গঠনমূলক বদ্বীপ এবং ধ্বংসাত্মক বদ্বীপ কাকে বলে?

আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলে দেখবো যে গঠনমূলক বদ্বীপ এবং ধ্বংসাত্মক বদ্বীপ কাকে বলে? এই দুটি প্রশ্ন দশম শ্রেণীর জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও দুটি প্রশ্ন আপনি পরীক্ষার জন্য তৈরী করে গেলে আপনি লিখে আস্তে পারবেন।

গঠনমূলক বদ্বীপ এবং ধ্বংসাত্মক বদ্বীপ কাকে বলে?

গঠনমূলক বদ্বীপ  

নদী বিপুল পরিমাণ পলি অগভীর সাগরে জমা করে বদ্বীপ গঠন করে, এই ধরনের বদ্বীপকে গঠনমূলক বদ্বীপ বলে। এই ধরনের বদ্বীপ দুই রকমের হতে পারে — 1. জিভের আকৃতির মতো বদ্বীপ এবং 2. পাখির পায়ের মতো বদ্বীপ। নীলনদের বদ্বীপ জিভের মতো বা ব্যজনী আকৃতির কিন্তু মিসিসিপি নদীর বদ্বীপ পাখির পায়ের মতো হয়।

ধ্বংসাত্মক বদ্বীপ – 

জোয়ারভাটা এবং সমুদ্রতরঙ্গের আঘাতে যেসব বদ্বীপের আকার এবং আয়তন সবসময় পরিবর্তিত হয়, সেই ধরনের বদ্বীপকে ধ্বংসাত্মক বদ্বীপ বলে। ব্রাজিলের সান ফ্রান্সিসকো, নাইজার নদীর বদ্বীপ এরকম ধ্বংসাত্মক বদ্বীপ।

গঠনমূলক বদ্বীপের বৈশিষ্ট্য:

গঠনমূলক বদ্বীপের উৎপত্তি:

  • নদী দ্বারা অগভীর সাগরে পলি জমা করে তৈরি হয়।
  • নদীর স্রোতের সাথে পলি বহন করে যায় এবং সমুদ্রের মুখে জমা করে।
  • দীর্ঘ সময় ধরে পলি জমা হওয়ার ফলে বদ্বীপ তৈরি হয়।

গঠনমূলক বদ্বীপের আকৃতি:

দুটি প্রধান আকৃতি দেখা যায়:

  • জিভের আকৃতির: নীলনদের বদ্বীপ
  • পাখির পায়ের আকৃতির: মিসিসিপি নদীর বদ্বীপ

গঠনমূলক বদ্বীপের বৈশিষ্ট্য:

  • স্থায়িত্ব: তুলনামূলকভাবে স্থায়ী হয়।
  • উর্বরতা: পলিতে ভরা থাকায় উর্বর জমি হয়।
  • বাস্তুসংস্থান: বিভিন্ন প্রকার উদ্ভিদ ও প্রাণীর আবাসস্থল।
  • মানব বসতি: কৃষি ও অন্যান্য জীবিকার জন্য মানুষ বসবাস করে।

গঠনমূলক বদ্বীপের উদাহরণ:

  • মিসিসিপি নদীর বদ্বীপ
  • নীলনদের বদ্বীপ
  • গঙ্গা নদীর বদ্বীপ

ধ্বংসাত্মক বদ্বীপের বৈশিষ্ট্য:

ধ্বংসাত্মক বদ্বীপের উৎপত্তি

  • নদী দ্বারা তৈরি হয় না, বরং বিদ্যমান উপকূলরেখা ক্ষয়ের ফলে তৈরি হয়।
  • জোয়ারভাটা, সমুদ্রতরঙ্গ, এবং ঝড়ের প্রভাবে উপকূল ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।
  • ক্ষয়প্রাপ্ত উপকূল থেকে erodated materials জমা হয়ে বদ্বীপ তৈরি হয়।

ধ্বংসাত্মক বদ্বীপের আকৃতি

  • নিয়মিত আকৃতির হয় না।
  • বিভিন্ন আকৃতির হতে পারে, যেমন:
    • ত্রিভুজ
    • অর্ধচন্দ্রাকার
    • লম্বাটে

ধ্বংসাত্মক বদ্বীপের বৈশিষ্ট্য

  • স্থায়িত্ব: তুলনামূলকভাবে অস্থায়ী হয়।
  • উর্বরতা: পলিতে তেমন ভরা থাকে না, তাই তেমন উর্বর জমি হয় না।
  • বাস্তুসংস্থান: স্থায়ী না হওয়ায় স্থায়ী বাস্তুসংস্থান তৈরি হয় না।
  • মানব বসতি: ঝুঁকিপূর্ণ বলে তেমন মানব বসতি হয় না।

ধ্বংসাত্মক বদ্বীপের উদাহরণ

  • সান ফ্রান্সিসকো বদ্বীপ (ব্রাজিল)
  • নাইজার নদীর বদ্বীপ

আরও পড়ুন, অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ বদ্বীপ অঞ্চলে দেখা যায় কেন?

এই আর্টিকেলে আমরা গঠনমূলক বদ্বীপ এবং ধ্বংসাত্মক বদ্বীপের মধ্যে পার্থক্য শিখেছি। দশম শ্রেণীর পরীক্ষার জন্য এই দুটি ধারণা গুরুত্বপূর্ণ।

গঠনমূলক বদ্বীপ নদী কর্তৃক পলি জমা করে তৈরি হয়, এবং দুটি প্রকার হতে পারে: জিভের আকৃতির (যেমন নীলনদের বদ্বীপ) এবং পাখির পায়ের আকৃতির (যেমন মিসিসিপি নদীর বদ্বীপ)।

ধ্বংসাত্মক বদ্বীপ জোয়ারভাটা এবং সমুদ্রতরঙ্গের আঘাতের ফলে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়, এবং তাদের আকার এবং আয়তন সবসময় পরিবর্তিত হয়।

Share via:

মন্তব্য করুন