এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “ঘনীভবন ও অধঃক্ষেপণ কাকে বলে? ঘনীভবন ও অধঃক্ষেপণের মধ্যে পার্থক্য লেখো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। “ঘনীভবন ও অধঃক্ষেপণ কাকে বলে? ঘনীভবন ও অধঃক্ষেপণের মধ্যে পার্থক্য লেখো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের দ্বিতীয় অধ্যায় “বায়ুমণ্ডল – আর্দ্রতা ও অধঃক্ষেপণ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

ঘনীভবন ও অধঃক্ষেপণ কাকে বলে এদের মধ্যে পার্থক্য লেখ।
ঘনীভবন –
যে প্রক্রিয়ায় জলীয়বাষ্প গ্যাসীয় অবস্থা থেকে তরলে আবার তরল থেকে কঠিন অবস্থায় পরিণত হয়, তাকে ঘনীভবন বলা হয়। বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা এবং বায়ু শীতলী ভবনের পরিমাণের উপর নির্ভর করে বাতাস যখন শিশিরাঙ্ক -এর কাছাকাছি পৌছে যায় তখন ঘনীভবন হয়। জলীয়বাষ্প যখন ঘনীভূত হয় তখন বিভিন্ন রূপধারণ করে।
অধঃক্ষেপণ –
বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্প যখন ঘনীভূত হয়ে তরল এবং কঠিন অবস্থায় পরিণত হওয়ার পর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে ভূপৃষ্ঠে নেমে আসে তখন তাকে অধঃক্ষেপন বলা হয়। অধঃক্ষেপণ এর বিভিন্ন রূপগুলি হল বৃষ্টিপাত, তুষারপাত, শিলাবৃষ্টি, ঝিরঝির বৃষ্টি ইত্যাদি।
ঘনীভবন ও অধঃক্ষেপণ মধ্যে পার্থক্য –
বিষয় | ঘনীভবন | অধঃক্ষেপণ |
সংজ্ঞা | জলীয়বাষ্পপূর্ণ সম্পৃক্ত বায়ু যখন শীতল হয়ে শিশিরাঙ্কের নীচে নেমে গেলে তখন বায়ুস্থিত জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়ে জলবিন্দুতে পরিণত হওয়ার পদ্ধতিকে ঘনীভবন বলে। | অন্যদিকে ঘনীভূত জলকণা বৃহৎ ও ভারী হয়ে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে ভূপৃষ্ঠে অধঃক্ষিপ্ত হওয়ার পদ্ধতিকে অধঃক্ষেপণ বলে। |
নির্ভরতা | ঘনীভবন বায়ুর আপেক্ষিক আর্দ্রতা ও শীতলতার ওপর নির্ভরশীল। | অধঃক্ষেপণ উষ্ণতা, আর্দ্রতা, বায়ুপ্রবাহ, মাধ্যাকর্ষণ শক্তি ও ঘনীভবনের ওপর নির্ভরশীল। |
রূপ | মেঘ, তুহিন, কুয়াশা ইত্যাদি। | বৃষ্টিপাত, স্লিট, গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি ইত্যাদি। |
প্রকৃতি | এটি অধঃক্ষেপণের আগে ঘটে। | এটি ঘনীভবনের পরে ঘটে। |
লীনতাপ | ঘনীভবনের সময় বায়ুতে লীনতাপ যুক্ত হয়। | এক্ষেত্রে এমন কোনো তাপ সৃষ্টি হয় না। |
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
ঘনীভবন কাকে বলে?
যে প্রক্রিয়ায় জলীয় বাষ্প গ্যাসীয় অবস্থা থেকে তরল বা কঠিন অবস্থায় পরিণত হয়, তাকে ঘনীভবন বলে। এটি বায়ুর আর্দ্রতা ও শীতলীকরণের উপর নির্ভর করে।
অধঃক্ষেপণ কাকে বলে?
বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে তরল বা কঠিন অবস্থায় ভূপৃষ্ঠে নেমে আসলে তাকে অধঃক্ষেপণ বলে। যেমন — বৃষ্টি, তুষারপাত, শিলাবৃষ্টি ইত্যাদি।
ঘনীভবন ও অধঃক্ষেপণের মধ্যে প্রধান পার্থক্য কী?
1. ঘনীভবন হলো জলীয় বাষ্পের তরল বা কঠিনে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়া, যেখানে অধঃক্ষেপণ হলো সেই তরল বা কঠিন পদার্থের ভূপৃষ্ঠে পতন।
2. ঘনীভবন অধঃক্ষেপণের আগে ঘটে।
ঘনীভবনের উদাহরণ দাও।
মেঘ, কুয়াশা, শিশির, তুষারপাত ইত্যাদি ঘনীভবনের উদাহরণ।
অধঃক্ষেপণের বিভিন্ন রূপ কী কী?
বৃষ্টিপাত, তুষারপাত, শিলাবৃষ্টি, গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি, কুয়াশার জলকণা ইত্যাদি অধঃক্ষেপণের রূপ।
ঘনীভবন ও অধঃক্ষেপণ কোনটি আগে ঘটে?
প্রথমে ঘনীভবন হয়, তারপর অধঃক্ষেপণ ঘটে।
ঘনীভবনের সময় লীনতাপ কীভাবে কাজ করে?
ঘনীভবনের সময় জলীয় বাষ্প তরলে পরিণত হলে লীনতাপ নির্গত হয়, যা বায়ুকে উষ্ণ করে।
অধঃক্ষেপণের জন্য কোন কোন শর্ত প্রয়োজন?
1. বায়ু সম্পৃক্ত অবস্থায় পৌঁছানো।
2. ঘনীভবন হওয়া।
3. জলকণার আকার বৃদ্ধি পেয়ে মাধ্যাকর্ষণে পড়ার মতো ভারী হওয়া।
শিশিরাঙ্ক ও ঘনীভবনের সম্পর্ক কী?
বায়ুর তাপমাত্রা শিশিরাঙ্কে বা তার নিচে নেমে গেলে ঘনীভবন ঘটে।
অধঃক্ষেপণ না হলে কী হতো?
অধঃক্ষেপণ না হলে পৃথিবীতে জলচক্র বাধাগ্রস্ত হতো, ফলে খরা সৃষ্টি হতো এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হতো।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “ঘনীভবন ও অধঃক্ষেপণ কাকে বলে? ঘনীভবন ও অধঃক্ষেপণের মধ্যে পার্থক্য লেখো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “ঘনীভবন ও অধঃক্ষেপণ কাকে বলে? ঘনীভবন ও অধঃক্ষেপণের মধ্যে পার্থক্য লেখো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের দ্বিতীয় অধ্যায় “বায়ুমণ্ডল – আর্দ্রতা ও অধঃক্ষেপণ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন