জেট বায়ুর বৈশিষ্ট্য – মৌসুমি বায়ুর সঙ্গে জেট বায়ুর সম্পর্ক

Rohit Mondal

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “জেট বায়ু কাকে বলে? জেট বায়ুর বৈশিষ্ট্য লেখো। জেট বায়ুপ্রবাহের সঙ্গে ভারতীয় মৌসুমি বায়ু সম্পর্ক উল্লেখ করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। “জেট বায়ু কাকে বলে? জেট বায়ুর বৈশিষ্ট্য লেখো। জেট বায়ুপ্রবাহের সঙ্গে ভারতীয় মৌসুমি বায়ু সম্পর্ক উল্লেখ করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের দ্বিতীয় অধ্যায় “বায়ুমণ্ডল – বায়ুর চাপ বলয় ও বায়ুপ্রবাহ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

জেট বায়ু কাকে বলে জেট বায়ুর বৈশিষ্ট্য লেখো -
জেট বায়ু কাকে বলে জেট বায়ুর বৈশিষ্ট্য লেখো –

জেট বায়ু কাকে বলে? জেট বায়ুর বৈশিষ্ট্য লেখো।

জেট বায়ু –

জেট বায়ু হল একটি দ্রুতগামী বায়ুস্রোত। যা মূলত 30° উত্তর অক্ষাংশে পশ্চিমা বায়ু প্রবাহিত অঞ্চলে বায়ুমণ্ডলের 7-13 কিমি ঊর্ধ্বে ট্রপোস্ফিয়ারে একটি সংকীর্ণ আঁকাবাঁকা পথে প্রবল বেগে পশ্চিম থেকে পূর্বে প্রবাহিত হয়।

জেট বায়ুর বৈশিষ্ট্য –

  • এই বায়ু ভূপৃষ্ঠ থেকে 10-12 কিমি ঊর্ধ্বে সংকীর্ণ স্থানের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়।
  • জেট বায়ুর গতিবেগ 350-450 কিমি/ঘণ্টা।
  • শীতের প্রারম্ভে এই বায়ুপ্রবাহ শুরু হয়, চলে মার্চ-এপ্রিল মাস পর্যন্ত।

জেট বায়ুপ্রবাহের সঙ্গে ভারতীয় মৌসুমি বায়ু সম্পর্ক উল্লেখ করো।

অথবা, মৌসুমি বায়ুর সঙ্গে জেট বায়ুর সম্পর্ক কী?

জেট বায়ুর সঙ্গে ভারতীয় মৌসুমি বায়ু সম্পর্ক –

মৌসুমি বায়ুর আগমন, স্থায়িত্ব, প্রত্যাবর্তন, প্রাবল্য খুবই অনিশ্চিত, এই অনিশ্চয়তার জন্য দায়ী ক্রান্তীয় পূবালি জেট বায়ু। বায়ুমণ্ডলের ঊর্ধ্ব ট্রপোস্ফিয়ারে সৃষ্ট ক্রান্তীয় পূবালি জেট বায়ু দ্বারা ভারতীয় মৌসুমি বায়ু প্রভাবিত হয়।

ভারত মৌসুমি জলবায়ু অধ্যুষিত অঞ্চল হওয়ায় ভারতের পরিপ্রেক্ষিতে মৌসুমি বায়ুর সঙ্গে জেট বায়ুর সম্পর্ক অধিক-পশ্চিম ভারতে শক্তিশালী নিম্নচাপ কেন্দ্রের সৃষ্টি হলে তার আকর্ষণে ভারত মহাসাগরের ওপর দিয়ে শীতল উচ্চচাপযুক্ত বায়ু নিরক্ষরেখা অতিক্রম করে দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হতে থাকে। একে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বলে। বায়ুমণ্ডলের উঁচুতে প্রবাহিত জেটবায়ু এই সময় হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে পূর্ব থেকে পশ্চিমে প্রবাহিত হয়। এই জেট বায়ুর আকর্ষণে মৌসুমি বায়ু প্রবল বেগে নিম্নচাপ কেন্দ্রের দিকে প্রবাহিত হয় অর্থাৎ জেট বায়ুর অবস্থান ও নিম্নচাপ কেন্দ্রের প্রকৃতি অনুযায়ী মৌসুমি বায়ুর আগমন ও তীব্রতা নির্ভর করে।

মৌসুমি বায়ুর সঙ্গে জেট বায়ুর সম্পর্ক
মৌসুমি বায়ুর সঙ্গে জেট বায়ুর সম্পর্ক

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

জেট বায়ু কাকে বলে?

জেট বায়ু হল বায়ুমণ্ডলের ট্রপোস্ফিয়ারের উপরের স্তরে (7-13 কিমি উচ্চতায়) একটি সংকীর্ণ ও দ্রুতগামী বায়ুপ্রবাহ, যা সাধারণত 30°-60° অক্ষাংশে পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়।

জেট বায়ুর বৈশিষ্ট্য কী?

