একটি ফুটবল ম্যাচের স্মৃতি – প্রবন্ধ রচনা

Gopi

আজ আমরা এই প্রবন্ধে একটি ফুটবল ম্যাচের স্মৃতি রচনা করার বিষয়ে আলোচনা করব। প্রবন্ধ রচনা মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষা এবং স্কুল পরীক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। একটি ফুটবল ম্যাচের স্মৃতি রচনা প্রায়ই পরীক্ষায় দেখা যায়।

এই রচনাটি একবার মুখস্ত করলে, তুমি ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ১২ষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত যেকোনো পরীক্ষায় এই প্রশ্নের উত্তর লিখতে পারবে। এই রচনাটি লিখতে হলে, তোমাকে প্রথমে একটি উত্তেজনাপূর্ণ ফুটবল ম্যাচের স্মৃতি মনে করতে হবে।

ম্যাচটি কোথায় খেলা হয়েছিল, তুমি কাদের সাথে ছিলে, ম্যাচের গুরুত্ব, খেলার উত্তেজনা, এবং ম্যাচের ফলাফল – এই সবকিছুই তোমার রচনায় স্পষ্টভাবে বর্ণনা করতে হবে। তোমার ভাষা সাবলীল এবং আকর্ষণীয় হতে হবে।

এছাড়াও, রচনায় শৃঙ্খলা এবং সুসঙ্গতি বজায় রাখতে হবে। নিয়মিত অনুশীলন করলে তুমি সহজেই একটি ভালো ফুটবল ম্যাচের স্মৃতি রচনা লিখতে পারবে।

একটি ফুটবল ম্যাচের স্মৃতি – প্রবন্ধ রচনা

একটি ফুটবল ম্যাচের স্মৃতি - প্রবন্ধ রচনা

ভূমিকা –

দিনটা ছিল রোববার। সেদিন বিকেলবেলায় আমি আর আমার বন্ধুরা আমার বাবার সাথে গিয়েছিলাম বৃন্দাবনী ময়দানে, ইউনাইটেড ইয়ংস এবং শান্তি ভারতী ক্লাবের মধ্যে আয়োজিত ‘সুপার কাপ’-এর ফাইনাল ম্যাচ দেখতে। আজ থেকে প্রায় পাঁচ বছর আগের কথা। কিন্তু দিনটি আমার কাছে আরও স্মরণীয় হয়ে রয়েছে। এর অন্যতম কারণ, বৃন্দাবনী মাঠের সুবিশাল গ্যালারিতে বসে ফুটবল ম্যাচ দেখবার লোভ ছিল আমার বহুদিনের। নানা কারণে সেটা ততদিন পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি। অবশেষে বাবা যখন এসে ফাইনাল খেলা দেখতে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, আমায় দ্বিতীয়বার ভাবতে হয়নি।

যাওয়ার প্রস্তুতিপর্ব –

‘সুপার কাপ’ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল মালদহ, দুই দিনাজপুর, মুরশিদাবাদ এবং জলপাইগুড়ি জেলার অনেকগুলি নামজাদা ক্লাব। ফলে টুর্নামেন্ট ঘিরে মালদহ জেলার জনসাধারণের প্রত্যাশা ছিল তুঙ্গে। ফাইনালের চাহিদা আগেভাগে আঁচ করতে পেরে সাত দিন আগে থেকে বাবা টিকিট কেটে রেখেছিলেন। সুদৃশ্য, সুবিশাল গ্যালারি আমাকে বরাবর আকৃষ্ট করত। কিন্তু ময়দানের মাঠে কিংবা গ্যালারিতে-কোথাওই প্রবেশের ছাড়পত্র আমাদের ছিল না। সেখানে বিভিন্ন ক্লাবের প্র্যাকটিস এবং প্রতিযোগিতা হত। তাই আকর্ষণ ছিল প্রবল। শনিবার রাতে ঘুম হয় না, রবিবার সকালে অঙ্ক করতে গিয়ে দেখি উত্তর মিলছে না। কখন দুপুর হবে সেই প্রতীক্ষায় অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে থাকি।

