আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলে দেখবো হিমালয়ের সর্বদক্ষিণের পর্বতশ্রেণিটির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও – এই প্রশ্ন দশম শ্রেণীর পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ অধ্যায়ের ভারতের ভূপ্রকৃতি বিভাগের প্রশ্ন। হিমালয়ের সর্বদক্ষিণের পর্বতশ্রেণিটির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও আপনি পরীক্ষার জন্য তৈরী করে গেলে আপনি লিখে আস্তে পারবেন।
হিমালয়ের সর্বদক্ষিণের পর্বতশ্রেণিটির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।
হিমালয়ের দক্ষিণতম পর্বতমালা হল শিবালিক, যা বহিঃহিমালয় নামেও পরিচিত। এই পর্বতমালা প্রায় 30 লক্ষ বছর আগে তৈরি হয়েছিল যখন ভূমিকম্প টেথিস, হিমাদ্রি এবং হিমাচল পর্বতমালার উচ্চতা বৃদ্ধি করেছিল। এরপর শুরু হয় হিম যুগ, যার ফলে বরফের নদীগুলি হিমালয়কে ক্ষয় করে ফেলে। ক্ষয়িত পাথর, বালি এবং নুড়ি পর্বতের পাদদেশে জমা হতে থাকে। প্রায় 10 লক্ষ বছর আগে, আরেকটি ভূমিকম্প এই পদার্থগুলি উত্তোলন করে শিবালিক পর্বতমালা তৈরি করে।
হিমালয় পর্বতমালা বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতমালা, যা ভারতের উত্তর দিকে অবস্থিত। এই বিশাল পর্বতমালার দক্ষিণতম অংশ হল শিবালিক পর্বতমালা। এই পর্বতমালা ভারতের ভূগোল এবং পরিবেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
হিমালয়ের সর্বদক্ষিণের পর্বতশ্রেণির অবস্থান
শিবালিক পর্বতমালা ভারতের উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, পঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ভেতর দিয়ে বিস্তৃত।
হিমালয়ের সর্বদক্ষিণের পর্বতশ্রেণির বিস্তার
শিবালিক পর্বতমালার দৈর্ঘ্য প্রায় 2,000 কিলোমিটার এবং প্রস্থ 10 থেকে 50 কিলোমিটার পর্যন্ত।
হিমালয়ের সর্বদক্ষিণের পর্বতশ্রেণির উচ্চতা
শিবালিক পর্বতমালার গড় উচ্চতা 900 থেকে 1,500 মিটার। এই পর্বতমালার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল নেপালের জোমসোম শহরের কাছে অবস্থিত নবলচুলি পর্বত, যার উচ্চতা 2,400 মিটার।
হিমালয়ের সর্বদক্ষিণের পর্বতশ্রেণির ভূতাত্ত্বিক গঠন
শিবালিক পর্বতমালা প্লিওসিন এবং মায়োসিন যুগে পলিমেন্টারি শিলা দ্বারা গঠিত হয়েছিল। এই পর্বতমালা তেহেরি গাড়ো ফল্ট লাইনের কাছে অবস্থিত, যার ফলে এটি ভূমিকম্পের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা।
হিমালয়ের সর্বদক্ষিণের পর্বতশ্রেণির জলবায়ু
শিবালিক পর্বতমালার জলবায়ু মধ্যবর্তী শীতোষ্ণ। গ্রীষ্মকালে আবহাওয়া বেশ গরম এবং আর্দ্র থাকে, এবং শীতকালে ঠান্ডা এবং শুষ্ক থাকে।
হিমালয়ের সর্বদক্ষিণের পর্বতশ্রেণির বনজ সম্পদ
শিবালিক পর্বতমালা সালা, শাল, চির, বনজ, এবং বাঁশের ঘন বন দ্বারা আচ্ছাদিত। এই বনগুলি বিভিন্ন ধরণের উদ্ভিদ এবং প্রাণীর আবাসস্থল।
হিমালয়ের সর্বদক্ষিণের পর্বতশ্রেণির খনিজ সম্পদ
শিবালিক পর্বতমালায় চুনাপাথর, ডলোমাইট, বালিয়াশ্ম, শেল, এবং জীবাশ্ম জ্বালানীর মতো খনিজ সম্পদের মজুদ রয়েছে।
হিমালয়ের সর্বদক্ষিণের পর্বতশ্রেণির মানবিক কার্যকলাপ
শিবালিক পর্বতমালার অঞ্চলে কৃষি, বনায়ন, খনিজ উত্তোলন, এবং পর্যটন সহ বিভিন্ন ধরণের মানবিক কার্যকলাপ পরিচালিত হয়।
হিমালয়ের সর্বদক্ষিণের পর্বতশ্রেণির পরিবেশগত গুরুত্ব
শিবালিক পর্বতমালা ভারতের উত্তরের সমভূমিগুলিকে বন্যার হাত থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও, এই পর্বতমালা বিভিন্ন ধরণের উদ্ভিদ এবং প্রাণীর আবাসস্থল।
হিমালয়ের সর্বদক্ষিণের পর্বতশ্রেণির গঠনপ্রক্রিয়া –
- প্রায় 30 লক্ষ বছর আগে হিমালয়ে তৃতীয়বার ভূ-আলোড়নের ফলে টেথিস, হিমাদ্রি ও হিমাচল পর্বতমালা উঁচু হয়ে ওঠে।
- এরপর শুরু হয় হিম যুগ। বরফের বিশাল ভারে ভেঙে পড়া পাথর, কাঁকর, বালি পর্বতের পাদদেশে জমা হতে থাকে।
- প্রায় 10 লক্ষ বছর আগে চতুর্থবার ভূ-আলোড়ন এই পাহাড়ি স্তূপগুলোকে উঠিয়ে তুলে গঠন করে আজকের শিবালিক পর্বতমালা।
হিমালয়ের সর্বদক্ষিণের পর্বতশ্রেণির বৈশিষ্ট্য –
- গড় উচ্চতা 600 থেকে 1500 মিটার।
- প্রস্থ 10 থেকে 50 কিমি পর্যন্ত।
- দক্ষিণ ঢাল খাড়া, উত্তর ঢাল মৃদু।
- পশ্চিম হিমালয়ের জম্মু পাহাড়, মুসৌরি পাহাড় ইত্যাদি শিবালিক পর্বতমালার অন্তর্গত।