আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু হল অলৌকিক অভিজ্ঞতা প্রবন্ধ রচনা। মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষায় এবং স্কুল পরীক্ষায় প্রায়শই এই ধরণের প্রশ্ন দেখা যায়। অতএব, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ রচনা।
এই প্রবন্ধটি মুখস্ত করে রাখলে, ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ১২ষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত যেকোনো পরীক্ষায় অলৌকিক অভিজ্ঞতা বিষয়ক প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন। মনে রাখবেন, প্রবন্ধ রচনা করার সময় অবশ্যই নিজের অভিজ্ঞতা, কল্পনাশক্তি এবং সৃজনশীলতার ব্যবহার করবেন।
এই প্রবন্ধ রচনার মাধ্যমে আপনি শুধুমাত্র ভালো নম্বরই অর্জন করবেন না, বরং আপনার লেখার দক্ষতাও বৃদ্ধি পাবে।
একটি অলৌকিক অভিজ্ঞতা – প্রবন্ধ রচনা
ভূমিকা –
ছোটোবেলা থেকেই কোনোদিন ভূতপ্রেতে আমার বিশ্বাস ছিল না। যদিও নানাসময় নানা অলৌকিক ঘটনা লোকমুখে শুনেছি কিন্তু কোনোদিনই মন থেকে এসব বিশ্বাস করিনি। এই সব কিছুই ছিল আমার কাছে আজগুবি গল্পের মতো, যার কোনো মাথামুণ্ডু নেই। কিন্তু আমার এই বিশ্বাস, অর্থাৎ অলৌকিক ঘটনা বলে কিছু হয় না, ভূতপ্রেতের কোনো অস্তিত্ব নেই এই ধারণাটা ভেঙেছিল নিজের সঙ্গে হওয়া একটি ঘটনার পর থেকে। আজও আমি সেই ঘটনার বা আমার সেই অভিজ্ঞতার কোনো ব্যাখ্যা খুঁজে পাইনি। যুক্তিযুক্ত কোনো উত্তরও খুঁজে পাইনি।
কোথায় হয়েছিল –
ঘটনাটা ঘটেছিল ঠিক দু-বছর আগে এক শীতের রাতে। আমি তখন ক্লাস এইটে পড়ি। আমরা তিন বন্ধু তালডাঙা বলে একটা জায়গায় প্রাইভেট টিউশন পড়তে যেতাম। বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাসে করে কুড়ি মিনিট লাগত সেই জায়গায় পৌঁছোতে। বাস থেকে নেমে দশ মিনিটের হাঁটা পথ পেরিয়ে আমরা স্যারের বাড়ি পৌঁছোতাম। যাওয়ার পথে একটা ভাঙাচোরা মন্দির দেখতে পেতাম। সেই মন্দিরের আশেপাশে কোনো জনবসতি ছিল না। এই মন্দির নিয়ে নানা আজগুবি গল্প প্রচলিত ছিল। ওই মন্দিরের রাস্তা দিয়ে বিশেষ কেউ যাতায়াতও করত না। কিন্তু খুব কম সময়ে বড়ো রাস্তায় পৌঁছোনো যেত বলে ওই মন্দিরের রাস্তাই ছিল আমাদের একমাত্র ভরসা।
কী হয়েছিল –
এইরকমই একদিন পড়ে ফিরছি, হঠাৎ মনে হল কেউ আমার নাম ধরে ডাকছে। সেদিন আমি একাই ছিলাম, আমার সঙ্গে কেউ ছিল না। প্রথমে ভাবলাম আমি ভুল শুনেছি। তাই থেমে গিয়েও আবার হাঁটা শুরু করলাম। কিন্তু আবার শুনতে পেলাম সেই ডাক। মনে হল মন্দিরের বন্ধ দরজার ভেতর থেকে কেউ চিৎকার করে বলছে তাকে বাঁচাতে, সে সেখানে অনেকদিন ধরে বন্দি। কিন্তু এইসময় ওই জায়গায় কারও থাকার কথা নয়। কারণ ওই মন্দিরের দূরদূরান্তে কোনো জনবসতি নেই আর এই রাস্তা দিয়ে কেউ আসেও না। মনের মধ্যে সাহস সঞ্চয় করে সেই ডাক অনুসরণ করে আমি এগিয়ে গেলাম। যে দরজার ভেতর থেকে আওয়াজ আসছিল অর্থাৎ যে দরজাটায় ধাক্কা দিয়ে কেউ ডাকছিল, সেটা তালাবন্ধ না থাকায়, আমার হাতের সামান্য একটু ধাক্কাতেই তা খুলে গেল। কিন্তু খুব অদ্ভুত ব্যাপার, দরজা খুলে ভেতরে কাউকে দেখতে পেলাম না। এই ঘটনায় আমি প্রচণ্ড ভয় পেয়ে সেখান থেকে দৌড় লাগালাম। ভয়ে আমার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছিল। ফলে চিৎকার করার ক্ষমতাটুকুও আমার ছিল না। কোনোমতে দৌড়ে বড়ো রাস্তায় পৌঁছোতে মনের সাহস কিছুটা ফিরে এল।
প্রতিক্রিয়া –
বাড়িতে ফিরে আসার পর আমার সঙ্গে ঘটে যাওয়া এই ঘটনাটা সকলকে বললাম। কিন্তু কেউই সেটা বিশ্বাস করল না। সেই দিনের সেই অভিজ্ঞতার সাক্ষী ছিলাম কেবল আমি নিজে। সেই চিৎকার যেন আজও আমি শুনতে পাই। আর সেই দিনের সেই ঘটনাটা ভেবে আজও আমার গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে। অদ্ভুত এক অনুভূতি হয়, যেটা কাউকে বলে বোঝানো যায় না। সেই দিনের সেই অলৌকিক অভিজ্ঞতা হয়তো সারাজীবন আমার সঙ্গী হয়ে থাকবে।
এই আলোচনায় আমরা দেখেছি যে অলৌকিক অভিজ্ঞতা প্রবন্ধ রচনা মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষা এবং স্কুল পরীক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই ধরণের রচনা প্রায়শই পরীক্ষায় দেখা যায় এবং ভালো নম্বর পেতে হলে এটি পূর্ণাঙ্গভাবে লিখতে সক্ষম হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রবন্ধটি লেখার সময়, ছাত্রদের অবশ্যই তাদের অভিজ্ঞতা স্পষ্ট, সংক্ষিপ্ত এবং আকর্ষকভাবে বর্ণনা করতে হবে। তাদের অভিজ্ঞতার প্রভাব এবং তাদের জীবনে এর অর্থ কী তাও তাদের ব্যাখ্যা করতে হবে।
এই নির্দেশিকাগুলি অনুসরণ করে, ছাত্ররা এমন একটি প্রবন্ধ লিখতে পারবেন যা তাদের শিক্ষকদের মুগ্ধ করবে এবং তাদের পরীক্ষায় ভালো নম্বর অর্জনে সহায়তা করবে।