মাধ্যমিক ইতিহাস – বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ – সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

Mrinmoy Rajmalla

বিংশ শতাকের গোড়ার দিকে ভারতীয় সমাজে নানা ক্ষেত্রে পরিবর্তনের হাওয়া বইতে শুরু করে। ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা আন্দোলনের পাশাপাশি সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তনের দাবি উঠতে থাকে। এই পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষার ফলে বিভিন্ন ধরনের বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগের জন্ম হয়। এই অধ্যায়ে আমরা সেইসব বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগের বিস্তারিত আলোচনা করব।

Table of Contents

মাধ্যমিক ইতিহাস – বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ – সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

বাংলায় ছাপাখানার ইতিহাসের প্রস্তুতিপর্ব বা প্রেক্ষাপট কী ছিল?

১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দে হ্যালহেড-এর বাংলা ব্যাকরণ গ্রন্থের পূর্বে প্রায় ১০০ বছর ধরে বিক্ষিপ্তভাবে ছাপার কাজে বাংলা হরফের খুব স্বল্প ব্যবহার হতে থাকে। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল আতানাসিউস কির্থের রচিত চায়না ইলাস্ট্রেটা (আমস্টারডাম, ১৬৬৭) বা হ্যালহেডের রচিত এ কোড অব জেন্টু লজ (লন্ডন, ১৭৭৬ খ্রি.)। এই মুদ্রণগুলি ছিল ব্লক মুদ্রণ, তা সচল ছিল না।

কবে ও কীভাবে বাংলার ছাপার অক্ষর ব্যবহৃত হয়?

১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দে ব্রাসি হ্যালহেড ইংরেজ কোম্পানির কর্মচারী বা ইংরেজদের বাংলা শিক্ষার জন্য ইংরেজি ভাষায় A Grammar of the Bengal Language নামক একটি গ্রন্থ প্রকাশ করেন। এই গ্রন্থের মোট পৃষ্ঠার চারভাগের একভাগ অংশে উদাহরণরূপে বাংলা হরফ ব্যবহার করেন। এইভাবে প্রথম বাংলা মুদ্রণ বা ছাপার কাজ শুরু হয়।

বাংলায় ছাপাখানা উদ্ভবের সহায়ক উপাদানগুলি কী ছিল?

বাংলায় ছাপাখানা উদ্ভবের সহায়ক উপাদানগুলি হল — প্রথমত, ইংরেজ কোম্পানির শাসন প্রতিষ্ঠা ও ১৭৭৩ খ্রিস্টাব্দের রেগুলেটিং অ্যাক্টের প্রবর্তন। এর ফলে বাংলা প্রদেশে বাংলা ভাষায় সরকারি কাজকর্ম ও সরকারি নির্দেশের প্রয়োজন দেখা দেয়। দ্বিতীয়ত, তৎকালীন গভর্নর ওয়ারেন হেস্টিংস বাংলা ভাষায় মুদ্রণ বা ছাপার জন্য সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা দান করেন।

হিকিজ বেঙ্গল গেজেট কী?

ছাপাখানার উদ্ভব বাংলায় সংবাদপত্রের যুগের সূচনা করেছিল এবং এরই পরিণতি ছিল হিকিজ বেঙ্গল গেজেট প্রকাশ। এটি কোম্পানির প্রেস থেকে ছাপা হত। এটি ছিল জেমস অগাস্টাস হিকির দ্বারা সম্পাদিত সাপ্তাহিক সংবাদপত্র।

ছাপার হরফের বিবর্তন চিহ্নিত করো।

হ্যালহেড রচিত বাংলা গ্রামার বইয়ের হরফগুলি ছিল আকারে বেশ বড়ো ও উচ্চতায় ৪.৫ মি.মি.। কিন্তু হরফের গঠন, স্পষ্টতা, আকার ও উচ্চতাকে আরো দৃষ্টিনন্দন করার পরীক্ষা-নিরীক্ষাও চলতে থাকে। ফলে হরফের উচ্চতা ক্রমশ ছোট হতে থাকে এবং একটি আদর্শরূপদানের চেষ্টা শুরু হয়।

ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ কীভাবে বাংলা মুদ্রণশিল্পে গতি এনেছিল?

