এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর কীভাবে ভারতীয় বর্ণব্যবস্থার সমালোচনা করেছেন? গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর স্মরণীয় কেন?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর কীভাবে ভারতীয় বর্ণব্যবস্থার সমালোচনা করেছেন? গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর স্মরণীয় কেন?“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের চতুর্থ অধ্যায় “সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর স্মরণীয় কেন?
বেঙ্গল স্কুল অফ আর্টের অন্যতম প্রধান স্থপতি গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর মূলত একজন ব্যঙ্গচিত্রশিল্পী রূপে ইতিহাসে স্মরণীয়। স্বদেশবাসীর দুঃখ-কষ্টে তিনি নির্লিপ্ত থাকতে পারেননি। ব্যঙ্গচিত্রের চাবুকে তিনি ঔপনিবেশিক সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থার কঠোর সমালোচনা করেছেন। আবার, সমাজপতিদের অন্ধবিশ্বাস, গোঁড়ামি ও স্বার্থপরতা এবং স্বদেশী নেতাদের বিচ্যুতিও তাঁর ব্যঙ্গের চাবুক থেকে রেহাই পায়নি। গভীর সমাজ সচেতনতাবোধ ও সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী মানসিকতা শিল্পী গগনেন্দ্রনাথ তথা তাঁর ব্যঙ্গচিত্রগুলিকে ইতিহাসে স্মরণীয় করে রেখেছে।
গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর কীভাবে ভারতীয় বর্ণব্যবস্থার সমালোচনা করেছেন?
গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর মূলত তাঁর ব্যঙ্গচিত্রের মাধ্যমে ভারতীয় বর্ণবিভক্ত সমাজের সমালোচনা করেছিলেন। গভীর সমাজচেতনা ও বর্ণভেদ-বিরোধী মানসিকতায় ব্যঙ্গচিত্রগুলি অনবদ্য। সমাজপতিদের অন্ধবিশ্বাস, গোঁড়ামি ও স্বার্থপরতা কীভাবে সামাজিক ঐক্যের পথে অন্তরায় সৃষ্টি করেছিল তাঁর ব্যাঙ্গাত্মক বাস্তবচিত্র এঁকেছেন ‘জাতাসুর’ নামক চিত্রে। চিত্রটিতে দেখা যায়, একটি বিরাট আকারের জাতার ওপর বসে হোম ও পূজা-আহ্নিক করেছেন মুণ্ডিত মস্তক বিশিষ্ট এক ব্রাহ্মণ, যার হাতে রয়েছে পুঁথি। আর জাতার নীচে পিষ্ট হচ্ছে অসংখ্য নিম্নবর্ণের মানুষ। তাঁর ‘খলব্রাহ্মণ’ চিত্রেও সমাজপতিদের বিরুদ্ধে নির্মম সমালোচনা ফুটে উঠেছে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর কে ছিলেন?
গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন একজন প্রখ্যাত ভারতীয় শিল্পী ও কার্টুনিস্ট, যিনি ব্রিটিশ শাসনামলে ব্যঙ্গচিত্রের মাধ্যমে সামাজিক ও রাজনৈতিক সমালোচনা করতেন। তিনি বেঙ্গল স্কুল অফ আর্টের অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন।
গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত চিত্রকর্মগুলি কী কী?
গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত চিত্রকর্মগুলি হল – জাতাসুর (বর্ণভেদের সমালোচনা), খলব্রাহ্মণ (ব্রাহ্মণ্যবাদের সমালোচনা), রেইন্ট্রি (ঔপনিবেশিক শাসনের ব্যঙ্গ), বিরূপ বজ্র (স্বদেশী নেতাদের সমালোচনা)।
গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিল্পকর্মের প্রধান বৈশিষ্ট্য কী ছিল?
গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিল্পকর্মের প্রধান বৈশিষ্ট্য –
1. ব্যঙ্গাত্মক শৈলী – সমাজ ও রাজনীতির ত্রুটিগুলিকে হাস্যরসের মাধ্যমে তুলে ধরা।
2. গভীর সমাজসচেতনতা – দলিত, নিম্নবর্ণ ও সাধারণ মানুষের দুঃখ-কষ্ট চিত্রিত করা।
3. রাজনৈতিক সমালোচনা – ব্রিটিশ শাসন ও ভারতীয় নেতাদের ভণ্ডামির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া।
গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিল্পকলা কোন শিল্প আন্দোলনের সাথে যুক্ত?
তিনি বেঙ্গল স্কুল অফ আর্ট -এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, যা ভারতীয় শিল্পে জাতীয়তাবাদী ও সমাজসচেতন ধারার সূচনা করেছিল।
গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিল্পে রবীন্দ্রনাথের প্রভাব ছিল কি?
হ্যাঁ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে তাঁর পারিবারিক ও সৃজনশীল সম্পর্ক ছিল। তবে গগনেন্দ্রনাথের শৈলী ছিল স্বতন্ত্র, যেখানে ব্যঙ্গ ও সমালোচনা মুখ্য।
গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের তাঁর চিত্রকলা আজও প্রাসঙ্গিক কেন?
কারণ আজও সমাজে বর্ণবৈষম্য, ধর্মীয় গোঁড়ামি ও রাজনৈতিক ভণ্ডামি বিদ্যমান। গগনেন্দ্রনাথের শিল্প আমাদের এই সমস্যাগুলো নতুনভাবে ভাবতে শেখায়।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর কীভাবে ভারতীয় বর্ণব্যবস্থার সমালোচনা করেছেন? গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর স্মরণীয় কেন?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর কীভাবে ভারতীয় বর্ণব্যবস্থার সমালোচনা করেছেন? গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর স্মরণীয় কেন?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের চতুর্থ অধ্যায় “সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।