এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন।। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

দশম শ্রেণি – বাংলা – কোনি (সহায়ক পাঠ) – নামকরণ



এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক বাংলা বইয়ের ‘কোনিসহায়ক পাঠ থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, বিশেষ করে নামকরণের ওপর আলোচনা করব। মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য এই নামকরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী - দশম শ্রেণি – বাংলা

লেখক পরিচিতি

ভূমিকা – মতি নন্দী বাংলা সাহিত্য এবং সাংবাদিকতার জগতের এক উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব।

জন্ম ও বংশপরিচয় – ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দের ১০ জুলাই উত্তর কলকাতার এক মধ্যবিত্ত পরিবারে মতি নন্দীর জন্ম। তাঁর বাবার নাম দৌলাল নন্দী এবং মায়ের নাম মলিনাবালা নন্দী।

বাল্যজীবন ও শিক্ষাজীবন – ছেলেবেলাতেই পিতাকে হারান মতি নন্দী। তাঁর পড়াশোনার সূচনা স্কটিশচার্চ স্কুল থেকে। ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে এই বিদ্যালয় থেকেই তিনি ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে আইএসসি এবং ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেন। পরে আবার ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে মনীন্দ্রচন্দ্র কলেজ থেকে বাংলা সাহিত্যে অনার্স-সহ গ্র্যাজুয়েশন পাস করেন।

কর্মজীবন – ক্যানিংয়ের কাছে ছোটো একটি গ্রামের স্কুলের শিক্ষকতা দিয়ে তাঁর কর্মজীবনের সূচনা। সন্তোষকুমার ঘোষের তত্ত্বাবধানে তিনি আনন্দবাজার পত্রিকা-য় তাঁর নতুন কর্মজীবন নতুনভাবে শুরু করেন। বাংলা ক্রীড়াসাংবাদিকতার ধারা সম্পূর্ণ বদলে আধুনিক করে তুলেছেন মতি নন্দী। তাঁরই হাতে সাহিত্য ও সাংবাদিকতার মেলবন্ধন ঘটেছে।

সাহিত্যজীবন – ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে সাপ্তাহিক দেশ পত্রিকায় তাঁর প্রথম গল্প ‘ছাদ’ প্রকাশিত হয়। তারপর পরিচয় পত্রিকায় তাঁর দ্বিতীয় গল্প ‘চোরা ঢেউ’ প্রকাশ পায়। ১৯৫৮-তে পরিচয় পত্রিকার পূজাসংখ্যায় প্রকাশিত তাঁর ‘বেহুলার ভেলা’ গল্পটি বাংলা সাহিত্যে আলোড়ন সৃষ্টি করে। তাঁর সাহিত্যকীর্তির তালিকা দীর্ঘ। এগুলির মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য –

  • উপন্যাস – সাদা খাম, উভয়ত সম্পূর্ণ, গোলাপ বাগান, ছায়া, জীবন্ত, ছায়া সরণীতে রোহিণী, দূরদৃষ্টি, বিজলীবালার মুক্তি প্রভৃতি।
  • শিশু-কিশোর কাহিনি – কোনি, স্টপার, স্ট্রাইকার, জীবন অনন্ত, তুলসী, মিনু-চিনুর ট্রফি, ধানকুড়ির কিংকং, কলাবতী প্রভৃতি।

চলচ্চিত্রে মতি নন্দীর সাহিত্য – মতি নন্দীর কোনি ও স্ট্রাইকার উপন্যাস দুটি চলচ্চিত্রায়িত হয়েছে। ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে সরোজ দে-র পরিচালনায় কোনি উপন্যাসটি চলচ্চিত্রায়িত হয়। এই চলচ্চিত্রে ব্যবহৃত ‘ফাইট, কোনি ফাইট’ এক বিখ্যাত স্লোগানে পরিণত হয়, যা পরবর্তী সময়ে অনেক মানুষকে অনুপ্রেরণা জোগায়।

পুরস্কার ও সম্মান – মতি নন্দী ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে আনন্দ পুরস্কার পান, ১৯৯১-এ ‘সাদা খাম’ উপন্যাসের জন্য পান সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার। মতি নন্দী পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমির শিশু ও কিশোর সাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য ২০০০ খ্রিস্টাব্দে পুরস্কার পান। ২০০৮ খ্রিস্টাব্দে অসাধারণ সাংবাদিকতার জন্য তাঁকে লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট পুরস্কার দেওয়া হয়।

