উপগ্রহ চিত্র হলো পৃথিবী বা অন্য কোনো গ্রহের পৃষ্ঠের ছবি যা মহাকাশ থেকে তোলা হয়। উপগ্রহ চিত্র তৈরির জন্য বিভিন্ন ধরনের উপগ্রহ ব্যবহার করা হয়। উপগ্রহ চিত্রের মাধ্যমে আমরা পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানের ভূ-প্রকৃতি ও মানুষের কর্মকাণ্ডের বিস্তৃত ধারণা লাভ করতে পারি।
মাধ্যমিক ভূগোলের একটি বিষয় হলো উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্রসূচক মানচিত্র এবং মানচিত্র চিহ্নিতকরণ। এই বিষয়টি সাধারণত মাধ্যমিক পর্যায়ের ভূগোল শিক্ষার্থীদের জন্য নিয়ে নেওয়া হয়।
উপগ্রহ চিত্র হল বিভিন্ন উপগ্রহের ছবি বা ভিডিও, যা মানব দেহ বা সংস্থার বাইরে থাকা পৃথিবীর সবচেয়ে নিকটবর্তী উপগ্রহগুলির উপর নেওয়া হয়। এই ছবি বা ভিডিওগুলি সম্পর্কে আমাদের জানতে হয় উপগ্রহের আকার, আবতলতা, আবহাওয়া এবং উপগ্রহের সামগ্রী পরিবর্তন।
ভূবৈচিত্রসূচক মানচিত্র হল একটি মানচিত্র যেখানে ভূমি উপকরণগুলির তথ্য নির্দিষ্ট হয়ে থাকে। এই মানচিত্রে ভূমি সংক্রান্ত তথ্য বিভিন্ন রঙের সংকেত দিয়ে দেখানো হয়, যেমন রঙিন সাদা বিভিন্ন উপকরণের জন্য একটি রঙ নির্দিষ্ট করে থাকে, হলুদ রঙ অন্য উপকরণের জন্য একটি রঙ নির্দিষ্ট করে থাকে। এই মানচিত্রে ভূমি সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানের জন্য উপকারী তথ্য নির্ভরযোগ্যভাবে সংগ্রহ করা হয়।
মানচিত্র চিহ্নিতকরণ হলো এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে মানচিত্রে বিভিন্ন তথ্য, তথ্যাংশ, প্রাকৃতিক উপাদান, ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি উপস্থাপন করা হয়। মানচিত্র চিহ্নিতকরণে ক্ষেত্রের আকার, আকারের উপর অবস্থিত বিভিন্ন তথ্যসমূহ, মানচিত্রে ব্যবহৃত সাধারণ চিহ্ন বা নিম্নলিখিত কিছু উদাহরণস্বরূপ নদী, সমুদ্র, পর্বত, দেশ, রাজধানী, জেলা ইত্যাদি চিহ্নিত করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্যসমূহ যেমন ক্ষেত্রের উচ্চতা, ফলস্থান, জলাবদ্ধতা, জনসংখ্যা ইত্যাদি চিহ্নিত করা হয়। মানচিত্র চিহ্নিতকরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ যা ভৌগোলিক তথ্যের একটি স্বচ্ছতা এবং সঠিকতা উপস্থাপনে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
![মাধ্যমিক ভূগোল - উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্রসূচক মানচিত্র - মানচিত্র চিহ্নিতকরণ 1 উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্রসূচক মানচিত্র – মানচিত্র চিহ্নিতকরণ](http://solutionwbbse.com/wp-content/uploads/2023/12/উপগ্রহ-চিত্র-ও-ভূবৈচিত্রসূচক-মানচিত্র-–-মানচিত্র-চিহ্নিতকরণ.webp)
মানচিত্র চিহ্নিতকরণ
ভারতের মানচিত্রে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি চিহ্নিত করো —
- কারাকোরাম পর্বত
- গডউইন অস্টিন
- নাঙ্গা পর্বত
- লাদাখ রেঞ্জ
- জাস্কর রেঞ্জ
- পিরপাঞ্জাল পর্বত
- শিবালিক পর্বত
- মাউন্ট এভারেস্ট
- কাঞ্চনজঙ্ঘা
- গারো পাহাড়
- নামচাবারোয়া
- পাটকই পাহাড়
- বরাইল পাহাড়
- মণিপুর পাহাড়
- খাসি পাহাড়
- জয়ন্তিয়া পাহাড়