প্রশাসনিক প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠিত ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের সিভিলিয়ানদের ইংরেজির পাশাপাশি দেশীয় ভাষাতেও শিক্ষাদান করা হত। তাই এরকম শিক্ষাদানের জন্য বাংলায় মুদ্রিত পাঠ্যপুস্তকের প্রয়োজনীয়তা থেকেই ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ শ্রীরামপুর মিশনের ছাপাখানা সহ সংস্কৃত প্রেস, হিন্দুস্থানী প্রেস-এ ছাপার বরাত (Order) দিত। এভাবেই বাংলা মুদ্রণ শিল্পে গতির সৃষ্টি হয়।

শ্রীরামপুর ত্রয়ী বিখ্যাত কেন?

শ্রীরামপুর মিশনের উইলিয়াম কেরি, জে মার্শম্যান এবং ওয়ার্ড একত্রে শ্রীরামপুর ত্রয়ী নামে পরিচিত। এঁদের উদ্যোগে বাংলায় পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের পাশাপাশি বাংলা মুদ্রণ শিল্পেরও বিকাশ ঘটে। এঁদের ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে শ্রীরামপুর মিশন প্রেস প্রতিষ্ঠিত হয়।

ছাপা বইয়ের সঙ্গে শিক্ষাবিস্তারের সম্পর্ক কী?

বাংলায় ছাপাখানার উদ্ভবের পূর্বে জ্ঞান বা শিক্ষাজগৎ ছিল হাতে লেখা পুঁথি বা মুখস্থবিদ্যার উপর নির্ভরশীল। কিন্তু ছাপা বইয়ের ফলে মুষ্টিমেয় ব্যক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ জ্ঞান অন্যান্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ, শ্রীরামপুর মিশন, স্কুল বুক সোসাইটির উদ্যোগে বাংলায় পাঠ্যপুস্তক রচনা ও পরিবেশনার কাজও শুরু হয়।

চার্লস উইলকিন্স বিখ্যাত কেন?

চার্লস উইলকিন্স ছিলেন প্রাচ্যবাদী পণ্ডিত। তিনি পঞ্চানন কর্মকারের সহযোগিতায় বাংলা মুদ্রাক্ষর খোদাই এবং অক্ষর ঢালাই-এর কাজ করেন। তাঁর তৈরি বাংলা মুদ্রাক্ষরের সাহায্যেই হ্যালহেড তাঁর বাংলা গ্রামার বইটিতে উদাহরণরূপে বাংলা মুদ্রণের ব্যবস্থা করেন। তাই তিনি বাংলার গুটেনবার্গ নামে পরিচিত।

পঞ্চানন কর্মকার বিখ্যাত কেন?

বাংলা মুদ্রাক্ষর তৈরির ক্ষেত্রে উইলকিন্সের সহযোগী ছিলেন হুগলি নিবাসী শিল্পী পঞ্চানন কর্মকার। তাঁর তৈরি মুদ্রাক্ষর হ্যালহেডের বাংলা ব্যাকরণে ব্যবহৃত হয়। পরবর্তীকালে ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে কর্ণওয়ালিশ কোড-এর বাংলা সংস্করণেও তাঁর তৈরি উন্নত বাংলা মুদ্রাক্ষর ব্যবহার করা হয়। তাঁর প্রচেষ্টাতেই বাংলা হরফ নির্মাণ একটি স্থায়ী শিল্পে পরিণত হয়।

ছাপাখানার প্রসারে স্কুল বুক সোসাইটি বিখ্যাত কেন?

ডেভিড হেয়ারের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত (১৮১৭ খ্রি.) স্কুল বুক সোসাইটির উদ্দেশ্য ছিল অল্প খরচে শিশু ও শিক্ষার্থীদের কাছে পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করা। ডেভিড হেয়ার আমৃত্যু বাংলা পাঠ্যপুস্তক ছাপানোর কাজে ব্রতী ছিলেন। এই সোসাইটি নিজের ছাপাখানার পাশাপাশি শ্রীরামপুর মিশন প্রেস সহ অন্যান্য প্রেসেও বই ছাপানোর ব্যবস্থা করেছিল।

প্রকাশনা জগতে বর্ণপরিচয় – এর গুরুত্ব কী?