টুর্নামেন্টের কথা –

পাঁচটি জেলা থেকে মোট বারোটি ক্লাব প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল। তাদের চারটি গ্রুপে প্রথমে ভাগ করা হয়। প্রতিটি গ্রুপের সর্বোচ্চ পয়েন্ট অর্জনকারী দল সরাসরি সেমিফাইনালে ওঠে। সেমিফাইনালের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয় মালদহের ইউনাইটেড ইয়ংস এবং জলপাইগুড়ির ত্রিবেণী যুবক সংঘ। অন্য সেমিফাইনালে আমার জেলার অন্য ক্লাব শান্তি ভারতীর সামনে পড়ে দক্ষিণ দিনাজপুরের নেতাজি স্পোর্টস ক্লাব। প্রথম সেমিফাইনালে একপেশে লড়াইয়ে ইউনাইটেড ইয়ংস ৫-০ গোলে চূর্ণ করে তার প্রতিপক্ষকে। অন্য ম্যাচে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়-শান্তি ভারতী জেতে ৩-২ গোলে। ফাইনালে জোর টক্কর হবে জেনেও অধিকাংশ জনসাধারণই ইউনাইটেড ইয়ংসকে এগিয়ে রেখেছিল, সেমিফাইনালে দুর্ধর্ষ পারফরম্যান্সের কারণে।

ম্যাচের কথা –

উন্মাদনা সঙ্গে নিয়েই মাঠের পথে পা বাড়াই। কাতারে কাতারে জনতা স্টেডিয়ামের মূল দরজার বাইরে অপেক্ষা করছিল। অনেক ভিড় ঠেলে অবশেষে নির্ধারিত সিটে গিয়ে বসি। খেলা শুরু হয়। প্রথমার্ধের প্রথম দশ মিনিট ইউনাইটেড ইয়ংস আধিপত্য দেখালেও শান্তি ভারতী ধীরে ধীরে ম্যাচে ফেরে। একসময় সমানে সমানে লড়াই চলে। দুই টিমের স্ট্রাইকাররাই বেশ কিছু সহজ সুযোগ মিস করে। প্রথমার্ধের খেলা গোলশূন্য ভাবে শেষ হয়। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই শান্তি ভারতী অপ্রত্যাশিতভাবে এগিয়ে যায়। তাদের স্ট্রাইকার রণজিৎ দত্তের দূরপাল্লার শটে গোল হয়। গ্যালারির অর্ধাংশ উল্লাসে ফেটে পড়ে। ঠিক তিন মিনিট বাদে শান্তি ভারতী ২-০ গোলে এগিয়ে যায়। বাকি সময়টায় ইউনাইটেড ইয়ংস চাপ বাড়ালেও বিপক্ষের দুর্ভেদ্য রক্ষণ ভাঙতে পারেনি। তাই ফাইনালের কাপ হাতে তোলে শান্তি ভারতী-ই।

উপসংহার –

ফাইনালে আমার সমর্থন ছিল দ্বিধাবিভক্ত। কিন্তু শান্তি ভারতী বাড়ির নিকটতম ক্লাব হওয়ায় সমর্থনের পাল্লা তাদের দিকেই বেশি ঝুঁকেছিল। তাই ফাইনালে তাদের জয়লাভে খুশিই হয়েছিলাম। বিপুল দর্শক সমাগম, গ্যালারির গর্জন, ফুটবলারদের দক্ষতা-সবমিলিয়ে ম্যাচের স্মৃতি আমার মনে এখনও উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে।

এই আলোচনায়, আমরা একটি ফুটবল ম্যাচের স্মৃতি প্রবন্ধ রচনা করার বিষয়ে আলোচনা করেছি। আমরা দেখেছি যে এই ধরণের প্রবন্ধ মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষা এবং স্কুল পরীক্ষায় প্রায়শই দেখা যায়। এই প্রবন্ধটি লেখার সময়, নির্দিষ্ট ম্যাচের বিবরণ, খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স, ব্যক্তিগত অনুভূতি এবং ম্যাচের ফলাফলের উপর জোর দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

এই ধরণের প্রবন্ধ লেখার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের লেখার দক্ষতা, বর্ণনামূলক দক্ষতা এবং সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনার দক্ষতা উন্নত করতে পারে। মনে রাখবেন, এই প্রবন্ধটি লেখার সময় সৃজনশীলতা এবং নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি প্রদর্শন করা গুরুত্বপূর্ণ।

JOIN US ON WHATSAPP

JOIN US ON TELEGRAM

Please Share This Article

About The Author

Related Posts

এলআইসি

এলআইসি (LIC) কি? এলআইসি এর ইতিহাস

Padmashri Award 2010 Winner List

পদ্মশ্রী পুরস্কার ২০১০ – Padmashri Award 2010 Winner List

সাম্প্রতিক জলসংকট - প্রবন্ধ রচনা

সাম্প্রতিক জলসংকট – প্রবন্ধ রচনা

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

Trending Now

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Class 9 – English – His First Flight – Question and Answer

Class 9 – English – A Shipwrecked Sailor – Question and Answer