- লুসাই বা মিজো পাহাড়
- রাজমহল পাহাড়
- মহাকাল পাহাড়
- মহাদেব পাহাড়
- বিন্ধ্য পর্বত
- সাতপুরা পর্বত
- মহেন্দ্রগিরি
- অজন্তা পাহাড়
- আরাবল্লি পর্বত
- সাতমালা পাহাড়
- কলসুবাই
- হরিশচন্দ্র রেঞ্জ
- বালাঘাট রেঞ্জ
- গির পাহাড়
- পশ্চিমঘাট পর্বতমালা
- পূর্বঘাট পর্বতমালা
- ডোডাবেট্টা,
- নীলগিরি পর্বত
- আনাইমালাই পাহাড়
- কার্ডামাম পাহাড়
- আনাইমুদি।
![মাধ্যমিক ভূগোল - উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্রসূচক মানচিত্র - মানচিত্র চিহ্নিতকরণ 2 মানচিত্র চিহ্নিতকরণ](http://solutionwbbse.com/wp-content/uploads/2023/04/মানচিত্র-চিহ্নিতকরণ.webp)
ভারতের রেখা মানচিত্রে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি চিহ্নিত করো —
- লাদাখ মালভূমি
- মেঘালয় মালভূমি
- ছোটোনাগপুর মালভূমি
- বাঘেলখণ্ড মালভূমি
- বুন্দেলখণ্ড মালভূমি
- মালৰ মালভূমি
- মহারাষ্ট্র মালভূমি
- কর্ণাটক মালভূমি
- তেলেঙ্গানা মালভূমি
- তামিলনাড়ু উচ্চভূমি
- কোলার পয়েন্ট
- ইন্দিরা পয়েন্ট
- নারকোন্ডাম দ্বীপ
- ব্যারেন দ্বীপ
- আদম সেতু
- ক্যালিমিয়ার অন্তরীপ
- কুমারিকা অন্তরীপ (ভারতের দক্ষিণতম স্থান)
- গুহর মোতি (ভারতের পশ্চিমতম স্থান)
- কিবিথু (ভারতের পূর্বতম স্থান)
- ইন্দিরাকল (ভারতের উত্তরতম স্থান)
- ম্যানগ্রোভ অরণ্য
- চুম্বি উপত্যকা
- পূর্বাশা (নিউমুর দ্বীপ)
![মাধ্যমিক ভূগোল - উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্রসূচক মানচিত্র - মানচিত্র চিহ্নিতকরণ 3 মানচিত্র চিহ্নিতকরণ](http://solutionwbbse.com/wp-content/uploads/2023/04/মানচিত্র-চিহ্নিতকরণ-1.webp)
ভারতের রেখা মানচিত্রে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি চিহ্নিত করো —
- থর মরুভূমি
- মরুস্থলী
- কাশ্মীর উপত্যকা
- সিন্ধু সমভূমি
- উচ্চ গঙ্গা সমভূমি
- মধ্য গঙ্গা সমভূমি
- নিম্ন গঙ্গা সমভূমি
- ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা
- গুজরাত উপকূল
- কোঙ্কন উপকূল
- কানাড়া উপকূল
- মালাবার উপকূল
- করমণ্ডল উপকূল (বছরে দুবার বৃষ্টিপাতযুক্ত অঞ্চল)
- উত্তর সরকার উপকূল
- লাক্ষাদ্বীপ
- আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ
- কচ্ছ উপদ্বীপ
- কাথিয়াবাড় উপদ্বীপ
- কৃষ্ণ মৃত্তিকা অঞ্চল।
![মাধ্যমিক ভূগোল - উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্রসূচক মানচিত্র - মানচিত্র চিহ্নিতকরণ 4 মানচিত্র চিহ্নিতকরণ](http://solutionwbbse.com/wp-content/uploads/2023/04/মানচিত্র-চিহ্নিতকরণ-2.webp)
ভারতের রেখা মানচিত্রে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি চিহ্নিত করো —
- উলার হ্রদ
- ডাল হ্রদ
- প্যাংগং হ্রদ
- সিন্ধু নদ
- কচ্ছের রান
- কচ্ছ উপসাগর
- কাম্বে বা খাম্বাত উপসাগর
- লুনি
- সবরমতি
- মাহি
- নর্মদা
- তাপ্তী
- যমুনা
- গঙ্গা
- দামোদর
- সুবর্ণরেখা
- মহানদী
- ভাগীরথী-হুগলি
- ব্রহ্মপুত্র
- গোদাবরী
- কৃষ্ণা
- কাবেরী
- লোকটাক হ্রদ
- কোলের হ্রদ
- চিলকা হ্রদ
- পুলিকট হ্রদ
- পক প্রণালী
- ভেম্বনাদ কয়াল (উপহ্রদ)
- মান্নার উপসাগর
- ডানকান প্রণালী
- 10° প্ৰণালী।
![মাধ্যমিক ভূগোল - উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্রসূচক মানচিত্র - মানচিত্র চিহ্নিতকরণ 5 মানচিত্র চিহ্নিতকরণ](http://solutionwbbse.com/wp-content/uploads/2023/04/মানচিত্র-চিহ্নিতকরণ-3.webp)
ভারতের রেখা মানচিত্রে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি চিহ্নিত করো —
- উত্তর ভারতের একটি গম উৎপাদক অঞ্চল
- তৈলবীজ উৎপাদক অঞ্চল
- মিলেটস উৎপাদক অঞ্চল
- ভারতের গুরুত্বপূর্ণ চা উৎপাদক অঞ্চল
- পূর্ব ভারতের একটি ধান/পাট উৎপাদক অঞ্চল
- তুলো উৎপাদক অঞ্চল
- ভারতের প্রধান কফি উৎপাদক অঞ্চল
- দক্ষিণ ভারতের প্রধান কফি উৎপাদক অঞ্চল।
![মাধ্যমিক ভূগোল - উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্রসূচক মানচিত্র - মানচিত্র চিহ্নিতকরণ 6 মানচিত্র চিহ্নিতকরণ](http://solutionwbbse.com/wp-content/uploads/2023/04/মানচিত্র-চিহ্নিতকরণ-4.webp)
ভারতের রেখা মানচিত্রে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি চিহ্নিত করো –
- ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পকেন্দ্র
- মোটরগাড়ি নির্মাণ শিল্পকেন্দ্র
- পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পকেন্দ্র
- কার্পাসবয়ন শিল্পকেন্দ্র
- রেলইঞ্জিন নির্মাণ শিল্পকেন্দ্র
- লোহা ও ইস্পাত শিল্পকেন্দ্র
- বিমানপোত নির্মাণ শিল্পকেন্দ্র
- জাহাজ নির্মাণ শিল্পকেন্দ্র।
![মাধ্যমিক ভূগোল - উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্রসূচক মানচিত্র - মানচিত্র চিহ্নিতকরণ 7 মানচিত্র চিহ্নিতকরণ](http://solutionwbbse.com/wp-content/uploads/2023/04/মানচিত্র-চিহ্নিতকরণ-5.webp)
উপরে উল্লিখিত বিষয়সমূহ মাধ্যমিক ভূগোল পাঠ্যক্রমের অংশ হিসেবে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। উপগ্রহ চিত্র, ভূবৈচিত্রসূচক মানচিত্র ও মানচিত্র চিহ্নিতকরণ হল বিভিন্ন উপাদান, যা মানচিত্র প্রস্তুতির প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করা হয়। এই উপাদানগুলো একসাথে মানচিত্রের জন্য সমর্থন করে এবং ভূগোল পড়ানো উপকারে আসে। মানচিত্র চিহ্নিতকরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা মানচিত্রে তথ্য সমূহ একটি স্থান থেকে অন্য স্থানে পাঠানোর সাধনে ব্যবহার করা হয়। এই উপাদানগুলো সম্পর্কিত জ্ঞান অর্জনে ছাত্রদের সম্পূর্ণ ধারণা থাকা প্রয়োজন। পাঠ্যক্রমের সাথে এই বিষয়গুলো অনুশীলন করে ছাত্রদের উন্নয়ন এবং ভূগোল প্রতি উৎসাহ জাগানো যায়।
উপগ্রহ চিত্র ও ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র হলো পৃথিবীর ভূ-প্রকৃতি ও মানুষের কর্মকাণ্ডের বিস্তৃত ধারণা লাভের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। উভয়ের নিজস্ব সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে। তবে উভয়ের ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানের ভূ-প্রকৃতি ও মানুষের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করতে পারি।
মন্তব্য করুন