প্রকাশনা জগতে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত বর্ণপরিচয় – এর গুরুত্ব ছিল অনেক। প্রথমত, এটি ছিল একটি শিশুপাঠ্যপুস্তক। যেখানে বাংলা স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ নির্দিষ্ট করা হয়। দ্বিতীয়ত, এই পুস্তকে ব্যবহৃত বাংলা হরফ প্রকাশনা জগতে একটি আদর্শ হরফ ব্যবস্থার প্রবর্তন করে।

ব্যাবসায়িক ভিত্তিতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ছাপাখানা প্রতিষ্ঠার কারণ কী ছিল?

ব্যাবসায়িক ভিত্তিতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ছাপাখানা প্রতিষ্ঠার কারণগুলি হল – প্রথমত, শিক্ষাবিস্তার, ধর্ম ও সমাজ সংস্কারের প্রয়োজনে বাংলা ভাষায় পাঠ্যপুস্তক ও প্রচার পুস্তিকার চাহিদা বৃদ্ধি পায়। দ্বিতীয়ত, এই চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি জীবিকার্জনের ব্যবস্থা ও শিক্ষাদরদি হয়ে ওঠাও ছিল অন্যতম উদ্দেশ্য। উদাহরণরূপে মদনমোহন তর্কালংকার ও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কথা বলা যায়।

সংস্কৃত যন্ত্র বিখ্যাত কেন?

উনিশ শতকে ছাপাখানার ইতিহাসে বিখ্যাত ছিল সংস্কৃত যন্ত্র নামক ছাপাখানা। ১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে পণ্ডিত মদনমোহন তর্কালঙ্কার ও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর যৌথভাবে কলকাতার ৬২ নং আমহার্স্ট স্ট্রিটে এটি প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীকালে বিদ্যাসাগর এই ছাপাখানার একক মালিকানা স্বত্ব লাভ করেন। সংস্কৃত যন্ত্র থেকে বিদ্যাসাগরের রচিত বিভিন্ন গ্রন্থও প্রকাশিত হয়।

বটতলার প্রকাশনা কী?

উনিশ শতকে ছাপাখানা জগতে বিদ্যাসাগরের যোগদানের পূর্বের প্রকাশনা জগতের একটি এলাকার প্রকাশন সংস্থা বটতলার প্রকাশনা নামে পরিচিত। চোরবাগান, শোভাবাজার, দর্জিপাড়া, জোঁড়াসাকো প্রভৃতি স্থান জুড়ে এই প্রকাশনা চলত। সস্তায় বিচিত্র বিষয় ও বিচিত্র রকমের ধর্মকথা ও অশ্লীল কথাযুক্ত বাংলা বই ছাপা ছিল এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য।

ছাপাখানা প্রবর্তনের গুরুত্ব কী?

ছাপাখানা প্রবর্তনের গুরুত্বগুলি হল—বাংলায় মুদ্রণ বা ছাপা সম্ভব হলে বাংলা ভাষা ও জ্ঞানের এবং শিক্ষার বিস্তার ঘটে। ছাপাখানা ব্যবস্থাকে কেন্দ্র করে কলকাতা কেন্দ্রিক নতুন পেশার উদ্ভব ঘটে। বাংলার সমাজ ও ধর্ম সংস্কার আন্দোলনের সমর্থনে বিভিন্নধর্মী পত্র-পত্রিকা ও সাহিত্যের উদ্ভব ঘটে।

ইউ. এন. রায় অ্যান্ড সন্স কী?

উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত প্রকাশনা সংস্থার নাম হল ইউ. এন. রায় অ্যান্ড সন্স। এই প্রকাশনার সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি ছিল বিদেশি। এখানে ছাপার পদ্ধতি ছিল উন্নত ধরণের হাফটোন ব্লকে ছাপা পদ্ধতি। তিন-চার রকম রং ব্যবহার করে ছোটোদের জন্য মজার বই প্রকাশ করা ছিল এই প্রকাশনার অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

ছাপাখানা জগতে উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী বিখ্যাত কেন?

উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী (১৮৬৩-১৯১৫ খ্রি.) ছিলেন একজন বিখ্যাত শিশুসাহিত্যক ও চিত্রকর। ছেলেদের রামায়ণ ও ছেলেদের মহাভারত ছিল তাঁর লেখা প্রথম দুটি বই। তিনি ইউ. এন. রায় অ্যান্ড সন্স নামক একটি ছাপাখানা ও প্রকাশনা সংস্থা খুলেছিলেন এবং ছাপাখানার জন্য বিভিন্ন নতুন ও উন্নত পদ্ধতির উদ্ভাবন করেন।

ব্রিটিশ শাসনপর্বে সার্ভে বা জরীপ ব্যবস্থার গুরুত্ব কী?

ব্রিটিশ শাসনপর্বে ফ্রাঙ্কল্যান্ড ও হগ্ ক্যামেরন ২৪ পরগনার জমি জরিপ করেন। আবার ১৭৭০-র দশকে জেমস রেনেল বাংলার নদীপথগুলি জরিপ করে মোট ১৬টি মানচিত্র তৈরি করেন। এভাবে জরিপ ও মানচিত্র অঙ্কনের মাধ্যমে এদেশের প্রাকৃতিক, বনজ ও জলজ সম্পদ চিহ্নিত করে এদেশকে শোষণের ব্যবস্থা করা হয়।

ব্রিটিশ শাসনপর্বে কীভাবে বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার প্রাথমিক বিকাশ ঘটে?

ব্রিটিশ শাসনপর্বে বিভিন্ন ধরনের জরিপ, সমীক্ষা ও মানচিত্র অঙ্কনের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও কারিগরি ব্যবস্থার বিকাশ ঘটে। অষ্টাদশ শতকে এশিয়াটিক সোসাইটি ও বোট্যানিক্যাল গার্ডেন এবং উনিশ শতকে অ্যাগ্রো- হর্টিক্যালচারাল সোসাইটি ও কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার প্রাথমিক বিকাশ ঘটে।

ইণ্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অব সায়েন্স প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী ছিল?

ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অব সায়েন্স প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যগুলি হল — স্বাধীনভাবে বিজ্ঞানচর্চা করা এবং পাশ্চাত্য বিজ্ঞানের প্রসার ঘটানো। বিজ্ঞান চর্চা ও গবেষণার পাশাপাশি বিজ্ঞান বিষয়ে বক্তৃতার আয়োজন করে শ্রোতাদেরকে বিজ্ঞান বিষয়ে ওয়াকিবহাল বা সচেতন করা। এভাবে দেশীয় উদ্যোগে ও তত্ত্বাবধানে প্রকৃত বিজ্ঞান গবেষণাই ছিল এই প্রতিষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য।

কলকাতা বিজ্ঞান কলেজ প্রতিষ্ঠায় তারকনাথ পালিতের ভূমিকা কী ছিল?

কলকাতা বিজ্ঞান কলেজ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তারকনাথ পালিতের ভূমিকা ছিল খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ প্রথমত, তিনি বাংলায় বিজ্ঞানভিত্তিক ও প্রাযুক্তিক শিক্ষা বিস্তারে সচেষ্ট হন। দ্বিতীয়ত, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে তিনি জমি ও টাকা দান (দুটি পর্যায়ে যথা জুন ও অক্টোবর ১৯১২ খ্রি.) করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য আশুতোষ মুখোপাধ্যায় এই জমি ও অর্থের উপর ভিত্তি করেই কলকাতা বিজ্ঞান কলেজ প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট হন।

জগদীশচন্দ্র বসুর গবেষণার দুটি দিক চিহ্নিত করো।

জগদীশচন্দ্র বসুর গবেষণার দুটি দিক হল –

  • বিদ্যুৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ সম্পর্কে গবেষণা করে বেশ কিছু নতুন তথ্যের আবিষ্কার করেন। তিনি এ সম্পর্কে ইংল্যাণ্ডের রয়্যাল ইন্সটিটিউশনে বক্তৃতাও দেন।
  • তিনি জীব ও জড় জগতের মধ্যে সম্পর্ক ও উদ্ভিদ বিদ্যা সম্পর্কেও গবেষণা করেন।

জাতীয় শিক্ষা পরিষদ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী ছিল?

