কোনো মৌলের পরমাণুর চেয়ে সংশ্লিষ্ট অ্যানায়নের ব্যাসার্ধ বড়ো হয় কেন?

Souvick

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “কোনো মৌলের পরমাণুর চেয়ে সংশ্লিষ্ট অ্যানায়নের ব্যাসার্ধ বড়ো হয় কেন? অথবা, Cl পরমাণুর তুলনায় Cl -এর ব্যাসার্ধ বা আকার বড়ো হয় কেন?” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “পর্যায়-সারণি এবং মৌলদের ধর্মের পর্যাবৃত্ততা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

কোনো মৌলের পরমাণুর চেয়ে সংশ্লিষ্ট অ্যানায়নের ব্যাসার্ধ বড়ো হয় কেন? অথবা, Cl পরমাণুর তুলনায় Cl- -এর ব্যাসার্ধ বা আকার বড়ো হয় কেন?

কোনো মৌলের পরমাণুর চেয়ে সংশ্লিষ্ট অ্যানায়নের ব্যাসার্ধ বড়ো হয় কেন?

অথবা, Cl পরমাণুর তুলনায় Cl -এর ব্যাসার্ধ বা আকার বড়ো হয় কেন?

কোনো মৌলের পরমাণুর চেয়ে সংশ্লিষ্ট অ্যানায়নের ব্যাসার্ধ বড়ো হওয়ার কারণ – কোনো মৌলের পরমাণুর যোজ্যতা কক্ষে এক বা একাধিক ইলেকট্রন যুক্ত হলে অ্যানায়ন উৎপন্ন হয়। অ্যানায়নের মধ্যে ইলেকট্রন সংখ্যা অপেক্ষা প্রোটন সংখ্যা কম হওয়ার ইলেকট্রন প্রতি নিউক্লিও চার্জের প্রভাব (effect of nuclear charge per electron) হ্রাস পায়। ফলে অ্যানায়নের বহিস্থ কক্ষের ইলেকট্রনের উপর নিউক্লিয়াসের আকর্ষণ বল হ্রাস পায়। এ ছাড়া মৌলের যোজ্যতা কক্ষে এক বা একাধিক ইলেকট্রন যুক্ত হলে যোজ্যতা কক্ষের ইলেকট্রন ও আগত ইলেকট্রনগুলির মধ্যে বিকর্ষণ বল ক্রিয়া করায় অ্যানায়নের আকার হ্রাস পায়। যেমন, Cl-পরমাণুর ব্যাসার্ধ 0.99Å কিন্তু Cl-পরমাণুতে 1টি ইলেকট্রনযুক্ত হলে উৎপন্ন অ্যানায়নের (Cl) ব্যাসার্ধ বৃদ্ধি পেয়ে 1.82Å হয়।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

অ্যানায়ন কী? এটি কীভাবে গঠিত হয়?

অ্যানায়ন হল একটি ঋণাত্মক আয়ন। যখন কোনো পরমাণু এক বা একাধিক ইলেকট্রন গ্রহণ করে, তখন তা একটি অ্যানায়নে পরিণত হয়। যেমন, ক্লোরিন পরমাণু (Cl) একটি ইলেকট্রন গ্রহণ করে ক্লোরাইড অ্যানায়নে (Cl⁻) পরিণত হয়।

Cl পরমাণুর তুলনায় Cl⁻ আয়নের ব্যাসার্ধ বৃদ্ধির সংখ্যাগত উদাহরণ কী?

ক্লোরিন পরমাণুর (Cl) ব্যাসার্ধ প্রায় 0.99 Å (অ্যাংস্ট্রম), কিন্তু ক্লোরাইড আয়নের (Cl⁻) ব্যাসার্ধ প্রায় 1.82 Å। অর্থাৎ, একটি ইলেকট্রন যুক্ত হওয়ায় এর ব্যাসার্ধ প্রায় দ্বিগুণের কাছাকাছি বৃদ্ধি পায়।

অ্যানায়নের ব্যাসার্ধ বৃদ্ধির প্রধান কারণ কী?

অ্যানায়নের ব্যাসার্ধ বৃদ্ধির প্রধান কারণ কারণ দুটি –
1. নিউক্লিয়াসের কার্যকরী আকর্ষণ হ্রাস – অ্যানায়নে ইলেকট্রনের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় কিন্তু প্রোটনের সংখ্যা (নিউক্লিয়ার চার্জ) একই থাকে। এর ফলে প্রতি ইলেকট্রনের উপর নিউক্লিয়াসের আকর্ষণ বল (কার্যকরী নিউক্লিয়ার চার্জ) হ্রাস পায়।
2. ইলেকট্রন-ইলেকট্রন বিকর্ষণ বৃদ্ধি – নতুন ইলেকট্রন যুক্ত হওয়ায় পরমাণুর যোজ্যতা কক্ষে ইলেকট্রনগুলির মধ্যে বিকর্ষণ বল বৃদ্ধি পায়, যা ইলেকট্রন মেঘকে আরও প্রসারিত করে এবং আকার বড় করে তোলে।

ক্যাটায়ন (cation) কী? এর ব্যাসার্ধ সংশ্লিষ্ট পরমাণুর ব্যাসার্ধের থেকে বড় না ছোট? কেন?

