরা জানি, \( \)
∴ \(v_A=n\lambda_A\) এবং \(v_B=n\lambda_B\) [∵ এক্ষেত্রে, \(n \) কম্পাঙ্ক স্থির]
∴ \(v=n\lambda\)
বা, \(\frac{v_A}{v_B}=\frac{n\lambda_A}{n\lambda_B}\)
বা, \( \frac{v_A}{v_B}=\frac{\lambda_A}{\lambda_B}\)
বা, \(\frac{v_A}{v_B}=\frac{0.1}{0.2}\)
বা, \(\frac{v_A}{v_B}=\frac12\)
∴ \(v_A:v_B=1:2\)
∴ ওই মাধ্যম দুটিতে তরঙ্গের বেগের অনুপাত \(1:2\)।
50 Hz ও 100 Hz কম্পাঙ্ক বিশিষ্ট দুটি সুরশলাকা কম্পনশীল অবস্থায় জলের পৃষ্ঠ স্পর্শ করলে যথাক্রমে 0.6 cm ও 0.36 cm তরঙ্গদৈর্ঘ্যের তরঙ্গ সৃষ্টি করে। এই দুটি তরঙ্গের বেগের তুলনা করো।
আমরা জানি, যে-কোনো তরঙ্গের ক্ষেত্রে, তরঙ্গ বেগ = কম্পাঙ্ক × তরঙ্গদৈর্ঘ্য,
অর্থাৎ, \(v=n\lambda\)
∴ \(\frac{v_1}{v_2}=\frac{n_1\lambda_1}{n_2\lambda_2}\) [এখানে, \(n_1=50\;Hz,\;n_2=100\;Hz,\;\lambda_1=0.6\;cm,\;\lambda_2=0.36\;cm,\;\frac{v_1}{v_2}=?\)]
বা, \(\frac{v_1}{v_2}=\frac{50\times0.6}{100\times0.36}\)
বা, \(\frac{v_1}{v_2}=\frac{30}{36}\)
বা, \(\frac{v_1}{v_2}=\frac56\)
বা, \(v_1:v_2=5:6\)
∴ এই দুটি তরঙ্গের বেগের অনুপাত \(5:6\)।
কোনো সুরশলাকার কম্পাঙ্ক 512 Hz। এই সুরশলাকার 30 বার কম্পনের জন্য যে সময় লাগে সেই সময়ে শব্দ বায়ুতে 20 m দূরত্ব যায়। বায়ুতে শব্দের বেগ ও তরঙ্গদৈর্ঘ্য নির্ণয় করো।
সুরশলাকার কম্পাঙ্ক = \(512\;Hz\)
অর্থাৎ, সুরশলাকাটির \( 512\) বার কম্পনের জন্য সময় লাগে \(1\;s \)।
সুরশলাকাটির \(30 \) বার কম্পনের জন্য সময় লাগে \(\frac{30}{512}\;s \)।
প্রশ্নানুসারে,
শব্দ বায়ুতে \(\frac{30}{512}\;s\) -এ যায় \(20\;m\) দূরত্ব।
∴ শব্দ বায়ুতে \(1\;s\) -এ যায় \(\frac{20\times512}{30}\;m \) দূরত্ব
= \(341.33\;m\) দূরত্ব।
অতএব, বায়ুতে শব্দের বেগ = \(341.33\;m\)
আবার, \(v=n\lambda\)
বা, \(\lambda=\frac vn \)
বা, \( \lambda=\frac{341.33}{512}\) [এখানে, \(v=341.33\;m/s,\;n=512\;Hz \)]
বা, \(\lambda=0.667 \)
∴ বায়ুতে শব্দের তরঙ্গদৈর্ঘ্য \( 0.667\;m\)।
2.5 k Hz কম্পাঙ্কবিশিষ্ট একটি শব্দের তরঙ্গদৈর্ঘ্য 40 cm। 2 km অতিক্রম করতে তরঙ্গটি কত সময় নেবে?
শব্দতরঙ্গের কম্পাঙ্ক, \(n=2.5\;k\;Hz=2.5\times10^3\;Hz\)
শব্দতরঙ্গের দৈর্ঘ্য, \( \lambda=40\;cm=0.4\;m\)
শব্দতরঙ্গের বেগ হলে,
আমরা জানি, \( v=n\lambda\)
বা, \(v=2.5\times10^3\times0.4\)
বা, \(v=1000\;m/s\)
এখন, শব্দতরঙ্গ কর্তৃক অতিক্রান্ত দূরত্ব, \(s=2\;km=2000\;m \)
এই দূরত্ব অতিক্রম করতে শব্দতরঙ্গের প্রয়োজনীয় সময় \( t\) হলে,
\(t=\frac sv \\\)বা, \(t=\frac{2000}{1000}\;s\)
বা, \(t=2\;s\)
∴ \(2\;km\) অতিক্রম করতে শব্দতরঙ্গ সময় নেবে \(2\;s\)।
যদি বাতাসে শব্দের বেগ 336 m/s হয় তবে 560 Hz কম্পাঙ্কবিশিষ্ট সুরশলাকা থেকে সৃষ্ট শব্দকে 1500 m দূরত্বে পাঠাতে সুরশলাকাটিকে কতগুলি পূর্ণ কম্পন ঘটাতে হবে?