জাতীয় শিক্ষা পরিষদ (১৯০৬ খ্রি.) প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যগুলি হল –

  • ব্রিটিশ প্রবর্তিত শিক্ষানীতির বিরোধিতা করা
  • দেশের প্রয়োজনে স্বদেশি ধাঁচে এক বিকল্প শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা। এই শিক্ষাব্যবস্থার দুটি দিক ছিল যথা — সাধারণ বিজ্ঞান ও কলাবিদ্যা শিক্ষার ব্যবস্থা করা এবং কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করা।

জাতীয় শিক্ষা পরিষদের ব্যর্থতার কারণগুলি কী ছিল?

জাতীয় শিক্ষা পরিষদের ব্যর্থতার কারণগুলি হল —

  • জাতীয় শিক্ষাপরিষদ বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হওয়ার কারণে অর্থ সংকটের সম্মুখীন হয়
  • প্রথম দিকে অনেক শিক্ষক এগিয়ে এলেও বেতনের স্বল্পতার কারণে অনেক শিক্ষক এই প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করেন
  • চাকরির বাজারে এই প্রতিষ্ঠানের প্রদত্ত ডিগ্রি বা সার্টিফিকেট ছিল গুরুত্বহীন এবং একারণেই এই কলেজে ছাত্র সংখ্যা বৃদ্ধি পায়নি
  • তৎকালীন চরমপন্থী নেতারা এই পরিষদকে স্বীকৃতিও দেয়নি।

বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট – এর পাঠ্যক্রম কী ছিল?

বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউটের পাঠ্যক্রম ছিল কারিগরি শিক্ষাকেন্দ্রিক। এখানে তিন বছরের ইন্টারমিডিয়েট ও চার বছরের সেকেন্ডারি বা মাধ্যমিক শিক্ষা পদ্ধতি চালু করা হয়। সমকালীন শিক্ষক বিনয়কুমার সরকার উপহাস করে এই প্রতিষ্ঠানকে মিস্তিরি তৈরীর কারখানা বলে অভিহিত করেন।

সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় বিখ্যাত কেন?

সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় ছিলেন একজন বিখ্যাত জাতীয়তাবাদী নেতা। তিনি ঔপনিবেশিক শিক্ষাধারণার সমালোচনা করেন এবং দেশের প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষা প্রবর্তনের কথা বলেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ডন পত্রিকা ছিল বিখ্যাত জাতীয়তাবাদী পত্রিকা।

শান্তিনিকেতন আশ্রম কী?

মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর বোলপুরে নির্জনে ব্রহ্ম উপাসনা করার জন্য একটি আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। এটিই শান্তিনিকেতন আশ্রম নামে পরিচিত। এই আশ্রমকে কেন্দ্র করেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্রহ্মচর্যাশ্রম নামক বিদ্যালয় ও বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠিত হয়।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী ছিল?

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্তৃক শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য ছিল —

  • এরূপ আবাসিক ব্রষ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শিক্ষক ছাত্র সম্পর্ককে প্রতিষ্ঠা করা এবং এভাবে প্রাচীন ভারতের ব্রহ্মচর্যাশ্রমের গুরু-শিষ্য সম্পর্ককে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা।
  • প্রকৃতি, মানুষ ও শিক্ষার মধ্যে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করে এক নতুন ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।

বিশ্বভারতীর বিভাগগুলি কী ছিল?

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত বিশ্বভারতীর বিভিন্ন বিভাগগুলি ছিল — পাঠভবন, শিক্ষাভবন, বিদ্যাভবন, রবীন্দ্রভবন, চিনা ভবন, কলা ভবন, সংগীত ভবন, হিন্দি ভবন।

বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ ভারতীয় সমাজের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই চিন্তা ও উদ্যোগগুলি সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তনের পথ দেখিয়ে দেয়। এই অধ্যায়টি পড়লে বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।

JOIN US ON WHATSAPP

JOIN US ON TELEGRAM

Please Share This Article

About The Author

Related Posts

মাধ্যমিক - ভূগোল - বারিমন্ডল - জোয়ার ভাটা - রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

মাধ্যমিক – ভূগোল – বারিমন্ডল – জোয়ার ভাটা – রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

Class 10 English – The Passing Away of Bapu – About Author and Story

Class 10 English – The Passing Away of Bapu – About Author and Story

The Passing Away of Bapu

Class 10 English – The Passing Away of Bapu – Question and Answer

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

Trending Now

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Class 9 – English – His First Flight – Question and Answer

Class 9 – English – A Shipwrecked Sailor – Question and Answer