এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “ডিরোজিও কেন কর্মচ্যুত হন? ডিরোজিও নব্য বঙ্গ আন্দোলন টীকা।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “ডিরোজিও কেন কর্মচ্যুত হন? ডিরোজিও নব্য বঙ্গ আন্দোলন টীকা।“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের দ্বিতীয় অধ্যায় “সংস্কার – বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

ডিরোজিও কেন কর্মচ্যুত হন?
উৎসাহের আতিশয্যে নব্যবঙ্গীয়রা হিন্দু ধর্ম ও ঐতিহ্যের উপর তীব্র আক্রমণ হেনে অন্ধ পাশ্চাত্যানুকরণে মেতে ওঠেন। তাদের স্বাধীনতাস্পৃহা ও উগ্র সংস্কারকামীতা শাসক ব্রিটিশের পাশাপাশি সনাতনপন্থী ভারতীয়দেরও যথেষ্ট উদ্বিগ্ন করে তোলে। হিন্দু কলেজ কর্তৃপক্ষ নব্যবঙ্গীয়দের প্রেরণাদাতারূপে ডিরোজিওকেই দায়ী করেন এবং তাঁকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেন।
ডিরোজিও নব্য বঙ্গ আন্দোলন টীকা।
ইয়ং বেঙ্গল আন্দোলন – হিন্দু কলেজ কলকাতা থেকে পড়াশোনা করে শিক্ষিত হওয়া, বাঙালি মুক্ত চিন্তাবিদদের একটি দল এদের কর্মকাণ্ড পরবর্তীতে ইয়ং বেঙ্গল আন্দোলন নামে পরিচিত। যারা সবাই হিন্দু কলেজ -এর মুক্তবুদ্ধি ও যুক্তিবাদী শিক্ষক হেনরি লুই ডিরোজিও-র অনুসারী ছিলেন। ডিরোজিও তাঁর ছাত্রদেরকে জীবন ও সমাজ-প্রক্রিয়ার প্রতি যুক্তিসিদ্ধ দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করার শিক্ষা দিয়েছিলেন। ছাত্রদেরকে জ্ঞানানুরাগী হতে এবং যে কোনো অন্ধবিশ্বাস পরিত্যাগ করতে দীক্ষা দিয়েছিলেন ডিরোজিও।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
ডিরোজিও কে ছিলেন?
হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও ছিলেন একজন প্রগতিশীল শিক্ষক ও চিন্তাবিদ। তিনি হিন্দু কলেজে (বর্তমানে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়) শিক্ষকতা করতেন এবং তাঁর যুক্তিবাদী ও মুক্তচিন্তার দর্শন ছাত্রদের মধ্যে প্রভাব ফেলেছিল।
ডিরোজিও কেন কর্মচ্যুত হন?
ডিরোজিও তাঁর ছাত্রদের মধ্যে যুক্তিবাদ, মুক্তচিন্তা এবং সমাজের প্রচলিত রীতিনীতি ও ধর্মীয় বিশ্বাসের সমালোচনার মনোভাব গড়ে তুলেছিলেন। এই প্রগতিশীল চিন্তাভাবনা সনাতনপন্থী হিন্দু সমাজ ও ব্রিটিশ শাসক উভয়কেই উদ্বিগ্ন করেছিল। হিন্দু কলেজ কর্তৃপক্ষ ডিরোজিওকে নব্যবঙ্গীয়দের প্রেরণাদাতা হিসেবে দায়ী করে তাঁকে কর্মচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেয়।
নব্যবঙ্গীয় বা ইয়ং বেঙ্গল আন্দোলন কী?
নব্যবঙ্গীয় বা ইয়ং বেঙ্গল আন্দোলন ছিল হিন্দু কলেজের একদল মুক্তচিন্তাবিদ ছাত্রের আন্দোলন। তারা ডিরোজিওর শিক্ষায় অনুপ্রাণিত হয়ে যুক্তিবাদ, বিজ্ঞানমনস্কতা এবং সমাজ সংস্কারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। তারা হিন্দু ধর্ম ও ঐতিহ্যের অন্ধবিশ্বাসের বিরোধিতা করেছিলেন।
ডিরোজিওর শিক্ষার মূল বিষয় কী ছিল?
ডিরোজিও তাঁর ছাত্রদেরকে যুক্তিবাদ, মুক্তচিন্তা এবং সমাজের অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার শিক্ষা দিয়েছিলেন। তিনি জ্ঞানানুরাগী হওয়া এবং যেকোনো বিষয়কে যুক্তিসঙ্গতভাবে বিশ্লেষণ করার গুরুত্ব শিখিয়েছিলেন।
ডিরোজিওর কর্মচ্যুতির পেছনে হিন্দু কলেজ কর্তৃপক্ষের ভূমিকা কী ছিল?
হিন্দু কলেজ কর্তৃপক্ষ ডিরোজিওর প্রগতিশীল চিন্তাভাবনা এবং ছাত্রদের উপর তাঁর প্রভাবকে হিন্দু ধর্ম ও সমাজের জন্য হুমকি হিসেবে দেখেছিল। তারা মনে করেছিল যে ডিরোজিওর শিক্ষা ছাত্রদেরকে সনাতনপন্থী মূল্যবোধ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এই কারণে তাঁকে কর্মচ্যুত করা হয়।
ডিরোজিওর কর্মচ্যুতি কি ইয়ং বেঙ্গল আন্দোলনকে থামিয়ে দিতে পেরেছিল?
না, ডিরোজিওর কর্মচ্যুতি ইয়ং বেঙ্গল আন্দোলনকে থামাতে পারেনি। বরং তাঁর ছাত্ররা আরও সক্রিয় হয়ে ওঠেন এবং সমাজ সংস্কার ও যুক্তিবাদের পক্ষে তাদের আন্দোলন চালিয়ে যান। এই আন্দোলন বাংলার সামাজিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনে গভীর প্রভাব ফেলে।
ডিরোজিওর চিন্তাধারা কীভাবে বাংলার সমাজকে প্রভাবিত করেছিল?
ডিরোজিওর চিন্তাধারা বাংলার সমাজে যুক্তিবাদ, বিজ্ঞানমনস্কতা এবং সমাজ সংস্কারের নতুন ধারা সৃষ্টি করেছিল। তাঁর শিক্ষা ও আদর্শ পরবর্তীতে বাংলার নবজাগরণ আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “ডিরোজিও কেন কর্মচ্যুত হন? ডিরোজিও নব্য বঙ্গ আন্দোলন টীকা।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “ডিরোজিও কেন কর্মচ্যুত হন? ডিরোজিও নব্য বঙ্গ আন্দোলন টীকা।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের দ্বিতীয় অধ্যায় “সংস্কার – বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।