ক্যাটায়ন হল একটি ধনাত্মক আয়ন যা পরমাণু থেকে এক বা একাধিক ইলেকট্রন অপসারণের ফলে গঠিত হয়। ক্যাটায়নের ব্যাসার্ধ সংশ্লিষ্ট পরমাণুর ব্যাসার্ধের চেয়ে ছোট হয়। কারণ ইলেকট্রন অপসারণের ফলে একই নিউক্লিয়ার চার্জ কম সংখ্যক ইলেকট্রনকে আকর্ষণ করে, ফলে প্রতি ইলেকট্রনে আকর্ষণ বল বৃদ্ধি পায় এবং ইলেকট্রন মেঘ নিউক্লিয়াসের অনেক কাছাকাছি সংকুচিত হয়ে আসে।

Na (সোডিয়াম) পরমাণু ও Na⁺ (সোডিয়াম আয়ন)-এর মধ্যে ব্যাসার্ধের পার্থক্য হবে নাকি? কী রকম হবে?

হ্যাঁ, ব্যাসার্ধের পার্থক্য হবে। Na পরমাণু একটি ইলেকট্রন ত্যাগ করে Na⁺ আয়ন গঠন করে। ইলেকট্রন কমে যাওয়ায় নিউক্লিয়াসের আকর্ষণ বল অবশিষ্ট ইলেকট্রনগুলির উপর বেশি কার্যকর হয়। ফলে Na⁺ আয়নের ব্যাসার্ধ Na পরমাণুর ব্যাসার্ধের চেয়ে অনেক ছোট হবে।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “কোনো মৌলের পরমাণুর চেয়ে সংশ্লিষ্ট অ্যানায়নের ব্যাসার্ধ বড়ো হয় কেন? অথবা, Cl পরমাণুর তুলনায় Cl -এর ব্যাসার্ধ বা আকার বড়ো হয় কেন?” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “পর্যায়-সারণি এবং মৌলদের ধর্মের পর্যাবৃত্ততা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

ব্রোমিনের সঙ্গে অ্যাসিটিলিনের যুত বিক্রিয়াটি উল্লেখ করো।

ব্রোমিনের সঙ্গে অ্যাসিটিলিনের যুত বিক্রিয়াটি উল্লেখ করো।

কার্যকরী মূলক বা ক্রিয়াশীল গ্রুপ কাকে বলে? কার্যকরী মূলক ও জৈব মূলকের পার্থক্য বুঝিয়ে দাও।

কার্যকরী মূলক বা ক্রিয়াশীল গ্রুপ কাকে বলে? কার্যকরী মূলক ও জৈব মূলকের পার্থক্য বুঝিয়ে দাও।

একটি জৈব যৌগের আণবিক সংকেত C₂H₄O₂। যৌগটি জলে দ্রাব্য এবং যৌগটির জলীয় দ্রবণে NaHCO₃ যোগ করলে CO₂ নির্গত হয়। জৈব যৌগটিকে শনাক্ত করো। জৈব যৌগটির সঙ্গে ইথানলের বিক্রিয়া শর্ত ও সমিত রাসায়নিক সমীকরণসহ লেখো।

C₂H₄O₂ সংকেতের একটি জৈব যৌগ NaHCO₃-এর সাথে CO₂ গ্যাস দেয়। যৌগটি শনাক্ত করো ও ইথানলের সাথে এর বিক্রিয়ার শর্তসহ সমীকরণ দাও।

About The Author

Souvick

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

ইস্ট্রোজেন হরমোনের ক্ষরণস্থল উল্লেখ করে এর প্রধান কাজগুলি সংক্ষেপে বর্ণনা করো।

ইনসুলিন হরমোনের প্রধান কাজগুলির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।

হরমোনের ফিডব্যাক নিয়ন্ত্রণ কাকে বলে? উদাহরণসহ হরমোনের ফিডব্যাক নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

প্রাণীদেহের বিভিন্ন কাজ নিয়ন্ত্রণে হরমোনের ভূমিকা সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো।

প্রাণী হরমোনের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলি সংক্ষেপে বর্ণনা করো।