প্রয়াণ – ২০১০ খ্রিস্টাব্দের ৩ জানুয়ারি এই বিশিষ্ট ক্রীড়াসাংবাদিক ও সাহিত্যিকের জীবনাবসান হয়।

নামকরণ

সাহিত্যের যে-কোনো শাখার ক্ষেত্রেই নামকরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। নামের মাধ্যমেই পাঠকের সাথে লেখকের যোগাযোগ ঘটে। সমগ্র রচনাটির মূল ভাবকে নামকরণের মাধ্যমেই পাঠকের কাছে তুলে ধরা হয়। বিভিন্ন দিক থেকে একটি রচনার নামকরণ করা যেতে পারে। তা চরিত্রভিত্তিক অথবা ব্যঞ্জনাধর্মী কিংবা ঘটনাকেন্দ্রিক যে-কোনো দৃষ্টিকোণ থেকেই হতে পারে। আমাদের পাঠ্য উপন্যাসের প্রধান চরিত্রের নামই কোনি। সেদিক থেকে বিচার করে দেখলে উপন্যাসটির নাম চরিত্রভিত্তিক।

উপন্যাসের মূল চরিত্র কোনি হল প্রায় অশিক্ষিত, বস্তিবাসী একটি মেয়ে। সেখান থেকে শত অপমান, লাঞ্ছনা অতিক্রম করে এক দীর্ঘ লড়াইয়ের মধ্য দিয়েই তার সাঁতারু হিসেবে সফল হওয়ার যাত্রা। তার এই যাত্রার পথপ্রদর্শক তার গুরু, সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহ। কোনিকে ক্ষিতীশ প্রথম দেখেন গঙ্গার ঘাটে। আম কুড়োনোর জন্য কোনির মধ্যে যে লড়াকু ভঙ্গি আমরা দেখি সেখানেই ‘ফাইট, কোনি ফাইট’ স্লোগানটি সার্থক হয়ে ওঠে। উপন্যাসের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত কোনির উপস্থিতি আমাদের মনে কোনি নামটিই ভাসিয়ে রাখে। উপন্যাসের অগ্রগতির সাথে সাথে আমরাও কোনিনামক মেয়েটির দীর্ঘ লড়াই ও সংগ্রামের সঙ্গী হয়ে উঠি। কীভাবে বস্তির হতদরিদ্র মেয়েটি ক্ষিতীশ সিংহের পর্যবেক্ষণে আসে, তাঁরই ছত্রছায়ায় কীভাবে অমানুষিক পরিশ্রমে এক দক্ষ সাঁতারু হয়ে ওঠে তার এক আশ্চর্য এবং বিস্ময়কর উপাখ্যান হল এই উপন্যাস। শত প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে সে বেঙ্গল চ্যাম্পিয়ন অমিয়াকে হারিয়ে অপমানের জবাব দেয়।। তখনই কোনি আমাদের চোখে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ওঠে। কিন্তু তার লড়াই এবং অপমান সহ্য করার শেষ এখানেই নয়, বাংলা দলে স্থান পেয়ে মাদ্রাজ যাওয়ার পরও সংকীর্ণ দলাদলি এবং তার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহের প্রতি অন্যায় ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হয় কোনিকে। কিন্তু শেষপর্যন্ত বাংলাকে চ্যাম্পিয়ন করার দায়িত্ব এসে বর্তায় কোনির উপরেই। বাংলাকে চ্যাম্পিয়ন করে তোলার মধ্য দিয়েই কোনি সমস্ত অন্যায়, অপমান ও অবহেলার জবাব দেয়। ক্ষিতীশ সিংহের স্বপ্ন সে পূরণ করে। মূল চরিত্র কোনির এই লড়াইয়ের কাহিনিই উপন্যাসটির প্রাণ। তাই নামকরণটি সম্পূর্ণ সার্থক ও যথাযথ হয়েছে বলা চলে।

আরও পড়ুন, কোনির পারিবারিক জীবনের পরিচয় দাও।

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক বাংলা বইয়ের ‘কোনিসহায়ক পাঠের গুরুত্বপূর্ণ অংশ “নামকরণ” নিয়ে আলোচনা করেছি, যা মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি, এই নিবন্ধটি আপনার প্রস্তুতিতে সহায়ক হয়েছে। আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে বা আরও সহায়তা প্রয়োজন হলে, টেলিগ্রামে আমার সাথে যোগাযোগ করতে দ্বিধা করবেন না। এছাড়াও, আপনার বন্ধুদের সঙ্গে এই পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না, যাতে তারাও উপকৃত হতে পারে। ধন্যবাদ!

Share via:

মন্তব্য করুন