শব্দের বেগ \(\left(v\right)=336\;m/s\), কম্পাঙ্ক \(\left(n\right)=560\;Hz\)
সুরশলাকা থেকে উৎপন্ন শব্দের তরঙ্গদৈর্ঘ্য \(\left(\lambda\right)=\frac vn\)
বা, \(\lambda=\frac{336}{560}\)
বা, \(\lambda=0.6\;m\)
∴ তরঙ্গদৈর্ঘ্য, \(\lambda=0.6\;m\)
∴ \(1500\;m\) দূরত্ব অতিক্রম করতে সুরশলাকার প্রয়োজনীয় কম্পন সংখ্যা \(\left(x\right)=\frac{1500}{0.6}\)
বা, \(x=\frac{1500}{\displaystyle\frac6{10}}\)
বা, \(x=\frac{1500\times10}6\)
বা, \(x=2500\)
∴ কম্পন সংখ্যা \(2500\)।
200 Hz কম্পাঙ্কবিশিষ্ট একটি শব্দ উৎস থেকে উৎপন্ন শব্দ 1 km পথ অতিক্রম করতে কটি ঘনীভবনের সৃষ্টি হয়? (বায়ুতে শব্দের বেগ 330 m/s)
বায়ুতে শব্দের বেগ = \(330\;m/s \)
∴ \( 1\) কিমি বা \(1000 \) মিটার পথ অতিক্রম করতে শব্দের সময় লাগে = \( \frac{1000}{330}\;s=\frac{100}{33}\;s\)
যেহেতু, শব্দ উৎসের কম্পাঙ্ক \(200\;Hz \)
সুতরাং, \(\frac{100}{33}\;s \) সময়ে শব্দের উৎসের কম্পন হয়,
\( \frac{100}{33}\times200\) বার = \( \frac{20000}{33}\) বার = \(606 \) বার।
আমরা জানি, শব্দ উৎসের একটি পূর্ণকম্পনে একটি ঘনীভবন ও একটি তনুভবনের সৃষ্টি হয়।
অতএব, শব্দ উৎসের \(606 \) বার পূর্ণকম্পনে \(606 \)টি ঘনীভবনের সৃষ্টি হয়।
∴ এক্ষেত্রে \(606 \)টি ঘনীভবনের সৃষ্টি হয়।
Class 9 Physical Science – Notes for All Chapters
Chapter Name | Tropics |
---|---|
পরিমাপ | পরিমাপ ও একক বিভিন্ন মাপের একক মাত্রা পরিমাপ |
বল ও গতি | স্থিতি ও গতি গতির সমীকরণ নিউটনের প্রথম গতিসূত্র নিউটনের দ্বিতীয় গতি সূত্র নিউটনের তৃতীয় গতিসূত্র বিভিন্ন ধরণের বল রৈখিক ভরবেগ রৈখিক ভরবেগ সংরক্ষণ |
পদার্থ : গঠন ও ধর্ম | তরল ও বায়ুর চাপ আর্কিমিডিসের নীতি পৃষ্ঠটান সান্দ্রতা বার্নোলির নীতি স্থিতিস্থাপকতা |
পদার্থ : পরমাণুর গঠন ও পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ | পরমাণুর গঠন মোলের ধারণা দ্রবণ অ্যাসিড, ক্ষার, লবণ মিশ্রণের উপাদানের পৃথকীকরণ জল |
শক্তির ক্রিয়া , কার্য, ক্ষমতা | শক্তির ক্রিয়া , কার্য, ক্ষমতা |
তাপ | ক্যালোরিমিতি কার্য ও তাপের তুল্যতা লীনতাপ সম্পৃক্ত ও অসম্পৃক্ত বাষ্প জলের ব্যতিক্রান্ত প্রসারণ |
শব্দ | শব্দের উৎস : কম্পন শব্দের বিস্তার : তরঙ্গ শব্দের কয়েকটি ধর্ম শব্দের বৈশিষ্ট্য মানুষের কান ও শব্দ শোনার কৌশল শব্দদূষণ |
আজকের আর্টিকেলে আমরা নবম শ্রেণির ভৌতবিজ্ঞান বইয়ের সপ্তম অধ্যায় “শব্দ” এর “শব্দের বিস্তার : তরঙ্গ” থেকে পরীক্ষায় আসা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নোত্তরগুলো নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা, এমনকি চাকরি বা যেকোনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্যও উপযোগী। কারণ, এই অধ্যায়ের প্রশ্ন প্রায়ই বিভিন্ন পরীক্ষায় কমন আসে।
আশা করি, এই আর্টিকেলটি আপনাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে কিছুটা হলেও সাহায্য করবে। যদি কোনো প্রশ্ন, মতামত বা সাহায্যের প্রয়োজন হয়, নিচে কমেন্ট করে জানাতে পারেন কিংবা টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন—আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে আমি সর্বদা প্রস্তুত।
ধন্যবাদ সবাইকে।
মন্তব্য করুন