এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন।। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

একটি বৃষ্টিমুখর দিনের অভিজ্ঞতা – প্রবন্ধ রচনা

আজকের আলোচনার বিষয় হল বৃষ্টিমুখর দিনের অভিজ্ঞতা প্রবন্ধ রচনা। মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষা এবং স্কুল পরীক্ষায় প্রায়শই এই ধরণের প্রবন্ধ রচনার প্রশ্ন দেখা যায়। বৃষ্টিমুখর দিনের অভিজ্ঞতা রচনা একটি গুরুত্বপূর্ণ রচনা কারণ এটি আমাদের পর্যবেক্ষণ দক্ষতা, ভাব প্রকাশের ক্ষমতা এবং সৃজনশীলতাকে পরীক্ষা করে।

এই রচনাটি লেখার জন্য, প্রথমে আমাদের একটি বৃষ্টিমুখর দিনের স্মৃতি মনে করতে হবে। সেই দিনের আবহাওয়া, পরিবেশ, আমাদের অনুভূতি, এবং ঘটে যাওয়া বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে মনে করতে হবে। এরপর, সেই স্মৃতির ভিত্তিতে রচনাটি লিখতে হবে।

রচনাটির ভূমিকা অংশে বৃষ্টিমুখর দিন সম্পর্কে একটি ধারণা দিতে হবে এবং রচনার মূল বিষয়বস্তু উল্লেখ করতে হবে। মূল অংশে বৃষ্টিমুখর দিনের বিস্তারিত বর্ণনা দিতে হবে। যেমন: সকালের আবহাওয়া, মেঘের আনাগোনা, বৃষ্টি শুরু হওয়া, বৃষ্টির তীব্রতা, প্রকৃতির পরিবর্তন, আমাদের অনুভূতি, এবং ঘটে যাওয়া বিষয়গুলো।

উপসংহার অংশে বৃষ্টিমুখর দিনের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে আমাদের মতামত এবং উপলব্ধি তুলে ধরতে হবে।

এই রচনাটি একবার মুখস্ত করে রাখলে, ক্লাস ৬ থেকে ১২ পর্যন্ত যেকোনো পরীক্ষায় বৃষ্টিমুখর দিনের অভিজ্ঞতা প্রবন্ধের প্রশ্নের উত্তর সহজেই লিখতে পারবেন।

একটি বৃষ্টিমুখর দিনের অভিজ্ঞতা – প্রবন্ধ রচনা

একটি বৃষ্টিমুখর দিনের অভিজ্ঞতা - প্রবন্ধ রচনা

“এ গান আমার শ্রাবণে শ্রাবণে ফেরে
আষাঢ়ে গল্পে সাক্ষী তো ছিল সে-ই
আমরা গিয়েছি সময়ের কাছে হেরে
শুধু বৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই।”

– শ্রীজাত

ভূমিকা –

সকালেও সেদিন আমার ঘুম ভেঙেছিল মুখের ওপরে এসে পড়া আলতো রোদের আঁকিবুকিতে। চারপাশে সদ্য-হওয়া সকালের ব্যস্ততা আর শব্দ-বারান্দায় কাগজওয়ালার সাইকেলের ঘণ্টির শব্দ, রাস্তায় বাজারমুখী তপনকাকুর চটির ফটাস ফটাস শব্দ, রান্নাঘরে চায়ের জল ফোটার শব্দ-সবমিলিয়ে সকালটা অন্য আর পাঁচটা দিনের মতোই ছিল কর্মমুখর। কিন্তু, ন-টা বাজতে না বাজতেই আকাশ একেবারে আঁধার করে এল। দিনটা ছিল রবিবার। তাই সেদিন স্কুলে যাওয়ারও কোনো তাড়া নেই। আমি বহুদিন পর আঁকার খাতাটা বের করে আঁকতে বসে গেলাম। আপন মনে এঁকে চলেছি-কালো হয়ে আসা আকাশ, তার গায়ে ঘনিয়ে ওঠা জলভরা মেঘ-কখন যে মা এসে পিছনে দাঁড়িয়েছেন, টেরই পাইনি। হঠাৎ শুনলাম, মায়ের গলা – “ঈশান কোণে ঐ যে ঝড়ের বাণীযগুরুপুর রবে কী করিছে কানাকানি।” এমন সময় কেঁপে বৃষ্টি নামল। আর আমিও অমনি রং, তুলি ফেলে, পাততাড়ি গুটিয়ে সটান জানলার ধারে গিয়ে বসে পড়লাম। জানলায় বসেই দেখতে পাচ্ছি, পথের সব লোকজন দৌড়োদৌড়ি লাগিয়ে দিয়েছে। মুহূর্তের মধ্যে সব লোকজন ভিড় করে এ-দোকানের ছাউনি, ও-বাড়ির রোয়াকে গিয়ে আশ্রয় নিল। শুনশান রাস্তার কালো পিচ ঝমঝমে বৃষ্টিতে ভিজে চকচক করছে। দেখতে দেখতে রাস্তায়। একহাঁটু জল দাঁড়িয়ে গেল।