1. এটি ভূপৃষ্ঠ থেকে 10-12 কিমি উচ্চতায় প্রবাহিত হয়।
2. এর গতিবেগ 350-450 কিমি/ঘণ্টা পর্যন্ত হয়।
3. এটি শীতকালে প্রবল হয় এবং মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
4. এটি একটি সংকীর্ণ ও আঁকাবাঁকা পথে প্রবাহিত হয়।

জেট বায়ুর প্রকারভেদ কী?

প্রধানত দুই প্রকার —
1. উপক্রান্তীয় জেট বায়ু (Subtropical Jet Stream) – 30° অক্ষাংশে অবস্থান করে।
2. মেরুপ্রবাহী জেট বায়ু (Polar Jet Stream) – 60° অক্ষাংশে প্রবাহিত হয়।

জেট বায়ু ও মৌসুমি বায়ু মধ্যে সম্পর্ক কী?

1. গ্রীষ্মকালে – ক্রান্তীয় পূবালি জেট বায়ু হিমালয়ের উত্তরে সরে গেলে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু ভারতে প্রবেশ করে।
2. শীতকালে – পশ্চিমা জেট বায়ু ভারতে প্রবেশ করলে শীতল ও শুষ্ক বায়ুপ্রবাহ সৃষ্টি হয়।
3. জেট বায়ুর অবস্থান পরিবর্তনের কারণে মৌসুমি বায়ুর আগমন, স্থায়িত্ব ও প্রাবল্য প্রভাবিত হয়।

জেট বায়ু কেন গুরুত্বপূর্ণ?

1. এটি আবহাওয়া ও জলবায়ুকে প্রভাবিত করে।
2. বিমান চলাচলে সাহায্য করে (পশ্চিম থেকে পূর্বে উড়লে গতি বাড়ে)।
3. মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তা নির্ধারণে ভূমিকা রাখে।

জেট বায়ু কোথায় সবচেয়ে শক্তিশালী?

সাধারণত হিমালয়ের কাছে ও মধ্য অক্ষাংশে (30°-60°) জেট বায়ুর গতি সবচেয়ে বেশি হয়।

জেট বায়ুর গতি কেন বেশি?

উচ্চ উচ্চতায় বায়ুর ঘনত্ব কম থাকে এবং উষ্ণতা ও চাপের পার্থক্যের কারণে এটি দ্রুত প্রবাহিত হয়।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “জেট বায়ু কাকে বলে? জেট বায়ুর বৈশিষ্ট্য লেখো। জেট বায়ুপ্রবাহের সঙ্গে ভারতীয় মৌসুমি বায়ু সম্পর্ক উল্লেখ করো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “জেট বায়ু কাকে বলে? জেট বায়ুর বৈশিষ্ট্য লেখো। জেট বায়ুপ্রবাহের সঙ্গে ভারতীয় মৌসুমি বায়ু সম্পর্ক উল্লেখ করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের দ্বিতীয় অধ্যায় “বায়ুমণ্ডল – বায়ুর চাপ বলয় ও বায়ুপ্রবাহ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

ঘূর্ণবাত ও প্রতীপ ঘূর্ণবাতের বৈশিষ্ট্য লেখো -

ঘূর্ণবাত ও প্রতীপ ঘূর্ণবাতের বৈশিষ্ট্য – ঘূর্ণবাত ও প্রতীপ ঘূর্ণবাত এর মধ্যে পার্থক্য

নিরক্ষীয় অঞ্চলে পরিচলন বৃষ্টি হয় কেন বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কীভাবে করা হয় -

নিরক্ষীয় অঞ্চলে পরিচলন বৃষ্টি হয় কেন? বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কীভাবে করা হয়?

মেঘাচ্ছন্নতা বলতে কী বোঝো মেঘ কীভাবে সৃষ্টি হয় -

মেঘাচ্ছন্নতা বলতে কী বোঝো? মেঘ কীভাবে সৃষ্টি হয়?

About The Author

Rohit Mondal

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

মাধ্যমিক ইতিহাস – উত্তর-ঔপনিবেশিক ভারত: বিশ শতকের দ্বিতীয় পর্ব (1947-1964) – বিশ্লেষণমূলক প্রশ্ন উত্তর

মাধ্যমিক ইতিহাস – উত্তর-ঔপনিবেশিক ভারত: বিশ শতকের দ্বিতীয় পর্ব (1947-1964) – সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন

মাধ্যমিক ইতিহাস – উত্তর-ঔপনিবেশিক ভারত: বিশ শতকের দ্বিতীয় পর্ব (1947-1964) – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর

মাধ্যমিক ইতিহাস – উত্তর-ঔপনিবেশিক ভারত: বিশ শতকের দ্বিতীয় পর্ব (1947-1964) – বিষয়সংক্ষেপ

চৌরিচৌরার ঘটনা কী? অসহযোগ আন্দোলনে চৌরিচৌরা ঘটনার গুরুত্ব