কী করলাম –

আমার বৃষ্টি দেখা তখনও ফুরোয়নি। মা তাড়া লাগিয়ে স্নান সেরে আসতে বললেন। নিতান্ত অনিচ্ছায় জানলার ধার ছেড়ে উঠলাম। খেতে বসে দেখি গরম গরম খিচুড়ি আর সঙ্গে কতরকম ভাজা। মনটা আবার খুশি হয়ে গেল। সত্যিই তো, এমন শিরশিরে ঠান্ডা বৃষ্টির দিনে খিচুরি হলে আর কী চাই! এদিকে সারাদিন ধরে বৃষ্টির থামার কোনো লক্ষণই নেই। এইবার আমার একটু একটু মন খারাপ করতে লাগল। বিকেলের আলোটা মরে আসছে, আর তারই মধ্যে সেই একঘেয়ে বৃষ্টি— কখনও টিপটিপ করে, কখনও ঝমঝমিয়ে-চলেছে তো চলেছেই। আমার মনে পড়ছে সেই গানটার লাইনগুলো – “মন খারাপ করা বিকেল মানেই মেঘ করেছে।

দিনের শেষ –

ক্রমশ অন্ধকার ঘনিয়ে এল। আমার পড়তে বসতেও একদম ইচ্ছে করছিল না। কী করব ভাবছি, এমন সময় মস্ত কালো ছাতা মাথায় ছপছপ করতে করতে গরম পেঁয়াজির ঠোঙা হাতে বাড়ির দরজা দিয়ে ঢুকলেন মিত্তিরদাদু। তাঁকে দেখামাত্রই মনটা যেন ‘হুররে’ বলে চেঁচিয়ে উঠল। মিত্তিরদাদু আসা মানেই নানান মজা শুরু। কারণ, মিত্তিরদাদু প্রায় সারা পৃথিবী ঘুরে বেড়িয়েছেন। তাঁর ভাঁড়ারে অজস্র গল্প। কিন্তু আজ সন্ধের মেজাজটা বুঝতে পেরেই বোধহয় মিত্তিরদাদু দেশ-বিদেশের গল্প না শুনিয়ে, ভূতের গল্প বলা শুরু করলেন। আমরা সবাই দাদুকে গোল করে ঘিরে বসে গরম গরম চা আর পেঁয়াজি সহযোগে ভূতের গল্প শুনতে লাগলাম। কখন যে বৃষ্টি থেমে গেছে টেরই পাইনি। দাদুর চলে যাওয়ার সময় দেখলাম, আর বৃষ্টি নেই, মেঘও নেই। শুধু পরিষ্কার আকাশে জ্বলজ্বলে এক টুকরো চাঁদ ঝুলে রয়েছে।

এই আলোচনায়, আমরা একটি বৃষ্টিমুখর দিনের অভিজ্ঞতা প্রবন্ধ রচনা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনেছি। এই ধরণের প্রবন্ধ মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষায় এবং স্কুল পরীক্ষায় প্রায়শই দেখা যায়। প্রকৃতির সৌন্দর্য বর্ণনা এবং ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার মাধ্যমে এই রচনা পাঠকের মনে এক অপূর্ব অনুভূতি জাগিয়ে তোলে।

এই প্রবন্ধ রচনা লেখার সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক মনে রাখা জরুরি। প্রথমত, প্রকৃতির সৌন্দর্য বর্ণনা করার সময় স্পষ্ট ও চিত্রাত্মক ভাষা ব্যবহার করা উচিত। দ্বিতীয়ত, ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বর্ণনা করার সময় সত্যনিষ্ঠা এবং আন্তরিকতা বজায় রাখা প্রয়োজন। তৃতীয়ত, রচনাটি সুগঠিত এবং ভুলমুক্ত হতে হবে।

এই নির্দেশিকাগুলি অনুসরণ করে, আপনি একটি আকর্ষণীয় এবং স্মরণীয় বৃষ্টিমুখর দিনের অভিজ্ঞতা প্রবন্ধ রচনা লিখতে পারবেন। মনে রাখবেন, অনুশীলনই সাফল্যের চাবিকাঠি। নিয়মিত রচনা লেখার অনুশীলন করলে আপনি এই ধরণের প্রবন্ধ রচনায় দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন।

Share via:

মন্তব্য করুন